আগুনের তৃষ্ণা পর্ব ১৩ || Maishara Jahan

আগুনের তৃষ্ণা পর্ব ১৩
Maishara Jahan

,,,,,, হ্যালো,, যা বলছি মন দিয়ে শুনবে, যার ছবি দিয়েছি, সে যেনো কাল কোনো ভাবেই বাঁচতে না পারে, ওরা সেখানেই আছে, যতো টাকা লাগবে পেয়ে যাবে, শুধু কাজটা সুন্দর ভাবে হওয়া চাই। আর হ্যাঁ বেশি কষ্ট দিয়ে মারার কথা ভাববে না।
,,,, ওকে স্যার, আই আন্ডারস্ট্যান্ড।
,,,,,,, আর শুন বেশি কষ্ট দিয়ে মারলে আমি তোর জান নিয়ে নিবো। এমন ভাবে মারবি যেনো কোনো ব্যাথা না পায় বুঝলি।
,,,,,স্যার তাহলে গুলি করে মরে ফেলি।
লোকটা পাগলের মতো চিৎকার করে রেগে বলে,,,,, নাআআ একদম না, গুলি খেয়ে দেখছিলি কেমন লাগে, গুলি করলে মানুষ ছটফট করতে করতে মারা যায়, তখন তার না জানি কতো কষ্ট হয়। গুলি, ছুরি এসব ব্যবহার করা যাবে না। রক্ত দেখলে আমার মাথা নষ্ট হয়ে যায়, রক্ত বের হওয়া যাবে না।

,,,,, (I think, he is mentally sick) [আমার মনে হয়, সে মানসিক ভাবে অসুস্থ ] ওকে স্যার কোনো রক্ত বের হবে না, আপনি চিন্তা করবেন না, আমি সব সামলে নিবো।
,,,,ওকে।
,,,,,,
ঘুম ঘুম ভাব চোখে, সূর্যের আলো হালকা চোখে চোখে বাঝছে, অন্য দিকে ফিরে ঘুমানোর চেষ্টা করতে থাকি। অনুভব করলাম আমার হাত যেনো কারো খালি গায়ে আছে। আমি চোখ বন্ধ করেই হাত দিয়ে ঘুরিয়ে বুঝার চেষ্টা করছি যে, আমি কি স্পর্শ করছি। চোখ খুলতে একদম ইচ্ছে করছে না।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

অনুভব করলাম কেও আমার হাতটা নিয়ে তার নরম ঠোঁটের স্পর্শ দিলো। আমি মৃদু মৃদু করে তাকাকাম, আমার চোখের সামনে অয়নের চেহেরা ভেসে উঠলো, তার চেহেরা দেখে আমার ঠোঁটে হাসি চলে আসলেও সেটা আর বেশি ক্ষন স্থায়ী থাকে না।
অয়নের খালি গা, খালি বলতে কমোর পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে খালি। হঠাৎ করেই আমার পাশে অয়নকে এভাবে দেখে কিছুটা চমকে গিয়ে উঠে বলতে থাকি,,, লজ্জা করে না, একটা মেয়ের সামনে এভাবে থাকতে, আমি আপনাকে কতো বার বলেছি এভাবে খালি গায়ে আসবেন না আমার সামনে, নিজের তো লজ্জা নেয়, অন্যদের ও বেশরম ভাবে।

আমি অয়নের দিকে তাকালাম, কারন আমি এতো কিছু বলছি কিন্তু অয়ন একটা কথাও বলছে না। আমি তার দিকে রাগী দৃষ্টি নিক্ষেপ করি। সে মুশকি হেঁসে তার চোখ দুটি আমার বডির দিকে ইশারা করে। আমি কপাল কুঁচকিয়ে আমার দিকে তাকায়।
তাকানো মাত্র এক চিৎকার দিয়ে চাদরটা টান দিয়ে নিজেকে প্যাচিয়ে বলি,,,, আমার এই অবস্থা কেনো, কি করেছেন আমার সাথে। কিভাবে করতে পারলেন আমার সাথে এটা।

অয়ন সোজা হয়ে নিজের বডির দিকে ইশারা করে বলে,,,,, শুধু আমি করেছি তুমি কিছু করো নি।
আমি তাকিয়ে দেখি অয়নের সাদা বুকে, গলায় পেটে বিভিন্ন জায়গায় লিপস্টিক এর দাগ,আমি কিছু বুঝতে না পেরে কাঁদো কাঁদো ভাবে বললাম,,,,, আপনার গায়ে লিপস্টিক কেনো, কোন মেয়ের সাথে আবার কি করেছেন।
অয়ন আমার আর তার দিকে ইশারা করে বললো,,, লাইক সিরিয়াসলি,, এই অবস্থায় আমাদের দেখেও বলছো আমি অন্য মেয়ের সাথে ছিলাম।

