চৈত্রিকা পর্ব ১১

চৈত্রিকা পর্ব ১১
বোরহানা আক্তার রেশমী

রাত বাড়ছে। সাথে প্রহরের জ্বরও বাড়ছে। জ্বরে মুখ পর্যন্ত লাল হয়ে আছে। গোঙানোর শব্দও বেড়ে চলেছে। চৈত্রিকা অনেক ভেবে চিন্তে শেষে আর বসে থাকতে পারলো না। দৌড়ে উঠে গোসলখানা থেকে এক বালতি পানি এনে খাটের কাছে রেখে কোনো রকমে প্রহরের মাথা খাাটের কোণায় এনে রাখে। নড়াচড়া করায় প্রহর একবার চোখ মেলে তাকিয়েছে। চোখ দুটো তে যেনো রক্ত জমে গেছে। চৈত্রিকা কয়েক বার বড় বড় শ্বাস নিয়ে আগে মাথায় পানি ঢালে। বেশ অনেকটা সময় মাথায় পানি দিয়ে চোখ, মুখও ধুয়ে দেয়। জ্বর কোনোমতেই কমছে না। শরীর মুছিয়ে দিলে জ্বরটা বোধহয় কমতো কিন্তু সে প্রহরের শরীর মুছাবে না। যে মানুষগুলোর প্রতি আকাশ সমান ঘৃ’ণা সে মানুষগুলোর একজনকে সে সেবা করছে এটাই তো প্রহরের ভাগ্য। প্রহরের মুখের দিকে তাকিয়ে তাচ্ছিল্য করে হাসে সে। টাওয়েল এনে চুলগুলো মুছিয়ে দিয়ে ঠিকমতো শুইয়ে দেয়। চোখ মুখ কুঁচকে বলে,

‘খায় কি এই লোক! এতো ভারী কেন? যেনো আস্ত একটা খাম্বা!’
একটা কাপড়ের টুকরো নিয়ে জলপট্টি দিতে শুরু করে। কাপড়ের টুকরো কপালে রেখে পুরো ঘর খুঁজতে শুরু করে কোথাও ওষুধ আছে কি না! পুরো ঘর খুঁজেও কিছু পেলো না। দুটো ড্রয়ার তো টেনেও খুলতে পারলো না। শেষে রেগে এসে বিছানার ওপর বসে রইলো। এখন তো তারও ঘুম পাচ্ছে! বার কয়েক হাই তুলে জলপট্টি দিতে থাকে। এটুকুতে যা কমবে ততটুকুই। না কমলে তার আর কিছু করার নাই। বেশ অনেকটা রাত পর্যন্ত একাধারে জলপট্টি দেয়। কাপড় দিয়ে গলা, হাতও মুছিয়ে দেয়। জ্বরটা হালকা হয়ে আসে ভোর রাতের দিকে। জ্বর হালকা দেখে ঘুমু ঘুমু চোখে আরো একবার প্রহরের দিকে তাকিয়ে শেষ বারের মতো জলপট্টি মাথায় দিয়ে যেভাবে বসে ছিলো সেভাবেই ঘুমিয়ে পড়ে। সারা রাত ঘুম না হওয়ায় সহজেই সেই ঘুম গভীর হয়ে যায়।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

