তোলপাড় পর্ব ৩৮+৩৯+৪০

তোলপাড় পর্ব ৩৮+৩৯+৪০
শান্তনা আক্তার

রিমি ওর দুহাত দুদিকে মেলিয়ে বলল,এতো বেকায়দার মানুষ কেন আপনি?কনফিউশান ছিল তাই প্রশ্নটা জিজ্ঞেস করেছি এর জন্য চলে যাবেন?মানুষের মনে প্রশ্ন থাকবে এটাই তো স্বাভাবিক।
-তুমি অন্য সময় ও জিজ্ঞাসা করতে পারতে। যখন আমি একটা কথা বলতে চাইলাম তখনই জিজ্ঞেস করতে হলো!
-আমি বুঝতে পারিনি।মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিলো তাই আরকি।আচ্ছা আমি সরি বলছি।আপনি চাইলে কানে ধরে ছাদে ১০বার চক্কর কাটতে রাজি।

-সামনে থেকে সরে দাঁডাও।
-আচ্ছা ১০০ বার চক্কর দেব নাহয়।এবার তো মানুন।
আহসান ডোন্ট কেয়ার ভাব করে বলল,তাও না।
-আচ্ছা যান তাহলে আপনি।কিন্তু শুনে রাখুন আপনি চলে যাওয়ার পর আমি এই ছাদ থেকে লাফ দেব।
-এখনি দাও।আমি লাইফ দেখে যাই।ফেমাস হতে চাইলে বলো আমি ভিডিও বানিয়ে ভাইরাল করে দেই।
আহসানের কথা শুনে রিমি কিরমির করে ওঠে।ওর ইচ্ছে করছে আহসানের চুল ছিড়তে।কিন্তু কিছুই করতে পারছে না। মুখের এক্সপ্রেশন টাকেউ কাবু করতে পারছে না।এবার আহসান আর নিজের হাসি থামিয়ে রাখতে পারলো না।আহসানকে হাসতে দেখে রিমি যেন বেকুব হয়ে গেল।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

-এভাবে ভ্যাম্পায়ারদের মতো হাসছেন কেন হুম?
-তুমি আসলেই একটা বাচ্চা মেয়ে।বয়সটা বাচ্চাদের মতো না হলেও মনটা বাচ্চা স্বভাবেই আটকা পড়ে আছে।
-এতো বড় কথা!আমি তাহলে বয়স্ক মহিলা?
-বয়স তো কম হলো না।কত হবে?
-আমি সবে ২৬ বছরের একটা মেয়ে আর আপনি বলছেন আমি বয়স্ক মহিলা?
-ওহ শিট,আমি কিনা ২৬ বছরের একটা আন্টিকে বিয়ে করলাম!আহসান আকাশের দিকে তাকিয়ে বলল,That’s not fair God…

রিমি গিয়ে আহসানের কলার চেপে ধরে।
-আমি আন্টি হুম?কোন দিক দিয়ে আমি আন্টি শুনি?
আহসান রিমির কোমড় জড়িয়ে নিজের সাথে লাগিয়ে নিল।তারপর রিমির কানের কাছে মুখ নুইয়ে বলতে শুরু করলো,
হাজারো তারার ভিড়ে একটাই মুখ্য মণি ওই চাঁদ।তাকে নিয়ে রাতের কতই না হাতছানি।তার থেকেও অপরুপ তোমার ওই হরিণী চাহনি।

ফুলবাগে হরেক ফুলের সমাহার।গোলাপ যদি হয় ফুলের রানী,আমি জানি তুমি তারও মহারানী।
আমি মাখতে চাইনা কোনো দামি সুগন্ধি।কি করে মাখি?তুমি তো তার থেকেও বেশি সুবাসিনী।
আড়ালে কেন দেখো প্রেয়সী?সামনে এসো।লজ্জা কিসের?তুমি তো আমারই জীবনসঙ্গীনী।
স্কয়ার, রুট, কিউব বোঝো।বোঝোনা প্রেমের সমীকরণ।আমার মনের চৌকাঠে শুধুই তোমার বিচরণ।
গ্রীষ্ম হাসে,বর্ষা হাসে,হাসে শরৎ হেমন্ত

আমার প্রভাত তোমাতে শুরু,রাতের গভীরতা তোমাদেই যেন অন্ত।তোমাকে যতই দেখি না কেন,হয়না এ মন শান্ত।
ভালো লাগে শীতের সকাল আর বসন্ত।তার থেকেও রূপালী তুমি, নেই সে রূপের অন্ত।
রাখাল ছেলের মন উতলা,বাজাতে চায় বাঁশি।তার চেও উতলা আমি, দেখে তোমার ওই #তোলপাড় করা হাসি।
পিছলে যদি যাও,ভয় পেওনা ধরবো গিয়ে আমি।প্রতি চরণে পাবে আমায়,ছায়া হবো আমি।
বৃষ্টি দিনে গা ভেজাবো সঙ্গী যদি হও,ওষ্ঠ জোড়া করবো আপন সঙ্গ যদি দাও।
সারাংশ করে বলতে চাই,

