উষাকালে ঊর্মিমালা পর্ব ২০

উষাকালে ঊর্মিমালা পর্ব ২০
জিন্নাত চৌধুরী হাবিবা

বাড়ির প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে বিষাদের গন্ধ। বিষন্নতা বিরাজ করছে মনের প্রতিটি অলিগলিতে। রোবটের মতো সকলের খাবারের ব্যবস্থা করলো লিলি। টেবিলে বাড়ির প্রত্যেকে উপস্থিত থাকলেও রাহাত নেই। ঘর ছেড়ে তাকে বের হতে দেখা যায়নি। এত বেলা পর্যন্ত ঘুমানোর ধাত নেই তার। লিলির মনে কৌতুহলের সঞ্চার হলেও ঘর পর্যন্ত যাওয়ার সাহস করলোনা।
আনোয়ার হোসেন খাবার মুখে না তুলেই বললেন,

-“রাহাত এখনো ওঠেনি?”
-“বলতে পারবোনা, বাবা।”
ভ্রু কুঁচকে তাকালেন আনোয়ার হোসেন। কিছু বলার প্রয়োজন হলোনা। রাহাত ঘর ছেড়ে বেরিয়ে এলো। খাবার টেবিলে না পৌঁছে দরজার দিকে অগ্রসর হলো। আনোয়ার হোসেন পেছন থেকে ডাকলেন,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

-“নাস্তা না করে কোথায় যাচ্ছো, রাহাত?”
“খিদে নেই” বলে বেরিয়ে পড়লো সে। আনোয়ার হোসেন পড়লেন ঝা*মে*লা*য়। জোর দিয়ে কাউকে কিছু বলতেও পারছেন না। সমস্ত রা*গ গিয়ে পড়লো নাসিমা বেগমের উপর। তিনিও আর খেলেন না। হাত ধুয়ে উঠে পড়লেন। শামীম, রিয়া কারোরই ঠিক করে খাওয়া হলোনা। লিলি নিজেও খেলোনা। পরিবেশটাই এমন অসুস্থ। যেখানে সুস্থ মানুষও ছোঁয়াছুঁয়ি খেলায় অসুস্থ হয়ে পড়ে।

মনে পাথর বেঁধে মায়ের সাথে দিব্যি হাতে হাতে কাজ করছে উষা। তার গাল ফোলানো চেহারা মায়ের নজর এড়ালোনা। জিজ্ঞেস করলেন,
-“মন খা*রা*প কেন? জামাইয়ের সাথে ঝা*মে*লা হয়েছে?”
-“নাহ্! এমনিই ভালোলাগছেনা।”
মাকে কোন প্রশ্ন করার সুযোগ না দিয়ে তানজিনার হাতে একটা খাবারের প্লেট ধরিয়ে আরেকটি প্লেট ঊর্মির জন্য নিয়ে গেলো। প্লেট রেখে বলল,

-“আপু তোমার খাবার।”
হাত থেকে ফোন রেখে ঊর্মি প্রশ্ন করলো,
-“মন খারাপ? গতরাতে কেঁদেছিস কেন?”
চমকে উঠলো উষা। যে প্রশ্নটা এড়িয়ে যেতে মায়ের কাছ থেকে পালিয়ে এলো, ঊর্মি ঠিক সেই প্রশ্নটাই করলো। হকচকানো গলায় বলল,
-“কখন? পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে ভুলভাল বকছো তুমি।”
-“আমি ভুল বলছিনা। রাতে বারান্দা থেকে এসেই কেঁদেছিস তুই।
আচ্ছা বাদ দে। ফোন অফ কেন তোর?”
মিথ্যে বলল উষা,

-“চার্জ নেই।”
-“চার্জ দিয়ে নে।”
উষা ঘর ছেড়ে বেরিয়ে গেলো।
ফোন হাতে শামীমকে কল ব্যাক করলো ঊর্মি।
শামীম বলল,
-“খেয়েছেন ভাবি?”
-“এখন কিন্তু আমি আপনার ভাবি নেই, ভাইয়া।”
শামীম শ্রদ্ধার সাথে দৃঢ়ভাবে বলল,
-“আপনি আজীবন আমার ভাবিই থাকবেন। ভাইয়ার সাথে সম্পর্ক থাকুক আর না থাকুক, আমি সারাজীবনের জন্যই আপনাকে ভাবি মেনেছি।”

