প্রেমময়ী তুমি পর্ব ৮

প্রেমময়ী তুমি পর্ব ৮
নিশাত জাহান নিশি

“এজন্যই তুমি রোজের কল রিসিভ করছিলে না! আর ঐদিকে বেচারি রোজ ভাবছিল তুমি হয়তো কোনো কাজে ব্যস্ত আছো! পৃথিবীতে কেউ ভালো না। সবাই ফেইক।”
নিহা জায়গা পরিত্যাগ করার পূর্বেই নূর খপ করে চাঁদের হাতটি চেপে ধরল! চাঁদকে নিয়ে হেঁটে সোজা নিহার মুখোমুখি দাঁড়ালো। নমনীয় গলায় নিহাকে বলল,,

“তুমি ভুল বুঝছ নিহা। এই যে মেয়েটিকে দেখছ সে আমার কাজিন। ঢাকায় নতুন এসেছে। তাই তাকে নিয়ে একটু ঘুরতে বের হয়েছিলাম। আর এর মাঝেই তুমি আমাদের দেখে নিলে। প্লিজ কিছু না জেনে শুনে অযথা আমার চরিত্র সম্পর্কে খারাপ মন্তব্য করো না। বিষয়টাকে স্বাভাবিকভাবে নেওয়ার চেষ্টা করো।”

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

নিহা কদাচিৎ হাসল! অবিশ্বাস্য গলায় বলল,,
“দেখে তো মনে হচ্ছে না তোমরা কাজিন। যেভাবে এখনো মেয়েটার হাত ধরে আছো!”
তাৎক্ষণিক চাঁদ নূরের হাতটি ছেড়ে দিলো! ব্যথীত দৃষ্টিতে নূরের দিকে তাকালো। নূরের রাগী দৃষ্টি চাঁদের কাতর দৃষ্টিতে সীমাবদ্ধ। চাঁদ নিজের কাজে ভীষণ অনুতপ্ত হলো। ছোটো খাটো একটা আঘাতও পেল। তবে সে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করল। জিজ্ঞাসু গলায় নিহাকে বলল,,

“আপু আপনি কী রোজ ভাবীর কোনো ফ্রেন্ড বা আত্নীয় হোন?”
নিহা গম্ভীর গলায় বলল,,
“ফ্রেন্ড হই। কেন?”
চাঁদ গলার স্বর নরম করল! মিষ্টি হেসে বলল,,

“কিছু মনে করবেন না আপু। আমি সত্যিই নূর ভাইয়ার কাজিন। গতকাল মাত্র ঢাকায় এসেছি আমি। আর আজই ভাইয়ার কাছে বায়না ধরলাম আমাকে নিয়ে একটু ঘুরতে বের হতে। তাই এক প্রকার বাধ্য হয়েই উনি আমাকে নিয়ে বের হলেন। দয়া করে আপনি আমার ভুলের জন্য নূর ভাইয়াকে অযথা ভুল বুঝবেন না।”

নিহা এখনো সন্দেহজনক দৃষ্টিতে চাঁদের দিকে তাকিয়ে রইল। তার বর্তমান ভাব-ভঙ্গি দেখে মনে হলো সে চাঁদের কথা বিন্দু পরিমানও বিশ্বাস করছে না! অন্যদিকে নূর হতাশায় মাথা হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। রাগে-জেদে-ক্ষোভে এক প্রকার ফোঁস ফোঁস করছে। চাঁদ এবার ঘাবড়ে গেল। কীভাবে পরিস্থিতি সামলাবে তাই ভাবতে লাগল। আবারও সে মিষ্টি হাসল। নিহার ডান হাতটি মোলায়েম ভাবে চেপে ধরে বলল,,

“আপু আপনি জানেন? নূর ভাইয়া রোজ ভাবিকে ঠিক কতটা ভালোবাসেন? আপনি হয়তো বিশ্বাস করবেন না নূর ভাইয়া রোজ ভাবির জন্য কতটা পাগল। হাঁটতে, বসতে, খেতে, যেতে, ঘুমাতে, ওয়াশরুমে যেতে সারাক্ষণ রোজ ভাবির নাম জপ করে!

