তুমি শুধু আমারই হও পর্ব ১১

তুমি শুধু আমারই হও পর্ব ১১
লেখনীতে- অরনিশা সাথী

সকাল সাড়ে নয়টা বাজে। অর্নি এখনো ঘুমোচ্ছে। ট্যুর থেকে ফেরার পর ভার্সিটি কাল আর আজ অফ দিয়েছে। তাই অর্নি শান্তির ঘুম দিচ্ছে। এমন সময় তীব্র রিংটোনের শব্দে ঘুম ভেঙে যায় অর্নির। ফোন হাতে নিয়ে দেখে নূরের ফোন। আড়মোড়া ভেঙে উঠে বসে অর্নি। ততক্ষণে ফোন কেটে গেছে। অর্নি আবারো ঘুমানোর প্রস্তুতি নিতেই ফোন বেজে উঠলো। অর্নি রিসিভ করে ফোন কানে নিতেই ওপাশ থেকে নূর বললো,

–“দোস্ত, জানিস কি হইছে?”
অর্নি বিরক্তিতে চোখমুখ কুঁচকে বললো,
–“না বললে জানবো কি করে?”
–“ওহ তাই তো, আচ্ছা শোন তাহলে___”
–“আরে ইয়ার, মেইন টপিকে আয় প্লিজ।”
–“শান্ত’রা আসছে আজ বাসায়।”
নূরের কথা শুনে অর্নির ঘুম ছুটে গেলো। জিজ্ঞেস করলো,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

–“কি বললি?”
–“হ্যাঁ, একটু আগে আম্মু আব্বুকে এই বিষয়ে কথা বলতে শুনেছি আমি। আর শান্তও ফোন করে বলেছে।”
–“তারমানে আংকেল আন্টি রাজি?”
নূর ক্ষানিকটা লজ্জা নিয়ে বললো,
–“তাই তো মনে হচ্ছে।”
–“কত্তদিনের ইচ্ছে তোর বিয়েতে নাচমু গাইমু, এতদিনে তাইলে আমার আর রুশানের স্বপ্নটা পূরণ হবে।”
নূর লাজুক হাসলো। বললো,

–“তুই বাসায় আয় না দোস্ত।”
–“পারবো না, আমার এখনো অনেক ঘুমানো বাকী। বিকেলের জন্য অল দ্যা বেস্ট। টাটা।”
কথাটা বলে নূরকে কোনোকিছু বলার সুযোগ না দিয়েই অর্নি লাইন কেটে দিলো। নূর একের পর এক ফোন করেই যাচ্ছে কিন্তু অর্নি রিসিভ করছে না। শেষে বাধ্য হয়ে অর্নিকে ফোন দেওয়া অফ করে রুশানকে ফোন করে৷ অতঃপর রুশানকে নিয়ে অর্নিদের বাসায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় নূর।
কাঁথা মুড়ি দিয়ে ঘুমোচ্ছে অর্নি৷ নূর আলগোছে কাঁথা সরিয়ে গ্লাসে করে পানি নিয়ে অর্নির মুখে ছিটিয়ে দিলো৷ পিটপিট করে চোখ মেলে তাকালো অর্নি৷ চোখ খুলতেই নূর আর রুশানকে দেখে লাফিয়ে উঠলো শোয়া থেকে৷ নূর অর্নিকে বিছানা থেকে টেনে নামিয়ে বললো,

–“ফ্রেশ হয়ে আয় যা।”
–“পারমু না, ঘুমামু আমি।”
রুশান অর্নির মাথায় গাট্টা মেরে বললো,
–“ঢং রাইক্ষা শাওয়ারে যা। আমরা আজ নূরের বাসায় থাকবো।”
অর্নি বিকট চিৎকার দিয়ে বললো,
–“ইমপসিবল। ওখানে উৎসব ভাই আছে, আমি থাকবো না।”
নূর চোখ রাঙিয়ে বললো,

