কলিজার ভেতর গেঁথে রাখবো তোমারে পর্ব ৩০

কলিজার ভেতর গেঁথে রাখবো তোমারে পর্ব ৩০
নুজাইফা নূন

-” তোর ব‌উ মানে আমারো তো ব‌উ।আমার ব‌উকে আমি আমার থেকে আর দূরে দূরে রাখতে পারবো না।এখন থেকে স্রোত আমার সাথে এক‌ই ছাদের তলায় থাকবে।স্রোত কে দিতে যদি তোর আপত্তি থাকে তাহলে সেকেন্ড অপশন আরু কে দিতে পারিস।হয় ব‌উ দিবি।না হয় বোন দিবি।নাও ইউর চয়েস।কোনটা দিবি বল? দুজনেই সুন্দরী ।আমার একটা হলেই চলবে । কথাটা বলা মাত্রই আবদ্ধ নিলয়ের গালে ঠাস ঠাস করে থা’প্প’ড় মেরে দিয়ে বললো,
-” ছিঃ নিলয়! শেষ পর্যন্ত তুই ও আমার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করলি?তোর আর সৈকতের মধ্যে কোনো পার্থক্য দেখছি না আমি।”

-” নিলয় আবদ্ধের হাত দুটো নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে কাতর স্বরে বললো, তুই বিশ্বাস কর আমি আরু কে অনেক ভালোবাসি । শুধু মাত্র আরুর জন্য আমি আমার মায়ের অবাধ্য হয়েছি। তুই হয়তো জানিস না মা আমার অমতে বিয়ে ঠিক করেছিলো।আমি আরুর কথা ভেবে বিয়ে ভেঙ্গে দিয়েছে। আমি আমার সবটা দিয়ে আরু কে ভালো রাখবো।আরু আমার মনের রাজ্যের রানী হয়ে থাকবে।ওর চোখে কখনো পানি আসতে দিবো না।আমি আমার ভালোবাসা দিয়ে আরুর কালো অতীত ভুলিয়ে দিবো।আরু কে অনেক সুখী রাখবো আমি।”

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

-“প্রতিত্তরে আবদ্ধ কিছু না বলে হাতে রাখা চায়ের কাপ বেঞ্চিতে রেখে হনহন করে হেঁটে নিলয়ের বাসায় ফিরে এলো।আবদ্ধ কে দেখে নিলয়ের মা এগিয়ে এসে বললো,
-” তুই একা এলি যে।নিলয় কোথায়?”
-” নিলয় নুরুল কাকার দোকানে বসে বসে চা খাচ্ছে।”
-” তুই ফ্রেশ হয়ে ব‌উমা কে নিয়ে নিচে আয়।আমি টেবিলে খাবার দিচ্ছি।”

-” ঠিক আছে আন্টি।একটু তাড়াতাড়ি দাও। আমাদের বেড়েতে হবে তো।সবাই অনেক টেনশন করছে।”
-” হ্যাঁ রে বাবা দিচ্ছি।একা হাতে কতো দিক সামলাবো বল তো?নিলয় কে কতোবার বলেছি বিয়ে কর বিয়ে কর।আমাকে একটু শান্তি দে।এই বুড়ো বয়সে আমি আর পারছি না। কিন্তু কে শোনে কার কথা? সে নাকি একটা মেয়েকে পছন্দ করে‌। পছন্দ করে বললে ভুল হবে।ভালোবাসে। নিলয় তাকে ছাড়া নাকি কোনোদিন ও বিয়ে করবে না।আমি আমার দুঃসম্পর্কের এক বোনের মেয়ের সাথে নিলয়ের বিয়ে ঠিক করেছিলাম।

কিন্তু নিলয় প্রথম বার আমার কথার অবাধ্য হয়েছে। আমি বারবার নিলয়ের কাছে মেয়েটার কথা জিজ্ঞেস করেছি‌। কিন্তু নিলয় মেয়েটার ব্যাপারে কিছু বলে নি আমাকে। সত্যিই মেয়েটা অনেক ভাগ্যবতী।আমার ছেলেটা তাকে পাগলের মতো ভালোবাসে। মেয়েটা আমাদের বাড়ির ব‌উ হয়ে এলে রাজরানী হয়ে থাকবে। আমার তো মেয়ে নেই।আমার খুব ইচ্ছা আমি পুত্রবধূ ঘরে আনবো না।আমার মেয়ে নিয়ে আসবো‌। তুই আমার একটা কাজ করে দিবি বাবা?”

