এক মুঠো প্রণয় পর্ব ১৯

এক মুঠো প্রণয় পর্ব ১৯
লেখনীতে একান্তিকা নাথ

রাত অনেক হলো। আমি তখনও সেভাবেই বসা থাকলাম মাটিতে। মেহু আপু নিজেদের বাড়িতে না গিয়ে আমার পাশেই বসে থাকল এতটা সময়৷মাথায় আলতোভাবে হাত বুলিয়ে কত কিছু বলে চলেছে অনেক্ষন ধরে।আমি শুনছি ঠিক সেসব কথা, তবে মস্তিষ্কে বোধগম্য হচ্ছে না তার কিছুই৷ একদৃষ্টিতে নির্বিকার ভাবে তাকিয়ে থাকলাম একইভাবে। এভাবেই বোধ হয় অনেকটা সময় গেল। হঠাৎ মেহেরাজ ভাই এলেন।মেহু আপু বলে উঠলেন সঙ্গে সঙ্গে,

” দেখো না ভাইয়া, রাত একটা বাঁজতে চলল।ও একইভাবেই মাটিতে বসে আছে।কিছু খাচ্ছে না। এমনকি ঘুমাচ্ছেও না।”
মেহেরাজ ভাই কিয়ৎক্ষন চুপ থাকলেন।তারপর হাঁটু গেড়ে আমার সামনে বসলেন। গম্ভীর স্বরে মুখ টানটান করে বলে উঠলেন,

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন হউন

” এভাবে না খেয়ে, না ঘুমিয়ে কাটালে দাদী ফিরে আসবে না জ্যোতি।”
আমি জানি দাদী ফিরে আসবে না।না খেলেও বকবে না আগের মতো।না ঘুমালেও আগের মতো শাসন করে তাড়াতাড়ি ঘুমোতে বলবে না।দাদী আর কিছুই করবেন না আমার সাথে।কখনোই ফিরে আসবে না আমার কাছে।জ্যোতি বলে ডাকও দিবে না।সবটা জেনেই স্পষ্ট কন্ঠে বললাম,

” জানি আমি।”
মেহেরাজ ভাই দীর্ঘশ্বাস ফেললেন।নিভু নিভু ক্লান্তিমাখা চাহনিতে কিছুটা সময় তাকিয়ে থাকলেন আমার দিকে।পরমুহুর্তেই চোখমুখ টানটান করে দৃঢ় গলায় বলে উঠলেন,
” জানলে না খেয়ে, না ঘুমিয়ে এভাবে মূর্তির মতো বসে আছিস কেন?কাল পরীক্ষা আছে তোর, ভুলে গিয়েছিস? পরীক্ষা দিতে গিয়ে ওখানে অসুস্থ হয়ে গেলে কি করে পরীক্ষা দিবি?এভাবে চললে তো শরীর অসুস্থ হবেই এটুকু সেন্স নেই তোর?”

আমি চোখ তুলে তাকালাম। মেহেরাজ ভাই ভ্রু উঁচিয়ে আবার প্রশ্নময় দৃষ্টি নিক্ষেপ করলেন।আমি নড়েচড়ে বসলাম। উত্তরে বললাম,
” অসুস্থ হবো না আমি।এটুকু মানানোর অভ্যাস আছে আমার মেহেরাজ ভাই।”
মেহেরাজ ভাই সে উত্তরে দমে গেলেন না।বরং দ্বিগুণ রাগ দেখিয়ে দৃঢ় গলায় বললেন,

” তুই বাচ্চা না জ্যোতি।আমি তোকে যথেষ্ট ম্যাচিউরড ভাবতাম এতকাল।অথচ ইমম্যাচিউরডদের মতে বিহেভিয়ার করছিস। এভাবে কাটালে অসুস্থ হবি না তো সুস্থ থাকবি?এখন রাত সাড়ে বারোটা।সকাল থেকে কিছু খাস নি।ঘুমাস নি।এসবের পরও অসুস্থ হবি না?”
স্থিরভাবে একইরকম বসে থেকে দৃঢ় গলায় উত্তর দিলাম,

” সমস্যা হবে না।”
মেহেরাজ ভাই উঠে দাঁড়ালেন।পাঞ্জাবির হাতা গুঁটিয়ে বুক টানটান করে দাঁড়ালেন আমার সম্মুখেই।দাম্ভিক গলায় বললেন,
“সকালে কি বলেছিলি? নিজের খেয়াল নিজে রাখতে পারিস। এই নমুনা নিজের খেয়াল নিজে রাখার?”

