প্যারাময় লাভ পর্ব ৭+৮+৯

প্যারাময় লাভ পর্ব ৭+৮+৯
written Nurzahan akter Allo

রুহিঃ তোমাকে ষাড় বলছি বলে কি তুমি রাগ করছো? আচ্ছা আর তোমাকে ষাড় বলবো না।তোমাকে বলবো রাম-পাঠা….(বিশ্বজয় করা হাসি দিয়ে)
মুগ্ধঃ……

মুগ্ধ আর কিছু বললো না!রুহি বেডে ধপাস করে বসে পড়লো!আর এত জোরে বসলো যে মুগ্ধও নড়ে উঠলো!মুগ্ধ কিছু বলছে না দাতে দাত চেপে চুপ করে আছে!আর রুহি বকবক করেই যাচ্ছে। মুগ্ধ রুহিকে বই বের করে পড়তে দিলো!রুহি না পড়ে দাঁত দিয়ে নখ কামড়াচেছ!মুগ্ধ যে রুহির কি করবো রুহি কল্পনাও করে নি!রুহি ভুলে গেছে ঝড়ের আগের আবহাওয়া ঠিক কেমন হয়।মুগ্ধ শান্ত কন্ঠে আবার পড়তে বললো রুহিকে৷ মুগ্ধ রুহিকে ৫মিঃ সময় দিলো পড়তে! বাট রুহি না পড়ে মুগ্ধর রুমে রাখা এ্যাকুরিয়ামের মাছ দেখছিলো।

৫মিঃ পর মুগ্ধ রুহি পড়া ধরলো!বাট রুহি পড়ার আনসার না করে চুপচাপ বসে আছে!মুগ্ধ ঠাস্ করে একটা চড় বসিয়ে দিলো।এতদিন মুগ্ধ রুহিকে মারলেও হালকা ভাবে মারতো!বাট আজকেটা চড় টা অনেক জোরেই মেরেছে!রুহি গালে হাত দিয়ে ছলছল চোখে মুগ্ধর দিকে তাকিয়ে আছে!মুগ্ধ চোখ লাল করে একবার রুহির দিকে তাকিয়ে আবার পড়া ধরলো।রুহি এবারও পারলো না!মুগ্ধ স্টিলের স্কেল টা ওর হাতে নিয়ে রুহিকে ডান হাত পাততে বললো!রুহি হাত এগিয়ে দিতেই মুগ্ধ ঠাস্ করে আবার মারলো…

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

মুগ্ধ রুহির হাতে এতজোরে মেরেছে যে রুহির চোখ দিয়ে সাথে সাথে পানি পড়তে থাকে!মুগ্ধ আবার রুহিকে পড়া ধরলো এবারও রুহি পড়া পারলো না!মুগ্ধ কিছু বলার আগেই রুহি ওর বাম হাত এগিয়ে দিলো!মুগ্ধ একই রকম ভাবে রুহিকে মারলো।রুহি ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো…এত জোরে জোরে মারছে মনে হচ্ছে আজকে মুগ্ধর সব রাগ তুলছে এর মারের মধ্যে দিয়ে।রুহিকে কাঁদতে থেকে মুগ্ধ আবার মারলো ডান হাতে!তারপর মুগ্ধ রুহির দিকে এগিয়ে এসে দাঁতে দাঁত চেপে! রুহির গাল টিপে ধরে বলল।

মুগ্ধঃতুই জানিস আমি কলেজের ফাস্ট বয় ছিলাম!
তুই কি জানিস?? তুই আমার বোন হয়ে যখন ফেল করিস তখন আমাকে কতজন কত কথা শোনায়! তুই কি জানিস?? তোর দুষ্টুমির কারনে আমার কাছে কত ফোন আসে!তুই কি জানিস?? রাহাতকে ওই কথা গুলো বলাতে আমি কতটা অপমানিত হয়েছিলাম!তুই কি জানিস?? তোর কারনে আমি নিজের বাসাতেও একটু শান্তিতে থাকতে পারি না!কেন?বলবি কেন তুই আমার সাথে এমন করিস ??তোকে এত কিছু বলার পরও তোর কোন কথা কানে ঢুকে না… (গাল চেপে ধরে)
রুহিঃএভাবে বকছেন কেন??আমি কি করছি???
মুগ্ধঃবকা দিচ্ছি কেন তুই আবার আমাকে জিজ্ঞাসা করছিস???তুই কি এইরকমই থাকবি সারাজীবন?তোর করা এসব দুষ্টুমি করে কি জীবন চলবে?তোর করা দুষ্টুমির কারনে মানুষ মজা নিতে পারবে!বাট বিপদে পড়লে কেউ এগিয়ে আসবে না!তুই কি এটা জানিস যে তোর কিছু কিছু দুষ্টুমির কারনে তোকে অনেকে সহ্য করতে পারে না।এই অসভ্য মেয়ে !তোর
একবারো মনে হয় না নিজের পায়ে দাঁড়াবো,ওহ হো হাস্যকর কথা বলছি আমি তাই না?? যদিও নিজের পায়ে দাড়ানোর কথা তো মনে হবে না!কারণ টেনেটুনে পাশ করিস।ছিঃ!তোর জন্য অনেকে আমাকে আঙ্গুল তুলে বলে, মুগ্ধ তুমি এত ভাল ছাএ বাট তোমার বোন এমন কেন??জানিস আমি তখন কত লজ্জিত হয়?টেনেটুনে পরীক্ষায় পাশ করে নাচতে নাচতে বাসায় ফিরে আসিস!লজ্জা করে না তোর!ওহ আমি তো ভুলেই গেছিলাম তোর তো লজ্জায় নাই! (চোখ লাল করে)
রুহিঃ…..
মুগ্ধঃ তুই নিজেকে শুধরাবি না তাই তো!ইভা (খালাতো বোন)আসছে! আর আমি ওকে বিয়ে করে চট্টগ্রাম চলে যাচ্ছি।আমি আর কিছু বলবো না তোকে!তোর যা ইচ্ছা কর! আমি তোকে আর কিছু বলবোও না আর তোর কোন কথা শুনবোও না।তোকে বোঝানো জন্য আমার এত দায় পড়ে নি!ইডিয়েট গার্ল…. (রেগে দাঁতের সাথে দাঁত চেপে)