,,, সেটাই তো, আমাদের এ অবস্থা কেনো।
অয়ন দুষ্টু হাসি দিয়ে বলে,,,, সেটা তুমি আমাকে জিজ্ঞেস করছো, কোনো তোমার মনে নেয়, নাকি আবার মনে করিয়ে দিতে হবে।
অয়নের কথায় আমি একটু চিন্তা করতে লাগলাম, যেহেতু আমার একটু হলেও হুশ ছিলো তাই সব মনে পড়ে লেগো। সব মনে পড়তেই মনে চাচ্ছে মাটি ফাঁক করে ঢুকে পড়ি। আমি আর অয়নের মুখের দিকে তাকালাম না, সোজা চাদরের ভিতরে ঢুকে গেছি।
অয়ন হেঁসে চাদরের উপর দিয়ে আমাকে জরিয়ে ধরে বলে,,,, এই লজ্জা কাল কোথায় ছিলো, এখন লজ্জা পেয়ে লাভ নেয়। কারন এখন থেকে সকালে উঠে নিজেকে এভাবে দেখার অভ্যাস করে নাও।

,,, মানে।
,,,,, মানে হলো,, এখন আর তোমার থেকে দূরে থাকা আমার পক্ষে সম্ভব না। সো বেবি আর লজ্জা পেয়ো না। তোমার এই লজ্জা আমাকে তোমার প্রতি আরো বেশি এট্রাক করে।
আমি চাদরের ভিতর থেকে মোচরা মোচরি করে অয়নকে সরিয়ে নিজের মাথাটা অল্প একটু বের করে কাঁদো কাঁদো গলায় বললাম,,,আপনি অনেক খারাপ, কথা নাই আপনার সাথে।

,,,, ঠিক আছে বুঝলাম আমি অনেক খারাপ, সো এখন গোসল করতে কে আগে যাবে আমি না আপনি, নাকি,,
অয়ন তাই নাকি বলে থেমে আমার দিকে অন্য রকম ভাবে তাকিয়ে আছে। আমিও ব্রু কুঁচকিয়ে জিজ্ঞেস করলাম,,,, নাকি কি?
ওনার মুখটা একটু কাছে এনে আস্তে করে বললো,,, নাকি এক সাথে যাবে।
আমি সোজা চাদর নিয়ে দাড়িয়ে গেলাম, বিছানা থেকে তাড়াতাড়ি নেমে সোজা ওয়াশ রুমে চলে গেলাম,, অয়ন হাসতে হাসতে বলছে,,, আরে চাদরটাতো রেখে যাও।

গোসলটা সেরে কোনো মতো পা টিপে টিপে বের হলাম, দেখলাম কেও নেয়,যাক বাচা গেলো। আমি আরামছে গুন গুন করে চুল আঁচড়াচ্ছি। হঠাৎ করেই কেও আমাকে পিছন দিক থেকে জরিয়ে ধরে, স্পর্শটা অনেক চিনা, যদিও এই স্পর্শটা কালকেই প্রথম পেলাম, তাও অনেক চিনা লাগে।
অয়ন তার ভিজা মাথা আমার ঘাড়ের উপরে রাখে, ওনার স্পর্শে আলাদা একটা অনুভুতি আছে। নিজেকে সামলে নিয়ে আমি অয়নকে ছাড়িয়ে বললাম,,, কি করছেনটা কি।
অয়ন হেঁসে বললো,,,ভালোবাসছি।
ইশশ এই হাসিতে আমি হাজার বার মরে যাবো। আমি তাও মুখ বেকিয়ে বললাম,,,, হঠাৎ কি হলো, এগে তো এমন করতেন না,হঠাৎ এতো ভালোবাসা।

অয়ন মুশকি হেঁসে বললো,,, ভালোবাসা তো কোনো দিনও কম ছিলো না, আর তুমি হঠাৎ দেখলে, তোমার কাছে আসতাম না তার মানে এই না যে, আমি তোমায় ভালোবাসতাম না। আমি শুধু অপেক্ষায় ছিলাম।
,,,, কিসের অপেক্ষা।
,,,, অপেক্ষা করছিলাম তোমার ভালোবাসার, যে দিন তুমি আমাকে নিজের ইচ্ছায় আপন করে নিবে। আমাকে ভালোবাসি বলবে।
,,,ইশশ ঐটা তো আমি নেশায় ছিলাম, আর ভালোবাসি কখন বললাম।
,,,, নেশায় ছিলে কিন্তু এতোটাও না, আর কাল নিজের মনের ইচ্ছেটা পূরণ করেছো, আর ভালোবাসি এটা কাল হাজার বার বলেছো। আর এগুলো যে আপনার মনের কথা ছিলো সেটা আপনার চোখ বলে দিছে।
আমি লজ্জায় লাল হয়ে বলি,, আপনি একটু বেশিই বুঝেন। এমন কিছুই ছিলো না ওকে।

