আসক্তি পর্ব ১৮

আসক্তি পর্ব ১৮
লেখায়ঃআফিয়া আজাদ নিঝুম

মেডিকেল ঢুকতে না ঢুকতেই সবার কমন প্রশ্ন, “স্যার আপনি না ছুটিতে আছেন তাহলে হঠাৎ কেন স্যার”
শান পাখির দিকে মুচকি হেসে সবাইকে সৌজন্যমূলক জবাব দেয়, “একটু কাজ ছিলো আরকি”
পাখিকে নিয়ে পুরো মেডিকেলের এ টু জেট সবটাই দেখায়।এর পর কেবিনে ঢুকে যায়।
“তো পাখি, তোমার মেডিকেল দেখা হলো!”-বলতে না বলতেই সাদা এপ্রোন পরা একজন মেয়ে শানের কেবিনের বাহিরে দাড়িয়ে জিজ্ঞেসা করে,”আসব হার্ট সার্জন?”
পাখি দরজার দিকে চোখ করে এক পলক দেখে পাশে রাখা সোফায় বসে পরে।

ডাক্তার রিনি শানের কলিগ। যে শান বলতে অজ্ঞান ছিলো।কিন্তু শান অতীতকে মনে রেখে কখনোই আর দ্বিতীয় বারের জন্যে রিলেশনের কথা মাথায় আনে নি।তাই কখনোই রিনিকে ভালোবাসার চোখে তাকায় নি।
শান পাখির সাথে রিনির পরিচয় করিয়ে দেয়।পাখি সালাম জানিয়ে কুশল বিনিময় করে।বেশ ছিপছিপে গড়নের মেয়ে রিনি।দেখতেও নজরকাড়া সুন্দরী।লম্বায় মোটামুটি ৫’৬”এর মতো হবে।শানের সাথে বেশ লাগছে। যেটা পাখির কাছে বেশ লাগছে না।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

রিনি এসে শানের চেয়ারের পাশে গা ঘেঁষে দাঁড়াতে দাঁড়াতে বলে, “তোমার বউয়ের কন্ঠটা বেশ মিষ্টি তো!মন জুড়িয়ে যায়।আমার হিংসে হচ্ছে এবারে”
পাখির কোনদিকে খেয়াল নেই, সে রিনির দাঁড়ানোর দিকে তাকিয়ে ভ্রুকুটি করে রাখে।পাখির দিকে চোখ পড়তেই এই সুযোগে তাকে খেপানোর দুষ্টু বুদ্ধি খেলে যায় শানের মাথায়।
“আচ্ছা রিনি, বিয়ের কি খবর তোমার?করবে নাকি দেবদাসী হয়েই থাকবে?-পাখির দিকে আড়চোখে তাকিয়ে রিনিকে কথাটা বলে শান

“আর বিয়ে! তুমি তো বিয়ে করেই নিলে।এবার ঐ সেকেন্ড অপশন মানে দেবদাসী হয়েই থাকা লাগবে মনে হচ্ছে”-বলেই এক গাল হেসে দেয় রিনি।
পাখি ওদের কথার আগামাথা কিছু বুঝতে পারছে না
রিনি পাখির সামনে আসতে আসতেই বলে,”তা তোমার বউকি মুখ খুলবে না নাকি?একটু দেখতেও পাবো না?”
বলেই মুখের নিকাব সরাতে গেলে শান বাঁধা দিয়ে ওঠে।
“না রিনি, ও যদি না চায় তবে কেউ ওকে জোড় করুক তা আমি চাই না।ইভেন আমিও কখনো সেটা করি না”

পাখি মুগ্ধ হয়ে শানের কথা শুনছে।
“ও বাব্বাহ,তাই বুঝি!তা আমি তো মেয়ে।আমার সামনে নিশ্চই এরকম বাঁধা ধরা নিয়ম নেই!”
“হ্যা তা নেই, তবে সেটাও ওর ইচ্ছের উপর নির্ভর করে”-বলতে বলতেই শান মাথার পিছনে দুহাত রেখে চেয়ারে মাথা এলিয়ে দেয়।

