প্রিয়দর্শিনী পর্ব ৩০

প্রিয়দর্শিনী পর্ব ৩০
প্রজ্ঞা জামান তৃণ

আবিদ শাওয়ার নিয়ে মাত্রই বের হয়েছে। তার পরনে সাদা টিশার্ট কালো টাওজার। সে ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে টাওয়েল দিয়ে চুল মুছতে থাকে। দর্শিনী তখন আদিবার হেয়ার ড্রাইয়ার দিয়ে ভেজা চুল শুকিয়ে নিচ্ছিলো। আবিদ হঠাৎ টাওয়েলটা সোফায় ছুঁড়ে ফেলে।

তারপর পেছন থেকে দর্শিনীকে গভীরভাবে আলিঙ্গন করে। সে শাড়ী ভেদ করে দর্শিনীর মেদহীন ফর্সা পেটে বলিষ্ঠ পুরুষালী হাতটা আলতো করে রাখে। দর্শিনীর নরম কাঁধে থুতনি রেখে, ইচ্ছাকৃত মাথা হেলিয়ে কাঁধে ভেজা চুলের পানি দেয় আবিদ। দর্শিনী আবিদের এমন স্পর্শে শিউরে উঠে। সে হেয়ার ড্রাইয়ারটা ড্রেসিংটেবিলে রেখে দিয়ে আবিদের হাতের উপর হাত রেখে বলে,

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

‘ছাড়ুন আমাকে! কী করছেন দরজা খোলা আছে!’
আবিদ দর্শিনীর চুলে মুখ ডুবিয়ে বলে,
‘উমমহুম কেউ আসবেনা বউ! বিবাহিত আমরা, আমাদের প্রাইভেসি আছে। তুমি শুধু আমাকে অনুভব করো।’
‘আপনার মুখে তুমি ডাকটা অদ্ভুত লাগে ম‍্যাজিস্ট্রেট সাহেব।’

‘কেনো এমন কেনো? আমিতো বলেছিলাম তোমাকে তুমি বলার অপেক্ষায় থাকবো। তুমি বলার জন‍্যই অপেক্ষা করছিলাম এতোদিন। ফাইনালি আজকে সেই দিন দর্শিনী।’ বলেই দর্শিনীকে নিজের সঙ্গে আরেকটু মিশিয়ে নেয়।
দর্শিনী অদ্ভুত লাগে বলতে, অদ্ভুত অনুভূতির কথা বুঝিয়েছে। আবিদের তুমি বলাতে দর্শিনীর কেমন আদুরে অনুভূতি হয়। বারবার শিউরে উঠে এটাই। আবিদ বুঝতে পারেনি বিষয়টি।

অকস্মাৎ আবিদের অবাধ‍্য স্পর্শে দর্শিনী কেঁপে উঠে। সে মুহূর্তেই চোখ বন্ধ করে নেয়। দুজনের নিঃশ্বাস গাঢ় হয়। অদ্ভুত অনুভূতি তবে সম্পূর্ণ হালাল এবং পবিত্র। ধীরে ধীরে হাতের স্পর্শ পেটের উপরে উপস্থিতি জানান দেয়। দর্শিনী উপলব্দি করে এই অবাধ‍্য হাতের স্পর্শকে থামানো উচিত। নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে তার। সে আবিদকে বাঁধা দিতে চায় তবে আবিদ থামেনি। দর্শিনী হঠাৎ হাতটা খপ করে ধরে ফেলে।

অকস্মাৎ পিছনে ফিরে মুখোমুখি হয়ে আবিদকে জড়িয়ে ধরে। ঘটনাটা এতো দ্রুত ঘটেছে যে আবিদ স্তব্দ হয়ে গেছে। আবিদের হার্টবিট যেন কয়েকগুণ বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। দর্শিনীর শরীরও মৃদু কাঁপছে। দর্শিনীর হার্টবিট দ্রুতগতিতে লাফাচ্ছে। আবিদ সেটা অনুভব করতে পারছে। আবিদ মুহূর্তে বৈদ‍্যুতিক শক খেলো মনে হচ্ছে। অসহনীয়, মারাত্মক অনুভূতি! আবিদ কাঁপাকাঁপা হাতটা দর্শিনীর পিঠে রাখে।

