আমার শহরে তোমার আমন্ত্রণ সিজন ২ পর্ব ২৮

আমার শহরে তোমার আমন্ত্রণ সিজন ২ পর্ব ২৮
Raiha Zubair Ripte

জাহাঙ্গীরনগর নামটি শুনলেই মনের মধ্যে এক প্রকার অদ্ভূত আলোড়নের সৃষ্টি হয়। কবিতায় পড়েছি ঐ দেখা যায় তালগাছ ঐ আমাদের গাঁ, ঠিক এরকমই ওই দেখা যায় জাহাঙ্গীরনগর ওই আমাদের গাঁ। দেখে মনে হবে ইট পাথরের কর্কশ নগরীর মধ্যে এক টুকরো গ্রামীণ পরিবেশ।

গ্রামীণ পরিবেশের সব উপাদান নিয়ে গড়ে উঠেছে স্বপ্নের জাহাঙ্গীরনগর। বাংলাদেশের সৌন্দর্যমন্ডিত জায়গা গুলোর মধ্যে একটি। ঘন গাছপালা আর পাখপাখালির মিশ্রণে একাকার এখানকার পরিবেশ। আধুনিক সভ্যতার আদলে তৈরি হয়েছে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়। উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো যেন প্রযুক্তির একই ধাঁচে নির্মিত। শহরের ভারি আবহাওয়ায় মলিন সব বিশ্ববিদ্যালয়ের মসৃণ দেয়াল।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

ক্যাম্পাসে নেই কোনো প্রাণের সঞ্চার। আধুনিকতার কৃত্রিম সৌন্দর্য শিক্ষার্থীদের প্রকৃত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত করেছে। শিক্ষার পরিবেশ প্রাকৃতিক হওয়াটাই বাঞ্ছনীয়। অথচ আধুনিক কৃত্রিম শিক্ষা আর কৃত্রিম ক্যাম্পাস জীবন শিক্ষার্থীদের নিয়ে যাচ্ছে জটিল ও কঠিন পৃথিবীতে।
আজকের এই জাহাঙ্গীরনগর অতীতের চেয়ে বেশ আলাদা। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য যেন তার সমস্ত ঐশ্বর্য নিয়ে ঘাঁটি গেড়েছে। বিচিত্র ধরনের গাছপালা থেকে শুরু করে পাখপাখালি, সরীসৃপ, বাহারি সব উদ্ভিদের অবস্থান এই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে।

চারিদিকে হিমশীতল ঠান্ডা বাতাস। শরীরে কোনো শীতের জন্য পোষাক নেই। ব্লু পাঞ্জাবি পরিহিত এক পুরুষের পায়ের সাথে পা মিলিয়ে হাঁটছে গোল্ডেন কালারের সেলোয়ার-কামিজ পড়া এক রমণী। হাঁটার মাঝেমাঝে একে ওপরের হাতে ছোঁয়া লাগছে। দৃষ্টি তাদের সামনের দিকে থাকা রাস্তা সহ রাস্তার আশেপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কয়েক জোড়া যুগলবন্দী প্রেমিক প্রেমিকার দিকে। কেউ কেউ হাত ধরে হাঁটছে তো কেউ টঙের দোকানে বসে চা খাচ্ছে । আর কেউ প্রিয় পুরুষের কাঁধে মাথা রেখে বসে চন্দ্র বিলাস করছে।

ইট-কাঠের এই রঙিন দুনিয়া যেন মানুষের মনকে বিষিয়ে তুলেছে। প্রকৃতি বরাবরই মানুষকে মানবিকতার শিক্ষা দেয়। মানুষ প্রকৃতির কাছে না গেলে বুঝতে পারে না প্রকৃত জীবনের রোমাঞ্চকর মুহূর্ত। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেশ আলাদা। আর এর পেছনে রয়েছে এর রূপ বৈচিত্র্যর সমাহার। জাহাঙ্গীরনগর ক্যাম্পাসে রয়েছে অগাধ প্রাকৃতিক সম্পদ। যে সম্পদ বিশ্ববিদ্যালয়কে করেছে বেশ সমৃদ্ধ। বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে রয়েছে অগাধ প্রজাতির গাছপালা। যে গাছপালাগুলো ক্যাম্পাস জুড়ে অক্সিজেন সরবরাহ করছে।
হুট করে হাঁটার গতি থমকে গেলো। টঙের দোকান থেকে দু কাপ চা নিয়ে দোকান দার কে বিল পে করে দিয়ে একটা চায়ের কাপ অধরার হাতে ধরিয়ে আবার হাঁটা ধরলো।

