অর্ধাঙ্গিনী পর্ব ২২

অর্ধাঙ্গিনী পর্ব ২২
Mousumi Akter

এক আকাশ সমান রাগ-অভিমান নিয়ে জীবনে প্রথমবার আজ পূর্ণতা রান্নাঘরে প্রবেশ করেছে। যে বাড়িতে এতদিন মেয়ে বলে রাজরানির ছিল। বিয়ে হতে না হতেই বাড়ির বউ বলে খারাপ আচরণ শুরু হয়েছে। আজ-ই তাকে বুঝিয়ে দেওয়া হল সে এ বাড়ির বউ।তাকে বেলা করে ঘুমানো মানায় না। এ বাড়ির বউরা থাকে পায়ের নিচে,তাই ছাড়া তাদের আর অন্য কোথাও মানায় না।

এ পরিবারের মানুষদের এসব আচার-আচরণের জন্য পূর্ণতা প্রভাত-কে বিয়ে করতে রাজি ছিলনা।রান্নাঘরে দাঁড়িয়ে চোখের পানি ফেলছে পূর্ণতা।রান্না -বান্নার কিছুই সে জানেনা।আগে -পরে কখনো রান্না করেনি।কিভাবে কি করবে কিছুই বুঝতে পারছে না।চৌধুরী বাড়িতে প্রতিদিন সকালে কয়েক প্রকার রান্না হয়।বিশেষ করে মাছের পদ ই করা হয় ৫-৬ রকমের।বাড়ির পুরুষেরা সকালে পেট পুরে খেয়ে কাজে বেরিয়ে যায়। মেরি আর জাহান দু’জন মিলে রান্না করে সাথে কাজের মহিলা থাকে।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

জয়নাব যাওয়ার পর নতুন একজন কাজের মহিলা এসছিলো সে জয়নাবের গল্প শুনে ভ’য়ে চলে গিয়েছে। চৌধুরি বাড়ি এই মুহুর্তে একটা আতংকের নাম।পূর্ণতা চারদিকে তাকিয়ে থম মেরে রইলো। কীভাবে কি শুরু করবে টের পাচ্ছে না।ভাতের চাল দেবে কতটুকু অনুমান করতে পারছে না।কোন সব্জির সাথে কোন মাছ সেটাও অনুমান করতে পারছে না।তার আম্মুকে যে ডাকবে তাও ডাকতে পারছে না। হয়ত তার বাবার সাথেই আছে।এমন সময় প্রভাত রান্নাঘরে প্রবেশ করল। প্রভাতের পরণে কালো একটা থ্রি-কোয়ার্টার প্যান্ট সাথে কালো কলার দেওয়া একটা গেঞ্জি।জীবনে প্রথমবার আজ প্রভাত রান্নাঘরে পা রেখেছে।এর একমাত্র কারণ পূর্ণতা।

প্রভাত কে দেখে পূর্ণতা খোঁচা মেরে থমথমে কন্ঠে বলল,
“কি ব্যাপার চৌধুরী বাড়ির ছেলে রান্নাঘরে কেন? মান -ইজ্জত তো সব যাবে। ”
বলেই পূর্ণতা রাগে ছুরি দিয়ে লাউ কা-ট_তে শুরু করল।
পূর্ণতার রাগ আর অভিমানের কারণ প্রভাত বুঝতে পারল।থ্রি-কোয়ার্টার এর পকেটে হাত গুজে বলল, ” চৌধুরী বাড়ির বউ রান্না ঘরে আসতে পারে। তার অর্ধাঙ্গ হিসাবে আমি আসলে প্রব্লেম কি?”

“চৌধুরী বাড়ির ছেলেরা তো রাজপুত্র। আর তাদের বউরা দাসি।দাসিদের রান্নাঘরে মানায়, রাজপুত্রদের তো মানায়।”
“যার সাথে সারারাত বেড শেয়ার করতে পেরেছি তার সাথে রান্নাঘর কেন জাহান্নামেও যেতে পারব।”
“আপনাদের মুখে এসব শুনলেও হাসি পায়।”
“তুমি নিজেকে কখনো দাসী ভাববে না পূর্ণ, তুমি আমার হৃদয়ের রানি।তোমাকে দাসি নয়,মাথার মুকুট বানিয়ে রাখব আমি।”

