প্রণয়াসক্ত পূর্ণিমা সিজন ২ পর্ব ২৪

প্রণয়াসক্ত পূর্ণিমা সিজন ২ পর্ব ২৪
Writer Mahfuza Akter

সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছে। মধু সকলের চোখের আড়ালে ছাদে এসেছে। ছাদ এখন সম্পূর্ণ ফাঁকা। মধু চারপাশে সতর্ক দৃষ্টি বুলিয়ে পানির ট্যাংকের দিকে এগিয়ে গেল। পানির মেইন লাইন সে-ই দুপুরে বন্ধ করে দিয়েছিল। সেটা চালু করে পেছন ঘুরে তাকাতেই ভুত দেখার মতো চমকে উঠলো মধু। কাঁপা কাঁপা গলায় বললো,

“আ…. আপনি!”
মুগ্ধ মধুর শঙ্কিত ও ভীত মুখের দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছে। মধু আড়চোখে আশেপাশে তাকাচ্ছে। মুগ্ধ ভ্রু নাচিয়ে প্রশ্ন করলো,
“তুমি এখানে কী করছো?”
মধু আমতা আমতা করে বললো,

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

“আমি যা ইচ্ছে করি! আপনাকে কেন বলবো? এই প্রশ্ন তো আমি আপনাকে করবো! কারণ এটা আমার বাড়ি। বলুন! আপনি এখানে কী করছেন?”
“আমি তো তোমার পিছু পিছু এলাম! তুমি যেভাবে চোরের মতো এদিক-ওদিক তাকাতে তাকাতে ছাদে আসছিলে, দেখে সন্দেহ হলো। কিন্তু এখানে এসে বুঝলাম যে, আমার সন্দেহ-ই ঠিক!”

মধু ঢোক গিলে বললো, “মা…. মানে?”
“মানে হচ্ছে তুমিই যে আজকের সকল ঝামেলার মাস্টারমাইন্ড, সেটা আমি জেনে গিয়েছি। কেন করেছো এসব?”
মুগ্ধ সন্দিগ্ধ চোখে তাকিয়ে আছে। মধুর চোখে থাকা ভীতির মাত্রা কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। সে হাতে হাত কচলে বললো,

“একদম আজেবাজে কথা বলবেন না! তখন থেকে যা ইচ্ছে করছে, তা-ই বলে যাচ্ছেন! আপনি ডাক্তারি পড়ছেন! তাহলে সেটাই ভালো করে শিখুন না! এসব গোয়েন্দাগিরি করে আমার পেছনে লাগতে এলে আমিও ছেড়ে দেবো না আপনাকে হুহ!”
বলেই মধু মুগ্ধকে পাশ কাটিয়ে চলে গেল। মুগ্ধ ঘুরে মধুর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে সহাস্যে বলে উঠলো,

“আমার ভাইয়ার সাথে এতো জুলুম করলে আজকে তুমি? তোমায় আমার ভাবী বানিয়ে সব জুলুমের প্রতিশোধ নেবো।”
মধু পা থামিয়ে মুগ্ধর দিকে ভয়ংকর রাগী দৃষ্টিতে তাকালো। কিন্তু কিছু না বলে নীরবে ছাদ থেকে চলে গেল। মুগ্ধ আরেক দফা হেসে ছাদ থেকে নেমে যাওয়ার উদ্দেশ্যে পা বাড়াতেই ছাদের দরজা দিয়ে অরুণীকে প্রবেশ করতে দেখলো। অরুণীকে দেখা মাত্রই মুগ্ধর পা আপনাআপনি-ই থেমে গেল, দৃষ্টি শীতল হলো, গলা শুকিয়ে এলো।

অরুণী প্রথমে মুগ্ধকে খেয়াল করেনি। যখন তার চোখ মুগ্ধর অপলক চোখের ওপর পড়লো, অরুণী ভীষণ বিরক্ত হয়ে ছাদ থেকে চলে যেতে উদ্যত হলো। মুগ্ধ হুট করেই অরুণীর হাত আগলে ধরে শীতল কন্ঠে বললো,