মলিন হাসলো ঊর্মি।
শামীম আবার বলল,
-“উষা খেয়েছে?”
-“সবাইকে খাবার দিচ্ছে। নিজে এখনো খায়নি।”
-“হয়তো খাবেওনা! ওর রা*গ সম্পর্কে আমার চেয়ে আপনারা ভালো জানেন। গতকাল একটু বকাঝকা করেছিলাম। সবসময় উল্টোপাল্টা কথা বলে ও। কতক্ষণ মাথা ঠিক থাকে? রাতে আমি ফোন সুইচ অফ করেছি, সকাল থেকে তাকে ফোনে পাচ্ছিনা। আপনার সাথে ডেকে খাবার খাইয়ে নেবেন।”

-“এজন্যই বুঝি রাতে বালিশে মুখ লুকিয়ে কেঁদেছিল।”
রাতে রা*গ হলেও সকাল হতেই শামীম নিজেকে সামলে নিলো। উষা তো এমনই, শুধু শুধু রা*গ করে লাভ নেই। কেঁদেছে শুনে এখন একটু বেশিই খা*রা*প লাগছে। মৃদু শব্দে বলল,
-“ফোন অন করতে বলেছেন?”
-“বলেছি। কিন্তু কিছু না বলেই বেরিয়ে গেল।”
কথা বলার মাঝখানেই উষা আবার রুমে ফিরলো। ঊর্মির উদ্দেশ্যে বলল,
-“তুমি এখনো খাওনি?”
ঊর্মি ফোন বাড়িয়ে দিয়ে বলল,

-“ধর।”
উষা ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করলো,
-“কী?”
ঊর্মি ইশারায় বোঝালো “কথা বল।”
স্ক্রিনে নাম্বার দেখে ফোন কানে তুলে চুপ করে রইলো। কথা বললোনা। ওপাশ থেকে নরম সুর ভেসে এলো,
-“খেয়েছো?”
জবাব দিলোনা উষা। বকা শোনার পরও কল দিয়েছিল সে। অথচ তিনি ফোন সুইচ অফ করে বসে রইলেন। এখানেই তার রা*গ।

-“কথা বলবে না?”
উষা, ঊর্মির হাতে ফোন দিয়ে গমগমে স্বরে বলল ,
-“তুমিই কথা বলো।”
ঊর্মি দৃষ্টি খাটো করে বলল,
-“তোর হাজবেন্ড তোর সাথে কথা বলতে চাইছে, আমার সাথে না।”
মুখ ফিরিয়ে নিলো উষা। শামীম সবটা শুনতে পেল। ঊর্মি ফোন কানে তুলে বলল,
-“কথা বলতে চাইছেনা।”
-“আচ্ছা রাখছি আমি।”

ঘড়ির খাটো কাঁটা দশ এর ঘর ছুঁইছুঁই, মিনিটের কাঁটা এগারো এর ঘরে। মানে দশটা বাজতে এখনো পাঁচ মিনিট বাকি। ঊর্মির সাথে ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে উষা। বেশিরভাগ সময়ই দুবোন একসাথে ঘুমায়। আগে যখন রাহাতকে ছাড়া একা কিছুদিন থাকতে আসতো ঊর্মি, তখন উষাও নিজের ঘর ছেড়ে আপুর সাথে যোগ দিতো।

মাত্রই কম্বলের ওমে গা ডুবিয়েছে, কলিংবেলের শব্দে বিরক্ত হলো। কে যাবে এখন দরজা খুলতে? ঊর্মি যেতে পারবেনা, কিছুসময় পর উষা নিজেই উঠে গেলো। হয়তো আশিক এসেছে। এখনো তাদের দুই ভাই-বোনেরের সম্পর্ক আগের মতোই। কোন উন্নতি হয়নি। কেউই জড়তার কারণে আগ বাড়িয়ে কথা বলেনা।
ড্রইংরুম পেরিয়ে সদর দরজায় এসে দাঁড়ালো উষা। দরজা খুলেই আর সামনে তাকালোনা। হেঁটে ড্রইংরুম পর্যন্ত আসতেই ভরাট কন্ঠ শুনতে পেলো,

