আমি মায়াবতী পর্ব ৩৪

আমি মায়াবতী পর্ব ৩৪
তাহমিনা মিনা

বসার ঘরে পিনপতন নীরবতা। রিজভী তার ভাইদের বোঝাতে ব্যর্থ। তারা কোনোভাবেই তাদের বাবার দায়িত্ব নিবে না। মাকে নিতে তাদের যদিও কোনো অসুবিধা নেই। তার কারণও আছে। মা এখনও শক্ত-সামর্থ্য। যেকোনো কাজই করতে পারে। কোনো কাজ করতে দিলে না ও করতে পারে না। ছেলেদের সংসারে আছে এই তো অনেক।

স্বামীর সাথে বনিবনা তার কোনো কালেই ছিল না। তারপর যখন আবার রিজভী বাড়ি থেকে চলে গিয়েছিল,তখন আর তাদের মধ্যে স্বাভাবিক স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক বিদ্যমান ছিল না। তাই স্বামীকে নিয়ে চিন্তা করার কিছুই নেই তার। নীরবতা ভেঙে আজগর সাহেব বলে,”তাইলে কি আমি পশ্চিম পাশের ভিটায় মাটি ফালানোর কাম শুরু করুম? ঐ পাড়ার হাসুর মা আছে, জামাই তো মরছে।আমি কইলে ও কাম করবো বাড়ির। তোর বাপের অসুবিধা হইবো না। কি করুম তাইলে?”

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

রিজভী ফোঁস করে নিঃশ্বাস ফেলে। জীবনের এই পর্যায়ে এসে সে হিসেব মিলাতে ব্যর্থ। নিজে একা একা অভিমান করে জীবনটাকে শেষ করেছে সে। কিন্তু পিছনে ফেলে আসা মানুষগুলোর কথা সে একবারও ভাবেনি। তার দায়িত্ব কেউ নেয়নি। কিন্তু সে কাউকে ফেলে দিবে না। নিজেকে সোফায় এলিয়ে দিয়ে বলে,” আমি আর কি বলবো? বাবা তো আমার ভাগের জমি আমার নামে আলাদা করেই রেখেছে। তাছাড়া আমার মায়ের জমি আর দাদীর জমিও তো আমার নামেই আছে।

অর্ধেকটা আমি রিতুকে দিয়েছি। দাদীর অংশে আমি বাড়ি বানাবো। সেখানে বাবা থাকবে। বছরে মাঝে মাঝে আমি আমার বাচ্চাদের নিয়ে গ্রামে গেলে সেখানে থাকবো। কিছু ধানি জমিও আমার নামে রাখবো। যেহেতু তোমরা কেউ রিতুকে জমি দাওনি, আমি আমার ভাগে থেকে তাই অর্ধেকই ওকে দিয়েছি। আমি কারো উপর দাবি রাখতে চাইনা। আমিও চাই না কেউ আমার উপর দাবি রাখুক। তোমরা আমার ভাই।

তোমরা আমার কাছে চেয়েছো, আমি মানা করিনি। তোমাদেরও দিয়েছি। বিনিময়ে আমি চেয়েছিলাম তোমরা বাবাকে দেখে রাখো। তোমরা সেটাও করছো না। তাহলে আর কি করার! আমি তাহলে আপাতত একটা বাড়ি বানাই ওখানে। যেহেতু বাবা এখানে আসবে না। আর রিতুর ভাগের একটা জমি আমি শুধু বিক্রি করবো। সেই টাকা দিয়ে আমি ওকে একটা ফ্ল্যাট কিনে দিব৷ যাতে ও নিজের বাড়িতে থাকতে পারে। সেখানে চাইলে ও নিজের কোনো ব্যবসাও খুলতে পারে। ও কিছু না করলেও আমি ওর দায়িত্ব নিব। ওর বাকি জমিগুলো বর্গা দিবো। কারো কোনো দ্বিমত আছে?”

মায়ার মেজো কাকা বলে,”কোনো সমস্যা নাই মিয়াভাই। আপনার ইচ্ছা। ছোটর ও কোনো সমস্যা থাকার কথা না।”
রিজভী দরজা ধরে দাঁড়িয়ে থাকা রিতুর দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে,”তোর কিছু বলার আছে?”

কৃতজ্ঞতায় রিতুর চোখ চিকচিক করে উঠে। মাথা নিচু করে বলে,”সারাজীবন অন্যের বাড়িতে থাকছি মিয়াভাই। জীবনে দুইটাই আশা ছিল। আমার রিজারে মানুষ করমু আর নিজের একটা ঘরে থাকমু। আমার কোনো সমস্যা নাই। আমি সেলাই জানি মিয়াভাই। সেলাই করে নিজের সবটা চালাইতে পারবো। আমারে তুমি একটা ঘরের ব্যবস্থা কইরা দাও শুধু। ”
রিতুর কথা শুনে আজগর আলী বলে,”তাইলে আমি সামনে মাস থিকাই শুরু কইরা দিই মাটি ফালানোর কাম। কি কস রিজভী? ভিটাটা উঁচা করোন লাগবো। নাইলে পানি উঠবো। গঞ্জে যায়ে লোকগো খবর দিওন লাগবো। কি রকম ঘর বানাবি?”

