চৈত্রিকা পর্ব ৩৩

চৈত্রিকা পর্ব ৩৩
বোরহানা আক্তার রেশমী

চৈত্রিকাকে সত্যি সত্যিই পল্লবী ২য় বারের মতো বরণ করে ঘরে তুলেছে। সবাই খুশি হলেও চয়ন, পিয়াস, সাদিক শুধু পারছে না সবাইকে চোখ দিয়েই ভ’স্ম করে দিতে! কিন্তু প্রহরের সামনে তাদের কোনো কিছুই যে চলবে না এটা তারা ভালো মতোই জানে। নাসিমা পালিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। যতটুকু সম্ভব নজড় এড়াচ্ছে অনিমের।

কিন্তু অনিম বার বার ওই নাসিমার দিকেই তাকাচ্ছে। ওহ হ্যাঁ! অনিম যেহেতু চৈত্রিকার ফুপাতো ভাই হয় তাই বোনের শ্বশুরবাড়ি হিসেবে সেও এসেছে জমিদার বাড়িতে। এতে কেউ তেমন কিছু না বললেও নাাসিমা সাদিককে বারণ করেছিলো। সাদিক নাসিমার কথা শুনেও কাউকে কিছু বলেনি। নাসিমা ব্যবহার তার কাছে সন্দেহজনক লেগেছে কিন্তু পুরো বিষয়ে তাকে কিছুই বলেনি।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

এখন সে অযথা কারণে যদি অনিমকে জমিদার বাড়িতে যেতে নিষেধ করে সেটা ভালো দেখায় না। এদিকে অনিমের মাথা হ্যাঙ হয়ে গেছে। চৈত্রিকার বিয়ের কথা শুনে আর নাসিমাকে দেখে সে রীতিমতো আকাশ থেকে পড়ছে। যতবারই সব ভাবছে ততবারই তার হাত পা ছড়িয়ে শুয়ে পড়তে ইচ্ছে করছে। নিজের মাথায় এতো প্রেশার না দিয়ে সে ছুটলো চৈত্রিকার কাছে। চৈত্রিকা তখন কেবলই নিজের ঘরের উদ্দেশ্যে হাঁটা লাগিয়েছে। অনিম হন্তদন্ত হয়ে ছুটে এসে চৈত্রিকার সামনে দাঁড়ায়। চৈত্রিকা ভড়কে গিয়ে দু কদম পিছিয়ে দাঁড়ায়। কোনো রকমে বলে,

‘কি হয়ছে অনিম ভাই? তুমি এমন ছুটে এলে কেনো?’
‘তুই আমাকে এটা জিজ্ঞেস করছিস! তোরা মা মেয়ে মিলে যে আমার মাথার ১২ টা বাজিয়ে দিয়েছিস তার কি হবে শুনি!’
চৈত্রিকা সতর্কিত দৃষ্টিতে চারপাশ নজর বুলিয়ে বলে, ‘এসব কথা বলো না ভুল করেও৷ এটা কিন্তু বাড়ি কম শ’ত্রুবাড়ি বেশি। এখানে একেকটা ইট পাথরও আমাাদের জন্য ভ’য়ং’কর। তাই এসব কথা বলো না এখানে।’
অনিম ফোঁস করে শ্বাস নেয়। গাল দুটো কিছুটা ফুলিয়ে বলে, ‘তো জমিদারের বউ এবার আমাকে নিজের ঘর দেখায় দে! আমি একটু ঘুমিয়ে মাথাটা ঠান্ডা করতে চাই।’

‘ওমা! এই অবেলায় ঘুমাবে? আর একটু পর তো আযান দেবে!’
‘দিক! তুই আমারে ঘর দেখায় দে।’
‘আচ্ছা চলো! নীরা আপুকে ডেকে তোমাকে ঘর দেখাচ্ছি।’
অনিম মাথা নেড়ে চৈত্রিকার পিছু পিছু হাঁটা লাগায়। তারপর হুট করেই আবার চৈত্রিকার পাশাপাশি এসে বলে, ‘চৈত্রিকা একটা জিনিস খেয়াল করছিস?’
‘কি জিনিস?’