পাখি খুশি খুশি নিকাব টা সরিয়ে নিয়ে এক গাল হেসে দেয়।
“মাশাআল্লাহ্ মাশাআল্লাহ্,এই কি রে শান!এতো মিষ্টি মেয়ে!তাই তো বলি আগা-গোড়া ঢেকে কেন রাখো”
“হাহাহা…ও বিয়ের আগে থেকেই এমন পর্দা করে।অবশ্য আমার কোন অাপত্তি নেই তাতে”
“সত্যিই অনেক সুন্দর তুমি।একটা কথা বলি কিছু মনে করো না, তোমার সৌন্দর্য তোমার গায়ের রং কে ছাপিয়ে গেছে পাখি”

পাখি ঠোঁটের কোণে হাসি এলিয়ে জবাব দেয়,”এই রং টার জন্যে নিজেকে সবথেকে বড় কাল মনে হতো”
শান চমকে পাখির দিকে তাকায়।যেন পাখির কষ্টটা তার বুকে গিয়ে হানলো
“ওসব কিছুই না মেয়ে, তুমি যার জন্যে পারফেক্ট তার কাছে রং টা নিছকই রং ছাড়া কিছুই না । তাই না ডক্টর? “-কথাটা শানের দিকে ছুড়ে দেয় রিনি।
শান প্রশান্তিময় হাসিতে মাথাটা হালকা ঝাকিয়ে সম্মতি জানায়।
রিনি ওদের দুজনের দিকে একপলক দেখে পাখির কাছে এসে দাঁড়ায়।

“শুনো মেয়ে বরকে বেঁধে রেখো।ওর পিছনে হাজার মেয়ের লাইন ছিলো।তাদের মাঝে আমিও ছিলাম।টাইট করে বেঁধে রেখো কিন্তু।নইলে যেকোন সময় ফসকে যেতে পারে”-বলেই ডক্টর রিনি খিলখিলয়ে হেসে ওঠে।
পাখির হিংসার বাঁধ যেন এবার আর ধরছে না।খুব কষ্ট হচ্ছে মনের মাঝে।দাঁত দাঁত চিপে শানের দিকে ররক্তচক্ষু নিয়ে জবাব দেয়,”যে যাবার সে চলে যাবেই আপু।কাউকে ধরে বেঁধে রাখা কখনোই সম্ভব নয়।আর যে ব্যক্তি ঘরে বউ থাকার পরেও অন্য মেয়েদেরকে শো করার জন্যে সাজগোজ করে তাকে আমি বেঁধে রাখতে পারবো না।কখনোই না।”

গড়গড় করে কথাগুলো বলে পাখি ধপ করে বসে পরে।
রিনি শানের কাঁধে হাত রেখে বলে,”কথাগুলো কিন্তু ভুল বলে নি শান।তোমার সাজগোজ অবশ্য আমারও নজর কাড়ে”
“আমারই কপাল খারাপ বুঝলে পাখি , পাত্তা পেলাম না।”-ঠোঁট উল্টিয়ে কথাটা বলে রিনি।
পাখির রাগে যেন গা গিজগিজ করছে।বার বার রিনির রাখা হাতটার উপর নজর ফেলছে।রাগে চোখ লাল হয়ে গেছে ।সে চোখ শানের নজর এড়ায় নি।

সে রিনিকেও কিছু বলতে পারছে না, না পারছে হাত টা সরিয়ে দিতে।রিনি বরাবরই একটু ওমন।গায়ে হাত রেখে কথা বলার অভ্যেস। তাই বলে এখনো যে এমন টাই করবে তা শানের ভাবনারও বাহিরে ছিলো।
পাখি সেদিকে তাকিয়ে চাপা রাগ নিয়ে বলে,”বিয়ে হইছে তো কি হইছে চাইলে আপনিও আগের মতোই লাইন দিতে পারবেন”-বলেই আর এক মূহূর্ত সেখানে দাঁড়িয়ে না থেকে কাঁধে ব্যাগটা ঝুলিয়ে হনহন করে শানের কেবিন থেকে বেরিয়ে আসে।