–“আমার ভাই বাঘ/ভাল্লুক নয় যে তোকে খেয়ে ফেলবে।”
–“প্লিজ।”
–“তোর প্লিজ তুই তোর কাছেই রাখ।”
কথাটা বলল নূর। অর্নি কাঁদোকাঁদো চেহারায় তাকালো দুজনের দিকে। বুঝলো ওকে না নিয়ে এরা আজ যাচ্ছে না। অর্নি বললো,
–“যেতে পারি, তবে শর্ত আছে আমার।”

নূর আর রুশান দুজনেই ভ্রু কুঁচকে তাকালো৷ রুশান জিজ্ঞেস করলো,
–“আবার শর্ত কিসের?”
–“রাতে লুকিয়ে লুকিয়ে বের হবো আমরা। এদিক সেদিক ঘুরবো, স্ট্রিট ফুড খাবো।”
অর্নির কথায় নূর কোনো কিছু না ভেবেই বললো,
–“ওকেহ ডান।”

অর্নি খুশি মনে রেডি হতে চলে গেলো। ওর খুব ইচ্ছে রাতের বেলা বন্ধুরা মিলে ঘুরে বেড়ানোর। সাথে আনলিমিটেড স্ট্রিট ফুড তো থাকবেই। কিন্তু অর্নব বা মিসেস অদিতি কেউ-ই অর্নিকে রাতের বেলা একা ছাড়বে না। তাই নূরকে এই শর্ত জুড়ে দিলো। নূরদের বাসায় থাকলে ওর ভাই বা মা কেউ জানবে না আর কিছু বলবেও না।
ঘন্টা খানেক বাদে অর্নি একেবারে রেডি হয়ে বের হলো রুম থেকে৷ নূর আর রুশান আগে থেকেই অর্নির যাওয়ার জন্য অনুমতি নিয়ে রেখেছে অর্নির মা আর ভাইয়ের থেকে৷ অর্নি টেবিলে বসে নাস্তা করার জন্য। নূর আর রুশানের খাওয়া শেষ। অর্নি কোনোরকম খেয়ে উঠে পড়লো। তারপর মিসেস অদিতিকে বাই বলে বেরিয়ে পড়লো তিনজনে নূরদের বাসার উদ্দেশ্যে।

গোলাপী রঙের শাড়ি পড়ে রুমের মধ্যে পায়চারি করছে নূর। ওর ভীষণ নার্ভাস লাগছে। রুশান ব্যালকোনিতে গিয়ে তরীর সাথে কথা বলছে ফোনে আর অর্নি ফোনে ফানি ভিডিও দেখছে আর মাঝে মধ্যে হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছে বিছানায়। নূরের রাগ হলো প্রচুর। রুশান আর অর্নি ওকে সাহস দিবে কি তা না উলটো যে যার মতো ব্যস্ত। নূর অর্নির হাত থেকে ফোনটা কেড়ে নিয়ে পাওয়ার অফ করে বিছানায় রেখে দিলো। অর্নি ভ্রু কুঁচকে বললো,

–“ফোন নিলি কেন?”
–“তো কি করবো? এদিকে আমি টেনশনে মরছি আর অন্যদিকে তুই ফানি ভিডিও দেখে হাসছিস রুশাইন্না তরীর সাথে প্রেম করছে। তাহলে তোদের এখানে এনে লাভ হলো কি আমার?”
অর্নি মুখ বাঁকিয়ে বললো,
–“আমি আসতে চাইনি, তোরা জোর করে এনেছিস আমাকে।”
–“আমার এনগেজমেন্ট ইয়ার, আর তোরা কি করছিস? ধ্যাত ভাল্লাগে না!”

নূর অভিমানে গাল ফোলালো। অর্নি গিয়ে রুশানকে টেনে আনলো। তারপর দুইজনে মিলে বসলো নূরের পাশে। নূরের এনগেজমেন্ট কথাটা শুনে রুশান অর্নি দুজনেরই মন ভীষণ ভাবে খারাপ হয়েছে৷ রুশান বললো,
–“এখন থেকে আমাদের প্রায়োরিটি কমে যাবে তোর কাছে তাই না?”
নূর শান্ত চোখে তাকালো রুশানের দিকে৷ অর্নি বললো,
–“বিয়ের পর তুই চেঞ্জ হয়ে যাবি নূর? আমাদের আগের নূর আর থাকবি না, আমাদের আগের মতো আর সময় দিবি না, তাই না?”

