এক ফালি রোদ্দুর পর্ব ৩৪ || লেখনীতে: তানজিল মীম

এক ফালি রোদ্দুর পর্ব ৩৪
লেখনীতে: তানজিল মীম

“চুপচাপ বসে আছি সোফায় আমি, আমার পাশেই রিয়াদ ভাইয়া’ আর আমাদের সামনে গোল হয়ে বসে আছে সবাই’!!এর একটাই কারন আম্মু আব্বু কিছু বলবে আমাদের কিন্তু এখনও বলছে না’!!একরাশ নীরবতা ভেঙে বলে উঠলাম আমিঃ
—“কি হলো মা তোমরা কিছু বলছো না কেন?’
“আমার কথা শুনে মা বলে উঠলঃ
—“হ্যাঁ না মানে আমি না তোর বাবা বলবে…
“আম্মুর কথা শুনে আমি তাকালাম আব্বুর দিকে’!!তারপর নীরবে বললামঃ
—“হুম বলো বাবা কি বলবে?’
“এরই ভিতর রিয়াদ ভাইয়াও বলে উঠলঃ
—“কি বলতে চাইছো তোমরা?’আর বলতে যখন চাইছো তখন বলছো না কেন?’
—“ঠিকই তো বলছো কেন তোমরা…(তানজু)
—“আরে বলছি তো তোরা এত অস্থির হয়ে যাচ্ছিস কেন..(খালামনি)
“ওনাদের কথা আমি আর রিয়াদ ভাইয়া তাকালাম সবার দিকে..

—“আরে তোরাও না এত টেনশন কেন নিচ্ছিস’….(খালামনি)
—”হয়েছে আর কিছু বলতে হবে না আমি বলছি..(রিয়াদের বাবা)
“রিয়াদ তার বাবার কথা শুনে বললোঃ
—“হুম বলো বাবা….
—“দেখো রিয়াদ তোমার বয়স তো কম হলো না আর এখন তো তুমি একজন ডাক্তারও হয়ে গেছো তাই আমরা চাইছি আহানের সাথে সাথে তোমার বিয়েটাও দিতে…
“রিয়াদ তার বাবার কথা শুনে কি বলবে বুঝতে পারছে না’!!কি বলা উচিত তার তাও ভুলে গেছে’!!রিয়াদের ভাবনার মাঝে তার বাবা আবারও বলে উঠলঃ
—“তাই আমরা চাইছি তোমার আর রুহির বিয়েটা দিতে….
“এবারের কথা শুনে রিয়াদের মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পরলো,তার সাথে রুহির বিয়ে ঠিক করেছে পরিবার!’এখন কি করবে রিয়াদ,এখনই না বলে দেবে সে…
“এমন সময় তানজুর বাবা বলে উঠলঃ

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

—“তানজু…
—“হুম বলো বাবা….
—“যেহেতু বাড়িতে বিয়ের একটা নতুন আবহাওয়া সৃষ্টি হয়েছে তাই আমরা সবাই মিলে ঠিক করেছি একসাথে তিনটে বিয়ে দেওয়ার কথা…
“আব্বুর কথা শুনে কিছুটা অবাক হয়ে বললাম আমিঃ
—“তিনটে কোথায় দুটো তো একটা শিফা আর আহান ভাইয়ার আর আরেকটা রুহি – রিয়াদ ভাইয়ার,,
—“পুরো কথা শেষ করতে দিবে তো…
—“ঠিক আছে বলো…
—“আমরা তোমারও বিয়ে ঠিক করেছি….
“সাথে সাথে শকট হয়ে গেলাম আমি’!!তবে কিছু বললাম না’!!আমি চুপ থাকায় আব্বু আবারও বলে উঠলঃ
—“ছেলে আমার খুব পছন্দের,আমেরিকায় পড়াশোনা করেছে এখন অনেক বড় বিজনেসম্যান তোমার সাথে খুব যাবে,,আর কাল বিকেলে তুমি একটা রেস্টুরেন্টে গিয়ে ওর সাথে মিট করে এসো,,আমি জানি ছেলে তোমার পছন্দ হবে,,খুব ভালো ছেলে,ছেলের বাবার সাথে আমার কথা হয়েছে,তোমার ছবি দেখে ওনারা পছন্দ করেছে তাই কাল গিয়ে তুমি একবার ছেলের সাথে কথা বলে এসো,এখন বলো তুমি কি চাও,