শানের কেন যেন ব্যপার টা খুব ভালো লাগলো।ঠোঁটে প্রসস্ত হাসি রেখে রিনিকে বলে,”থ্যাংক ইউ রিনি। তুমি নিজেও জানো না আমার কতো বড় উপকার করলে।”
“ওকে পরে দেখা হচ্ছে।নাউ আই হ্যাভ টু গো”-বলেই শান দ্রুত কেবিন থেকে বেরিয়ে যায়।উদ্দেশ্য পাখিকে খোঁজা।
ওদিকে রিনি হা হয়ে ওদের দুজনের যাওয়ার দিকে চেয়ে আছে।

শানের ধারনা ছিলো পাখি গাড়িতে এসে বসে আছে।তাই সে দ্রুত গাড়ির কাছে আসে কিন্তু কোথাও পাখিকে খুঁজে পায় না।এবার ভ্রু কুচকে আসে শানের।
“ও তো এ শহর তেমন চেনে না, তাহলে কোথায় গেলো”-ভাবতে ভাবতেই আশেপাশে খুঁজতে থাকে।ফোন হাতে নিয়ে পাখির নম্বর ডায়াল করে।কিন্তু সাথে সাথেই কেঁটে দেয়।
এদিকে শানের কয়দিনের ব্যবহার পাখির পক্ষে আর সহ্য করা সম্ভব ছিলো না।আজ তো সমস্ত বাঁধ ভেঙ্গে গেলো।তাই সে পার্কে এসে বসে আছে একাই।শানের ফোনও কেটে দিচ্ছে বার বার।

“অপর একটা মেয়ে কি করে ওর গায়ে হাত রাখলো?আর ও চুপচাপ বসে ছিলো!কেন রে ভাই ঘরে তোর বউ নেই?কদিন ধরে মানুষটা কেমন কেমন করছে আমার সাথে।আগের মতো কেয়ার করছে না, কথাও বলছে না।শুধু দূর দূর করে দিচ্ছে”-পাখি আবল তাবল ভেবে চোখের পানি, নাকের পানি সব এক করে ফেলছে।হাতের এ পিঠে ওপিঠে পানি মুছে নিচ্ছে।
শান একের পর এক ফোন করেই চলছে।বাধ্য হয়ে পাখি ফোন রিসিভ করে।
ঝাঁঝালো কন্ঠে পাখি বলে,”কি হইছে, সমস্যা টা কি আপনার?এতো বার গরুর মতো ফোন দিচ্ছেন কিসের জন্যে?”

পাখির কথায় শান হেসে ফেলে।বুঝতে পারে পাখি রেগে আছে।তাই বেশি কথা বলে না।
“বাড়ি যাবা না, সন্ধ্যা হয়ে এলো তো?”
“যাবো না আমি কারোর বাড়ি।”-গাল ফুলিয়ে উত্তর দেয় পাখি।
“কোথায় আছো সেটা বলো জাস্ট?”
“বলব না ”
“একে তো নতুন তুমি এ শহরে, তার উপর আবার সন্ধ্যাও হচ্ছে।কি করবা ডিসিশন তোমার”-বলতে বলতেই শান গাড়ি স্টার্ট করে।

শানের কথা শুনে চারিদিকে তাকিয়ে দেখে সত্যিই কয়েকটা ছেলে পাশে পাখির দিকে তাকিয়ে বাজে ইঙ্গিত করছে।কেমন যেন শিয়ালের মতো চেয়ে আছে।পাখি অনেক ভেবে ফট করে বলে ফেলে, “আমি পার্কে বসে আছি”.
এরপর শান কাল বিলম্ব না করে দ্রুত পার্কের দিকে চলে যায়।পাখিকে সেখান থেকে নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে চলে আসে।সারা রাস্তা কেঁদেছে পাখি।গাড়িতে রাখা টিস্যু বক্স টা শান এগিয়ে দিয়েছে বার বার।

বাড়ি এসে ফ্রেশ হয়েছে দুজনে কিন্তু কেউ কারোর সাথে কথা বলে নি।শান কয়েকবার এগিয়েছিলো কথা বলতে, পাখি সুযোগ দেয় নি।
পাখির উদ্ভট আচরনে শান এবার অবাক না হয়ে পারে না।
পাখি সুযোগ পেলেই চুপিসারে শানের পিছনে বা পাশে গিয়ে দাঁড়াচ্ছে আর হাইট মাপছে।
“উহুহহ উহুহহ”-দুবার গলায় হালকা কাশির মতো শব্দ করে। শানে ভ্রুকচকে পাখির দিকে ফেরে।
“কিছু বলবা? “-মুচকে হেসে প্রশ্ন করে
পাখি জবাবে কিছু বলে না।
“কি ব্যপার, তুমি বালিশ নিয়ে কই যাচ্ছো?”