–“আই উইল মিস ইউ সো মাচ দোস্ত।”
কথাটা বলেই রুশান জড়িয়ে ধরলো নূরকে। নূর কান্না আটকে বললো,
–“তোরা একদিকে, আর বাকী সব একদিকে। তোরা ছিলিস, তোরা থাকবি। ইট’স মাই প্রমিস। আমিও আগের মতোই থাকবো।”
অর্নি ঠোঁট কামড়ে ধরে কান্না আটকানোর চেষ্টা করছে। ওরা তিনজন কক্ষনো আলাদা হতে চায় না। এরকম ভাবে আজীবন থাকতে চায়। পারবে তো এভাবে থাকতে? অর্নি কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বললো,

–“আমাদের ভুলে যাবি না তো?”
নূর এবার ডুঁকরে কেঁদে উঠলো। অর্নিও আর কান্না আটকে রাখতে পারলো না৷ নূরকে জড়িয়ে ধরে নিজেও ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো। এমন সময় দরজার সামনে থেকে রাশভারি কন্ঠস্বরে দুজন দুজনকে ছেড়ে বসলো। চোখের পানি মুছে নিলো দুজনেই৷ উৎসব বললো,

–“এখানে এত কান্নাকাটির কি আছে? নূর তো আজই চলে যাচ্ছে না।”
নূর বললো,
–“ওসব তুমি বুঝবে না ভাইয়া৷ তোমরা ছেলেরা তো বিয়ে করে বউ বাড়িতে নিয়ে আসো। কিন্তু আমাদের নিজের বাড়ি ছেড়ে যেতে হয়৷ অন্যজনের মতো করে বাঁচতে হয়৷ অন্যের শখ আহ্লাদের কথা মাথায় রেখে প্রতিটা কদম ফেলতে হয়। কিন্তু তোমরা তো সারাজীবন নিজেদের মতো করে চলতে পারো৷ তোমাদের স্বাধীনতায় কেউ হস্তক্ষেপ করতে পারে না।”
উৎসব এগিয়ে এসে বোনের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বোনকে জড়িয়ে ধরলো৷ পাশেই অর্নি দাঁড়ানো ছিলো৷ উৎসব অর্নির দিকে কিছুটা ঝুঁকে বললো,

–“আচ্ছা আমি নিজের মতো চলতে পারবো তো? নাকি আপনার কথা মানতে হবে আমায়?”
অর্নি ভ্রু কুঁচকে তাকালো উৎসবের দিকে। ওদিকে নূর ভাইয়ের বুকে মাথা রেখেই ফিক করে হেসে দিলো উৎসবের এমন কথা শুনে। নূর উৎসবকে ছেড়ে দিয়ে অর্নির হাত ধরে বললো,
–“অর্নি আমার ভাবী হয়ে যা না প্লিজ?”
–“কক্ষনো না।”

কথাটা বলেই অর্নি ব্যালকোনিতে চলে গেলো৷ উৎসব নূরকে বললো,
–“তোর ভাবী যদি কেউ হয় সেটা অর্নিই হবে সিওর থাক। নয়তো আর কেউ না।”
কথাটা বলে উৎসব রুশানকে বলে,
–“কিছুক্ষণ পর নূরকে নিচে নিয়ে এসো।”

কথাটা বলে একপলক ব্যালকোনিতে তাকিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে যায় উৎসব। উৎসব যেতেই অর্নি রুমে আসে।
পাশাপাশি বসানো হয়েছে নূর আর শান্তকে৷ নূরের মতো এত ছটফটে মেয়েটাও আজ একদম শান্ত হয়ে বসে আছে৷ ভিতরে ভিতরে ভয়ে জমে যাচ্ছে। একরাশ লজ্জা এসে ঘিরে ধরেছে নূরকে। সব কথাবার্তা শেষে দুজনের এনগেজমেন্ট হয়ে যায়৷ অর্নি আর রুশান নূর-শান্তকে নূরের রুমে নিয়ে আসে আলাদা ভাবে কথা বলার জন্য।
নূরের একটা হাত শান্ত নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে বললো,