রোদের তীব্র আলো চোখে পড়তেই ঘুম ভেঙে যায় প্রহরের। জ্বর ছেড়ে যাওয়ায় পুরো গা ঘেমে একাকার হয়ে গেছে। বাহিরে সূর্য মামাও তার তেজ দেখানো শুরু করেছে। বিরক্তিতে চোখ মুখ কুঁচকে উঠে বসে। কপাল থেকে জলপট্টিটা ততক্ষণে পড়ে গেছে। হাই তুলে আড়মোড়া কাটিয়ে পাশে তাকাতেই তার চক্ষু চড়কগাছ। চৈত্রিকা এলোমেলো ভাবে খাটের সাথে হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে আছে। শাড়ি ঠিক নেই। দ্রুত চোখ সরিয়ে নিয়ে উঠে দাঁড়ায়। চৈত্রিকা হঠাৎ এভাবে ঘুমাচ্ছে কেনো? মেয়েটা তো তার ঘুম থেকে উঠার আগেই উঠে যায়। আজ এখনো ঘুমিয়ে আছে যে! আড়চোখে একবার পাশে তাকিয়ে কাথা টেনে দেয় চৈত্রিকার কোমড় অব্দি। চোখ যায় পাশে রাখা ছোট্ট টেবিলের ওপর। সেখানে পানির জগ আর বিছানার ওপর জলপট্টি দেখে যা বুঝার বুঝে যায়। সাথে সাথেই কপালে ভাজ পড়ে। মনে মনে হাজারটা চিন্তা ভাবনা করেও হিসাব মিলাতে না পেরে গম্ভীর আওয়াজে বিড়বিড় করে বলে,

‘শ’ত্রুর ওপর হঠাৎ এতো দয়া! তবে কি প্র’তিশো’ধের চেয়েও বেশি মনুষ্যত্ব কাজ করে?’
বাঁকা হাসে প্রহর। পকেটে হাত গুজে শিষ বাজাতে বাজাতে গোসলখানায় ঢুকে পড়ে। প্রহরের গোসল শেষ হওয়ার আগেই বাহির থেকে ডাক আসে অর্থির। দরজায় কড়া নাড়তে নাড়তে বেশ জোড়ে ডাকে,
‘ওহ ভাবীজান কই আপনি? দরজা খোলেন!’

অর্থির চেঁচানো আর দরজার শব্দে চমকে লাফিয়ে বসে চৈত্রিকা। হঠাৎ ঘুম ভেঙে যাওয়ায় মস্তিষ্কের চলাচল কিছুক্ষণের জন্য থেমে যায়। চারপাশে চোখ বুলিয়ে নিজেকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করতেই অর্থির ডাক ভেসে আসে। চৈত্রিকা উঠে আগে দরজা খুলে দেয়। অর্থি চোখ ছোট ছোট করে বলে,
‘আপনি এখনো ঘুমাচ্ছিলেন? এতো দেড়ি হলো যে!’
‘হ্যাঁ! আসলে কাল রাতে তোমার ভাইজানের জ্বর ছিলো। সারারাত জেগে ছিলাম তো তাই এতো বেলা করে ঘুমিয়েছি। তুমি বসো আমি গোসলটা সেড়ে আসি!’

প্রহরের জ্বরের কথা শুনে অর্থি লাফিয়ে ওঠে। দ্রুত চৈত্রিকার কাছে এসে ব্যস্ত গলায় বলে, ‘ভাইয়া কোথায় ভাবীজান? জ্বর কিভাবে হলো? এখন কেমন আছে? জ্বর কমেছে ভাইজানের?’
চৈত্রিকা থামায় অর্থিকে। বিছানার দিকে তাকিয়ে প্রহরকে না দেখে বুঝতে পারে প্রহরের জ্বর কমে গেছে। হয়তো গোসল করতেছে! তাই অর্থিকে বেশ ছোট করে বলে,
‘তোমার ভাইজানের জ্বর ভালো হয়ে গেছে। গোসল করতেছে হয়তো!’

তাদের কথার মধ্যেই প্রহর চুল মুছতে মুছতে বের হয়ে আসে। অর্থি তাকে দেখেই ছুটে যায়। পা উচিয়ে কপালে হাত দিয়ে বলে, ‘ভাইজান তোমার জ্বর আসছে? এখন কমছে? তোমার কি অনেক খারাপ লাগছে? চলো আব্বাজানের কাছে! নাহ নাহ ডাক্তারের কাছে যাই চলো!’
প্রহর গলায় তোয়ালে ঝুলিয়ে বোনের দিকে তাকায়। মনটা প্রশান্তিতে ভরে যায়। অর্থির কপালের এক পাশে ছোট্ট করে একটা চুমু খেয়ে বলে, ‘আমি একদম ঠিক আছি পুচকি। তুই এতো চিন্তা করছিস কেনো?’

