অনুভূতির কেন্দ্রবিন্দু তুমি পর্ব ৩৯

অনুভূতির কেন্দ্রবিন্দু তুমি পর্ব ৩৯
সুমাইয়া সানজুম ঐশী

__নিজের মেয়েকে পতি*তা বলে আখ্যা*য়িত করেছেন।এই বুঝি একজন মায়ের ভালোবাসার নমুনা!মিসেস আহমেদ?আপনি নাহয় জানতেন সে আ*শ্রিত কিন্তু মেয়েটা তো আপনাকে তার আপন মা ইই জানতো!সবচেয়ে বেশি ভালোবাসত।কিন্তু আপনি দিনের পর দিন মানসিক ভাবে ট*র্চার করেছেন।নিশুকে সব সুবিধা দিলেও ঐশীকে কাজের মেয়ে বানিয়ে রেখেছেন বাড়িতে।

শুধু তাই নয় তার স্টাডি বন্ধ করার জন্য সবরকম চেষ্টা চালিয়ে গেছেন। আপনার সারাদিনের অবহে*লা, অত্যা*চার মুখ বুজে সহ্য করতো শুধু আপনার একটু ভালোবাসা পাওয়ার জন্য কিন্তু আপনি নিজের স্বার্থ ছাড়া কিছুই দেখেন নি চোখে। তাই তো উঠে পরে লেগেছেন ঐশীর বিয়ে দেওয়ার জন্য।আবার বিয়ের দিনই মিথ্যে এম এম এস আমার কাছে পাঠিয়ে নিজের মেয়ের সংসার শুরু হয়ার আগেই ভে*ঙে দিচ্ছিলেন।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

এগুলো বুঝি আপনার ভালোবাসার নমুনা ছিল শাশুড়ী মা!সরি,সরি মিসেস আহমেদ। আপনাকে শাশুড়ী ডাকলে আমার মেজো মা কে অপমান করা হবে। কথায় আছে না,”কোথায় আনারকলি আর কোথায় জুতার কালি!! ”
আঁধারের কথায় আম্মু পুরো পুরি ঘেমে গেছেন। ভ*য় কাটিয়ে তারপরও তিনি বললেন,
__কিসব উল্টো পাল্টা বলছো!আঁধার। মানছি আমি ওর আপন মা নই। কিন্তু আমি ওকে নিজের মেয়ে ভেবেছি। আমি কেনো তোমার কাছে কিছু পাঠাতে যাবো।আমি তো,,,,

__আর কতো মিথ্যে নাটক করবেন বলুন তো!!আপনি তো ওকে বিয়ে দিয়ে ঘরছাড়া করেছেনইই। কিন্তু ওর শশুর বাড়ির সম্পদ দেখে আপনার কু-চিন্তা ভাবনা আরো বেড়ে গিয়েছে।তাই তো সেদিন ভিডিও গুলো আর ওর নামে ফালতু শব্দ মেসেজ করেছিলেন যাতে বিয়ে ভেঙে যায় আপনি নিজের আপন মেয়ে নিশুর সাথে আমার বিয়ে দিতে পারেন।

কিন্তু ভাগ্যবশত আমি সেগুলো বিয়ে কাজ সম্পন্ন হওয়ার অনেক পড়ে দেখি যার কারণে আপনি আপনার কু কাজে সফল হতে পারেন নি। আপনি কি ভেবেছেন আপনি এভাবে একের পর এক চাল চালবেন আর আমি ফাদে পা দিব!লজ্জা করে না এত কিছু করার পর আবার ভালো সাজতে!!!আপনি তো নারী নামে কলংক!
আঁধারের কথা শুনে আমি অবাক হলাম। যার একটু আদর পাওয়ার জন্য আমি দিনের পর দিন ছটফট করতাম সেই এরকম শত্রু ছিল আমার!

