কারনে অকারনে ভালোবাসি পর্ব ১২

কারনে অকারনে ভালোবাসি পর্ব ১২
Suraiya Aayat

” জানু, জানু জানু জানু,,,,,,,জানু ৷”
কথাটা বলতে বলতে একপ্রকার নাঁচতে নাঁচতে এসে মধু এসে আরুর পাশে এসে বসলো ৷ আরু রিতীমতো ভ্রু কুঁচকে সোফাতে বসে হেলছে দুলছে আর বিকালে সব কিছু কিভাবে ম্যানেজ করবে ভাবছে ৷ হঠাৎ মধু এসে আরুর কানের কাছে জানু জানু প্রলাপ শুরু করে দিলেই আরু বিরক্ত হলো তবুও কিছু বললো না ,কিন্তু হঠাৎ করে মধু বেশুরে কন্ঠে যখন বলে উঠলো
” জানু জানু,জানু, আই লাভ ইউ, ডু ইউ লাভ মি ৷”
কথাটা শুনতেই আরুর বিরক্তির মাত্রাটা আকাশ ছুঁয়ে দাঁড়ালো,,মধু এবার আরুর গায়ে রিতিমতো ঢলে পড়তেই আরু গগনবিরাদী চিৎকার করে উঠলো

” এই মেয়ে,what are u doing ৷”
কথাটা শুনতেই মধু চমকে উঠলো ৷ মধু মেয়েটা বড্ড গায়ে পড়া , সবসময় গায়ে ঢলে ঢলে পড়ে আর অদ্ভুত রকম ব্যাবহার করে যা আরুর একদম পছন্দ না আর মধুকে অপছন্দ হওয়ার আরও একটি কারন আছে যেটা হলো মধু আরিশকে চোখ দিয়ে গিলে খাই , এখনো হয়তো জানে না যে আরিশ এসেছে তাই শান্ত আছে, আরিশকে সামনে পেলে যে কি কি করতো তার ঠিক নেই ৷
মধু চমকে উঠে বলল

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

” ওপস মাই অরিও তুমি রেগে গেলে কেন?”
আরু চোখ মুখের অদ্ভুত রকম একটা এক্সপ্রেশন দিয়ে বলল
” থামবে তুমি ? আর কতোবার বলবো যে এসব আদিক্ষেতা করে আমার নাম ডাকবেনা, i have a cute name…such a cute nem….আ রু শি,,,,আরু…. ৷”
মধু আরুর গাল দুটো টেনে দিয়ে বলল
” ওপপস, আই ফরগেট ইট ৷ তোমার গালদুটো একদম ক্রিমি ক্রিমি তাই তো ভালোবেসে অরিও ডাকি ৷”
আরু রেগে গিয়ে বলল
” নো মোর ওয়ার্ডস ‌৷”
মধু খানিকটা লজ্জা পেয়ে বলল
” মার ডালা, এটা তো আরিশ বলে ‌৷”
আরু রেগে বলল

” সে তোমার থেকে বড় মধু, তার সাথে তোমার এজ গ্যাপটা ভুলে যেও না ৷ He is 24 and u are only 17…..so mind it,ভাইয়া বলবে তাকে ৷”
মধু মুখ ভাঙচি এটে বলল
” ওসব ভাইয়া টাইয়া আমি বলতে পারবো অরিও ,ওগুলো বড্ড ওকুয়ার্ড ৷”
আরু মাথা চেপে বসলো ,ইচ্ছা করছে একটা ধমকে এই মেয়েকে চায়না পাঠিয়ে দিতে কিন্তু ওর ধমকে তো জোর নেই,আরিশ হলে ঠিক পারতো কারন আরুর পড়া একটু ভুল হলেই আরিশ মাঝে মাঝে এমন চিৎকার দেই যে আরু বাংলাদেশের বর্ডার টপকে ইন্ডিয়া চলে আসে ৷