‘আমি চিন্তা না করলে কে করবে? তুমি পাক্কা ঠিক আছো?’
প্রহর হেঁসে মাথা নাড়ায়। দুই ভাইবোন কথা বলতে শুরু করে। চৈত্রিকা পুরোটা সময় নিঃশব্দে দাড়িয়ে রয়। প্রহরের দিকে তাকিয়ে ভাবে। বোনকে এতো ভালোবাসে? দীর্ঘশ্বাস ফেলে নিজের শাড়ি আর প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে গোসলখানায় যায়। তখনো দুই ভাই বোনের খুনশুটি, গাল ফুলানো চলছে।

আজ চৈত্রিকা আর প্রহরের বিয়ের ৩য় দিন। দুইদিনের মধ্যেই চয়ন রেনওয়াজ সবাইকে নিমন্ত্রণ করে ফেলেছে। অনুষ্ঠান কাল হবে। নিয়ম মতো বিয়ের পরেরদিনই চৈত্রিকা তার মামার বাড়িতে ফিরতি যাওয়ার কথা থাকলেও তা নির্ধারণ হয়েছে ৭ দিন পর। তাই আজ সাথী আর আজম আলী জমিদার বাড়িতে এসেছে। সাথীর মূল উদ্দেশ্য চৈত্রিকার সাথে দেখা করা হলেও আজম আলী এসেছে অন্য কোনো কারণে।

সাথী সন্দেহ করলেও কিছু বলেনি। জমিদার বাড়িতে সাথী আর আজম আলী আসার পর পরই ডাক পড়ে চৈত্রিকার। সাথীকে নিয়ে কোনো সমস্যা না থাকলেও আজম আলীকে দেখেই পল্লবীর পা থেকে মাথা পর্যন্ত গরম হয়ে গেছে। রাগে দাঁতে দাঁত চেপে আছে। আজম আলী মুখ ভঙ্গী এমন করে আছে যেনো তার মতো ভদ্র, সুশীল কোনো মানুষ এই পৃথিবীতেই নেই। অথচ মনে মনে শ’য়’তা’নীর বুদ্ধির কারখানা খুলে রেখেছে। চৈত্রিকা নিচে এসেই প্রথমে সাথীকে জড়িয়ে ধরে। সাথী শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ফিসফিস করে বলে,

‘তুই ঠিক আছিস চৈত্র? ওরা তোর কোনো ক্ষ’তি করেনি তো?’
চৈত্রিকা নিঃশব্দে হেঁসে ওর মতোই ফিসফিস করে বলে, ‘জ্বলজ্যান্ত আমি দাঁড়িয়ে আছি তোর সামনে তাও বলছিস ওরা আমার ক্ষ’তি করেছে কি না!’
সাথী চৈত্রিকাকে ছেড়ে দিয়ে মুখের দিকে তাকায়। আজম আলী মুখে মধু নিয়ে এগিয়ে এসে বলে,
‘কেমন আছিস মা? তোকে কতদিন দেখি না! অনেক মনে পড়ছিলো তোর কথা। আয় মা বুকে আয়!’
আজম আলী চৈত্রিকাকে জড়িয়ে ধরতে আসলে সাথে সাথেই পেছন থেকে ভেসে আসে প্রহরের কন্ঠ। বেশ ঝাঁঝালো, গম্ভীর স্বরে বলে,

‘ভাগ্নীকে কেবল ২ দিন না দেখেই তুমি কতগুলো দিন বানিয়ে দিয়েছো আজম আলী! এতো ভালোবাসো ভাগ্নীকে? আবার জড়িয়েও ধরতে যাচ্ছো!’
আজম আলীর শরীরের শিরা উপশিরা কেঁপে ওঠে। সে জানতো প্রহর আজ বাড়িতে নেই। তবে! প্রহরের কন্ঠস্বর শোনার পর সাহস করে চৈত্রিকাকে জড়িয়ে ধরার মতো কলিজা তার নেই। চুপচাপ সরে যায় চৈত্রিকার থেকে খানিকটা দুরে। চৈত্রিকা তখনো ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছে। আজম আলীর হঠাৎ এতো মধুর স্বর! পা থেকে মাথা পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করে মনে মনে আওড়ায়,

‘কি উদ্দেশ্য নিয়ে এসেছে এখানে? দেখে তো ভাবসাব ভালো ঠেকে না!’
প্রহর এগিয়ে এসে সোফায় বসে। হেসে বলে, ‘আরেহ তুমি তো আমার মামাশ্বশুর। নিজের শ্বশুর আব্বার আদর যত্ন তো কপালে নেই তাই তুমিই ভরসা। আসো আসো এখানে বসো!’