‘ছোট বেলায় তোকে কোনো কাজ দিলে তুই না করলে তখন আমি তোকে ‘জমিদারের বউ’ বলতাম! এখন দেখি তুই সত্যি সত্যিই জমিদারের বউ হয়ে গেছিস। ওয়াও! এই তুইও আমারে জমিদারের মেয়ে জামাই বল! তাহলে আমিও জমিদারের মেয়ে জামাই হয়ে যাবো। হাউ সুইট!’
অনিমের কথার ধরণ শুনে চৈত্রিকা হেঁসে ফেলে। নীরার ঘরের সামনে গিয়ে বলে, ‘আমার কিন্তু একটা ননদিনী আছে অনিম ভাই!’

অনিম লাফিয়ে ওঠে। চৈত্রিকাকে কিছু বলার আগেই চৈত্রিকা নীরার ঘরের ভেতর চলে যায়। অনিম যায় নাহ। সে বাহিরে থাকতেই চৈত্রিকা আর নীরা একসাথে বের হয়ে আসে। অনিম আর কিছু বলতে পারে না। এরপর নীরার সাথে চৈত্রিকা অনিমকে ঘর দেখিয়ে আবার নীরার সাথেই ফিরে আসে। অনিমের পেট গুড়গুড় করা শুরু করে। বিছানায় চিৎপটাং হয়ে শুয়ে এপাশ ওপাশ করে। বিড়বিড় করে বলে,
‘এই মেয়েটা নিজের ননদিনীর কথা বলে গেলো কিন্তু দেখিয়ে গেলো না! আহা জমিদারের মেয়ে জামাই!’

রাতে সবাই খেতে বসার পর পল্লবী খাবার নিয়ে চিত্রর ঘরের দিকে যায়। অর্পিতা অনেকক্ষণ থেকেই উসখুস করছিলো চিত্রর ঘরে যাওয়ার জন্য কিন্তু কোনো ভাবেই যেতে পারছিলো না৷ মূলত যাওয়ার কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছিল না। পল্লবীকে খাবার হাতে যেতে দেখে অর্পিতা দৌড়ে আসে। পল্লবী হুট করে অর্পিতাকে সামনে চলে আসতে দেখে খানিকটা চমকালেও নিজেকে সামলে হাসার চেষ্টা করে বলে,

‘কিছু বলবি অর্পি?’
অর্পিতা মাথা নিচু করে দৃষ্টি এদিক ওদিক করে। ফাঁকা ঢোক গিলে আমতা আমতা করে বলে, ‘খাবারটা আমাকে দাও বড় আম্মু! আমি নিয়ে যাই?’
পল্লবী প্রথমে না করতে গিয়েও আবার থেমে যায়। অর্পিতার ইতস্তত করার কারণ বুঝতে পেরে হাসি মুখে খাবারের প্লেট অর্পিতার হাতে ধরিয়ে দেয়। তারপর অর্পিতার থুতনীতে হাত রেখে বলে,

‘দেখ মা! তখন চিত্রকে পাচ্ছিলাম না বলেই টেনশনে তোকে যা তা বলে দিয়েছি। তুই কিছু মনে করিস না কিংবা বড় আম্মুর ওপর রাগও রাখিস না। আমি মা তো! আমার ভেতরটা বুঝবি না। আর চিত্রর ঘরে যেতে এতো ইতস্তত করার কি আছে? মাঝের সবটুকু ভুলে যাওয়ার চেষ্টা কর। দুজনে আবার আগের মতো হওয়ার চেষ্টা কর!’

