আসক্তি পর্ব ৩৩

আসক্তি পর্ব ৩৩
লেখায়ঃআফিয়া আজাদ নিঝুম

“হোয়াট??আমি এম ডি স্যারের সাথে কথা বলব।আমিও জানতে চাই এভাবে আমায় কর্মচ্যুত করার কারণ কি?”-কপোট রাগ দেখিয়ে চোখ গরম করে নীরা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ছেলেটার সাথে কথা বলছে।
“ম্যাম আপনি, যার সাথে ইচ্ছে কথা বলুন।আমাদের কোন আপত্তি নেই।তবে এখানে আর আপনার বসার কোন অনুমতি নেই”

“ওকে ফাইন”-বলেই নীরা রাগে গজগজ করে উপরে নিজের ফ্ল্যাটে ঢোকে।ফ্ল্যাট মালিকেরই এই ডায়াগনস্টিক সেন্টার।সে সিদ্ধান্ত নেয় তার সাথে কথা বলবে।সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মালিকের দরজায় কড়া নাড়ে।সাথে সাথেই দরজা খুলে গেলো যেন, দরজার ওপাড়ে কেউ নীরার জন্যেই অপেক্ষা করেছিলো।ছোট্ট পিচ্চি একটা মেয়ে।ফ্ল্যাট মালিকের বাড়িতে থাকে।সে দরজা খুলে দিলো।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

“আঙ্কেল আছে?”
“হ্যা আছে।বসেন আমি ডেকে দিচ্ছি”-এই বলে মেয়েটা দৌড়ে ভিতরের রুমে চলে গেলো।খানিক বাদে বয়স্ক করে একজন ভদ্রলোক চশমার গ্লাস পাঞ্জাবির কোনা দিয়ে মুুছতে মুছতে ড্রয়িং রুমে ঢোকে।
নীরা সালাম জানিয়ে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে থাকে সালামের জবাবের আশায়।লোকটার কোন প্রতিউত্তর নেই।যেন নীরার আগমন তাকে বিরক্ত করে তুলছে।

বিপরীত পাশে মুখ ঘুরিয়ে হালকা ঠোঁট নাড়িয়ে সালামের জবাব দিয়ে নীরাকে বসতে বলেন।
“স্যার, ডায়াগনস্টিকে তো আজ আমার অন ডে ছিলো।কিন্তু ছেলে গুলো…..”
“ওদের কোন দোষ নেই আমিই বলেছি যাতে তোমায় আর সেন্টারে বসতে না দেয়”-নীরাকে থামিয়ে দিয়ে চিবিয়ে চিবিয়ে কথাগুলো বলে ভদ্রলোক।

“কিন্তু স্যার এর কারণ?
“আমি চাই না তোমার জন্যে আমার সেন্টারের কোন বদনাম হোক।”
“ঠিক বুঝলাম না স্যার”-ভ্রুকুটি করে প্রশ্নাতুর চোখে চায় নীরা।
“সেটা তোমায় আমি বলতে বাধ্য নই”.
কথাটা নীরার বেশ গায়ে লাগলো।অপমান বোধ হলো।নিজের আগ্রহকে দমিয়ে রাখতে না পেরে আবার বললো,”স্যার কজ টা যদি বলতেন?”

নীরার দিকে বিরক্ত হয়ে ভদ্র লোক জবাব দেয়,”আমার ভালো লাগছে না তাই আর তোমাকে সেন্টারে রাখতে চাচ্ছি না।এখন যদি ফ্ল্যাটটাও ছাড়ো তবে খুশি হবো”.
নীরা যেন এবার হতবাকের চরম চূড়ায়।ডায়াগনস্টিক সেন্টারের জব টা গেলো সাথে ফ্ল্যাটও ছাড়ার নির্দেশনা।এটা যেন কোন মতেই নীরার বোধগম্য হলো না।
“তুমি এখন আসতে পারো।আর ফ্ল্যাটটা ছাড়ো আমার নতুন লোক আসবে”
নীরা বেশ বুঝতে পেরেছে এই লোক একরোখা। প্রশ্ন করেও কোন মনযুৎ উত্তর মিলবে না।তাই আর দেরি না করে দ্রুত প্রস্থান করে।

