ফেরারি প্রেম পর্ব ৪৩

ফেরারি প্রেম পর্ব ৪৩
নিশাত জাহান নিশি

এক পর্যায়ে নীহারিকা ঘুম ভেঙে উঠল। চোখ খুলে নীহারিকা সামনে তাকাতেই নিহাল এবং মারজিনা বেগম ভয়ে পেয়ে গেলেন। কারণ, চোখ দুটি তার অসম্ভব লাল হয়ে আছে! যেন আগুনের ফুলকি বের হচ্ছে চোখ থেকে। নেশাখোরদের চেয়ে কোনো অংশে কম মনে হচ্ছেনা তাকে!

অর্ধখোলা চোখে নীহারিকা বারংবার নিহাল ও মারজিনা বেগমের দিকে তাকাচ্ছে। তবে পূর্ণদৃষ্টি মেলে সে পরিষ্কারভাবে কারো দিকে তাকাতে পারছেনা। ধোঁয়াশা ডুবে যাচ্ছে। বেসামাল ঘুমই যেন সরছেনা তার দু’চোখ থেকে। ভীষণ অস্বস্তি অনুভব হচ্ছে তার। মাথাটাও প্রচণ্ড ভার হয়ে আছে। পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়ার দরুন কেমন বমি বমিও পাচ্ছে। সে তার ভেতরের অস্বস্তিটা কাউকে খুলে বলতে পারছেনা।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

দিশাহীনভাবে কেবল চোখের পাতা খুলছে ও বন্ধ করছে! ভীরু চাহনি তার। নীহারিকার এই বেহাল দশা দেখে মারজিনা বেগম এবার প্রচণ্ড ভীতু হয়ে উঠলেন। নীহারিকার পাশে বসে তিনি নীহারিকার মাথায় হাত বুলালেন। চিন্তিত গলায় প্রশ্ন ছুড়লেন,

“কী হয়েছে মা? তোকে এমন অস্বাভাবিক দেখাচ্ছে কেন? শরীর টরীর খারাপ করল না তো?”
মায়ের হাতের আদুরে ছোঁয়া পেয়ে নীহারিকা এবার শান্তিতে চোখ জোড়া বুজে নিলো! ঘুম জড়ানো চোখে সে অস্ফুটে গলায় তার মাকে বলল,
“আমাকে আরও একটু ঘুমাতে দাও মা। খুব ঘুম পাচ্ছে আমার। প্লিজ বিরক্ত করো না আমায়।”
“কেন? রাতে ঘুমুসনি? এই সময় তো তোকে কখনও ঘুমাতে দেখিনি।”

মুহূর্তের মধ্যেই গভীর ঘুমে তলিয়ে গেল নীহারিকা। সেকেণ্ড ও যেন ব্যয় হলোনা। নিহাল নিশ্চুপ হয়ে এতক্ষণ যাবত নীহারিকার হাবভাব পর্যবেক্ষণ করছিল! নীহারিকার আচরণ কিছুই সুবিধার মনে হলোনা তার! ভেতরে ভেতরে দুঃশ্চিন্তা চেপে রেখে সে স্বাভাবিক গলায় তার মাকে বলল,
“থাক মা ওঠে এসো। তাকে আর বিরক্ত করোনা। তুমি বরং পিয়াসাকে দিয়ে রাতের খাবারটা তার রুমে পাঠিয়ে দাও। ক্ষুদা লাগলে পরে খেয়ে নিবে।”

