নেশাক্ত ভালোবাসা পর্ব ৩০

নেশাক্ত ভালোবাসা পর্ব ৩০
লেখিকাঃ Tamanna Islam

আব্রাহাম দ্রুত গতিতে ব্রেক কষে। তারপর সিট বেল্ট টা খুলে গাড়ির বাইরে বের হয়ে পরে। আর বের হতেই আব্রাহাম অবাক। সে তার হাত দিয়ে কপালে স্লাইভ করতে থাকে। কেননা আব্রাহাম বের হয়েই দেখে একটা মেয়ে নিচে পায়ে হাত দিয়ে বসে আছে। চুল গুলো সব মুখে আছড়ে পরেছে যার ফলে মুখ ঠিক ভাবে দেখাও যাচ্ছে না। আব্রাহাম এখন এই ভাবছে যে শেষমেষ সে কিনা একটা মেয়ের এক্সিডেন্ট করলো। যাই হোক আব্রাহাম মেয়েটার দিকে সামান্য ঝুকে হাত বাড়ায়।

আব্রাহাম;; হে হ্যালো, আর ইউ অলরাইট?!
আব্রাহামের ডাকে মেয়েটা ঝট করে মাথা তুলে ওপরে তাকায়। আব্রাহাম দেখে সেটা আইরাত। আক্কেলগুড়ুম অবস্থা। কি করবে কি বলবে ভেবে পায় না। আর আইরাত তো ভেবেছিলো সে এতো রাতে এমন ষাড়ের মতো করে যে গাড়ি চালাচ্ছিলো তাকে আচ্ছা মতো ধুলাই করবে এখন। কিন্তু তা আর হলো কই। উপরে তাকিয়ে দেখে আব্রাহাম। আইরাতের সব রাগ যেন এবার পানি হয়ে গেলো। উল্টো ভয় লাগছে৷ কেননা আব্রাহাম এবার রাগারাগি করবে।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

আর সেটা তার মুখ দেখেই বুঝা যাচ্ছে। আইরাত ঠোঁট দুটো উল্টিয়ে দিয়ে সেখানে রাস্তা তেই পরে আছে। আর আব্রাহাম এক ভ্রু উঁচু করে দুই হাত ভাজ করে সোজা হয়ে দাঁড়ায়। কতোক্ষন আইরাতের দিকে তীক্ষ্ণ নজরে তাকিয়ে থাকে। আইরাত একবার মাথা তুলে আব্রাহামের দিকে তাকায় যখন দেখে যে আব্রাহাম রাগি ভাবে তাকিয়ে আছে তখন আবার মাথা নিচে নামিয়ে ফেলে। আব্রাহাম এবার এক পা ভাজ করে আইরাতের সামনে বসে পরে। আইরাত মাথা টা যেন আরো নিচে নামিয়ে ফেলে।

আব্রাহাম;; এই মেয়ে এতো রাতে বাইরে কি করো?
এইতো হলো আইরাত আগেই ভেবেছিলো যে এখন এই প্রশ্ন টাই আব্রাহাম করবে। ঠিক তাই হলো। আইরাত কাচুমাচু করতে করতে বলে ওঠে…
আইরাত;; না মানে ইয়ে আমি না আসলে…
আব্রাহাম;; না মানে ইয়ে আসলে এগুলো ঘোড়ার ডিম বাদ দিয়ে আসল কথায় আসো।
আইরাত;; দিয়ার বাড়িতে যাচ্ছিলাম।
আব্রাহাম;; কেন?

আইরাত;; নোটস নিতে আর বাড়িতে আমি একা। একা একা আর কি করবো দিয়া ফোন দিয়ে বললো চলে আসতে তাই যাচ্ছিলাম। কিন্তু রাস্তায় এক লেজ কাটা বাদরের সাথে দেখা৷
আব্রাহাম;; হুয়াট?
আইরাত;; কিছু না কিছু না।
আব্রাহাম;; আগেই বলছি না যে নোটস নিতে বাইরে যেতে হবে না। স্যার কে বললে সে নিজেই এসে বাসায় দিয়ে যাবে।
আইরাত;; ধুর আমি ব্যাথা পেয়েছি পায়ে। হেল্প করুন।
আব্রাহাম;; আমি এমনি কোন মেয়ে কে হেল্প করি না।
আইরাত;; কিহহ, আমি এমনি কোন মেয়ে?!
আব্রাহাম;; হ্যাঁ, এখন যেভাবে এসেছো সেভাবেই বাসায় যাও। বায়

