ডাক্তার ম্যাডাম পর্ব ২৮

ডাক্তার ম্যাডাম পর্ব ২৮
মুমতাহিনা জান্নাত মৌ

তানিশা খুব মনোযোগ দিয়ে তার ড্রেস চুজ করছে।এদিকে যে এক ঘন্টা পার হয়ে গেছে সেদিকে ওনার বিন্দুমাত্র খেয়াল নেই।সে এখন পর্যন্ত একটা ড্রেস ও পছন্দ করতে পারে নি।শুধু দেখছে আর দেখছে।তানিশা একা নয়,তার সাথে তানিয়া,স্বর্না আর সোহান ও আছে সাথে।সবাই ভীষণ ব্যস্ত কেনাকাটা করতে।নোমান একটু দূরেই দাঁড়িয়ে আছে।কারণ তার এসব একঘেয়েমি কাজ মোটেও ভালো লাগে না। সে কখনোই একটা ড্রেস চুজ করতে ঘন্টার পর ঘন্টা লাগায় না। সে জাস্ট শো রুমে যাবে,কালার দেখবে আর সাইজ দেখবে তাতেই তার হয়ে গেলো ড্রেস চুজ করা।

তানিশা প্রথমে ভাবলো শাড়ি দেখবে।একের পর এক শাড়ি দেখার পর তার মনে হলো, না সে লেহেঙ্গা পড়বে।সেজন্য সে শাড়ি রেখে এবার একের পর এক লেহেঙ্গা দেখেই যাচ্ছে।বাট বুঝতে পারছে না কোনটা নিবে সে?এদিকে নোমান তানিশার এমন কান্ড দেখে ভীষণ বিরক্ত হতে লাগলো।কারণ সে একটা ড্রেস চুজ করতে যেভাবে সময় নিচ্ছে না জানি আজ সারারাতেও তার মার্কেট করা শেষ হয় না।
হঠাৎ তানিশার চোখ গেলো নোমানের দিকে।তানিশা ভাবতে লাগলো নোমান এভাবে কেনো দেখছে তাকে?সবার সামনে কিছু জিজ্ঞেস করতেও পারছে না।সেজন্য তানিশা আবার তার ড্রেস চুজ করায় মনোযোগ দিলো।কিন্তু তার মন কেনো জানি বলছে আরেকবার তাকা নোমানের দিকে।যেই ভাবা সেই কাজ।কিন্তু তানিশা তাকাতেই দেখে নোমান এখনো তার দিকেই দেখছে।তানিশা বুঝতে পারছে না নোমান সবার সামনে এরকম ভাবে তাকে দেখছে কেনো?সেজন্য তানিশা নোমান কে মেসেজ দিলো,

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

–আপনি আমার দিকে বার বার এভাবে তাকাচ্ছেন কেনো?আপনার জন্য আমি ড্রেস চুজ করতে পারছি না।
নোমান সাথে সাথে মেসেজের রিপ্লাই দিলো,তা ম্যাডাম এক ঘন্টা ধরে শুধু ড্রেসই দেখছেন,এখন পর্যন্ত তো একটাও পছন্দ করলেন না।এভাবে চলতে থাকলে তো ড্রেস দেখতে দেখতে বিয়ের দিন এসে যাবে।তখন এ ড্রেস দিয়ে কি করবেন?
তানিশা তখন রিপ্লাই দিলো তা কি করবো এখন?আমি তো বুঝতে পারছি না কোনটা নিবো?আপনিও তো চয়েজ করে দিচ্ছেন না।
নোমান তখন বললো, ডাক্তার ম্যাডাম, আপনি হলেন আমার দেখা সবচেয়ে সুন্দরী রমনি।একদম অপ্সরাদের মতো লাগে আপনাকে।সেজন্য আপনি যে ড্রেস পড়বেন সেটাই ভালো লাগবে।আপনার হাতে এখন যেটা আছে সেটাই নিয়ে নিন।দারুন মানাবে কিন্তু।

