প্যারাময় লাভ পর্ব ১৯+২০+২১

প্যারাময় লাভ পর্ব ১৯+২০+২১
written Nurzahan akter Allo

রুহি ওর আম্মু সাথে গল্প করে ওর রুমে চলে আসে!তারপর রুমের দরজাটা ভালো করে লক করে দেয়।রুহি ড্রেসিং টেবিলের সামনে গিয়ে আয়নাতে নিজেকে দেখে!তারপর লজ্জা পেয়ে মুখটা দুইহাত দিয়ে ঢেকে নেয়!আজকে সকালে কথা ভেবে রুহি আরো লজ্জায় লাল হয়ে যায়!রুহি সকালে এতকিছু ভেবে কিস করে নি বাট মুগ্ধ যে এমন কি করবে সেটা রুহিও কল্পনা করে না।তখন মুগ্ধকে কিছু বলতে না পারলেও মনে মনে লজ্জা পাচ্ছিলো।রুহি মুখ থেকে হাত সরিয়ে দেওয়াল ঘড়ির দিকে তাকায়।

ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে ৩ঃ৫৮ বাজে!রুহি মুগ্ধকে ফোন দিলো।মুগ্ধ তখন চেয়ারে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে ছিলো!ফোনের রিংটোনে মুগ্ধ ফোনটা হাতে নিয়ে দেখে গুন্ডী বউ এর ফোন!মুগ্ধ রুহির নাম্বার আগে প্যারা নামে সেইভ করেছিলো! বাট কালকে রাতে #প্যারাময়_লাভ নামে সেইভ করছে!মুগ্ধর মুখে দুষ্টু হাসি নিয়ে কলটা রিসিভ করে বলে…

মুগ্ধঃ কি ম্যম আপনার কি বিরিয়ানী খেতে ইচ্ছে করছে???আমি কি বিরিয়ানী নিয়ে আসবো…
ৃ.
রুহিঃ তুমি আবার শুরু করলে! ধুর…
মুগ্ধঃহা হা হা! আচ্ছা বল কি মনে করে ফোন দিলি??বিরিয়ানী খেতে চাইলে বল আসার সময় নিয়ে আসবো।
রুহিঃ না লাগবে না!যেই বিরিয়ানী খাইয়েছো ভুলেও আর বিরিয়ানী নাম ভুলেও নিবো না।
মুগ্ধঃহা হা হা!কেন!!!
রুহিঃবাদ দাও না!একটা কথা বলার জন্য ফোন দিসি সেটা কি বলতে দিবে????
মুগ্ধঃহুমমম বল
রুহিঃনিউ মার্কেটের সামনে যেই পার্লারটা আছে না!আমি ওখানেই থাকবো তুমি ফিরার সময় আমাকে নিয়ে এসো…
মুগ্ধঃওয়েট! ওয়েট!তুই পার্লার কেন যাবি??এই মেয়েদের একটা সমস্যা বিয়ের ডেট ঠিক হতে না হতেই পার্লারের দৌড়াদৌড়ি শুরু করে দেয়।
রুহিঃতুমি কি জানো? শুধু আমি না! তুমিও একটু বেশি বুঝো!!
মুগ্ধঃথাটিয়ে একটা থাপ্পড় মারবো তখন বুববি!আর শোন পার্লারে গিয়ে চুল কাটবি না,ভ্রু প্লাগ করবি না,হাজিবাজি দিবি না ঠান্ডা লাগে।
রুহিঃ হ কিছু করবো না!শুধু অফিস থেকে ফেরার সময় আমাকে নিয়ে এসো!আমি ওখানে তোমার জন্য ওয়েট করবো।
মুগ্ধঃহুমম!বাই

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

মুগ্ধ কিছু বলার আগেই রুহি ফোন কেটে দেয়!মুগ্ধ মুচকি হাসি দিয়ে ওর কাজ শুরু করে।রুহি আয়নার সামনে দাড়িয়ে দাড়িয়ে চুলে চিরুনী করছে! আর হাসছে!কারন মুগ্ধ চুল কেটে ছোট করা একদম পছন্দ করে না! ক্লাস নাইনে থাকতে একবার রুহি পার্লার থেকে চুল কেটে এসেছিলো! সেদিন মুগ্ধ উরাধুরা মেরেছিলো!রুহি চুল কোমর পর্যন্ত যেমন কালো তেমনি ঘন!এজন্য মুগ্ধ বাইরে বের হলো রুহিকে চুল ছেড়ে বের হতে দেয় না!কারন চুল ছেড়ে রাখতে রুহি অসম্ভব সুন্দর দেখায়।

রুহি রেডি হয়ে ওর আম্মু নে বলে চলে গেল!রুহি নিজের গাড়িও নেয় নি স্কুটিও নেয় নি অটোরিকশাতে যাচ্ছে। রুহি কিছু একটা ভাবছে আর হাসছে!রুহি মনে মনে ভাবছে যে…
রুহিঃ মুগ্ধ তো দুষ্ট ছিলো না!কালকে বিয়ের পর থেকে এত লাগামছাড়া হলো কি করে??তাহলে কি বিয়ের পর ছেলেরা বেশি দুষ্টু হয়ে যায়।ধুরর!কি ভাবছি আমি!আমাকে লজ্জা দেওয়ার জন্য মনে হয় এমন করে…(মনে মনে)

এসব ভাবতে ভাবতে রুহি পার্লার চলে যায়!তারপর ঢুকে দেখে বেশ কয়েকজন আছে!রুহি সোফাতে বসে বসে ম্যাগাজিন পড়ছিলো।৩০মিঃ পর সবাই চলে যায়।মুগ্ধ পার্লারের সামনে এসে রুহিকে ফোন দেয়।রুহি মুগ্ধকে পার্লারের ভেতরে আসতে বলে!মুগ্ধ নক করে পার্লার ঢুকে দেখে রুহি বসে আছে!রুহি মুগ্ধকে ওর পাশে বসতে
বলে…রুহি মুগ্ধ ফিসফিস করে বলে…
রুহিঃসব দিকে তাকাবে বাট বাম দ
রুহি কথা শেষ না করার মুগ্ধ ফট করে বাম দিকেই তাকায়!তারপর রুহির দিকে তাকিয়ে দেখে রুহি রাগে নাক ফুলিয়ে ওর দিকেই তাকিয়ে আছে।মুগ্ধ মাথা চুলকে মাথা নিচু করে ফেলে।মুগ্ধ রুহিকে ফিসফিস করে বলছে…
মুগ্ধঃএটা জায়গাটা শুধু মেয়েদের জন্য! তাহলে আমাকে আসতে বললি কেন??আর এরা এলাও বা করলো কেন??
রুহিঃ এটা আমার পরিচয় আপুর পার্লার! তোমাকে বাম দিকে তাকাতে না করলাম বাট তুমি দুম করেই বাম দিকেই তাকালে কেন???(দাঁতে দাঁতে চেপে)
মুগ্ধঃআমি জানবো কি করে ওখানে শট টপ এভাবে সাজিয়ে রাখা আছে!
রুহিঃমনে চাচ্ছে ওই শট টপটাই তোমাকে পড়িয়ে বসিয়ে রাখি।অসভ্য ছেলে…
মুগ্ধঃছিঃ!এসব কি বলিস! তুই থাক আমি গেলাম।নিজে ডেকে এখন নিজেই আমাকে কথা শুনাচ্ছিস!