মুগ্ধ কথা গুলো বলে হনহন করতে করতে ওর রুমে থেকে চলে গেল!রুহি মাথা নিচু করে এতক্ষণ মুগ্ধর কথাগুলো শুনছিলো আর চোখের পানি ফেলছিলো!রুহির ওর হাতের দিকে তাকিয়ে দেখে ওর হাত একদম লাল হয়ে গেছে মনে হচ্ছে এক্ষুনি রক্ত বের হবে। রুহি ওর বই গুছিয়ে সুন্দর করে মাথা নিচু করে মুগ্ধর বাসা থেকে বের হয়ে ওর বাসায় চলে গেল…

রুহি ওর বাসায় গিয়ে ওর রুমে ঢুকে বেডে শুয়ে বালিশে মুখ গুজে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে শুরু করলো!রুহির আম্মু রুহিকে কয়েকবার ডাকলো কিন্তু রুহি বললো ওর খুব ঘুম পাচ্ছে তাই ঘুমাবে।রুহি মার খেয়ে কাঁদছে না!রুহি কাঁদছে মুগ্ধকে চিরতরে হারানোর ভয়ে,এত দিন এত দুষ্টুমি করলেও রুহি সেই ছোট থেকে মুগ্ধকে খুব ভালবাসে!আর ভালবাসে বলেই এত মার খেয়েও মুগ্ধর কাছে ছুটে যায়…..

পরেরদিন সকালে…
রুহির কলেজ থেকে ফিরে সাওয়ার নিয়ে একটু ঘুমায়!আজকে কোচিং নেই তাই বিকালে ছাদে বসে আকাশ দিকে উদাসীন ভাবে তাকিয়ে ছিলো!আজকে রুহির মন ভালো নেই!প্রতিদিনের মত আজকে মন বলছে না হাসতে!কি মনে করে রুহি হুট করে বলতে শুরু করলো.

চলতে চলতে এতটা পথ পেরিয়েও…
বলা হলো না!মনের গহীনে পুষে রাখা কিছু কথা..
বুঝেও অবুজের মত আড়াল করলে আমার ভালবাসা।..
দীর্ঘশ্বাসের মাঝে হারিয়ে ফেলেছি আমার সকল কথা
নাই বা প্রকাশ করলাম তোমার কাছে
আমার মনের গহীনের পুষে রাখা
❤❤অবুজ ভালবাসা❤❤
#আলোমনি___

রুহি ওই দুর আকাশের দিকে তাকিয়ে থেকে কিছু একটা ভাবছিলো! আর পুরো ছাদ পায়চারী করছিলো!আজকে কিছুতেই মনকে শান্ত করতে পারছে না রুহি।আজকে সারাদিনে একবারো মুগ্ধদের বাসায় রুহি যায়নি!সন্ধ্যা আজান দিতেই রুহি নিচে গেল!বাসায় গিয়ে চুপচাপ বসে আছে…রুহির আম্মু বুঝলো রুহির মন খারাপ তাই কিছু বললো না!কারন রুহি এখন রুহিকে কিছু জিজ্ঞাসা করলে হিতে বিপরীত হবে…

মুগ্ধ অফিস থেকে ফিরে ওর রুমে এসে বেডে মাথা নিচু করে বসে আছে!কালকে রুহির কথা গুলো বলার পর থেকে এক দন্ডের শান্তি পাচ্ছে না!মুগ্ধ কোন রকম ওর শার্ট টা খুলে বেডে ছুড়ে মেরে বেডে শুয়ে পড়ে চোখের উপর একহাত দিয়ে।বেডের উপর একপা ভাঁজ করা আর এক পা বেডের বাইরে।বেশকিছু সময় চোখ বন্ধ করে থাকতে থাকতে মুগ্ধ ওভাবেই ঘুমিয়ে পড়ে!….

রুহি মুগ্ধর রুমে এসে দেখে মুগ্ধ সাদা সেন্ডো গেঞ্জি
পরে চোখের উপর হাত রেখে শুয়ে আছে!রুহি আস্তে করে গিয়ে মুগ্ধর বসে মুগ্ধর মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে!রুহির হুট করে চোখ যায় মুগ্ধর হাতের দিকে!মুগ্ধর হাতে ব্যান্ডেজ করা।রুহি কিছুক্ষণ মুগ্ধর দিকে তাকিয়ে থেকে আস্তে করে একবার ডাকলো।মুগ্ধর সাড়াশব্দ না পেয়ে রুহি আস্তে করে মুগ্ধর হাত টা নিয়ে কাটা হাতে ঠোট ছুইয়ে দিলো।তারপর আবার রুহি মুগ্ধকে ডাকলো আর এবার একটু জোরেই ডাকলো! মুগ্ধ কারো ডাক শুনে চোখ খুলে তাকিয়ে দেখে রুহি বেডের পাশে দাড়িয়ে আছে।মুগ্ধ রুহিকে দেখে হুড়মুড়িয়ে উঠে বসে বেডে।