আব্বু আঁধার এর কাছ থেকে এসব শুনে ভীষণ রেগে গেল।আম্মুর দিকে তাকাতেই আম্মু আমতা আমতা করে বললো,
__আমি এসব এর কিছু জানি না তুমি আমার কথা টা বিশ্বাসস,,,ক
আব্বু আর কিছু বলতে না দিয়েই আম্মুর গালে থাপ্পড় বসিয়েছে। দ্বিতীয় বার একই কাজ করতে নিলেই আমি আর আমার শশুর মশাই এগিয়ে ধরে ফেললাম,

__ছাড়ুন ভাই,,আমাকে,,এই মহিলাকে আমি এতদিন প্রশ্রয় দিতে দিতে আজ তার এই অবস্থা। আমি ভাবতাম একসময় সে ভালো হবে। কিন্তু তার যে এত অধঃপতন হবে এটা বুঝি নি।যখন ই দেখতাম ঐশীর সাথে খারাপ আচরণ করত,তখনই শাসন করার চেষ্টা করতাম। কিন্তু আমি বেশির ভাগ সময় কাজের জন্য চট্টগ্রাম এর বাইরে থাকা পড়ত তাই মেয়ের খেয়াল রাখতে পারলাম না।

আব্বুর কথার মাঝেই আম্মু বাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে ছাদ ত্যাগ করলেন।
আব্বু এরপর মেজচাচার কাছে আমার হাত তার হাতে ধরিয়ে বললেন,
__আপনার মেয়ে ভাই।ছোট থেকে সে শুধু অবহেলা পাইছে। আমি আপনার বংশের মেয়েকে দেখে রাখতে ব্যর্থ হয়েছি।তাই আমি সবার কাছে ক্ষমাপ্রার্থী।
__না ভাই,আপনার কারণেই নিজের মেয়েকে পেয়েছি। আমার পরিবারের প্রাণকে পেয়েছি। এইজন্য আজীবন আপনার কাছে চির কৃতজ্ঞ থাকব।

বলে চাচা আমাকে বুকে জড়িয়ে নিলেন। তখন আব্বু আমার মাথায় হাত রেখে বললেন,
__মারে,আমি তোর ঠিক মতো দেখাশোনা করতে পারি নাই।ক্ষমা করে দিস।
একথা বলেই আব্বু চলে গেলেন।
আমি তার দিকে তাকিয়ে কান্না করছিলাম। একের পর এক ধাক্কা নেওয়া আমার পক্ষে নেওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ছে!আম্মুর এতকিছু করার শুধু একটাই কারণ, আমি পালিত মেয়ে ছিলাম!!

সেদিন এর পর আমি আমার শশুর বাড়িতে উঠি।শুধু শশুর বাড়ি বললে ভুল হবে বাপের বাড়ি ওও।আম্মু, আব্বু,আর আমার দুই বড় ভাই এখন আগের মতো এখানেই থাকেন। তারা মূলত আমার কারণে খুলনা থাকতো। কারণ আমার ছোট বেলার সব স্মৃতি এ বাড়িজুড়ে ছিল তাই আম্মু এসব দেখলেই মানসিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়তেন। যদিও বড় আব্বু সব আমার ছবি আর জিনিসপত্র সরিয়ে ফেলেছিলেন কিন্তু তাও লাভ হয়নি। আম্মু এখনে বেশিদিন থাকতে পারতো না।

এখানে আসার পর যেন আমি সত্যিই এই পরিবারের প্রাণ হয়ে উঠেছি।আগেও ছিলাম। কিন্তু তখন বউ হিসেবে আর এখন মেয়ে হিসেবে। আমাকে পুরো ছোট বাচ্চা বানাই ফেলছে এরা। প্রতিদিন খাওয়ানোর দায়িত্ব তারা ভাগাভাগি করে নেয়।আলো আপুর বিদায় এর পর থেকে দুই মায়ের এক মেয়ে আমি।

যদিও আগেও আমার শাশুড়ী মা এমনই ছিলেন। আলো আপু বিদায় এর পর ও সপ্তাহে তিন চার দিন এবাড়িতেই থাকা পরে তিনি মাঝে মধ্যে নেকাকান্না করলেও এখন সেই অভিনয় টা বাদ দিয়ে দিয়েছেন।সারাদিন বাড়ি জুড়ে একটাই নাম ঐশী। হ্যাঁ এই নামটাকে আমি বাচিয়ে রেখেছি।আব্বুর দেওয়া নামটি ছিলো।ফুল আমার নাম হলেও বাড়ির সবাই ঐশীই ডাকে। আম্মু আর আব্বু শুধু ফুল ডাকে। আমি তাদের প্রথম প্রথম তো ভুলে মেজ মা,আর মেজচাচা বলে ফেলতাম এতে তারা প্রকাশ না করলেও মনে মনে ভীষণ কষ্ট পেত।এখন অবশ্য তেমন টা হয় না।