,,,ইশশ এখনো এতো লজ্জা কাল লজ্জা ভাঙ্গেনি বুঝি। ঠিক আছে আজ ভাঙিয়ে দিবে রাতে, ওকে।
,,,, ইশশ চুপ,,, আপনি গোসল কোথয় করলেন, ওয়াশ রুমে তো আমি ছিলাম।
,,,৷ মেম এখানে আরো রুম আছে সো ওয়াশ রুমও আছে। আপনি কথা ঘুরাবেন না।
,,আমি কোথায় কথা ঘুরালাম,, আচ্ছা আজকে কোথাও নিয়ে যাবেন না।
,,,,হুমম,, আজ আমরা এই শহরটা ঘুরে তারপর বিকেলে যাবো ডলফিন দেখতে।
আমি এক্সাইটেড হয়ে বললাম,,, ওয়াও,, সত্যি, আমার তো আর সহ্য হচ্ছে না, কবে দেখতে পাবো।
,,,,আজি পারবে,, এখন চলো খাবে।

সায়ন এর খুব জ্বর, তাই প্রহর তাড়াতাড়ি ডক্টরকে ফোন করে। সবাই সায়ন এর রুমেই আছে।
প্রহর,,,,, হঠাৎ করে এতো জ্বর বাদালি কি করে।
সায়ন কোনো রকমে বলে,,,, সেটাই তো বুঝতে পারছি না।
ডক্টর আলো তাড়াতাড়ি আসে, এসে সায়নকে এভাবে দেখে অস্থির হয়ে যায়। আলো তাড়াতাড়ি এসে সায়ন এর মাথায় হাত দিয়ে দেখে অনেক জ্বর। সে তাড়াতাড়ি সায়নের জ্বর মাপে আর এমনি চেকাপ করে বলে,,,,, অনেকটা কেটে গেছে তো তাই জ্বর এসেছে, ঔষধ দিয়ে দিচ্ছি ঠিক হয়ে যাবে।
সায়ন কাঁপতে কাঁপতে বলে,,,,, আজকে আবার ইনজেকশন দিবেন না।

আলো মুশকি হেঁসে বলে,,, ওকে দিবো না। সবার উদ্দেশ্য করে বলে,,,আপনারা ঘরটা খালি করলে ভালো হতো।
সবাই চলে যায়, আলো টেবিলে খাবার দেখে রাগ দেখিয়ে বলে,, একি আপনি খাবারটা খাননি কেনো। আর নিশ্চয়ই কাল ঔষধ খাননি তাই জ্বর এসেছে। কাল মনে করিয়ে দেওয়ার পরেও এই অবস্থা। কি বলবো কি আপনাকে, নিজের কোনো খেয়াল না করেন অন্তত যারা আপনাকে ভালোবাসে তাদের কথা ভেবে তো নিজের খেয়াল রাখতে পারেন নাকি। এখন যদি আপনাকে হসপিটালে ভর্তি করিয়ে দিয় তাহলে কি খুব ভালো হবে।
সায়ন,,, সুসস,,, বলে আলোকে চুপ করিয়ে দিয়ে বলে,,, এতো কথা কিভাবে বলেন মিস্ আলো, আমি অসুস্থ এতে আপনার এতো রাগের কি হলো। সবার সাথেই এমন করেন নাকি।
আলো মুখ ফুলিয়ে বললো,,, বয়েই গেছে আমার, সবার সাথে রাগ দেখাতে। আচ্ছা রাগ করবো না, খবারটা খেয়ে ঔষধটা খেয়ে পরে ঘুমাবেন।

,,,,আপনি যান আমি খেয়ে নিবো।
,,,, কোনো কথা হবে না, আপনি না খাওয়া পর্যন্ত আমি এখান থেকে যানো না।
,,, আরে বুঝার চেষ্টা করেন, আপনি না গেলে প্রবলেম আছে।
,,,,, কি প্রবলেম হুমম,,আপনার প্রবলেম আপনার কাছে রাখুন। আপনি যদি না খান তাহলে আমি যাবো না।
,,,, অদ্ভুত জ্বালা তো।
,,,হুমম।
,,,,আচ্ছা,,, কোথায় দিন খাবার।