অর্পিতা মাথা নাড়ায়। পল্লবী হেঁসে নিচে চলে যায়। অর্পিতা খাবার হাতে বড় বড় কয়েকটা শ্বাস নিয়ে ঘরের সামনে যায়। প্রহর যেহেতু এই সময় বাড়িতে তাই দরজার সামনে আর কোনো পাহাড়াদার নেই। অর্পিতা ঘরের বাইরে থেকে গলা পরিষ্কার করে দরজায় টোকা দেয়। ছোট্ট করে বলে,

‘চিত্র ভাই আসবো!’
শ্বাস আটকে রেখে চোখ বন্ধ করে ফেলে অর্পিতা। হঠাৎ করেই তার কি হয়েছে কে জানে! নিজের অনুশোচনাবোধের জন্য এমন হচ্ছে নাকি অনুভূতির জন্য বুঝে ওঠে না। ওপাশ থেকে এতোগুলো দিন পর অর্পিতার কন্ঠস্বরে থমকায় চিত্র। নিজের অনুভূতিদের সংযত করতেই ঘরের মাঝ থেকে অর্থি ছুটে গিয়ে দরজা খুলে দেয়। দুরন্ত গলায় বলে,
‘আসো আসো! জলদি আসো! আমি আর চিত্র ভাই একা একা প্রচুর বিরক্ত হচ্ছিলাম। এবার তুমি এসে গেছো আমরা একসাথে আড্ডা দিবো।’

অর্পিতার হাত ধরেই ঘরের ভেতর আনে অর্থি। অর্পিতা একবারের জন্য মাথা উচু করে তাকায় না। চিত্র কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে চোখ নামিয়ে নেয়। অর্থি আরাম করে বিছানার ওপর বসে। অর্পিতা ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে নিজের জায়গায়। অর্থি অর্পিতার দিকে তাকিয়ে বলে,
‘ওই আপু! দাঁড়িয়ে আছো কেনো? এখানে আসো! আর তুমি কি ভাইয়াকে খাইয়ে দেবে?’
অর্পিতা এবারও কিছু বলে না। চিত্র নিজেই অর্থিকে বলে, ‘আপু নিচে যাও! খেয়ে আসো।’

অর্থি কিছু বলতে গিয়েও বলে না। চুপচাপ ভদ্র মেয়ের মতো মাথা নাড়িয়ে ঘর থেকে বের হয়ে যায়। অর্পিতা তখন নিজের জায়গায় দাঁড়িয়ে মেঝেতে নখ খুটছে। কিছুটা সময় ওভাবে যাওয়ার পরও যখন অর্পিতার কোনো হেলদোল হয় না তখন চিত্র গম্ভীর স্বরে ডাকে,
‘ওখানেই দাঁড়িয়ে থাকবি? এদিকে আয়!’

অর্পিতা ছোট ছোট পা ফেলে এগোয়। চিত্রর সামনে দাঁড়িয়ে মাথা নিচু করে থাকে। চিত্র ভ্রু কুঁচকে বলে, ‘খাইয়ে দে।’
অর্পিতা চমকে তাকায়। চিত্র চোখ দিয়ে ঈশারা করে। অর্পিতা বিনাবাক্যে বসে পড়ে। কোনো কথা ছাড়াই হাত ধুইয়ে খাইয়ে দিতে থাকে। পুরোটা সময় দুজন চুপ করেই কাটায়। খাওয়ানো শেষে অর্পিতা প্লেট, গ্লাস নিয়ে চলে যাওয়ার জন্য উদ্যত হয়। এতোগুলো দিন পর দুজনেই বুঝতে পারে না একে অন্যকে কি বলা উচিত! কি করা উচিত! অর্পিতা বের হয়ে আসতে নিলে চিত্র পেছন থেকে ডাকে। অর্পিতা ফিরে তাকাতেই বলে,
‘আমাদের মাঝে কবে থেকে এতো দূরত্ব হয়ে গেছে অর্পি?’

রাতে চৈত্রিকা খেয়ে আগে এসে বিছানা ঠিক করে। প্রহর তখনো ঘরে আসেনি বলে আলমারি খুলে তা আবার ঠিকঠাক করে গুছিয়ে রাখতে শুরু করে। আলমারি গোছানোর সময়ই চৈত্রিকা কিছু কাগজপত্র আর পুরোনো একটা ডায়েরী পায়। চৈত্রিকা উল্টে পাল্টে কাগজ গুলো দেখার আগে ডায়েরীটা দেখতে থাকে। ভ্রু কুঁচকে প্রথম পৃষ্ঠা উল্টাতেই চোখে পড়ে প্রহরের নাম। পরের পৃষ্ঠা উল্টাতেই মহুয়ার হাসি মুখের একটা ছবি বেড়িয়ে আসে। চৈত্রিকা ভালো মতো পর্যবেক্ষণ করে ছবি। বিড়বিড় করে বলে,