আজ হেঁটে হেঁটে পুরো জাবির ক্যাম্পাস ঘুরবে তারা। মুহুর্ত টা এনজয় করবে। কোনো এক জায়গা থেকে সেই নতুনত্ব কে খুঁজে বাড়ি ফিরবে বলে মনস্থির করেছে।
গরম চায়ে ফু দিয়ে ঠোঁট ছোয়ালো। পিনপিনে নিরবতাকে বিদায় দিয়ে রাতুল বলে উঠলো-
-“ আমাদের বাসায় যেতে পারবেন আজ?
অধরা মুখের সামনে থেকে চায়ের কাপ সরালো। জিহ্বা দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে নিয়ে বলে-

-“ হঠাৎ বাসায় কেনো?
রাতুলের সোজা কথা।
-“ আম্মার সাথে দেখা করাতে।
অধরা কিয়ৎ ক্ষন চুপ থাকে। আশেপাশে চোখ ঘুরিয়ে বলে-
-“ আচ্ছা যাব।

রাতুলের মুখে হাসি ফুটে উঠে। অধরা কে নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে একটি ছোট্ট ব্রিজে আসে। এখানকার ছাত্রছাত্রীরা আদর করে গোল্ডেন ব্রীজ বলে ডাকে, এরকম ব্রিজের সংখ্যা ও অগনিত, সুযোগ পেলেই যার উপরে অনেকে বসে পড়ে, আড্ডা জমায়। ব্রিজের পাশে পদ্ম ফোটা লেক, এখানে বসলে দুর থেকে প্রীতলতা হলের স্থাপত্যশৈলীর মাঝে নিজেকে কিছুক্ষন হারিয়ে ফেলতে ইচ্ছে করবে যে কারো। চোখ জুড়িয়ে আসবে, হাতছানি দিয়ে ডাকবে হলের চূড়াটি। যা ভাষায় প্রকাশের সীমাও ছাড়িয়ে যায়।

ব্রিজের উপর রাতুল আর অধরা বসে পড়ে। দৃষ্টি তাদের পদ্ম ফোটা লেকের দিকে। এখানটায় আসলেই অধরা ঐ পদ্ম ফুল গুলোকে ছুঁইয়ে দিতে ইচ্ছে করে। কিন্তু তা সম্ভব নয়। কথাটা মনে মনে ভেবেই তপ্ত শ্বাস ফেলে। হঠাৎ পকেটে থাকা ফোন টা বেজে উঠে। পকেট থেকে ফোনটা বের করতেই দেখে রোমিলা বেগমের ফোন। রাতুল ফোন রিসিভ করলো। ওপাশ থেকে কর্কশ গলায় ভেসে আসলো-

-“ কি রে বাসায় আসবি কখন? রাত জেগে তোর জন্য আর কতক্ষণ বসে থাকা লাগবে আমার?
রাতুল স্মিত হাসলো। অধররা দিকে একপলক তাকিয়ে বলল-
-“ আসছি আর একটু সময় জেগে থাকো।
-“ আচ্ছা আয় তাড়াতাড়ি।

রাতুল ফোন টা কে’টে পকেটে ভরে বসা থেকে উঠে অধরার দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলে-
-“ উঠুন অধরা বাসায় যেতে হবে,তারপর আবার আপনাকে বাসায় ও দিয়ে আসতে হবে।
অধরা রাতুলের হাত ধরে বসা থেকে উঠে। রাতুল একটা রিকশা ডেকে দু’জনে সেই রিকশায় চড়ে বসে।
চিত্রা দের বাসায় পৌঁছাতে পৌঁছাতে সন্ধ্যা লেগে যায়। চিত্রারা বাসায় যেতে না যেতেই চিত্রার মা চয়নিকা বেগম তোরজোড় শুরু করে দেয়। প্রথমবারের মতো মেয়ের জামাই এসেছে বলে কথা। খাতির মাতিরের কমতি হলে কি চলে! মেয়ের জামাইকে আনার পরে চা নাস্তা দিয়ে আবার রান্না ঘরে রান্না বান্না শুরু করে দিছে। এসব দেখে আলগোছে চিত্রাকে ঘরে ঢেকে বলেছিলো এতোসব আয়োজন করতে না। চিত্রা তখন মুচকি হেঁসে বলে,,