“এতটুকু বলে থামলেন বাবা’!!
“এদিকে রিয়াদ পুরো বাকরুদ্ধ হয়ে গেছে,সে ভাবতেই পারে নি এত তাড়াতাড়ি এত কিছু হয়ে যাবে,রিয়াদ মনে মনে ভেবেছিল তানজু হয়তো এখনই না বলে দিবে!’কিন্তু রিয়াদকে অবাক করে দিয়ে বললো তানজুঃ
—“তোমরা যা চাইবে তাই হবে বাবা!’
“তানজুর কথা শুনে তানজুর বাবা খুশি হয়ে বললোঃ
—“আমি জানতাম তুমি এমনটাই বলবে,,
—“তাহলে কাল বিকেলে দেখা করো,,,
—“ঠিক আছে বাবা…
“এতটুকু বলে চলে যায় তানজু’!!রিয়াদ নীরবে বসে আছে মুখে কোনো কথা নেই রাগ হচ্ছে তার,খুব রাগ হচ্ছে তানজু কেন রাজী হলো বিয়েতে,রিয়াদ সোফা থেকে উঠতে যাবে এমন সময় তার মা ওর হাতটা চেপে ধরে বললঃ
—“তুই কোথায় যাচ্ছিস…
—“কই কোথাও যাচ্ছি না তো…
—“তারপর বল রিয়াদ খুশি তো তুই,, একটা না দুটো না একসাথে তিনটে বিয়ে খাবো আমি!'(দিহান)
“দিহানের কথা শুনে রিয়াদ কিছু বললো না তার তো এই মুহুর্তে তানজুর কাছে যাওয়া প্রয়োজন’!!রিয়াদ কিছুক্ষন অস্থির হয়ে বসে থেকে বললোঃ
—“আমি একটু আসছি…
“এতটুকু বলে দ্রুত চলে যায় রিয়াদ!’সবাই তো ভেবে নিয়েছে রিয়াদ লজ্জা পেয়ে চলে গেছে!’

“রুমে ঢুকেই সোজা ওয়াশরুমে চলে গেলাম,বুকের ভিতর অসহ্য যন্ত্রনা হচ্ছে আমার,কি করে মেনে নিবো আমি রিয়াদ ভাইয়ার সাথে রুহিকে কিন্তু মানতে আমায় হবেই,আচ্ছা বিয়েতে রাজি হয়ে ভুল করেছি কি?’চটজলদি চোখে মুখে পানি দিলাম আমি,সবকিছু এলেমেলো হয়ে যাচ্ছে, ভেবেছিলাম যেদিন রুহি আর রিয়াদের বিয়ে হবে সেদিন বাড়িতেই থাকবো না কিন্তু এখন তো,,ভাবতে বুকের ভিতর তোলপাড় চলছে,,না না এই বিয়ে কিছুতেই করবো না এক্ষুনি গিয়ে বাবাকে বিয়ের জন্য বারন করতে হবে,এখনই বিয়ে করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়!’কিন্তু,,উফ কিছু ভালো লাগছে না মাথার ভিতর যন্ত্রণা শুরু হয়ে গেছে…

“নানা কিছু ভেবে ওয়াশরুম থেকে বের হলাম আমি,,এমন সময় হুট করে কোথা থেকে রিয়াদ ভাইয়া এসে দেয়ালে সাথে চেপে ধরলো আমায়’!!ঘটনাটা আচমকা হয়ে যাওয়াতে আমি কিছুক্ষনের জন্য পুরো স্তব্ধ হয়ে গেলাম’!!সামনেই রিয়াদ ভাইয়ার লাল লাল চোখ দেখে আরো ভয়ে ঘাবড়ে গেলাম’!!