‘মহুয়া বুবুর ছবি এখনো এতো যত্ন করে রেখেছে! এখনো তাকেই ভালোবাসে নাকি? কিন্তু উনি তো নিজেই…!’
চৈত্রিকা নিজের ভাবনা সরিয়ে ফের পরের পৃষ্ঠা উল্টায়। কয়েকটা বাক্যে লেখা নি’ষ্ঠুর বাণী, ‘আমি ভালোবাসাকেও মে’রে ফেলতে জানি। যদি ভালোবাসার মানুষটা বি’শ্বাসঘা’তক হয়! আমি ভালোবেসে আমরণ বিরহ পুষতে পারি যদি ভালোবাসার মানুষ সঠিক হয়। তবে আমি এই পাথর হৃদয়েই বি’শ্বাসঘা’তকতার শা’স্তি হিসেবে মৃ’ত্যু দিতে পারি। কে’টে টু’করো টু’করো করে সেই র’ক্তে গো’সলও করতে পারি। তুমি আমার সাথে বি’শ্বাসঘা’তকতা করার শা’স্তি নিজের মৃ’ত্যু দিয়ে পাবে! তোমার র”ক্তে র’ঞ্জিত হবে জমিদার বাড়ির পুকুর।’

গায়ের লোমকূপ দাঁড়িয়ে যায়। বাক্যগুলোতে এমন কিছু ছিলো যা চৈত্রিকার মনে দাগ কেটে যায়। পরের পৃষ্ঠা উল্টানোর আগেই দরজা খোলার শব্দ হয়। চৈত্রিকা তাড়াহুড়ো করে ডায়েরী আর কাগজগুলো নিজের পেছনে লুকায়। প্রহর ঘরে ঢুকে চৈত্রিকাকে এভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে বলে,

‘ওখানে কি করছো?’
চৈত্রিকা প্রথমে নিজেকে শান্ত করে। তারপর শান্ত ভঙ্গিতে বলে, ‘তেমন কিছু না। আলমারিটা অনেক এলোমেলো হয়ে আছে বলে ঠিক করছি।’
‘ঘুমাবে কখন?’
‘এই তো আসছি!’

প্রহর আর কিছু না বলে গোসলখানায় ঢুকে যায়। চৈত্রিকা ডায়েরী আর কাগজপত্র সাবধানে রেখে আলমারি বন্ধ করে এসে বিছানায় বসে। প্রহর বেশ কিছুক্ষণ বাদেই হাত মুখ মুছতে মুছতে বের হয়। চৈত্রিকা নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করে। ছোট্ট করে জিজ্ঞেস করে,
‘নিবিড় ভাই কোথায়? জানেন কিছু!’
‘হঠাৎ নিবিড় ভাইয়ের খোঁজ?’
‘নাহ মানে উনাকেও তো পাওয়া যাচ্ছে না।’
প্রহর নিজের কাজে মন দিয়ে বলে, ‘পরশু চলে আসবে।’

দুজনে আবার চুপ। প্রহর চুপচাপ এসে বিছানায় শুয়ে পড়ে। চৈত্রিকা কিছুক্ষণ ওভাবে বসে থাকলে প্রহর হাতে টেনে শুইয়ে দেয়। এক হাতে নিজের বক্ষে টেনে নিয়ে চোখ বন্ধ করে থাকে। কয়েক সেকেন্ডের এই কাজে চৈত্রিকা হতভম্ব। পরমুহূর্তে নিজেই মুখ গুজে দেয় প্রহরের প্রশস্ত বুকে। প্রহর চোখ বন্ধ অবস্থাতে হাসে। কোনো কথা বলে না।