পার্লার মেয়েটা আইস আনার জন্য রুহিকে বসিয়ে একটু বাইরে গিয়েছিলো।মেয়েটা এসে রুহিকে সামনে বসতে বললো!রুহি সামনে একটা বড় আয়নার সামনের চেয়ারে বসে পড়লো!মুগ্ধ ফেসবুকিং করছিলো হঠাৎ রুহি দিকে তাকাতেই দেখে ওই মেয়েটা রুহির নাকের উপর আইস ঘষছে!মুগ্ধ ফট করে উঠে দাড়ালো আর রুহির ডানপাশে গিয়ে বললো…

মুগ্ধঃএটা আবার কেমন রুপচর্চা!আইস এভাবে ঘষলে ঠান্ডা লেগে যাবে তো।
মেয়েটিঃ এই তো হয়ে গেছে ভাইয়া!আর একটু…

মুগ্ধ ভ্রু কুচকে দাড়িয়েছে মেয়েটির কাজকর্ম দেখছে!মুগ্ধ বুঝলো রুহি এখানে নাক ফুটা করার জন্য এসেছে!মুগ্ধ রুহি না করতে তাও রুহি শোনে না কথা।
মেয়েটি পিস্তলের মত একটা জিনিস নিয়ে!রুহিকে কালকে কিনে দেওয়া নোজপিন টা ওটার সাথে সেট করলো তারপর কলম দিলে নাকে একটা ফোটা দিলো!আর সেই মেশিনটা নিয়ে ফট করে রুহির নাকে চেপে ধরলো।রুহি আগেই মুগ্ধর হাত চেপে ধরছিলো!মেয়েটি ওটা চাপ দিতেই খট করে শব্দ হলো আর রুহি একটা চিৎকুর দিয়ে উঠলো…

রুহির চোখ দিয়ে ঝরঝর করে পানি পড়ছে!মুগ্ধ রুহিকে দেখে সাথে ওর দিকে চেয়ার ঘুরিয়ে!
মুগ্ধঃবেশি ব্যাথা পেয়েছিস?লাগছে বেশি?তোকে কে বলছে এসব করতে???(উওেজিত হয়ে)
রুহিঃআমি ঠিক আছি! তুমি শান্ত হও..
মুগ্ধঃদেখতেও পাচ্ছি কত ঠিক আছিস!মন চাচ্ছে থাটিয়ে একটা থাপ্পড় বসিয়ে দেয় তোর গালে।সব সময় নিজে যা বুঝবে তাই করবে(চোখের পানি মুছে দিয়ে)
রুহিঃ বিয়ে করলে নাকে নাকফুল দিতে হয়!এজন্য..
মুগ্ধঃরুহি তুই গাড়িতে গিয়ে বস আমি আসছি..
রুহিঃউনার বিল টা দিয়ে যায়..
মুগ্ধঃআমি দিচ্ছি তুই যা
রুহিঃহুমম

রুহি ওর ব্যাগটা নিয়ে চলে গেল!মুগ্ধ ডোক গিলে মেয়েটার দিকে উদেশ্য করে বলে।
মুগ্ধঃওর তো এখন ব্যাথা করবে,এখান থেকে ইনজেকশন, বা জর আসবে না তো।
মেয়েটিঃনা না সেরকম কিছু হবে না!বেশি ব্যাথা করলে একটা ব্যাথার মেডিসিন বা সরিষার তেল গরম করে দিলেও ব্যাথা কমে যাবে।
মুগ্ধঃআর কিছু…
মেয়েটিঃনা! গরম তেল দিলেই ব্যাথা কমে যাবে..

তারপর মুগ্ধ উনার বিল দিয়ে বেরিয়ে আসে!রুহি সব শুনছিলো।মুগ্ধ আসার শব্দ পেয়ে দৌড় গাড়ির কাছে চলে যায়।মুগ্ধ গাড়ি স্টাট দিয়ে মেডিসিনের দোকানে গিয়ে ব্যাথার মেডিসিন আর কালকে সিগারেটের ছ্যাকা খাওয়ার দাগটা যেন চলে যায় তার জন্য মলম কিনে নিল।মুগ্ধ ড্রাইভ করতে করতে বললো….

মুগ্ধঃএটা করার কি খুব দরকার ছিলো!আমি ভেবেছিলাম তুই কালকের নোজপিন টা শখে নিয়েছিস।
রুহিঃ না এটা রেখে দেওয়ার জন্য তোমাকে কিনে দিতে বলিনি..
মুগ্ধঃ এমন কোন হাদীস নেই যে বিয়ে হলেই,হাতে চুরি,নোজপিন দিতে হবে,এসব নিয়ম তৈরী করছে আমাদের সমাজ।তুই তো জানিস হাজবেন্ডের চিহ্ন হিসেবে আই মিন নোজপিন বা চুড়ি পরা হারাম।সাজসজ্জবার জন্য অন্য কথা।
রুহিঃতুমি পছন্দ করে ভালবেসে কিনে দিয়েছো তাই নোজপিনটা ইউজ করবো।
মুগ্ধঃ শুধু শুধু কষ্ট পাচ্ছিস এখন?আমি আগে জানলে এটা করতে দিতাম না।কারন কোথাও লিখা নাই যে মেয়েদের নোজপিন পড়তেই হবে…
রুহিঃছেলেরা এখন চুরি দুল পড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে আর আমি তো মেয়ে…
মুগ্ধঃশোন বাসায় গিয়ে ফ্রেশ হয়ে টাওয়াল দিয়ে আস্তে মুখ মুছবি তা না হলে ব্যাথা পাবি!আর দেখিস চুলের সাথে আবার টান না লাগে।আর বাসায় গিয়ে মেডিসিন দিলাম ওটা খেয়ে নিবি!সিভিটও আছে মেডিসিনের সাথে একটা করে খাবি তাহলে শুকিয়ে যাবে…
রুহিঃ……
মুগ্ধঃএই তুই হাসছিস কেন রে??কারন তো আছেই
রুহিঃ আমি সত্যি খুব লাকি!সামান্য নাম ফুটা করছি তাই এই অবস্থা! এত কেয়ার তাহলে যখন আমার বেবি হবে তখন কি করবে ভাবলেই এখনই আমার টেনশন হচ্ছে….
মুগ্ধঃউমমম ঢং দেখলে বাঁচি না!নিজে এখনো ঘুমানোর সময় এক পা দেয় বাংলাদেশে আর আরেক পা দেয় পাকিস্তানে।মাথার নিচে বালিশ না দিয়ে! বালিশ থাকে মাথার উপরে!আর হাতের কথা নাই বললাম।আর উনি কি না বেবির সপ্ন দেখছে…