এই বলেই আব্রাহাম সুন্দর করে তার গাড়িতে উঠে চলে গেলো। আইরাতের সামনে দিয়েই গিয়েছে। আইরাত শুধু ছলছল দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলো। আব্রাহাম এমন টা করতে পারলো তার সাথে। এবার সত্যি আইরাতের বেশ কান্না পাচ্ছে। আব্রাহাম তো গাড়ি নিয়ে সাই করে চলেই গেলো। কিন্তু এদিকে আইরাতের নিজের কাছে নিজেকেই কেমন অসহায় লাগছে। ডান পা টা মচকে গেছে। আইরাত সামনে তাকিয়ে দেখে রাস্তায় কতোগুলো কুকুর দাঁড়িয়ে আছে। কুকুর গুলো কে দেখে আইরাত আরো ভয় পেয়ে যায়। কোন রকম করে উঠার চেষ্টা করে কিন্তু আবার নিচে পরে যায়।

এবার আইরাত হু হু করে কেদেই দিলো। পায়ে ভালো ব্যাথা পেয়েছে৷ দুই মিনিটেই কেদে কেদে নাক-মুখ সব লাল করে ফেলেছে। আইরাত কোন রকমে আবার উঠে দাড়ানোর চেষ্টা করে কিন্তু তখন আবার হুড়মুড় করে পরে যেতে ধরলে নিজের কোমড়ে কারো শীতল হাতের স্পর্শ পায়। মূহুর্তেই নিজেকে শূন্যে অনুভব করে। তাকিয়ে দেখে আব্রাহাম। আব্রাহাম কে দেখে আইরাত যেন তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠে। আব্রাহামের কোল থেকে নামার জন্য ছটফট করেই যাচ্ছে। আব্রাহাম দাত কটমট করে তাকায়। কিন্তু এবার আইরাত ভয় পায় না বরং রেগে বলে ওঠে…
আইরাত;; হয়েছে নামান আমাকে। প্রথমে ছেড়ে চলে গিয়ে এখন এসে আবার দরদ দেখাতে হবে না। নামান আমাকে।
আব্রাহাম;; ছেড়ে যাবার তো প্রশ্নই আসে না।

আইরাত;; আমি বাসায় যাবো ছাড়ুন।
আব্রাহাম;; এই পা নিয়ে বাসায় যাবে। বাড়িতে দিয়ে আসবে কে এই কুকুর গুলো নাকি!?
আইরাত;; ফাইজলামি করেন। আমি একাই যেতে পারবো। ছাড়ুন তো সবসময় ভালো লাগে না।
আব্রাহাম;; এখন যদি বেশি বাচাল গিরি করেছো তো এই যে দিলাম ফেলে দিলাম।
আব্রাহামের হাত গুলো হালকা হয়ে এলেই আইরাত আবার আব্রাহামের শার্টের কলার খামছে ধরে।
আব্রাহাম;; কেন কি হয়েছে নামবে নাকি। তো নামিয়ে দেই নামো।
আইরাত;; আমার পায়ে ব্যাথা, আপনি ব্যাথা দিয়েছেন।
আব্রাহাম;; হাহ, দুই মিনিটেই নাক-মুখ সব লাল বানিয়ে ফেলেছে টমেটোর মতো।
আব্রাহাম আইরাতকে কোলে তুলে নিয়ে গিয়ে গাড়িতে বসিয়ে দেয়। তারপর যেতে থাকে। আইরাতের বাড়ি পার হয়ে গেলে আইরাত দ্রুত আব্রাহাম কে জিজ্ঞেস করে…