মাত্র দু-একদিনে এসেই আমি বুঝে গেছি নূর ভাইয়া মন থেকে রোজ ভাবিকে ঠিক কতখানি চায়! এরপরেও আপনি আমার উপর বা নূর ভাইয়ার উপর কোনো সন্দেহ পুষে রাখবেন না আপু। বিষয়টাকে স্বাভাবিকভাবে নিবেন।”
নিহা ভ্রু কুঁচকালো। চাঁদের দিকে প্রশ্ন ছুড়ে বলল,,

“তোমার নামটা যেন কী?”
“জি চাঁদ। পুরো নাম নাহিমা আহমেদ চাঁদনী।”
“তো চাঁদ? তুমি কী এখন কথাগুলো রোজের সামনেও বলতে পারবে?”

“কেন নয় আপু? অবশ্যই পারব। সত্য কথা আমি একবার নয় বরং বার বার বলতে পারব। তাছাড়া ভাবির সাথে দেখা করার ভীষণ ইচ্ছে আমার। প্লিজ ভাবিকে একবার এখানে ডেকে দিবেন?”
নিহা এবার নূরের দিকে তাকালো। শক্ত গলায় নূরের দিকে প্রশ্ন ছুড়ে বলল,,
“কী নূর? রোজকে ডেকে দিব?”

নূর মলিন হাসল। স্বস্তির শ্বাস ছেড়ে বলল,,
“কেন নয়? ডেকে দাও। সেই সুযোগে আমাদের দেখটাও হয়ে যাবে। সারাদিন তাকে দেখলেও আমার মন ভরবে না!”
নিহা আর এক মুহূর্ত দেরি করল না। বাড়ির মেইন গেইটের ভেতর ঢুকে পড়ল। চাঁদ আহত দৃষ্টিতে নূরের দিকে তাকালো। মাথা নুইয়ে বলল,,

“সরি নূর ভাইয়া। আমি আসলে বুঝতে পারি নি মেয়েটি ভাবির কোনো ফ্রেন্ড হবে। জানলে হয়তো তখন ঐভাবে আপনার হাতটা ধরতাম না। আগ বাড়িয়ে আপুটার সাথে কথাও বাড়াতাম না। কিংবা উনার সাথে খারাপ আচরণও করতাম না। আসলে আমি ঐ সময় ভেলপুরি দেখে খুব বেশি উত্তেজিত হয়ে পড়েছিলাম। তাই হিতাহিত জ্ঞানশূণ্য হয়ে আপনার হাত ধরে ফেলেছিলাম। এর জন্য আমি সত্যিই দুঃখিত নূর ভাইয়া।”

“চুপ থাকো৷ একদম চুপ থাকো। এভাবে অনেক সম্পর্ক ভাঙার অভ্যেস আছে তোমার! সেদিন তো তুমি নিজের মুখেই বলেছিলে তোমার সব ফ্রেন্ডদের প্রেমের সম্পর্ক তুমি এভাবেই ভেঙে দিয়েছে! এখন আমার সম্পর্কটাও তুমি ভেঙে দিতে ওঠে পড়ে লেগেছ। আর যদি এটা সত্যিই হয় না চাঁদ? আমি কিন্তু তোমাকে আস্ত ছাড়ব না। এর ফল তোমাকে ভোগ করতেই হবে। খুব কঠিনভাবে ভোগ করতে হবে।”

“আমি সত্যিই এতকিছু বুঝতে পারি নি নূর ভাইয়া। প্লিজ আমার কথাটা বিশ্বাস করুন!”
“আমি তোমার অভিনয় বুঝতে পারি বুঝলে? আমার সামনে ভালো সাজার নাটক একদম করবে না!”
চাঁদ মাথা উঁচু করে নূরের দিকে তাকালো! চোখের কোণায় ভাসমান অশ্রুবিন্দু তার! চোখে জল এবং মুখে হাসি নিয়ে সে নূরের দিকে তাকিয়ে বলল,,

“যদি কখনো ইচ্ছে হয় তবে আমার সম্পর্কে জানার চেষ্টা করবেন। তখন হয়তোবা বুঝতে পারবেন আমি মানুষকে যতোটা দেখাই বা বুঝাই আমি ভেতর থেকে ততোটাও খারাপ কিংবা নিচু মনের নই! আমার ভেতরটা কেমন তা শুধু আমি-ই জানি! তা অন্য কারোর জানার কথা নয়।”
নূর চটকে গেল। তিরিক্ষিপূর্ণ বলল,,