মুগ্ধ বেড থেকে উঠে রুহিকে বসতে বলে টাওয়াল গলাতে জড়িয়ে ড্রেস নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে যায়।রুহিও তারাহুড়ো করে উঠে মুগ্ধর ঘামে ভেজা শার্টটা নিয়ে কিছু সময় জড়িয়ে ধরে ওর বুকের সাথে তারপর কয়েকবার ঘ্রাণ নেয়!আর শার্টটাতে বেশ কয়েকটা আদরও দেয়।আর শার্ট টাকে জড়িয়ে ধরে মনে মনে বলে…
রুহিঃ ভালবাসি মুগ্ধ তোমাকে! আমি অনেক ভালবাসি!হাজার কষ্ট সহ্য করতে পারবো বাট তোমাকে হারানো কষ্ট আমি সহ্য করতে পারবো না।আমি নিজেকে তোমার মনের মত করে গড়ে তুলবো তাও আমাকে দুরে সরিয়ে দিও না।আমি সত্যি মারা যাবো তোমাকে ছাড়া!আমি পারবো না তোমাকে না দেখে থাকতে,আমি পারবো না তোমার শরীরের ঘ্রাণ না নিয়ে থাকতে….(শার্ট জড়িয়ে ধরে কেদে কেঁদে)

মুগ্ধ ওয়াশরুমে থেকে বের হয়ে রুহির সামনে বসে! আর বই বের করে পড়াতে থাকে!আজকে রুহি অযথা বকবক করে নি!মুগ্ধ যা বলছে ঠিক তাই করছে!মুগ্ধ রুহিকে পড়া দেখিয়ে দিয়ে পড়তে বলে।রুহি মাথা নিচু করে পড়তে থাকে!মুগ্ধ রুহির দিকে তাকিয়ে থেকে দেখে রুহির চোখ ফুলে আছে।মুগ্ধ রুহি পড়তে বলে নিচে চলে আর নিজে হাতে দুই মগ কফি করে আনে!মুগ্ধ জানে রুহি ওর হাতে কফি খেতে খুব ভালবাসে!

মুগ্ধ রুহিকে কফির একটা মগ এগিয়ে দেয়!রুহি মগটা নিয়ে পাশে রাখে!তারপর পড়াতে মন দেয়।মুগ্ধ রুহিকে কফিটা খেতে বললে।রুহি কোন কথা বলে নি।মুগ্ধ বুঝলো রুহির অভিমান হয়েছে।তাই আর কিছু বললো না!মুগ্ধ আজকে রুহিকে যা করছে রুহি শুধু ততটুকুই উওর দিচ্ছে। রুহি মুগ্ধকে সব পড়া করে দেয়। আর রুহি যখন পড়া শেষ করে চলে যাচ্ছিলো তখন মুগ্ধ রুহিকে বললো…
মুগ্ধঃ ড্রায়ারে চকলেট আছে নিয়ে যা…
রুহিঃভাইয়া ২৩ ঘন্টা আগেও আমি চকলেট খেতে পছন্দ করতাম! কিন্তু এখন আর করি না।তাই চকলেট গুলোও নিতে পারলাম না।তুমি বরং চকলেট গুলো অন্য কাউকে দিয়ে দিও।আমি বাসায় গেলাম..

#প্যারাময়_লাভ❤❤
#written_by_Nurzahan_akter_Allo
#part_8

রুহিঃভাইয়া ২৩ ঘন্টা আগেও আমি চকলেট খেতে পছন্দ করতাম! কিন্তু এখন আর করি না।তাই চকলেট গুলো নিতে পারলাম না।তুমি বরং চকলেট গুলো অন্য কাউকে দিয়ে দিও। আমি বাসায় গেলাম..

রুহি কথাটা বলে চলে যায়!মুগ্ধ রুহির কথা শুনে মুচকি হাসলো।তারপর রাতে ডিনার করে নিলো!মুগ্ধর ওর বারান্দায় গিয়ে দেখলো রুহির রুমের লাইন জালানো!মুগ্ধ কিছু বলছে না শুধু কিছু ভাবছে আর হাসছে। রুহি যে অভিমান করে আছে সেটা মুগ্ধ খুব ভালো করেই বুঝতে পারছে। মুগ্ধ ওর বারান্দায় দাড়াতেই দেখলো রুহি বারান্দায় আসলো!মুগ্ধ লুকিয়ে পড়লো!রুহি কাঁদছে বার বার চোখ মুছতে দেখে মুগ্ধ আবারও হাসলো।তারপর মুগ্ধ ওর রুমে গিয়ে শুয়ে পড়লো…..

রাত ১ঃ৩০…
মুগ্ধ রুহির পাশে শুয়ে আছে!আর রুহি মুগ্ধকে বালিশ মনে করে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে আছে।আর মুগ্ধ ওর প্রাণ-ভোমরার দিকে তাকিয়ে আছে।এই একটা দিন রুহি ওর সাথে ভাল করে কথাও বলেনি! আর মুগ্ধ ওকে বকা দিয়েছে বলে কান্না-কাটি করে চোখ মুখ ফুলিয়ে ফেলছে।নাকটা টিয়াপাখির নাকের মত লাল হয়ে আছে!রুহি এত গভীর ঘুমে আছে সে জানতেও পারলো না যে মুগ্ধ তার কতটা কাছে এসেছে!মুগ্ধ খুব সাবধানে রুহির কপালে একটা আদর দিলো….আর রুহির দিকে মনে মনে বলে।

