তুমি শুধু আমারই হও পর্ব ১০

তুমি শুধু আমারই হও পর্ব ১০
লেখনীতে- অরনিশা সাথী

ঘন্টা খানেক আগেই বিছানাকান্দি এসেছে অর্নি দের পুরো টিম। স্বচ্ছ পানির নিচে ছোট বড় পাথর সবমিলিয়ে অন্যরকম এক ভালো লাগা ছেয়ে যায় সকলের মনে। সবাই নিজেদের মতো ঘোরাঘুরি করছে। অর্নি নূর আর রুশান তিনজনেই পানিতে নেমে হই হুল্লোড় করছে। তরী দূরে দাঁড়িয়ে সবটা ভিডিও করছে। একে অপরকে ভেজানোর প্রয়াশ চলছে। অর্নি আর নূর দুজনে মিলে রুশানকে ভেজাচ্ছে। যার দরুন বেচারা প্রায় ভিজে গেছে সম্পূর্ণ। রুশান এক হাতে তেমন ভাবে ওদের ভেজাতে পারছে না।

উৎসব দূরে দাঁড়িয়ে এসব দেখছিলো। হঠাৎ করে চোখ পড়ে মাহিরের দিকে। ছেলেটা অদ্ভুত ভাবে দেখছে অর্নিকে। উৎসব ফের অর্নির দিকে দৃষ্টি স্থাপন করলো। আকাশী রঙের কূর্তি পড়ে আছে অর্নি। কোমর সমান কূর্তি প্রায় ভিজে এসেছে। পুরোপুরি ভিজলে শরীর্র স্ট্রাকচার স্পষ্ট ভাবে ফুটে উঠবে। মাহিরের চাহনীর মানে বুঝতে পেরে উৎসবের মেজাজ পুরো বিগড়ে গেলো। পরপর কয়েকটা শ্বাস ফেলে লম্বা লম্বা পা ফেলে এগিয়ে গেলো অর্নির দিকে। অর্নিকে টেনে পানি থেকে নিয়ে আসে। পেছনে নূর আর রুশানও আসে। অর্নির হাত ছেড়ে দিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে বললো,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

–“হালকা রঙের জামা পড়ে পানিতে নেমেছো কেন?”
অর্নি ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে উৎসবের দিকে। উৎসব অর্নিকে চুপ থাকতে দেখে বললো,
–“সেন্স নেই কোনো না? হালকা রঙের জামা পড়ে পানিতে নেমে ভিজলে যে শরীরের পুরো স্ট্রাকচার স্পষ্ট বোঝা যায় সেদিকে একদমই ধ্যান নেই? নাকি ইচ্ছে করেই নিজের আকর্ষণীয় অঙ্গগুলো সবাইকে দেখিয়ে বেড়ানোর ইচ্ছে? মাহির যে চোখ দিয়ে গিলে খাচ্ছে সেগুলো চোখে পড়ে না, না?”

উৎসবের এরকম কথা শুনে অর্নির গাল বেয়ে দুই ফোঁটা জল গড়িয়ে পড়লো৷ অর্নিকে কাঁদতে দেখে যেন উৎসবের রাগটা বেড়ে গেলো। মৃদু চিৎকার করে বললো,
–“ন্যাকাদের মতো আবার কাঁদছে, এই নূর ওকে আমার চোখের সামনে থেকে সরা। ওকে একদম সহ্য হচ্ছে না আমার।”
এই বলে হনহন করে নিজেই চলে গেলো ওখান থেকে। অর্নিকে বুকে জড়িয়ে নিলো নূর। রুশান মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললো,

–“কাঁদিস না তো, এভাবে ফ্যাচফ্যাচ করে কাঁদার কি আছে? ভালোর জন্যই বলেছে উৎসব ভাই।”
নূর অর্নিকে সোজা করে দাঁড় করিয়ে বললো,
–“সব দোষ আমাদের অর্নি তো পানিতে যেতে চাইছিলো না আমরাই জোর করে নিয়ে গেলাম। আমাদের জন্যই ভাইয়ার এতগুলো বকা শুনলো ও।”
নূরের কথায় রুশান সায় জানালো। নূর এবার অর্নিকে উদ্দেশ্য করে বললো,