ভালবাসি তোমায় আমি।
সারমর্মে ব্যক্ত করো, তোমার মনের উত্তর খানি।
আহসান মাথা উঁচিয়ে রিমির চোখের দিকে তাকালো।দেখলো রিমির চোখ জোড়া পানিতে টলমল করছে।এই বুঝি পানির স্রোত গাল বেয়ে পড়বে।তার আগেই আহসান আলতো করে রিমির চোখের পানি হাত দিয়ে মুছে দিল।আহসান আবার বলল,ভালবাসি রিমি।তোমায় আমি বড্ড ভালবাসি।তুমি কি ভালবাসো আমায়?

আমার মতো তোমার হৃদয়ে কি ভালবাসার তোলপাড় শুরু হয়নি?তোমার অনুভবে আমাকে কি কখনো খোঁজোনি?কখনো কি প্রেমছন্দ নৃত্য হয়ে ভাসেনি?আমার মতো তোমার মন কি গানের তালে সুর মেলায়নি?চুপ কেন বলো?আহসান রিমির গালে হাত রাখলো।রিমি ওর চোখ বন্ধ করে নিল।নাক রক্তের মতো লাল বর্ণ হয়ে এসেছে ওর।সবকিছু স্বপ্ন মনে হচ্ছে রিমির কাছে।আহসান রিমির হাতটা ওর বুকে চেপে ধরেছে।আহসানের অতৃপ্ত আত্মা জেগে উঠেছে আজ।তাকে থামাতে পারে রিমির একটা উত্তর।আহসান মরিয়া হয়ে জিজ্ঞেস করল,আমার হৃদ স্পন্দন অনুভব হচ্ছে কি?বুঝতে চেষ্টা করো তারা কি বলছে।এবার আহসান রিমির মাথা ওর বুকের সাথে চেপে ধরল।রিমির কান আহসানের বাম পাজর বরাবর ঠেকে আছে।রিমি নিঃশব্দে আহসানের হার্টবিট শুনে যাচ্ছে।

এখনো চুপ করে থেকো না রিমি।উত্তর দাও।আমার হার্টবিট কি তোমায় কিছু বলছে না?ভালো করে শোনো।আমার প্রতিটি স্পন্দন শুধু তোমার নাম জোপে যাচ্ছে।প্লিজ কিছু বলো।রিমি এবার আর চুপ করে থাকতে পারলো না।রিমি ওর মাথা উঁচু করে যখনই কিছু বলতে গেল ঠিক তখনই কারো হাতে তালির শব্দ শুনতে পেল। পেছনে ফিরে তাকাতেই রঞ্জিতকে দেখে এক ঝাঁক আতংক ভর করলো রিমির ভেতরে।আহসানও খানিক চমকে ওঠে।রঞ্জিত ধিরে ধিরে ওদের সামনে গিয়ে উপস্থিত হলো।অপা দৌঁড়ে আসলো ছাদে।এসেই বলল,তুমি দয়া করে কোনো ঝামেলা বাঁধিয়ো না!

রঞ্জিত হুংকার দিয়ে বলল,একদম চুপ করে থাকবে আজ।অনেক হয়েছে রঙ তামাশা।আর আমি সহ্য করতে পারলাম না।এই মিডিলক্লাস ফ্যামিলির মেয়েটা যবে থেকে এ বাড়িতে পা রেখেছে ঠিক তবে থেকেই কাল নেমে এসেছে এ বাড়িতে।চারিদিকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়ে গেছে।তবে আর না এই মেয়ে আজই এ বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাবে এটাই ফাইনাল।
-তুমি কিন্তু আমার সামনে আমার স্ত্রীকে অপমান করতে পারোনা বাপি।আমি কিন্তু মোটাও তা টলারেট করবো না।

-তুমি আমার মুখের উপর কখনো কথা বলোনি।কিন্তু এই মেয়ের ছাত্র ছায়ায় এসে আজ তুমি আমার মুখের উপর কথা বলতেও দু দন্ড ভাবো না।খুব কষ্ট পেয়েছি আমি।খুব বেশিই কষ্ট পেয়েছি।যেই ছেলেকে কখনো একটা ধমক দেইনি,আজ সেই ছেলে বউয়ের জন্য আমাকে!তার বাপিকে কথা শোনাচ্ছে!ছিহ লজ্জা করছে আমার আজ।কেন আমি তোমার জন্মের আগে মারা গেলাম না।কেন তোমার মতো ছেলের মুখ দেখলাম আর মায়ায় লেপ্টে গেলাম।কেন সেদিন সেই নবজাত আহসানকে কোলে নিয়েছিলাম?কেন তাকে দেখে খুশিতে চোখ ভরিয়ে দিয়েছিলাম?