সবকিছু মিলে চিন্তাগুলো একপ্রকার জগাখিচুড়ী হয়ে যাচ্ছে আর এখন যদি কোনভাবেই আরিশ মধুর সামনে চলে আসে তো আগুনে ঘি ঢলার মতো কাজটাও হয়ে যাবে , যদিও আরিশ এই মেয়েকে সহ্য করতে পারে না, দূরত্ব বজায় করেই চলে , কিন্তু আরিশ তো আরিশ ই কখন কি করে বোঝা যায় না ৷”
আরু এবার নিজের রাগটা একসাইডে রেখে মধুকে বলল
” মধু আমি একটু চিন্তায় আছি, can u plz leave me alone ?”
মধু বড়ো একটা হাই তুলে বলল
” ওকে ৷”

কথাটা শেষ করে উঠতে গেলেই হঠাৎ সিঁড়ি দিয়ে লুঙ্গি পরে আর একটা সাদা টি শার্ট পরে নামছে আরিশ আর বলছে
” আরু পাখি , আরু পাখি, শোনো ৷”
আরিশকে আসতে দেখে আরু চোখ মুখ খিঁচে বলল
” উফফ ! এবার এই টেপ রেকর্ডার আর থামবে না ৷”
আরিশকে নামতে দেখে মধু একপ্রকার লাফিয়ে উঠে বললো
” আরিশ !”
আরিশ নামতে নামতে মধুকে দেখে বিড়বিড় করে বলল
” শিট মধু…..হোয়াটএভার, আব আয়েগা মাজা আরু পাখি ৷”
কথাটা বলে মুচকি হাসতেই মধু বলে উঠলো
” কেমন আছো তুমি?”
আরিশ মুচকি হেসে বলল

” তোমাকে দেখে আরও ভালো আছি ৷ পুরো টুইটুই ফিলিংস ৷ ”
আরু আরিশের দিকে সরু চোখে তাকালো, আরিশ ও আরুর দিকে তাকিয়ে সিঁড়ি থেকে নেমে মধুর কাছে গিয়ে বলল
” ওয়াও তুমি তো দিনদিন আরও সুন্দরী হয়ে যাচ্ছো,ব্যাপারটা কি?”
মধু হালকা ব্লাশ করে বলল
” আরে নাহ,,তুমিও যে কি বলো না আরিশ !”
হঠাৎ মধুর আরিশের দিকে তাকাতেই আরিশের লুঙ্গির দিকে নজর যেতেই বলল
” হোয়াট ইজ দিস আরিশ ,এটা কি পরেছো তুমি ? ”
আরিশ ওর লুঙ্গির দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলল
” ওহহ, এটা !এটাতো লুঙ্গি , আমার শাশুড়ি আম্মু স্পেশাল ৷ ”
মধু এবার নাক মুখ কুঁচকে বলল

” রিয়েলি ! ফুপি আম্মু তোমাকে এসব পরতে দিয়েছে ? হাও স্টুপিড ৷”
আরু এবার মুখ খুললো
” মধু আই ওয়ার্ন ইউ, আম্মুকে আর ওনাকে দুজনকেই রেসপেক্ট দিয়ে কথা বলো ৷”
আরিশ আরুর দিকে তাকিয়ে বলল
” চিল আরুপাখি, এতো রেগে যাচ্ছো কেন ! ”
“নো প্রবলেম মধু তুমি আমাকে আরিশ ই বলো ৷তোমার অরিও যদি তার হাজবেন্ডকে আরিশ বলতে পারে তাহলে তুমি কেন পারবে না যতোই হোক তুমি ওর মামার মেয়ে আই মিন কাজিন ৷”
কথাটা শুনে মধু মুচকি হাসলো ৷

” বাট লুঙ্গিটা তোমার সাথে একদম যাচ্ছে না, তুমি এটা চেন্জ করো ৷”
আরিশ ওর মাথার চুলগুলোকে খানিকটা হাত দিয়ে বুলিয়ে বলল
” সরি মধু, তোমার এই কথাটা রাখতে পারলাম না,,শাশুড়ি আম্মু দিয়েছে না পরলে রাগ করবে ৷ তাইনা আরুপাখিইইইইইইই !”
আরু রাগী চোখে তাকিয়ে ওখান থেকে উঠে চলে গেল , দুজনের এই আদিক্ষেতা ময় কথাবাত্রা ওর সহ্য হচ্ছে না, রাগ বিরক্তি ওদের সামনে মূলত প্রকাশ করতে চাইছে না, আরিশকে আলাদা ক্লাস নেবে ও তাই ওখান থেকে উঠে চলে গেল,,যাওয়ার আগে আরিশের দিকে একটা কিলার লুক দিয়ে গেছে যাতে করে আরিশ মুচকি হাসছে ৷
আরু চলে যেতেই মধু বলল