-” বলো না কি করতে হবে?”
-” তুই তো আবদ্ধের বেস্ট ফ্রেন্ড।আবদ্ধ তোর সাথে সব কথা শেয়ার করে। তুই নিলয়ের কাছে মেয়েটার ব্যাপারে জানতে চাইবি।মা হয়ে আমি আমার ছেলের কষ্ট সহ্য করতে পারছি না।শুনেছি মেয়েটার বাবা নাকি অনেক ধনী।তারা কখনো নিলয়ের মতো একজন পুলিশ অফিসারের সাথে মেয়ের বিয়ে দিতে চাইবে না। তুই আমাকে মেয়ের বাড়ির ঠিকানা জোগাড় করে দিবি।আমি প্রয়োজনে মেয়ের বাবা ভাইয়ের হাতে পায়ে ধরে মেয়েটা কে ভিক্ষে চাইবো আমার ছেলের জন্য।প্লিজ আবদ্ধ আমার এই কাজ টুকু তুই করে দে না বাপ।আমি তোর কাছে সারাজীবন কৃতজ্ঞ থাকবো।”

-” এইভাবে বলছো কেন আন্টি।আমি কি তোমার ছেলে ন‌ই? মা হয়ে ছেলের কাছে কেউ এভাবে হাত জোড় করে বলো?আমাকে একটু সময় দাও আন্টি।আমি বাড়ি ফিরে তোমাকে সবটা জানাবো।”
-” ঠিক আছে বাপ। তুই উপরে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আয়।”
-” ঠিক আছে বলে আবদ্ধ রুমে আসতেই স্রোত বলে উঠলো, কলিকাতা হারবাল কি স্যার?”
-” স্রোতের এমন প্রশ্নে আবদ্ধ থতমত খেয়ে বললো আই ডোন্ট নো।”
-” বাট আই নো।”
-” কি জানো তুমি? আর এসব কোথা থেকে পেলে?”

-” গল্প পড়ে স্যার ‌।রাতে যে এই মন তোমারি [ দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ] ইবুক টা কিনেছিলাম।সেটা পড়েই জানতে পেরেছি।বাবা গো বাবা শাফায়াত কি ঠোঁট কাঁটা নির্লজ্জ পুরুষ। শাফায়াতের দাদু জাস্ট মজার ছলে বলেছে -“হ্যাঁ গো নানুভাই! ব‌উডার অবস্থা তো এক রাতেই ত্যানা ত্যানা করে ছাড়ছো।”
-” উত্তরে শাফায়াত কি বলেছে জানেন ?”
-” জানার প্রয়োজন মনে করছি না।”

কলিজার ভেতর গেঁথে রাখবো তোমারে পর্ব ২৯

-” স্রোত আবদ্ধের কথায় পাত্তা না দিয়ে বললো , বুড়ির কথায় শাফায়াত বলেছে,কেনো বুড়ি তুমি ত্যানা ত্যানা হতে পারছো না বলে তোমার হিংসা হচ্ছে বুঝি? নানার জন্য কি অনলাইনে কলিকাতা হারবাল অর্ডার দিবো?এক ফাইল ই তুমি ত্যানা ত্যানা হ‌ওয়ার জন্য যথেষ্ট বলেই হো হো করে হাসতে লাগলো স্রোত।আবদ্ধ স্রোত কে হাসতে দেখে স্রোতের দিকে এগিয়ে এসে স্রোতের অধরে নিজের অধর মিলিয়ে দিলো।।”

কলিজার ভেতর গেঁথে রাখবো তোমারে পর্ব ৩১