প্রেমময় বিষ শেষ পর্ব 

প্রেমময় বিষ শেষ পর্ব 
মাহিমা রেহমান

সন্ধ্যা নেমেছে ক্ষাণিক পূর্বে।পাখিরা ডানা ঝাপটে আপন নীড়ে ফিরে যাচ্ছে।বেলা রুমি বেগমের কাছে গিয়ে বলে উঠে,
— মা আমি আর বেলি একটু বের হচ্ছি।
রুমি বেগম কিঞ্চিৎ ভ্রু কুঁচকে মেয়ের দিকে তাকিয়ে বলে উঠে,
— শুধু তোরা দুজন?
তখনই রয়াযের আগমন ঘটে।রায়াযকে দেখে কুটিল হেসে বলে উঠে,

— না না! আমি আর তিহান ভাইয়া যাচ্ছি একটু বাইরে।আসছি মা।।তাড়াতাড়ি ফিরে আসব।
কথাটা বলে বেলা যেই তিহান কে ডাকতে নিবে সহসা রায়ায বেলার হাত চেপে ধরে টানতে টানতে উপরে নিয়ে যেতে লাগে।বেলা কিঞ্চিৎ রেগে বলে উঠে,

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

— কি সমস্যা কি আপনার? হাত ছাড়ুন বলছি আমার?বার বার বিনা পারমিশনে গায়ে হাত দিচ্ছেন কেনো?ছাড়ুন বলছি।
রায়ায আগুন দৃষ্টি নিক্ষেম করে হিড়হিড় করে টানতে টানতে বেলাকে নিয়ে যেতে লাগে।নিজের রুমের কাছে এনে রুমের দরজা খুলে ধাক্কা মেরে মেঝেতে ফেলে দেয় বেলাকে।রাগান্বিত চোখে রায়াযের দিকে তাকায় বেলা।রায়ায এক হাঁটু ভাজ করে বেলার সমীপে বসে কিছুটা ঝুঁকে পড়ে বেলার দিকে।বেলা ভয়ার্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে রায়াযের দিকে।রায়ায অদ্ভুত এক হাসি হেসে বেলার দুই কাঁধ চেপে ধরে হুংকার ছেড়ে বলে উঠে,

— আজকাল খুব তাহিন তাহিন করছিস দেখছি?! তা তাহিন কি এমন মধু খাওয়ালো,,যে সারাদিন তাহিন তাহিন নামটাই জপে যাচ্ছিস।
বেলা তেজী কণ্ঠে বলে উঠে,
— ছিঃ! আপনার লজ্জা লাগছে না এসব নোংরা কথা বলতে?
রায়ায দুই দিকে মাথা নেড়ে না বুঝায়। পুণরায় বলে উঠে,
— বারে তুই করতে পারিস আর আমি বললেই দোষ?
বেলা অসহায় কণ্ঠে বলে উঠে,

— উনি আমার ভাই হয়!উনি আমাকে নিজের বোনের চোখে দেখে। নোংরা লোক কোথাকার !
কথাটা বলেই মুখ ফিরিয়ে নেয় বেলা।সহসা বেলার চোয়াল চেপে ধরে শক্ত কণ্ঠে বলে উঠে রায়ায,
— ভাই তো আমি ও হই তোর আর তুই ও আমার কাজিন সিস্টার লাগিস।তা আমাকে কি তুই ভাইয়ের নজরে দেখেছিস? আর না আমি তোকে!

কথাটা অপূর্ণ রেখেই বেলার মুখ ছেড়ে উঠে দাঁড়ায় রায়ায।বেলা অবাক নয়নে তাকিয়ে থেকে প্রশ্ন করে,
— কি যেন বলছিলেন? পুরোটা শেষ করুন।
আকস্মিক বেলাকে টেনে রুম থেকে বের করে দরজা বন্ধ করে দেয় রায়ায।বেলা রেগে রায়াযকে বকতে-বকতে রুমে চলে যায়।

পুনরায় আজ রাতে ছাদে আড্ডার আসর বসিয়েছে সবাই।আড্ডায় মেতে সবাই।সহসা বেলার ফোনে কল আসে।সবাইকে বলে বেলা সাইডে চলে আসে কথা বলার জন্য।তখনই বেলা শুনতে পায় কেউ গটগট পায়ে এদিকটায় আসছে।বেলার আর বুঝতে বাকি রইল না কে আসছে?তাই অকস্মাৎ রুহাশকে জিজ্ঞেস করে উঠে,
— তুমি আমাকে কতটুকু ভালোবাসা?