–“তুই তো পুরোপুরি ভিজিস নি। কিচ্ছু হয়নি সব ঠিকঠাক আছে। কাঁদে না দোস্ত।”
অর্নি চোখের পানি মুছে নিয়ে বললো,
–“তোর ভাইয়ের ধারণা আমি খুব বাজে মেয়ে তাই না? ইচ্ছে করে সবাইকে__”
অর্নি পুরো কথা সম্পূর্ণ করার আগেই মাহির এসে দাঁড়ালো সেখানে। অর্নিকে উদ্দেশ্য করে বললো,
–“কাঁদছো কেন তুমি? এতক্ষণই তো খুব ভালোই লাগছিলো দেখতে, একদম হ___”
সজোরে মাহিরের গালে চ/ড় বসিয়ে দিলো অর্নি। রাগান্বিত স্বরে বললো,

–“একদম আমার আশেপাশে ঘেঁষার চেষ্টা করবেন না। আর আমাকে নিয়ে উল্টাপাল্টা চিন্তাভাবনা তো নয়-ই।”
কথাগুলো বলে প্রস্থান করো অর্নি, নূর আর রুশান। মাহির গালে হাত দিয়ে অর্নির যাওয়ার দিকে তাকিয়ে ক্রোধ নিয়ে বললো,
–“আজ হোক কাল হোক পাখিকে তো আমার খাচায় বন্দী করবোই৷ আর এর দেমাগ একদম মাটির সাথে মিশিয়ে দিবো আমি। বি রেডি।”

হামহাম পাহাড়, সিলেট মাজার, জাফলং সব জায়গায় কমবেশি ঘোরাঘুরি শেষ। প্রত্যেকটা জায়গা মন ছুঁয়ে যাওয়ার মতো। সবগুলো জায়গা অর্নির ভীষণ ভালো লেগেছে৷ তিনদিনের ট্যুরটা আজীবন মনে রাখবে ও৷ সিলেট ট্যুর স্মরণীয় হয়ে থাকবে ওদের কাছে।

বাস ছেড়েছে মিনিট দশেক হবে। অর্নি আর নূর পাশাপাশি বসেছে৷ রুশান তরীর সাথে৷ সেদিনের পর অর্নি আর উৎসবের সামনে পরেনি৷ দেখা হলেও পাশ কাটিয়ে চলে গেছে৷ উৎসবও তেমন ভাবে মাথা ঘামায়নি এসবে৷ ওর মেজাজ ভীষণ বিগড়ে ছিলো। রাগে শরীর জ্বলে যাচ্ছিলো মাহিরের ওরকম দৃষ্টি দেখে। তাই মাহিরের রাগটা অর্নির উপর ঝেড়েছে ও। উৎসব অবশ্য আজ বাসে উঠার পর কথা বলতে চেয়েছিলো অর্নির সাথে, অর্নি সে সুযোগ দেয়নি। দ্রুত নূরকে টেনে নিয়ে নিজে জানালার পাশে বসে নূরকে ওর সাথে বসায়৷ উৎসব একটা শ্বাস ফেলে অন্য সিটে গিয়ে বসে পড়ে।
সিটে মাথা রেখে অর্নি ঘুমিয়ে আছে৷ উৎসব নূরের দিকে কিছুটা ঝুকে বললো,

–“অর্নি আমার উপর রেগে আছে?”
নূর ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে বললো,
–“কষ্ট পেয়েছে ও, তোমার ওরকম সব ওয়ার্ড ইউজ করা ঠিক হয় নাই ভাইয়া। ভালো করে বললেই পারতে।”
–“মাথা ঠিক ছিলো না আমার, মাহিরের ওরকম দৃষ্টি দেখে। কবে যেন খুন করে ফেলি ওকে আমি।”
নূর ভ্রু কুঁচকে তাকালো ভাইয়ের দিকে। সন্দেহজনক দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো,

–“মাহির অর্নির দিকে তাকালে তোমার কি ভাইয়া?”
উৎসব ক্ষানিকটা সময় নিরব থাকলো। তারপর মুচকি হেসে নূরকে বললো,
–“আমার সিটে এসে বোস তুই।”
–“কেন, কেন?”
উৎসব নূরের মাথায় গাট্টা মেরে বললো,
–“এটাও বুঝিস না গাধী?”
ভাইয়ের কথায় নূর প্রসস্থ হাসলো। তারপর নূর উৎসবের সিটে বসে এবং উৎসব অর্নির পাশে গিয়ে বসলো। নূর ওর ভাইকে বললো,