আমার বরের সাথে সেদিন এর পর থেকে আর ঝামেলা তৈরি হয়নি।তবে আমি তাকে প্রচুর ইগনোর করেছি। সারাদিন উনার সামনে পর্যন্ত আসতাম না।তবে সে হাল ছাড়েনি। এতো কিছুর পরেও সে আগের মতোই আমার কেয়ার করে।বরং আগের থেকে বেশি করে, আগে যা অসহ্য লাগতো এখন তা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। সে তার প্রতিটা কাজে প্রকাশ করেছে তার ভালোবাসার গভীরতা।

দিনের পর দিন আমাকে মানানোর চেষ্টা করে চলেছে। আমি তাকে এতো ইগনোর করার পরও উনি একটু ও রাগ দেখাতেন না।তবে রাতে ঘুমানো সময় আমাকে জড়িয়ে ধরতেই যখন আমি ছুটোছুটি করতাম, শান্ত গলায় বড়সড় হুমকি দিতে পিছপা হতো না।এখন আমি এসব এ ভীষণ ভাবে আসক্ত হয়ে পড়েছি।রাতে সে না জড়িয়ে ধরলে ঘুম আসে না।কেমন অস্থির অস্থির লাগে।আগে তো তাকে একতরফা ভালোবাসতাম কিন্তু যখন জানতে পারলাম আমি তার সেই ভালোবাসা তখন থেকেই না চাইতেও তার প্রতি মুহুর্তে আসক্ত হচ্ছি আমি।

গোধুলির রং একটু বেশিই প্রিয় আমার। তাই তো না দেখে একদিন ও সন্ধ্যা হয় না।এই রুমের বারান্দায় দাঁড়িয়ে দেখা এই মুহুর্ত টা কে আরও সুন্দর করে তুলে আমার কাছে।পড়ে থাকা কাঠগোলাপ টি কানে গুজে নিলাম।এই লোভ টা সামলানো কঠিন। এই মৌসুমে আকাশ একেক সময়ে একেক রকম সাজে।কখনো তার মন খারাপ থাকে তাই তো কান্না স্বরূপ ঘন বর্ষণ ঘটায় আবার কখনো সে লজ্জিত রক্তিম আভা ছড়ায়।

সন্ধ্যার পর নামাজ শেষে,বারান্দার দোলনায় একখানা উপন্যাস পড়ছিলাম। ফাস্ট ইয়ার ফাইনাল পরীক্ষা শেষ তাই সারাদিন অবসর কাটে। ভাবা যায় এক সময় সারাদিন গাধা খাটুনি খেটে পড়ার সময় পেতাম না আর এখন দুই মা রান্না ঘরে দেখলে দৌড়ানি দেয়। যেই চুলে নিজে চিরুনি দেওয়ার সময় ছিলো না। তা এখন রোজ ভাগাভাগি করে বেধে দেয়। ঐ বাড়িতে সারাদিন গায়ের রং নিয়ে কথা শুনতে হতো। আর এখানে যেন আমি ফুলকন্যা। নিজের মানুষ গুলো মনে হয় এমনই হয়।
উপন্যাসের পাতায় ডুবে ছিলাম। মাথায় তরল কিছুর আভাস পেয়ে বুঝতে পারলাম মতলব,

__আম্মু প্লিজ আজকে তেল দিও না। আজকেই শ্যাম্পু করেছিলা,,,ম
বলেই পিছনে ফিরে দাড়াতেই আমি বোকা বনে গেলাম। আঁধার মাথায় তেল দিয়ে চুল আচড়ে দিচ্ছেন। মোটাসোটা একখানা লম্বা বেনী করে চিরুনি জায়গায় রেখে আসতে গেলেন। আমি এখনো দাঁড়িয়ে তার চলে যাওয়ার পানে আহাম্মক এর মতো তাকিয়ে আছি।উনি তো রাত দশটার পর ছাড়া বাসায় ফিরেন না।এখন তো উনার নিজের চেম্বার এ থাকার কথা! উনি এবার পুনরায় আমার সামনে এসে দাড়ালেন। আমি এবার একটু অস্বস্তিতে পড়লাম।পাশ কাটিয়ে চলে যাবো তার আগেই সে হাত ধরে আটকায়।

__তোমার শাস্তি কি এখনো শেষ হয়নি!তোমার অ্যাভোয়েড আমার হৃদয়ে ক্ষরণ সৃষ্টি করে তোমার নজরে কি পরে না?এভাবে আর কতদিন ইগনোর করবে!আমার অপরাধ টা ক্ষমা করা যায় না!আমায় একটু ভালোবাসলে কি খুলে ক্ষতি হবে, ঐশীপাখি!