তারপর সর্বশক্তি দিয়ে দর্শিনীকে জড়িয়ে কাঁধে মুখ গুজে দেয়। কিছুক্ষণ পরে দর্শিনী মুখ তুলে আবিদের দিকে তাকায়। আবিদের নেশালো চোখ অনেক কিছু বলছে তাকে। সে আবিদের চোখের ভাষা সবটা বুঝতে পারছে, না বুঝার মতো কিছু নেই। সদ‍্য বিবাহিত দম্পতি তারা। বিয়ের আগে থেকে আজকের দিনের জন‍্য অপেক্ষা করেছে। অবশেষে শতবাঁধা পেরিয়ে তারা এক হয়েছে। আবিদ দর্শিনীর গালে আলতো করে হাত রাখে। হঠাৎ কারো পায়ের শব্দ পেয়ে দুজনে একে অপরের থেকে আলাদা হয়ে যায়। আদিবা আবিদের রুমের সামনে দাঁড়িয়ে বলে,

‘ভাইয়া আসবো?’
আবিদ জোরে নিঃশ্বাস ফেলে নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করে।পরবর্তীতে বোনের উদ্দেশ্যে বলে,
‘আসো।’
আদিবা এসেই দর্শিনীর উদ্দেশ্যে বলে,

‘চেন্জ করে ফেলেছো? গ্রেট! চলো ভাবিপু ডিনার রেডি খাবে চলো।’
বলেই দর্শিনীকে নিয়ে নিচে চলে যায়। আবিদ বুকের বাঁপাশে হাত রেখে কিছুক্ষণ নরমাল হওয়ার চেষ্টা করে। হার্টবিট নরমাল হতেই নিচে যাওয়ার উদ্দেশ্যে এগিয়ে যায়। মুখে তার মিষ্টিমধুর হাসি বিদ‍্যমান।

মুহতাসিম ভিলাতে আত্মীয়স্বজন সবাই আছে। কালকে সবাই চৌধুরী ভিলায় বউভাতে যাবেন। প্রিয়মা বেগম যেন দর্শিনীকে বিদায় দেওয়ার পরে ভেঙে পড়েছেন। বিদায়ের সময় মা-মেয়ে অনেক কেঁদেছিল।রেহানা বেগম তখন বোনকে সামলেছেন। এরমধ্যে প্রজ্জ্বলিনী তো অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। উজান তাদের পারিবারিক ডাক্তার ডেকে চেকআপ করিয়েছে। প্রজ্জ্বলিনী এখন অনেকটা ভালো আছে।

তবে বোনকে প্রচন্ড মিস করছে। উজান সবসময় তার পাশে থাকে। দর্শিনীর বাবা আশরাফ সাহেব কষ্ট পাচ্ছিলেন, আদরের মেয়েটা শ্বশুরবাড়ি চলে গেলো! প্রজ্জ্বলিনীও হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছে এজন্য সবারই মন খারাপ। দর্শিনীর দাদু আহমেদ মুহতাসিম তো নিজের রুমে আছেন। নাতনির বিয়ে নিয়ে অনেক এক্সাইটেড ছিলেন তিনি। তবে এখন মন খারাপ; দর্শিনীর বিদায়ের পরপরই নিজেকে রুমে বন্দি করেন তিনি। এককথায় সবাই প্রচণ্ড মিস করছে প্রিয়দর্শিনীকে। মুহতাসিম ভিলার আনন্দ ছিল দর্শিনী। তাকে ছাড়া সবার একটু খারাপ লাগবে স্বাভাবিক।

রাত দশটা বাজছে। চৌধুরী ভিলাতে আত্মীয়-স্বজনদের আগেই ডিনার হয়ে গেছে। তারা তাদের জন‍্য বরাদ্দকৃত রুমে আছে। এখন বাড়ির সবাই মিলে ড্রাইনিং টেবিলে বসে ডিনার করছে। আবিদ, দর্শিনী পাশাপাশি চেয়ারে বসে আছে। দর্শিনীর পাশে আদিবা বসে আছে। সে মাঝেমধ্যে দর্শিনীর সঙ্গে কথা বলছে। দর্শিনী চুপচাপ শুনছে তার কথা।