-বাপি এভাবে বলো না প্লিজ।তুমি বিষয়টা একটু বুঝতে চেষ্টা করো।
তুমি ভুল করছো।
-আমি কোনোই ভুল করছি না।এখানে কি করছিলে তোমরা?আমাকে কি একবার জানানোর প্রয়োজনবোধ করেছিলে যে এখানে রিমির জন্মদিনের সেলিব্রেশন করছো?আমার বাড়ি এটা আর আমিই জানি না কি হচ্ছে না হচ্ছে।আমার প্রয়োজন নেই এ বাড়িতে তাইনা?কোনো ইম্পর্ট্যান্স নেই আমার!

-তুমি ওদের কিছু বলো না।আমিই আহসানকে মানা করেছিলাম তোমাকে না জানানোর জন্য।
-আমি তোমাকে চুপ করে থাকতে বলেছি অপা।অন্যের দোষ নিজের ঘাড়ে নেওয়ার স্বভাবটা পালটে ফেল।আমি জানি সব কারসাজি এই মিডিলক্লাস মেয়েটার।বাব্বাহ!গলায় দেখছি হিরের নেকলেস পড়েছে!রঞ্জিত গিয়ে এক টানে নেকলেস টা খুলে মাটিতে ফেলে দিল।রিমি ভয়ে কেঁপে ওঠে।চোখ দিয়ে পানি ফেলা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই রিমির।আহসান অপা মুখে বলেও রঞ্জিতকে বোঝাতে পারছে না।ওরা মুখে বলা ছাড়া আর কি করতে পারবে?স্ত্রী হয়ে বরকে বা ছেলে হয়ে বাবাকে মারতে তো পারবে না।আজ আহসানের হাত পা বাঁধা কারণ ওর সামনে ওর বাপি।কি বা বলবে?

রঞ্জিত আঙুল উঁচিয়ে রিমিকে বলছে,গোবরে পদ্মফুল কথাটা শুনেছো তো?না শুনলে আমি বলে দিচ্ছি তাও আবার ডিটেইলস এ।গোবর হচ্ছে তোমার ওই ফ্যামিলি টা।যেখানে তুমি জন্মেছো।আই মিন মিডিলক্লাস ফ্যামিলিটা। আর তুমি হচ্ছো সেই মিডিলক্লাস ফ্যামিলির পদ্মফুল।হয়ে গেল গোবরে পদ্মফুল।এই কথাটা বলার একটাই কারণ।আর সেটা হলো তুমি যতই দেখতে শুনতে ভালো হওনা কেন,তোমার গায়ে তো মিডিলক্লাস ফ্যামিলির দাগ লাগানো।সে দাগ মৃত্যুর আগ পর্যন্ত লেগে থাকবে।দুদিন হয়েছে আমার বাড়ির বউ হয়ে এসেছো।কিন্তু তাতে কি?ভিখারিনীকে সোনার চামচে খেতে দিলেই সে ভিখারিনী থেকে মহারানী হয়ে যায়না।কথাটা মাথায় রেখো।যদি আত্মসম্মান থাকে তো এ বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাও এক্ষুনি।

-এনাফ ইজ এনাফ বাপি।তুমি নিজের লিমিট ক্রস করোনা।
রিমি ওর দুকানে হাত চেপে বলল,চুপ করুন আপনারা।অনেক হয়েছে আর না।আমি আর এ বাড়িতে পড়ে থাকবো না।অনেক খাইয়েছেন পড়িয়েছেন আপনারা আমাকে।আর খেতে চাইনা,পড়তেও চাইনা।আমি চলে যাচ্ছি এ বাড়ি থেকে।রিমি হাঁটা দিচ্ছিলো কিন্তু অপা আহসান রিমির সামনে দাঁড়িয়ে পড়ে।
-তুই কোথাও যাবি না।তুই যদি যাস তাহলে আমাকেও সাথে নিয়ে যা মা।এই দাম্ভিক মানুষটার সাথে আর থাকতে চাইনা আমি।
-তা হয়না মা।এটা তোমার সংসার।আমার না।আমি আর এখানে থাকতে পারছি না।উনি তোমার হাসবেন্ড।শেষ নিশ্বাস পর্যন্ত তোমাকে তার পাশে থাকতে হবে।

-আর আমি তোমার হাসবেন্ড নই রিমি?মমের কথা না শুনলে আমার কথা তো শোনো।যেওনা আমাকে ছেড়ে।
-না কারোর কথাই আজ আর আমি শুনবো না।এখন থেকে নিজের কথা শুনবো।অনেক সারপ্রাইজ পেলাম আজ।শেষের সারপ্রাইজ টা সবচেয়ে বেশি মেমোরেবল হয়ে থাকবে।আমার জন্মদিনের বেস্ট গিফট হচ্ছে আজকের এই অপমানটা।এই সারপ্রাইজ টা আমি কখনোই ভুলবো না।কখনোই না।এক প্রকার জোর করেই বেরিয়ে আসলো রিমি।