আমি কপাল কুঁচকে তাকালাম।কিঞ্চিৎ বিরক্তিবোধও কাজ করল। জীবনে কিছু কিছু সময় আসে যখন কারোর সঙ্গই আর ভালো লাগে না।কাউকেই আর জবাবদিহি করতে মন চায় না।কারোরই সম্মুখীন হতে মন চায় না। শুধু একটা বিষয় মনে হয় তখন, একা থাকা শান্তির।চরম শান্তির!এই মুহুর্তটাও বোধহয় তেমনই। মৃদু গলায় বললাম,

” আপনি শুধু শুধু কথা বাড়াচ্ছেন মেহেরাজ ভাই।এসবে আমার কিছুই হবে না।আমার শরীর অতোটা আহ্লাদী নয় যে একটু থেকে একটু হলেই অসুস্থ হয়ে মূর্ছা যাব।”
মেহু আপু মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন।আহ্লাদী গলায় বলে উঠলেন,

” আর জেদ করিস না বোন।খেয়ে নে প্লিজ।আমি মানলাম তুই অসুস্থ হবি না। তবুও সাবধানতা বজায় রাখলে ক্ষতি কি?এটা তো যে সে পরীক্ষা নয়।বোর্ড পরীক্ষা জ্যোতি।নিজের খেয়াল রাখা উচিত নয়? নিজের অসুস্থতার জন্য পরীক্ষায় খারাপ করলে তখন তো তোর নিজেরই ক্ষতি হবে।বুঝার চেষ্টা কর প্লিজ।”

আমার প্রতি সবার উদ্বিগ্নতা দেখে তাচ্ছিল্য জমল মনের ভেতর।কত কত চিন্তা আমার জন্য।কতজন এসে বুঝিয়ে যাচ্ছে।অথচ এই আমিটার এই মুহুর্তে বাঁচার ইচ্ছেটাই নেই।ক্রমশ টের পেলাম আমার বেঁচে থাকার ইচ্ছে ক্ষীণ হয়ে আসছে।মেহেরাজ ভাই বোধ হয় ঠিকই বলেছিলেন, মানুষ একা বেঁচে থাকতে পারে না।আসলে পারে না।আপন মানুষের অভাবে ছটফট করে।এই মুহুর্তে আমিও ছটফট করছি।

বোধ হলো, আমার আপন মানুষরা সবাই আমায় একে একে ছেড়ে গিয়েছে।সবাই!আর কেউ নেই অবশিষ্ট।মিনার ভাইও আজকাল বদলে গিয়েছে বেশ।আগের মতো আর সে মিনার ভাই নেই। আজকাল নিয়ম করে আমায় এড়িয়েও চলে।তবে আপন মানুষ আর কে?আপন বলতে বাকি যারা ছিল সবাই পৃথিবী ছেড়ে, আমায় ছেড়ে, সবাইকেই ছেড়ে চলে গিয়েছে।

বাকিটা জীবন আমি এভাবে একা একা বাঁচতে পারব?আপনমানুষ বিহীন একটা পুরো জীবন! ভাবতেই শ্বাসরুদধ হয়ে আসল।অসহনীয় বোধ হলো দাদীর মৃত্যুযন্ত্রনা। দাদীর এমনটা করা উচিত হয়নি।আমাকে ছেড়ে যাওয়া উচিত হয়নি।দাদী কেন করল এমনটা?কেন?সবটা জেনে আমায় এভাবে মাঝপথে ছেড়ে গেল কেন দাদী?
ভাবনা ছেড়ে বেরিয়েই অস্ফুট স্বরে উত্তর দিলাম,

” রেখেছি তো মেহু আপু।”
মেহু আপু ফের নরম গলায় প্রশ্ন করলেন,
” কিভাবে রেখেছিস?সকাল থেকে তো কিছু মুখে তুলিসনি।”
” খাবার খাওয়াকেই কি কেবল খেয়াল রাখা বলে মেহু আপু? ”
মেহু আপু বোধ হয় হতাশ হলেন।মলিন মুখে একবার আমার দিকে তো একবার মেহেরাজ ভাইয়ের দিকে তাকালেন।তৎক্ষনাৎ মেহেরাজ ভাই পকেটে হাত গুঁজে বলে উঠলেন,

” মেহু, ওকে বল খেয়ে তারপর ঘুমাতে।খাবার পাঠাতে বলছি। খাবার খেয়ে যাতে ঘুম দেয়।”
মেহেরাজ ভাইয়ের কন্ঠে রাগের আভাস স্পষ্ট।আমি চোখ তুলে তাকালাম। বললাম,
” লাভ নেই মেহেরাজ ভাই।খাব না আমি।ঘুমও হবে না।আপনি চলে যান। রাত তো অনেক হয়েছে।আমার জন্য না ভেবে ঘুমিয়ে পড়ুন।”