“প্লিজ আপনি এখান থেকে যান, ভাল লাগছে না আমার।”
প্রভাত এবার পূর্ণতার পাশে গিয়ে দাঁড়াল।পূর্ণতার দিকে ভালবাসার দৃষ্টি মেলে বলল,
“দূরে যেতে বললে, আরো বেশী কাছে আসব।”
“কাছে আসলেই কি দূরত্ব কমবে?”
“দূরে ঠেলে দিলেই কি ভালবাসা কমবে।”

“এখান থেকে যান আপনি, না হলে লাউ এর বদলে আপনাকে কে’টে ফেলব।” কথাটা বলতে বলতেই লাউ কাটতে গিয়ে হাতে খানিক টা লেগে পূর্ণতার হাত কে’টে গেল।সাথে সাথে লাল র’ ক্ত গড়িয়ে পড়ল।পূর্ণতা উঁহ শব্দ করে প্রভাতের দিকে ফ্যালফ্যাল দৃষ্টিতে তাকাল।পূর্ণতার হাতে র*ক্ত দেখেই প্রভাত চমকালো।প্রভাতের মাথা কাজ করল না।সে তুফানের বেগে ছুরি টা দূরে ফেলে দিয়ে পূর্ণতার আঙুল ধরে মুখে পুরে দিল।পূর্ণতা খেয়াল করল প্রভাতের চোখে কেমন যেন যন্ত্রণা।প্রভাত নাম না জানা এক যন্ত্রণায় ভুগছে।পূর্ণতার হাতের র* ক্ত যেন প্রভাতের কষ্টের কারণ।পূর্ণতা অবাক চোখে প্রভাত-কে দেখছে।এই মানুষটা কি সত্যি তাকে এতটাই ভালবাসে।প্রভাত কে কেমন অস্থির আর উত্তেজিত দেখাচ্ছে।পূর্ণতা আচমকা প্রভাতের ডান গালে হাত রাখল। শান্ত কন্ঠে বলল,

“কি হয়েছে আপনার? এমন করছেন কেন?”
প্রভাত কেমন অস্থির কন্ঠে বলল, ” খুব লেগেছে তাইনা?”
পূর্ণতা শান্ত কন্ঠে বলল, ” কিছুটা, কিন্তু আপনি এমন করছেন কেন?”
প্রভাত পূর্ণতার দুই গালে হাত রেখে বলল, “আমার পূর্ণ, তুমি আমার অনেক সাধনা করে পাওয়া অমূল্য রত্ন।তোমাকে আঘাত পেতে দেখলে যন্ত্রণায় চূর্ণ-বিচূর্ণ হয় আমার হৃদয় আকাশ।আমি আমার নিজের সাথে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, কোনদিন তোমাকে যন্ত্রণা পেতে দিবনা।তবুও যন্ত্রণা পেলে।”

“আমার এতটাও লাগেনি চৌধুরী সাহেব।”
“যতটা লেগেছে অতটায় আমাকে জর্জরিত করছে পূর্ণ। ”
“চৌধুরী বাড়ির সেই হুংকার দেওয়া বাঘ টা আজ বিড়ালের মত হয়ে গেল কেন?”
“চৌধুরী বাড়ির আঙিনার সব চেয়ে সুন্দর ফুল পূর্ণকে পেতেই চৌধুরী বাড়ির বাঘ আজ পরাজিত।”
“আমিতো অসাধারণ কেউ নই।সাধারণ তবুও কেন?”
“পৃথিবীর সবার চোখে সাধারণ নারীটাই প্রভাত চৌধুরীর চোখে পৃথিবীর সব চেয়ে সুন্দরতম অসাধারণ নারী।প্রভাত চৌধুরীর হৃদয়ের রানি।”

পূর্ণতার চোখ কেমন ছলছল করে উঠল।দিন দিন সে প্রভাতের মায়ায় আবদ্ধ হয়ে যাচ্ছে।এই মায়া কি তাকে ধ্বংস করবে নাকি ভাল রাখবে।এমন সময় উপর থেকে। পুষ্পের চেঁচামেচি শোনা গেল।পুষ্পের চিৎকার শুনে প্রভাত আর পূর্ণতা দ্রুত পায়ে উপরে উঠল।আওয়াজ টা জাহানের রুম থেকে আসছে।পূর্ণতা আর প্রভাত জাহানের রুমে গেল।জাহান কে র*ক্তা*ক্ত অবস্থায় জ্ঞান হারিয়ে ফ্লোরে পড়ে থাকতে দেখে পূর্ণতা এক চিৎকার দিয়ে জাহান কে জড়িয়ে ধরে বলল,