মুগ্ধ কথা শুনে রুহি মুখ ভেংচি অন্যদিকে তাকিয়ে থাকলো!মুগ্ধ একটা নিরিবিলি রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলো তখন!মুগ্ধ একটা ডেবিল হাসি দিয়ে গাড়িটা ব্রেক মারে ফাকা রাস্তাতায়!রুহি মুগ্ধর দিকে ভ্রু কুচকে তাকায়! তখন মুগ্ধ বলে…

মুগ্ধঃআমার খুব খুধা লাগছে…
রুহিঃএখানে তো কোন দোকান বা রেস্টুরেন্ট দেখতে পাচ্ছি না!তাহলে এখানে গাড়ি থামালে কেন??(ভ্রু কুচকে)
মুগ্ধঃআমি জানি কোথায় খাবার পাবা যাবে!আর আমার কাছে খাবার থাকতে রেস্টুরেন্ট বা দোকানই বা খুজতে যাবো কেন??
রুহিঃ কি খাবার আছে তোমার কাছে??আমাকেও দাও…
মুগ্ধঃতোরও খুধা লাগছে তাই তো!ওকে এইদিকে আয়…

মুগ্ধ রুহির একহাত ধরে টেনে ওর কোলে বসায় আর গাড়ি ভেতরে লাইট টা বন্ধ করে দেয়।রুহি মুগ্ধর মতলব বুঝতে পেরে ছটফট করতে থাকে!মুগ্ধ রুহির কানের নিচে হাত ঢুকিয়ে পরশ আবেশে রুহির ঠোঁটে ঠোঁট রাখে!রুহি মুগ্ধকে সরিয়ে কাঁদো কাঁদো হয় বলছে…
রুহিঃআমি আর খেতে চাইবো না রে!ওরে কেউ আছো রে! আমাকে এই পেটুকের হাত থেকে বাঁচাও রে।আমাকে তা না হলে খ…..

মুগ্ধ রুহির চুল ধরে আবার ওর নেশাতে ডুবে যায়!যেই নেশা রুহি নিজে মুগ্ধকে করতে শিখিয়েছি।আর এই মুগ্ধও এমন নেশাতে বার বার নেশাগ্রস্ত হতে রাজি…এটাই পৃথিবীর সব থেকে আহ্লাদি আর আদুরে নেশা।

#প্যারাময়_লাভ❤❤
#written_by_Nurzahan_akter_Allo
#part_20

মুগ্ধ রুহির চুল ধরে আবার ওর নেশাতে ডুবে যায়!যেই নেশা রুহি নিজে মুগ্ধকে করতে শিখিয়েছি।আর আর মুগ্ধও এমন নেশাতে বার বার নেশাগ্রস্ত হতে রাজি…এটাই পৃথিবীর সব থেকে আদুরে নেশা।

মুগ্ধ রুহিকে ছেড়ে দেয় আর রুহির চোখে চোখ রাখে!রুহি মুগ্ধর দিকে তাকায়! রুহি মুগ্ধর দিকে নেশাভরা চোখে তাকিয়ে আহ্লাদি সুরে বলে…
রুহিঃ আমি আবার তোমার ঠোঁট খাবো….(আদুরে সুরে)
মুগ্ধঃআমি যদি না দেয়।(দুষ্টু হেসে)
রুহিঃজোর করে খাবো!দাও না আমি এখন ঠোঁট খাবো…
রুহি মুগ্ধর মাথার পেছনে এক হাত দিয়ে মুগ্ধর চুল খামছে ধরে!আর মুগ্ধর ঠোঁটে ঠোঁট রাখে!মুগ্ধ মনে মনে হাসছে।সত্যি বলতে মুগ্ধর হাসির কারন রুহির মত এমন আবদার পৃথিবীতে আর কেউ কখনও কাউকে করছে না কি না মুগ্ধর জানা নেই!মুগ্ধ রেসপন্স করছে না দেখে রুহি মুগ্ধর ঠোঁটে কামড় বসায়!রুহির কামড় খেয়ে তারপর মুগ্ধ রুহির আদুরে নেশাতে বিজি হয়ে পড়ে !৫মিঃ৪৫ সেকেন্ড পর রুহি মুগ্ধকে ছেড়ে দেয়!দুজনেই হাঁপাতে থাকে….

রুহি জানালার দিকে তাকিয়ে আছে!মুগ্ধ রুহিকে ওর দিকে ঘুরিয়ে দেখে রুহির ঠোঁটের চারপামে ভেজা ভেজা!মুগ্ধ মুচকি হেসে বৃদ্ধাঙ্গুল দিয়ে রুহির ঠোঁট মুছে দেয়!রুহি লজ্জা পেয়ে দুইহাত দিয়ে ওর দুইহাত দিয়ে মুখ ঢেকে ফেলে!মুগ্ধ রুহির দুই হাত সরিয়ে দিয়ে তারপর রুহির কপালে আদর দেয়।রুহি আঙ্গুল দিয়ে ওর বামে গাল দেখায়! মুগ্ধ মুচকি হেসে রুহির বাম গালে আদর দেয়!রুহি এবার ওর ডান গাল দেখায়! মুগ্ধ মুচকি হেসে আবারো রুহির ডান গালে আদর দেয়!রুহি আঙ্গুল দিয়ে ওর থুতনী দেখায়! মুগ্ধ রুহির থুতনীতেও আদর দেয়!তারপর রুহি ওর নাক দেখায়! মুগ্ধ খুব সাবধানে রুহির নাকে আদর দেয় যাতে রুহি নাকে ব্যাথা না পায়।রুহি মাথা নিচু করে ফেলে বাট মুগ্ধ দুষ্টু হেসে রুহির ঠোঁটে চট করে আদর দিয়ে দেয়…. আর মুগ্ধ গাড়ি স্টাট করে।