“আবারও নাটক করছ তাই না? আমার সেমপ্যাথি আদায়ের চেষ্টা করছ?”
“আমি সিরিয়াস ভাইয়া! এই ভাঙা-গড়ার বিষয়গুলোতে আমি খুব সিরিয়াস। জায়গা বুঝে কীভাবে নিজের অবাধ্যতাকে গুটিয়ে নিতে হয় আমার খুব ভালোভাবেই জানা আছে।”

তৎপর দৃষ্টিতে নূর চাঁদের ব্যথীত দৃষ্টিতে তাকালো! সত্যিই চাঁদকে খুব সিরিয়াস দেখাচ্ছে। এর আগে কখনো নূর চাঁদকে এতটা সিরিয়াস ভঙ্গিতে দেখে নি। যা এই মুহূর্তে এসে দেখছে। নূর ভ্রু কুঁচকে নিলো। সন্দিহান দৃষ্টিতে চাঁদের দিকে প্রশ্ন ছুড়ে বলল,,

“তাহলে ঐদিন যে বলছিলে তুমি তোমার ফ্রেন্ডদের সব ব্রেকাপ করিয়েছ এসব বলার মানে কী?”
“আপনাকে ভয় দেখানোর জন্য বলেছিলাম। বলতে পারেন মজার ছলে! তবে এখন আমি সিরিয়াস নূর ভাইয়া। সো সিরিয়াস!”

এরমধ্যেই তাদের মাঝখানে রোজের আগমন ঘটল! অপরূপ সৌন্দর্যের অধিকারিণী রোজকে দেখা মাত্রই চাঁদ মুখটা হা করে নিলো। ড্যাব ড্যাব চাহনিতে রোজের দেহের সবচেয়ে মূল আকর্ষণ দীর্ঘলম্বা চুলগুলোর দিকে তাকালো! নূর মুগ্ধ চাহনিতে রোজকে দেখছে। এক প্রকার নিষ্পলক দৃষ্টিতে। দৃষ্টি যেন তার কিছুতেই সরছে না। রোজ প্রথমে বাঁকা চাহনিতে চাঁদের দিকে তাকালো। ভ্রু যুগল সরু করে পরমুহূর্তে নূরের দিকে তাকালো। বিস্মিত গলায় নূরকে প্রশ্ন ছুড়ে বলল,,

“তুমি এখানে?”
নূর মৃদু হাসল। রোজের দিকে অনেকখানি এগিয়ে এসে বলল,,
“তোমাকে দেখতে এলাম!”

রোজ হাসল। লজ্জায় টুকটুকে লাল হয়ে গেল। চোখ ঘুরিয়ে সে চাঁদের দিকে তাকালো। রুক্ষ গলায় বলল,,
“মেয়েটি কী নূর? নিহা বলছিল তুমি কোনো মেয়ের সাথে এসেছ।”
নূর ঘাবড়ে উঠে কিছু বলার পূর্বেই চাঁদ স্মিত হেসে রোজের মুখোমুখি দাঁড়ালো। আকস্মিকভাবে সে রোজকে জড়িয়ে ধরল। আহ্লাদী গলায় বলল,,

“আমি শুধু মেয়ে নই ভাবি! আপনার ননদও! আপনার সাথে দেখা করতেই এখানে এসেছি। সত্যি বলব ভাবি? আপনি দেখতে না খু্ব কিউট। চেহারাটা কেমন যেন বাচ্চা বাচ্চা টাইপ। খুব ভালোবাসায় মোড়ানো। এজন্যই নূর ভাইয়া আপনার জন্য এতটা পাগল!”

রোজা এই পরিস্থিতিতে কী করবে বুঝে উঠে পারছিল না! তাই সে অসহায় ভঙ্গিতে নূরের দিকে তাকালো। নূর ইশারায় বলল,,
“আমার কাজিন। জড়িয়ে ধরতে পারো।”
রোজ আর সংকোচবোধ করল না। সেও একইভাবে চাঁদকে জড়িয়ে ধরল। মিষ্টি হেসে বলল,,
“তুমি নূরের কাজিন হও?”