আহসান রঞ্জিতের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বড় একটা নিশ্বাস ছেড়ে বলল,তুমি থাকো তোমার টাকা পয়সা নিয়ে আমি রিমির পাশে গিয়ে দাঁড়াবো।আমি তোমার এই আলিসান বাড়ি ত্যাগ করলাম।আহসান কথাটা শেষ করে এক কদম বাড়াতেই রঞ্জিত বলে ওঠে,তুমি আর এক কদম বাড়ালে আমাকে আর বাপি বলে ডাকতে পারবে না।আমি তোমাকে আর অপাকে ছেড়ে অনেক দূরে চলে যাব।এতটা দূরে যাব যে আমার নাগাল পাবে না।মরিয়া হয়ে খুঁজলেও না।

আহসান থমকে দাঁড়ালো।রঞ্জিতের প্রতি ক্ষোভে ওর দুটো চোখ দিয়ে লাভা বের হচ্ছে।এতক্ষণ নিজেকে যথাসম্ভব সংযত রেখে রঞ্জিতের সাথে কথা বলেছে।কিন্তু এখন আর পারলো না।
-তুমি নিজেকে বাবা দাবি করো,আদৌ কি তুমি বাবা হয়ে উঠতে পেরেছো?বাবা মানে কি শুধুই ভরণপোষণের দায়িত্ব পালন করা!আর কিছু না?

-তুমি কি বলতে চাইছো আহসান?তুমি আমার বাবা হওয়া নিয়ে সন্দেহ করছো?কিসের অভাব দিয়েছি আমি তোমায়?
-কিসের অভাব দাওনি বলতে পারো?তুমি ছোট থেকে আমায় বিলাসিতার পাঠ পড়িয়ে এসেছো।কিভাবে বিলাসবহুল বাড়ি,গাড়ির মালিক হতে হয় তা শিখিয়েছো।নিজের থেকে গরীব লোকেদের অবজ্ঞা,তুচ্ছতাচ্ছিল্য,অপমান করতে শিখিয়েছো।মানুষকে কিভাবে পায়ের তোলায় রাখতে হয় সেটা শিখিয়েছো।সর্বদা টাকার গরম দেখাতে বলেছো।নিজের দোষ থাকা সত্ত্বেও কারো কাছে মাথানত না করে উঁচু গলায় কথা বলতে শিখিয়েছো।এসব কি কোনো আদর্শ বাবার গুণাবলি?না মিস্টার রঞ্জিত!আপনি প্রকৃত বাবা হতে পারেননি।বাবা হতে হলে রিমির বাবাকে অনুসরণ করো।রিমির বাবা তোমার মতো বিত্তবান শ্রেণির মানুষ না হতে পারে।কিন্তু তিনি রিমিকে যে শিক্ষা দিয়েছি তা পৃথিবীর যেকোনো অমূল্য সম্পদের থেকে অধিক দামী।

-আহসাননন,,,,,রঞ্জিত বেশ জোরেই চিৎকার দিয়ে বলে ওঠে।চিৎকারের সাথে সাথে রঞ্জিতের বুকের ব্যাথা উঠে যায়।ধপ করে বসে পড়ে রঞ্জিত।অপা গিয়ে রঞ্জিতকে ধরে নিল।রঞ্জিতের এমন অবস্থা দেখে অপা নিজেকে ঠিক রাখতে পারলেন না।হাউমাউ করে কাঁদতে লাগলো।রঞ্জিতের বুকের ব্যাথাটা ক্রমশই বেড়ে চলেছে।আস্তে আস্তে রঞ্জিত তার চোখ বন্ধ করে ফেলল।আহসান আর দূরে সরে থাকতে পারলো না।রঞ্জিতের কাছে গিয়ে চেক করতে শুরু করলো।রঞ্জিত ততক্ষণে সেন্সলেস হয়ে যায়।

অপা কান্নাজড়িত গলায় বলল,কি হয়েছে তোর বাপির?চোখ বন্ধ করে ফেলেছেন কেন?উনি কিছু বলছে না কেন?
-তুমি একটু সরে দাঁড়াও। অপা সরে গেলে আহসান রঞ্জিতকে কোলে নিয়ে ছাদ থেকে নেমে আসলো।হসপিটালের সব ডক্টর আর নার্স আহসানকে ঘিরে ধরল।সবাই জিজ্ঞেস করছে স্যারের কি হয়েছে।আহসান চিল্লিয়ে বলল,হট্টগোল না করে বাপি ওটিতে নেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক।