–“জানো নূর, আমার কাছে এখনো সবটা স্বপ্নের মতো লাগছে।”
–“কেন?”
–“ভাবিনি এত ইজিলি দুই ফ্যামিলি রাজি হয়ে যাবে।”
শান্তর কথায় নূর হাসলো৷ নূরের আব্বু আম্মু কিছুতেই রাজি হতো না, যদি না উৎসব রাজি না থাকতো৷ নূর জানতো উৎসবের ডিসিশনের উপর সবটা ডিপেন্ড করবে। তাই তো সেদিন ট্যুরে শান্ত যখন জানালো ওর পরিবার রাজি তখনই নূর উৎসবকে সবটা আগে থেকেই জানিয়ে রেখেছে। উৎসব আগেই শান্তর ব্যাপারে সব খোঁজখবর নিয়ে রেখেছিলো, খারাপ কোনো রেকর্ড পায়নি। আর সব থেকে বড় কথা নূর শান্তকে ভালোবাসে তাই উৎসবও আর দ্বিমত করেনি। শান্তর ডাকে নূরের হুশ ফিরলো৷ বললো,

–“হ্যাঁ বলুন।”
শান্ত নূরকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে বললো,
–“তখন তো আন্সারটা দাওনি। বলেছিলে দুই ফ্যামিলি মানলে তুমি রাজি আছো। এখন তো সব ঠিকঠাক আছে৷ এখন অন্তত আন্সারটা দাও?”
নূর লজ্জায় মাথা নুয়ালো। ধীর গলায় বললো,
–“কিসের আন্সার?”
শান্ত নূরের কানের কাছে গিয়ে ফিসফিস করে বললো,

–“ওই যে ভালোবাসি বললাম তার আন্সার?”
অনেকটা সময় নিরব থাকলো নূর৷ বুক ঢিপঢিপ করছে ওর। শরীর কাঁপছে৷ নিজেকে সামলে নিয়ে বললো,
–“ভালোবাসি।”
নূরের মুখ থেকে ভালোবাসি শুনে শান্তর মুখে হাসি ফুঁটলো৷ নূরকে একপাশ থেকে জড়িয়ে নিয়ে মাথায় চুমু খেলো। এমন সময় গলা ঝেড়ে ভিতরে ঢুকলো অর্নি আর রুশান। অর্নি বললো,

–“বিয়ের আগেই এসব জড়াজড়ি একদম ভালো না শান্ত ভাই, কন্ট্রোল ইউরসেল্ফ।”
অর্নির কথায় সরে দাঁড়ালো দুজনে। শান্ত হেসে বললো,
–“এভাবে উঁকিঝুঁকি দেওয়া ঠিক না শালীকা।”
শান্ত’র কথায় অর্নি ইনোসেন্ট হাসি দিলো। রুশান বললো,
–“এটা তো কিছুই না ভাই, আসল মজা তো দেখবেন বাসররাতে। তখন শুধু দেখবেন আমরা কি কি করি।”
নূর রুশানের মাথায় গাট্টা মেরে বললো,

–“যাহ ফাজিল! তোরে এসব কথা বলতে কে বলছে এখানে? দূর হো।”
এমন সময় রুশানের ফোন বেজে উঠে। স্ক্রিনে তরীর নাম্বার দেখে মুচকি হেসে বললো,
–“আমার জানটা ফোন দিছে কথা বলে আসি, বাই।”
রুশান বেরিয়ে গেলো। অর্নি তখনো সেখানে দাঁড়িয়ে আছে। নূরের দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে বললো,
–“দোস্ত তোরে এরকম লজ্জারাঙা মুখে একদমই মানায় না। গুন্ডি গুন্ডি লুকেই বেস্ট লাগে৷ ট্রাস্ট মি।”
নূর চোখ রাঙিয়ে তাকালো অর্নির দিকে। অর্নি মুখে আঙুল দিয়ে বললো,