“এদিকে রিয়াদের রাগ যেন মাথার উপর উঠে গেছে’!!তানজুর দিকে তাকিয়ে চোখ গরম করে বললো সেঃ
—“তোর সাহস কি করে হলো বিয়েতে রাজি হওয়ার…
“তানজু চুপ…
—“তানজু চুপ থাকবি না তোর চুপ থাকাটা আমি জাস্ট নিতে পারছি না,আমি জানি তুই আমায় ভালোবাসিস তাহলে এমন কেন করছিস উওর দে আমায়…
—“আমি তোমায় ভালোবাসি না…

—“মিথ্যে বলা বন্ধ করে সেদিন রাতে নেশার ঘোরে অনেককিছু বলেছিস তুই,আর সে কথাগুলো যে একটাও মিথ্যে ছিল না তা আমি ভালো মতো জানি,,তাহলে এখন কেন মিথ্যে বলছিস….
“রিয়াদের কথাগুলো সাজাতে তানজুর দু’সেকেন্ড সময় লাগলো’!!তারপর বলে উঠল সেঃ
—“আশ্চর্য!’ তোমার আমার নেশার ঘোরে বলা কথা গুলো সত্যি মনে হলো,নেশার ঘোরে তো মানুষ কতকিছু বলে আমিও হয়তো বলে ফেলেছি,,আর তুমি এইভাবে ধরেছো কেন ছাড়ো আমায়..
“বলেই একটু ছাড়তেই আরো শক্ত করে চেপে ধরলো রিয়াদ ভাইয়া’!!তারপর বললোঃ
—“তুই কিন্তু এখন বেশি বেশি করছিস…

—“কি বেশি বেশি করেছি আমি,আর তোমার সাথে রুহির বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে তাই এসব বলা বন্ধ করো ভাইয়া,রুহিকে বিয়ে করে সুখী থাকো,আমি তো ভেবেছিলাম তুমি এতদিনে আমায় ভুলে খুব ভালো আছো…
—“ভালো হাঁসালি,আরে ভালো থাকা তো তুই সেদিন রাতেই কেঁড়ে নিয়েছিস,আর…
“তোর মুখে একবারও বাঁধলো না রুহিকে বিয়ে করার কথা বলতে,সেদিন এয়ারপোর্টে তোকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ছিলাম তোর কাছে আমার চোখের পানিরও মূল্য নেই,,এতটা পাথরের হৃদয় কি করে হলো তোর…
—“দেখো ভাইয়া ওইসব ভালোবাসা টালোবাসা বলে কিছু হয় না সবকিছু নিছোকি ফালতু…
—“আমার ভালোবাসা তোর কাছে ফালতু মনে হচ্ছে এত বড় কথা তুই কি করে বলতে পারলি,,
“নিমিষেই রিয়াদ কেমন হয়ে গেল!’তার রাগ সব যেন জমে গেল তানজু তার ভালোবাসাকে অপমান করলো,!’রিয়াদ কিছুক্ষন চুপ থেকে বললোঃ

—“তুই আমার ভালোবাসাকে অপমান করলি,,
—“না মানে,আমি আসলে ওইভাবে বলতে চাই নি..
—“ব্যস অনেক হয়েছে তোকে আর বলতে হবে না,এতো বড় অপমান কি করে করলি তুই আমায়,শুধুমাএ তোকে ভালোবাসি বলে এতবড় কথা বললি,তোকে ভালোবাসি বলেছি বলে অনেক ভাব বেড়ে গেছে না তোর,আসলে তুই আমায় ডির্জাবই করিস না,এই আট মাস কি করে কেটেছে আমার সেটা যদি জানতি,
” এতটুকু বলে রিয়াদ জোরে জোরে শ্বাস ফেললো’!!রাগে হচ্ছে তার,