“জি ভাবি। আপনার সাথে দেখা হয়ে খুব ভালো লাগল। আপনি যেমন খুব মিষ্টি একটা মেয়ে দেখদে আপনার নামটাও খুব মিষ্টি। সাথে আপনার চুলগুলোও।”
রোজকে ছেড়ে দিল চাঁদ। সংকোচবোধ নিয়ে রোজের দিকে তাকিয়ে বলল,,

“আপনি আবার মাইন্ড করেন নি তো ভাবি? আপনাকে হঠাৎ এভাবে জড়িয়ে ধরাতে? আসলে আমার যাকে খুব বেশি পছন্দ হয় তাকে প্রথম দেখাতেই আমার খুব আপন মনে হয়। আমার হিতাহিতজ্ঞান খুব কম বললেই চলে। যার কারণে বাড়িতে প্রতি বেলায় আম্মুর কাছ থেকে বকা শুনতে হয়।”

“এতো কিউট একটা মেয়েকে কেউ বকতে পারে চাঁদ? সত্যি বলতে তুমিও খুব মিষ্টি চাঁদ। ঠিক নূরের মতো মিষ্টি। আচ্ছা তোমাদের ফ্যামিলির কী সবাই দেখতে এমন কিউট?”
চাঁদ ফিক করে হেসে দিলো! হাসতে হাসতে বলল,,

“উঁহু। আমরা সবাই নূর ভাইয়া এবং তোমার মতো এত কিউট নাহ্!”
নূর খানিক ব্লাশ করল! পেছনের চুল গুলো টেনে রোজকে উদ্দেশ্য করে বলল,,
“আমরা কী এখানে দাঁড়িয়েই কথা বলব রোজ? আশেপাশে কোথাও বসব না?”
রোজ জিভ কাটল। ব্যস্ত গলায় বলল,,

“না নূর। এখন হবে না। বাড়িতে আমার অনেক কাজ পড়ে আছে। আমরা না হয় অন্য একদিন রেস্টুরেন্ট বা অন্য কোথায় বসব। মন খুলে আড্ডা দিব। পরের বার কিন্তু তুমি আসার সময় এই দুষ্টু মিষ্টি চাঁদকেও সাথে করে নিয়ে আসবে!”
বিষন্ন মনে নূর মাথা দুলিয়ে সম্মতি জানালো।

নারাজ থাকা সত্ত্বেও রোজের থেকে বিদায় নিয়ে নূর এবং চাঁদ বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলো। বাইকের উঠার পরেও নূর ঘাড় বাঁকিয়ে রোজকে দেখছিল! তবে সবচেয়ে অবাক করার বিষয় হলো বাইকে উঠার পর থেকেই চাঁদ খুব চুপচাপ হয়ে গেল! সেইফটির জন্য নূরের কাঁধে পর্যন্ত হাত রাখল না।

অন্যদিকে নূর একধ্যানে বাইক চালাতে লাগল। রোজের স্নিগ্ধ মুখটি ভাবতে লাগল। আনমনেই মুচকি হেসে উঠল। চাঁদের হঠাৎ চুপচাপ হয়ে যাওয়ার পেছনেও তার কোনো ভাবান্তর হলো না! কিছুদূর যাওয়ার পর নূর হঠাৎ চাঁদের দিকে মনযোগ দিলো। ব্যগ্র গলায় বলল,,

“ওহ্ শীট! তোমার ভেলপুরি তো খাওয়া হলো না!”
চাঁদ মলিন হাসল। দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলল,,
“কোনো সমস্যা নেই নূর ভাইয়া। আমার পেট ভরে গেছে!”
“কিছুই তো খেলে না। পেট ভরল কীভাবে?”

“গাড়ি ড্রাইভ করার সময় কথা বলতে নেই নূর ভাইয়া! আপনি প্লিজ মনযোগ দিয়ে গাড়িটা চালান!”
চাঁদের আকস্মিক পরিবর্তন দেখে নূর খুব অবাক হলো! তবে তা প্রকাশ করল না৷ আপন মনে বাইক চালাতে লাগল। নির্দিষ্ট সময় পর বাড়ির মেইন গেইটের কাছে পৌঁছে যেতেই চাঁদ খুব দ্রুত বাইক থেকে নেমে পড়ল।

মাথা নুইয়ে বাড়ির ভেতর ঢুকে পড়ল। নূরও বাইকটি বাড়ির পার্কিং এরিয়ায় পার্ক করে বাড়ির সদর দরজার দিকে অগ্রসর হলো। এরমধ্যেই চাঁদ ভেজানো সদর দরজাটি খুলে বাড়ির ড্রয়িংরুমে চলে এলো। ড্রয়িংরুমে ঢুকতেই শুনতে পেল সাবরিনা আবরার এবং হাবিব আবরার খুব হেসে হেসে বলছেন দু’একদিনের মধ্যেই “মাহিন” দেশে ফিরছে!

