তুমি হৃদয়ে লুকানো প্রেম পর্ব ৪৬

তুমি হৃদয়ে লুকানো প্রেম পর্ব ৪৬
তাহিরাহ্ ইরাজ

” আব্বু আমি বিয়ে করতে চাই। ”
তূর্ণ’র মুখনিঃসৃত শব্দমালায় ছোটোখাটো বি*স্ফোরণ হলো লিভিংরুম জুড়ে। হতভম্ব পরিবারের প্রতিটি সদস্য! নাজমুল সাহেব অবাক স্বরে বললেন,
” কি বললি ভাতিজা! আমি কি ভুল শুনলাম? ”
তূর্ণ লিভিংরুমের মধ্যমণি হয়ে দাঁড়িয়ে। সকলের দৃষ্টি তার পানে নিবদ্ধ।
” না চাচু। তুমি ভুল শোনোনি। আমি সত্যিই বিয়ে করতে চাই।”
নিজাম সাহেব রাগত স্বরে বললেন,

” সকাল সকাল বোধহয় মাথায় ব্যামো হয়েছে। তুমি ভুলে যাচ্ছো যে তোমার ইতোমধ্যে একটা বউ আছে। ”
” হাঁ। আছে। আমি কি তা অস্বীকার করেছি? ”
” করোনি। তাহলে বিয়ের কথা কোন মুখে বলছো? লজ্জা করে না? ”
তূর্ণ তপ্ত শ্বাস ফেলে বললো,
” ওহ্ আব্বু। এভাবে রিয়েক্ট করছো কেন? লজ্জা করবে কেন? জানো না বিয়ে করা সুন্নত? ”
তৃষা বলে উঠলো,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

” ভাইয়া তুমি কি বিয়ে করা সুন্নত এটাই বলতে চাইছো? নাকি চার বিয়ে সুন্নত সেটা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বলছো? ”
তূর্ণ ওর পানে কেমন দুর্বোধ্য চাহনিতে তাকালো। তাসলিমা এবার মুখ খুললেন। কঠিন বাক্যে বললেন,
” তূর্ণ সকাল সকাল মশকরা বাদ দিয়ে নিজের কাজে যা। শুধু শুধু ফাজলামি করে আমাদের মাথা গরম করিস না। ”
” আম্মু আ’ম সিরিয়াস। ”

ছোট এক বাক্য। তাতে নৃ!শংসভাবে ক্ষ.তবিক্ষত হলো মেয়েটির কোমল হৃদয়! নোনাজলে ভরপুর আঁখি যুগল। বাঁ হাতে খামচে ধরলো সোফা। র-ক্তাক্ত হৃদয়ের অলিগলি। অবাক নেত্রে তাকিয়ে স্বামীর পানে। মানুষটি এসব কি বলছে? দ্বিতীয় বিয়ের মতো নির্দয় কথা বলছে! কি করে? তারা তো দম্পতি। একে অপরের পরিপূরক। অর্ধাংশ। দু’জনে তো খুব জমিয়ে সংসার করছিল। চার বর্ণের জাদুকরী শব্দ ‘ভালোবাসি’ না বলেও ভালোবেসে যাচ্ছিল। একে অপরের সনে কাটাচ্ছিল জীবনের অন্যতম মধুর লগ্ন। তবে কি হলো আজ? বিয়ের বেশ কয়েক মাস পাড় হতে না হতেই সবটা সমাপ্ত? উড়ে গেল হাওয়ায়? পালিয়ে গেল হৃদয়ে জমানো সবটুকু ভালোবাসা? দুয়া’র অক্ষিকোল গড়িয়ে পড়লো অশ্রু কণা। তাসলিমা উঠে দাঁড়ালেন। ছেলের পাশে দাঁড়িয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে নরম কণ্ঠে বললেন,

” মাথা গরম হয়ে আছে। রুমে যাও। বিশ্রাম নাও। পরে কথা হবে। ”
তূর্ণ দু হাতে মায়ের গলা জড়িয়ে ধরলো।
” আম্মু তোমরা বুঝতে পারছো না। শুধু শুধু রিয়েক্ট করছো। আমি বিয়ে.. ”
অসম্পূর্ণ রয়ে গেল কথাটি। তাসলিমা গলা হতে হাত সরিয়ে নিলেন। দাঁড়ালেন কয়েক কদম পিছিয়ে। কাঠিন্যতায় মিশ্রিত কণ্ঠে বললেন,