রুহিঃ এ্য এ্য এ্য ঠোঁটে দিলে কেন??আমি কি দিতে বলছি??
মুগ্ধঃ কই কি দিলাম আমি!প্রমান দেখা…কেমন করে দিলাম আমাকে দিয়ে দেখা তো! আমার মনে পড়ছে না।( দুষ্টু হেসে)
রুহিঃলুচু একটা!
মুগ্ধঃলুচুর কিছু করিনি এখনো!কিছুদিন ওয়েট কর লুচু কাকে বলে বুঝিয়ে দিবো। (দুষ্টু হেসে)
রুহিঃএকটা দিনের মধ্যে এত রোমান্টিকতা তোমার মাঝে উদয় হলো কি করে?তুমি সত্যি মুগ্ধ তো..
মুগ্ধঃহুমম ডাউট হচ্ছে নাকি?আগেও ছিলাম বাট এখন তোকে বৈধ ভাবে পেয়েছি এখন আর কোন বাঁধা নেই!এখন থেকে শুধু….
রুহিঃ…..

রুহি আর কিছু বলে নি!মুগ্ধ একটা রেস্টুরেন্টের যায় আর রুহির কথা মত চাইনিজ খাবার খায়।তারপর ওরা বাসায় চলে আসে!রুহির আম্মু রুহির দিকে তাকিয়ে প্রথমে বুঝতে পারে নি বাট ভালো করে খেয়াল করে দেখছে একটা ডায়মণ্ডের নোজপিন রুহির নাকে জ্বলজ্বল করে জ্বলছে!রুহি আম্মু অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে…রুহির আম্মু কিছু বললো না কারন উনার গুনধর মেয়ের যখন যা মন তখন সে তাই করে!রুহিও ওর আম্মু দিকে তাকিয়ে বলছে…

রুহিঃ আম্মু গো কিছু একটা করো গো নাকের ব্যাথায় আমি মরে গেলাম গো।ভাভা গো ভাভা এত ব্যাথা করে জানলে এই ঠাডা পড়া নাক ফুটা করতাম না রে..নাকের ব্যাথায় আমার কানের মধ্যে আর মাথার মধ্যে পো পো করছে…
আম্মুঃদাড়া আমি রসূন তেল গরম করে আনি!গরম তেল দিলে ব্যাথা কমবে।
রুহিঃ যা করবা তারাতারি করো রে আম্মু! ব্যাথাতে আমি মরে গেলাম।

রুহি ব্যাথার মেডিসিন খেয়ে নেয়!আর মুখে সিভিট নিয়ে বসে আছে আর রুহিরর আম্মু রুহির নাকে হালকা তেল দিয়ে দিচ্ছে…..

পরেরদিন সকালে….
সকালবেলাতেই রুহি, সুমি আর ইরা ফোন দিয়ে ডেকে নেয়!রুহি সুমি আর ইরা আসলে রুহি ওদের নিয়ে ওদের ছাদে যায়।রুহি সুমি আর ইরা কে কুট্টুশের তিনটা বাচ্চাকে দেখায়!তিন জন তিন ছানাকে কোলে নিয়ে ইচ্ছে মত চটকাতে থাকে!তখন রুহির ফট করে মনে পড়ে এদের তো নাম দেওয়া হয় নি!রুহি তখন ছাদের চারপাশে তাকায় আর মুগ্ধর বাগানে লাগানো বাদামের গাছে রুহি চোখ যায়…

রুহিঃএদের নাম কি জানিস??
ইরাঃকি রে???সো কিউট ছানাগুলো….
রুহিঃকাজু,বাদাম,কিসমিস দারুন নাম গুলো তাইনা…
সুমিঃহুমমম!অনেক কিউট…

রুহি ওদের সাথে কথা বলতে বলতে চোখ যায় ওদের বাসার তিন বাসা পর যে তেঁতুল গাছ আছে ওই গাছের দিকে!রুহি কাজু,বাদাম,কিসমিসকে খাঁচাতে রেখে সুমি আর ইরাকে নিয়ে তেতুল আনতে যায়।ওই তেঁতুল গাছটা নগেন দের!রুহি এর আগেও তেঁতুল গাছে উঠে তেঁতুল নামিয়েছে! আর গাছে ওঠা রুহির কাছে কোন ব্যাপার না।আর গাছে ওঠার জন্য মুগ্ধ রুহিকে উরাধুরা একদিন মেরেও ছিলো।রুহি,ইরা আর সুমি হেটে ওই তেঁতুল গাছের কাছে যাচ্ছে।রুহি গল্প করছে আর যাচ্ছিলো হঠাৎ ছোট্ট একটা বাচ্চা আদো আদো পায়ে রুহির সামনে এসে দাঁড়ালো…

বাচ্চাটা মেবি কেবল হাঁটা শিখছে!রুহি বাচ্চার সামনের সামনে হাটু গেড়ে বসতেই দেখে ছেলেটি একদম খালি গায়ে পরনে প্যান্টও নেই!রুহি দুষ্টু হেসে বাচ্চা ছেলেটি ইয়েতে একটা চিমটি কাটে আর দুষ্টু হেসে বলে…

রুহিঃওলে ওলে বাবুটা তুমি এমন নাংগু পাংগু হয়ে আছো কেন সোনা??তোমার কি বেশি গরম লাগছে??এজন্য বাতাস লাগাচ্ছো?????
সুমিঃএই রুহি কি করছিস তুই???
রুহিঃকই কি করলাম??বাতাস লাগাচ্ছে কি না সেটা জিজ্ঞাসা করছি…(দুষ্টু হেসে)
ইরাঃতাহলে চিমটি কাটছিস কেন??বাচ্চা কেঁদে দিলে রাস্তার মানুষ এসে আমাদের মারবে তো।
রুহিঃ ওলে বাবুটা এসো আরেক টা চিমটি কাটি!কি কিউট বাবুটা… এসো এসো

বাচ্চাটি কি বুঝলো কে জানে??খিলখিল করে হাসছে আর ওর ছোট ছোট হাত দিয়ে হাত তালি দেওয়ার চেষ্টা করছে।রুহি আবার চিমটি দিতে যাবে তার আগে বাচ্চাটি হাসি থামিয়ে এক পা পিছিয়ে দুইহাতে দিয়ে সামনে এনে ওর ইয়ে ঢাকার চেষ্টা করছে।বাচ্চাটি মুখের আকৃতি এমন করছে মনে হচ্ছে রুহি ওর ইয়েটা কেড়ে নিয়ে দৌড়ে দিবে।রুহি বাচ্চাটিকে কোলে নিতে যাবে তার আগেই পেছন থেকে মুগ্ধ রুহিকে ডাকলো!রুহি মুগ্ধর দিকে তাকিয়ে ভূত দেখার মত চমকে উঠলো….