মেঘলা আকাশ।চারিদিকে শীতল পরিবেশ।বৃষ্টি নামবে সম্ভাবত।রিকশাওয়ালা মাঝরাস্তায় রিকশা দাড় করিয়ে দিয়ে বলল,আপা নামেন সামনে আর যাইতে পারুম না।সামনে রাস্তা কাটা ওর মইদ্ধে দিয়া গাড়ি কোনো গাড়ি যাইতে পারবো না।আমি আগে থেক্কা জানতাম না এইডা।আপনি চাইলে আমার ভাড়া একটু কম দিয়েন।রিমি রিকশা থেকে নামতে নামতে বলল,ভাইয়া আরেকটু সামনে গেলে ভালো হতো আসলে আমার কাছে ভাড়া নেই।বাড়ি থেকে এক কাপড়ে বের হয়েছি।হাতে করে কিছুই আনিনি আমার ফোন ছাড়া।
-টাকা নাই তো রিকশায় উঠছিলেন ক্যান?

দেইখা তো বড়লোক বাড়ির মহিলা লাগতাছে।আর হাতে কিনা ফুটা পয়সাও নাই?
-আপনি আমার সাথে একটু সামনে চলুন আমি বাড়ি থেকে টাকা এনে দিচ্ছি।বেশি না জাস্ট সামান্য একটু পথের ব্যাপার।
-এহ!আইছে কোন থেইকা।আমি আপনার লগে যাই আর এই দিক দিয়া আমার রিকশা যেন চোরে নিয়া যায়।ভালোই কইছেন।
-আচ্ছা আমি আব্বুকে ফোন দিচ্ছি একটু ওয়েট করেন এই বলে কল লাগালো রিমি।কিন্তু ফোন বন্ধ বলছে।ওদের বাড়ির ল্যান্ডলাইনে কল দিল কিন্তু সেটাও বিজি বলছে।

-আর কতক্ষণ দাঁড়াইয়া থাকমু আপা?এতক্ষণে আরেকটা খ্যাপ মারতে পারতাম।আমার দেড়ি হইতাছে জলদি করেন।
রিমি অসহায়ের মতো করে বলল,আমার কাছে টাকা নেই ভাইয়া।কি বলবো আপনাকে আর।আমার পার্স টাও সাথে করে আনিনি।আচ্ছা আপনি কাল এখানে সকাল ৯-১০ টার মধ্যে থেকেন আমি এসে টাকা দিয়ে যাব।
-এমন কইরা অনেকেই কইছে পরে আর তাকো খোঁজ মিলে নাই।আপনি আমার টাকা দেন নইলে আমি মানুষ জন ডাকবো কইয়া দিলাম।

-আচ্ছা আমি দেখছি কি করা যায়।রিমি ওর কানে হাত দিয়ে দুলগুলো খুলতে নিল।পরক্ষণেই হাত সরিয়ে নিল।না এটা মা দিয়েছে আমায়।তারপর রিমি ওর হাতের আংটি খুলে ফেলল।ভাইয়া আপনি এই আংটি টা নেন।এছাড়া আর কোনো উপায় নেই।
রিকশাওয়ালা আংটিটা লেড়ে চেড়ে দেখে বলল,এটা তো সোনার!আমি ৭০ টাকা পাই আপনার থেইকা তার বদলে এতো দামী আংটি দিতাছেন ক্যান?

-এটাই দেওয়ার মতো ছিল ভাইয়া।আপনি যেতে পারেন আমি নাহয় এর দাম ৭০ টাকা ভেবেই দিলাম আপনাকে।এই বলে রিমি পা চালালো।রিকশাওয়ালা কিছুক্ষণ আংটিটার দিকে তাকিয়ে রিমির পেছনে ছুটলো।
-আপা হুনেন।রিমি রিকশাওয়ালার ডাকে পেছনে ফিরে দাঁড়ালো।

আপা আপনার আংটি আপনিই রাখেন।আমি কাল এইহানে আইসা টাকা নিয়া যামুনে।রিকশাওয়ালা রিমির আংটিটা ফেরত দিয়ে চলে গেল।রিমি পৈশাচিক হাসি দিয়ে বলল,সময় খারাপ গেলে পিঁপড়াও কামড়াতে চলে আসে।তবে দেখে খুশি হলাম,মনুষ্যত্ব এখনো জীবিত আছে।কিছুদূর যেতেই ঝেঁপে বৃষ্টি নামতে শুরু করল।রিমি দ্রুত পা চালালো।আম্বিয়া কলিং বেলের শব্দে দরজা খুলতে গেল।দরজা খুলতেই রিমিকে দেখতে পেয়ে একরাশ হাসি মুখ করে বলল,রিমি তুই!জন্মদিনে বাবা মার সাথে দেখা করতে এলি?কিন্তু এভাবে আধভেজা কেন?জামাই কোথায়?গাড়ি পার্ক করে আসছে নাকি?এরুপ একাধিক প্রশ্ন ছুড়ে দিল রিমির দিকে।রিমি উচ্চস্বরে কেঁদে উঠে আম্বিয়াকে জড়িয়ে ধরে।রিমির কান্না শুনে ভেতর থেকে নাজমুল বেরিয়ে আসলো।