“যাবেন না, প্লিজ! এখানে আমাকে আপনার অসহ্যকর লাগলে আমিই চলে যাচ্ছি। শুধু দুই মিনিট আপনাকে চোখ ভরে দেখবো। এরপর আমি চলে যাবো। শুধু দুই মিনিটের জন্য আমার চোখের তৃষ্ণা ও হৃদয়ের আকাঙ্ক্ষা মেটাতে দিন। কথা দিচ্ছি, দুই মিনিটের পর আর এক সেকেন্ডের জন্যও এখানে দাঁড়াবো না।”

সৌহার্দ্য হসপিটাল থেকে ফিরেছে সবে মাত্র। তরী জানালার পাশে দাঁড়িয়ে মনযোগী ভঙ্গিতে বই পড়ছে। তরী বই পড়ায় এতোটাই মগ্ন হয়ে গেছে যে, সৌহার্দ্যের আগমন সে এখনো টের পায়নি। সৌহার্দ্য সেটা দেখে হাসলো।

সে যথারীতি নিজের এপ্রোন আর স্টেথোস্কোপ টেবিলের ওপর রেখে গলা ঝেড়ে তরীর মনযোগ আকর্ষণের চেষ্টা করলো।
তরী চমকে উঠে সৌহার্দ্যের দিকে তাকিয়ে রইলো ক্ষণিকের জন্য। পরমুহূর্তেই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে বললো,

“ওহ! আপনি! আমি তো ভয়-ই পেয়ে গিয়েছিলাম!”
সৌহার্দ্য মুখে হাসি বজায় রেখেই ভ্রূ বাঁকিয়ে তাকালো। তরীর দিকে এগিয়ে এসে বলল,
“কেন? এখন ভয় পাচ্ছো না? আমাকে দেখামাত্রই তোমার ভয়গুলো হাওয়ায় মিলিয়ে যাওয়ার কারণ কী বলো তো?”
তরী অবুঝের মতো সৌহার্দ্যের দিকে তাকালো। সৌহার্দ্যের কথার আগামাথা বুঝতে না পেরে বললো,

“আপনাকে ভয় পাওয়ার কী আছে? আপনাকে ভয় পাবো কেন?”
সৌহার্দ্যের মুখের হাসি ধীরে ধীরে মিলিয়ে গেল। সে দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো,
“মানুষ অন্য একটা মানুষকে তখনই ভয় পায়, যখন মানুষের মনে অপরপক্ষের সেই মানুষটাকে দ্বিধা থাকে।

যখন এই ভয়টা তোমার মনে কাজ না করে, তখন এটাই ধরে নেওয়া হয় যে, তুমি অপরপক্ষের মানুষটাকে নির্দ্বিধায় বিশ্বাস করো। আর আমার মতে, এতো তাড়াতাড়ি কাউকে বিশ্বাস করতে নেই, চাঁদ! যেকোনো মানুষের প্রতি মনের মধ্যে মিনিমাম ভয় রাখাটা-ই লজিক্যাল।”

বলেই সৌহার্দ্য বিছানায় আরাম করে বসলো। বাহির থেকে দমকা হাওয়া থেমে থেমে আসছে। সৌহার্দ্যের চুলগুলো সেই হাওয়ায় বারবার এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে। তরী সৌহার্দ্যের দিকে তাকিয়েই ওর বলা ভারি ভারি কথা গুলোর মর্মার্থ বোঝার চেষ্টা করছে। তরী উদাস মনে ভাবতে ভাবতে সৌহার্দ্যের পাশে গিয়ে বসলো। সৌহার্দ্য নিজের অবসন্ন দেহটা বিছানায় এলিয়ে দিলো, মাথা রাখলো তরীর কোলে। তরী অপ্রস্তুত হলো, আঁটসাঁট হয়ে বসলো। সৌহার্দ্য চোখ বন্ধ করে বললো,

“নরমাল থাকো, চাঁদ! আমাকে তো ভয় পাও না তুমি! তার মানে আমাকে তুমি বিশ্বাস করো।”
তরী সৌহার্দ্যের মলিন মুখটার দিকে তাকিয়ে বললো,
“আমার কি আপনাকে বিশ্বাস করা উচিত না?”