” তুমি না ভীষন কিউট,,,,আই লাইক ইউ ৷”
কথাটা বলতেই আরিশ বুঝলো যে এই মেয়ে এবার যখন এমন হ্যাংলামো শুরু করেছে তখন এতো সহজে তা কমার নয় তাই ও সেখান থেকে পালানোর জন্য বলল
” awwwwe…..so sweet মধু ৷”
মধু হালকা চোখ বন্ধ রে বলল
” নট মধু, ওনলি হানি ওকে?”
” ওকে ৷”
কথাটা বলে আরিশ চলে যেতে নিলেই মধু আরিশের হাত ধরতে গেলেই আরিশ লুঙ্গিতে পা বেধে পড়ে যেতে নিয়েও সামলে গেল ৷ মধু ব্যাতিব্যাস্ত হলো সাথে ভয় ও পেয়ে গেল ‌৷
মধু আরিশকে ধরতে গেলেই আরিশ সরে গিয়ে বলল

” ইটস ওকে, আমার একটু কাজ আছে , আমি আসছি ৷”
কথাটা বলে আরিশ গটগট করে চলে গেল,মধুও আর কিছু বলার সুযোগ পেলো না ৷
রুমের সামনে আসতেই আরিশের হাটার গতি কমে গেল ৷ হাফ ছেড়ে বঁচলো আরিশ ‌৷ আরুকে রাগাতে গিয়ে মধুর প্যাচালে পড়ে গেল আরিশ ৷ রুমে ঢুকতে গেলেই দেখলো দরজাটা হালকা করে খোলা আছে, আরিশ দরজাটা ঠেলে রুমে ঢুকলো ৷ ধীর পায়ে রুমে ঢুকতেই দেখলো আরু শুয়ে আছে উপুড় হয়ে ৷ আরু সাধারনত এভাবে ঘুমায় না কখনও , কারন ওর পেটে পেইন হয় তাই ডক্টর এভাবে ঘুমাতে না করেছে তবে আগে যখন ভীষন রকম রাগ হতো তখন এভাবে শুয়ে থাকতো তাতে করে রাগ নাকি অনেকটা কমে যায় ৷ আরিশ বুঝলো যে আরু বেশ রেগে আছে ৷

আরিশ রুমে ঢুকলেও আরুর মাঝে কোন পরিবর্তন নেই , আরু আগের মতো করেই শুয়ে আছে দেখে আরিশ হাটছে আর বলছে
” মধু ও না, একদম বাচ্চা, কেমন জানি সবসময় দুষ্টুমি করে ৷ আসলে ওর ম্যাচিওরিটি এখনও আসেনি তাই এমন পাগলামো করে ৷ওর জন্য তো লুঙ্গি তে পা বেধে পড়েই যাচ্ছিলাম ৷”
কথাটা বলার পর ও আরুর কোন ভাবভঙ্গির পরিবর্তন নেই দেখে আরিশ বলে উঠলো
” আরু পাখি !”
তাও কোন উত্তর এলো না দেখে এবার আরুর পাশে গিয়ে শুয়ে আরুর কানে কানে ফিসফিসিয়ে বলল
” আরু পাখি ! এই আরু পাখি ৷” আরুপাখি !”

আরুর কোন উত্তর নেই দেখে আরিশ আরুকে ঠিক করে শুইয়ে দিতেই দেখলো আরু ঘুমিয়ে পড়েছে ৷ আরিশ মুচকি হেসে আরুর দিকে বেশ ঝুকে গেল, আরিশ মুখের ওপর পড়ে থাকা চুলগুলো সরিয়ে দিয়ে আরও গভীর ভাবে থাকাতেই দেখলো আরুর চোখের কোনে খানিকটা ভেজা ভেজা আর চোখের কোনে ও স্বল্প মাত্রায় জল জমে আছে আর পেটে হাত দিয়ে আছে,হয়তো পেটে পেইন হচ্ছিল তাই কাঁদছিলো নাহলে মধুকে নিয়ে এত ছোট ছোট বিষয়ে আরু কাঁদে না ৷