–“ভাইয়া আমি যেটা ভাবছি, সেটা যদি সত্যি হয় তাহলে তোমাকে এত্তগুলা থ্যাংকস।”
উৎসব হেসে বোনের চুলগুলো এলোমেলো করে দিলো। নূর আবারো বললো,
–“ভাইয়া বলো না আমি যা ভাবছি তা কি সত্যি? তুমি সত্যিই অর্নিকে__”
নূর পুরো কথা বলে উঠার আগেই উৎসব মুচকি হেসে বললো,
–“সেটা সময় হলেই জানতে পারবি।”
নূর আর কথা বাড়ালো না। ও বুঝে গেছে ওর ভাই অর্নির জন্য কিছু একটা ফিল করে। যার দরুন মাহিরকে ওর আশেপাশে একদম সহ্য করতে পারে না।

উৎসব অর্নির ঘুমন্ত মুখের দিকে তাকিয়ে আছে অনেকটা সময়। এভাবে অর্নিকে দেখতে ওর ভালোই লাগছে৷ অতি সাবধানতার সাথে আলগোছে অর্নির একটা আঙুল নিজের আঙুলের ভাজে নিয়ে নিলো উৎসব। নূর ব্যাপারটা লক্ষ্য করে মুচকি হাসলো। অর্নির সাথে ফ্রেন্ডশিপ হওয়ার পর থেকে ও মনে মনে যেটা এতদিন আল্লাহ’র কাছে চেয়ে এসেছে সেটা বোধহয় এবার সত্যি হবে৷ আল্লাহ বোধহয় এবার নূরের ইচ্ছেটা পূর্ণ করবে৷

কথাগুলো ভেবে আবারো মৃদু হাসলো নূর৷
বাসের ঝাঁকুনি খেয়ে অর্নির ঘুম ভেঙে গেলো৷ পিটপিট করে চোখ মেলে তাকালো। পাশে তাকিয়ে উৎসবকে দেখে অবাক হলো বেশ। উৎসব সিটে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে রেখেছে। অর্নি খেয়াল করলো উৎসব ওর একটা আঙুল নিজের আঙুলের ভাজে নিয়ে রেখেছে। তড়িঘড়ি করে সরে বসলো। ফলস্বরূপ উৎসব চোখ মেলে তাকায়। অর্নিকে অবাক চোখে ওর দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে উৎসব একগাল হেসে বললো,

–“ঘুম কেমন হলো?”
–“আপনি এখানে কেন? নূর___নূর কোথায়?”
উৎসব অর্নির প্রশ্নের জবাব না দিয়ে বললো,
–“স্যরি।”
ভ্রু কুঁচকে তাকালো অর্নি। লোকটা হঠাৎ করে স্যরি বলছে কেন ভেবে পেলো না ও। উৎসব আবারো বললো,

–“সেদিন ওরকম ওয়ার্ডস ইউজ করা ঠিক হয়নি আমার।”
অর্নির চোখ জলে ভরে উঠলো। মনে পড়ে গেলো সেদিন উৎসবের করা বিহেভিয়ার এর কথা৷ কি কটু কটু কথাই না শুনিয়েছে ওকে। অভিমান হলো বেশ উৎসবের উপর। তাই গাল ফুলিয়ে অন্যদিকে ঘুরে রইলো। উৎসব আবারো বললো,
–“যতবার তুমি অসাবধানতায় ওরকম কাজ করবে ততবারই আমি কটু কটু কথা শোনাবো তোমাকে।”
অর্নি চকিত তাকালো উৎসবের দিকে। উৎসব একগাল হেসে অর্নির দিকে ঝুঁকে ফিসফিস করে বললো,

–“আমি চাই না, আমি ব্যাতিত অন্যকেউ তোমাকে সেভাবে দেখুক।”
চমকালো অর্নি। লোকটা এসব বলছেন কেন? তবে কি উনি? এসব ভাবনা মনের মাঝে আসতেই অর্নি সেসব ঝেড়ে ফেললো। কথা ঘুরানোর জন্য অর্নি বললো,
–“নূর কোথায়? আমি ওর সাথে বসবো।”
কথাটা বলে উঠতে নিলেই উৎসব অর্নির হাত ধরে ফেলে। তারপর বলে,

–“মাহির তোমাকে স্পর্শ করেছে বলে আমি মেরেছি কেন? আর আমি তোমাকে বারবার কেন স্পর্শ করি জানতে চাও না তুমি?”
অর্নির বুক ঢিপঢিপ করছে। ও আন্দাজ করতে পারছে উৎসব এই মূহুর্তে কি বলতে চাচ্ছে৷ কিন্তু অর্নি সেসব কথা একদমই শুনতে চায় না। ও চায় না উৎসব এমন কিছু বলুক৷ তাই চট করেই বললো,
–“কিচ্ছু শুনতে চাই না আমি।”