রিজভী আনমনে জবাব দেয়,”আমার মায়ের খুব ইচ্ছা ছিলো আমি একটা ঘর বানাবো। তার স্বপ্নের ঘর। ঘরে সবই থাকবে। কোনো এককালে নানার সাথে ঢাকায় এসে এইরকম ফ্ল্যাটবাড়ি দেখেছিল। যাতে কোনো কাজের জন্য গ্রামের মতো ঘরের বাইরে যেতে না হয়। সেইরকম বাড়িই বানাবি। বুঝলি?”
“হো। বুঝছি।”

“তবে, ছাদ দিবি না। টিনের চালা দিবি। দুইতালা বিল্ডিং এর উপরে টিনের চালা দিবি। টাকাপয়সা নিয়ে কোনো কিছু ভাববি না। আমিও মাঝেমধ্যে গিয়ে দেখে আসবো। তোকে ছাড়া আর কাউকেই ভরসা করতে পারছিনারে বন্ধু।”
কথাটা বলেই নিজের রুমের দিকে উঠে যায় সে। ভাইদের দিকে ফিরেও তাকায় না। সে জানে, এখন হতভম্বের মতো তাকিয়ে আছে তার দিকে তারা। কিন্তু তার পিছনে ঘুরতে ইচ্ছে করছেনা তার।

“তুমি তো বলছিলা আমারে ঢাকার শহর ঘুরায়া দেখাবা। কবে দেখাইবা?” ছলছল নয়নে সোহাগকে জিজ্ঞেস করে রিজা।
বাবার সামনে বেশ বিব্রতবোধ করে সোহাগ। সামনে মায়ার বাবা-মাও আছে। ইচ্ছে করছে কানের নিচে দুটো থাপ্পড় মারতে রিজাকে। কিন্তু কিছুই বলে না সে।
আজগর আলী সোহাগকে বলে,”ওদের নিয়া তো ঘুরবারও পারোস মাঝে মাঝে। সাব্বির বাবা তো ঘুরার জন্য অস্থির। আজকেই নিয়ে যা না।”

সোহাগ কিছু বলার আগেই রিজভী বলে,”মায়াদেরও নিয়ে যাও সোহাগ। তোমার বাবার সাথে আমার কিছু কথা ছিল। এই কয়েকটা দিন আমার উপর দিয়ে অনেক ধকল গেল। আবারও যাবে। তোমার বাবা তো জার্নি করে এসেছে। কিছুক্ষণ রেস্ট নিক। বাচ্চারা বাসায় থাকলে সম্ভব না। মায়ার কাকারা তো চলেই গেল। ওদের তো রাখতে পারলাম না। এই কয়েকদিন তোমাকেও সময় দিতে পারলাম না। তুমি কি ওদের নিয়ে কিছুক্ষণ ঘুরে আসতে পারবে? যদি তোমার সময় হয় আর কি!”
সোহাগ মায়ার কথা শুনেই বলে,”কোনো সমস্যা নাই চাচা। আমি ফ্রিই আছি।”

“তুমি যেইখানে থাকো, আমারে সেইখানে নিয়া যাইবা সোহাগ ভাই? তোমার ভার্সিটিতে? ”
সোহাগ কিছু বলার আগে আবার আজগর আলী বলে,”হো। নিয়া যাইবোনে। তুমি যেইহানে কইবা, সেইহানেই নিয়া যাইবো মা। যাও, তোমার বোনগোরে রেডি হইবার কও। তুমি তো রেডিই দেখতাছি।”

রিজার প্রতি আজগর আলীর অন্যরকম একটা মমতা কাজ করে। বাবার ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত মেয়েটাকে তার খুবই ভালো লাগে। সে একসময় চেয়েছিল মেয়েটিকে দত্তক নিতে যাতে রিতু নিজের জীবন সাজাতে পারে নতুনভাবে। কিন্তু না রিতু, আর না রিতুর মা, কেউই রাজি হয়নি। তবুও রিজাকে সে পছন্দ করে। নিজের মেয়ের মতোই ভালোবাসে। এখন তো তাও মেয়েটার একটা গতি হয়েছে। মেয়েটা বড় হয়েছে। এখন কত কিছুর দরকার তার। রিজভীর কাছে আসায় সে এখন নিশ্চিন্ত। মেয়েটার এখন হয়তো একটা সুন্দর ভবিষ্যত হবে।

