চৈত্রিকা পর্ব ৩৮

চৈত্রিকা পর্ব ৩৮
বোরহানা আক্তার রেশমী

রাতের বেলায় চিত্র বারান্দায় দাঁড়িয়ে বিশুদ্ধ বাতাস নিচ্ছিলো। সে সময় বারান্দায় পদার্পণ ঘটে অর্পিতার। চিত্র কারো উপস্থিতি টের পেয়ে পেছনে তাকিয়ে দেখে অর্পিতা। আলগোছে মাথাটা ঘুরিয়ে নিয়ে সামনে তাকিয়ে থাকে। অর্পিতা এসে চিত্রর পাশেই দাঁড়ায়। দুজনের মাঝেই পিনপতন নীরবতা। রাতের আঁধারের সাথে দুজনের নীরবতায় পরিবেশ ভারী হয়ে আছে। কতক্ষণ দুজন এভাবেই চুপ করে ছিলো তা জানা নেই৷ একটা সময় পর নীরবতা ভেঙে অর্পিতাই জিজ্ঞেস করে,
‘তোমার শরীর কেমন এখন?’

চিত্র আড়চোখে তাকায় অর্পিতার দিকে। অর্পিতার চোখে মুখে ইতস্ততর ছাপ স্পষ্ট। চিত্র অদ্ভুত ভাবে হাসে। দীর্ঘশ্বাস ফেলে অর্পিতার প্রশ্নের উত্তর না দিয়েই বলে,
‘তুই সত্যিই মন থেকে বিয়েটা করতে চাইছিস! ‘
অর্পিতা ভ্রু কুঁচকে বলে, ‘মন থেকে না চাইলে রাজি কেনো হতাম!’
‘তাহলে আমার সাথে কথা বলতে তোর এতো ইতস্তততা কেনো?’

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

অর্পিতা অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে। এতোগুলো দিন দুজন দুজনের থেকে দুরে থাকায় যে দূরত্ব তৈরী হয়েছে সেটা থেকেই এতো ইতস্তত ভাব। চিত্র অর্পিতার মুখের দিকে তাকিয়ে স্পষ্ট গলায় বলে,
‘আমি জানি অতীতে যা করেছি তা ভীষণ নিচু মনের পরিচয়। তবে আমি কেনো করেছিলাম তা তুইও জানিস আমিও জানি। আমি আমার অন্যায়ের জন্য তোর কাছে ক্ষমাও চেয়েছি আর শা’স্তিও পেয়েছি।

তবে তোর প্রতি ভালোবাসা আমার বিন্দু মাত্রও কমেনি কখনো। আগেও তোকে ভীষণ ভালোবেসেছি এখনো বাসি আর ভবিষ্যতেও বাসবো। যত কিছু হয়েছে তুই ভুলে গিয়ে, আমাদের মাঝের দুরত্বটুকু মিটিয়ে সম্পূর্ণ আমার হতে পারিস না অর্পি? আমি জানি তুইও ভীষণ ভালোবাসিস আমায় কিন্তু আমাদের মাঝের এই দ্বিধার দেয়াল ভেঙে কি তুই আবার আমার হতে পারিস না অর্পি?’

অর্পিতা ফ্যালফ্যাল করে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকে। চিত্র উৎসুক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। মন উত্তর জানলেও ভীষণ ভাবে আগ্রহ হচ্ছে অর্পিতার মুখে শোনার। কিন্তু অর্পিতা একটা শব্দও করলো নাহ। নিঃশব্দ জাপ্টে ধরে চিত্রকে। চিত্রর বুকে মাথা রেখে চোখ বন্ধ করে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে থাকে।

চিত্র বাকরুদ্ধ, হতভম্ব। চাওয়ার থেকেও বেশি কিছু পেয়ে গিয়ে কি বলবে তা আর বুঝে ওঠে নাহ। শুধু বাকরুদ্ধ হয়ে নিষ্পলক দুরে তাকিয়ে থাকে। অর্পিতা যখন বোঝে চিত্র তাকে দুহাতে জাপ্টে ধরেনি তখন সে নিজেই চিত্রর হাত টেনে এনে নিজের পিঠে রাখে। চিত্রর মস্তিষ্ক যখন বিষয়টা ধরতে পারে তখন সে নিজেও শক্ত করে ধরে রাখে অর্পিতাকে। অর্পিতার ঠোঁটের কোণে অনেকদিন পর ফিরে পাওয়ার সুখের হাসি।