অনুসা বেগম দীর্ঘশ্বাস ফেললেন ছোট ছেলের জন‍্য। সবার মাঝে সে অনুপস্থিত। যত ব‍্যাস্ততা থাকুক না কেনো চৌধুরী পরিবারে সবাই একসঙ্গে খাবার খাবে। শাহরিয়ার চৌধুরীর নির্দেশ ছিল এটা। কিন্তু ছোট ছেলেটা আজ কোথায় আছে কেউ জানেনা। পরিবারের সবাই একসঙ্গে খাবার খাওয়ার মজাই আলাদা। খাওয়া শেষে সবাই নিজেদের রুমে চলে যায়। অনুসা বেগম দর্শিনীকে রান্নাঘরে আসতে বলেন। তিনি দর্শিনীর হাতে একটা ট্রে’তে এক গ্লাস দুধ এবং ছোট বাটিতে পায়েস দিলেন। আবিদ খাওয়ার পরে সবসময় মিষ্টি জাতীয় কিছু খেতে পছন্দ করে। সেটা যদি হয় পায়েস তাহলে কথায় নেই। আজকে যেহেতু বাসর রাত তাই দুজনের জন‍্য গরম দুধ।

দর্শিনী দরজা ঠেলে ভিতরে আসে। ঘরে এসি চলছিল তখন। সে ট্রে’টা ট্রি-টেবিলের উপর রেখে দরজা বন্ধ করে দেয়। আবিদ তখন বিছানায় বসে ল‍্যাপটপে কিছু একটা দেখছিল। সে দর্শিনীকে বেশ কয়েকবার আড়চোখে দেখে চোখ নামিয়ে নেয়। দর্শিনী তার সামনে পায়েস আর গরম দুধ রাখা ট্রে’টা এগিয়ে দিলো। আবিদ ল‍্যাপটপ বন্ধ করে ফেলে। সে ট্রে’টা সাইডে রেখে দর্শিনীকে পাশে বসিয়ে বলল,

‘এসেই কাজ করতে শুরু করেছ?’
‘এটা তো সামান্য কাজ! মা বললেন আপনি নাকি খাওয়ার পর মিষ্টি খান তাই পাঠালেন।’
‘হ‍্যাঁ! তবে আজ খেতে ইচ্ছে করছে না।’
দর্শিনী অবাক হয়ে জিগ্যেস করে,
‘কেনো খেতে ইচ্ছে করছে না? শরীর খারাপ লাগছে?’
‘আজ অন‍্য মিষ্টি খেতে ইচ্ছে করছে বউ!’

দর্শিনী উঠে যাবে এমন সময় আবিদ তার হাত ধরে ফেলে।
‘কোথায় যাচ্ছো?’
‘আপনি তো বললেন অন‍্য মিষ্টি খাবেন! নিচে গিয়ে নিয়ে আসি।’
আবিদ বলে উঠে,
‘নিচে যাওয়া লাগবে না বউ। আমার পাশে বসো!’

দর্শিনী আবিদের মুখে বারবার আমার বউ, আমার বউ শুনে লজ্জা পায়। এমন মারাত্মক অনুভূতি হয় কেনো? আবিদ চামচে করে পায়েস তুলে দর্শিনীর মুখের সামনে ধরে খেতে ইশারা করে। দর্শিনী চুপচাপ খেয়ে নেয়। এভাবে বেশ কয়েকবার খাওয়ার পর দর্শিনী হাত দিয়ে নিষেধ করে আর খাবেনা বলে। আবিদ জোর করেনা পানি খাইয়ে দেয় বাকিটা থেকে নিজে খেতে শুরু করে। পায়েস মুখে দিতেই আবেশে চোখ বন্ধ করে আবিদ। তার মা বরাবরই বেশি পরিমাণে কাজু কিসমিস দিয়ে সুস্বাদু পায়েস বানায়। আবিদের ফুপিআম্মুও সবসময় তার মায়ের হাতের বানানো পায়েস খেতে পছন্দ করতেন।

কিছুক্ষণ পরে আবিদ এবং দর্শিনী ওযু করে একসঙ্গে বিয়ের দুইরাকাত নফল নামাজ আদায় করে। বেশি সময় লাগেনি নামাজ আদায় করতে। বিয়ের দুইরাকাত নফল নামাজ পড়ে তারা রবের কাছে সুখে-দুঃখে সারাজীবন একসঙ্গে থাকার প্রার্থনা করে। স্রষ্টার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে।