সৌহার্দ্য চোখ বন্ধ রেখেই ঠোঁট প্রসারিত করে হাসলো। তরী হাতটা নিজের হাতে নিয়ে ওর সরু সরু আঙুলগুলো নিজের চুলের ভাজে গুঁজে দিয়ে বললো,
“বিশ্বাস শব্দটা অনেক ভারী, আকারে এক আকাশ সমান বড়। যখন আমরা কাউকে বিশ্বাস করি, তখন সেই মানুষটার হাতে নিজেকে ধ্বং*স করার অ*স্ত্রটাও তুলে দেই। আর বেশিরভাগ মানুষই সেটার অপব্যবহার করে।”

তরী সৌহার্দ্যের কথা শুনতে শুনতে সৌহার্দ্যের চুলের ভাজে নির্দ্বিধায় আঙুল চালাতে লাগলো। ভাবুক চোখে শূন্যে দৃষ্টি মেলে সে সৌহার্দ্যকে প্রশ্ন করলো,
“একটা মানুষ যাকে আমরা এতোটা বিশ্বাস করতে পারি, সে কীভাবে আমাদের ধ্বং*স করতে পারে? মানুষ কি এতোটা নি*ষ্ঠুর হতে পারে কখনো?”
সৌহার্দ্য তরীর কথা শুনে পুনরায় হেসে বললো,

“হিউম্যান সাইকোলজি সবসময় নিজের কথা ভাবে। নিজের জন্য মানুষ সব করতে পারে। সাইকোলজির ভাষায়, মানুষ স্বার্থপর। আসলেও তা-ই। কীভাবে জানো? তোমাকে আমার নিজের ব্যক্তিগত জীবনের একটা ঘটনা বলি। আমার নিজস্ব অভিজ্ঞতা বলতে পারো। আজ থেকে ছয়-সাত বছর আগের ঘটনা।

আমি তখন ইউকে-তে মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হয়েছি। মেডিক্যাল ক্যাম্পিং-এর জন্য প্রতি বছরই স্টুডেন্টদের নিয়ে বিভিন্ন দেশে সফরে যাওয়া হয় ওখান থেকে। সেই বছর ইন্ডিয়ার উত্তর প্রদেশে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সব সিনিয়র স্টুডেন্টরা গেলেও তাদের সাথে আমি আর আমার দুইজন ক্লাস মেট সিলেক্টেড হয়। আমি ভীষণ এক্সাইটেড ছিলাম, কারণ এটা আমার জন্য একেবারেই একটা নতুন অভিজ্ঞতা। কিন্তু আমার প্র্যাকটিক্যাল জ্ঞান তখনও বেশ কম ছিল। নতুন শিখছিলাম সব।

ক্যাম্পিং-এর শেষ তিনদিন হসপিটালে ডিউটি পড়েছিল আমাদের। আমি আর আমার সেই ক্লাসমেটদের একজন বিকেলের শিফটে ডিউটি নিয়েছিলাম এসিস্ট্যান্ট হিসেবে। বিকেলে বেশ স্বাভাবিকভাবেই আমরা নিজেদের কাজ করছিলাম। সেই হসপিটালটা একটা প্রাইভেট মেডিক্যাল কলেজও ছিল।

হঠাৎ সেই হসপিটালের একজন দায়িত্বরত ডক্টর বলে উঠলেন যে, যারা স্টুডেন্ট, তারা যেন দ্রুত ম*র্গের পাশের
থিয়েটারে যায়। ডোম ওখানে ওয়েট করছে। আমার পাশে থাকা আমার বন্ধুটা বাংলা না বুঝলেও সব মেডিক্যাল স্টুডেন্টদের ছুটে চলার ভঙ্গি দেখে বুঝতে পেরেছিল যে, ওদের এখন প্র্যাকটিক্যাল সেশন শুরু হবে।