সকাল থেকে জমিদার বাড়িতে হৈ চৈ শুরু হয়ে গেছে। পুরো বাড়ি সুন্দর করে সাজানো হয়েছে। বাড়ির হলরুমেই বড় করে সাজানো হয়েছে চিত্র আর অর্পিতার গায়ে হলুদের স্টেজ। গায়ে হলুদের সব দায়িত্ব বাড়ির বউরা পালন করছে। সেই কাজেই একটুও দম নেই চৈত্রিকা, নীরা আর সাথীর। একবার এটা করছে তো আরেকবার ওটা। অর্থি সকাল থেকেই নিজের মতো ছুটে বেড়াচ্ছে আর বাচ্চাদের জ্বালাচ্ছে। কতবার কত মহিলা এসে পল্লবীর কাছে ভয়ে ভয়ে বলে গেলো,

‘জমিদার গিন্নি আপনার মেয়েটা আমার ছোট মেয়েকে শুধু শুধু কান্না করাচ্ছে!’
এর ছেলেকে তো ওর মেয়েকে কান্না করাবেই। রেগে পল্লবী একবার বকে গেছে। তবুও অর্থির কোনো হেলদোল নেই। মূলত এই বিয়েতে সেই সবচেয়ে বেশি খুশি। অর্থির আজাইরা কাজগুলো নিবিড়, অনিম দুজনেই দেখে। নিবিড় দেখবো না দেখবো না করেও না দেখে থাকতে পারছে না ওদিকে অনিম নিজ ইচ্ছাতেই সবটা দেখছে। নিবিড় চোখ ফিরিয়ে নিয়ে নিজের কাজ করতে থাকে। অনিম এগিয়ে আসে অর্থির কাছে। অর্থির খোপা করে চুল ধরে টান দিয়ে পুরো চুল খুলে দেয়। অর্থির চোখ মুখ চুল দিয়ে ঢেকে যায়। কোনো রকমে নিজের চুল গুলো মুখের ওপর থেকে সরিয়ে ফুঁসে উঠে পেছনে তাকায়। অনিমকে দাড়িয়ে থাকতে দেখে দাঁতে দাঁত চেপে বলে,

‘এই পেট মো’টা অনিম ভাই! আমার চুল খুলে দিলেন কেনো?’
অনিম নিজেও ফুঁসে ওঠে। দু কদম অর্থির দিকে এগিয়ে এসে বলে, ‘তুমি সবসময় আমাকে পেট মো’টা বলো কেনো হ্যাঁ? আমি তোমার বড় না! সম্মান দিতে পারো না!’
‘সম্মান দেই তো!’
‘কিভাবে দেও?’

অর্থি কোমড়ে হাত রেখে বলে, ‘বাহ রে! পেট মো’টার সাথে সাথে যে ‘অনিম ভাই’ বলি ওটা বুঝি শুনতে পান না! সম্মান না করলে কি ‘অনিম ভাই’ বলতাম! বলেন বলেন!’
অনিম ফোঁস করে শ্বাস ছাড়ে। মনে মনে নিজেকে একশো টা বকা দেয়। কেনো সে এই বোকা মেয়ের সাথে তর্ক করতে যায়! দীর্ঘশ্বাস ফেলে অসহায় ফেস নিয়ে বিড়বিড় করে বলে,
‘এটা সম্মান হলে জীবনে আর সম্মান বলতে কিছুই থাকলো না।’