—“আজ তোকে একটা কথা বলছি এতদিন তোকে আমি যতটা না ভালোবেসেছি আজ থেকে তোকে তার থেকেও বেশি ঘৃনা করি তানজু,তুই আমার ভালোবাসাকে অপমান করেছিস আজ যে তুই আমায় আঘাত করেছিস এই আঘাতের কোনো ক্ষমা হবে না,তোকে আমি কোনোদিনও ক্ষমা করবো না,কোনোদিনও না…
“বলেই তানজুকে ছেড়ে রুম থেকে বেরিয়ে যায় রিয়াদ,,

“এদিকে তানজু যেন স্তব্ধ হয়ে গেছে,রিয়াদ কি বললো তাকে,সে তো ভেবেছিল রিয়াদ তাকে ভুলে ভালো আছে,দেয়াল ঘেঁসে বসে পরল সে,চোখ বেয়ে পরছে পানি,একই মাথা যন্ত্রনায় পাগল হয়ে যাচ্ছে তানজু,তারওপর বিয়েতে রাজি হয়ে ভুল করেছে,সাথে রুহি রিয়াদের বিয়ে,কি বলতে কি বলেছে তারওপর রিয়াদ তাকে ঘৃনা করে, সব মিলিয়ে মানসিক যন্ত্রনায় ভুগছে তানজু,
“কি করবে না করবে বুঝতে পারছে না তানজু,দু’হাত দিয়ে মাথাটা চেপে ধরে চেঁচিয়ে উঠল সে’!!বুক চিঁড়ে কান্না পাচ্ছে তার,কোনোকিছুই যেন সহ্য হচ্ছে না….
“একপর্যায়ে কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে পরলো তানজু’!!

“নিজের রুমে ঢুকে সবকিছু এলেমেলো করে ফেললো রিয়াদ,সে ভাবতেই পারে নি তানজু তার ভালোবাসাকে এইভাবে অপমান করবে,কি করে পারলো তানজু এমন ভাবে বলতে,,আর যাবে না রিয়াদ তানজুর কাছে, কোনোভাবেই যাবে না,,তানজুকে ভুলে যাবে সে, রুহিকে বিয়ে করেই সুখী হবে সে,তারপর দেখিয়ে দেবে সে ‘তানজুকে ছাড়াই রিয়াদ ভালো আছে’….
“এসব ভেবে টেবিলের উপর থাকা কাঁচের গ্লাসটা ছুঁড়ে মারলো ফ্লোরে সাথে সাথে গ্লাস ভেঙে গুঁড়ো গুঁড়ো হয়ে গেল,,রাগে মাথার রগ দাঁড়িয়ে গেছে রিয়াদের, সে কোনোদিনও তানজুকে ক্ষমা করবে না কোনোদিনও না….

“রাত_৮ঃ০০টা…..
“আম্মুর ডাকে ঘুম ভাঙল আমার,এতক্ষন ফ্লোরে ঘুমিয়ে ছিলাম ভাবতেই কেমন লাগছে আমার’!!এদিকে আম্মু বলে উঠলঃ
—“তোর কি খাটে জায়গা হচ্ছিল না যে ফ্লোরে ঘুমিয়ে ছিলি….
“আম্মুর কথার উওর না দিয়ে বসা থেকে উঠে দাঁড়ালাম আমি’!!তারপর আস্তে বললামঃ
—“আম্মু আমার মাথাটা খুব যন্ত্রনা করছে,…
—“খুব ব্যাথা করছে…
—“হুম…
—“আচ্ছা তুই বস আমি তোর জন্য ট্যাবলেট নিয়ে আসছি,,

“এতটুকু বলে চলে যায় আম্মু!’আমিও বেশি কিছু না ভেবে আস্তে আস্তে চলে গেলাম বেলকনির দিকে,আজ নিজের ওপর নিজেরই রাগ হচ্ছে, সত্যি হয়তো ভুল করেছি আমি ওইভাবে রিয়াদ ভাইয়াকে বলা উচিত হয়নি,সত্যি হয়তো তুই রিয়াদকে’ ডির্জাব করিস না তানজু,,
“রাতে আকাশের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘ শ্বাস ফেললাম আমি,,চোখ বেয়ে দু’ফোটা পানি গড়িয়ে পরলো নিচে….
“এরই ভিতর আম্মু এসে হাজির হাতে তার কিছু খাবার,আমি আম্মুকে দেখে বলে উঠলামঃ