-“ আমার মা শুনলে তো এসব করতে মানা করবো। এসবের জন্য মানা করতে গিয়ে উল্টো আমিই বকা খেয়ে আসবো। তার চেয়ে যা হচ্ছে হতে দিন।
চিত্রার রুমে তুষার বিছানায় বসে আছে। চিত্রা ওয়াশরুমে গেছে ফ্রেশ হতে। টাওয়াল দিয়ে মুখ মুছতে মুছতে ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে তুষারের দিকে চেয়ে বলে-
-“ এবার আপনি যান ফ্রেশ হয়ে আসুন।

তুষার বসা থেকে উঠে দাঁড়ালো। চিত্রার হাত থেকে টাওয়াল টা নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে। চিত্রা ক্লান্ত শরীর নিয়ে বিছানায় গা এলিয়ে দেয়।
মিনিট বিশেক পর তুষার ওয়াশরুম থেকে বের হয়। ভেজা টাওয়াল টা চিত্রার পেটের উপর ছুঁড়ে দেয়। ঘুমন্ত চিত্রা ছিটকে উঠে।
চোখ লেগে আসছিলো। আকস্মিক নিজের উপর কিছু পড়ার শব্দে ছিটকে চোখ মেলে তাকায়। তুষার স্মিত হাসছে। চিত্রা ভ্রু কুঁচকালো। থমথমে গলায় বলল-

-” বেলকনিতে মেলে দিয়ে আসেন।
তুষার শুনলো না। ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে একবার দেখে চিত্রার গা ঘেঁষে শুয়ে পড়লো। আর তখনই দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ ভেসে আসলো। চিত্রা উচ্চস্বরে জিজ্ঞেস করলো-

-“ কে?
নুপুর দরজায় আরেক বার কড়া নেড়ে বলে-
-“ আপু আমি। ফুপি ডাকছে খেতে।
-“ তুই যা আসছি।
চিত্রা শোয়া থেকে উঠে বসে। তুষারের চোখ তখন বন্ধ। তুষারের বুকে হাত দিয়ে বলে-
-“ এই উঠুন মা ডাকছে খাওয়ার জন্য।
তুষার চোখ মেলে তাকায়।

-“ তুমি গিয়ে খেয়ো আসো। আমার এখনও ক্ষিদে পায় নি।
-“ পাগল নাকি। আপনাকে রেখে আমি খেয়ে আসবো! হালকা করে হলেও কিছু খান। মা কত কষ্ট করে আপনার জন্য সেই কখন থেকে রান্না করছে।
তুষার উঠে বসলো। বালিশের পাশ থেকে ফোন টা নিয়ে উঠে দাঁড়ালো। চিত্রা কে ইশারায় ঠিক হতে বললো। চিত্রা ওড়না টা মাথায় দিয়ে দরজার সিটকানি খুলল।
ডাইনিং টেবিলের কাছে আসতেই তুষারের চোখ আটকে যায় খাবার দেখে, পুরো ডাইনিং টেবিল নানান পদের খাবারে সজ্জিত।

টেবিলে পোলাও, গরুর মাংস, মরুগির রোস্ট, পায়েস, দই, মিষ্টি,তিন চার রকমের ভাজি,ডিম ভুনা,সাদা ভাত, মাছ। মেয়ের জামাইকে টেনে বসিয়ে দেয় চেয়ারে সাহেল আহমেদ। সাথে নিজেও বসে পড়ে। রিয়াদ আড়চোখে দেখে চলছে। চয়নিকা বেগম সবাই কে খাবার পরিবেশন করছে, মেয়ের জামাইয়ের পাতে পোলাও দিয়ে চয়নিকা বেগম বলে,,