অর্থি ঠোঁট চেপে হেঁসে এক আঙুল দিয়ে বরাবরের মতো অনিমের পেটে গু’তো দিয়ে বলে, ‘পেট মো’টা অনিম ভাই।’
বলেই ছুটে পালিয়ে যায়। অনিম তেড়ে গিয়ে বলে, ‘এই মেয়ে একবার শুধু দাঁড়াও!’
অর্থি দাঁড়ায় নাহ। উল্টো ঘুরে মুখ জিভ দেখিয়ে উল্টো ভাবেই দৌড়াতে থাকে। সাথে সাথেই ধাক্কা খেয়ে পড়ে যায় নিচে। খোলা চুলে টান পড়ে। কোমড়েও ভালোই ব্যাথা পায়। আর্তনাদ করে চোখ মুখ কুঁচকে নেয়। কাঁদো কাঁদো মুখ করে উপরে তাকাতেই চোখে পড়ে নিবিড়ের মুখ। দুদিন আগেও কি হয়েছিলো সম্পূর্ণ ভুলে ব্যাথার চোটে খ্যাক করে উঠে বলে,
‘এই মাষ্টারমশাই! আমাকে ফেলে দিলেন কেনো?’

নিবিড় ভ্রু কুঁচকে বলে, ‘আমি তোমাকে ফেলে দিবো কেনো? তুমি নিজেই তো উল্টো হয়ে দৌড়াতে গিয়ে ধাক্কা খেয়ে পড়ে গেলে!’
‘তো আপনি আমাকে ধরতে পারেননি!’
‘নাহ পারিনি। বাচ্চাদের মতো এতো দৌড়াও কেনো? এতো দৌড়াদৌড়ি করো, লাফাও বলেই তোমার মাথায় সমস্যা হয়ে গেছে।’

অর্থি ফোঁস করে ওঠে। কিছু বলার আগেই ছুটে আসে অনিম। অর্থিকে নিচ থেকে তুলতে তুলতে ব্যস্ত গলায় বলে, ‘আরে পড়ে গেলে কেমন করে? এভাবে কেউ দৌড়ায়! অনেক ব্যাথা পাইছো? আগে উঠো!’
অর্থি কাঁদো কাঁদো মুখ নিয়ে অনিমের সাহায্যেই বসা থেকে উঠে। এর মাঝেই চিত্রও ছুটে আসে। অর্থিকে আগলে নিয়ে বলে, ‘কি হয়ছে বোনু? পড়ে গেছিস! ব্যাথা পাইছিস অনেক!’

অর্থি দু পাশে মাথা নাড়ায়। সন্তুষ্ট চিত্তে হাসে৷ ভাইদের এই ভালোবাসা দেখলেই তার আর পৃথিবীর অন্য কিছু মাথায় থাকে নাহ। মেজো ভাইজান তাকে যতটা অপছন্দ করে, দুর দুর করে তার থেকেও কয়েকগুণ বেশি ভালোবাসে বড় ভাইজান আর ছোট ভাইজান। এই ভালোবাসা দেখলেই শান্তি শান্তি লাগে। মনে হয় আর কি চাই জীবনে! চিত্র অর্থির দুগালে হাত রেখে শান্ত গলায় বলে,

‘এতো লাফালাফি করিস কেনো বোনু? আর এমন করবি নাহ। চুপচাপ ঘরে যা নয়তো তোর অর্পি আপুর কাছে যা।’
অর্থি মাথা নাড়ায়। বাহির থেকে চিত্রর ডাক পড়ে। অনিম পাশ থেকে বলে, ‘চিত্র তুমি ওদিকে যাও। আমি ওকে নিয়ে যাচ্ছি।’
চিত্র মাথা নাড়িয়ে সম্মতি দেয়। অনিম অর্থিকে নিয়ে সিড়ির দিকে যায়। অনিমের হাতের মুঠোয় শক্ত করে অর্থির হাত ধরা।

অর্থি আস্তে আস্তে হাঁটছে বলে অনিম নিজেও একদম আস্তে হাঁটছে আর অর্থির সাথে কথা বলছে। নিবিড় পুরোটাই দেখে৷ অনিমের অস্থির হয়ে ছুটে আসা থেকে শুরু করে অর্থির হাত ধরে রাখা সম্পূর্ণটাই দেখে। ঠোঁটের কোণে হাসি থাকলেও বুকের বাম পাশের চিনচিনে ব্যাথাটা বাড়ে। বার কয়েক ঢোক গিলে দৃষ্টি এদিক ওদিক করে। এলোমেলো পায়ে সরে যায়। জমিদার বাড়ির পুকুরের সামনে এসে থম মে’রে দাঁড়িয়ে থাকে। হাত মুষ্টিবদ্ধ করে নিজেকে সামলানোর চেষ্টা করে বারংবার।