–পার্পল কালার?বিয়েতে আমি পার্পল কালার পড়বো?
নোমান তখন রিপ্লাই দিলো,ড্রেস টা নিয়ে একবার ট্রায়াল রুমে আসুন।যদি খারাপ লাগে তাহলে নিবেন না।
তানিশা সেই কথা শুনে পার্পল কালারের লেহেঙ্গা টা নিয়ে উঠতেই তানিয়া বললো,এটা চয়েজ হইছে?
তানিশা মাথা নাড়িয়ে বললো হুম।
তানিয়া সেই কথা শুনে বললো,সেই এতোক্ষণ ধরে এই পার্পল কালার টা চয়েজ করলি?এটা একদম মানাবে না।এই বলে তানিয়া সোনালি কালারের একটা ড্রেস দেখিয়ে বললো, দেখ তো এটা কেমন?হলুদের অনুষ্ঠানে পড়লে খুব ভালো লাগবে।
তানিশা কি উত্তর দেবে ভাবতেই
নোমান মেসেজ দিয়ে বললো,নিয়ে নাও।এটাও সুন্দর আছে।
তানিশা সেই কথা শুনে বললো,ঠিক আছে আপু।

–তাহলে এটা প্যাক করতে বলি?
–হুম।
কিন্তু তানিশার মন কেনো জানি খচখচ করতে লাগলো।নোমান পার্পল কালারটার কথা বললো আর সে সোনালী কালারের টা নিলো।সেজন্য সে তানিয়া কে বললো,
আপু এটাও নেই।কালার টা কিন্তু খারাপ না?
তানিয়া তখন বললো,কি তখন থেকে সেই এক কালারের পিছনে পড়ে আছিস?এই দেখ? খয়েরী কালারের লেহেঙ্গার দিকে দেখ।বিয়ের দিন পড়লে কিন্তু মন্দ হবে না।
তানিশা এবারও নিজে কিছু বললো না।
নোমান তখন এগিয়ে আসলো,আর বললো,তানিশা হয়েছে কি তোমার ড্রেস চুজ করা? না হয় নি এখনো?দেখি কি কি নিয়েছো?

তানিশা তখন সোনালী আর খয়েরী কালারের ড্রেস টা দেখিয়ে দিলো।
নোমান তা দেখে বললো,দারুন হয়েছে।এর সাথে কিন্তু এই পার্পল কালারের টাও নিতে পারো।তাহলে হলুদের দিন সোনালি টা,বিয়ের দিন এই খয়েরী টা আর বৌভাতের দিন এই পার্পল কালারের টা পড়তে পারবে।
তানিয়া তা দেখে বললো,নোমান, তোমার আর তানিশার পছন্দ দেখি একই।
তানিয়ার কথা শুনে নোমান বললো, ও তাই?তানিশাও কি এটাই চয়েজ করেছে?
–হ্যাঁ।সেই থেকে তার হাতে এই ড্রেস টাই দেখছি।
নোমান তখন বললো,দুইজনের পছন্দ যখন একটাই তাহলে সেটাই সবার আগে নেওয়া দরকার।এই বলে নোমান তানিশার দিকে তাকালো।তানিশা মনে মনে ভাবলো নোমান তো দেখি বেশ ধূর্ত।একে তো বোকা ভাবছিলাম।ভেবেছিলাম এই ছেলের তেমন একটা আউটনলেজ নাই।