মুগ্ধঃএত গুলো কথা বললাম তাই অভিমান করে বসে আছিস! আর তোকে এসব বলে যে আমি কতটা কষ্ট পেয়েছি তার হিসাব রাখিস।কেন বকলাম একবারো তো ভাবলিনা?এত দুষ্টুমির মাঝে,পড়াশোনা থেকে তুই কতটা দুরে চলে গেছিস সেটা তুই নিজেও জানিস না।আমি তোকে পিছিয়ে পড়তে দিবো না রুহি!আমি চাই আমার বউটা নিজের পায়ে দাড়াক!এজন্য তোকে ঠিক করতে আমার যা করা লাগে আমি তাই করবো।এই পাগলি আমি জানি তুই আমাকে ঠিক কতটা ভালবাসিস!আমি তোকে ভালবাসি কথাটা মুখে বলিনি! তাই ভাবিস যে আমি তোকে ভালবাসি না।তোর মাঝেই যে আমার ভাল থাকা লুকিয়ে আছে রে দুষ্টু বউ…. (মনে মনে)

মুগ্ধর মনে চাচ্ছে এখন রুহিকে বুকের ভেতর ঢুকিয়ে নিতে!আজকে রুহি ওর উপর রাগ করছে তাও আবার এই প্রথম।মুগ্ধও সরি বলবে না কারন মুগ্ধ চেয়েছিলো রুহির মধ্যে একটা জেদ আসুক।মুগ্ধ একদম ঠিক জায়গায় তীরটা মেরেছে আর রুহিও মুগ্ধর টোপটা গিলছে!মুগ্ধ খুব হাসি পাচ্ছে কারন তার ছোট্ট রুহি আজকে ওর উপর রাগ দেখিয়েছে।সেই ছোট থেকেই রুহি মুগ্ধ বলতে পাগল! আগে তো সবার সামনে বলতো…
রুহিঃওহহ মুগ্ধ বাইয়া (ভাইয়া)আমাতে একতা নাল(লাল) টুকটুকে শালি(শাড়ি) আর চুলি(চুড়ি) তিনে(কিনে) দাও না।
মুগ্ধঃকেন রে?শাড়ি আর চুড়ি দিয়ে তুই কি করবি??
রুহিঃআমি তোমাল নাল টুকটুকে বুউ সাজবো।(লজ্জা পেয়ে)
মুগ্ধঃকানের নিচে এমন একটা থাপ্পড় দিবো না!বউ সাজার কথা ভুলে যাবি।যা ভাগ এখান থেকে…
রুহিঃএভাবে বলছো কেন??যেদিন তোমার বুউ সাজবো সেদিন দেকবে চোখ ফেরাতে পারবে না।হাবলুর মত হা করে তাকিয়ে থাকবে।
মুগ্ধঃআমার বয়েই গেছে তোকে বউ বানাতে!এসব কথা আর একদিন বললে তোর ঠোঁট কেটে নিবো।
রুহিঃ আচ্ছা আর বলবো না!তবে আমিই তোমার বউ হবো!মিলিয়ে নিও….

কথাগুলো মনে করে মুগ্ধ হাসলো!মুগ্ধ রুহিকে প্রশ্চয় দেয় না।যদি মুগ্ধ একবার রুহির কথা রাজি হতো তো রুহি কিছুতেই ওকে ভয় পেত না।বরং আরো দুষ্টুমিতে মেতে উঠতো!আর দুষ্টমির মাএার বশে যে বড় কোন ভুল করে বসতো না এর কোন গ্যারান্টি নেই।আর আবেগ বসভূতি রিয়েল লাভ গুলোতেও নোংরামি চলে আসে।মুগ্ধ চাই সময় মত রুহিকে তার বউ করে আনতে।ততদিন থাকুক না মনের মধ্যে পুষে রাখা পবিএ ভালবাসাটা!এভাবেই মুগ্ধ আগলে রাখুক না তার পবিএ ভালবাসাকে….. ..

মুগ্ধ ভোর৪ টার দিকে ওর বাসায় চলে গেল!তারপর নামাজ পড়ে ঘুমিয়ে পড়লো।মুগ্ধর আম্মু ৯টার দিকে মুগ্ধকে ডাকলো কারন আজকে শুক্রবার অফিস নেই!মুগ্ধ ফ্রেশ হয়ে নিচে আসতেই দেখলো রুহির আম্মু বসে আছে!মুগ্ধ রুহির আম্মুর সাথে কথা বলে ড্রায়নিং টেবিলে বসে ব্রেকফাস্ট করে নিলো!তারপর মুগ্ধ ওর রুমে এসে রুহি ফোন দিলো।

মুগ্ধঃআমার বাসায় আয়
রুহিঃকেন??
মুগ্ধঃএত কথা বলতে পারবো না!আসতে বলছি আয়
রুহিঃহুমম

রুহি মুগ্ধর বাসায় আসলো!রুহি মুগ্ধর রুমে গিয়ে দেখলো মুগ্ধ নেই!রুহি নিচে এসে দেখলো মুগ্ধ রুহির আম্মু পাশে বসে পড়লো।মুগ্ধ রান্না ঘরে কফি বানাচ্ছিলো। রুহি নিচে এসে সোফাতে বসতেই মুগ্ধর মা রুহিকে জিজ্ঞাসা করলো।
মুগ্ধর আম্মুঃকি রে রুহি তোর মুখটা এমন শুকনো লাগছে কেন?
রুহিঃকই না তো!আমি ঠিক আছি (মন খারাপ করে)
রুহির আম্মুঃআমিও এত বার জিজ্ঞাসা করলাম আমাকেও বলছে না কি হয়েছে??মুখ কেমন ফুলিয়ে রাখছে।
মুগ্ধঃপড়া পারে নি তাই মেরেছিলাম এজন্য মুখ গোমড়া করে রাখছে।
রুহির আম্মুঃ ওহহ তাই বল!মেরেছিস বেশ করছিস
মুগ্ধর আম্মুঃ মুগ্ধ শুধু শুধু মারিস কেন মেয়েটাকে?একটু বুঝিয়ে বললেই তো হয়।