“আম্মু কি হয়েছে তোমার? চোখ খোলো আম্মু।”
জাহান অচেতন হয়ে পড়ে আছে। চোখের সামনে মায়ের এমন করুণ দৃশ্য দেখে যন্ত্রণায় জর্জরিত হচ্ছে পূর্ণতা।হৃদয় টা পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে।জ্বরে কাতর মায়ের শরীরে অসংখ্য বেল্টের দাগ।শরীরের নানা জায়গা কে’টে র*ক্ত বের হচ্ছে।পূর্ণতা সহ্য করতে পারছে না নিজের মায়ের এমন আঘাতপ্রাপ্ত শরীর দেখে।পূর্ণতা উন্মা*দের মত কাদতে কাদতে বলছে,

“আম্মু আমি পারলাম না ওই জানোয়ারের হাত থেকে তোমাকে বাঁচাতে। ভেবেছিলাম এ বাড়ি থেকে চিরদিনের জন্য কোথাও চলে যাবো।আর তোমাকে মুক্ত করব এই অশান্তির জীবন থেকে।একটা সুস্থ জীবন দিবো।তোমার শরীরের এই আঘাত আমি সহ্য করতে পারছি না আম্মু।”
পূর্ণতার চোখের পানি প্রভাত সহ্য করতে পারছে না।ইচ্ছা করছে ওয়াজেদ কে এখনি গিলে খেয়ে ফেলতে।প্রভাত পূর্ণতার কাধে হাত রেখে বলল,

“কাকিমনি কে এখনি ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে।”
প্রভাত পূর্ণতার কাঁধে হাত রাখতেই পূর্ণতাকে প্রভাতের হাত সরিয়ে দিয়ে বলল, “সরে যান আপনি। আমার আম্মু তো আপনার কিছু হয়না।তাই আমার আম্মুর যন্ত্রণা আপনি বুঝবেন না।কেন আমি এ বাড়ি ছেড়ে পালাতে চেয়েছিলাম আপনি বুঝবেন না। আমার আম্মুকে মুক্ত করে একটা সুখের জীবন দেওয়ার জন্য। কিন্তু আপনার জন্য পারলাম না।”
প্রভাত অপরাধি কন্ঠে বলল,

“আমি কাকিমনিকে মুক্ত করব এই অশান্তির জীবন থেকে।আই প্রমিজ ইউ।এখন চলো ডাক্তারের কাছে।”
জাহান কে শহরের সব চেয়ে বড় হসপিটালে ভর্তি করা হল।পূর্ণতা জাহানের হাত ধরে বসে কেদেই যাচ্ছে।
এমন সময় জাহান চোখ খুলল।চোখ খুলে দেখল পূর্ণতা হাউমাউ করে কাদছে।জাহানের দু’চোখ বেয়ে পানি পড়ছে।মেয়েকে কাছে টেনে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে বলল,

“আমার পূর্ণ সোনা।আমার ক-লি-জা- র টুকরো।পারলে তোমাকে আমার ক* লি* জা* র ভেতর লুকিয়ে রাখতাম সোনা। তুমি ছাড়া কেউ নেই আমার এই জীবনে।আমি ম*রে গেলে আমাকে মনে রাখার মত তুমি ছাড়া আর কেউ থাকবে না।মাঝে মাঝে ভাবি আমি এই পৃথিবীতে না থাকলে কে তোমাকে দেখবে।আগে এই চিন্তাটা বেশী করতাম।কিন্তু এখন প্রভাত আছে। তোমাকে আমার চেয়ে বেশী আগলে রাখার মত মানুষের হাতে তুলে দিয়েছি।”
“তুমি এসব কি বলছো আম্মু।কোনদিন ম’ রা’ র কথা আমার সামনে বলবে না।আমি আর তুমি ওই চৌধুরী বাড়িতে আর ফিরে যাবোনা আম্মু।”

প্রভাত ডাক্তারের রিপোর্ট নিয়ে দৌঁড়াদৌড়ি করছে।পুষ্প দূর থেকে চোখের পানি ফেলছে মা-মেয়ের এমন আবেগঘন মুহুর্ত দেখে।পুষ্প নিজেও সীমাহীন যন্ত্রণায় ভোগে জাহানের এমন অবস্থা দেখে।কিন্তু তার হাত পা বাঁধা।কিছুই করার নেই।চোখের পানি ছাড়া উপহার দেওয়ার মত কিছুই নেই।এমন সময় হসপিটালে কয়েকজন চিৎকার করতে করতে প্রবেশ করল।এক দল মানুষ দৌঁড়া দৌঁড়ি করতে প্রবেশ করছে।