ও আমাকে একপ্রকার জোর করে সেখানে নিয়ে গিয়েছিল। তবে আমিও একটু একটু কিউরিয়াস ছিলাম। তাই দু’জন লুকিয়ে সেই স্টুডেন্টদের টিমে জয়েন করেছিলাম। কিন্তু আমি ভাবতেও পারিনি, সেখানে আমার জন্য এতোটা অনাকাঙ্ক্ষিত একটা অভিজ্ঞতা অপেক্ষা করছে।”

বলেই সৌহার্দ্য লম্বা শ্বাস ফেলে তরীর দিকে তাকালো। তরীর চোখে মুখে কৌতুহল স্পষ্ট। সৌহার্দ্য ধীর গলায় বলতে শুরু করলো,
“রুমটায় কোনো আলো জ্বালানো ছিল না। বলতে গেলে কোনো আলোর ব্যবস্থা সেখানে ছিল না। অনেকটা অন্ধকারাচ্ছন্ন ঘরটায় প্রবেশ করলাম আমরা সবাই। স্যারের নির্দেশে ডোম বড় জানালাটা খুলে দিলো।

জানালা ভেদ করে উজ্জ্বল রোদ ঘরটায় প্রবেশ করতেই আমাদের চোখের সামনে থাকা বড় টেবিলটায় একটা সাদা কাপড়ে আবৃত মানব দে*হ দৃশ্যমান হলো। সেটা দেখামাত্র-ই আমি বুঝতে পারলাম, এখানে এখন ঠিক কী দেখানো হবে! ব্যাপারটা আমার জন্য তেমনও ভয়ের ছিল না। কারণ এর আগে আমাদের এরকম একটা ক্লাস নেওয়া হয়েছিল। যা-ই হোক! আমি স্বাভাবিক-ই ছিলাম।

কিন্তু সেই সাদা কাপড়টা যখন সরিয়ে ফেলা হলো, তখন আমি প্রচন্ড রকমের অবাক হয়েছিলাম। কারণ সেটা একটা মেয়ের মৃ*ত*দে*হ ছিল। মেয়েটার বয়স খুব সম্ভবত আঠারো পেরোয়নি তখনও। মেয়েটার ত্বকের ঔজ্জ্বল্য রোদে সবার চোখে বিঁধছিল।

নারীসৌন্দর্য্য আমি সেদিনই এতো কাছ থেকে প্রথম দেখেছিলাম! হঠাৎ স্যার বলে উঠলেন, ‘এখন আমরা এই মেয়েটার মৃ*ত্যুর কারণ বোঝার চেষ্টা করবো। আপনাদের কী মনে হয়? স্বাভাবিকভাবে মৃ*ত্যুর কারণ কী হতে পারে?’
অনেকে বিড়বিড় করে বলে উঠলো, ” স্যার, ব্রেইন স্ট্রোক?’

সবার কথা শুনে স্যার ডোমকে ইশারা করলো। ডোমের হাতে দু’টো দুই ধরনের ছু*রি আর একটা বাটালি। ডোম মেয়েটা কপালের চামড়া একটানে কে*টে চা*মড়াটা আলাদা করে ফেললো। বাটালি দিয়ে কয়েকটা বারি মে*রে মাথার হা*ড়গুলো ভেঙে ফেললো। ম*স্তি*ষ্কটা বের করে এনে সেটা ছু*রি দিয়ে কে*টে দশ-বারো ভাগে আলাদা করে ফেললো। জমাট র*ক্তের কোনো চিহ্ন পাওয়া গেল না। স্যার চিন্তিত ভঙ্গিতে বললেন, ‘স্ট্রোক নয়। তাহলে কী হতে পারে?’

‘স্যার, শ্বাসরোধ?”
ডোম এবার গলার চামড়া কা*ট*লো। বেশ গভীরে টর্চের আলো দেওয়ার পর হালকা কালচে একটা দাগ সবার চোখে পড়লো। স্যার বললেন,
‘ঠিক। শ্বাসরোধে মৃ*ত্যু ঘটেছে। কিন্তু এই শ্বাসরোধটা কীভাবে ঘটলো? কেউ কি মেয়েটাকে মারার চেষ্টা করেছে? নাকি অন্য কোনো ঘটনা আছে?”
“হয়তো কেউ মা*রতেই চেয়েছিল, স্যার!”