-রিমি তুই এসেছিস!কান্না করছিস কেন?আম্বিয়া,রিমি কাঁদছে কেন?
-জানি না সেই থেকে কাঁদছে।কিছুই বলছে না।
-ওকে বসতে দাও আগে।
রিমিকে বসিয়ে দিয়ে আম্বিয়া আবার জিজ্ঞেস করে কি হয়েছে বল?জামাইয়ের সাথে ঝগড়া করে এসেছিস?
রিমি ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বলল,না উনি কিছু করেননি।ওনার বাবা আমাকে ওই বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে।
-কিসব বলছিস?বের করে দিয়েছে মানে?তুই কি এমন করেছিস যে বের করে দিয়েছে?
-আমি কিছুই করিনি মা।

-তাহলে এমনি এমনি তো আর বের করে দেয়নি।সত্যি করে বল কি হয়েছে।নিশ্চয়ই তুই বেয়াদবি করেছিস বেয়াই সাহেবের সাথে তাই রাগ করে বের করে দিয়েছে! জামাই কোথায়?

-তুমি একটু থামবে আম্বিয়া!সবসময় মেয়ের দোষ দেখবে না বলে দিলাম।আমার রিমি মোটেও বেয়াদবি করার মতো মেয়ে না।
-তাহলে এমনি এমনি কি তোমার মেয়েকে বের করে দিয়েছে নাকি?ছি ছি এবার মান সম্মান সব যাবে দেখছি।
-তুমি সবসময় মান সম্মান নিয়েই থাকো।রিমি তুই বল কি হয়েছে?রিমি কান্না থামিয়ে বিয়ের পর থেকে ওর সাথে যা যা হয়েছে সব কিছু এক এক করে বলতে লাগলো।সব শুনে আম্বিয়া বলে ওঠে,তোকে বের করে দিল আর আহসান কিছুই বলল না!

-উনি আমার হয়ে প্রতিবাদ করেছে।আমার সাথে চলে আসতেও চেয়েছিল কিন্তু আমি মানা করে দিয়ে চলে আসি।
-শ্বশুর দু এক কথা কি বলল ওমনি চলে এলি!এক্ষুনি ফেরত যা বলছি।চল আমি তোকে দিয়ে আসবো।
-একদম না।আমার মেয়ে কোথাও যাবে না।এখানেই থাকবে।যে যাই বলুক আমাদের,আমি আমার মেয়েকে আর ওই বাড়িতে পাঠাবো না।আমার জীবন থাকতে তো না ই।

-তুমিও পাগল হয়ে গেলে মেয়ের মতো!
-হুম আমি পাগল হয়ে গিয়েছি।আমার মেয়ে মিডিলক্লাস ফ্যামিলির বলে কি ও মানুষ না?আমরা কি গরু ছাগল?নাকি গন্ডারের মতো চামড়া মোটা যে আমাদের কোনো প্রকার অপমান গায়ে লাগবে না?বলো কোনটা?
-শান্ত মাথায় ভাবো।জামাই কিন্তু মেয়েকে চলে আসতে বলেনি।জামাই যদি তার স্ত্রীকে ধরে রাখে তো ওর শ্বশুর আর কিবা করতে পারবে!

-আমি বুঝতে পারছি না আম্বিয়া তুমি এতো সব শোনার পরও এই কথাটা কিভাবে বলতে পারো?আমি মনে করি ওই অহংকারী লোকটাকে দেখিয়ে দিতে হবে যে মিডিলক্লাস ফ্যামিলিরাও মানুষ।তাদেরও আত্মসম্মান আছে।আমি জেনে শুনে আবার রিমিকে অপমানের মুখে ফেলে দিতে পারিনা।এভাবে সব মুখ বুজে মেনে নিতে নিতে মেয়েটা আমার ডিপ্রেশনে চলে যাবে।সেটা কি তোমার ভালো লাগবে?

-তোমরা আমাকে নিয়ে ঝগড়া করো না।মার যদি আমাকে নিয়ে সমস্যা হয় তাহলে আমি চলে যাচ্ছি।
-বাবার মতো উল্টোটাই বুঝলি তুইও।আমি কি একবারও তা বলেছি?ধুর আমার কথাটা কেউ বুঝতেছেই না।তোমরা যা ভালো বোঝো করো আমি গেলাম।আম্বিয়া রাগে গিজগিজ করতে করতে চলে গেলেন।রিমিকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে নাজমুল রুমে দিয়ে আসলো।রিমি দরজাটা লাগিয়ে গলা ফাটিয়ে কান্না করতে লাগলো।তবে ওর কান্না রঞ্জিতের করা অপমানের জন্য না।আহসানের জন্য।রিমি চার হাত পা ছড়িয়ে ফ্লোরে বসে পড়ে।