এই বলে নিহাল হনহনিয়ে রুম থেকে বের হয়ে গেল। নীহারিকার গাঁয়ে সযত্নে কাঁথা টেনে দিলেন মারজিনা বেগম। আরও একদফা নীহারিকার দিকে তাকিয়ে তিনি রুম থেকে বের হয়ে গেলেন। যাওয়ার সময় রুমের দরজাটা টেনে দিয়ে গেলেন। কিছুক্ষণ পর পিয়াসা এসে নীহারিকার রুমে খাবারটা রেখে গেল। যাওয়ার সময় সূক্ষ্ম দৃষ্টি ফেলো ঘুমন্ত নীহারিকার দিকে ফিরে তাকালো পিয়াসা৷ দু-কদম এগিয়ে এসে নীহারিকার দিকে ঝুঁকল সে। দু-হাত নাড়িয়ে পরীক্ষা করল নীহারিকা জেগে আছে কী-না। কৌতূহলী হয়ে পিয়াসা এবার নীহারিকার হাত ধরে টান দিলো! তবুও জেগে উঠল না নীহারিকা! বিষয়টায় ভীষণ অবাক হলো পিয়াসা। কোমরে হাত গুজে সে হতভম্ব গলায় বলল,

“এই মেয়ে কী নেশা ভান করে না-কী? মরার মত এভাবে ঘুমুচ্ছে কেন? তাকে কেউ টেনে নিয়ে গেলে ও তো সে টের পাবেনা।”
এতটুকু বলেই পিয়াসা পা টিপে হেঁটে রুম থেকে বের হয়ে গেল। বেডের কার্ণিশে হেলান দিয়ে বসে আছে নিহাল। মাথায় হাত তার। কোনোকিছু নিয়ে ভীষণ চিন্তিত সে। যা তার মুখভঙ্গি দেখে ভালোই বুঝা যাচ্ছে। অমনি পিয়াসা দরজা ঠেলে রুমে ঢুকল। পিয়াসা খরখরে গলায় নিহালের দিকে প্রশ্ন ছুড়ল,

“আগামী সপ্তাহে আমাদের রিসিপশন। অথচ এই বিষয় নিয়ে এখনও কোনো আলোচনা হলোনা। এরেঞ্জমেন্ট করবেন কখন? সময় তো বেশি নেই।”
স্থির গলায় নিহাল প্রত্যত্তুরে পিয়াসাকে বলল,
“কাল কথা হবে এই বিষয় নিয়ে। দেখলে না নীহারিকা ঘুমুচ্ছে?”

“ঘুমুচ্ছে তো কী হয়েছে? বাড়িতে কী আর কোনো মুরুব্বি নেই? এখানে নীহারিকাকে এত গুরুত্ব দেওয়ার কী আছে?”
“কারণ নীহারিকাও এই বাড়ির একজন সদস্য। শুধু সদস্যই নয়, একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। আমরা তাকে ছাড়া কোনো সিদ্ধান্ত নিইনা!”
“ওহ্ আচ্ছা। তাহলে এই ব্যাপার? তো বলি যখন তার বিয়ে হয়ে যাবে তখন কী তাকে শ্বশুরবাড়ি থেকে ডেকে আনবেন সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য?”

“হ্যাঁ আনব! প্রয়োজনে তাকে ডেকেই আনবে। এই বিষয়ে নিয়ে আর কোনো কথা না বললে আমি খুশি হব। রাত হয়েছে অনেক। ঘুমিয়ে পড়ো।”
রাগে ফোঁস ফোঁস করে পিয়াসা ওয়াশরুমে চলে গেল ফ্রেশ হতে। নীহারিকার প্রতি দিন কী দিন তার ক্ষোভ বাড়ছে। তার চেয়ে নীহারিকাকে বেশী গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে এটাই হলো তার সবচেয়ে অপছন্দের কারণ! কিছুক্ষণের মধ্যে ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে এলো পিয়াসা। মুখ মুছতে মুছতে সে গভীর চিন্তায় ডুবে থাকা নিহালকে বলল,

“আচ্ছা শুনুন। রিসিপশনের বিষয়টা কিন্তু ফোনে আমার বাবা-মা কে বললে হবেনা। তাদের বাসায় গিয়ে তাদের দাওয়াত করে আসতে হবে। বিষয়টা মাথায় রাখবেন।”
“এই বিষয় নিয়ে আমাকে কোনো জ্ঞান দিতে হবেনা তোমার। কাল সন্ধ্যার দিকে আমরা ঐ বাড়িতে যাব। সরাসরি তাদের সাথে কথা বলে আসব।”