মুগ্ধঃরুহি!!!এই তুই রাস্তার মাঝখানে বসে কি করছিস??যা বাসায় যা বলছি (মুগ্ধ সব দেখছে!)
রুহিঃ হুমম যাচ্ছি!!!!
মুগ্ধঃএখুনি যাবি!কি হলো দাড়িয়ে আছিস যে! কথা কানে যাচ্ছে না।মার খাওয়া ইচ্ছে না থাকলে তারাতারি বাসায় যা…
রুহিঃতুমি এত সেজেগুজে কোথায় যাচ্ছো শুনি??
মুগ্ধঃ শশুড়বাড়ির চৌরাস্তায়! এখন এত বকবক করতে পারবো না।আর আজকে একটা যদি অভিযোগ আসে আমার কাছে! থাটিয়ে এমন একটা থাপ্পড় দিবো ঝরঝর করে মাড়ির সব দাঁত পড়ে যাবে।
রুহিঃ আজকে যে পেছন পাকামি করে অভিযোগ দিতে যাবে! তাকে উল্টো ঝুলিয়ে পিটাবো..
মুগ্ধঃতোকে বলিনি রং কথা বলবি না!আমাকে কি বাইক থেকে নামতে হবে।(দাঁতে দাঁত চেপে)
রুহিঃ আচ্ছা আচ্ছা আর বলবো না! আমি বাসায় যাচ্ছি তুমি যাও যাও তুমি হিরোগিরি করে এসো..

মুগ্ধ আজকে অফিসে যায় নি!নায়ক সেজে বাইক নিয়ে কোথায় জানি যাচিছলো।মুগ্ধ রুহিকে বাসায় যেতে বলে বাইক নিয়ে হিরোর মত শা শা করে চলে গেল!ধূসব কালার শার্ট আর কালো জিন্সে মুগ্ধকে দারুন লাগে তাই রুহি মুগ্ধকে কয়েক দফা গালি দিলো।মুগ্ধ বাইকে করে যাচ্ছে হাসছে আর মনে বলছে…
মুগ্ধঃ তুই কি বড় হবি না??রাস্তার মাঝখানে বসে এসব কি করছে?আল্লাহ এর মাথায় বুদ্ধি দাও।আমি তো নিজেই লজ্জা পাচ্ছিলাম এজন্য না দেখার ভান করে কেটে পড়লাম।

ওই দিকে রুহি বাচ্চাটি কে দেখার জন্য পেছনে তাকিয়ে দেখে একটা লোকের কোলে বাচ্চাটি ভয় ভয় চোখে রুহির দিকেই তাকিয়ে আছে….
রুহিঃ বাচ্চাটি একটা ফ্লায়িং কিস ছুড়ে দিলো..
আর বাচ্চাটি ভীতু চোখে রুহির দিকে তাকিয়ে থাকলো।

রুহিরা তেঁতুল গাছের নিচে গেল!তারপর ভাল করে দেখে নিলো কোন ডালে বেশি তেঁতুল আছে!রুহি একটা ঢিল ছুঁড়ে গাছে মারলো! আর ঢিলটা গিয়ে তেঁতুল গাছের মালিকের টিনের উপর পড়ে বিকট একটা শব্দ করলো।তারপর নগেন বাসার মধ্যে থেকে চিৎকার করতে করতে তেঁতুল গাছ তলায় আসলো।রুহিরা তখন লুকিয়ে পড়ছিলো!নগেন কাউকে না দেখে বাসায় দেখে বাসায় যাওয়ার জন্য পা বাড়াতেই…রুহির নগেনের চোখে কাপড় বেঁধে দিলো…

নগেনের চোখ, মুখ বেধে দিলো যাতে নগেন ষাড়ের মত চিৎকুর দিতে না পারে আর রুহিকে চিনতে না পারে।রুহি নগেনকে তেঁতুল গাছের সাথে বেধে কয়েক টা কিল,ঘুসি দিলো তারপর বলতে শুরু করলো…
রুহিঃ তোর গাছ বলে তুই একাই তেঁতুল গিলবি রে উগান্ডা! কোথায় লিখা আছে যে যার গাছ সেই তেতুল খাবে শুধু!প্রতিটা তেঁতুল গাছ থেকে তেঁতুল খাওয়া সব মেয়েদের অধিকার বুঝলি!আর একবার যদি এরকম করিস তো তোর এমন জায়গায় মারবো না পারবি দেখাতে আর না পারবি কাউকে বলতে…
সুমিঃ আরো কয়েক দফা মার এই হুলো বিড়ালটাকে…
ইরাঃ আচ্ছা আমরা যে তেঁতুল গাছের মালিককে তারই গাছে বেঁধে যে মারছি কেউ দেখলো আমাদের আস্ত রাখবে না।চল পালায়…
রুহিঃধুর চুপ কর তো!আমি শুধু আমার চকলেট বয় ছাড়া কাউকে ভয় পাই না।দেখি কে কি বলতে আসে! যে যা বলতে আসবে একেকজনেনর পা ভেঙে হাতে ধরিয়ে দিবো…রুহি কাউকে ভয় পাই না।
সুমিঃহা হা হা
তারপর রুহি গাছে উঠে ইচ্ছে মত পাকা তেঁতুল নামালো তারপর নগেনকে তিনজন মিলে আরেক দফা মারলো!বেচারা নগেন মার খেয়ে কিছু বলতে পারছে না শুধু উৎ চিংড়ির মত লাফাচ্ছে… না পারছে কাঁদতে না পারছে চিৎকার করতে।

একেই বলে সাহস!গাছের মালিককে তারই গাছের সাথে বেধে!তারই সামনে থেকে তেঁতুল নামিয়ে আনতে ও সাহস লাগে!আর রুহি তো চোর না পুরাই ডাকাত এজন্য চুরি করে না মালিকের সামনে থেকেই যা করার করবে।রুহি একটা পাকা তেঁতুল নিয়ে খোসা ছাড়িয়ে নগেনের মুখের কাপড়টা সরিয়ে নগেনের মুখের একটা তেঁতুল ঢুকিয়ে দিলো!তারপর বাকি তেঁতুল নিয়ে তিন জন বিশ্ব জয় হাসি নিয়ে বাসার উদেশ্য হাটতে শুরু করলো….