আইরাত;; এই, এই, আমরা কোথায় যাচ্ছি?
আব্রাহাম;; বাড়িতে!
আইরাত;; কিন্তু কার?
আব্রাহাম;; তোমারই বলতে পারো।
আইরাত;; আপনার বাসায় যাচ্ছি?
আব্রাহাম;; হুম (ড্রাইভ করতে করতে)
আইরাত;; আরে না না আমার বাসায় যেতে হবে। বাড়ি পুরো ফাকা৷
আব্রাহাম;; হ্যাঁ সেখানে আজ ভূত-প্রেত দের নাইট পার্টি হবে।
আইরাত;; আরে ধুর।

আব্রাহাম;; তোমার চাচা-চাচি কোথায়?
আইরাত;; চাচির মা অসুস্থ তো তারা সবাই ওখানে গিয়েছেন। হয়তো কিছুদিন থাকবে।
আব্রাহাম;; ওহহ তাহলে তো হয়েই গেলো।
আইরাত;; না না হয় নি আমি আমার বাসায় যাবো।
আব্রাহাম;; এই চুপ। আর হ্যাঁ দিয়া কে ফোন করে বলে দাও যে তুমি যাচ্ছো না ওর বাসায়।

আইরাতের আর কি দিয়া কে ফোন করে না ই করে দিলো। আব্রাহাম তার বাড়ির সামনে গাড়ি থামায়। আইরাত খেয়াল করলো যে এই সময়ে আব্রাহামের বাড়ির আশে পাশে বেশ গার্ড রয়েছে। সাধারণত এতো গার্ড থাকে না কিন্তু আজ অনেক বেশিই। তাদের হাতে রয়েছে আবার বিশাল আকৃতির বড়ো বড়ো অস্ত্রসস্ত্র। আব্রাহাম গাড়ি থেকে নেমে আইরাতের পাশে গিয়ে দরজা খুলে দিলো। তারপর আবার কোলে তুলে নেয়,, এক পা দিয়ে গাড়ির দরজা কোন রকমে লাগিয়ে সোজা বাড়ির ভেতরে চলে যায়। আইরাত কে কোলে করে নিয়েই সোজা আব্রাহাম তার রুমে চলে যায়। আইরাত কে বিছানাতে বসিয়ে দেয়। আব্রাহাম গিয়ে তার জেকেট টা খুলে ফেলে শার্টের হাতা ফোল্ড করতে করতে বলে ওঠে….
আব্রাহাম;; পা টা ভালোই মচকে গেছে। কি দরকার ছিলো এতো রাতে বাইরে বের হবার। বেশি বুঝো।

আইরাত;; আপনার দাদি কোথায়?
আব্রাহাম;; রুমে মেডিসিন নিয়ে ঘুমাচ্ছে হয়তো।
এই বলেই আব্রাহাম তার ফোনটা বের করে কাকে যেন ফোন করে। কিছুক্ষন কথা বলে ফোন কেটে দেয়। তারপর আইরাতের পাশে বসে।
আব্রাহাম;; ডক্টর কে ফোন করেছি জলদি এসে যাবে৷
আইরাত;; অযথা এতো মেহনত করছেন। তার চেয়ে আমাকে বাসায় দিয়ে আসতেন।
আব্রাহাম;; বাসায় গিয়ে এই মোচকে যাওয়া পা নিয়ে কি তুমি এক্কা-দোক্কা খেলতে নাকি। (রেগে)
আইরাত;; ?

কিছুক্ষন পর বাসায় এলো রকজন মহলা ডাক্তার।
নীলিমা;; মিস্টার. আব্রাহাম চৌধুরী কেমন আছেন?
আব্রাহাম;; আলহামদুলিল্লাহ ভালোই। আপনি?
নীলিমা;; জ্বি ভালো।
আব্রাহাম;; ডক্টর প্লিজ চেক হার আউট। ডান পা মোচকিয়েছে।
নীলিমা;; ওকে।