মুগ্ধর আম্মুর কথা শুনে রুহি ভ্য ভ্য করে কেঁদে দিলো!রুহির কান্না দেখে সবাই অবাকের অ হলো না কারন এটাও নতুন কিছু না।মুগ্ধর আম্মু মুগ্ধ চোখ টিপ দিয়ে চুপ থাকতে বললো!আর রুহিকে শুনিয়ে শুনিয়ে মুগ্ধকে বকা দিলো!মুগ্ধকে বকছে দেখে রুহির মুখেও হাসি ফুটলো।মুগ্ধ রুহির আম্মু দিকে তাকিয়ে বললো…

মুগ্ধঃমেজ আম্মু একটা কথা বলার ছিলো??
রুহির আম্মুঃহুমম বল!
মুগ্ধঃআমার কলেজের বন্ধুরা সবাই মিলে পিকনিকে যাচ্ছে! আর সবাই তার পরিবার থেকে একজন করে নিয়ে যাচ্ছে। তো তুমি যদি পারমিশন দাও তো আমি রুহিকে নিয়ে যেতে চাচ্ছি।
রুহির আম্মুঃএখানে পারমিশনের কি আছে?আমি জানি রুহি তোর সাথে সেইভ থাকবে।আমার কিছু বলার নাই। যা তোরা ঘুরে আয়
রুহিঃআমি যাবো না তোমার সাথে(মুগ্ধর দিকে তাকিয়ে)
মুগ্ধঃতোর ডিসিশন জানতে চাই নি!তোকে অর্ডার করছি।আজকে সন্ধ্যায় যাবো!যা চারদিনের থাকার মত জামাকাপড় গুছিয়ে নে।
মুগ্ধর আম্মুঃ তা মেয়ে কেউ যাচ্ছে তো নাকি সব ছেলেরা।
মুগ্ধঃহুমম আমার অনেক বন্ধুদের বোন যাচ্ছে! আর আমার অনেক মেয়ে ক্লাসমেটও যাচ্ছে।

রুহি তো মনে মনে সেই সেই খুশি!রুহি মনে মনে বলছে…
রুহিঃ ভালোই জন্যই তো আমাকে কালকে মেরেছো তাই রাগ করলাম না।ইসসস জানু তুমি আমাকে শুধু মার না কেটে ফেললেও তোমাকে কিছু বলবো না।বড় রা কত কি বলে সব কথা কানে নিতে নেই!দুষ্টুমির বয়সে দুষ্টুমি করবো নাতো পান মুখে দিয়ে বুড়ি সেজে ঘুরে বেড়াবো।আগে যতটুকু দুষ্টুমি করতাম এখন তার ডাবল দুষ্টমি করবো পারলে আটকে দেখাও জানেমান।আর সত্যি বলতে আমার আর এই জীবনে ভাল হওয়া হবে না।(দুষ্টু হাসি দিয়ে মনে মনে )

মুগ্ধ কথাটা বলে ওর রুমে চলে যায়।রুহি আর ওর আম্মুও বাসায় চলে যায়।রুহি চার হাত-পা ছড়িয়ে বেডে শুয়ে আছে!আর রুহির আম্মু রুহির ব্যাগ গুছিয়ে দিচ্ছে।রুহি বেডে থেকে ঠাস করে উঠে দৌড়ে মুগ্ধর বাসায় গেল!মুগ্ধ তখন সাওয়ার নিয়ে টাওয়াল পড়ে কেবল রুমে এসে দাড়িয়েছে! রুহি দুম করে মুগ্ধর রুমে ডুকে বলছে…

রুহিঃভাইয়া তুমি কি তোমার কাপড়ের ব্যাগ গুছিয়ে ফেলছো??
মুগ্ধঃউফফ!তোকে কতদিন বলবো হুটহাট করে আমার রুমে আসবি না!কতদিন বলবো নক করে আসতে! তোর কি সমস্যা হয় বলতো।একটা কথাও শুনিস না… (দাঁতে দাঁত চেপে)
রুহিঃ বলো না তোমার ব্যাগ কি গোছানো হয়ে গেছে!
মুগ্ধঃহুমমমম।

মুগ্ধ ড্রেস নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে পড়ে!আর রুহি মুগ্ধর কাপড়ের ব্যাগটা খুলে সব লন্ডভন্ড করে দেখে মুগ্ধ কি কি কালার ড্রেস নিয়েছে!রুহি সেইসব দেখে চলে গেল।আর মুগ্ধ ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে দেখে পুরো বেডে ওর ড্রেস গুলো ছড়ানো।মুগ্ধ আবার ওর ড্রেসগুলো গুছিয়ে ব্যাগ ঢুকিয়ে নিলো।মুগ্ধ সবুজ কালার একটা পান্জাবী আর সাদা চুরিদার আর চওড়া সাদা টুপি পড়ে নামাজে গেল।

রুহি মুগ্ধর সাথে বেড়াতে যাবে শুনে তার সব রাগ-অভিমান মন থেকে মুছে গেছে।রুহি বাসায় এসে মুগ্ধ যে কালার ড্রেস নিয়েছে রুহিও সেইম কালারের ড্রেস গুলো নিয়েছে!রুহি ব্যাগ গুছিয়ে সাওয়ার নিয়ে বারান্দায় এসে দাড়াতেই দেখতে পায় মুগ্ধ ওর দেওয়া সবুজ পান্জাবী পড়ে নামাজে যাচেছ। রুহির তো খুশিতে এখন বারান্দায় থেকে লাফ দিতে চাচ্ছে। রুহি নিজেকে সামলে মুচকি হেসে বললো…

রুহিঃ আমি সবার মত বোকামি করবো না মুগ্ধ! আমি তোমার উপর রাগ করে নিজেকে তোমার থেকে দুরে সরিয়ে রাখবো না!আমি মনে করেছিলাম তোমাকে আর বিরক্ত করবো না কিন্তু না! এখন এই মহূত থেকে আমি তোমাকে আরো বেশি করে জালাবো।আমি বোকাদের মত অভিমান করে তোমাকে হারাতে পারবো না!তবে আমাকে কষ্ট দেওয়ার মজা তোমাকে বোঝাবো!সেটা রাগ বা অভিমান করে না।কারন আমি একটা কথা সবসময় বিলিভ করি আর সেটা হলো…
রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন….