সাথে পুলিশ ও আছে।পুষ্প খেয়াল করে শুনল তারা বলাবলি করছে এমন ভাল ছেলেটার মাথা কে’ টে কে রেখে গেল।আর দেহ টায় বা কোথায় গেল? পুষ্পের গা ছম ছম করে উঠল।সজলের কথা মনে পড়ল।সজলের ও তো এভাবে মাথা পাওয়া গিয়েছিলো।পুষ্প সাথে সাথে রাজনের নাম্বার ডায়াল করল।রাজনের ফোন বাজছে।রাজন ওয়াশ রুমে।কৃষ্ণ ডেকে বলল,

“রাজন দাদা আপনার ফোন বাজছে।”
“রিসিভ করে বল আমি গোসলে আছি।”
“আচ্ছা দাদা।”
কৃষ্ণ ফোন রিসিভ করতেই ফোনের ওপাশ থেকে সুন্দর চিকন একটি কন্ঠস্বর বলে উঠল,
“আমি পুষ্পতা বলছি।”

রাজন লাফিয়ে উঠে বলল,
“আরে বৌদি, কেমন আছেন? ”
পুষ্প ভ্রুঁ কুচকালো। কে ফোন রিসিভ করল।আর বৌদি ডাকছে কেন? সে কি রং নাম্বার ডায়াল করল।পুষ্প খানিক টা অবাক গলায় বলল,
“বৌদি মানে?”

“আমি আপনার দেবর বৌদি।নাম কৃষ্ণ। রাজন দাদার ছোট ভাই। দাদা বলেছে যেদিন আপনি দাদাকে ভালবাসবেন ওইদিন দাদা আমার আর পূজার বিয়ের খরচ টা দিবে।আপনি রাজি হয়ে যান বৌদি।”
পুষ্পের এবার হাসি পেল।বলল,
“আপনার জিএফ ও আছে?”

“হ আছে, আমি অনেক ভালবাসি বৌদি তারে।নিজের চাইতেও বেশী ভালবাসি।”
রাজন ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে এসে বলল,
“পারলে মাইকিং করে বল, আমি পূজারে অনেক ভালবাসি। দে ফোন দে।দেখি কার ফোন।”
রাজন ফোন নিয়ে পুষ্পের নাম্বার দেখে খানিকটা অবাক হল।পুষ্প তো তাকে ফোন করেনা।রাজনের ঠোঁটের কোনে মিষ্টি হাসি ফুটল।মিষ্টি হেসে বলল,

“ব্যাক করছি আমি।”
রাজন চাইছে কৃষ্ণ কে বিদায় দিয়ে পুষ্পের সাথে গল্প করবে।রাজন কৃষ্ণ-কে হুকুম দিল,
” যা যেখানে মানুষের মাথা পেয়েছিলি ওখানে গিয়ে মাটি খুড়ে দেখ আর কিছু পাস কীনা! পূজা পূজা কম কর আপাতত। মনে হচ্ছে আশে পাশেই কি ঘটছে টের পাচ্ছিনা।”
কৃষ্ণ লাজুক হেসে বলল, ” সব করব দাদা, খালি আমার আর টুম্পার বিয়ে।”
“যা দিয়ে দিব বিয়ে।”

জেলে পাড়ার নদীর কূলে ভীষণ গহীন বাগান।সে বাগানেই ভেষে উঠেছে একটা মাথার খুলি।কৃষ্ণ দু’ঘন্টা যাবত সেই জায়গা কোদাল দিয়ে মাটি খুড়ছে।মাটি খোঁড়ার হুকুম রাজন -ই দিয়েছে।মাটি খুড়তে খুড়তে কৃষ্ণ দেখল অসংখ্য মাথার খুলি।দেখেই কৃষ্ণের গা ছম ছম করে উঠল।এত মাথা কোথা থেকে এল।এমন সময় পূজা একটা টিফিন বক্স আর পানির পট নিয়ে হাজির হল।কৃষ্ণের মাটি খুড়তে খুড়তে খুদা লাগতে পারে ভেবে খাবার নিয়ে এসছে।পূজাকে দেখে কৃষ্ণ একটু অবাক হয়ে বলল,