‘আপনি অর্থিকে ভালোবাসেন নিবিড় ভাইজান?’
হঠাৎ এহেন কথায় লাফিয়ে ওঠে নিবিড়। চমকে তাকায় পেছনে। চৈত্রিকাকে দেখে নিবিড় দৃষ্টি এদিক ওদিক করে। হাসফাস করতে থাকে। চৈত্রিকা তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। নিবিড়ের জবাব না পেয়ে চৈত্রিকা ফের বলে,
‘আপনি অর্থিকে ভালোবাসেন?’

নিবিড় এবারও জবাব দেয় না। অদ্ভুত ভাবেই চৈত্রিকাকে মিথ্যাও বলতে পারে নাহ। মাথা নিচু করে চুপ করে থাকে। চৈত্রিকা অবাক চোখে তাকায়। আন্দাজ করলেও এভাবে যে সে আন্দাজ সত্য হয়ে যাবে বুঝতে পারেনি। নিবিড় আর অর্থির ভবিষ্যতের কথা ভেবেই চৈত্রিকার বুক ধ্বক করে ওঠে। অবাক হয়ে বলে,
‘অর্থিও আপনাকে…!’

নিবিড় চোখ তুলে তাকায়৷ শ্বাস আটকে বলে, ‘বড় ভাবীজান এসব কথা এগোবেন নাহ। অর্থি ছোট! আমাদের মাঝে কিছু নেই।’
নিবিড় আর কিছু না বলেই ছুটে চলে যায়। চৈত্রিকার মাথা কাজ করা বন্ধ হয়ে যায়৷ নিবিড় যে কত বড় ভুল করে বসেছে তা আর বুঝতে বাকি নেই।

সন্ধ্যায় চিত্র আর অর্পিতার গায়ে হলুদ। সারাদিনের সব কাজ শেষে চৈত্রিকা গোসল করেছে মাত্র। নীরা আর সাথীও নিজেদের ঘরে গোসল করতে গেছে। চৈত্রিকা কোনো রকমে গোসল করে এসে বাসন্তী রঙের শাড়ি পড়ে। এর মাঝেই কয়েকবার এসে অর্থি ডেকে যায়। চৈত্রিকা যত দ্রুত সম্ভব তৈরী হয়ে ঘর থেকে বের হয়। চুল খোলাই আছে। দ্রুত আগে অর্পিতার ঘরে যায়। অর্পিতা তখন শুধু শাড়ি পড়ে বসে আছে। চৈত্রিকা কোমড়ে শাড়ি গুজে ব্যস্ত গলায় বলে,

‘অর্পি আপু জলদি আসেন। আগে সাজিয়ে দেই।’
অর্থি হা করে তাকিয়ে থাকে চৈত্রিকার দিকে। অবাক কন্ঠে বলে, ‘বড় ভাবীজান আপনাকে অনেক সুন্দর লাগতেছে।’
চৈত্রিকা হতাশার শ্বাস নিয়ে বলে, ‘আমারে তোমার যেদিন অসুন্দর লাগবে এখন থেকে ওইদিন গুলোতে বইলো। কেমন!’
অর্থি ৩২ টা দাঁত বের করে হাসে। অর্পিতা নিজেও হেঁসে বলে, ‘আপনাকে কখনো অসুন্দর লাগে না ভাবীজান।’
চৈত্রিকা হাসে। অর্পিতাকে সুন্দর করে সাজিয়ে দেয়। গায়ে সব ফুলের গহণা। কৃত্রিম সাজ। চৈত্রিকা সাজিয়ে দিয়ে নিজেই বলে, ‘মাশাল্লাহ। কারো নজর না লাগুক!’