সন্ধ্যার আকাশে মিটিমিটি তারারা জ্বলছে আর নিভছে। কিন্তু রিজা চুপচাপ বসে আছে। যতোটা আগ্রহ আর উৎসাহ নিয়ে সে ঘুরতে বের হয়েছিল, তার কোনো কিছুই আর তাকে স্পর্শ কর‍তে পারছেনা তাকে। সবকিছুই কেমন ম্লান লাগছে তার। একটু দূরে মায়া আর কবিতা বসে বসে গল্প করছে। তাদের পাশের বসে সাব্বির নিজের মতো খেলছে। সে চেয়েছিল সোহাগ এর সাথে সাথে থাকতে। সোহাগ মেনেও নিয়েছিল। কিন্তু এখানে এসে পুরোই হতাশ সে।

সোহাগ তার মেয়ে বন্ধুদের সাথে গল্প করছে। কই তার সাথে তো এইভাবে গল্প করেনা? মেয়েগুলোর দিকে আড়চোখে তাকালো সে। নাহ, এতো সাজেনি তো তারা। মায়া আর কবিতার মতো সিম্পলই আছে। তাহলে তাদের প্রতি এতো কিসের আকর্ষণ তার? তবে কি মায়া আপুর কথাই ঠিক? শহরের ছেলেরা কি তবে আলাদা? তবে যে শাহিদা আপু তার প্রেমিকের জন্য সেজেগুজে স্কুলে যেতো রোজ? তাদের তো বিয়ে হলো।

সেও তো সাজে। শুধু সোহাগ ভাইয়ের জন্য। তবে কেন সোহাগ ভাই আজ তার দিকে ফিরেও তাকাচ্ছে না? সোহাগ ভাই কি তবে শহরে এসে বদলে গেছে? তারও কি এখন ঐরকম মেয়েই পছন্দ? সামনে থাকা টিস্যু বক্স থেকে একটা টিস্যু উঠিয়ে আকাশ পরিমাণ ক্ষোভ নিয়ে নিজের লিপস্টিক মুছতে থাকে সে। সোহাগ তার দিকে তবু ফিরেও তাকায় না।সে তার মেয়ে বান্ধবীদের নিয়ে ব্যস্ত। আর মাঝেমধ্যে মেয়েগুলো মায়ার দিকে তাকিয়ে সোহাগকে কি যেন বলছে। অতশত বুঝেনা রিজা। সে শুধু চায় সোহাগ তার হবে। শুধুই তার হবে।

“কবিতা তোমাকে আর কিছু কি বলেছে মায়া?” স্টিয়ারিং এ হাত ঘুরিয়ে জিজ্ঞেস করে কাব্য৷
“কোন ব্যাপারে স্যার?”
“আমার বন্ধুর ব্যাপারে।”
মায়া হাসে। হেসে বলে,”সারাদিনই বলে। নতুন করে আলাদা আর কি বলবে?”
“তোমার মনে হয় কবিতা সিরিয়াস?”
“১০০%।”

“তাহলে আর কি? ঘটকালি শুরু করবে নাকি?” বলেই হাসে কাব্য।
মায়াও হাসে। হাসতে হাসতেই জবাব দেয়,” ভালো কাজ। পূন্যের কাজ। খারাপ তো না।”
আবারও একপ্রস্থ হেসে নেয় দুজন।
“তোমার পড়াশোনা কেমন চলছে?”

“ওহ, হ্যাঁ, বলতে চেয়েছিলাম আমি নিজেই। আপনি সেদিন কি যেন একটা কোচিং সেন্টার এর কথা বলছিলেন। আমি জয়েন করতে চাই। আসলে আমার মনে হচ্ছে, সবগুলো সাবজেক্টই সমান গুরুত্ব দেওয়া উচিত। না হলে পরে সব তালগোল পাকিয়ে ফেলবো।”
কাব্য প্রায় নিঃশ্বাস বন্ধ করে বললো,”হ্যাঁ, অবশ্যই। অনেক সিট খালি আছে। তুমি চাইলে কালকে থেকেই জয়েন করতে পারো।”

“ওকে। আমি চেষ্টা করবো।”
“মায়া, হাওয়াই মিঠাই খাবে?”
“এখন?”
“হ্যাঁ, দুটো মিনিট বসো আমি আসছি।”
মায়া কিছু বলার আগেই কাব্য বের হয়ে যায় গাড়ি থেকে।