—“এত খাবার কেন?
—“না খেয়ে ঔষধ খাবি কি করে…
—“আমার খেতে ইচ্ছে করছে না আম্মু,
—“তা বললে কি করে হবে অল্প করে কিছু খা না হলে ঔষধ কি করে খাবি,,
“শেষমেশ আম্মুর জোরাজোরিতে খাবার খেলাম আমি,তারপর ঔষধ খেয়ে মায়ের কোলে মাথা দিয়ে চুপ করে শুয়ে রইলাম কিছু ভালো লাগছে না,ভুল করছি নাকি ঠিক করছি কিছু বুঝতে পারছি না,
“যখনই রুহির কথা ভাবি তখনই মনে হয় আমি ঠিক করছি,আবার যখন রিয়াদ ভাইয়ার কথা ভাবি তখনই মনে হয় ভুল করছি,উফ,আবারো সব এলেমেলো হয়ে যাচ্ছে আমার’….
“কি করার উচিত আমার!’আর এমনিতেও এখন তো ভাইয়া আমায় ঘৃণা করে, কোনোদিন ক্ষমাও করবে না বলেছে,ভাবতেই চোখের কোনে পানি ভড় করলো আমার’….

“পরেরদিন বিকেল ৪ঃ০০টা…..
“রেস্টুরেন্টের সামনে দাঁড়িয়ে আছি আমি আর রুহি!’এর একটাই কারন বাবার বলা ছেলেটির সাথে দেখা করা’!!এমন সময় রুহি বলে উঠলঃ
—“তুই আমায় কেন নিয়ে আসলি বলতো তোদের মাঝখানে আমি কি করবো?’
—“আমি কি একা একা দেখা করবো নাকি,না জানি কেমন হবে ছেলেটি,আর শিফা তো আহান
ভাইয়ারে পেয়ে আমাগো ভুলেই গেছে,
—“এত টেনশন কেন নিচ্ছিস বল তো খালু যখন পছন্দ করেছে তখন ভালোই হবে….
—“বলছিস…
—“হুম,এখন কি তবে রেস্টুরেন্টের বাহিরেই দাঁড়িয়ে থাকবি নাকি ভিতরে যাবি….
—“ওহ হুম যাবো চল…
“তারপর আমি আর রুহি চললাম রেস্টুরেন্টের ভিতরে’!!
—”আচ্ছা বাবা যেন কি নাম বলে ছিল,,

—“নামটা মনে নেই তবে ছেলেটি ব্লাক জিন্স আর রেড টিশার্ট সাথে ব্লাক কোট পরে আসবে এটা মনে আছে…
“রুহির মুখে ছেলেটার জামার বর্ননা শুনে নিমিষেই রিয়াদ ভাইয়ার কথা মনে পরলো আমার’!!আমায় যেদিন ভালোবাসার কথা বলে ছিল সেদিন ভাইয়াও কালো কোট পড়েছিল ভাবতেই দীর্ঘ শ্বাস বেরিয়ে আসলো…..
“এমন সময় রুহি আমার হাত ধরে বললোঃ

—“পেয়ে গেছি মনে হয়…
—“পেয়েছিস…
—“ওই যে (হাতের ইশারায় দেখিয়ে)
“রুহির দেখানো পথে আমি তাকালাম উল্টো দিকে মুখ করে বসে আছে ছেলেটি!’আমি কিছুটা বিস্ময় নিয়ে বললামঃ
—“তুই কি করে বুঝলি উনি ওই ছেলেটা…
—“একদম ইজি, দেখ তুই এখানে ওই ছেলেটা ছাড়া আর কেউ ব্লাক কোট পড়ে নি….
“আমিও আশেপাশে তাকিয়ে দেখলাম সত্যি ওই ছেলেটা ছাড়া আর কেউ ব্লাক কোট পড়ে নি,,
—“তাহলে দাঁড়িয়ে আছি কেন চল…
“আমার কথা শুনে রুহি অবাক হয়ে বললোঃ