নীলিমা কোন রকম করে পা টা দেখে, কেননা পা তে হাত পর্যন্ত লাগাতে দিচ্ছে না আইরাত। ব্যাথা অনেক। তবুও ডক্টর দেখে একটা মলম আর একটা পেইন স্প্রে দিয়ে চলে গেলো।
আইরাতের আজ এখানেই থাকতে হবে। যদিও আইরাত চাইছিলো না কিন্তু আব্রাহাম ছাড়বে না। হঠাৎ আব্রাহামের মাথায় একটা বুদ্ধি আসে। সে আইরাতের পাশে বসে পরে…
আব্রাহাম;; আচ্ছা বেবিগার্ল!
আইরাত;; হুমম
আব্রাহাম;; একটা প্রশ্ন ছিলো।
আইরাত;; জ্বি বলুন না।

আব্রাহাম আইরাতের ডান পায়ে হাত রাখে আর আইরাত তাড়াতাড়ি করে বলে ওঠে…
আইরাত;; এই না না আপনি আমার পায়ে হাত দিচ্ছেন কেন?
আব্রাহাম;; যখন সম্পূর্ণ তুমি টাই আমার। তখন এটা তো শুধু পা মাত্র।
আইরাত;; আচ্ছা কি যেন প্রশ্ন আছে না,বলুন।
আব্রাহাম;; হুম হুম। আচ্ছা বলো তো দুই আর দুই যোগ করলে কখন পাঁচ হয়??
আইরাত;; ??

আইরাত আব্রাহামের প্রশ্নে মগ্ন ছিলো। আর আব্রাহাম আলতো হাতে আইরাতের পা ধরে আছে। আইরাত তো নিজের মতো করে ভেবেই যাচ্ছে। আব্রাহাম একটু বাকা চোখে আইরাতের দিকে তাকায়। দেখে আইরাত কপাল কুচকে ভাবছে। এই সুযোগেই আব্রাহাম আইরাতের পায়ের যেখানে ব্যাথা ঠিক সেখানে আর তার বিপরীত পাশে দুই হাত দিয়ে ধরে জোরে দেয় এক টুইস্ট করে। টাস করে শব্দ হয়। আর আইরাত চিৎকার করে ওঠে।
আব্রাহাম;; আস্তে

আইরাত;; ও মা রে এই আপনি কি করলেন আল্লাহ ?
আব্রাহাম দুই হাত ভাজ করে আইরাতের দিকে তাকিয়ে আছে। আইরাত তার পায়ে হাত দিলো আর দিতেই অবাক। সে এখন তার পা নাড়াচাড়া করতে পারছে। পায়ে হাত দিয়েই অবাক হয়ে আব্রাহামের দিকে তাকায়।
আব্রাহাম;; কি ব্যাথা আছে?
আইরাত;; এহ, মানে না নেই। কিন্তু এটা কীভাবে হলো।
আব্রাহাম;; আমাদের হাতে পায়ে কিছু স্যান্সিটিভ হাড়-গোড় থাকে। সেগুলো তে প্রেসার পরলে খুব সহজেই চোট পাওয়া যায় আবার খুব সহজেই চোট থেকে আরামও পাওয়া যায়। শুধু তার অপজিট সাইডে ধরে এঙেল ঘুড়িয়ে হালকা ভাবে চাপ দিলেই হয়। (ড্রয়ার থেকে কাপড় বের করতে করতে)

আইরাত;; এটা হাল্কা চাপ ছিলো?!
আব্রাহাম;; অবশ্যই হাল্কা ছিলো।
আইরাত;; ওও আমি না আপনার মতো এতো বডিবিল্ডার না ওকে।
আব্রাহাম;; ওহ হ্যাঁ,, ভুল করলে৷
আইরাত;; কি ভূল করলে?
আব্রাহাম;; “ভূল করলেই” একমাত্র দুই আর দুই যোগ করে পাঁচ হয়।
আইরাত;; ওহহ আচ্ছা।
আইরাত সেখানেই বসে ছিলো। আব্রাহাম এবার আইরাতের সামনে এক বাটি সুপ নিয়ে আসে। চামচে সুপ তুলে আইরাতের সামনে ধরে। আইরাত মুখ ঘুড়িয়ে নেয়।
আব্রাহাম;; খাও, এটা ভালো হবে তোমার জন্য।
আইরাত;; খাবো না।

আব্রাহাম;; আইরাত বেবি ভালোই ভালোই বলছি খেয়ে নাও।
আইরাত;; ইচ্ছে নেই, খাবো না।
আব্রাহাম;; খাবে না?
আইরাত;; না
আব্রাহাম;; খাবে না?
আইরাত;; না না না।
আব্রাহাম;; অলরাইট৷