“এ -কি তুমি এইখানে?”
পূজা মাটি খোড়া জায়গা অসংখ্য মাথার খুলি দেখে ভ*য় পেয়ে চিৎকার দিল।পূজার চিৎকারে কৃষ্ণ গিয়ে পূজাকে জড়িয়ে ধরে বলল,
“কি হয়েছে পা* গ* লি টার।”
“এসব কি? ”
“ধূর, এ নিয়ে কেউ ভ*য় পায়।”

পূজা বলল, ” তুমি এইসব ঝামেলায় জড়াচ্ছো কেন কৃষ্ণ? আমার কিন্তু ভ-য় করছে।”
“এই সব ঝামেলায় জড়াচ্ছি তো তোমার জন্যই।”
“আমার জন্য কেন?”
“রাজন দাদার পাশে থাকলে আমার ভ-য় কীসের? তোমাকে পালিয়ে নিয়ে বিয়ে করলে কে আটকাবে আমাকে।তোমার বাপ কোনো মামলা দিলে রাজন দাদা আটকায় দিবে।”
“মামলা থেকে বাঁচতে তুমি, এই পথ বেছে নিয়েছো?”

“হ, তোমাকে নিয়ে সুখের ঘর সংসার করতে চাই।তুমি তো আর জানোনা তোমাকে আমি কত ভালবাসি।এখন অনেক ভয় করে।কলেজে গিয়ে যদি কোনো শিক্ষিত পোলার প্রেমে পড়ো।”
“তুমি এসব কি বলো।এতই যখন ভয় আমাকে বিয়ে করে নাও। আমি আর কলেজ যাবোনা।”
“না না তোমাকে শিক্ষিত হতে হবে।আমার বউ চাকরি করবে।”

“যাও পুরোহিত ডেকে আনো তুমি আগে।রেগুলার বলো আমি কার সাথে ভেগে যাবো।”
“পুরোহিত লাগবে না, মানুষ ও লাগবে না।এই বাগানে নিশ্চিন্তে ফুলসজ্জা করে ফেলতে পারব।”
“কি যা তা বলছো।”
“দাঁড়াও, তোমাকে সিঁদূর পরিয়ে দিচ্ছি।”

কৃষ্ণ কোদালে আঙুলের পোচ দিল।পূজা চেচিয়ে উঠে বলল, ” কি করছো তুমি?”
কৃষ্ণ হাসল।হেসে আঙুলের সেই র*ক্ত পূজার সিঁথিতে দিয়ে বলল,
” সিঁদূর পরাই দিছি পূজা।আজ থেকে তুমি আমার বউ। কাল কোনো এক মন্দিরে গিয়ে বিয়েটা পড়ে আসব ভাল করে।”

“তাই বলে নিজের হাতটা এভাবে কা’ ট’ লে।”
“তোমার জন্য জা’ন দিলেও বা কী পা-গ-লি।খাবার এনেছো খাইয়ে দাও তো।”
পূজা খিচুড়ি নিয়ে এসছে।কৃষ্ণের গালে তুলে খাইয়ে দিতে দিতে বলল,
“আমার খুব ভ-য় করে কৃষ্ণ। তুমি এসব ঝামেলায় জড়িও না।”
“কিচ্ছু হবেনা আমার।একদম কিচ্ছু না।”

“তোমার কিছু হলে আমি একদম ম’ রে যাবো। রেগুলার এ শহরে মানুষের কা-টা মাথা পাওয়া যায়।তুমি অজান্তে এই ঝামেলায় জড়িয়ে পড়লে।কবে না জানি ওরা তোমার ক্ষতি করে।”
“তোমার ভালবাসা আমার বিশাল বড় পাওয়ার। গায়ে একশ পুরুষের শক্তি পায়।কেউ কিছু বলতে আসলে পেরে উঠবে না।”

অর্ধাঙ্গিনী পর্ব ২১

পূজা রুপবতি একটা মেয়ে।কৃষ্ণ অধিক কালো একটি ছেলে।লেখাপড়া জানেনা।পূজা কলেজে পড়ে।তেল আর জলের মত পার্থক্য। তবুও পূজা কৃষ্ণ কে নিজের চাইতে বেশী ভালবাসে।

অর্ধাঙ্গিনী পর্ব ২৩

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here