অর্থি শুরু করে দেয় অর্পিতার প্রশংসা। নীরা ঘরে আসলে চৈত্রিকা নীরা আর অর্থির সাথে অর্পিতাকে নিচে পাঠায়। নিজে কোনো রকমে চুল হাত খোপা করে নিজের ঘরের দিকে এগোয়। ঘরের ভেতরে আসতেই দেখতে পায় প্রহরকে। হলুদ পাঞ্জাবি পড়ে গম্ভীর হয়ে বসে আছে। চৈত্রিকা দরজা থেকেই চোখ ভরে প্রহরকে দেখে। প্রহরের দিকে এগোতে এগোতে বলে,

‘জমিদার সাহেব হঠাৎ ঘরে!’
প্রহর চোখ তুলে তাকায় চৈত্রিকার দিকে। সাথে সাথেই শীতল হাওয়া বয়ে যায় মন প্রাণ জুড়ে। ঠোঁট কামড়ে চৈত্রিকার এলোমেলো রুপ দেখে বলে, ‘তুমি তৈরী হওনি!’
‘হয়েছি তো৷ শুধু চুলগুলো ঠিকমতো বাঁধবো আর গহণা গুলো ঠিক মতো পড়বো। ব্যাস শেষ!’
‘গায়ে হলুদ শুরু হয়ে যাবে তো। জলদি করো!’

চৈত্রিকা নিজের হাতের চুড়ি খুলে রেখে আয়নায় পিঠ ঠেকিয়ে দাঁড়ায়। হেয়ালী করে বলে, ‘জমিদার সাহেবের এতো তাড়া কেনো?’
প্রহর ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে নিজের জায়গা থেকে উঠে দাঁড়ায়। চৈত্রিকার কাছাকাছি এসে বলে, ‘আবারও চিত্রর সাথে সাথে আমিও বিয়ে করবো। তাই ওর সাথে একসাথে গায়ে হলুদটাও সেড়ে ফেলার জন্যই তাড়া দিচ্ছি বউজান।’
চৈত্রিকা দু হাতে প্রহরকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়ে হাসে। চুল গুলো খোপা করে বেঁধে নিয়ে চুলে বেলীফুলের মালা গুজে নেয়। সব গহণা পড়ে সুন্দর করে শাড়ির আঁচল মাথায় টেনে নেয়। প্রহর চোখ ফিরিয়ে নিয়ে উল্টো ঘুরে বের হতে হতে বলে,

‘ভ’য়ং’কর!’
চৈত্রিকা হুট করে প্রহরের চলে যাওয়া দেখে কিছুই বুঝে ওঠে নাহ। ভ্রু কুঁচকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে মুচকি হাসে। আয়নায় নিজের প্রতিবিম্বের দিকে তাকায়। একদম জমিদার গিন্নি!
গায়ে হলুদ শুরু হওয়ার আগে আগে চৈত্রিকাকে রেখে সাথী ফের একবার নিজের ঘরে আসে। প্রয়োজনীয় কাজ সেড়ে নিজের নাকের নথ ঠিক করে। ঘর ছেড়ে বের হতেই সামনে পড়ে যায় পিয়াস। সাথী দু কদম পিছিয়ে যায়। পিয়াস বাঁকা হেঁসে বলে,

‘বাহ ছোট বউ! তোমাকে তো বেশ সুন্দর লাগছে!’
সাথী আতঙ্কে দৃষ্টি এদিক ওদিক করতে থাকে। পিয়াস এগিয়ে এসে একদম কাছ ঘেঁষে দাঁড়ায়। সাথীর গালে স্লাইড করতে করতে বলে, ‘আমার থেকে দুরে দুরে থাকো কেন ছোট বউ? তোমাকে… ‘

চৈত্রিকা পর্ব ৩৭

এটুকু বলতেই সাথী হাতের নিচ থেকে দৌড় দেয়। পিয়াস সাথীর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে হেঁসে বলে,
‘আর ক’টা দিন সবাই শান্তিতে বাঁচো! তারপর তো রাতের ঘুমও উড়ে যাবে আর শান্তিতে বাঁচার কথা অনেক দুর!’

চৈত্রিকা পর্ব ৩৯