#প্যারাময়_লাভ❤❤
#written_by_Nurzahan_akter_Allo
#part_9

রুহিঃ আমি সবার মত বোকামি করবো না মুগ্ধ! আমি তোমার উপর রাগ করে নিজেকে তোমার থেকে দুরে সরিয়ে রাখবো না!আমি মনে করেছিলাম তোমাকে আর বিরক্ত করবো না কিন্তু না! এখন এই মহূত থেকে আমি তোমাকে আরো বেশি করে জালাবো।আমি বোকাদের মত অভিমান করে তোমাকে হারাতে পারবো না!তবে আমাকে কষ্ট দেওয়ার মজা তোমাকে বোঝাবো!সেটা রাগ বা অভিমান করে না।কারন আমি একটা কথা বিলিভ করি আর সেটা হলো…
রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন….

রুহি বারান্দায় দাড়িয়ে আছে! কারন মুগ্ধকে আর একবার দেখার সুযোগ মিস করতে চায়না।মুগ্ধ নামাজ শেষ রুহির বাবা আর মুগ্ধর বাবার সাথে কথা বলতে বলতে আসছিলো!মুগ্ধ সামনে তাকিয়ে দেখে রুহি বারান্দায় দাড়িয়ে ওদের দিকেই তাকিয়ে আছে!মুগ্ধ পকেট থেকে ফোন বের করে এমন একটা ভাব করে যেন রুহিকে দেখতেই পায়নি!আর রুহি ওর ফোনে জুম করে এমন ভাবে মুগ্ধর পিক তুলতে থাকে!আর এমন ভাব করে যেন রুহি ফোনে কিছু একটা দেখতে খুব বিজি!মুগ্ধ রুহির চালাকি বুঝতে পেরে মুচকি হেসে ওর মুখের সামনে ওর হাত দেয়!আর এমন ভাব করে যেন ওর মুখে খুব রোদ লাগছে।

রুহি চোখ মুখ খিচে মুগ্ধকে গালি দিতে শুরু করলো!আর এত গালি দিলো যে! মুগ্ধ শুনলে এতক্ষণে মুগ্ধর কান বয়রা হয়ে যেত।রুহির এতক্ষণ কষ্ট করে দাড়িয়ে থাকার প্ল্যানটাতে মুগ্ধ এক বালতি পানি ঢেলে মুখে দুষ্ট হাসির রেখা টেনে বাসায় ঢুকে পড়লো।রুহি তাও বেশ কয়রকটা পিক তুলছে! বাট মুগ্ধর মুখ টা ওর হাত দিয়ে ডাকা!রুহি একটা পিক জুম করে মুগ্ধর বুকে একটা আদর দিয়ে লাজুক হাসি দিলো।

মুগ্ধ ধূসর কালার শার্ট আর কালো জিন্স পড়ছে!হাতে একটা ওয়াচ চুল গুলোতে জেল দেওয়া।মুগ্ধ রেডি হয়ে বসে আছে কিন্তু রুহির আসার নামই নেই!মুগ্ধ রুহির বাসায় গেল রুহির রুমে ঢুকে দেখে ঠোঁটে লিপস্টিক লাগাচ্ছে! মুগ্ধ রুহির কাছে গিয়ে রুহির হাত থেকে লিপস্টিক নিয়ে ছুঁড়ে মারলো।তারপর টাওয়াল এনে জোর করে রুহির ঠোঁট মুছে দিলো!
রুহিঃআহহ্ লাগছে তো ভাইয়া!এমন খাটাশের মত করছো কেন???লিপস্টিক টা দিতে দাও…
মুগ্ধঃনা লিপস্টিক দিতে হবে না!আমি নিষেধ করছি যেহেতু তাই তুই এসব হাজবিবাজি দিবি না ব্যস!যাওয়ার আগে মার খেতে না চাইলে যা বলছি তাই শোন।
তারপর মুগ্ধ রুহির ড্রেসিং টেবিলের সামনে থেকে একটা চুলের কাটা নিয়ে বললো…

মুগ্ধঃচুল ছেড়ে রাখতে হবে না!তারাতারি চুল বেঁধে ফেল!ঝটঝট কর তা না হলে তোকে রেখে আমি চলে যাবো। (দাঁতে দাঁত চেপে)
রুহিঃকেন আমাকে তো চুল ছাড়াতে ভাল লাগছে ?আমি চুল ছাড়াই রাখবো। চুল বাধবো না…
মুগ্ধঃ ঠাস্! যাওয়ার আগে মারতে চাইছিলাম না তাও না মার তো তুই কথা শুনবি না।ফাজিল মেয়ে একটা (দাঁতে দাঁত চেপে)
রুহিঃ আচ্ছা চুল না বাধলে কি হবে??সব কত সুন্দর করে সেজে যাবে শুধু আমি বাদে। (গালে হাত দিয়ে)
মুগ্ধঃআমি যখন তোকে বলছি চুল বাধবি তো চুল বাধবি।আমি যখন বলছি লিপস্টিক দিতে হবে না!তো দিবি না। তবে চাইলে লিপ বাম দিতে পারিস।

রুহি মুগ্ধর দিকে তাকিয়ে মুখ ভেংচি দিয়ে চুল গুলোকে কাটা দিয়ে বাধলো!আর ঠোঁটে লিপবাম দিলো আর চোখে কাজল।তারপর দুজন রেডি হয়ে বেরিয়ে পড়লো!মুগ্ধ রুহিকে নিয়ে কলেজের সামনে এসে দেখে একটা বাস দাঁড়ানো!মুগ্ধকে দেখে সবাই হামলে পড়লো।তারপর সবাই বাসে উঠে বসলো আর বাস ছেড়ে দিলো।রাতে জার্নি টা রুহির খুব পছন্দের আজকে আবার মুগ্ধ আছে সাথে আর কি লাগে??