তার এমন আকুল গলায় আমার অন্তস্থল কেপে উঠলো। আমার এই বেহায়া মন তো সেই কবে থেকেই তাকে ভালোবাসে, সে কি জানে না!! কিছু না বলেই চেয়ে রইলাম তার দিকে।অতঃপর তিনি আমার হাত ধরে বসার জায়গার পাশে এটার্চ যেই বাক্স টা আছে তার সামনে থামলেন। বরাবরই এই বাক্সটা নিয়ে আমার প্রচুর কৌতুহল ছিল। তাকে আজ বাক্সের তালা খুলতে দেখে তা দ্বিগুন হলো। খুলেই তিনি আমার ড্রয়ারে থাকা দ্বিতীয় খন্ডের ডাইরি টা বাক্স থেকে বের করে দিলেন।

__আরে এটা আপনি ও বাড়ি থেকে নিয়ে এসেছেন! আমি আজকেই এটা নিশু আপুকে দিয়ে যেতে বলবো ভেবেছিলাম। ভাল হয়েছে আপনার কাছে পেলাম।
এ কথা বলেই তার হাত থেকে তা নিয়ে নিলাম। তারপর রুমে চলে যাবো এমন সময় উনি আরও এক খানা ডাইরি আমার সামনে ধরলেন। এতদিন পর নিজের সেই চিরচেনা ডাইরির প্রথম খন্ড দেখে অবাক দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে রইলাম।আমার এমন তাকিয়ে থাকার কারণ টা বুঝতে পেরেই সে বললো,

__চিনতে পেরেছো নিশ্চয়ই। জানো তো ডাইরির মালিক আজও আগের মতোই নির্দয় রয়ে গেলো। সে তিন বছর আগেও আমার অনুভূতি বুঝতে পারে নি এখন ও বুঝার চেষ্টা করে না। সে আমায় অনুভূতি তে ভাসিয়ে নিখোঁজ ছিলো। অথচ আমি তার অপেক্ষায় কাতর ছিলাম এখনো আছি।আমার স্বর্ণলতা বড্ড পাষাণ।
তার মানে উনি সেই ব্যক্তি যে আমার ডাইরিটা পেয়েছিল। আর উনি এখনো আমাকেই ভালোবাসছেন!!

__আপনি এখানো ডাইরি আপনার কাছে রেখেছেন! আমি সেদিন আপনার কাছের আসতাম ডাইরিটা নিতে কিন্তু রাস্তায় ছোট খাটো আমার এক্সিডেন্ট এর কারণে ব্যাগ, ফোন হারিয়ে গিয়েছিল তাই আপনার সাথে আর যোগাযোগ করা হয় নি। আর ডাইরিও ফেরত নেওয়া হয়নি। কিন্তু আপনি এখনো এটা নিজের কাছে রেখেছেন!!
আমার প্রশ্নে সে মুচকি হেসে আমায় পিছন থেকে জড়িয়ে ধরলেন।বললেন,

__নিজের জিনিস কেই আগলে রেখেছি।তোমায় তো আর রাখতে পারলাম না। তবে জানো তো তোমায় এখন বেশ ভয়াবহ শাস্তি দেওয়া দরকার।তোমার কথা ভেবে আমি বাসর ঘরে নিজের বউকে ভালো মন্দ শুনিয়েছি।যদিও তোমার দোষ কম ছিল, তারপরও ছিল তো!! লিখায় মাদকতা ছড়িয়ে আমাকে আসক্ত করার জন্য তোমায় জেলে দেওয়া উচিত।
জানো তো,অকারণেই তোমার ডাইরির প্রতিটি পাতায় আমি নিজেকে কল্পনা করেছি।