মায়া চুপচাপ বসে থাকে গাড়ির ভিতর। অনেকটা অস্বস্তি লাগছে তার। সাবিহা ঘুরতে আসলে আজ আর এইসব হতো না। কবিতাকে এনে আবার মেয়েটার ভাইয়ের গাড়িতেই উঠতে হলো। এই রিজাটাও একটা মহা বদ। সাব্বিরকে নিয়ে রিকশায় উঠে পড়লো সোহাগের সাথে। কেন? তার সাথে আসলে কি হতো? সবসময় প্রেমের কথা না বললেই কি নয়? আবার আছে এই কবিতা। মহা ধুরন্ধর। গাড়িতে উঠেই আগে তাকে নিজের বাড়িতে যেতেই হবে। অগত্যা তাকে নামিয়ে দিয়েই মায়াকে নিয়ে আবার উল্টো ঘুরতে হবে কাব্যকে।

“মায়া। এই মায়া। ধরো।”
“হুমম। ” মায়া পাশ ফিরে দেখে কাব্য দুটো হাওয়াই মিঠাই নিয়ে গাড়িতে বসে আছে। কখন এসেছে বুঝতে পারেনি সে।
“নাও। কোনটা নিবে? সাদা নাকি গোলাপি?”
মায়া ইতস্তত করে বলে,”সাদা।”

কাব্য ওর হাতে একটা তুলে দিয়ে বলে,”সাদা? মেয়েরা তো বরাবর গোলাপি পছন্দ করে।”
“সবাই তো এক হয়না। স্যার। আর তাছাড়া আমি তো জানিনা যে আপনি কোন ধরনের মেয়েদের দেখেছেন।”
কাব্য বুঝলো এক লাইন বেশি বলে ফেলেছে সে। নিজের মাথায় চাটি মারতে ইচ্ছে করছে তার। কবিতা আসলেই ঠিকই বলে। সে আসলেই গরু।পরিস্থিতি সামলাতে বলে,”সাইকোলজি তো বেশিরভাগ সময় এটাই বলে। তাই বললাম আর কি।”

“এই জ্যাম আর ভালো লাগছেনা। কখন যে গাড়ি চলবে।”
“সময় লাগবে না বেশি। অপেক্ষা করো।”
“হুমম। ”
কাব্যর গাড়ি যখন মায়ার বাসার সামনে আসলো, তখন মায়া কাব্যকে বলে,”আজ বাসায় যেতেই হবে স্যার। না গেলে আমি ছাড়ছিনা আপনাকে। চলুন আমার সাথে।”
কাব্য বিড়বিড় করে বলে,” ধরলে কই যে ছাড়বে?”

“কিছু বললেন স্যার?”
“নাহ। কিছুই না। আচ্ছা, চলো। তোমাকে বাসায় দিয়ে আসি।”
মায়ার পিছুপিছু কাব্যও গিয়ে লিফটে উঠে। কিন্তু কাব্য কিংবা মায়া কেউ খেয়াল করে না পার্কিং এরিয়া থেকে একটু দূরেই একজন যুবক নিজের প্রেয়সীর চলে যাওয়া দেখছে শান্ত চোখে। তার চোখে কোনো ক্ষোভ না থাকলেও ভিতরটা জ্বলে পুড়ে যে খাক হয়ে যাচ্ছে।

” তুমি মিস্টার কবিরের ছেলে না? তোমাকে তো দেখেছিলাম কোনো এক পার্টিতে। তোমার বাবার সাথে।”
মায়ার বাবার এমন প্রশ্ন শুনে কাব্য প্রায় তোতলাতে তোতলাতে বলে,”জ্বি, জ্বি আংকেল।”
“তোমার বাবার সাথে তো আমাদের কোম্পানির বেশ ভালো সম্পর্ক আছে। তোমার বাবা প্রায়ই আমাদের প্রজেক্টে ইনভেস্ট করেন।”

“অহ, আচ্ছা।আমি আসলে বাবার ব্যবসার ব্যাপারে তেমন কিছুই জানিনা, আংকেল। আমি শিক্ষকতাকেই নিজের পেশা হিসেবে নিয়েছি।”
“বেশ ভালো তো। নিজের জীবন নিজে গড়ছো। বাবার উপর নির্ভরশীল না।”

আমি মায়াবতী পর্ব ৩৩

সাবিহা আড়িপেতে এটুকু শুনেই ছুটে গিয়ে মায়াকে বলে,” আপু, আপু, কাব্য ভাইয়া তো পুরাই নায়কের মতো। কাব্য ভাইয়াকে বাবা চিনে, ভাইয়ার বাবাকেও বাবা চিনে। আমার তো মনে হচ্ছে এইবার কিছু একটা হয়েই যাবে।”
মায়া ভ্রু কুঁচকে তাকায় তার দিকে। কি বলবে সে? কি হবে? হওয়াটা কি ঠিক হবে? তাছাড়া নিজেরই এখন ভীষণ লজ্জা লাগছে তার। কেমন লাগামছাড়া কথা বলেছে আজ সে কাব্যর সাথে। ভাবতেই লজ্জায় মুষড়ে পড়ছে মেয়েটা।

আমি মায়াবতী পর্ব ৩৫