মেয়েটা কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে গেছে , আরিশের বুকের মাঝে এক নোনা স্রোত বয়ে গেল, দীর্ঘশ্বাস নিয়ে আরুকে বুকের মাঝে জড়িয়ে নিলো , খুব অল্পতেই মেয়েটা রেগে যাই আর খুব অল্পতেই কেঁদে ফেলে ৷ আরিশ আরুর কপালে চুমু দিলো ৷ চোখ বন্ধ করলেই 2 মিনিট ও লাগে না আরুর ঘুম চলে আসে ‌৷ আরিশ আরুর মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে আর পুরোনো সব কথা মনে করার চেষ্টা করছে ৷

আরিশ চোখ বন্ধ করতেই কানে সেই বাচ্চা আরুর কন্ঠস্বর ভেসে আসলো,,,,,
” আ্য আ্য আ্য……”
কান্নার আওয়াজটা ভেসে আসতেই আরিশ দৌড়ে ছুটে গেল ৷আরিশ তখন সবে 13 বছর বয়স আর আরুর 8 ৷ দৌড়ে গিয়ে দেখলো আরু বসে বসে মাটিতে হাত পা ছড়িয়ে কাঁদছে ‌, গায়ের সাদা ফ্রকটাতে ধুলো লেগে আছে ,পায়ের জুঁতোর বেল্টটা ছেঁড়া , মাথার দুই দিকে দুটো ঝুটির একটা নড়বড়ে ৷ আরিশ আরুর কাছে দৌড়ে ছুটে গিয়ে বলল

” কি হয়েছে আরু পাখি তুমি কাঁদছো কেন?”
আরু কাঁদছে কিন্তু কিছু বলছে না দেখে আরিশ বলল
” কি হয়েছে আরু পাখি , বলো৷”
আরুর কান্না থামছে না দেখে আরিশ এবার ধমক দিয়ে বলল
‘ এই মেয়ে কি হয়েছে বলো ৷”
আরু আরিশের ধমক শুনে বলল

” শফিক ভাইয়া আমার হাত ধরে কোথায় টেনে টেনে নিয়ে যাচ্ছিলো, আমি যাচ্ছিলাম না, তবুও ভাইয়া আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছিলো ৷ আমি কতো কাঁদছিলাম আর যেতে চাইছিলাম না বলে,,,, ”
কথাটা বলে আরু আবার কাঁদতে লাগলো, আরিশের রাগ মাথায় চেপ গেছে, যেটুকু শুনেছে তাতে ওর অনেক কিছুই বোঝা হয়ে গেছে যে শফিক কি করতে চাইছিলো ৷ রেগে ধমকে বলল

” কি করেছে? বলো !”
আরু ধমক শুনে কেঁপে উঠে বলল
” ভাইয়া আমাকে মেরেছে ‌ ৷ আমার গালে 5টা চড় মেরেছে, চুলের ঝুটি ধরে টেনেছে , আমাকে মেরেছে আরিশ ভাইয়া ৷”
কথাটা বলে আরু আবার কাঁদতে লাগলো ৷ আরিশ এবার রেগে ওখান থেকে উঠে যেতে গেলেই আরুর ছোট হাতদুটো আরিশকে থামিয়ে দিয়ে বলল