সাথে সাথে চোয়াল শক্ত হয়ে যায় রায়াযের।হাত মুষ্ঠিবদ্ধ করে দাড়িয়ে রয় কিছুটা দূরে।পূনরায় বেলা বলে উঠে,
— কত ভালোবাসো তুমি আমাকে আল্লাহ!! কেউও বুঝি আমাকে এতো ভালোবাসতে পারে আমার সত্যি জানা ছিল না।তোমার এত কেয়ার, এত ভালোবাসা দেখে আমি না জানি কবে তোমাকে ভালোবেসে ফেলি রুহাশ।

কথাটা শেষ হতে দেরি,,,একটা বিকট শব্দে কেঁপে উঠে বেলা।তাকিয়ে দেখে ওর ফোন ভেঙে-চুরে ছাদের মেঝেতে পড়ে আছে।এহেন বিকট শব্দে সকলে দৌড়ে ছুটে আসে।কাউকে কিছু বুঝতে না দিয়ে সহসা বেলাকে কাঁধে তুলে নেয় রায়ায। সবাই স্তব্ধ হয় তাদের যাওয়ার পানে তাকিয়ে থাকে।বেলা নিচে নামার জন্য ছটফট করতে থাকে।

বেলাকে গাড়িতে ধাক্কা মারে ফেলে দিয়ে,,নিজে গিয়ে ড্রাইভিং সিটে বসে পড়ে গাড়ি স্টার্ট করে রায়ায।বেলা ছটফট করতে থাকে। বারংবার প্রশ্ন করতে থাকে। অগত্যা বেলাকে চুপ করতে বেলার গায়ের ওড়না দিয়ে দুহাত বেধে, নিজের রুমাল দিয়ে মুখ বেধে দেয় রায়ায।গাড়ি এসে থামে একটি কাজী অফিসের সামনে।চমকে উঠে বেলা।

তখন থেকে অশ্রু বিসর্জন করে চলছে বেলা।থামার কোন নাম-গন্ধ নেই।বিরক্তিতে ললাট কুঁচকে বেলার পানে প্রশ্ন করে উঠে রায়ায,
— কি সমস্যা? তখন থেকে এমন ফ্যাচ ফ্যাচ করে কেঁদে যাচ্ছিস কেনো?
বেলা অগ্নি চোখে রায়াযের দিকে তাকিয়ে বলে উঠে,
— তাহলে আপনি কি এই সময় আমার নাচ আশা করছেন??
রায়ায ভাবহীন ভঙ্গিতে বলে উঠে,

— নাচতেই পারিস।কারণ এতো এতো সুন্দরী মেয়ে রেখে আমি তোকে বিয়ে করেছি।
এবার আরো জোরে কেঁদে দিল বেলা।বেলার দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল রায়ায।আকস্মাৎ বলে উঠল,
— কাছে আয় দেখি!!
বেলা মুখ ঘুরিয়ে নিল।ত্বরিত রায়ায বেলাকে হেঁচকা টান দিয়ে নিজের বুকে এনে ফেলল।বেলা চমকে রায়াযের পানে তাকিয়ে রইল। হঠাৎ বেলাকে রায়ান নিজ বক্ষে শক্ত করে চেপে ধরল।কিছুটা অবাক হলো বেলা।পরমুহুর্তে নিজেকে ধাতস্থ করে অভিমানী কণ্ঠে বলে উঠল,

— আমাকে তো আপনি ভালোবাসেন না! তাহলে বিয়ে কেনো করলেন?
কিঞ্চিৎ হাসলো রায়ায।বেলার কেশে ওষ্ঠের ছোঁয়া দিয়ে বলে উঠল,
— কিছু কথা না বলাই থাক।আর শোন আজ কিন্তু আমাদের বাসর!! তাই নিজেকে তৈরি রাখিস।
কথাটা কর্ণপাত হতেই বেলা লজ্জা সহিত রায়াযের বুকে পুনরায় মুখ লুকায়।

~ সমাপ্ত ~

[ আসসালমুআলাইকুম। কিছু কথা- আমি গল্পটাকে আরও সুন্দর আরও নান্দনিক করতে চেয়েছিলাম।কিন্তু আপনাদের এতো কথায় তা আর হলো না। আমি ধৈর্য্য হারিয়ে ফেলেছি।আপনাদের এত এত কথার মাঝে আমি নিজের খেই হারিয়ে ফেলেছিলাম।আর বেলা চরিত্রটা যেহেতু আপনাদের এতই অপছন্দ তাই ,,এখানেই সমাপ্তি টানলাম।কিছু জিনিস অ-সমাপ্তই থাক।ভালো থাকবেন।তবে আপনাদের জন্য আজকে একটা সারপ্রাইজ আছে।অপেক্ষায়
থাকুন আর আমার পেজে চোখ রাখুন]

 

প্রেমময় বিষ পর্ব ১৬

1 COMMENT

Comments are closed.