কিছুদূর গিয়ে আবার রুহিকে ফিরে এসে নগেনের মাথা চাট্টি মেরে বললো…
রুহিঃ আমি জানি তুই আমাকে চিনে ফেলছিস!শোন আমার বাসায় যদি রিপোর্ট করিস তো!তেতুল গাছের সব উপরের মগডালে তোকে উল্টো করে ঝুলিয়ে রাখবো।আমাকে তো চিনিস যা বলি তাই করি….সো ভুলেও যেন আমার বাসার কেউ না জানে।মনে রাখিস বাই….(নগেনের একটা কান টেনে)

#প্যারাময়_লাভ❤❤
#written_by_Nurzahan_akter_Allo
#part_21

রুহিঃ আমার বাসায় যদি রিপোর্ট করিস তো!তেতুল গাছের সব উপরের মগডালে তোকে উল্টো করে ঝুলিয়ে রাখবো।আমাকে তো চিনিস যা বলি তাই করি….সো ভুলেও যেন আমার বাসার কেউ না জানে।

রুহিরা তেঁতুল ডাকাতি করে চলে গেল!কিছুক্ষন পরে নগেনের মা নগেন দেখে বাঁধন খুলে বাসায় নিয়ে যায়।নগেন ওর মাকে বলে এই কথা কাউকে না জানাতে।ওই দিকে রুহি বাসায় গিয়ে মনের সুখে তেঁতুল খায়!তারপর তিনজন অনেক সময় আড্ডা দেয়।রুহি, সুমি, ইরা তারপর ওদের বাসায় চলে যায়।সুমিদের এগিয়ে দিয়ে রুহি বাসায় ঢুকতে যাবে তখন মুগ্ধ বাইকে নিয়ে আসে!রুহি মুচকি হেসে মুগ্ধর দিকে তাকাতেই মুগ্ধর বাইকে ইভাকে কে রুহির হাসি মিলিয়ে গেল!রুহি দাড়িয়ে আছে মুগ্ধ দেখেও না দেখার ভান ইভাকে নিয়ে মুগ্ধ বাসায় ঢুকে গেল…..

রুহি মুগ্ধর দিকে তাকিয়ে হনহন করতে করতে ওর বাসায় ঢুকে গেল!তারপর রুহি ওর রুমে গিয়ে বেডশীট, বালিশ, যা ছিলো সব ছুঁড়ে ফেলে দিলো।ড্রেসিং টেবিলে যা ছিলো সব এক এক বেডের নিচে ছুড়ে মারলো!বেডশীট তুলে ওয়াশরুমে গিয়ে বাথটাবের মধ্যে ঢুবিয়ে আসলো।কয়েক মিনিটেই রুমটার অবস্থা নাজেহাল করে ফেললো!তারপর মেঝেতে বসে ভ্য ভ্য করে কেঁদে দিলো!রুহির আম্মু কোন একটা কাজে বাইরে গিয়েছে।রুহি ৩মিঃ কাঁদার পর হনহন করতে করতে মুগ্ধর বাসায় চলে গেল!তারপর মুগ্ধর আম্মুর রুমে ঢুকে মুগ্ধর খাৎনার পিক গুলো নিলো!তারপর কি মনে করে মুগ্ধর রুমে গেল…

মুগ্ধ শার্টটা কেবল খুলে উল্টো ঘুরে তাকাতেই দেখে রুহি অগ্নিদৃষিতে রুহির দিকে তাকিয়ে আছে।মুগ্ধ টাওয়াল নিয়ে ওয়াশরুমে যেতে নিলেই রুহি সামনে এসে মুগ্ধর পথ আটকায়।মুগ্ধ ভ্রু কুচকে রুহির দিকে তাকিয়ে আছে।রুহিকে দেখে বোঝা যাচ্ছে রুহি প্রচন্ড রেগে আগে!মুগ্ধ খেয়াল করে রুহির হাতে কিসের যেন পিক!মুগ্ধ কিছু বলার আগে রুহি বলে ওঠে…

রুহিঃবাইকে তুমি ইভার সাথে লেপ্টে বসে ছিলে কেন?
মুগ্ধঃ লেপ্টে কই বসে ছিলাম!আমাকে ইভা না ধরলে তো পড়ে যেত তাই ধরে ছিলো।
রুহিঃতোমাকে বলিনি কোন মেয়ের এত কাছে যাবে না।বলিনি তুই কারো শরীর ঘেষে দাড়াবিও না।তুই আমার কথা শুনতে পাস না।(চিৎকার করে)
মুগ্ধঃতুই আমাকে তুই বললি..তোর তো সাহস কম না।(অবাক হয়ে)
রুহিঃতুমি সাহসের দেখছিস কি??(মুগ্ধ ধাক্কা দিয়ে)
মুগ্ধঃসামান্য একটা বিষয় নিয়ে এবার কিন্তু তুই বাড়াবারি করছিস রুহি!(দাঁতে দাঁত চেপে)
রুহিঃকিসের বাড়াবাড়ি তুমি লেপ্টে থাকবে আর আমি বললেই দোষ। আজকে যদি তোমার ইজ্জতের ফালুদা না করছি তো আমিও রুহি না।শুধু দেখে যাও…
মুগ্ধঃকি করবি তুই শুনি??
রুহিঃতোমার খাৎনার পিক গুলো নেটে ছাড়বো!ফেসবুকে পোস্ট করে তোমাকে ট্যাগ করবো।তারপর দেখবা তোমাকে নিয়ে সবাই কি করে হাসাহাসি করে।
মুগ্ধঃ ঠাস্!সামান্য একটা বিষয় নিয়ে এত বাড়াবাড়ি করছিস কেন তুই??কয়েকদিন মার খাস নি তাই বেশি সাহস হয়ে গেছে তাই না। (থাপ্পড় মেরে)