” আর একটা বাজে কথা বললে এই বয়সে আমার হাতে মা*র খাবে। খুব লায়েক হয়ে গেছো তাই না? ঘরে বউ থাকতে দ্বিতীয় বিয়ে করার শখ জেগেছে? চরিত্রের এতটাই অবনতি?”
তূর্ণ কিছু বলতে উদ্যত হতেই নিজাম সাহেব বলে উঠলেন,
” তূর্ণ! আর একটাও বাজে কথা নয়। যাও এখান থেকে। ”
নিশি বললো,

” ভাইয়া তুমি এসব কি বলছো? দুয়াকে রেখে দ্বিতীয় বিয়ে! তুমি এমনটা করতে পারো না। দুয়া? দুয়া ভাবির কি হবে তাহলে? ”
” দ্বিতীয় বিয়ে। আর কি? ”
তূর্ণ’র খাপছাড়া আচরণে স্তম্ভ সকলে! নিজাম সাহেব ক্ষি প্ত হয়ে উঠে দাঁড়ালেন।
” তূর্ণ! এই মুহূর্তে আমার চোখের সামনে থেকে সরো। আমার মাথায় রীতিমতো আগুন জ্বলছে। কি থেকে কি বলে বসবো কষ্ট পাবে। যাও এখান থেকে। ”
তূর্ণ সকলের পানে তাকিয়ে অসহায় কণ্ঠে বললো,

” কি আশ্চর্য! বিয়ে করা বউকে দ্বিতীয়বার বিয়ে করবো। বাড়ির লোক তা-ও হতে দেবে না? ”
” না। দেবো না। ”
নিজাম সাহেব বলে তো উঠলেন। হঠাৎ হুঁশ ফিরল ওনার। উপস্থিত সকলের অবস্থাই এক।
” কি! ” বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে নিজাম সাহেব।
তূর্ণ মিটিমিটি হাসছে। প্যান্টের দু পকেটে গলিয়ে রাখা হাত। স্টাইল করে দাঁড়িয়ে। তৃষা ও নিশি উঠে দাঁড়িয়েছে সে-ই কখন।

” ভ্ ভাইয়া! তুমি এসব কি বলছো? দুয়াকেই বিয়ে করবে? ” তৃষা অবাক চাহনিতে তাকিয়ে।
” আমার পাঁচটা না দশটা না একটা মাত্র বউ। তাকে ছাড়া আর কাকে বিয়ে করবো? ”
দুয়া ক্রন্দন ভুলে ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে। তূর্ণ ওর পানেই তাকিয়ে। আকস্মিক চোখ টিপে দিলো। হকচকিয়ে গেল মেয়েটি। তড়িৎ দৃষ্টি সরিয়ে নিলো। অধর কা’মড়ে হাসলো তূর্ণ। সম্বিৎ ফিরল মায়ের কণ্ঠে।

” তুই দুয়া’কে বিয়ে করার কথা বলছিলি? ”
” হুম। ও ছাড়া আর কে আছে আমার? সেধে সেধে কেউ তো আর সুদর্শন বিবাহিত পুরুষকে বিয়ে করবে না। তাই বাধ্য হয়ে এই সুশ্রী পেত্নীটাকেই কবুল করতে হবে। ”
রাগে মেয়েটার নাকের ডগা ফুলে উঠলো। নিজাম সাহেব স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে বললেন,

” কতবড় অ স ভ্য ছেলে দেখলে? কিভাবে আমাদের ঘোল খাইয়ে দিলো। ”
” আমি কোথায় খাওয়ালাম? তোমরাই তো স্বেচ্ছায় খেলে। এখন যত দোষ তূর্ণ ঘোষ? ”
তূর্ণ কাঁধ ঝাঁকিয়ে বললো। নিজাম সাহেব রাগত চাহনিতে তাকিয়ে। এবার নাজমুল সাহেব প্রশ্ন করলেন,
” তা ভাতিজা। হঠাৎ পুনর্বিবাহ এর শখ হলো যে? ”
” হঠাৎ নয় চাচু। এটা বহু পুরনো ইচ্ছে। শুধু আমার একার নয়। আমাদের দু’জনার। ”
” মানে? দুয়া মা-ও বিয়েতে ইচ্ছুক? কই কখনো বলেনি তো। ”
” এই মুখচোরা মেয়েটা আর কি বলবে? কখনো কি নিজের সমস্যা মুখ খুলে বলে? বিয়ের পর উনি পাক্কা গিন্নি হয়ে গেছেন কিনা। শাবানাগিরী দেখায়। ”