আজম আলী ফাঁকা ঢোক গিললেন। পরপর কয়েকবার এদিকে ওদিক তাকিয়ে প্রহরের দিকে তাকাতেই তার দম বের হওয়ার মতো অবস্থা হয়। প্রহরের তীক্ষ্ণ, লাল চোখদ্বয় যেনো আজম আলীর য’মের মতো কাজ করে। আশে পাশে তাকিয়ে পিয়াসকে খুঁজেও পেলো না। মনে মনে পিয়াসকে গালি দিতে দিতে কাঁপা কাঁপা পায়ে প্রহরের পাশে বসে। প্রহর আজম আলীর কাছ ঘেঁষে বসে কাঁধে হাত রাখে। হাসি হাসি মুখ রেখেই কন্ঠ শক্ত করে নিচু স্বরে বলে,

‘স্বভাব পাল্টাবে না তোমার তাই না আজম আলী? যেই না সুযোগ পেয়েছো আবার আমার বউয়ের দিকে হাত বাড়াচ্ছো! আমার কিন্তু ১ মিনিটও সময় লাগবে না তোমার কলিজা টে’নে বে’র করে ফেলতে। লাস্ট ওয়ার্নিং দিচ্ছি! এরপর যদি দেখি আমার বাড়ির বা গ্রামের একটাও মেয়ের দিকে তুমি কু’ন’জর দিয়েছো তবে সত্যি সত্যি আমি তোমার কলিজা ফু’টো করে তা বাহিরে বের করে আনবো। আর প্রহর রেনওয়াজের কতটুকু করার মতো সাহস আছে তা নিশ্চয় তোমার জানা!’
আজম আলী ভয়ে, গরমে ঘেমে উঠে। প্রহর সরে এসে চৈত্রিকার দিকে তাকিয়ে বলে, ‘ আমার মামাশ্বশুর আর শালিকাকে ভালো মতো আপ্যায়ন করো। আর দেখো মামা কেমন ঘামছে! উনাকে একটু বাতাাস করো বেশি করে। অতিথি রুমে বসিয়ে ফ্যানের হাওয়া খাওয়াও।’

চৈত্রিকা তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো প্রহর আর আজম আলীর দিকে। কি এমন বললো প্রহর! রীতিমতো মামার ঘাম ছুটে যাচ্ছে! সাথীকে বসিয়ে চৈত্রিকা রান্নাঘর থেকে হালকা নাস্তা এনে দেয়। সাথী ভয়ে ভয়ে এদিক ওদিক তাকিয়ে একটা মিষ্টি তুলে মুখে নেয়। তারপর কোনো রকমে চৈত্রিকাকে টেনে নিয়ে আসে দুরে। আজম আলী বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। প্রহর নিজেও এই সময় নেই বলে চৈত্রিকা সাথীকে নিয়ে তাদের ঘরে আসে। চেপে ধরে বলে,
‘পিয়াস রেনওয়াজ কাল আমাদের বাড়িতে আসছিলো। আব্বা আর উনি কতক্ষণ ঘরের দরজা আটকে কি সব নিয়ে কথা বললেন। তুই কিন্তু সাবধানে থাকবি! আমার মোটেও ভালো ঠেকছে না ওদের উদ্দেশ্য।’