-আমি আপনাকে বলতে পারলাম না আমিও আপনাকে ভালবাসি।আমিও আপনাকে ভালবাসি আহসান।কিন্তু সব কিছু কিভাবে এলোমেলো হয়ে গেল।আমি যে আর কখনো আপনার কাছে যেতে পারবো না আহসান।আমার খুব কষ্ট হচ্ছে আপনার থেকে দূরে চলে এসে।আমি কি পারবো আপনাকে ভুলে থাকতে?না পারলেও আমাকে যে পারতে হবে।আপনার বাবাকে দেখিয়ে দিতে হবে মিডিলক্লাস ফ্যামিলির মানুষ কারো উপর নির্ভরশীল না।মিডিলক্লাস হলেও আমরা আমাদের সম্মান এবং ভরণপোষণ নিজেরাই করতে পারি।জানি খুব কঠিন লড়াই এটা।কিন্তু যতই কঠিন লড়াই হোকনা কেন,আমি জয়ী হবোই।আমার বাবা মায়ের জন্য হলেও আমি লড়বো।একদিন আমি সবাইকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেব যে অর্থ নয় যোগ্যতা এবং আত্মসম্মানই আসল সম্পদ।আমাকে পারতেই হবে!

ভোরের দিক দিয়ে আহসান ওটি থেকে বাহিরে বেরিয়ে আসলো।এক রাতেই আহসানের উপর দিয়ে বিশাল এক ঝড় বয়ে গেল।একজন মানুষের চেহারায় পরিবর্তন আনতে একটা নির্ঘুম রাতই যথেষ্ট।আহসানের চোখ মুখ রক্তশুন্য প্রায়।ওটির বাহিরে সারিবদ্ধ চেয়ার।অপা সারারাত চেয়ারে বসেই কাটিয়ে দেন।ওনাকে ঘুমানোর জন্য আলাদা একটা ক্যাবিন দেওয়া হয়।কিন্তু উনি সেখানে যাননি।আহসানের থেকে অপার অবস্থা কম নাজেহাল না।চোখের পাতা বেশ মোটা হয়ে আছে তার।বোঝাই যায় রাতটা তার কান্নার সাগরে নিমজ্জিত ছিল।আহসানকে দেখে অপার মনের ভেতর টা যেন বারি মেরে ওঠে।এক মুহুর্ত বসে না থেকে আহসানের কাছে গেল।

-কি হয়েছে তোর বাপির?উনি ঠিক আছে তো?
-অতিরিক্ত উত্তেজিত হওয়ায় বাপির হার্টঅ্যাটাক হয় গতকাল।তবে চিন্তা করো না।আলহামদুলিল্লাহ বাপি এখন ভালো আছে।
-হার্টঅ্যাটাক! আমি ওনাকে একটু দেখে আসি নইলে আমার বুকের ভেতর টা শান্ত হবে না।
-এখন না।বাপি রেস্ট নিচ্ছে।তুমি চলো কিছু খেয়ে নেবে।
-আগে তোর বাপি জেগে উঠুক তারপর।

-না আগে তুমি খাবে।আমি একজন নার্সকে বলছি তোমার খাবার দিয়ে যাবে।ততক্ষণ তুমি ক্যাবিনে গিয়ে বসো।
-আমাকে খেতে বলছিস,অথচ তুই নিজে খেয়েছিস তো?
-আমি খেয়েছি।তুমি যাও আমার একটা কাজ আছে।

-দাঁড়া!আমি তোর মা বুঝলি?পেটে ধরেছি তোকে।আমার চোখে ধূলো ছোড়া এতো সহজ নয়।কখন খেয়েছিস তুই?ঘুমের মধ্যে?ঘুমের মধ্যে খেতে হলে ঘুমটাও তো আসা লাগবে!তোর চোখ মুখ বলছে রাতে মনের ভুলেও এক মুহুর্তের জন্য হলেও চোখ লাগাসনি। আমি ক্যাবিনে গিয়ে বসছি তুই আসলে তারপরই খাব আমি।

-জেদ করো না মম।আমি ফ্রি বসে নেই।সময় বের করে খেয়ে নেব।
-সময় নেই নাকি মন নেই?আমি সব বুঝি।রিমির জন্য খারাপ লাগছে তাইনা?
আহসান চোখের কোণে জমে থাকা পানি মুছে নিল।তারপর বলল,রিমিকে আমি ফিরিয়ে আনবো মম।যতক্ষণ না ও আবার আমার কাছে ফিরে আসছে,ততক্ষণ এক ফোঁটা পানিও স্পর্শ করবো না আমি।খুব হার্ট হয়েছে রিমি।আমি কেমন হাসবেন্ড?নিজের স্ত্রীকে ধরে রাখতে পারলাম না।আমি নিজেকে কষ্ট দিয়ে প্রায়শ্চিত্ত করতে চাই মম।