আলো সায়নকে ধরে বসায়, পড়ে এক চামচ সুপ এগিয়ে নিয়ে দেয় সায়নের মুখের সামনে, সায়ন একবার চামচ এর দিকে তাকিয়ে আরেক বার আলোর দিকে তাকায়, পরে সায়ন সুপের বাটি আর চামচ আলোর হাত থেকে নিয়ে বলে,,, আমি একায় খেতে পারবো।
সায়ন সুপ খাচ্ছে আর এদিক সেদিক বার বার তাকাচ্ছে, আর মন খারাপ করে আছে, আলো সায়নকে ভালো ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। একটু পর সায়ন বাটিটা এগিয়ে দিয়ে বলে,,,, হয়েছে আমি আর খেতে পারবো না, আর খেলে বমি হয়ে যাবে।
আলো বাটিটা নিয়ে বললো,, ঠিক আছে আর খাওয়া লাগবে না, এই ঔষধ গুলো এবার খেয়ে ফেলেন তো দেখি।
আলো পানির গ্লাস এগিয়ে দেয়, ঔষধ খায়িয়ে দেয়। সায়ন ভালো হয়ে শুয়ে বলে,,,এবার আপনি যান না হলে আমার ঘুম আসবে না।

,,, আসবে আসবে, আমি থাকলেই আসবে।
,,,, বললাম তো আপনি থাকলে আসবে না। যান তো এখান থেকে।
,,,, আপনি এতো জান জান করবেন না তো, আমার লজ্জা করে না।
,,,, আরে,, কিসের সাথে কি মিলাচ্ছে। পিল্জ এখান থেকে জান না।
,,, ইশশ সুসসস,, আমি মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি, আপনি ঘুমান।
,,, লাগবে না আমার।
আলো কথা না বারিয়ে সায়নের মাথায় হাত বুলাতে থাকে। আর গুন গুন করতে থাকে। সায়ন আর কিছু বলে না, আলো গান মনোযোগ দিয়ে শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে পড়ে।
আলো কিছু ক্ষন সায়নের দিকে তাকিয়ে থাকে, তারপর বাহিরে গিয়ে দেখে কেও আছে নাকি, ওরে সায়নের পুরো রুমে কিছু একটা খুঁজতে থাকে। আরো অনেক কিছু ছবি তুলে নিয়ে যায়।

স্নেহা প্রহরকে ফোন করে,, হ্যালো প্রহর আমি কখন আসবো।
,,,আজ আসতে হবে না, আজ আমার কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ আছে তাই আমি কোনো জায়গা যেতে পারবো না।
,,,,, আপনার চসা লাগবে না, আমিই এসে পড়ি।
৷,,,, আপনি আসলে আমার কাজে ডিস্টার্ব হবে, আপনার আসার কোনো দরকার নেয়।
,,,,, আমি একটা কথাও বলবো না প্রমিজ।
,,,,,, নো মিনস্ নো,, কাল দেখা হবে আমাদের কিন্তু আজকে পারবো না, আমাকে আমার লেখার দিকে ফোকাস করতে হবে।
,,,,, আপনার সাথে কথা না বলে, আমার দিন কাটবে কি করে।
,,,,, আগে যেভাবে কাটাতে।
,,,,,,, আগের দিনের মতো পরিস্থিতি তো এখন নেয়, আচ্ছা আপনার একটা ভালো বইয়ের নাম বলেন আজ এটা পরেই দিন কাটিয়ে দিবো। আর হ্যা লাভ স্টোরি হতে হবে কিন্তু।

,,,,, নিশি রাত পরো।
,,, না, সেড এন্ডিং এটা।
,,,,,,সেই তুমি।
,,,,, না এটাতো অনেক কষ্ট।
,,,,,,এক বিন্দু ভালোবাসা পড়ো তাহলে।
,,,, আরে দূরর সব পড়া বইয়ের নাম বলছেন কেনো।
,,,,, তুমি সব পড়ে থাকলে আমি কি করবো।
,,,,,সব পড়া হয়নি,, স্নেহময় ভালোবাসা পড়া হয়নি।
,,,, তাহলে এটা পড়ো, শুধু শুধু আমাকে বিরক্ত করার মানে কি।
,,,, এটাই, আপনার সাথে বেশি কথা বলতে পারলাম।
,,, আচ্ছা আপনার এই বইয়ে কিন্তু আমার নাম আছে, খেয়াল করেছেন আপনি।
,,,হুমম করলাম তো, এখন রাখি।
,,,,,একদিন আপনার মুখ থেকে আপনার গল্প শুনবো।
,,,, আমি গল্প লিখতে ভালোবাসি শুনাতে না।
,,,,,আমার এই মনের আশা একদিন ঠিক পূরণ হবে, এটা আমার মন বলে।
,,,,,,, আচ্ছা, রাখি এখন।
বলে রেখে দিয়ে বলে,,,,,সবার সব ইচ্ছে পূরণ হয়না, কিছু ইচ্ছে মনের মধ্যেই বাসা বেঁধে রয়ে যায় আজীবন।