নামাজ শেষে দর্শিনী ট্রে’টা নিচে রেখে আসে। প্রায় ঘন্টা খানেক পরে দর্শিনী রুমে আসে। রাত এগারোটা বাজছে। এতোক্ষণ আবিদ চাতক পাখির ন‍্যায় তার অপেক্ষা করেছে। দর্শিনীর কিছু করার ছিলো না। নিচে অনুসা বেগম তাছাড়া আবিদের কাজিনদের সঙ্গে না চাইতেও টুকটাক কথা বলতে হয়েছে। সে রুমে প্রবেশ করে দরজা লাগিয়ে দেয়। দর্শিনীকে রুমে দেখে আবিদ মৃদু রাগ করে বলে,

‘কাছে এসো!’
দর্শিনী বুঝতে পারছে আবিদ তার দেরী করার জন‍্য রাগ করেছে। সে আবিদের দিকে এগিয়ে এসে বলে,
‘কেনো? কিছু লাগবে?’
‘হ‍্যাঁ! মিষ্টি লাগবে মিষ্টি চাই! দেবে আমাকে?’
‘তাহলে আরেকটু অপেক্ষা করুন! আমি এনে দিচ্ছি।’

আবিদ তৎক্ষণাৎ দর্শিনীর হাত টেনে ধরে কোলের উপরে বসায়। আচমকা এমন হওয়ায় দর্শিনী একটু ভীত হয়। সে ভয় পেয়ে দুইহাত দিয়ে আবিদের কাঁধ আঁকড়ে ধরে। আবিদ প্রচন্ড ব‍্যাকুল হয়ে বলে,
‘দর্শিনী আমি স্পষ্টভাষী! আজ আমরা স্বামী স্ত্রীর পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছি। আমাদের মাঝে আজ কোন বাঁধা নেই। আছে শুধু দুজনের প্রতি একরাশ মুগ্ধতা, ভালোবাসা। আজকে এই রাতকে সাক্ষী রেখে তোমাকে সম্পূর্ণভাবে চাই। তোমার অস্তিত্ব জুরে শুধু আমি থাকব সারাজীবন এটায় আমার চাওয়া। ভালোবাসো আমাকে?’

আবিদের কন্ঠস্বর একটু ব‍্যাকুল শোনালো। দর্শিনী নিশ্চুপ নির্বাক। সে ঐভাবে আবিদের কাঁধ জড়িয়ে মৃদু মাথা নাড়ায়। আবিদ সম্মতি ভেবে মুহূর্তেই নিজের পুরুষালী ঠোঁট দিয়ে দর্শিনীর নরম কোমল লাল ঠোঁট জোড়া আঁকড়ে ধরে। সে আবিদের আকস্মিক আক্রমণে একদম বরফের ন‍্যায় জমে গেছে। আবিদ স্পষ্টভাবে দর্শিনীর থেকে অনুমতি নিয়ে নিয়েছে। দর্শিনীর বাঁধা দেওয়ার মতো অনুভূতি নেই। আবিদের বেপরোয়া স্পর্শে সে চোখ বন্ধ করে নেয়।

আবিদের থেকে ছাড়া পেতে চেষ্টা করে। কিন্তু পরক্ষণে ভালোলাগায় আবিদের কাঁধ আঁকড়ে আবিদকে সঙ্গ দিতে থাকে। আবিদ তাকে ঐভাবেই বিছানায় শুয়ে ঘনিষ্ঠ হয়ে অধর চুম্বন করতে থাকে। দুজনেই ভালোলাগার সমুদ্রে হারিয়ে কতো সময় পার করলো ধারণা নেই। বেশ কিছুক্ষণ পর আবিদ ঠোঁট ছেড়ে দর্শিনীর গলায় মুখ ডুবিয়ে দেয়। তাকে অজস্র লাভ বাইট, চুমু দিতে থাকে। দর্শিনী মৃদু আওয়াজ করে উঠে।

সে আবেশে এক হাত আবিদের কাঁধে রাখে। অন‍্যহাত দিয়ে আবিদের পিঠ আঁকড়ে ধরে। আবিদ তার সাড়া পেয়ে রোমাঞ্চিত হয়! দর্শিনীকে এতো কাছে নিজের বউ রূপে পেয়ে সে উন্মাদপ্রায় হয়ে গেছে। সে অনেক দিনের আশা, ইচ্ছে, আকাঙ্ক্ষা সবকিছুর পূর্ণতা দিতে চায় আজ। আবিদ যেন ঠিক করেছে তার স্বপ্নকন‍্যাকে আজ সম্পূর্ণ ভালোবাসার চাঁদরে মুড়িয়ে নেবে। নিজের অস্তিত্বের সঙ্গে মিশিয়ে নেবে।