-“ বাবা কিছু মনে করো না এই টুকু টাইমে এইটুকুই আয়োজন করতে পেরেছি।
শাশুড়ীর কথা শুনে তুষার বিষম খায় এতো আয়োজন কে বলছে কি না এই টুকু আয়োজন!
তুষার কে বিষম খেতে দেখে চিত্রা তারাতাড়ি করে পানির গ্লাস এগিয়ে দেয়। তুষার তারাতাড়ি পানি টা খেয়ে শেষ করে। চিত্রার মা একটার পর একটা খাবার শুধু তুষারের প্লেটে উঠিয়ে দিচ্ছে তুষারের মানা শুনছেন না। চয়নিকা বেগম ভেবে বসে আছেন তার মেয়ের জামাই লজ্জার কারনে কিছু নিতে চাচ্ছে না। এদিকে বেচারা তুষারের পেটে জায়গা নেই, সাহেল আহমেদ খানিক আগেই খাবার খাওয়া শেষ করে রুমে গেছে রেস্ট নেবার জন্য, তুষার অসহায় মুখ করে চিত্রার দিকে তাকায়,চিত্রা বিষয়ে টা বুঝতে পেরে তার মা’কে থামতে বলে,,

-“মা আর দিয়ো না তোমার মেয়ের জামাইয়ের পেট একটাই,এতো খাবার কিভাবে খাবে।
-“ সামান্যই তো দিলাম এখনো তো দই পায়েস মিষ্টি বাকি আছে।
-“তুমি রেখে দাও ওগুলো ফ্রিজে শুয়ার আগে আমি তাকে খেতে দিবো নি এখন আর জোর করো না।
চয়নিকা বেগম মেয়ের কথা শুনে আর কিছু বলে না, চিত্রা তুষারের উদ্দেশ্যে বলে,
-“আপনি বরং উঠে হাত ধুয়ে ঘরে গিয়ে বিশ্রাম নিন।
চিত্রার কথা মতো তুষার উঠে হাত ধুয়ে ঘরে চলে গেলো। চিত্রা, চয়নিকা বেগম,সিমি, খাবার খাওয়া শেষ করে প্লেট গুলো ধুয়ে যে যার রুমে যায়।

চিত্রা রুমে গিয়ে দেখে রাসেল শুয়ে আছে, তাই এগিয়ে তুষারের মাথার কাছে গিয়ে বসে পড়লো। তুষার চিত্রার উপস্থিতি টের পেয়ে এক হাত দিয়ে চিত্রার কোমড় পেঁচিয়ে পেটের কাছে মুখ গুজিয়ে দিলো।
-“ আপনার কি খুব খারাপ লাগছে। ঔষধ আনতে বলবো ডাক্তারের দোকান থেকে।
-“ না তার আর দরকার নেই আমার মেডিসিন আমি পেয়ে গেছি। এই মেডিসিনের সেবায় ঠিক হয়ে যাবো।
চিত্রা ভ্রু কুঁচকালো।

-“ কথায় কথায় ছোঁয়ার বাহানা খুঁজেন কেনো এতো।
তুষার স্মিত হাসলো। শাড়ির ভেতরে থাকা উন্মুক্ত পেটে ওষ্ঠ ছুঁয়ে বলে-
-“ তুমি আস্ত টাই তো আমার। সেখানে বাহানা কেনো খুঁজবো?
চিত্রা কেঁপে উঠলো তুষারের ওষ্ঠর ছোঁয়ায়। তুষার বিরক্ত হয়ে বলে-
-“ এখনও এতো কাঁপা-কাঁপি কিসের?

চিত্রা তুষারের মাথা কোল থেকে নামিয়ে বসা থেকে উঠে। কোমড়ে হাত গুঁজে বলে-
-“ শরীর খারাপ লাগছে তো ঘুমানোর চেষ্টা করুন না। তা না করে এখানে ওখানে ছুঁয়ে ছুঁয়ে দিচ্ছেন।
তুষার মাথা উঁচু করলো। ভ্রু কুঁচকে বলে-
-“ আহ উঠলে কেনো? এখান টায় আসো। চুপচাপ শুয়ে থাকো।
চিত্রা বেলকনিতে যেতে যেতে বলে-