-“এক গ্লাস পানি দাও।”
ভড়কে গেলো উষা। এই লোক কোথা থেকে এলো? সে তো ভেবেছিল আশিক এসেছে। তাকিয়ে দেখলো শামীম সোফায় বসে আছে। কিছু না বলেই উষা রান্নাঘরে ঢুকলো। ঠান্ডার মধ্যে ঠান্ডা পানি না দিয়ে কফি বানিয়ে নিলো। টি-টেবিলের উপর কফি মগ রেখে ধপধপ পা ফেলে রুমে ফেরত যাচ্ছিল। হঠাৎ মনে হলো জিজ্ঞেস করা দরকার “খেয়েছে কি-না”। কিন্তু কথা বলার ইচ্ছে হলোনা। ভেবেচিন্তে একটুকরো কাগজে কিছু লিখে বেরিয়ে এলো।

শরীরের ওপর একটা দলা পাকানো কাগজ এসে টুপ করে পড়তেই খানিক চমকালো শামীম। সামনে উষা দাঁড়িয়ে আছে। সে কাগজ খুলে দেখলো লিখা আছে,
❝কেউ কি খেয়ে এসেছে?❞
মুখ চেপে হাসলো শামীম। চোখে চোখ রেখে রগঢ় করে বলল,
-“এতরাতে শশুর বাড়ি এসেছি কী কাজে? খাওয়ার জন্যই এসেছি। জীবনে খাওয়া ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ আর কী কাজ থাকতে পারে?”
উষা দাঁতে দাঁত চেপে মনে মনে বলল,

-“ভাঙবে তবু, মচকাবে না। কিজন্য এসেছে মনে হচ্ছে আমি বুঝিনা!”
কিন্তু মুখে কিছুই বলল না। খাবার গরম করে এনে টেবিলে রাখলো। শামীমকে খাবার দিয়েই তার জন্য তাদের ঘরে বিছানা করে নিলো। ভেবেছিল এতক্ষণে বোধহয় অর্ধেক খাওয়া হয়ে যাবে শামীমের। কিন্তু এসে দেখলো ভিন্ন কিছু। খাবার যেমন রেখে গিয়েছিল, তেমনই আছে। শামীম হাত গুটিয়ে বসে রইলো।
এবার আর কথা না বলে থাকতে পারলোনা উষা।

-“খাচ্ছেন না কেন?”
শামীম জিজ্ঞেস করলো,
-“তুমি খেয়েছো।”
-“সেটা জেনে আপনার কী কাজ? নিজের খাবার খেয়ে গিয়ে শুয়ে থাকুন।”
-“বাড়ির জামাইকে কেউ এমন অসম্মান করে? কত বড় সাহস তোমার! এক্ষুনি মুখে তুলে খাইয়ে দেবে।”

-“সমস্যা কি আপনার? আমি স্বা*র্থ*প*র হয়ে বিয়ে করেছি, এখনও আমি স্বা*র্থ*প*র*ই আছি। স্বা*র্থ*প*র*কে প্রয়োজন নেই বলে ফোন সুইচ অফ করলেন। তাহলে স্বা*র্থ*প*রে*র বাড়িতে কেন এসেছেন? আবার তার হাতে খেতেও চাইছেন!”
শামীম ছোট্ট করে বলল,

“সরি! রা*গে*র মাথায় বলেছি।”
-“সত্যিটাই বলেছেন। সবাই সব সময় আমার ওপরের জে*দ*টা*ই দেখে। আমিও যে মানুষ, আমারও যে ভেতরে মন বলে কিছু আছে। সেটা কেউই বিশ্বাস করতে পারেনা।
অবশ্য আপনি আমাকে চেনেই বা কদিন হলো?”
স্পষ্ট অভিমান টের পেলো শামীম। হাত চেপে পাশে বসিয়ে দিলো উষাকে। হাত ধুয়ে এক লোকমা খাবার উষার মুখের সামনে ধরলো। উষা মুখ ঘুরিয়ে বলল,