“কেন হলো এমন টা? কি দোষ ছিলো আমার কিছুই তো বুঝতেছি না?”-ভাবতে ভাবতে নিজের রুমে চলে আসে।দরজার লক খুলে ভিতরে ঢুকতেই ফোনে কল আসে আননোন নম্বর থেকে।ভ্রুকুচকে যায় নীরার।
“হ্যালো,কে বলছেন?”
ওপাশ থেকে কোন সাড়া নেই।দুই তিনবার হ্যালো হ্যালো করেও কোন সাড়া না পেয়ে বিরক্ত হয়ে কল কেটে দেয় নীরা।
কিছুক্ষন পর আবার সেইম নম্বর থেকে কল আসে।এবার নীরা রিসিভ করে কোন কথা বলে না;চুপচাপ থাকে।

ওপাশ থেকে ভেসে আসা কথায় নীরার মাথা ঘোরা শুরু করে।বিপরীতে কিছুই বলতে পারে না নীরা।
“গাইনোক্লোসিস্ট ডক্টর নীরা,সায়ান ডায়ায়গনস্টিক সেন্টারের জব টা গেলো?সাথে নাকি শুনলাম ফ্ল্যাটটাও?আহারে কোথায় যাবে, কি করবে এখন?
অপেক্ষা করো, সামনে আরো অনেক চমক রয়েছে তোমার জন্যে”

কেটে যায় ফোন টা। স্তম্ভের ন্যায় দাঁড়িয়ে থাকে নীরা।মনে হচ্ছে দেয়াল গুলো সব ঘুরছে আর সে দাঁড়িয়ে আছে।বেশিক্ষন থাকতে পারলো না।নিজের অবস্থা বেগতিক বুঝতে পেরে ধপ করে সোফায় বসে পরে।
“কে ছিলো ঐটা?শাআআন?কিন্তু গলাটা তো শানের মতো লাগল না?তবে কে ছিলো?”-ভাবতে ভাবতে দুহাতে মুখ ঢেকে নেয়।লম্বা লম্বা কয়টা শ্বাস নিয়ে উঠে দাঁড়ায় অন্য কোথাও ফ্ল্যাটের খোঁজ করবে বলে।
কিছুক্ষন পর পরিচিত কেউ একজন ফ্ল্যাটের খোঁজও দেয় তবে তাতে সুবিধার চেয়ে অসুবিধা বেশি আবার ফ্ল্যাটের রেন্টও অনেক বেশি কিন্তু কিছু করার থাকে না।অনেক ভেবে ঐ ফ্ল্যাটে সিফ্ট হওয়ার জন্যে উদ্ধত হয় নীরা।

অপারেশনের আজ ২৫ দিন হলো।এখন পুরোপুরিই সুস্থ্য শফিক সাহেব।বেশ নিয়ম করে দুবেলা হাঁটেন তিনি।ভাজাপোড়া কমিয়ে দিয়েছেন একেবারে।জামাইয়ের কথামতো সমস্ত নিয়ম কানুন মেনে চলছেন তিনি।তাকে দেখলে আর বোঝার উপায় নেই গত কিছুদিন আগেও ভয়ে ভয়ে কতোটা আড়ষ্ট থাকতেন তিনি।
কয়েকদিন হলো শান এসেছিলো পাখিকে নিয়ে।মেয়েকে দেখার আকুতি দাবিয়ে রাখতে পারেন নি শফিক সাহবে।তাই তো জামাইকে বলেছিলেন যাতে একটা বেলা অন্তত এসে ঘুরে যায়।অসুস্থ্য শ্বশুরের মনের অবস্থা বুঝতে পেরে না করতে পারে নি শান।এসে ঘুরে গেছে।তবে পাখির ধরাছোঁয়ার বাহিরে ছিলো যে তার বাবার হার্টে রিং পরানো হয়েছে।
সব মিলিয়ে বেশ সুখেই দিন কাটছে শফিক সাহেবের।

আজ মাসের তিন তারিখ।প্রতি মাসের তিন থেকে ছয় তারিখ নীরা দিনাজপুর নিজের এলাকার নামকরা ডায়াগনস্টিক সেন্টার জান্নাতে বসে। আজও গাড়ি নিয়ে চলেছে দিনাজপুর মুখে।গাড়ি রংপুর পার হয়েছে আরো ঘন্টা দুয়েক আগে।গন্তব্যে পৌঁছাতে বাকি মাত্র ত্রিশ মিনিটের।