কথাটা বলে বাসের জানালার উপর হাত রেখে তাতে থুতনি রেখে বাইরের দিকে তাকালো অর্নি। উৎসব অর্নির দিকে ঝুঁকে গিয়ে ফিসফিস করে বললো,
–“আমি জানাতে চাই অর্নি৷ এই পৃথিবীতে প্রচুর ছেলে আছে অর্নি৷ কিন্তু আমি বলতে চাই, #তুমি_শুধু_আমারই_হও অন্যকেউ তোমার দিকে চোখ তুলে না তাকাক।”
কথাটা বলে উৎসব সরে গেলো৷ অর্নির সারা শরীর যেন কেঁপে উঠলো৷ চকিত তাকালো উৎসবের দিকে৷ উৎসব বাঁকা হেসে ওর দিকেই তাকিয়ে আছে। দ্রুত দৃষ্টি সরিয়ে নিলো অর্নি। লম্বা একটা শ্বাস ফেলে আবারো উৎসবের দিকে তাকালো। এবং বললো,

–“দেখুন ভাইয়া, আমি সেদিন নূরকে মজার ছলেই ননদিনী কথাটা বলেছিলাম। আমি জানতাম না ফোনের ওপাশে নূরের ভাই মানে আপনি ছিলেন। ওই কথাটার জন্য এভাবে আপনি আমার পেছনে পড়ে থাকতে পারেন না। ওটা জাস্ট একটা ইন্সিডেন্ট ছিলো। আপনি__”
–“আমি সেই ঘটনা ধরে এখনো বসে নেই অর্নি৷ আমি আমার কথাটা জানালাম। এখন তুমি হ্যাঁ না যাই বলো আমার তাতে কোনো মাথাব্যাথা নেই৷ কিন্তু তোমার আশেপাশে কোনো ছেলেকে যেন আমি না দেখি৷ কেউ যেন কখনো তোমায় স্পর্শ করার সাহস না দেখায়। নয়তো তোমার জন্য আমার চেয়ে খারাপ আর কেউ হবে না। তুমি শুধু আমারই হবে৷”
গম্ভীর কন্ঠে কথাগুলো বললো উৎসব৷ অর্নি তব্দা খেয়ে বসে আছে। লোকটা কি প্রপোজ করলো নাকি হুমকি দিলো? বুঝে আসছে না অর্নির।

–“পুরান পাগলে ভাত পায় না নতুন পাগলের আমদানি।”
বিড়বিড় করে কথাটা বললো অর্নি। উৎসব কথাটা শুনে অর্নির দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকাতেই অর্নি দ্রুত বাইরের দিকে তাকালো।

অর্নবের জন্য অপেক্ষা করছে অর্নি। ক্যাম্পাসে পৌঁছে গেছে বেশ কিছুক্ষণ হবে৷ ধীরে ধীরে সবাই যার যার বাড়ি ফিরে যাচ্ছে। রুশান আর নূর দাঁড়িয়ে আছে অর্নির জন্য৷ অর্নব এসে অর্নিকে নিয়ে গেলেই ওরা নিজেদের বাড়ি ফিরবে। নূর আচমকাই বললো,
–“এই অর্নি ভাইয়া কি তোকে প্রপোজ করেছে?”
নূরের কথায় রুশান ভ্রু কুঁচকে তাকালো ওদের দুজনের দিকে৷ অর্নি ভাবলেশহীন ভাবে এদিক ওদিকে তাকাচ্ছে৷ অর্নি নূরকে পালটা প্রশ্ন করলো,

–“তুই বাসে আমার পাশ থেকে উঠে অন্য সিটে গিয়ে বসেছিলি কেন?”
–“ভাইয়া বলেছিলো তাই__”
–“কাল যদি অন্যকেউ বলে তখন কি তার হাতেও আমায় একা ছেড়ে দিবি?”
অর্নির এমন কথায় আচমকাই রেগে গেলো নূর৷ ঝাঁজালো কন্ঠে বললো,
–“অন্যকেউ আর ভাইয়া এক হলো নাকি?”
–“আমার কাছে দুজনেই কিন্তু সমান হবে নূর।”

–“আমার ভাইয়া মোটেও সেরকম না অর্নি। ভাইয়ার চোখে আমি তোর জন্য ভালোবাসা দেখেছি তাই__”
–“প্লিজ নূর, এসব কথা না বলি আমরা?”
এতক্ষণ রুশান সবটা নিরব দর্শকের মতো দেখছিলো৷ এবার বললো,
–“আচ্ছা কাহিনী কি বল তো?”