রুহি জানালার পাশে বসে আছে আর রুহির পাশে মুগ্ধ। বাস যাচ্ছে তার আপন গতিতে।বাইরে কত গাড়ি চলাচল কত মানুষ জন রাস্তায়!মাথার উপরে ওই দুর আকাশে বড় একটা থালার মত চাঁদ উঠেছে!জানালার পাশে চাঁদকে দেখে রুহি মুগ্ধ হাত টেনে হাত ধরে টেনে ইশারা করলে চাঁদটাকে দেখতে!মুগ্ধ দেখলো বাট কিছু বললো না।রুহি বললো…
রুহিঃ ভাইয়া চাঁদটা কত সুন্দর তাই না!
মুগ্ধঃ হুমমম।
রুহিঃ চাঁদটাও আমাদের সাথে যাচ্ছে! কত লোভী চাঁদ টা (খিলখিল করে হেসে)

রুহি বাসে থাকা সবার দিকে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে কিছু একটা দেখছে!তারপর রুহি আবার মুগ্ধকে ডেকে বললো…

রুহিঃভাইয়া শোন না..আর একটা কথা
মুগ্ধঃহুমম বল!কোন সমস্যা??
রুহিঃ বাসে যারা আছে তাদের কাউকে দেখে কেন মনে হচ্ছে না তারা ভাই-বোন।
মুগ্ধঃহুমম এখানে কেউ কারো ভাইবোন না! সবাই বফ-গফ!
রুহিঃতাহলে কি আমরাও??? (অনেক খুশি হয়ে)
মুগ্ধঃ বেশি বকবক না করে চুপচাপ বসে থাক!আর আমি তো প্রেম করি না যে আমার কেউ থাকবে!আর পিকনিকে যাওয়ার জন্য সবাইকে দুটো করে টিকিট দেওয়া হয়েছে!তাই তোকে নিয়ে এসেছি! শুধু শুধু টাকা নষ্ট হতো এজন্য…
রুহিঃ ওহহ! (মুখ ভেংচি দিয়ে)

মুগ্ধ ওর সিটের হাতল তুলে দিয়ে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছে। আর রুহি খুব সাবধানে মুগ্ধর পকেটে থেকে ফোন বের করলো! মুগ্ধর ফোন ঘেটে ঘুটে দেখবে তাই! বাট লক দেওয়া!রুহি বেশ কয়েক বার ট্রাই করলো বাট পারলো না লক খুলতে।তাই রেগে মুগ্ধ শার্ট টেনে ধরে বললো।

রুহিঃ কি কমা দামের ফোন ইউজ করো তুমি!আমি লক খুলতেই পারছি না।
মুগ্ধঃআমার ফোন কেন তোর হাতে??(ভ্রু কুচকে)
রুহিঃ গেম খেলবো তাই
মুগ্ধঃতোর ফোন কই??তোর ফোন থাকতে আমার ফোন তোকে দিবো কেন??
রুহিঃদাও না ভাইয়া প্লিজ! ফোনে কি এমন জিনিস রাখছো যে আমাকে দিতে চাচ্ছো না।সত্যি করে বলো.. (সন্দেহের চোখে তাকিয়ে)
মুগ্ধঃথাটিয়ে এক থাপ্পড় দিবো ফালতু কথা বললে।আমি লেইম কিছু ফোনে রাখি না।যে তোকে ফোন দিতে আমার ভয় লাগবে। (দাঁতে দাঁত চেপে)
রুহিঃওহহ! ফোনে রাখো নি বাট অন্য কোথাও তো রাখছো???
মুগ্ধঃআমার রুচি এত লেইম না। এবার বেশি বকলে কিন্ত সত্যি সত্যি সবার সামনে মার খাবি। (রেগে গিয়ে)
রুহিঃ হুমম পারোই তো শুধু বকতে আর মারতে!একটু ভালবাসলে কোন দেশ অশুদ্ধ হয়ে কে জানে(মন খারাপ করে বিরবির করে)

মুগ্ধ রুহির থেকে ফোনটা একটু আড়াল করে লক খুলে দিলো! রুহির অনেক চেষ্টা করে বাট দেখতে পারে নি। মুগ্ধ ওর ফোনে লক খুলে রুহির হাতে দিলো!তারপর মুগ্ধ আবার আড্ডা দিতে শুরু করলো।আর রুহি খুব মনোযোগ দিয়ে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে মুগ্ধর ফোন চেক করছে!মেসেজ অপশনে গিয়ে শুধু রবি আর গ্রামীন কোম্পানি মেসেজ পেলো!আর গ্যালারিতে গিয়ে মুগ্ধর চোখ বাধানো কিছু পিক পেল!এক ফাইল ঢুকতে গিয়ে দেখলো সেখানেও লক করা।রুহি মুগ্ধর আরেক দফা গালি দিয়ে আবার ফোন দেখার কাজে মনোযোগ দিলো।