নীরা তখন ব্যাগ থেকে মেকাপ বক্সের ছোট আয়নায় নিজের চেহারা দেখতে ব্যস্ত।ফোনের রিংটোনে মুখে বিরক্তি সূচক শব্দ করে আয়না টা রেখে দেয়।এরপর ফোন হাতে নিয়ে বুঝতে পারে জান্নাত ডায়াগনস্টিক সেন্টারের এমডি’র কল।চোখ কপালে উঠে যায় নীরার।অজানা ভয় গ্রাস করে।কারণ খুব প্রয়োজন ব্যতিরেকে এমডি কখনোই ফোন করেন না।কাপা কাপা হাতে ফোনের রিসিভারে ক্লিক করে ফোনটা কানে ধরে।

“হ্যালো স্যার”
“হ্যালো ডক্টর নীরা,আপনি কি পৌঁছে গেছেন? ”
“জ্বি স্যার আর মাত্র ত্রিশ মিনিটের পথ”
“রিয়্যেলি ভেরি সরি টু সে দ্যাট আজ আপনাকে আসতে হবে না”
“কিন্তু স্যার কেন।এ্যানি ভ্যালিড রিজন?”
“না সেরকম টা নয়।তবে আজ আসতে হবে না আপনার।আপনাকে আমরা পরে ফোন করে ডেকে নিবো।ঠিকাছে, বাই”-বলেই খট করে কলটা কেটে দেয় অপাশ থেকে।
নীরার মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পরে।রাগে চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি গড়িয়ে পরে।

“গাড়ি থামাও”-জোড়ে চিল্লিয়ে বলে নীরা।
ড্রাইভার তৎক্ষণাৎ গাড়ি রাস্তার পাশে থামিয়ে নেয়।
নীরা কিছু একটা ভেবে গাড়ি থেকে নেমে পড়ে।
চোখ যতোদূরে যায় সবুজ ঘন ধানখেত দেখতে পায়।সেদিকে একধ্যানে চেয়ে নীরা ভাবতে থাকে,”গত মাসে সায়ান থেকে বাদ,এ মাসে জান্নাত থেকে বাদ।সেটাও আমার নিজেরই এলাকা।কি ঘটছে কিছুই বুঝতেছি না।”

ভাবনার মাঝেই গাড়ি থেকে ফোন টা হাতে নেয়। গত বার যে লোকটা ফোন দিয়েছিলো আননোন নম্বর থেকে এবারও সেইম ঘটনা ঘটে কিনা সেটাই দেখার অপেক্ষা শুধু।
কিছুক্ষন পর বিরক্ত হয়ে যায়।চারপাশ টা কেমন নিস্তব্ধ মনে হয়।এখানে এভাবে থাকাটা বেশ রিস্কি মনে হচ্ছে।দ্রুত গাড়িতে উঠে ড্রাইভারকে তাগাদা দেয় গাড়ি ঘুরানোর।
কিছুক্ষন পর পর নীরা ফোন চেইক করে কিন্তু কেউ কোন কল বা মেসেজ আসে না।মাথা কোন কাজ করছে না তার, কে করছে এমন টা। ভ্যালিড কোন কারন খুঁজে পাচ্ছে না সে।

“একবার শানের সাথে কথা বলতে হবে এ ব্যপারে।”-ভাবতেই ফোন হাতে নিতেই আননোন নম্বর থেকে আবার কল আসে।
আবার কাপা কাপা হাতে রিসিভ করে নীরা।
“গেলো তো! নিজের এলকার সেন্টার থেকেও বাদ পরলা তো।”
“কে আপনি? এসবের মানে কি? ”
“হাহাহা….অপেক্ষা করো সবটা জানতে পারবে। “-বলেই পূর্বের ন্যায় কলটা কেটে দেয়।
নীরার কিছুতেই বোধগম্য হয় না লোকটা কে!হাজার টা দূঃচিন্তা ভর করছে মাথায়।চোখ বন্ধ করে পিছনে সিটে মাথাটা এলিয়ে দেয় নীরা।গাড়ি চলছে আপন গতিতে।

“আপনি ইদানিং কেমন যেন হয়ে গেছেন।আগের মতো আর নেই।”-শানের সামনে দাঁড়িয়ে দুহাত কচলাচ্ছে আর থমথমে মুখে চেয়ে বলছে পাখি।
শান ল্যাপটপের দিক থেকে মুখ না ফিরিয়েই প্রশ্ন করে,”কি রকম?”
“কেমন কেমন জানি”
শান আবার বলে,”কেমন কেমন?”
“এই যে গত মাস থেকে খালি ল্যাপটপ, ফোন, মেডিকেল আর চেম্বার।মনে হয় যেন ল্যাপটপ আর ফোন আপনার বউ আর মেডিকেল, চেম্বার যেন কাজ।”
শান এবারও মাথা না তুলেই বলে, “তো?কাজ করতে হবে না?”
“তাই বলে এভাবে! ঘরে যে আরেকটা মানুষ আছে তাকে কি চোখে পড়ে না?”
শান এবার ল্যাপটপের পার্টটা নামিয়ে বলে, “এদিকে আসো”
পাখি থমথমে মুখে এগিয়ে যায়।