জোৎস্নায় পরিপূর্ণ দীর্ঘরজনী। চাঁদের আলো বেলকুনির দরজা দিয়ে প্রবেশ করছে। অন্ধকার রুম অনেকটা আলোকিত হয়ে আছে। পুরো রুম জুড়ে গোলাপ রজনীগন্ধ‍্যা ফুলের মিষ্টি মন মাতানো সুবাস। আবিদ দর্শিনী দুজনে একে অপরকে চাঁদরের ন‍্যায় আঁকড়ে আছে। দুজনের ভারী নিঃশ্বাসের শব্দ শোনা যাচ্ছে। দুজনেই প্রথমবার ইন্টিমেট হয়েছে। দর্শিনী ব‍্যাথায় কেঁদে ফেলে। আবিদ দর্শিনীর ব‍্যাথাতুর মুখটায় অজস্র চুমু দেয়। সে দর্শিনীর সুখ মিশ্রিত অশ্রু মুছে দিয়ে, তাকে অজস্র আদরে ভড়িয়ে তুলে। দুজনেই আজ পরিপূর্ণ। আর কোনো দূরুত্ব অবশিষ্ট নেই। সবটা মিটিয়ে দিয়েছে আবিদ।

আদিবা নিজের রুমে ফেসবুক স্ক্রল করছে। হঠাৎ ফেসবুক সাজেস্টে একটা আইডি দেখে সে লাফিয়ে উঠে। তার চোখে কৌতূহল! এটা আর কারো আইডি নয়, ডাক্তার নিহাল রায়হানের। প্রফাইল পিকে ডাক্তার গেটআপে সাদা এপ্রোন পরিহিত ছবি দেওয়া। সবাই কী কমেন্ট করেছে আদিবা সব চেক করে দেখতে থাকে। সেই ছবিতে শতাধিক মেয়ের কমেন্ট। এরমধ‍্যে সরাসরি কমেন্টে প্রপোজ করেছে বেশ কয়েকজন।

আদিবা সেইসব মেয়েদের প্রতি ঈষদুষ্ণ ঈর্ষা অনুভব করে। নিহালকে আদিবার পছন্দ হয়েছিল বেশ। তাকে কেমন যেন বিদেশী বিদেশী মনে হয়। ফর্সা, লম্বা, ডাক্তার প্রফেশন একদম সবদিক দিয়ে পার্ফেক্ট। আদিবা দর্শিনীর কাছে শুনেছিল লোকটি দীর্ঘদিন ধরে অস্ট্রেলিয়াতে ছিল। এজন্যই তার মধ‍্যে ফরেইনার ভাইভস পাওয়া যায়। আজকে বিয়েতে দেখা হয়েছিল একদম চুপচাপ স্বভাবের। কী দাম লোকটার!

এক আকাশ সমপরিমাণ ইগো। আদিবার মৃদু রাগ হয়। আদিবা আজ মিষ্টি কালার লেহেঙ্গা পড়েছিল, সুন্দর পরিপাটি সাজ। কাজিনরা তো তার অনেক প্রশংসা করেছিল। কনফিডেন্ট হয়ে আদিবা আজ তার সঙ্গে পরিচিত হতে গেছিলো। কিন্তু অহংকারী লোকটি হুম, হ‍্যাঁ, চিনতে পেরেছি, ইটস ওকে, সমস্যা নেই এসব বলে কতো সুন্দর ইগনোর করে গেলো। আদিবা ছোট মনে হালকা ছ‍্যাঁকা অনুভব করে।

প্রিয়দর্শিনী পর্ব ২৯

সুযোগ পেলে সে প্রতিশোধ নিয়ে, নিহাল রায়হানকে বুঝিয়ে দেবে আদিবা জান্নাত কেমন হুউমম। আদিবা হুট করে একটা দুঃসাহসিক কাজ করে বসে। সে নিহালের আইডিতে রিকুয়েস্ট দিয়েছে। এখন তার হাঁসফাঁস লাগছে লোকটার যে ভাব; তার রিকুয়েস্ট একসেপ্ট করবে তো? তার বড্ড মন খারাপ লাগছে দুশ্চিন্তা হচ্ছে প্রচুর। একবুক পরিমাণ দ্বিধাদন্ড নিয়ে শুয়ে পড়ে আদিবা। ধীরে ধীরে সে ঘুমের রাজ‍্যে তলিয়ে যায়।

প্রিয়দর্শিনী পর্ব ৩১