-খুব ইন্টেলিজেন্ট আমার ছেলে!তুই কি ভাবছিস নিজেকে কষ্ট দিয়ে রিমির কষ্ট দূর করবি?না এতে রিমির কষ্ট কমবে না বরং বেড়ে যাবে।এসব ফালতু চিন্তা ঝেড়ে ফেল মাথা থেকে।আমি গেলাম।তোর যদি আমাকে নিয়ে সামান্য পরিমাণ দুশ্চিন্তা থেকে থাকে,তাহলে ক্যাবিনে এসে খেয়ে যাবি আর আমাকে খাইয়ে দিবি।কথাটা বলে এক চলে গেলেন অপা।

কথামতো রিমি ঠিক ৯টার সময় রিকশাওয়ালা টাকা দেওয়ার জন্য ওয়েট করতে থাকে রাতের সেই জায়গাটায়।কিছুক্ষণ পর রিকশাওয়ালা চলে আসল।রিমি ঋণ সোধ করে ওই রিকশা করেই কলেজে আসল।রিমি আসার পর থেকে কলেজ টা আগের তুলনায় অনেক বেশি সুশৃঙ্খল হয়ে গেছে।আগে ছেলেমেয়েরা টিচার্সদের সাথে বেয়াদবি করতো।এখন আর করে না।ছাত্রী ছাত্রীরা ফোন এনে টিকটক লাইকি নামক অ্যাপে ভিডিও বানাতো তাও আবার শিক্ষকের সামনে ক্লাস চলাকালীন।রিমির কানে কথাটা যাওয়া মাত্র ও সেসব স্টুডেন্টসদের সারিবদ্ধ করে দাড় করায় মাঠে।

ছেলেদের ও মেয়েদের লাইন আলাদা রাখে।তারপর সকলকে বাদরের মতো লাফাতে বলে।থেমে গেলেই লাঠির বারি।টানা তিন ঘন্টা বাদর লাফানি খেয়ে স্টুডেন্টসরা টিকটক লাইকিতে লাফালাফি করা দূরে থাক বৃষ্টি দিনে রাস্তায় ছোট খাটো গর্ত দেখলেও লাফ দেয়না।এক কথায় কলেজের সকল ছাত্র/ছাত্রী রিমিকে বাঘিনীর মতো ভয় পায়।যদি কোনো টিচার কোন স্টুডেন্ট দ্বারা বিরক্ত হয় তবে তারা প্রিন্সিপালের কাছে না গিয়ে রিমির কাছে যায়।কারণ তারা জানে রিমিই পারবে বাঁকা লেজ সোজা করতে।সামির এখন খুব মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করছে।শুধু কলেজে নয়,বাড়িতেও সে সবসময় বই নিয়ে পড়ে থাকে এখন।

তোলপাড় পর্ব ৩৫+৩৬+৩৭

প্রিন্সিপাল কলেজের ডাকপিয়নকে দিয়ে রিমির কাছে খবর পাঠালো প্রিন্সিপালের রুমে যাওয়ার জন্য।রিমি ক্লাস শেষ করে প্রিন্সিপালের রুমে পৌঁছালো।
-মিসেস রিমি তালুকদার!আপনি তো কলেজে পা রাখার পর থেকে কলেজের নকশাই বদলে গেছে।আই এম ইম্প্রেসড।
রিমি হালকা হাসলো।
-দোয়া করবেন স্যার আমার জন্য।

-অবশ্যই।আমার তো এটা ভেবে আশ্চর্য লাগছে আপনি আমার বিগড়ে যাওয়া ছেলেটাকে এতো কম সময়ে কিভাবে সঠিক পথে নিয়ে আসলেন?আপনি আপনি কি ম্যাজিক জানেন?
-কি যে বলেন স্যার!আমি জানি না আমি ম্যাজিক জানি কিনা।তবে যাই করি বা ভাবিনা কেন নিজের লক্ষ্য সামনে রেখে করি।আর আল্লাহর উপর ভরসা রাখি।তিনিই আমাকে সঠিক পথ দেখান।
-চমৎকার কথা।আপনি এভাবেই নিজের দায়িত্ব পালন করে যান।আর একটা কথা,আমার সামিরকে কিন্তু এবারের এক্সামে পাশ করাতেই হবে আপনাকে।

-চ্যালেঞ্জ যখন একসেপ্ট করেছি আমি নিজের সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে চেষ্টা করবো।
-আই লাইক ইওর স্পিরিট।আপনি যদি এই ইম্পসিবল কাজটা পসিবল করতে পারেন, তাহলে আমিও নিজের কথা রাখবো।এই কলেজের অর্ধেক শেয়ার আপনি পাবেন।আর আপনি হবেন এই কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল।
-দোয়া করবেন আমার জন্য।

তোলপাড় পর্ব ৪১+৪২+৪৩