-“খেয়েছি আমি।”
-“খেলেও আমার সাথে আবার খাবে। সমস্যা কোথায়?”
-“ভরাপেট আমার।”
শামীমের নির্বিকার জবাব,
-“চুপচাপ খেয়ে নাও।”
খেয়ে নিলো উষা। সত্যি বলতে তার খাওয়া হয়নি রাতে। নিজেদের মধ্যে মনমালিন্য থাকলে গলা দিয়ে খাবার নামেনা। সবাই ডাকাডাকি করলেও সে পরে খাবে বলে শুয়ে পড়েছিল।

রান্নাঘরে বাকি খাবার গুছিয়ে ঊর্মির ঘরে চলে গেলো।
অনেকক্ষণ এপাশ-ওপাশ করেও শামীম যখন দেখলো উষা আসছেনা, তখন ফোন হাতে নিলো। রাতেরবেলা শশুর বাড়ি এসে বউকে হাঁক ছেড়ে ডাকা কেমন বেমানান দেখায়। সবার কাছে তারও তো একটা সম্মান আছে।
ফোনে টাইপ করে পাঠালো,

❝এখনো আসছোনা কেন? তুমি কি ভাবির সাথে ঘুমিয়ে পড়েছো?❞
উষা মেসেজ দেখে মনে মনে হাসলো। সে লিখলো,
❝অ*স*ভ্যে*র মতো রাতবিরেতে মেয়ে মানুষকে বিরক্ত করতে লজ্জা লাগেনা?❞
❝লজ্জা কেন লাগবে? মেয়ে মানুষ যদি নিজ থেকেই বিরক্ত করার সুযোগ করে দেয়?❞
❝ঘরে কি বউটউ নেই না-কি? নির্লজ্জ ব্যাটা। আর একবার মেসেজ করলে ব্লক লিস্টে ছুঁ*ড়ে মা*র*বো।❞

❝টউ নেই, তবে একটা বউ আছে। আপাতত সে পাশে নেই। তাইতো রাতবিরেতে মেয়েমানুষকে বিরক্ত করছি।
ব্লক করবেন? করুন। আমি দিওয়ানা প্রেমিকের মতো এক সেকেন্ডে আপনার বাড়িতে এসে হাজির হবো। আচ্ছা আসল কথাই জানা হলোনা। আপনি কি সিঙ্গেল?❞

❝ফ্লার্টিং করা ব্যাটা মানুষ আমি বহুত দেখেছি। তাই এসব সাইডে রাখুন।❞
❝তারমানে আপনি ইমপ্রেস! সরাসরি আমার সাথে প্রেম করতে চাইছেন। আমি কিন্তু এক পায়ে খাড়া। বউ বুকের একপাশে, গার্লফ্রেন্ড অন্যপাশে।❞
❝বাবু চলো না কাল শপিং এ যাই। তুমি আমায় শপিং করে দেবে, একটা আইফোন গিফট করবে, সারাদিন আমরা ঘুরবো ফিরবো, একেবারে ডিনার সেরে তারপর বাসায় ফিরবো।❞

শামীম লিখলো,
❝দুঃখীত! আমি ব্রেকআপ করতে চাইছি। আমার বউয়ের অন্তত এত ডিমান্ড নেই।
আর এই বার্তাটি আমার বউয়ের জন্য, “রাতবিরেতে মেয়েরা আমায় ডিস্টার্ব করে, তাদের হাত থেকে বাঁচতে তোমাকে আমার এই মুহূর্তে বড্ড বেশি প্রয়োজন। নিচে একটা স্ক্রিনসর্ট দিচ্ছি। দেখো, মেয়েরা কিভাবে বাবু বাবু বলে তোমার স্বামীর মন, টাকা দুটোই হাতিয়ে নিতে চাইছে।❞

ঊর্মিকে দেখে নিয়ে পা টিপে টিপে নিজের ঘরে এলো উষা। শামীমের শরীর থেকে কম্বল সরিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে বলল,
-“রাতবিরেতে মেয়েরা ডিস্টার্ব করে, না? তা মেয়েটাকে গার্লফ্রেন্ড হওয়ার অফারটা কে দিল?”
শামীম দাঁত কেলিয়ে হাসলো। বলল,