বেশ অনেকটা সময়ের মধ্যেই প্রহর ঘুমিয়ে পড়ে। চৈত্রিকার নিজেরও ঘুম পেয়ে যায়। কিন্তু হুট করেই সেই ডায়েরী আর কাগজপত্রের কথা মনে পড়তেই ঘুম উড়ে যায়। ভীষণ আলগোছে প্রহরের হাত ছাড়িয়ে নিয়ে ধীরে ধীরে উঠে বসে। একবার ভালো মতো প্রহরকে পর্যবেক্ষণ করে নিজে উঠে সরাসরি দাঁড়ায় আমলারির সামনে। সাবধানে সেখান থেকে কাগজপত্র আর ডায়েরী নিয়ে চেয়ারে বসে। ডায়েরী পৃষ্ঠা উল্টিয়ে পরের পৃষ্ঠায় আসে। দু পাতায় কিছু না থাকলেও পরের পাতায় ছোট করে লিখা,

‘প্রহর রেনওয়াজের সাথে এই ভ’য়ং’কর গেইম খেলা উচিত হয়নি মহুয়া।’
চৈত্রিকা কপাল কুঁচকে নেয়। প্রহরের সাথে মহুয়া আবার কোন গেইম খেলেছিলো? উত্তর নেই। চৈত্রিকা আবারও পৃষ্ঠা উল্টায়। পরের ৪/৫ পৃষ্ঠা ফাঁকার পর একটা ছোট্ট নোট করা, ‘প’র’কী’য়ার মতো জ’ঘন্য’তম কাজ! আমার বউ হয়েও তুমি আমার ছোট ভাইয়ের সাথে যে সম্পর্কে জড়িয়েছো এর পরিণতি ভ’য়ং’কর হবে। এতোটাই ভ’য়ং’কর যে তোমার বুক কেঁপে উঠবে শুধু মৃ’ত্যুর কথা ভাবলেই!’

চৈত্রিকা জিভ দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে নেয়। কয়েক পৃষ্ঠা উল্টাতেই বাকি সব ফাঁকা। চৈত্রিকা ভাালো মতো দেখতেই কানে আসে, ‘এরপর! এরপর তোমার মৃ’ত্যুর দিন। যখন তোমার শিরায় শিরায় ছিদ্র করছিলাম তখন তুমি কা’টা মুরগীর মতো করছিলে! তোমার শিরা উপশিরা দিয়ে যখন র’ক্তের স্রোত বয়ে যাচ্ছিলো তখন আমি প্রশান্তি অনুভব করেছিলাম। তুমি বাঁচার জন্য ছটফট করছিলে আর আমি তোমার মৃ’ত্যুর জন্য ছটফট করছিলাম! প্রহর রেনওয়াজের সাথে বি’শ্বাসঘা’তকতার পরিণাম দিয়েছিলাম তোমাকে।’

চৈত্রিকা চমকে চেয়ার ছেড়ে উঠে পড়ে। প্রহর বিছানায় হেলান দিয়ে বসে তার দিকে তাকিয়ে আছে। প্রহরের হঠাৎ এমন নৃ’শং’স রুপের বর্ণনা শুনে হাপাতে থাকে। প্রহর শান্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। ছোট্ট করে বলে,
‘ভয় পাচ্ছো কেনো? তুমি তো আমার সাথে বি’শ্বাসঘা’তকতা করোনি! তবে ভয়ের কি আছে চৈত্র?’

চৈত্রিকা পর্ব ৩২

চৈত্রিকা হঠাৎ করেই স্বাভাবিক হতে পারে না। ঘনঘন শ্বাস নিয়ে প্রহরের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে। মানুষটা রহস্যময় ছিলো কিন্তু এতো ভ’য়ং’কর! মহুয়ার মৃ’ত্যু কল্পনা করেই চৈত্রিকার শিরা উপশিরা কেঁপে ওঠে। প্রহর হেঁসে বলে,
‘অতো ভয় পাওয়ার কি আছে চৈত্র? যে খেলায় নেমেছো সে খেলায় এর থেকেও বেশি ভ’য়ং’কর হতে হয়! এর থেকেও বেশি নৃ’শং’স হতে হয়! আর তো ক’দিন তারপর নিজেই কেমন করে ভ’য়ং’কর হয়ে উঠবে নিজেও জানো না!’

চৈত্রিকা পর্ব ৩৪