” ভাইয়া তুমি যেও না , নাহলে শফিক ভাইয়া তোমাকেও মারবে ৷”
আরিশ সেদিন আরুর কথা শোনেনি, ওর আরুপাখির যে ক্ষতি করতে চেয়েছিলো তাকে উচিত শিক্ষা দিতে চেয়েছিল ও ৷
আরিশ যেতেই দেখলো শফিক নামের 15 বছরের ছেলেটা রাস্তায় আর একটা মেয়েকে টিজ করছে ৷ আরিশ গিয়ে ওর মুখ বরাবর পাঞ্চ করতেই শফিক নীচে পড়ে গেল আর মেয়েটা যেন প্রানপনে বাঁচতে ছুটে পালালো ৷ আর এদিকে আরু দৌড়ে দৌড়ে ছুটে আসছে আরিশকে থামানোর জন, পায়ে ছেড়া জুতোর জন্য ঠিক করে দৌড়াতেও পারছে না, ক্রমে ক্রমে হোচট খাওয়ার উপক্রম ৷
এদিকে শফিক উঠে দাঁড়ালো , আরিশকে শফিক মারতে গেলে আরিশ রাগের চোটে আরও কয়েকটা ঘুষি মারলো শফিকের মুখে , কোন রকম কোন টেকনিক ছাড়াই উড়ুধুড়ু মারতে লাগলো আরিশ, রাস্তার মাঝে মারপিঠ হচ্ছে , ফাঁকা রাস্তা আর দুপুরের দিকে সবাই মুলত ঘুমাচ্ছে তাই কেউ আটকানোর নেই ৷ আরু আরিশের হাত ধরে টেনে থামানোর জন্য বলল
” আরিশ ভাইয়া তুমি আর মেরো না, শফিক ভাইয়া অনেক পচা, আম্মুকে আমি বলে দেবো শফিক ভাইয়ার কথা, তুমি ছাড়ো ৷”
আরিশ এদিকে ঝফিককে মারছে, ছেলেটার নাক মুখ কেটে গেছে , আর আরিশ প্রতিটা ঘুষি আর লাথির মারার সাথে সাথে বলছে
” আমার পুতুল বউকে তুই ছুয়েছিস হ্যাঁ, আজ তোকে আমি বাঁচিয়ে রাখবো না ৷”

কথা গুলো বলছিলো আরিশ ৷ আরু এবার আরিশের হাত ধরে টানতে গেলে আরিশ বলল
” আরুপাখি সরে যাও এখান থেকে ৷”
কথাটা বলে হাতটা ঝাড়া মারতেই আরু পড়ে গেল রাস্তার মাঝে ৷
আরিশ শফিককে মারছে, শফিকের একটা হাত ধরে মুচড়ে দিতেই শফিকের একটা হাত ভেঙে গেল,শফিকের আর পাল্টা আঘাত করার ক্ষমতা নেই ৷ হঠাৎ কানে ভেসে আসলো
” আহহহহ…..!”

কারনে অকারনে ভালোবাসি পর্ব ১১

চিৎকার শুনতেই আরু শফিকের মুখে আর একটা ঘুষি মারতেই শফিকের দাঁত মুখ দিয়ে রক্ত বার হলো ৷ পিছন ঘুরে তাকিয়ে দেখলো আরু মাটিতে পড়ে আছে ওর সাদা জামা রক্তে লাল হয়ে গেছে, পিছন ঘুরে তাকিয়ে দেখলো একটা বছর 20 র ছেলে দ্রুত সাইকেল নিয়ে পালাচ্ছে ৷ সাইকেলটা সেদিন আরুর পেটের ওপর দিয়ে গিয়েছিলো ৷ চারিদেকে রক্ত আর রক্ত আর আরু মাটিতে শুয়ে কাতরাচ্ছে, বাঁচার আশা ছিলো না,,,,চারিথেকে রক্তের ছড়াছড়ি আর আর্দনাত……

কথাগুলো চোখের সামনে ভেসে উঠতেই আরিশ আরুকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো আরিশ,অজান্তেই আরিশের চোখ থেকে জল গড়িয়ে পড়লো ‌৷ সেদিনের কথা ভবলেই আজও আরিশ কেঁপে কেঁপে ওঠে ৷ সেদিন হয়তো আরিশ বুঝতো না যে এর পরিনামে আরু পাবে একরাশ অপূর্নতা, মা না হওয়ার সুখ ৷ কিন্তু আজ আরিশ সব বোঝে কিন্তু ওর আফশোষ হয় না আর , কারন ও ওর অপরিপূর্ণ আরুপাখিকেই ভালোবাসে ,প্রয়োজন নেই একটা মানুষকে সবসময় পরিপূর্ণ হতে হবে ‌ ,ওর আরুপাখিই ওর ছোট্ট বেবি, বাঁচার সম্বল হিসাবে আরুই ওর জন্য যথেষ্ট ৷
আরিশ আরুকে জড়িয়ে ধরে বললো
” তোমার অপরিপূর্ণতা নিয়েই তুমিই আমার প্রয়শী আমার রুপসী আমার সব, সব ,সব , মাই এভরিথিং ৷’

কারনে অকারনে ভালোবাসি পর্ব ১৩