-“ মোটেও না। এই সাঝ সন্ধ্যায় আমি সন্ধ্যা বিলাস করবো। আপনি শুয়ে থাকুন।
তুষার শোয়া থেকে উঠে বসলো। বেলকনিতে গিয়ে চিত্রা কে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে গলায় মুখ ডুবিয়ে বলে-
-“ আজ না হয় চন্দ্র বিলাস করবো মিসেস খাঁন। সন্ধ্যা বিলাস না অন্য কোনো একদিন হবে।
কলিংবেলের আওয়াজ শুনে দরজা খুলে ছেলের সাথে পরিচিত মুখ দেখতে পেয়ে মুখে হাসি ফুটে উঠে। দরজার পাশ থেকে তাড়াতাড়ি করে সরে দাঁড়িয়ে অধরার গালে হাত দিয়ে বলে-

-“ আরে অধরা যে।
অধরা স্মিত হাসলো। রোমিলা বেগম অধরার হাত ধরে ভেতরে নিয়ে সোফায় বসায়। রাতুল দরজা আটকিয়ে দেয়। রোমিলা বেগম রাতুলের দিকে তাকিয়ে বলে-
-“ ওঁকে নিয়ে আসছিস বললি না কেনো?
-“ সারপ্রাইজ।
-“ আমি তো সেভাবে রান্না করি নি। আচ্ছা বস চটপট কিছু রান্না করে আসছি।
অধরা হাত টেনে ধরলো। আস্বস্ত করে বলল-

-“ আন্টি আমি খেয়ে এসেছি। এতো তোড়জোড় করার দরকার নেই।
-“ তাই বললে হয় নাকি?
-“ কেনো হবে না? আপনি বসুন। কিচ্ছু করতে হবে না।
রোমিলা বেগম বসে রইলো। রাতুল রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসলো। রোমিলা বেগম ছেলের ঘরের দিকে গেলো। ছেলের সামনে দাঁড়িয়ে বলল-

-“ হঠাৎ রাত করে অধরা কে নিয়ে আসলি যে?
-“ কেনো খুশি হও নি?
-“ হয়েছি। কিন্তু কখনও তো দেখি নি ওর সাথে মিশতে তোকে।
-“ এখন থেকে মেশার চেষ্টা করবো।
-“ তোদের মধ্যে কিছু চলছে?
রোমিলা বেগম সন্দেহান দৃষ্টি নিয়ে কথাটা বলল। রাতুল স্মিত হাসলো। রোমিলা রহমানের গলা জড়িয়ে ধরে বলল-

-“ বুঝলে কি করে?
-“ কে হই আমি তোর?
-“ মা।
-“ তো ছেলের ভাবসাব আমি বুঝবো না?
-“ একা রেখে চলে আসছো। কিছু ভেবে বসে যদি। চলো।
ড্রয়িং রুমের সোফায় বসে আছে তৃষ্ণা। অপেক্ষা করছে অধরার জন্য। অধরা জানিয়েছে সে ফিরছে,তৃষ্ণা যেনো ড্রয়িং রুমে থাকে দরজা খুলে দেওয়ার জন্য। রাফি পানি খাওয়ার জন্য নিচে নেমেছিল। তৃষ্ণা কে একাকী বসে থাকতে দেখে রাফি ভ্রু কুঁচকে বলে-

-“ একা একা এখানে বসে কি করছো?
-“ অপেক্ষা।
-“ কার?
-“ অবশ্যই আপনার জন্য না।
-“ তা তো জানি। তা কার জন্য অপেক্ষা করছো? তুর্যর জন্য?
তৃষ্ণা রাগান্বিত হয়ে তাকালো। আর তখনই কলিংবেল বেজে উঠলো। তৃষ্ণা গিয়ে দরজা খুললো। অধরা ভেতরে ঢুকলো। রাফি অধরা কে দেখে বলল-

-” কোথায় গিয়েছিলি তুই?
অধরা নুইয়ে গেলো। মৃদু স্বরে বলল-
-“ রাতুল ভাইয়ার সাথে।
-“ কেনো?
তৃষ্ণা বিরক্ত হলো। বিরক্তিকর চাহনি নিয়ে বলল-

আমার শহরে তোমার আমন্ত্রণ সিজন ২ পর্ব ২৭

-“ আহ অধরা আপু এতো প্রশ্নের জবাব দেওয়ার কোনো দরকার আছে? চলো তো ঘরে।
অধরা কে নিয়ে তৃষ্ণা চলে যায়।

আমার শহরে তোমার আমন্ত্রণ সিজন ২ পর্ব ২৯