তোমার কল্পনা অনুযায়ী আমি আমার ঘর সাজিয়েছি। বারান্দা, ,ছাদ,বাগান সবটাই সাজিয়েছি।আমাদের রিসিপশনের দিন তোমাদের বাড়িতে গিয়েই প্রথম সন্দেহ হয়েছিল তুমি স্বর্ণলতা।কারণ আমি তোমার ডাইরির ২য় খন্ড দেখেছিলাম। পরবর্তীতে চেইক করতে গিয়ে আর সেই জায়গায় তা পাইনি। তাই সন্দেহ টা মাথায় রেখেছিলাম। তোমার প্রতিটি কদম আমাকে তোমায় সেই কাংখিত মানুষটিকে নিয়ে ভাবতে বাধ্য করেছে।

তাই তো তোমায় ঘাড়ে চাপানো দোষ কে ভুল প্রমাণিত করার উপায় খুজছিলাম তাতে বেশ দেরিও হয়ে গেলো আর আমাদের মাঝে ভুল বুঝাবুঝি তৈরি হলো।সেদিন যেই কাগজ টা লিখে তুমি বাড়ি ছেড়েছিলে তা পড়ে তোমার চিরপরিচিত লেখা পুনরায় দেখতে পাই।আবার তোমার বাড়ি গিয়ে তোমার ডাইরির ২য় খন্ড পাই।জানো তখন নিজেকে শেষ করে দিতে ইচ্ছে হচ্ছিলো। যাকে এতদিন পাগলের মতো খুজেছিলাম। বিধাতা তাকে আমার কাছেই ফিরিয়ে দিয়েছিল কিন্তু চিনতে দেরি করে ফেলেছিলাম।

আমায় কি অল্প করেও ভালোবাসো না,, প্রানপাখি??
তার কথায় আমি নড়েচড়ে উঠলাম কাপা কাপা কণ্ঠে বললাম,
_অধিকার নেই আমার।।
আমায় কথায় সে দূরত্ব আরও কমালো। কানের কাছে ফিসফিসিয়ে বললো,
মায়াকন্যা,

ভয়ঙ্কর সুন্দর মহাকাব্য তুমি।
ভালোবাসার এমন বিশুদ্ধ চরণ তুমি।
এত কোমল সাহিত্য-ছন্দ-মাত্রা খুঁজেছি আমি!
তুমি বিহীন কোথাও মেলেনি কোনোদিন।।
তুমি যাকে অধিকার বলেছিলে !
আজ যদি সেই অনধিকার চর্চার এক চুমু চাই?
চাই তোমার ওই ঠোটের উষ্ণ পরশ?
দেবে কী আমায়?
খুব কি ঘোর অন্যায় হবে তখন?
প্রেয়সীর প্রথম ভালোবাসা!!
আমার জন্য পূণ্যতাই বয়ে আনবে
মাতাল হবো তোমা-য়,
এই ভেবে ভেবে প্রতিরাতে আমার আবার মৃত্যু হয়।
ভালোবাসো কি??
প্রতিটা শব্দে যেন আমি ঘোরে চলে গেছি।কাধে তার ঠোঁট স্পর্শ করে করলেন,

__উত্তর এর অপেক্ষা আর করবো না। তোমার উত্তর আমার ইহজন্মেও পাওয়া হবে না।
বলেই সে রুম ত্যাগ করলো। আমি একের পর এক চমক পেয়ে যেন বেহাল অবস্থার মধ্যে আছি।কি হচ্ছে এসব!! এতদিন যেই প্রেমিকারে অভিশাপ দিছিলাম ঐটা আমি ভাবতেই ভয় লাগে!আমার অভিশাপ গুলো এবার আমার গায়েই পড়বে!!

অনুভূতির কেন্দ্রবিন্দু তুমি পর্ব ৩৮

সেদিন বান্ধুবীরা মিলে রেস্টুরেন্টে এসেছিলাম। ওদের সাথে মিট করে যাওয়ার পথেই নিশান ভাইয়ার সাথে দেখা হয়।উনি হয়তো ইচ্ছে করেই আমার পিছু নিয়েছেন বুঝতে আমার অসুবিধা হয় নি। কারণ প্রায় তাকে আমার ভাসিটির সামনে দেখা যেত। কিন্তু এর মতলব কি!এর সাথে সেদিন একটু হেসে কথা বলেছি এরপর থেকেই ব্যাটা পিছন ছাড়ছে না।

অনুভূতির কেন্দ্রবিন্দু তুমি শেষ পর্ব