–“আমিও আসছি৷ বিয়ের আগে কিন্তু জড়াজড়ি একদম ভালো না। আবারো মনে করিয়ে দিলাম।”
নূর এবার বললো,
–“আমাদের তো তাও এনগেজমেন্ট হইছে অর্নি। আমরা একে অপরকে জড়িয়ে ধরতেই পারি৷ কিন্তু আমার ভাইয়ের সাথে তোর না এনগেজমেন্ট হইছে আর না তোরা রিলেশনে আছিস, তাহলে আমার ভাইয়ের বুকে মাথা রাখিস কি করে? টেল মি।”

শান্ত’র সামনে এভাবে বলায় অর্নি ক্ষানিকটা লজ্জা পেলো। নূরের দিকে রাগান্বিত চোখে তাকিয়ে বললো,
–“আমার বয়েই গেছে তোর ভাইয়ের বুকে মাথা রাখতে।”
এই বলে দৌড়ে বেরিয়ে গেলো অর্নি। ওর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে নূর শব্দ করেই হেসে দিলো।

উৎসবের রুম ক্রস করার সময় উৎসব টেনে অর্নিকে ভিতরে নিয়ে যায়৷ অর্নিকে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে উৎসব ওর সামনে দাঁড়ায়৷ অর্নি নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করে বললো,
–“যেতে দিন আমায়৷ আমাকে যখন তখন এভাবে স্পর্শ করতে পারেন না আপনি।”
উৎসব দাঁতে দাঁত চেপে বললো,

–“ইন ফিউচার আমার স্পর্শই সহ্য করতে হবে তোমাকে।”
–“ছাড়ুন আমায়।”
–“ছেড়ে দিবো, আগে বলো সেদিন ছেলেটা কে ছিলো?”
উৎসবের কথায় অর্নি কপাল কুঁচকে তাকালো ওর দিকে৷ বুঝার চেষ্টা করলো কোন ছেলের কথা বলছে ও। পরমূহুর্তেই মনে পড়লো নিহালের কথা৷ সেদিন ট্যুর থেকে ফিরে নিহালের সাথেই বাড়ি গেছিলো অর্নি। আর সেদিন উৎসব অর্নিকে নিহালের সাথে যেতে দেখে বেশ চটেও গেছিলো। অর্নি বুঝলো উৎসব নিহালের কথা জিজ্ঞেস করছে। তবুও না বোঝার ভাণ করে বললো,

–“কোন ছেলেটা?”
–“পরশু ট্যুর থেকে ফিরে যার বাইকে চেপে বাড়িতে গেলে।”
–“সে যেই থাকুক, আপনাকে বলতে বাধ্য নই আমি। ছাড়ুন আমায়।”
–“ছেলেটা কে ছিলো?”
–“বলবো না।”
উৎসবের রাগ তড়তড় করে বাড়ছে। দেয়ালে সজোরে একটা পাঞ্চ মারে উৎসব, অর্নি ভয়ে কেঁপে উঠে। উৎসব আবারো বললো,

–“বলেছিলাম না, কোনো ছেলেকে যাতে তোমার আশেপাশে না দেখি আমি? কেউ যাতে তোমাকে স্পর্শ করতে না পারে সেটা বলেছিলাম না আমি? এরপরও ওই ছেলেকে কিভাবে জড়িয়ে ধরো? কিভাবে ওর বাইকে চেপে বাড়ি ফেরো তুমি? আন্সার মি।”
–“কে আপনি? আপনার কোনো কথা মানতে বাধ্য না আমি।”
–“অভিয়েসলি বাধ্য তুমি। ভালোবাসি তোমাকে আমি। বলেছি না একবার, #তুমি_শুধু_আমারই_হও?”
–“হবো না আমি আপনার।”

তুমি শুধু আমারই হও পর্ব ১০

কথাটা বলে অর্নি দুহাত দিয়ে উৎসবের বুকের ধাক্কা দিয়ে উৎসবকে নিজের থেকে সরিয়ে দিলো। তারপর বেরিয়ে গেলো রুম থেকে। যেতে যেতে শুনতে পেলো উৎসবের রুমে ভাঙচুরের শব্দ।

তুমি শুধু আমারই হও পর্ব ১২