—“আমি গিয়ে কি করবো আমি এখানে আছি তুই যা….
—“তুই যাবি না আমার সাথে…
—“যাবো তবে এখনই নয় আগে তুই যা তারপর…
—“যাবো বলছিস…
—“হুম…
—“ঠিক আছে তুই ছাড়া আমি দেখছি…
—“হুম যা…
“বিনিময়ে আমিও আর কিছু না বলে আস্তে আস্তে এগিয়ে গেলাম ছেলেটির দিকে’!!ছেলেটার নামটা যেন কি বলেছিল বাবা হুম বলে মনে পড়েছেঃ
“মাহাবুব রহমান অভ্র”
“অভ্র নামটা শুনতেই প্লেনের সেই ছেলেটার কথা মনে পরলো আমার,না জানি খুঁজে পেয়েছিল কিনা মেয়েটাকে,এসব ভেবে রেস্টুরেন্টের ছেলেটির পাশে দাঁড়িয়ে বললাম আমিঃ
—“এক্সকিউজ মি আপনি কি “মাহাবুর রহমান অভ্র”….
“ছেলেটি আমার কথা শুনেই পিছন ঘুরে তাকিয়ে বললোঃ
—“ইয়েস…

“ছেলেটির ফেস দেখে চমকে উঠলাম আমি,কারন এই অভ্রই সেই অভ্র যার সাথে প্লেনে আলাপ হয়েছিল,উনিও যে আমায় দেখে অবাক হয়েছে তা ওনার চোখ দেখে ভালোই বুঝতে পেরেছি আমি,দুজনেই অবাক হয়ে একসাথে বলে উঠলামঃ
—“আপনি….
—“আমারও তো একি প্রশ্ন আপনি…
—“ওহ মাই গড,আমি তো ভাবতেই পারি নি আপনার সাথে আমার দেখা হবে….
—“আমিও যে কম অবাক হয় নি তা কিন্তু নয় মিস…
“তারপর আমি আর অভ্র কথা বলতে শুরু করে দিলাম!’

“এদিকে দূর থেকে অভ্রের ফেসটা হাল্কা দেখতেই বুকের ভিতর মোচড় দিয়ে উঠলো রুহির,পুরনো অতীতে নাড়া দিল রুহির,এখনও পুরোপুরি ছেলেটার ফেস দেখে নি সে,,হাল্কা দেখতেই কেমন লাগলো তার…

এক ফালি রোদ্দুর পর্ব ৩৩

—“তারপর কি খবর বলুন পেয়েছেন আপনার ভালোবাসার মানুষকে?’
—“আপনাকে তো সেদিনই বলে ছিলাম ওহ হয়তো আমার ভাগ্যে নেই,,
—“ওহ সরি…
—“ইট’স ওকে,আচ্ছা আপনার বাবা বলে ছিল আপনার সাথে আপনার খালাতো বোনও নাকি আসবে তা সে কই আসে নি নাকি….
—“ওহ আপনি রুহির কথা বলছেন,
“রুহি”নামটা শুনতেই চমকে উঠলো অভ্র’!!কিছুটা হতাশা নিয়ে বললো সেঃ
—“তার নাম রুহি,
—“হুম…

—“আসে নি আপনার সাথে…
—“এসেছে তো ওই যে দাঁড়িয়ে আছে…
“তানজুর কথা শুনে অভ্রও তাকালো পিছনে’!!রুহির ফেস দেখেই চমকে উঠলো সে….
“এদিকে রুহিও অভ্রের ফেস দেখে পুরোই শকট হয়ে গেল!’এতবছর পর,,,,
“অভ্র রুহি দুজনেই যেন হতাশার ঘোরে আঁটকে গেছে,…..

এক ফালি রোদ্দুর পর্ব ৩৫