……পাখি কোন কথার উত্তর না দিয়ে বালিশ নিয়ে সোফায় এসে শুয়ে পরে।
শান এগিয়ে এসে সামনে দাঁড়ায় আর বলে,”পাগল হয়ে গিয়েছো, না?”
“বিছানায় আসো”-বলতে বলতেই শান পাখির হাতটা ধরতে যায়।
পাখি দুহাত সরে যায় আর ক্ষিপ্ত গলায় বলে,”খবরদার বলে রাখছি, আমায় ছোঁবেন না।একদম কাছে আসবেন না।ফালতু লোক। ঐ মেয়েটার কাছে যান”

শান শব্দ করে হেসে দেয়, “তারমানে এতো রাগ রিনির জন্যে”-
শান সবটাই জানে তবুও পাখির মুখ থেকে কথা বের করতেই কথাটা বলে উঠে।
রিনির নাম শুনে পাখির রাগ যেন তরতর করে বেড়ে গেলো।
দাঁত মুখ খিচে বলে,”হ্যা হ্যা রিনি, ওর কাছে যান।আমায় ছুঁলে খবর আছে”-বলেই পাশ ফিরে চাদর টেনে শুয়ে পরে।

শান পাখির দিকে কয়েক মূহূর্ত চেয়ে মুচকি হেসে চাদর সমেত কোলে তুলে নেয়।
“ছাড়ুন আমায়, ছাড়ুন বলছি।চরিত্রহীন, বদলোক।অন্য মেয়ের ছোঁয়া বুঝি ভালো লাগে!”-হাত পা ছুড়ছে আর বলছে পাখি।

ততোক্ষনে শান ওকে বিছানায় শুইয়ে দিয়েছে।পাখি দ্রুত উঠে বিছানা ছাড়তে চাইলে শান ওকে বিছানায় চেপে ধরে মুচকি হেসে বলে,”কিছু একটা জ্বলে পুরে যাচ্ছে মনে হয়!”
শানের হেয়ালিমার্কা কথায় পাখির রাগ দ্বিগুন উঠে যায়।মুখে যা আসছে সে ভাষায় গালি দিচ্ছে।শ্রাব্য-অশ্রাব্য সব গালি আজ গড়গড় করে বের হচ্ছে পাখির মুখ থেকে। শান ডান কানটা এগিয়ে দিয়ে প্রাণ ভরে শোনার ভান করছে।কিছুক্ষন গালি দেয়ার পর পাখির হুশ ফেরে।

রাগের মাথায় কি কি বললো সে!ভাবতেই জিহ্ব কাটে।
শান ঠোঁটের হাসি প্রশস্ত করে বলে,”তুমি এতো গালি জানতে আমি তো জানতামই না হুুহহহহহ!”
পাখি রাগে আবার কিছু বলতে যাবে তার আগেই শান নিজের অধর ছুঁয়ে দেয় পাখির অধরে।

“এতো রেগে যাও কেন ইদানিং ”
“জানি না”-শানের বুকে মাথা রেখে আদুরি কন্ঠে জবাব দেয় পাখি।
“ভয় করছে না? ”
“এখন কেন জানি আপনাকে আর ভয় লাগে না সার্জন সাহেব”-শানের বুক থেকে মাথা তুলে বলে পাখি
শান ঘোর লাগা কন্ঠে জানতে চায় “তো কি লাগে?”
পাখি কান্নাজড়িত কন্ঠে বলে,”আপনাকে ভালো লাগে।আপনার অনুপস্থিতি খুব খারাপ লাগে,আপনি কোন মেয়ের দিকে তাকান বা কেউ আপনার দিকে তাকালে খুন করতে ইচ্ছে করে”
শান শব্দ করে হেসে দেয়,”আর?”