অয়ন আর আমি শহরটা ঘুরে দেখলাম, বিকেল হয়ে গেছে। দুজনে বোর্ডে করে বেরিয়ে পড়ি ডলফিন দেখার জন্য। সূর্যের তেজ বেশি নেয়, তাও নীল সমুদ্র ঝকঝক করছে আলোতে। বোর্ড অনেক স্পিটে চলায় বাতাস সো জোরে এসে লাগছে মুখে। চুলের অবস্থা ভালো না। বাতাসে হাতেই আসছে না।
অয়ন পিছনে দাঁড়িয়ে আমার চুল জুটি করে দিয়ে একটা কেপ পড়িয়ে যায়। আমি অয়নের বাহু জরিয়ে ধরে সমুদ্রের ঢেউ দেখছি, বুক কাপানো ঢেউ, তার মধ্যে সাঁতার ও পারি না।
অয়ন মুশকি হেসে বলে,,,,, কি ভয় করছে।
,,,, এতো বেশি না, আপনি আছেন না।
,,,,, আচ্ছা নীর
,,,,হুমম
অয়ন শান্ত হয়ে বলে,,, না কিছু না।
আমি মুশকি হেঁসে বললাম,,,, একি, অয়ন মানে আগুন সমুদ্রে এসে শান্ত হয়ে গেছে।
অয়ন এই সমুদ্রের স্পর্শে না, এই নীরের স্পর্শে শান্ত হয়ে গেছে।

আগুনের তৃষ্ণা পর্ব ১২

দুজনেই চুপচাপ দাঁড়িয়ে দেখছি, কিছু ক্ষন পরে বোর্ড থেমে যায়, মানে আমরা এসে গেছি, আমি তো অনেক এক্সাইটেড। একটু পরেই শত শত ডলফিন আমাদের পাশ দিয়ে যেতে থাকে। ডলফিনের মতো আমিও লাফাতে থাকি।
আমার দেখা বেস্ট সিন এটা। আমি জোরে জোরে বলতে থাকি,,, অয়ন দেখো দেখো কতো গুলো, কতো সুন্দর।
ডলফিনের জন্য সমুদ্রের পানি ভালো করে দেখা যাচ্ছে না। আমার মনে যাচ্ছে, আমি এই ডলফিনদের সাথে চলে যায়,অয়ন কিছু ছবি আর ভিডিও করে নেয়, স্মৃতি হিসেবে।
বেশ অনেক ক্ষন দেখার পর, ডলফিনরা সব চলে যায়, সাথে সাথে আবার শুরু হয়ে যায় বোর্ড। আমরা তীরে চলে আসি।
কিছু ক্ষন আমরা তীরে হাঁটা হাঁটি করছিলাম, এর একটু পড়েই আমরা একটা ছোট রেস্টুরেন্টে যায়,সেখানে সবাই আনন্দ করছে, নাচ গান হচ্ছে। অয়ন আমাকে ভালো করে বলে দেয়, যাতে উল্টাপাল্টা কিছু না খায়।
অয়ন আমাদের জন্য খাবার আনতে যায়, এসে দেখে মারু কোথাও নেয়, অয়ন চারপাশে খুঁজে ও পায় না, অয়ন অস্থির হয়ে খুঁজতে থাকে।

খবর নিয়ে দেখে মারুকে কারা সমুদ্রের দিকে নিয়ে গেছে।
,,, নীর সাঁতার পারেনা তার মধ্যে রাত সমুদ্রের যদি কেও না না।
বলে অয়ন পাগলের মত দৌড়াতে থাকে সমুদ্রের দিকে।
মারুকে অনেক ধরে নিয়ে যায় সমুদ্রের দিকে, মারুর মুখ বেধে নিয়ে যায়। একটা একটা বোর্ডে করে মারুকে সমুদ্রের কিছুটা গভীরে নিয়ে যায়,মারু ছুটোছুটি করছে কিন্তু কোনো লাব হচ্ছে না, মনে মনে শুধু অয়নকে ডাকছে। সমুদ্রে নিয়ে গিয়ে মারুকে পানিতে ফেলে দেয়।

আগুনের তৃষ্ণা পর্ব ১৪