মুগ্ধ খেয়াল করলো রুহি ওর কাঁধে মাথা দিয়ে আছে!মুগ্ধ রুহির মুখের দিকে তাকিয়ে দেখলো রুহি ঘুমিয়ে আছে!মুগ্ধ রুহির হাত থেকে ওর ফোনটা নিয়ে দেখলো রুহি ওর পিক দেখছিলো!মুগ্ধ মুচকি হেসে ওর ফোনটা হাতে নিয়ে পকেটে রাখলো।রুহি ঘুমের মাঝেই মুগ্ধর একটা হাত জড়িয়ে ধরিয়ে ধরলো আর মুগ্ধর কাঁধে মাথা রেখে নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছে! আর মুগ্ধ তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে!পাশের সিট থেকে আবির বলে উঠলো…

আবিরঃএত ভালবাসিস মুখে বলিস না কেন??
মুগ্ধঃমুখে বললেই কি ভালবাসা হয়। (মুচকি হেসে)
আবিরঃরুহি কিন্তু তুই ছাড়া কিছু বুঝে না।মেয়েটা তোকে খুব ভালবাসে…।
মুগ্ধঃহুমমম! জানিস আমি যদি ওকে বাসায় রেখে আসতাম তো বাসার সবার অবস্থা খারাপ করে দিতো। আমি ছাড়া ওকে কেউ থামাতে পারে না।আর রেগে গেলে তো কোন সেন্সই থাকে না।আমি না থাকলে ও পাগলামি শুরু করতো।আর সত্যি বলতে ওকে সাথে নিয়েছি কারন আমিও ওকে ছাড়া একদম থাকতে পারি না। (রুহির দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে)

প্যারাময় লাভ পর্ব ৪+৫+৬

বাসের মধ্যে সব লাইট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে!সবাই ঘুমাচ্ছে!মুগ্ধ রুহির কপালে একটা আদর দিয়ে ওদের সিটের মাঝখানে যে হাতলটা ছিলো সেটা তুলে দিলো।মুগ্ধ রুহির থেকে ওর হাতটা সরিয়ে নিলো! তারপর রুহির দিকে চেপে বসে রুহিকে জড়িয়ে ধরলো!আর রুহি এখন মুগ্ধর বুকে মাথা দিয়ে ঘুমাচ্ছে!মুগ্ধ রুহির মাথা বুকে সাথে জড়িয়ে নিয়ে মনে মনে বলছে…

মুগ্ধঃপৃথিবীর এর থেকে সুখ আর কিছু আছে বলে আমার মনে হচ্ছে না!তোকে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরলে যে এত শান্তি লাগে আগে জানতাম না তো!এ কোন নতুন অনূভূতির সাথে পরিচয় করে দিলি এখন।আমি দুষ্টু বউটাকে খুব তারাতারি আমার কাছে নিয়ে আসবো। দিন দিন আমি মারাত্মক একটা নেশার মধ্যে ডুবে যাচ্ছি! মুখে যতই বকা দেয় রুড বিহেব করি! আমার মন তে জানে আমি তোকে ঠিক কতটা ভালবাসি। (মনে মনে)

মুগ্ধ কথা গুলো ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়লো!হুট করে বাসের ঝাকুনিতে রুহির ঘুম ভেঙে যায়!চোখ টিপটিপ করে খুলে যখন দেখলো ও মুগ্ধ বাহুডোরে তখন সাথে সাথে চোখ বন্ধ করে ঘুমের ভান করে মুগ্ধকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো!মুগ্ধও মনে করছে রুহি ঘুমের মাঝে ওকে জড়িয়ে ধরছে এজন্য মুগ্ধও ওকে জড়িয়ে ধরে আবার ঘুমিয়ে পড়ে।

রুহি মনে মনে শুধু একটা কথায় ভাবছে!এখন এই সময় টা যেন এখানেই থেমে যাক!রুহি মুগ্ধের বুকে মাথা রেখে হৃদস্পন্দনের টিপ টিপ আওয়াজ শুনছে।এই প্রথম রুহি মুগ্ধর এত কাছে! রুহি সাবধানতার সাথে মুগ্ধর বুকে আদর দিয়ে দেয়।তারপর মুগ্ধ হৃদস্পন্দন শব্দ শুনতে শুনতে আবার একটা সময় ঘুমিয়ে পড়ে।

সকাল বেলা রুহির ঘুম ভেঙে দেখে ও সিটের হাতল জড়িয়ে ঘুমাচ্ছে। চারপাশে তাকিয়ে দেখে কেউ নেই বাসে!রুহি হুড়োমুড়িয়ে উঠে বলতে শুরু করলো।
রুহিঃওহ আল্লাহ! সবাই আমাকে রেখে কোথায় চলে গেছে রে!আমি এখন যাবো কি করে?আমি সারাজীবন বাসে থাকতে পারবো না রে! আমি বিয়ে করবো,আমার হালি হালি বাচ্চার শখ। আমারে কেউ বাসায় দিয়ে এসো রে!…..
কথাগুলো বলে রুহি ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো।মুগ্ধ পেছন থেকে এসে কিছু বলার আগেই রুহি ফট করে পেছন ঘুরলো আর মুগ্ধকে জড়িয়ে ধরে বললো…
রুহিঃ আমাকে একা রেখে তুমি কোথায় গিয়েছিলে! আমাকে যদি কেউ কিডন্যাপ করতো তখন কি হতো?? (জড়িয়ে ধরে কেঁদে) )
(ভাইয়া তোমাকে জড়িয়ে ধরার জন্য বাহানা করলাম!কিছু মনে করো না। মন চাচ্ছিলো খুব জড়িয়ে ধরতে তাই তোমাকে আসতে দেখেই কাঁদছিলাম।আমি কিন্তু ইনোসেন্ট কিছু করিনি!শুধু একটু জড়িয়ে ধরছি! কেউ দেখেনি আর কেউ জানবেও না আর যারা দেখছে তারা কিছু বলতেও পারবে না।দুষ্টু হেসে মনে মনে)

প্যারাময় লাভ পর্ব ১০+১১+১২