এই বলেই আব্রাহাম উঠে নিজের শার্টের বোতাম গুলো খুলতে খুলতে আইরাতের কাছে আসতে লাগলো। চোখ গুলো আইরাতেই স্থির। আইরাতের কাছে আসছে আর এক হাত দিয়ে শার্টের বাটন গুলো খুলেই চলেছে। আব্রাহামের এমন ভাবে এগিয়ে আসা দেখে তো আইরাতের গলা শুকিয়ে গেলো।
আইরাত;; আ আ আপনি এভাবে এ এ এগিয়ে আসছেন ক কেন?
আব্রাহাম;; তুমিই না বললে খাবার খাবে না। তাই!

আইরাত;; তাই কি?
আব্রাহাম;; তাই এখন আমি তোমাকে খাচা চিবিয়ে খাবো।
আইরাত;; কি? এই না না
আব্রাহাম;; না বেবিগার্ল এখন না বললে তো হয় না।
আইরাত;; এই না না মানে হ্যাঁ আমি খাবো সুপ খাবো। আপনি প্লিজ এগোবেন না আর প্লিজ বোতাম গুলো লাগিয়ে নিন প্লিজ।
আব্রাহাম;; ঘি সোজা আঙুলে না বের হলে আঙুল বাকা করতেই হয়।
আইরাত;; ?

আব্রাহাম আইরাতকে খাইয়ে দেয়। খাওয়ানো শেষ হলে আব্রাহাম প্লেট গুলো নিয়ে নিচে চলে যায়। সেভাবেই কিছুক্ষণ বসে থাকতে থাকতে কখন যে আইরাত ঘুমিয়ে পরেছে তা সে নিজেও জানে না। আব্রাহাম ফ্রেশ হতে চলে যায়। একটা কালো কালারের টাওজার আর সাদা কালারের টি-শার্ট পরে চুল মুছতে মুছতে বের হয়ে আসে। এসেই দেখে আইরাত ঘুমিয়ে পরেছে হেলান দিয়েই। আব্রাহাম টাওয়াল টা রেখে দিয়ে আইরাতের কাছে আসে। এসেই তার দিকে ঝুকে পরে দুই পাশে হাত দিয়ে। আইরাতের সারা মুখে আব্রাহামের চোখ গুলো বিচরন করে চলেছে। চুল গুলো মুখের সামনে এসে পরেছে। আব্রাহাম হাত দিয়ে সেগুলাও তার কানের পেছনে গুজে দেয়। আইরাতের কপালে চুমু একে দেয়। তারপর আইরাতকে শুইয়ে দেয়। চাদর টা বুক অব্দি টেনে দেয়। তারপর আইরাতের পাশে তার হাত ধরে বসে পরে আব্রাহাম। আইরাতের দিকে তাকিয়ে তার হাতে উলটো পাশে একের পর এক চুমু দিয়েই যাচ্ছে৷ এভাবেই সারারাত পার হয়ে যায়।

পরেরদিন সকালে চোখ খুললে আইরাত আব্রাহাম কে নিজের বিছানা পাশে দেখেতে পারে। সে বুঝে যে সারা রাত আব্রাহামের এভাবেই কেটে গেছে৷ আইরাত উঠে পরে। সে তার হাত টা আব্রাহামের দুই হাতে ভাজে খুঁজে পায়। আইরাত আব্রাহামের দিকে এক নয়নে তাকিয়ে ছিলো। আব্রাহামের চুল গুলো তার কপালে এসে পরেছে। সকালের একদম স্নিগ্ধ একটা মুখ। সাদা আর কিছুটা লাল আভায় ভরে এঠেছে মুখ টা৷ একটা মানুষ এতো টা সুন্দর হয় কীভাবে। ছেলের এতো সুন্দর হতে নেই। আব্রাহামের এই ইনোসেন্ট মুখ খানা দেখে কেউ মনে করবে যে এই ছেলে টাই এতো টা ভয়ানক আর সাইকো। কে যেন ঠিকই বলেছে ” মানুষের চেহারা দেখে বা বাহ্যিক রুপ দেখে ভেতরের কোন কিছুই আন্দাজ করা যায় না “। এভাবে থাকতে থাকতে হুট করেই আইরাত তার হাত টা তুলে আব্রাহামের চুল গুলো গুছিয়ে দিতে থাকে। আব্রাহামের আরেকটু কাছে যায়। আব্রাহামের দিকে তাকিয়ে থাকে৷ এভাবে তাকিয়েই ছিলো আইরাত আর তৎক্ষণাৎ আব্রাহাম ফট করে তার চোখ মেলে তাকায়। আইরাত চমকে ওঠে আর দ্রুত আব্রাহামের থেকে কিছুটা দূরে সরে আসে।