নূর একে একে সবটা বললো রুশানকে। রুশান সব শুনে অর্নিকে কিছু বলতে গেলেই অর্নি বলে,
–“প্লিজ, আমি এসব বিষয়ে ইন ফিউচার কোনো প্রকার কথা শুনতে চাই না।”
এ বিষয়ে আর কেউ কোনো কথা বললো না। রুশান আর তরীর রিলেশন নিয়ে কথা হচ্ছে৷ রুশান নিজের পকেট থেকে একটা রিং বের করে অর্নির হাতে পড়িয়ে দিলো৷ অর্নি রিংটা ভালো করে দেখে ভীষণ খুশি হলো৷ বেশ পছন্দ হয়েছে ওর। জিজ্ঞেস করলো,

–“এটা___”
রুশান বললো,
–“তোর রিং নিয়ে তরীকে পড়িয়ে দিয়েছি না? তাই তোর জন্য এটা আমি নিজে এনেছি৷ পরে তো আমাকে যাচ্ছেতাই বলে অপমান করতি তোর রিং নেওয়ার জন্য৷ আমি ইয়ার কারো কথা শুনতে রাজি না।”
অর্নি খুশিতে আটখানা হয়ে বললো,

–“থ্যাংকস দোস্ত, এটা আমার খুব পছন্দ হয়েছে।”
–“সত্যি বলছিস?”
অর্নি মাথা নাড়াতেই রুশান হাসলো৷ নূর ভ্রু কুঁচকে রুশানের দিকে তাকিয়ে রাগান্বিত স্বরে বললো,
–“আমারটা কই?”
রুশান আরো একটা রিং বের করে নূরের হাতে দিলো৷ রিং পেয়ে নূরও বেজায় খুশি৷ রুশান বললো,
–“তোর জন্য না আনলে তুই আমায় আস্ত রাখতি?”
–“একদমই না।”

নূরের কথায় অর্নি রুশান দুজনেই হাসলো। অর্নি নূর দুজনে একসাথে রুশানকে জড়িয়ে ধরলো। রুশানও আলতো হেসে দুই বন্ধুর মাথায় হাত রাখলো।
দূর থেকে দাঁড়িয়ে এসব উৎসব দেখছে আর মুচকি হাসছে৷ এভাবে যে ও অর্নিকে ভালোবেসে ফেলবে সেটা ও নিজেও কখনো কল্পনা করতে পারেনি। উৎসব অর্নির সামনে গিয়ে বললো,

–“বাসায় পৌঁছে দেই তোমাকে?”
–“থ্যাংকস উৎসব ভাই৷ আমাকে নিতে ভাইয়া আসবে।”
অর্নির মুখে উৎসব ভাই শুনে উৎসবের রাগ হলো ভীষণ। কোনোমতে রাগ সামলে নিয়ে বললো,
–“এখনো তো আসছে না, আমি দিয়ে আসি?”
–“নাহ আমি ভাইয়ার সাথেই যাবো।”

অর্নির কথায় নূর আর রুশানও কিছু বললো না। ওরা জানে অর্নি যেহেতু বলছে যাবে না তার মানে কিছুতেই যাবে না৷ উৎসব রেগে ক্ষানিকটা দূরে সরে দাঁড়ালো। এমন সময় অর্নির সামনে একটা ছেলে এসে দাঁড়ালো। অর্নি ছেলেটাকে দেখে খুশি হলো ভীষন। ছেলেটাকে একপাশ থেকে জড়িয়ে ধরে বললো,
–“হোয়াট অ্যা সারপ্রাইজ ম্যান?”
–“খুশি হয়েছিস না?”
–“ভীষণ।”

তুমি শুধু আমারই হও পর্ব ৯

–“অর্নব পাঠালো আমাকে। ও একটা কাজে আটকে পড়েছে। তো চল বাসায় যাওয়া যাক?”
অর্নি সম্মতি জানালো। যাওয়ার আগে নূর আর রুশানের সাথে ছেলেটার পরিচয় করিয়ে দিলো৷ এটা টায়রার ভাই নিহাল। ওদের থেকে বাই বলে অর্নি নিহালের সাথে ওর বাইকে করে চলে গেলো বাসার উদ্দেশ্যে। উৎসব রাগে হাত মুষ্টিবদ্ধ করে নিলো। কপালের রগ ফুলে উঠলো। চোয়াল শক্ত করে তাকিয়ে আছে অর্নির যাওয়ার দিকে।

তুমি শুধু আমারই হও পর্ব ১১