রুহি মার খেয়ে ছবি গুলো নিয়ে দৌড়ে চলে যাচ্ছিলো!মুগ্ধও দৌড়ে গিয়ে রুহিকে ধরে আবার রুমে নিয়ে আসে!রুহি রাগে ফোঁস ফোঁস করছে।মুগ্ধ রুহির থেকে জোর করে পিক গুলো নিয়ে ছিঁড়ে ফেলে!রুহি রাগে মুগ্ধ জোরে একটা ধাক্কা দেয়।মুগ্ধ দুই পা পিছিয়ে যায়!মুগ্ধ জানে রুহি বাসায় গিয়ে ভাংচুর শুরু করবে যতক্ষণ না ওর রাগ কমে।মুগ্ধ রুহি কে জোর করে বেডের উপর বসিয়ে দেয় আর নিজেও বসে! তারপর দুই গালে হাত রেখে বলে…

মুগ্ধঃরাগ তো আমার উপর! তাহলে আমার উপরে তোর যত ইচ্ছে রাগ আছে তুলে যা।তুই যে শাস্তি দিবি আমি মাথা পেতে নিবো তাও মাথা ঠান্ডা কর।
রুহিঃ…….
মুগ্ধঃকি হলো কথা বলবি না আমার সাথে।ইভা তো আমার বোন তাই না!ভাইয়ের পাশে কি বোন বসতে পারে না! (শান্ত ভাবে)
রুহিঃআমিও তোমার বোন ছিলাম!আমাকে বোন থেকে বউ করে ফেলছো।তাহলে ইভা করবে না গ্যারান্টি কি আছে?আমাকে এত বোকা মনে হয় তোমার!তুমি লুচু অনেক বেশি লুচু(রাগি চোখে তাকিয়ে)
মুগ্ধঃতোকে আমি কোনদিন বোন ভাবি নি!আর ইভাকে আমি আমার বোন ভাবি।আচ্ছা বল কি করলে তোর রাগ কমবে।

রুহি উঠে দাড়িয়ে মুগ্ধ রুমটা সব এলোমেলো করে দিলো!তারপর রাগে ফোঁস ফোঁস করতে করতে মুগ্ধকে এক ধাক্কা দিলো!মুগ্ধ বেডে পড়ে যায়।রুহি মুগ্ধর বুকের উপর উঠে ইচ্ছে মত মুগ্ধকে কামড়াতে থাকে!মুগ্ধও মুখ বুজে সব সহ্য করতে থাকে!মুগ্ধ ঠোঁটে,গালে,গলায়, বুকে, পেটে রুহি ইচ্ছে মত কামড়াতে থাকে যতক্ষণ না ওর রাগ কমছে!রুহির যে ঠিক কতটা রেগে আছে মুগ্ধ খুব ভাল করেই বুঝতে পারছে কারন রুহির কামড় গুলো।রুহি একটা সময় মুগ্ধ উপর থেকে উঠে দাড়ায় আর মুগ্ধর দিকে না তাকিয়ে হনহন করতে করতে ওর বাসায় চলে যায়।

মুগ্ধ উঠে আগে ওর রুমে দরজাটা ভালো করে আটকায়! তারপর ড্রেয়িং টেবিলের দাড়িয়ে নিজেকে দেখছে!ঠোঁট, গাল,বুকে,গলায়, পেটে রুহির দাঁত বসে আছে।কোন মেয়েকে যদি কেউ এমন অবস্থায় কেউ দেখে তো বলতো মেয়েটাকে রেপ করছে! কিন্তু কোন ছেলেকে কেউ এমন অবস্থা দেখলে তাকে কি বলা উচিত সেটা মুগ্ধরও জানা নেই!মুগ্ধর হাসিও পাচ্ছে আবার দুঃখও হচ্ছে, রাগও লাগছে আবার এখন শান্তিও পাচ্ছে।রুহি এত জোরে কামড় গুলো দিয়েছে যে মুগ্ধ শরীর লাল হয়ে দাঁত বসে আছে!কোন কোন জায়গায় রক্ত জমে গেছে..পুরো শরীর ব্যাথা হয়ে গেছে আর জ্বালা করছে!.রুহি যে মুগ্ধকে এমন শাস্তি দিবে সেটা মুগ্ধ কল্পনাও করে নি…

মুগ্ধ আয়নাতে নিজে দেখে মনে মনে ভাবছে..
মুগ্ধঃএত গুলো কামড় তো দিলো!এবার ইনজেকশন নিতে হবে না তো।আচ্ছা ডাক্তার যদি জিজ্ঞাসা করে এমন করে কে কামড়ালো?তখন কি বলবো আমি??আমার বউ তার রাগ কমানোর জন্য আমাকে এমন করে কামড়ে দিসে।ছিঃ!ছিঃ! কি লজ্জার কথা।সব বুঝলাম এখন আমি রুমে বাইরে যাবো কি করে?অফিসেই বা যাবো কি।উফফ খুব ব্যাথা করছে…

মুগ্ধ ওর ফোনটা নিয়ে অফিস থেকে নিয়ে দুইদিন ছুটি নিয়ে নিলো অসুস্থতার কথা বলে!তারপর মুগ্ধ সাওয়ার নিয়ে শরীর মুছে ড্রেসিংটেবিলের সামনে দাড়িয়ে একা একা মলম লাগালো।মুগ্ধ বারান্দায় গিয়ে দেখলো রুহিকে দেখা যাচ্ছে না।মুগ্ধ একটা টি- শার্ট পড়ে শুয়ে পড়ে ভাবতে থাকে।
মুগ্ধঃরুহি তোর ভালবাসা যে এত ভয়ঙ্কর আমি ভাবি নি!আর আর কোনদিন আমার বাইকে কোন মেয়েকে তুলবো না।এটা যদিও পাগলামি তারপরেও বলবো পাগলের মত কেউ কাউকে ভালবেসে না থাকলে এমন পাগলামি কেউ করবে না।পাগলীটাকে দুই বার বিয়ে করে বোঝালাম যে আমি শুধু তোর! তাও আজকে সামান্য বিষয় নিয়ে কামড়ে কি অবস্থা করে দিলো আমার।যদিও এমন ভালবাসা পেতে ভাগ্য লাগে… (মুচকি হেসে)