শান ওর হাত ধরে সামনে বসিয়ে বলে, “একটু কাজ তো করতেই হবে তাই না!তুমি যে ছোট্ট শান চাও আর আমি চাই তোমার মতো আমার একটা ছোট্ট পাখি হোক।বাই এ্যানি চান্স যদি টুইন হয় তাহলে ভাবছো দুজন একসাথে দুনিয়ায় আসবে। তাদের জন্যেও তো কিছু করতে হবে নাকি?”

পাখি স্বলাজে মাথা নিচু করে ফেলে।শান এবার পাখির গালে হাত দিয়ে বলে,”আমার যা কিছু অর্জন সব তোমার জন্যে, তোমাদের জন্যে, আমার পরিবারের জন্য আর আমাদের অনাগত ভবিষ্যতের জন্যে।তাই একটু আকটু ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে জান।আর কয়টা দিন অপেক্ষা করো তোমার জন্যে একটা গ্রেট সারপ্রাইজ অপেক্ষা করছে।”

পাখি এবার মুখ তুলে তাকায়।ঠোঁটে কিঞ্চিত হাসি রেখে শানের চোখে চোখ রাখে।
“মানুষটা এতো সুন্দর করে কথা বলে যেন সারাজীবন শুধু শুনেই যাই।অদ্ভুত ভালো লাগা কাজ করে”-
পাখির ভাবনার মাঝেই কোমড়ে কারো উষ্ণ স্পর্শ অনুভব করে।শান ঠোঁট কামড়ে ওর কোমড় চিপে ধরে দুহাতে।পাখি চোখ বন্ধ করে ফেলে।

“শাড়িতেই ভালো”-মুখো খানিকটা বিরক্ত এনে শান বলে।শানের ঘোরলাগা কন্ঠের অস্পষ্ট কথায় পাখি চোখ খোলে।
প্রশ্ন ছুড়ে দেয়, “কেন?জামাতে কি প্রবলেম?”
” যেদিন বুঝবা সেদিন থেকে আর গাধি বলব না “-বলতে বলতে শান ল্যাপটপ হাতে নিয়ে বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়ায়

ফোনের ক্ষীণ আলোয় বিছানার উপরে রাখা শানের ফোনটার দিকে নজর পড়ে পাখির।একটা অচেনা নম্বর থেকে ফোন, তাও রাতের ১২ টায়।ভ্রুকুচকে আসে পাখির।ফোন সাইলেন্ট। পাখি হাত বাড়িয়ে ফোনটা হাতে নিতেই শান খপ করে হাত টা ধরে।পাখির হাত থেকে ফোনটা কেড়ে নেয়।ব্যপার টা পাখির কেমন যেন লাগলো।

শান ফোনটা নিয়ে কানে ধরে পাখির দিকে এক নজর চেয়ে বেলকোনিতে চলে যায়।
এদিকে শানের ব্যবহারে এতোদিন খাপছাড়া ভাব আজ এভাবে ফোন কেড়ে নেয়া। সবটাই যেন কেমন লাগলো পাখির।মন খারাপ করে ওয়াশরুমে চলে যায়।বেরিয়ে দেখে শান এখনো কথা বলছে।পাখি ওদিকে খানিক চেয়ে বিছানা ঝেড়ে একপাশে গুটিগুটি হয়ে শুয়ে পরে।
শান কথা শেষে ঘরে ঢুকে বিছানার দিকে নজর ফেলে।পাখিকে দেখে কেন জানি না বিয়ের পরের কয়েকদিনের কথা মনে আসলো।বুকের ভিতর মোচর দিয়ে ওঠে শানের।
“এভাবেই তো গুটিগুটি হয়ে থাকত মেয়েটা”

শানের বুঝতে বাকি থাকে না পাখি অভিমান করেছে।করবে নাই’ই বা কেন গত কয়েকদিনে একবারও পাখির সাথে ভালো ভাবে সময় কাটাতে পারি নি শান।বুঝতে পারে অভিমানে দূরত্বের সৃষ্টি হয়েছে।
“তোমার জন্যেই আমার সবকিছু। সেই তোমার সাথেই যদি দূরত্ব বাড়ে আমি নিঃশেষ হয়ে যাবো পাখি।বিন্দু পরিমান দূরত্বও বাড়তে দেবো না”