নোমান তানিশাকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে বললো,ওভাবে তাকিয়ে আছো কেনো?যাও ড্রেস টা একটু পড়ে দেখো।পড়ে যদি আবার ফিট না হয়?তখন তো আমাকেই দোষারোপ করবে।যেহেতু আমিও চয়েজ করেছি এটা।
তানিয়া সেই কথা শুনে বললো,হ্যাঁ,হ্যাঁ।যেকোনো একটা ড্রেস নিয়ে ট্রায়াল রুমে চলে যা।কারণ তিনটার মাপই এক।
তানিশা আবার সেই পার্পল কালারের ড্রেস টাই নিলো হাতে।তা দেখে তানিয়া হেসে অন্য মুখ হলো সে আর কিছু বললো না।কারন সে বুঝে গেলো পার্পল কালারের লেহেঙ্গা টা তানিশার বেশ পছন্দ হয়েছে।আবার নোমানও পছন্দ করেছে,সেজন্য ওটার প্রতি ঝোঁক টা আরো বেশি বেড়ে গেছে।

হঠাৎ স্বর্না বললো,খালামনি আমিও যাবো তোমার সাথে।কারণ আমিও আমার একটা ড্রেস পড়ে দেখতে চাই।
–ঠিক আছা মামুনি।চলো।এই বলে স্বর্নাও গেলোও তানিশার সাথে।
অন্যদিকে সোহান নোমানকে বললো,নোমান চলো এবার তোমার ড্রেসগুলো কিনি।নোমান তখন বললো হ্যাঁ চলুন দুলাভাই।এই বলে সোহান আর নোমান একসাথে চলে গেলো।
সোহান দোকানদার কে নোমানের সাইজ দেখে শেরওয়ানি বের করতে বললো।আর হেসে হেসে বললো,একটু ভালো আর স্ট্যান্ডার কালার দেখে বের করেন।বেটা কিন্তু ডাক্তার।

দোকানদার তখন নিজেও হেসে হেসে বললো,তা ডাক্তার হোক আর ইঞ্জিনিয়ার হোক সব বেটার জন্যই একই শেরওয়ানি।বিয়ের সময় সব ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার এক হয়ে যায়।আর বিয়ের পর তো ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ারের চিহ্নও থাকে না।কারণ বউ দের বিশ্বাসই হয় না তাদের স্বামীদের একটা আলাদা প্রফেশন আছে।বাহিরে তাদের কত পরিচিতি!
দোকানদারের কথা শুনে সোহান বললো,আপনি বেশ মজার লোক তো?তা আপনার বউ কি বলে আপনাকে নিয়ে?
–কি আর বলবে ভাই?আমি নাকি কোনো কাজেরই না।আমার দ্বারা নাকি কোনো কাজ হয় না।অথচ সারাদিন রাত দোকানে বসে পরিশ্রম করি।উলটো সে নিজেই বাসার মধ্যে সারাদিন বসে থাকে।আর ইউটিউবে মেকাপ টিউটিরিয়াল দেখে।
–হা,হা।মেয়েরা এমনই ভাই।আমাকেও সেম কথাই শুনতে হয়।এই বলে সোহান নোমান কে বললো,তা শালা বাবু নিজে প্রস্তুত আছেন তো বউ এর কথা শোনার জন্য?

নোমান ভীষণ লজ্জা পেলো সোহানের কথা শুনে।তবে সে মনে মনে ভাবলো বউকে কথা বলার সুযোগ দিলে তো সে কথা বলবে।শুরুর থেকেই এমন টাইট দিয়ে রাখবো যে একটুও নড়াচড়া করতে পারবে না।শুধু আদরই করতে চাইবে।
–কি হলো তোমার আবার?কই হারিয়ে গেলে এই বলে সোহান দোকানদারকে বললো, ভাই নিউ কিছু কালেকশন দেখান।
হঠাৎ নোমান বললো,দুলাভাই আপনি আপনার পছন্দ মতো চয়েজ করুন।আমি কিন্তু আসছি।
–এই নোমান কই যাচ্ছো তুমি?যাও না কোথাও।তুমি বিয়েতে কি পড়বে সেটা নিজেই চয়েজ করে নাও।
–দুলাভাই,আপনি আমার থেকে ভালো চয়েজ করতে পারেন।নেন যেকোন একটা।
–তা তুমি আবার কই যাচ্ছো?
–এই তো সামনেই।এই বলে নোমান চলে গেলো।