নীড়ের বিয়ে এটেন্ড করতে! চাঁদ সেদিকে মনযোগ দিলো না। সোজা হেঁটে নিজের রুমে চলে গেল! অন্যদিকে নূর খুশিতে আত্মহারা প্রায়! কারণ দীর্ঘ পাঁচ বছর পর তার আরও এক ভাই দেশে ফিরছে। তাও আবার তার বড় ভাইয়ার বিয়েতে!
চাঁদ রুমে ঢুকে সোহানীকে কোথাও দেখতে পেল না। বিষন্ন মনে চাঁদ তার সেলফোনটি নিয়ে বারান্দায় দাঁড়ালো!

অজান্তেই চোখের জল ছেড়ে কান্নায় ভেঙে পড়ল! কাঁদতে কাঁদতে তার ফুফাতো ভাই “আয়মনের” নাম্বারে ডায়াল করল। প্রায় দু’বার রিং বাজতেই ঐপাশ থেকে আয়মন ব্যস্ত ভঙ্গিতে কলটি রিসিভ করল। মিহি গলায় বলল,,
“হ্যালো।”

চাঁদ হেচকি তুলে কেঁদে উঠল! অস্পষ্ট গলায় বলল,,
“ভাইয়া তুমি কবে আসবে?”
আয়মন অস্থির হয়ে উঠল! ঘাটতে থাকা ফাইলটি হাত থেকে নামিয়ে নিলো। উদ্বিগ্ন গলায় বলল,,
“তুই কাঁদছিস কেন চাঁদ? কী হয়েছে?”
“তোমাকে খুব মিস করছি ভাইয়া। আসলে তোমার মতো করে কেউ আমাকে বুঝে না ভাইয়া! তোমার মতো করে আমাকে কেউ তার আপনও ভাবে না।”

“হয়েছেটা কী বলবি তো?”
“কিছু না ভাইয়া। তোমাকে খুব মিস করছি।”
“সোহানী বকেছে তোকে? আন্টি, আঙ্কেল? নূর? অথবা নীড় ভাইয়া?”
“কেউ বকে নি আমাকে ভাইয়া। তবে তোমার কথা খুব মনে পড়ছে। রক্তের টান আলাদা হয় ভাইয়া! রক্ত যেভাবে রক্তকে বুঝে অন্যরা সেভাবে বুঝে না।”

“তুই কী নীড় ভাইয়া বা নূরের কথা বলছিস? মানে ওরা তোকে কোনো কারণে হার্ট করেছে?”
“তোমার মতো ভাইয়া পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার জানো? কারণ, তুমি আমাকে খুব বুঝো। ছোটবেলা থেকে আমাকে পরিচালনা করে আসছ। আমার সমস্ত অবাধ্যতার কারণগুলো বুঝার চেষ্টা করো।

আমার সব কথা বা দুষ্টুমি তুমি সিরিয়াসলি কখন-ই নিতে পারো না। সবসময় আমাকে খুব সুন্দর করে বুঝিয়ে আসছ। বাকিরা এত আপন না ভাইয়া। আমার দুষ্টুমিও তারা বুঝে না! আমার সব কথাই তারা সিরিয়াসলি নেয়!

প্রেমময়ী তুমি পর্ব ৭

ভাবে আমি খুব খারাপ। আমি তাদের সম্পর্ক ভাঙার চেষ্টা করি। অথচ ওরা এটা জানে না আমি একটা সম্পর্ক জোড়ার জন্য ঠিক কতখানি সেক্রিফাউজ করতে পারি। আমার ফ্রেন্ডকে পর্যন্ত বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার জন্য সাহায্য করেছিলাম!”

প্রেমময়ী তুমি পর্ব ৯