মন খারাপ করে জমিদার বাড়ির পেছনের বাগানে এসে বসে আছে অর্থি। সাথে অর্পিতাকেও টেনে এনেছিলো কিন্তু অর্পিতা দীঘির পাড়ে গিয়ে বসে আছে। তাই একা একাই সে বসে আছে। কোথা থেকে নিবিড় এসে হাজির হয়। পেছন থেকে অর্থির মাথায় গাট্টা মে’রে বলে,
‘এখাানে একা একা কি পে’ত্নীর সাথে গল্প করো নাকি? কোনো কাজ নেই? একা একা বসে আছো কেনো?’
অর্থি ফ্যালফ্যাল করে নিবিড়ের দিকে চেয়ে বললো, ‘আপনি কোথা থেকে আসলেন মাষ্টারমশাই? আপনি কি সত্যি আসছেন নাকি আমি স্বপ্ন দেখতেছি!’

নিবিড় নিজের কপাল চাপড়ালো। সে কি করে ভুলে গেলো এটা যে আসলে অর্থি! বোকা, গা’ধা অর্থি। মেয়েটার মাথায় হয়তো সামান্যতম বুদ্ধি টুকুও নেই। থাকলে কেউ এমন হয়? ১৫ বছরের একটা মেয়ে এতোটাও বোকা হয়? কিছুদিন পরই হয়তো ১৬ তে পা দেবে অথচ এতো বোকা! অসম্ভব! নিবিড় ফোঁস করে শ্বাস ফেলে বলে,
‘তুমি কি জেগে জেগেও স্বপ্ন দেখো?’

‘নাহ তো। কিন্তু আমার মনে হচ্ছে আমি এখন দেখছি। কারণ আপনি তো আমার ওপর রেগে আছেন আর তাছাড়া এই সময় এখানে আসবেন কোথা থেকে? তাহলে তো আমি জেগে জেগেই স্বপ্ন দেখছি তাই না!’
নিবিড় কোনো কথা না বলে চুপচাপ একটা গাছের নিচে বসে পড়লো। শান বাঁধানো হওয়ায় তেমন সমস্যা হলো না। তবে অর্থির দিকে কপাল কুঁচকে তাকিয়েই থাকলো। অর্থি খানিকটা সময় গালে হাত দিয়ে বসে তাকিয়ে রইলো নিবিড়ের মুখপানে। ছোট ছোট চোখে তাকিয়ে বললো,

‘আপনি অনেক সুন্দর মাষ্টারমশাই। এভাবেই আমার স্বপ্নে এসে বসে থাকবেন। আমি আপনাকে দেখবো। কেমন!’
নিবিড় হা হয়ে গেলো। অর্থি কি বললো এগুলো! তাকে বিস্ময়ে রেখে অর্থি আবারও বললো, ‘আপনাকে দেখতে আমার এতো ভালো কেনো লাগে মাষ্টারমশাই?’
নিবিড় বিস্মিত, হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে রয় অর্থির দিকে। অর্থি তখনো ঠোঁট ফুলিয়ে তাকিয়ে আছে তার দিকে। মেয়েটা তাকে ভাষাহীন করে দিয়ে কেমন নি’র্ল’জ্জের মতো ফ্যালফ্যাল করে দেখছে! শুকনো ঢোক গিলে নিজেকে স্বাভাবিক করে অর্থিকে ধমক লাগায়। সাথে সাথেই অর্থি চমকে পড়ে যেতে নেয়। নিজেকে সামলে মুখটা কাঁদো কাঁদো করে বলে,

চৈত্রিকা পর্ব ১০

‘আপনি খুব খা’রাপ মাষ্টারমশাই। আপনি সবসময় আমাকে ধমকান কেনো? স্বপ্নে এসেও ধমকাতে হবে আমাকে?’
নিবিড় হতাশ। এতো বড় ধমক খাওয়ার পরও মেয়েটা বলছে এবং ভাবছে সে এখনো স্বপ্ন দেখছে! এগুলো কি নেওয়া যায়! দিন দুপুরে এই মেয়ে নাকি স্বপ্ন দেখছে! কবে যেনো এই মেয়ের মাথায় সার উৎপাদন করতে গিয়ে নিজেই গা’ধা হয়ে যায়!

চৈত্রিকা পর্ব ১২