ডোম এবার ছু*রি হাতে নিয়ে গলার নিচ থেকে পে*টের নিম্নাংশ পর্যন্ত একটানে কে*টে আমাদের সামনে মেলে ধরলো, ঠিক যেন ব্যাগের জিপার খুলে ফেলার মতো। স্যার নিজেই হার্ট চেক করলেন। তাকে হতাশ দেখালো। এবার ডোম ইউরেটাস কে*টে সবাইকে দেখালো। সেখান থেকে বেরিয়ে এলো একটা ছোট্ট নবজাতকের দে*হ। তার লালচে অবয়ব আমি আজও ভুতে পারিনি। তার ছোট্ট টকটকে লাল মুখ, ছোট ছোট হাত, গুটি গুটি আঙুল দেখে আমার চোখ জ্ব*লছিল। সবার চোখে মুখে ছিল অপার বিস্ময়। স্যার বলে উঠলেন,

‘মেয়েটার গ*লায় দড়ির দাগ স্পষ্ট। মাতৃত্ব তো আনন্দের! মানুষ মা হলে নিজের জীবন কেন দেবে? একটা মেয়ে যখন জানতে পারে যে, তার গর্ভে আরেকটা প্রাণ বেড়ে উঠছে, তখন সে যেভাবেই হোক, সেই প্রাণটাকে সুস্থ-সবলভাবে পৃথিবীতে আনার সর্বাত্মক চেষ্টা করে।

তাহলে এই কিশোরী মেয়েটার বেলায় কী এমন হলো যে, মেয়েটা নিজের গর্ভের বাচ্চার কথা না ভেবে স্বার্থপরের মতো পৃথিবীর মায়া স্বেচ্ছায় ত্যাগ করলো? কেন এই মেয়েটা নিজের সাথে সাথে নিজের অনাগত বাচ্চাটাকেও মে*রে ফেলতে বাধ্য হলো? কেন এই কিশোরী মেয়েটা এই পদক্ষেপ নিলো বলুন তো?’

একটা মেয়ে বলে উঠলো, ‘মেয়েটা হয়তো বাচ্চাটাকে পৃথিবীতে আনতে চায়নি!’
স্যার বললেন, ‘তাহলে এবোর্শন করাটা অসম্ভব ছিল বলে কি আপনার মনে হয়?’
একজন বলে উঠলো, ‘তার মানে কি মেয়েটা অবিবাহিত ছিল? এজন্য এই অনাগত বাচ্চাটাকে তার বাবা সামাজিক স্বীকৃতি দিতে চায়নি?’
স্যার মলিন হাসলেন। বললেন,

‘মেয়েটা প্রতারিত হয়েছে। আর যখন প্রিয় মানুষটাই প্রতারক হয়ে চোখের সামনে ধরা দেয়, তখন সারা পৃথিবীটা-ই রঙহীন, প্রাণহীন আর অর্থহীন হয়ে যায়।’

প্রণয়াসক্ত পূর্ণিমা সিজন ২ পর্ব ২৩

ডোম ছু*রি ফেলে রুমটা থেকে বেরিয়ে গেল। স্যারও আমাদের নিয়ে সেখান থেকে চলে এলেন। আমি একবার পিছু ফিরে মেয়েটাকে দেখলাম। জানালা ভেদ করে কড়া রোদ আসছিলো। আর সেই রোদের আলোয় এক কিশোরী অসহায় মা আর তার অনাগত সন্তান নিঃশব্দে চিৎকার করে বিশ্বাসভঙ্গ আর হৃদয়ভঙ্গের তীক্ষ্ণ বিলাপে আমার হৃদয়ে ঝড় তুলে দিচ্ছিল।”

প্রণয়াসক্ত পূর্ণিমা সিজন ২ পর্ব ২৪ শেষ