কিন্তু সে যে আশায় চলে গেলো সে আশা আর হলো না তার।সে তানিশাকে দেখতে চাইছিলো।কিন্তু গিয়ে দেখে ট্রায়াল রুমের সামনে এক দল মেয়ে মানুষ দাঁড়িয়ে আছে।আর সবার হাতেই ড্রেস। এক এক করে ঢুকছে আর বের হচ্ছে সবাই।কিন্তু তানিশাকে দেখতে পেলো না নোমান।হয় তো সেই আছে এখন ভিতরে।
নোমান তবুও সাহস করে গেলো সেখানে।আর মেয়েগুলোকে বললো,আচ্ছা আমার ওয়াইফ কি ভিতরে ঢুকেছে?
তখন একটা মেয়ে বললো,তা আমরা কি করে জানবো?আমরা কি আপনার ওয়াইফ কে চিনি নাকি?
নোমান সেই কথা শুনে বললো,তাই তো?আপনারা চিনবেন কিভাবে।খুব ইমার্জেন্সি একটা দরকার ছিলো তো সেজন্য বললাম।হঠাৎ স্বর্না এসে বললো,আংকেল!আপনি এখানে কি করছেন?
নোমান তখন বললো, তোমার খালামনি কোথায় মামুনি?

–এই তো ভিতরে।
–ও তাই?এই বলে নোমান মেয়েগুলোকে বললো,একটু সাইট দিন প্লিজ,খুবই ইমার্জেন্সি একটা কাজ আছে।এই বলে সে দরজা নক করলো।
তানিশা ভেবেছে মেয়েগুলো নক করছে।সেজন্য সে সাথে সাথে খুলে দিলো।নোমান ও সাথে সাথে ভিতরে ঢুকলো।আর গিয়েই তানিশার মুখ টিপে ধরলো।কারণ সে জানে তানিশা না বুঝেই চিল্লায় উঠবে।
নোমান তানিশার মুখ টিপে ধরে বললো, কোনো সাউন্ড করবা না।আমি জাস্ট একটু দেখতে এসেছি।দেখেই চলে যাবো।এই বলে নোমান তার হাত সরালো।

তানিশা তখন বললো, কি দরকার এভাবে আসার?মেয়েগুলো কি ভাববে এখন?ছিঃ আমার তো ভীষণ লজ্জা লাগছে।না জানি আমাকে আবার খারাপ মেয়ে ভেবে বসে।
–কেনো খারাপ মেয়ে ভাববে?স্বামী আর স্ত্রী একসাথে থাকলে বুঝি মানুষ খারাপ ভাবে তাদের?
–স্বামী আর স্ত্রী?মানে টা কি?আমাদের বিয়ে হলো কবে?
–হয় নি।কিন্তু হবে তো।
তানিশা তখন বললো, আপনি যান এখন।হয়েছে দেখা।
নোমান সেই কথা শুনে নিচ থেকে মাথা পর্যন্ত দেখতে লাগলো,আর বললো,হ্যাঁ হয়েছে দেখা।সুন্দরই লাগছে।তবে?
তানিশাও বিস্ময় ভরা চোখ নিয়ে বললো,তবে?