রুহি সাওয়ার নিচে দাড়িয়ে আছে প্রায় ২ ঘন্টা হলো!তারপর ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে কয়েকটা ড্রেস আর টাকা নিয়ে হনহন করতে করতে বাসায় চলে গেল।রুহির আম্মু শুধু দাড়িয়ে দাড়িয়ে দেখলো কারন রুহি মুগ্ধর উপর রেগে গেলে ব্যাগ পএ নিয়ে ওর নানুর বাসায় চলে যায়!আর রুহি এখন এই কাজটাই করেছে।তারপর মুগ্ধ গিয়ে আবার নিয়ে আসে….।তবে আজকে রুহি ওর নানুর বাসায় যায়নি! গেছে সুমির বাসায়।সুমির বাড়ির লোকও রুহিকে খুব ভালবাসে…

ওইদিকে মুগ্ধর আম্মু দুপুরে খাওয়া জন্য মুগ্ধকে ডেকে যাচ্ছে কিন্তুু মুগ্ধ খেতে যেতে পারছে না।মুগ্ধ ওর আম্মুকে ফোন দিয়ে বললো ওর খাবারটা ওর রুমে পাঠিয়ে দেয়।মুগ্ধর আম্মু মুগ্ধর রুমে খাবার দিতে এসে দেখে মুগ্ধ ওর গলাতে টাওয়াল ঝুলিয়ে রেখে মনযোগ দিয়ে কাজ করছে!আর মুগ্ধ টাওয়াল নিয়ে মুখ মোছার ভান করে ঠোঁটে উপর হালকা করে ঘষছে!মুগ্ধর আম্মু চলে যেতে মুগ্ধ লেপটপে দিকে তাকিয়ে বললো..

মুগ্ধঃ আম্মু আমার খাবারটা এবার থেকে উপরেই পাঠিয়ে দিও!অফিসের অনেক কাজ আমাকে এগুলো রেডি করতে হবে।আর এই কাজটা খুব জরুরি এজন্য বাসাতেই ঠান্ডা মাথা করতে হবে! তাই অফিস থেকে দুইদিন ছুটি নিয়েছি….
আম্মুঃ আচ্ছা…

মুগ্ধর আম্মু চলে গেল! মুগ্ধ উঠে তখন দরজা আটকে দিলো আর হাফ ছেড়ে বাচলো।তারপর মুগ্ধ খেয়ে একটা ঘুম দিলো!ওই দিকে সুমির রুমে রুহি বসে মুগ্ধকে কয়েক দফা গালি দিলো!সুমি রুহিকে জোর করে খাইয়ে দিলো।তারপর দুই বান্ধবী গল্প করতে করতে ঘুমিয়ে গেল।রুহির আম্মু আর ওর বাপি রুহিকে ফোন দিচ্ছে পাচ্ছে না!রুহির আম্মু রুহির নানুকে ফোন দিয়ে খোঁজ নিয়ে জানলো রুহি ওর নানুর বাসায় যায় নি!রুহির আম্মু আর বাপি টেনশনে পড়ে গেল।রুহির বাপি খোঁজাখুজি করলো বাট কেউ বলতে পারলো না রুহির খবর!রুহির বাপি উপায় না পেয়ে মুগ্ধকে ফোন দিলো।মুগ্ধ ঘুম ঘুম কন্ঠে ফোন রিসিভ করলো!…

মুগ্ধঃআসসালামু আলাইকুম মেজ বাবা
রুহির বাপিঃওয়ালাইকুম সালাম আব্বু! আমি দুঃখিত তোমাকে বিরক্ত করা জন্য।
মুগ্ধঃসমস্যা নেই মেজবাবা???বলুন
রুহির বাপিঃ রুহির কোন খোঁজ পাচ্ছি না!রাগ করে এবার ওর নানুর বাসাতেও তো যায় নি।ওকে ফোন দিয়েও ফোন বন্ধ পাচ্ছি। টেনশন হচ্ছে ওর যা রাগ না জানি কি করে বসে…আব্বু রুহি কি কোন কারনে তোমার উপরে রাগ করছে।
মুগ্ধঃজি মেজবাবা!রুহি সামান্য একটা বিষয় নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করছিলো তাই আমি…..
রুহির বাপিঃবুঝেছি!!
মুগ্ধঃ মেজবাবা আমি দেখছি রুহি কোথায় আছে?আপনি চিন্তা করবেন না কেমন..
রুহির বাবাঃ হুমম

প্যারাময় লাভ পর্ব ১৬+১৭+১৮

মুগ্ধ এবার চিন্তায় পড়ে গেল রুহি তাহলে গেল কোথায়?মুগ্ধ রাহাতকে ফোন দিয়ে জিজ্ঞাসা করলো ইরা বা সুমি বাসার ঠিকানা জানে কি না??মুগ্ধ রাহাতকে বললো আরিয়ান,রাহাত,সুমি আর ইরা যেন সবাই একসাথে মিট করে লেকের পাড়ে।আর মুগ্ধ যে জানে এটা যেন কেউ না জানে?রাহাত, ইরা,সুমি,আর আরিয়ানকে ফোন দিয়ে বললো লেকের পাড়ে আসতে!সুমি রুহিকেও জোর করে লেকের পাড়ে নিয়ে আসে!রুহি মুখটা ভার করে মাথা নিচু করে বসে আছে…
সুমিঃ এই রুহি কি হলো তোর?মন খারাপ করে থাকবি এখনো???
রাহাতঃকি হয়েছে আমার মিষ্টি আপুটার!মন খারাপ কেন শুনি??
ইরাঃ এই রুহি সত্যি করে বলতো তোর কি হয়েছে??
রুহিঃআমি ঠিক আছে তোরা আড্ডা দে…
আরিয়ানঃ আমার শালিকার মন খারাপ থাকলে আমরা আড্ডা দিবো কি করে??
সুমিঃদাড়া মুগ্ধ ভাইয়াকে ফোন দেয় যেন তোর একটা থাপ্পড় মেরে যায়।কারন ভাইয়ার থাপ্পড় না খেলে তোর মুড ভালো হবে না আমি জানি…
রুহিঃওকে একদম ফোন দিবি না!ওর সাথে আর কোনদিন কথা বলবো না আমি..
রাহাতঃআবার ঝগড়া করছো তোমরা??
আরিয়ানঃআমাদের হিরো কই শুনি ?তবে মুগ্ধ ভাইয়ার সাথে দেখা বকে দিতে হবে।

সবাই আড্ডা দিচ্ছে আর রুহি আছে চুপ করে!বাইকে শব্দ পেয়ে রুহি পাশে তাকাতেই দেখে মুগ্ধ বাইক থেকে নামছে!মুগ্ধকে দেখে রুহি কোন কথা না বলে ভৌ দৌড়…..

প্যারাময় লাভ পর্ব ২২+২৩+২৪