তৃষা ও নিশি মুখ টিপে হাসছে। তূর্ণ বলতে লাগলো,
” তোমরা তো জানোই আমাদের বিয়েটা ঠিক কোন পরিস্থিতিতে হয়েছিল। বিয়ে নিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই সবার কত স্বপ্ন থাকে। ইচ্ছে থাকে। তোমাদের ছিল। আমাদের দুজনেরও ছিল। কিন্তু কিছু হলো আর কোথায়? পরিস্থিতির শিকার হয়ে বিয়েটা হলো। তাই ভাবলাম এবার সমস্ত আচার অনুষ্ঠানের সহিত বিয়েটা হোক। মাস গেলেই তো আমাদের ফার্স্ট অ্যানিভার্সারি। তখনই না হয় বিয়েটা হবে। ”

তূর্ণ এবার মধুর কণ্ঠে বাবা-মায়ের উদ্দেশ্যে বললো,
” উইথ ইয়্যুর পারমিশন উই ওয়ান্ট টু রি-ম্যারি। ”
বাবা মায়ের কাছ থেকে অনুমতির অপেক্ষায় তূর্ণ। ওনারা দুয়া’র পানে তাকালেন। মেয়েটা দুই ননদের মধ্যিখানে দাঁড়িয়ে। নিজাম সাহেব ধীরপায়ে হেঁটে পুত্রবধূর কাছে গেলেন। ওর মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন,

” কি রে মা? তোর কি মতামত? এই বদ ছেলেটিকে স্বামী হিসেবে মঞ্জুর করিস? নাকি সম্বন্ধ বাতিল করে দেবো? ”
তূর্ণ হতবিহ্বল! পরিবারের সদস্যরা মিটিমিটি হাসছে। দুয়া আড়চোখে তাকালো স্বামীর পানে। মানুষটা কেমন অসহায় চাহনিতে তাকিয়ে। চোখের ইশারাতেই বুঝিয়ে দিচ্ছে তার মনোভাব। আকাঙ্ক্ষা। সে চোখে বেশিক্ষণ তাকানো সম্ভব হলো না। আস্তে করে দৃষ্টি সরিয়ে নিলো দুয়া। তাতে আশাহত হলো প্রেমিক চিত্ত। হতাশায় নিমজ্জিত হলো মানসলোক। নিজাম সাহেব মৃদু স্বরে শুধালেন,

” কি রে মা? বল। ”
দৃষ্টি অবনত করে মেয়েটি মিহি স্বরে বললো,
” বাবা-মা হিসেবে তোমরা যা সিদ্ধান্ত নেবে আমি তাতেই রাজি। ”
হো হো করে হেসে উঠলেন নিজাম সাহেব। স্মার্ট জবাব। লাজে রাঙা মেয়েটি তড়িঘড়ি করে সেথা হতে প্রস্থান করলো। হাঁফ ছেড়ে বাঁচলো তূর্ণ। বক্ষস্থল হতে নেমে গেল কয়েকশ’ মণ ওজনের পাথর। তবে এই স্বস্তি বেশিক্ষণ স্থায়ী হলো না। বাবা ওর দিকে ক্ষ্যা পা ষাঁড়ের মতো তাকিয়ে।

” হ*তচ্ছাড়া! অহেতুক স্টার জলসার ড্রামা করে সকাল সকাল আমাকে দিয়ে কত কথা বলালি। সুন্দর মেজাজ খারাপ করে দিলি। তোকে তো আমি.. ”
তেড়ে গেলেন উনি। দাঁত কেলিয়ে হাসতে হাসতে ছুটলো তূর্ণ। পিছু নিলেন নিজাম সাহেব।
” দাঁড়া। দাঁড়া বলছি। বদ ছেলে। তোর কাছে আমি মেয়ে দেবো না। অন্য ছেলের সাথে বিয়ে দেবো। ”
তূর্ণ লিভিংরুমে ছুটতে ছুটতে বললো,
” পারলে দিয়ে দেখাও। সে পাত্রের হাত-পা ভেঙে যদি কাঙালি ভোজের আয়োজন না করেছি তো আমার নাম তূর্ণ নয়। ”
নিজাম সাহেব বুড়ো বয়সে আরো তেড়ে গেলেন। অট্টহাসিতে ফেটে পড়লো উপস্থিত সকলে।