মেহেরাজ ভাইয়ের রাগটা বোধহয় এবার কিঞ্চিৎ বাড়ল।চোখমুখ শক্ত করে আমার দিকে তাকালেন সেই রাগের আভাস দেখাতেই।শীতল কন্ঠে রাগ মিশিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে বললেন,
” এভাবে কয়দিন অনশন করবি?কয়দিন চলবে এভাবে?পরে অসুস্থ হলে?”
প্রশ্নগুলো শুনে ছোটশ্বাস ফেললাম।স্পষ্ট কন্ঠে বললাম,

” চিন্তা নেই মেহেরাজ ভাই। আমি অসুস্থ হয়ে কাউকে ঝামেলায় ফেলব না।সে মানসিকতা নিয়ে আহার -নিদ্রা বাদ দিয়েছি এমনটা ভাববেন না।না খাওয়া, না ঘুমানো এগুলো কিন্তু কোনটা আমার ইচ্ছাকৃত নয়। ক্ষিধে নেই তাই খাচ্ছি না, ঘুম পাচ্ছে না তাই ঘুমাচ্ছি না।আমার ক্ষিধে পেলে খেয়ে নিব, ঘুম পেলে ঘুমিয়ে যাব।”
মেহেরাজ ভাই বোধ হয় এবার চরমভাবে রেগে গেলেন।ধুপধাপ পা ফেলে আবারও সকালের মতোই ঘর ছেড়ে বেরিয়ে গেলেন।মেহু আপু সেদিক পানে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলল।মলিন মুখে বসে থাকল পুরোটা সময় আমার পাশেই।

একটা নির্ঘুম রাত কাঁটল। প্রতিদিনের মতো আজ সকালে দাদী ঘুম ছেড়ে উঠে আমাকে ডাকল না। প্রতিদিনের মতো দাদীর সকাল বেলার চা খাওয়ার অভ্যাসের তাড়া দেখিয়ে চা বসাতে বলল না।ছোটবেলা থেকে ” দাদীর ঘর ” বলে জেনে আসা পরিচিত ঘরটায় আজ দাদী নেই।কোথাও নেই!আমার বুক ভার হয়ে আসল। নিঃশ্বাস আটকে আসল।বসা ছেড়ে উঠে মেহু আপুর দিকে তাকাতেই দেখলাম হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে আছেন।খারাপ লাগল।আমার জন্য শুধু শুধু উনি সারারাত এখানে বসে থাকলেন।পাশে বসে আগলে রাখলেন পুরোটা সময়। মৃদু গলায় ডাক দিলাম মেহু আপুকে,

” আপু?উঠে বিছানায় ঘুমাও। ঘাড়ে ব্যাথা করবে।”
মেহু আপু চোখ মেলে চাইল।ঘুমঘুম কন্ঠে বলল,
” সকাল হয়ে গিয়েছে জ্যোতি?”
উত্তরে বললাম,
” হ্যাঁ।তুমি উঠে বিছানায় ঘুমাও। ”

কথাটা বলেই বের হলাম ঘর ছেড়ে।শান্ত দৃষ্টিতে চারপাশের নিরব পরিবেশ একবার খেয়াল করেই পুকুর পাড়ে গেলাম।পুকুর পাড়ের রাস্তার ওপাশে কিছুটা দূরে কবরস্থানে চোখে পড়ল সদ্য মাটি চাপা কবরটা। চোখ টলমল করল আমার।অস্ফুট স্বরে বলে উঠলাম,
” কেন করলে এমনটা দাদী?আমায় ছেড়ে যাওয়াটা কি খুব জরুরী ছিল?তোমাকে ছাড়া কি করে কাটাব পুরো একটা জীবন? কি করে?”

কথাগুলো বলতে বলতেই চোখ বেয়ে গাল গড়িয়ে পড়ল নোনতা পানি। নিচের ঠোঁট কামড়ে সেই নোনতা পানির স্রোত থামানোর চেষ্টা চালালাম।মৃদু আওয়াজে বললাম,
” এটা তুমি ঠিক করলে না দাদী।একদমই না।তুমি খুব স্বার্থপর!খুব বেশি স্বার্থপর তুমি।তোমরা সবাই স্বার্থপর। তুমি, মিথি সবাই।আমার কথা একবারও ভাবোনি। একবারও না।আমি কি করে থাকব? কাকে আঁকড়ে ধরে বাঁচব আমি?আমি যে পারছি না এ কষ্…”

বাকিটুকু বলা হলো না আমার।তার আগেই শুকনো পাতার মড়মড়ে আওয়াজে কারোর পায়ের আওয়াজ শুনলাম।মুহুর্তেই চোখের পানি মুঁছে নিলাম ওড়নার কোণায়।চোখমুখ আগের ন্যায় স্বাভাবিক রেখে স্থির হয়ে দাঁড়ালাম।কানে আসল পুরুষালি কন্ঠ,