“আপনি থাকলে মনে হয় চারপাশের পরিবেশ টা অনেক সুন্দর।শ্বাস নেয়ার মতো। আর না থাকলে মনে হয় পরিবেশটা ভীষণ আঁধার।আমি তো এমন ছিলাম না সার্জন সাহেব”
শান পাখির কপালে গাঢ় চুমু এঁকে দিয়ে বলে,”আমাদের সুন্দর ভবিষ্যতের জন্যে তোমার এই পরিবর্তন টা জরুরী ছিলো পাখি।অনেক অপেক্ষার ফল তোমার এই পরিবর্তন।চাইলেই হয়ত তোমায় ছেড়ে দিতে পারতাম।এতোদিনে নতুন সংসারও শুরু করতে পারতাম।আমি তা করি নি কেন জানো?”

“কেন?”-ভাঙ্গা ভাঙ্গা গলায় জানতে চায় পাখি।
” তুমি আমার মায়ের সিদ্ধান্ত।আমার মা তোমায় অনেক পছন্দ করে এনেছে”
পাখির মন অনেক বেশিই খারাপ হয়ে যায়।ধীরেধীরে শানের বুক থেকে মাথা তুলে নিজের বালিশে গিয়ে শোয়।পাশ ফিরে দুফোটা চোখের জল গড়িয়ে পড়ে।হাত দিয়ে অতি সাবধানে তা মুছে জানতে চায়
“শুধু মায়ের সিদ্ধান্ত বলেই কি এতোদূর আসা?যদি তাই হয় তবে বলবো, আমায় ছেড়ে দিন।আমি কারো করূনার পাত্রি হতে চাই না”

আসক্তি পর্ব ১৭

শান মুচকি হেসে পাখির কাঁধে মুখ রেখে জবাব দেয়, “এতোদিনেও যদি বুঝতে না পারো তাহলে আর কি করার আছে।একটা মেয়ে মানুষ যত সহজে সবকিছু বলতে পারে তা একটা ছেলেমানুষ ততো সহজে বলতে পারে না”
শান উঠে আসতেই পাখি হাতটা চেপে ধরে আর একগাল হেসে বলে,”আমি মুখ থেকে জানতে চাই”
শানের ঠোঁটের উপর হাত রেখে বলে, “এই মুখ থেকে”

শান গভীর চাহনীতে জবাব দেয়,”অয়েটিং ফর পারফেক্ট টাইম জান পাখি”
শানের মুখে জান পাখি ডাকে ভীষণ লজ্জা পেয়ে যায় পাখি।চোখ নামিয়ে নেয়।শান পাখির অনেক কাছে চলে আসে।গলায় মুখ ডুবিয়ে দিতেই পাখি হালকা করে সরিয়ে দিয়ে বলে,”শান”
এই প্রথম নিজের বউয়ের মুখে নিজের নাম শোনা।শান চমকিত চোখ পাখির দিকে তাকায়
“আই ওয়ান্না গিভ ইউ ব্যাক দ্যাট নাইট,হুইচ ওয়াজ রুইন্ড ফর মি”-পাখি চোখে মুখে একরাশ ভালো লাগা রেখে বলে শানকে।

শানের চোখে মুখে অনাবিল আবেগ উপচে পড়ছে।পাখির চোখে চোখ রেখেই বলে, “আই’ল ওয়েট ফর ইউ ইভেন হোল লাইফ”
পাখি লজ্জায় মুখ সরিয়ে নেয়।শান এবার পাখির কপালে গভীর চুমু দিয়ে নিজের বালিশে শোয়া।এরপর পাখিকে নিজের বুকের মাঝে টেনে নিয়ে চোখ বন্ধ করে।
“পৃথিবীর সবথেকে নিরাপদ,শান্তি আর ভালোলাগার স্থান এটাই, আমার সার্জন সাহেবের বুক”-মনে মনে বলেই শানের বুকে হাত রেখে ঘুমিয়ে পড়ে…..

আসক্তি পর্ব ১৯