-“আচ্ছ বউয়ের কি অভিমান কমেছে? না কমলে আমি একটা অফার দিতে পারি।”
উষা আড়চোখে তাকালো।
শামীম বলল,
-”গার্লফ্রেন্ড বাদ, বউকে নিয়ে ঘুরতে যেতে পারি, কিছু শপিং ও করে দিতে পারি। যদি সে চায়, তবেই।”
উষা ভাববাচ্যে বলল,
-“কখন নিয়ে যাবে?”
-“যদি চায়, তবে দুদিন পর।”

এবার মুখোমুখি হয়ে বসলো উষা। মৃদু তেজ নিয়ে বলল,
-“দুদিন পর কেন? বিয়ের পর থেকে একবারও আমায় নিয়ে বেরিয়েছেন আপনি?”
-“আমি ভেবে রেখেছি অন্যকিছু। কাল গেলে অফিসের পর বের হতে হবে। কিন্তু দুদিন পর মানে শুক্রবারে গেলে সারাদিন ঘোরাঘুরি করা যাবে।”
-“আচ্ছা।”

রা*গ, অভিমান শেষ হতে দেখে শামীম বলল,
-“এবার তোমায় কিছু কথা বলি।
বিয়ে, সম্পর্ক কোন পুতুল খেলা নয় উষা। সেদিন ভাইয়া তোমাদের বাড়িতে এলো, এমন একটা ব্যাপার নিয়ে চিন্তিত ছিলাম। তারপর তুমি কি করলে? উল্টোপাল্টা কথা শুরু করলে। নিজেকে এবার একটু ম্যাচিউর করার চেষ্টা কর। তারমানে এটা নয় যে, নিজেকে কঠিন খোলসে আবৃত করবে, নিজের চাঞ্চল্য স্বভাব বিসর্জন দেবে।

শুধু একটু বুঝদার হও। ছেড়ে যাওয়া কোন কিছুর সমাধান হতে পারেনা। আজ ভাইয়া আর ভাবিকে দেখ। তারা দুজনের কেউই কিন্তু ভালো নেই। একটা ভু*ল সিদ্ধান্ত তাদের মধ্যে বিস্তর দূরত্ব সৃষ্টি করেছে, যা চাইলেও ঘুচানো সম্ভব নয়। ভাইয়ার কাজ ভাবিকে এতটাই আ*ঘা*ত করেছে, যার কারণে ভাবির ফিরে যেতে মন টা*ন*ছে*না। অথচ কেউ আবার শান্তিতে ও থাকতে পারছেনা। চোখের সামনে ছেড়ে যাওয়ার এমন একটা জলজ্যান্ত প্রমাণ দেখেও কিভাবে তুমি এসব চিন্তা মাথায় আনো?”

উষা মুখ ছোট করে বলল,
-“মন খা*রা*প ছিল, তাই হুট করেই বলে ফেলেছি আমি। কেন বলেছি আমি নিজেও জানিনা। আপনি কল কে*টে দিলেন। আমি আবার ট্রাই করলাম, আপনার ফোন সুইচ অফ। সেজন্যই খা*রা*প লেগেছে আমার।”

জীবনে চলাকালীন ঝড়ের মাঝে রিয়ার জীবনে আরও একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঝড় এসে হানা দিলো।
হাসপাতালের ভদ্রমহিলা তানভীরের মা ছিলেন। বাসায় রিয়ার ছবি দেখিয়েছিল তানভীর। তার মা সরাসরি রিয়াকে দেখে তার স্কিন প্রবলেম নিয়েই এখন স*ম*স্যা সৃষ্টি করছেন। উনার এক কথা, “ঘরের এক বউ, তার মাঝে কোন খুঁত থাকতে পারবেনা”।

উষাকালে ঊর্মিমালা পর্ব ১৯

বউ দেখতে এসে মানুষ কত কথা বলে যাবে। তিনি চাচ্ছেন না তার ছেলের বউ দেখে লোকে ক*টুকথা বলুক।
রিয়া আজ তানভীরের মায়ের মাঝে নিজের মায়ের প্রতিচ্ছবি দেখতে পাচ্ছে

উষাকালে ঊর্মিমালা পর্ব ২১