” নানীর জন্য কষ্ট হচ্ছে না তোর জ্যোতি?”
মিনার ভাইয়ের কন্ঠ শুনেই ঘাড় ঘুরিয়ে তাকালাম।বিধ্বস্ত চাহনী। চুল গুলো অগোছাল।চোখমুখ শুকনো। আমি একনজর তাকিয়েই উত্তরে বললাম,
” তোমার কি মনে হয় মিনার ভাই?”
মিনার ভাই বলে উঠলেন,

” আমি জানি তোর অসহনীয় কষ্ট হচ্ছে।হয়তো বা নিঃশ্বাসও বন্ধ হয়ে আসছে ক্ষনে ক্ষনে।তবুও এতটা স্বাভাবিক হয়ে কেন আছিস?গুমড়ে না মরে কষ্টগুলো প্রকাশ করছিস না কেন?”
হৃদয়ে তাচ্ছিল্য উপচে পড়ল মিনার ভাইয়ের কথা শুনে।সবার কি আর কষ্ট প্রকাশ করার অধিকার থাকে?কষ্ট পেলেই কি আর সবাইকে সামলানোর জন্য আপন মানুষ থাকে? থাকে না তো।যাদের কষ্ট সামলানোর মানুষ থাকে না তাদেরকে নিজের কষ্ট নিজেকেই সামলাতরে হয়।নিজের ব্যাথা নিজেকেই হজম করতে হয়। কাঁতরাতে হয় নিঃশব্দে। ক্রমশ গুঁড়ে মরতে হয়।তুও কষ্ট প্রকাশ করা যায় না।বলা যা না হৃদয়ের গোপণ ব্যাথার গল্প।উত্তরে বললাম,

” স্বাভাবিক না থেকে অন্যদের মতো বিলাপ ধরে কান্না করলে তুমি সামলাবে মিনার ভাই?দুঃখ মনে করে ঘন্টায় ঘন্টায় মূর্ছা গেলে তুমি আগলে নিবে? যাদের দুঃখ সামলানোর কেউ থাকে না তাদেরকে দুঃখ চাপিয়ে রাখতে হয় মিনার ভাই।ব্যাথা লুকাতে হয় হৃদয়ের গহীনে।”
মিনার ভাই বুকে হাত গুঁজে বললেন,

” আমার সামনে তো তুই আগে এভাবে সব লুকিয়ে রাখতি না জ্যোতি।বদলে গেছিস অনেকটা।”
তাচ্ছিল্য নিয়ে বললাম,
” তুমিও বদলে গেছো অনেক মিনার ভাই। আগে আমায় এড়িয়ে চলতে না।এখন তো এড়িয়ে চলো। ঠিকঠাক কথাও বলো না।”

মিনার ভাই কিয়ৎক্ষন চুপ থাকলেন।তারপর কি বুঝেই বলে উঠলেন,
” ওসবের পেছনে কারণ আছে কিছু।”
মৃদু গলা জিজ্ঞেস করলাম আমি,
” কি কারণ?”
” থাক না সেসব কারণ তোর অজানা।জানলে হয়তো ভুল বুঝবি। ”

আমি আর কথা বাড়ালাম না।পুকুর পাড়ের একপাশটায় গিয়ে বসলাম।তাকালাম পুকুরের স্থির হালকা সুবজ রাঙ্গা পানিগুলোর দিকে।ততক্ষনে মিনার ভাইও অপর পাশে আমার সামনাসামনি হয়ে বসলেন।নিশ্চুপ থেকে বোধ হয় দাদীর কথাই মনে করছিল আমার মতো।আমি কিছুটা সময় বসে থেকে উঠে দাঁড়ালাম।পুকুর পাড় ছেড়ে হেঁটে আসতেই চোখে পড়ল উঠোনে দাঁড়িয়ে থাকা মেহেরাজ ভাইয়ের উপর।

এক মুঠো প্রণয় পর্ব ১৮

চোখমুখ টানটান করে এদিকটায় তাকিয়েই দাঁড়িয়ে ছিলেন উনি।কেমন যেন থমথমে চাহনী।অস্পষ্ট রাগ রাগ ভাব।আমি তাকানো মাত্রই উঠোন ছেড়ে হেঁটে অন্যদিকে চলে গেলেন দ্রুত।সে চলে যাওয়াতে কি ছিল জানা নেই। তবে দৃষ্টিতে ভেসে উঠল মেহেরাজ ভাইয়ের মুখচোখে রাগ রাগ ভাব।বোধ হয় রাতে না খাওয়ার বিষয়টা নিয়েই এই রাগ। আমি সে রাগ আমলে নিলাম না।মৃদু পায়ে হেঁটে বাড়িতে যেতে লাগলাম আবারও।

এক মুঠো প্রণয় পর্ব ২০