তমস্র রজনী। সিঙ্গেল সোফায় পা তুলে বসে মেয়েটি। হাতে সমরেশ মজুমদার রচিত বই। মনোযোগ বইয়ের পাতায়। পেরিয়ে গেল কিছু মুহূর্ত। হঠাৎ ধ্যান ভঙ্গ হলো। বাঁ কর্ণে উষ্ণ শ্বাসের আঁকিবুঁকি। খাড়া হয়ে যাচ্ছে লোমকূপ। শিহরণে আবিষ্ট তনুমন। মানুষটি ইচ্ছাকৃত ভাবে এমন করছে। তাকে আদুরে জ্বালাতনে অতিষ্ট করে তুলছে। তবুও সাড়া দিলো না মেয়েটি। সে যে রাগ করে রয়েছে। সকালের ঘটনা এখনো ভোলেনি।

মনে আছে। তূর্ণ আলতো করে কর্ণে ফুঁ দিতে লাগলো। তবুও আশানুরূপ প্রতিক্রিয়া পেল না। মেয়েটি জোরপূর্বক বই পড়ছে। তাকে পাত্তা দিচ্ছে না। এবার ভিন্ন পন্থা অবলম্বন করে বসলো সে। কর্ণ পাতায় ছুঁয়ে দিতে লাগলো ওষ্ঠ। প্রেমময় সে পরশ আস্তে ধীরে নিম্নে ধাবিত হতে লাগলো। কর্ণ পাতা পেরিয়ে কাঁধ, সেথা হতে গলদেশ। আবেশিত রমণীর হাত খসে পড়ে গেল বইটি। আয়ত্ত্বে পেয়ে তূর্ণ বক্র হাসলো। দ্রুত তুলে নিলো পাঁজাকোলে। ভীত রমণী দু হাতে বেষ্টিত করে নিলো অর্ধাঙ্গের গলদেশ। তূর্ণ মোহনীয় হেসে গোল গোল করে একবার ঘুরলো। টুপ করে কোমল ওষ্ঠে এঁকে দিলো জাদুকরী পরশ। ভ্যাবাচ্যাকা খেল দুয়া।

” উহ্! ছাড়ো আমাকে। নামাও। ”
” হুয়াই? ”
” আমি তোমার মতো বদ লোকের কোলে থাকতে ইচ্ছুক নই। তাই। ”
তূর্ণ ওকে পাঁজাকোলে নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে বললো,
” আচ্ছা? তাহলে কার কোলে উঠতে চাও? আব্বুর পছন্দ করা পাত্রের? ”
দুয়া কথাটা ঠিক বুঝলো না। তবুও ইতিবাচক সাড়া দিলো।
” হাঁ। হাঁ। তার কোলেই উঠবো। নামাও আমাকে। ”

বিছানার সন্নিকটে তখন দু’জনে। তূর্ণ কঠিন চোখে তাকিয়ে। আকস্মিক ওকে বিছানায় ছুঁড়ে ফেলে দিলো। নরম বিছানায় ডুবে গেল মেয়েটি। তেমন আঘাত লাগেনি। তবুও মিথ্যা কঁকিয়ে উঠলো। তখনই আ.ক্রমণ করে বসলো ক্ষ্যা পা ষাঁড়। ওর বিপরীতে অবস্থান নিয়ে বিছানায় চেপে ধরলো দু হাত। চোখে চোখ রেখে হিসহিসিয়ে বলে উঠলো,
” কার কোলে উঠবি? হুঁ? আমার ওপর মন উঠে গেছে? আরেকজন চাই? আব্বুর পছন্দ করা ছেলেকে বিয়ে করবি? মে রে ভূত বানিয়ে দেবো। ”

সশব্দে হেসে উঠলো মেয়েটি। স্বল্প উঁচু হয়ে টুপ করে অর্ধাঙ্গের নাকে ওষ্ঠ ছুঁয়ে দিলো। অতঃপর বিছানায় মাথা এলিয়ে মধুরতম স্বরে বললো,
” আচ্ছা? আমাকে মে রে ভূত বানিয়ে নিজে আবার দেবদাস হয়ে যাবে না তো? নাকি চন্দ্রমুখী খুঁজে বেড়াবে? ”
সুডৌল নাকে দন্তের আলতো আ.ক্রমণে মৃদু কঁকিয়ে উঠলো মেয়েটি।