ভাবতে ভাবতে পাখির দিকে এগিয়ে যায় শান।পাখির সামনে গিয়ে দাঁড়ায়।একটু ঝুঁকে পাখির নাকের ডগাটায় ঠোঁটের আলতো ছোঁয়া দেয়।চোখ মেলে তাকায় পাখি।অভিমানে পাশ ফিরতেই শান ওকে কোলে তুলে নেয়।হকচকিয়ে ওঠে পাখি।

“বাহিরে ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে।মুশলধারায় বৃষ্টি যাকে বলে।কেউ কি ভিজতে চায় আমার সাথে?”-পাখির কানের কাছে মুখ এনে বলে শান।বলার পর পরই পাখির কানের লতিতে আলতো করে কামড় বসিয়ে দেয়।
শানের কথায় পাখির ঠোঁটের হাসি ফুটে ওঠে।কারণ বৃষ্টি তার পছন্দ।কিন্তু প্রিয় মানুষটার সাথে কখনো ভেজা হয় নি।তাই তো লোভ সামলাতে না পেরে মাথা নাড়িয়ে সায় দেয়।
শান এবার পাখিকে কোলে নিয়েই ছাদে চলে আসে।মাঝখানে এনে কোলে নিয়েই পাখির চোখে চেয়ে দাঁড়িয়ে থাকে।

“কোলে করে ভেজাবেন নাকি নামাবেন?”
পাখির কথায় শানের ঘোর কাটে।মুচকি হেসে নামিয়ে দেয় কোল থেকে।আর কিছুক্ষনের মাঝেই পাখির পুরো শরীর ভিজে একাকার হয়ে যায়।
পাখি এদিক সেদিক ঘুরে ঘুরে নিজেকে ভেজাচ্ছে আর নিজের গাছগুলোর সাথে বৃষ্টির পানি ছিটিয়ে খেলছে।

আসক্তি পর্ব ৩২

মেঘ কেটে আকাশ একটু একটু পরিষ্কার হচ্ছে।চাঁদনী রাতের ক্ষীণ চাঁদটা যেন মেঘের আড়াল থেকে হালকা উকি দিচ্ছে।চাঁদের হালকা আলোয় পাখির অবয়ব পুরোই স্পষ্ট।শরীরের প্রতিটা অঙ্গ ফুটে উঠেছে বৃষ্টির ফোটায়।শানের কাছে বড্ডো আবেদনময়ী লাগছে নিজের সামনে ভেজা রমণীকে।কোন কিছু না ভেবেই পাখির কাছে চলে যায় সে।পিছন থেকে পাখির ভেজা ঘাড়ে মুখ ডুবিয়ে দেয়, হাত গলিয়ে পেটের উপর রাখে।দুহাতের শক্ত বাঁধনে আকড়ে ধরে তাকে।শানের স্পর্শে শিউড়ে ওঠে পাখি।মুখের উপর পরা বৃষ্টির পানি ঠোঁট বেয়ে নিচে গড়িয়ে পরছে অনায়াসে।শান সেদিকে চেয়ে পাখির ঠোঁট জোড়া নিজের করে নেয়।পূনারায় কোলে তুলে নেয় পরম আবেশে।

ভেজা শরীরে ছাদের দরজা ভিড়িয়ে ঘরে চলে আসে।পাখি চারিদিকে চেয়ে শানের গলা আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।
“আই ওয়ান্না গেট সামথিং সুইট”-
শানের কথায় পাখি লজ্জায় নিজের ঠোঁট কামড়ে নিয়ে অস্ফুট স্বরে জবাব দেয়, “হুহহ
শান পাখির গলায় গভীর ভাবে মুখ ডুবিয়ে দেয়।
“ছোট্ট শান নিবা না?”

খুশিতে ঝলমল করে ওঠে পাখির চোখ মুখ।
অবাক হয়ে যায় পাখি। লজ্জায় গালে লাল আভা দেখা দেয়।
শান এবার মুচকি হেসে কোল থেকে বিছানায় নামায় পাখিকে।
ততোক্ষনে পাখির খেয়াল হয় দুজনেই তো ভেজা।আর বিছানাও ভিজতেছে।
“আরে আরে করছেন কি?বিছানা ভিজে যাচ্ছে তো!”
শান পাখির মুখের উপর আঙ্গুল রেখে বলে,”হুসসসসস,

আসক্তি পর্ব ৩৪