–একটু অসম্পূর্ণ লাগছে।এই বলে নোমান হঠাৎ তানিশাকে কাছে টেনে এনে একটা কিস করে বললো, গাড়ির ভিতর দিতে দাও নি।সেটা দিয়ে গেলাম।
তানিশা কিছু বলার আগেই আরেকটা কিস করলো নোমান,আর বললো এটা এখনকার জন্য।ড্রেস টা কিন্তু হেব্বি মানাইছে।এই বলেই সে বের হলো রুম থেকে।

কিন্তু নোমান বের হতেই মেয়েগুলো কেমন যেনো বিস্ময় ভরা চোখ নিয়ে তাকিয়ে রইলো তার দিকে।সে বুঝতে পারলো না কিছু।নোমান মনে মনে ভাবলো তার ঠোঁটে আবার লিপিস্টিকের দাগ দেখা যাচ্ছে নাকি?সেজন্য সে সামনে থাকা গ্লাসটাই ভালো করে তাকালো।না, সব তো তার ঠিকই আছে।তাহলে মেয়ে গুলো এরকম ভাবে দেখছে কেনো?
নোমান মনে মনে ভাবলো, হয় তো তাকে ভীষণ হ্যান্ডসাম লাগছে।সেজন্যই এভাবে তাকিয়ে আছে।নোমান সেজন্য তার শার্টের কলার ঠিক করতে করতে সেখান থেকে চলে গেলো।
কিন্তু তানিশা বের হতেই একটা মেয়ে বললো,এটা অসভ্যতা করার জায়গা না।এখানে সবাই শুধু ড্রেস চেঞ্জ করার জন্যই আসে।

তানিশা সেই কথা শুনে বললো, কি আজেবাজে কথা বলছেন এসব?কিসের অসভ্যতা করলাম?জেনেবুঝে কথা বলবেন এই বলে তানিশা স্বর্ণাকে সাথে করে নিয়ে চলে গেলো।তারপর তানিশা হঠাৎ স্বর্নাকে জিজ্ঞেস করলো,
তখনকার আপু গুলো কি তোমাকে কিছু জিজ্ঞেস করেছিলো?
–হ্যাঁ।
–কি জিজ্ঞেস করেছিলো?
–বললো,এই ছেলেটা কি তোমার খালামনির হাজব্যান্ড?
–তা,তুমি কি বললা?
–আমি বললাম,না।হাজব্যান্ড না।উনি তো আমার আংকেল হন।আমার নোমান আংকেল।

তানিশা স্বর্নার কথা শুনে ভীষণ লজ্জার মধ্যে পড়ে গেলো।তাহলে মেয়েগুলো তো ভুল কিছু বলে নি।তানিশার ভীষণ রাগ হতে লাগলো নোমানের উপর।এই ছেলেটা কেনো এমন করলো?কি দরকার ছিলো এভাবে রুমে যাওয়ার?
তানিশা আর স্বর্ণাকে দেখামাত্র তানিয়া বললো,একটা ড্রেস চেঞ্জ করতে এতোক্ষন লাগলো?আর এদিকে আমি পাঁচ টা ড্রেস চেঞ্জ করলাম?বাকি কেনাকাটা কখন করবি?
তানিশা তখন বললো, আপু নোমানকে দেখেছিস?
–কেনো কি দরকার নোমেনের?নোমান তো তোর দুলাভাই এর সাথে কেনাকাটা করছে।চল এখন কসমেটিকস এর দোকানে চল।এই বলে তানিয়া তানিশার হাত ধরে কসমেটিকস এর দোকানে প্রবেশ করলো।ড্রেস এর সাথে ম্যাচিং করে জুয়েলারি খুঁজতে লাগলো তারা।

কিন্তু এদিকে এখন পর্যন্ত নোমান আর সোহান একবারও আসলো না।তানিশা বুঝতে পারছে না নোমান কোথায় গেলো।সেজন্য তানিশা কল দিলো নোমানকে।কিন্তু নোমানের ফোন বার বার বিজি দেখাচ্ছে।সেজন্য তানিশা আর দিলো না কল।
হঠাৎ কিছুক্ষণ পর নোমান নিজেই আসলো তানিশাদের কাছে।কিন্তু নোমানের মুখ টা ভীষণ চিন্তিত দেখাচ্ছিলো।আর এদিকে দুলাভাই তানিশাকে নোমানের ড্রেসগুলো দেখিয়ে বললো, দেখ!কত কম সময়ে কিনে ফেললাম।আর তুই সেই থেকে মাত্র তিনটা ড্রেস চুজ করলি।তোর ড্রেসের থেকেও নোমানের ড্রেস গুলো কিন্তু বেশি সুন্দর।অবশ্য আমি চয়েজ করেছি দেখে এতো সুন্দর লাগছে।