আব্রাহাম;; এটা কি ছিলো?
আইরাত;; কিছুই না।
আব্রাহাম;; হুম হুম বুঝি। আমি নিচে যাচ্ছি উঠে ফ্রেশ হও।
আব্রাহাম এই বলেই চলে গেলো আর আইরাত তার মুখে পানির ছিটা দেয়। আইরাত নিচে হলরুমে যায়। আব্রাহামের দাদির সাথে দেখা হয়। অনেক কথা বলে। তারপর একটা সময় পর আব্রাহাম আইরাতকে তার বাসায় দিয়ে আসে। আইরাতের পা এখন অনেক টাই ভালো। আসলে পুরোপুরিই ভালো। আইরাত বসে ছিলো তখন হঠাৎ ইকবালের ফোন আসে।

আইরাত;; হ্যালো চাচ্চু!
ইকবাল;; কিরে মা তুই কি কিছু করেছিস নাকি মানে ওই যে অন্তু দের সাথে?
ইকবালের কথা শুনেই আইরাত তার দাত দিয়ে জিভ কাটে। হকচকিয়ে যায়।
আইরাত;; কি যে বলো না চাচ্চু। আমি আবার কি করতে যাবো। কিছুই না। কিছুই করি নি আমি। কেন কি হয়েছে?
ইকবাল;; না মানে ওরা বললো জীবন প্রিয় তাই তোকে বিয়ে করবে না।
আইরাত;; (আইরাত হাসি থামাতে না পেরে মুখে তার ওরনা চেপে হাসছে)

নেশাক্ত ভালোবাসা পর্ব ২৯

ইকবাল;; কিরে কিছু বল!
আইরাত;; হ্যাঁ হ্যাঁ আরে চাচ্চু বাদ দাও তো ওমন একটা গেছে আরো অনেক আসবে। বাদ দাও এইসব। চাচি কোথায় রনিত কোথায়?
ইকবাল;; হ্যাঁ আছে ওরা। আর শোন আমরা আগামীকাল এসে পরবো।
আইরাত;; আচ্ছা।
আইরাত তার চাচ্চুর সাথে আরো বেশ সময় কথা বলে ফোন কেটে দেয়। বিকেল দিকে আইরাতের কাছে আবার আব্রাহামের ফোন…
আইরাত;; হ্যালো
আব্রাহাম;; বেবিগায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ার্ল!!
আইরাত;; বলুন শুনছি।

আব্রাহাম;; শুনো জলদি করে তোমার ভার্সিটির পাশের এই ক্যাফে টাতে এসে পরো।
আইরাত;; কিন্তু কেন বলুন তো?
আব্রাহাম;; আরে অনেক জরুরি কাজ আছে। তুমি এসো। আর হ্যাঁ দিয়া কেও নিয়ে এসো কিন্তু।
আইরাত;; দিয়া? কিন্তু ও কেন?
আব্রাহাম;; আরে বাবা বললাম তো কাজ আছে। তুমি আর দিয়া এসে পরো।
আইরাত;; ওকে ফাইন আসছি।
আব্রাহাম;; কাম ফাস্ট আই এম ওয়েটিং।
আইরাত ফোন কেটে দেয়। তার কিছু সময় পর দিয়া কে নিয়ে চলে যায় ক্যাফেতে।

নেশাক্ত ভালোবাসা পর্ব ৩১+৩২+৩৩