” ইশ্ রা.ক্ষস। এখন থেকেই ভ*য়ঙ্কর রা.ক্ষস হওয়ার ট্রেনিং শুরু করে দিয়েছে। ”
” বেশ করেছি। তোকে মে রে ভূত বানিয়ে আমিও রাক্ষস হয়ে যাবো। এরপর পেত্নী আর রাক্ষসে মিলে সুখেশান্তিতে সংসার করবো। হ্যাপিলি এভার আফটার।”
বলে মিষ্টি হাসি উপহার দিলো তূর্ণ। হাতের বাঁধন আলগা অনুভব করে পুরুষালি হাতের মাঝ হতে নিজের হাত দু’টো ছাড়িয়ে নিলো দুয়া। স্বামীর গলা দু হাতে জড়িয়ে বললো,

” বাহ্! কি সুন্দর! মানে তূর্ণ-দুয়া মানুষ কিংবা ভূতুড়ে নগরীর বাসিন্দা। যাই হোক না কেন, তারা একে অপরের সঙ্গী। তাই তো? ”
হেসে সম্মতি জানালো তূর্ণ। বিপরীতে দুয়াও হেসে উঠলো। তূর্ণ স্বল্প ঝুঁকে গেল। সঙ্গিনীর কপালে কপাল ঠেকিয়ে ফিসফিসিয়ে বললো,
” তূর্ণ নামক প্রেমিক পুরুষটিকে ভালোবেসে আরো একবার কবুল করার জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করুন বিবিজান। ”

ভানু’র কিরণে উজ্জ্বল বসুন্ধরা। পুষ্পির সঙ্গে হাসিঠাট্টায় মেতে তৃষা। হাঁটতে হাঁটতে দু’জনে বেরিয়ে এলো ভার্সিটি হতে। অপেক্ষারত রিকশার জন্য। হঠাৎ তৃষার দৃষ্টি নিবদ্ধ হলো বিপরীত দিকের পথে। অতটাও অবাক হলো না তৃষা। ক্লান্ত শ্রান্ত মানুষটি দাঁড়িয়ে। স্বেদজলে পরিহিত শার্ট সিক্ত। লেপ্টে সুঠামদেহে। মৃদু এলোমেলো মসৃণ চুল।

গরমে লালাভ আভা ছড়িয়ে মুখশ্রীতে। তবুও অবর্ণনীয় সুদর্শন লাগছে! আস্তে করে দৃষ্টি সরিয়ে নিলো মেয়েটি। তাতে আশ্চর্যান্বিত হলো নিশাদ! কোনোরূপ নিজেকে ধাতস্থ করে রাস্তা পাড় হতে উদ্যত হলো। ঠিক সে মুহূর্তে রিকশা হাজির। তৃষা, পুষ্পি রিকশায় বসে পড়লো। চলতে আরম্ভ করলো রিকশা। একটিবারের জন্যও পিছু ঘুরে তাকালো না নির্দয় মেয়েটি। রাগে ক্ষো ভে গাড়ির বনেটে ঘু.ষি মে রে বসলো নিশাদ। কঠিন হলো মুখখানা।

তুমি হৃদয়ে লুকানো প্রেম পর্ব ৪৪

একমাস পর তূর্ণ এবং দুয়া’র প্রথম বিবাহবার্ষিকী। সে দিনে ওদের পুনর্বিবাহের সময়কাল ধার্য করা হলো। একই তারিখে দ্বিতীয়বারের মতো বাঁধা পড়বে ওরা। পূর্ণতা পাবে ওদের সম্পর্ক। ধর্মীয় এবং সামাজিক ভাবে পরিচিত পাবে তূর্ণয়া জুটি।
হাতে মাত্র একমাস সময়। এখন থেকেই প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেল। বিবাহ বলে কথা। কত আয়োজন! খুশিতে আত্মহারা পরিবারের প্রতিটি সদস্য। কি থেকে কি করবে পরিকল্পনা চলছে দিবা-রাত্রি।

তুমি হৃদয়ে লুকানো প্রেম পর্ব ৪৭