তানিশা তার দুলাভাই এর কথায় কান না দিয়ে নোমানের দিকে দেখছে।সে তখন এগিয়ে গেলো নোমানের কাছে আর বললো,কি হয়েছে আপনার?মুখ চোখ এমন দেখাচ্ছে কেনো?কোনো প্রবলেম?
নোমান মাথা নাড়িয়ে বললো,না,কোনো প্রবলেম নেই।তোমাদের কেনাকাটা কি শেষ?
–না হয় নি শেষ। আরো কিছু বাকি আছে।
নোমান তখন বললো তাহলে তুমি আপু আর দুলাভাই এর সাথে বাকি কেনাকাটা গুলো শেষ করো।আমাকে একটু বাসায় যেতে হবে এখন।

তানিশা তখন নোমানের হাত ধরে বললো, আপনি কিছু লুকাচ্ছেন না তো?কি হয়েছে বলুন আমায়?
–বললাম তো হয় নি কিছু।ভাইয়া ডাকছে বাসায়।বললো জরুরি একটা কাজ আছে।এই বলেই নোমান চলে গেলো।
তানিশা বুঝতে পারলো কিছু তো হয়েছে।কারণ সে নোমানের মুখ দেখেই বুঝতে পারছে ব্যাপারটা। এই কিছুক্ষন আগেই যে ছেলেটার মুখে হাসি লেগে ছিলো তার হঠাৎ মুখ টা এমন মলীন হলো কেনো?
এদিকে নোমান তাড়াতাড়ি করে চলে গেলো বাসায়।গিয়ে দেখে শিলার বাবা মা আর জিসান এসেছে।তাদের চোখ মুখ দেখে বোঝা গেলো তারা নোমানের উপর ভীষণ ক্ষেপে আছে।নোমানকে দেখামাত্র জিসান ধাক্কা দিয়ে বললো,
কি কাহিনী শুরু করছিস এসব?নিজেকে কি ভাবিস?

–মানে?কি ভাবি আবার?
শিলার বাবা তখন বললো,জিসান চুপ করো তুমি।এটা বড়দের ম্যাটার।যা বলার আমি আর তোমার মা বলবো।তুমি চুপ করে থাকো।
জিসান সেই কথা শুনে বললো, চুপ করবো মানে?এতো কিছুর পরে আমি কি করে চুপ থাকি?আমি জানি তো ও কেনো শিলাকে বাদ দিয়ে তানিশাকে বিয়ে করছে?ও হিংসায় করছে এসব?যেই শুনেছে আমি তানিশাকে বিয়ের জন্য দেখতে গিয়েছি ও তখনি নিজেই প্রস্তাব দিয়েছে।ভেবেছে কেউ কিছু বলবে না।
নোমান সেই কথা শুনে বললো,জিসান! কি আজেবাজে কথা বলছিস?তোকে আমি হিংসা করতে যাবো কেনো?বরং তুই নিজে জেনেবুঝে তানিশার বাসায় প্রস্তাব নিয়ে গিয়েছিস।

ডাক্তার ম্যাডাম পর্ব ২৭

জিসান তখন চিৎকার করে বললো তুই আমাকে কেনো হিংসা করিস তা তুই নিজেও ভালো করে জানিস।আর তোর ঐ তানিশার প্রতি আমার বিন্দুমাত্র ইন্টারেস্ট নাই।আমি আমার বোনের জন্য এসেছি।আগে বল কবে বিয়ে করছিস শিলাকে?

ডাক্তার ম্যাডাম পর্ব ২৯