খুশিতে গদগদ হয়ে পিয়াসা পাশ ফিরে নিহালের পাশে শুয়ে পরল। চোখ বুজতেই সে ঘুমিয়ে পরল। কপাল থেকে হাত সরিয়ে নিহাল একবার আচ্ছন্ন দৃষ্টিতে পিয়াসার দিকে তাকালো।মুহূর্তেই পিয়াসার থেকে চোখ সরিয়ে নিহাল কপালটা ঘঁষতে লাগল। দুঃশ্চিন্তাগ্রস্ত গলায় সে মিনমিনিয়ে বলল,

“নীহারিকার ব্যাপারটা বুঝলাম না! তার চোখের দিকে তাকিয়ে আমার কিছু সুবিধার মনে হলোনা। ঘুম থেকে তো এমন হওয়ার কথা নয়! তবে কী আমি কাজের স্ট্রেস থেকে বেশি বেশি চিন্তা করছি? যার ফলে সবকিছুই আমার কাছে অস্বাভাবিক মনে হচ্ছে?”
নিজেকে কিছুটা রিল্যাক্স করে নিহাল উল্টো পাশ ফিরে শুয়ে পরল। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখল রাত বারোটা বাজছে। কিছুক্ষণের মধ্যে তার চোখেও ঘুম নেমে এলো।

রাত জেগে রূপল বাড়ির ছাদে দাড়িয়ে স্মোকিং করছে! ছাদের রেলিং ঘেঁষে তীব্র অস্থিরতা নিয়ে সে কেবল নিজেকে নিজে প্রশ্ন করছে! রাগের চোটে এ কী করে ফেলল সে? সরাসরি চুমু খেয়ে দিলো নীহারিকার গালে? ভীষণ অনুতাপবোধ কাজ করছে তার মধ্যে। পরবর্তীতে নীহারিকার মুখোমুখি সে দাঁড়াবে কী করে তা নিয়েও কঠিন প্রশ্ন ঘুরছে তার মাথায়। প্রতিশোধ নিতে গিয়ে নিজেই অনুশোচিত হয়ে যাবে তা ঘুনাক্ষরেও ভাবতে পারেনি রূপল! নিশ্চয়ই তার প্রতি নীহারিকার মনে এখন খারাপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে! এসব ভাবতেই যেন রূপলের মাথাটা ফট করে ধরে গেল। হাতে থাকা সিগারেটটি সে ছুড়ে ফেলে দিলো। মৃদু চিৎকার করে বলল,

“শিট। আমি তাকে দুটো হুমকি ধমকি না দিয়ে কিস করতে গেলাম কেন? কোন লজিকে আমি তাকে কিস করলাম? নিজের প্রতি নিজের রাগ হচ্ছে এখন! নেক্সট টাইম আমি তার মুখোমুখি দাড়াব কীভাবে? আর সে ই বা আমাকে কীভাবে নিবে? ধ্যাত। নিজের গালে এখন নিজেরই চড় মারতে ইচ্ছে করছে!”

সামনের চুলগুলো টেনে ধরে রূপল বিধ্বস্ত অবস্থায় ছাদে কিছুক্ষণ পায়চারী করল। অতঃপর কিছু একটা ভেবে সে প্যান্টের পকেট থেকে ফোনটি বের করে নীহারিকার নাম্বারে ডায়াল করল। অমনি ঐ পাশ থেকে নীহারিকা সঙ্গে সঙ্গেই কলটি তুলল! রূপলকে সম্পূর্ণ অবাক করে দিয়ে নীহারিকা ভয়ে কাঁদতে কাঁদতে আলুথালু গলায় বলল,
“আমি আর পারছিনা রূপল! মনে হচ্ছে কেউ আমার গলা চে’পে ধরছে। আমাকে মে’রে ফেলার চেষ্টা করছে। প্লিজ হেল্প মি রূপল প্লিজ!”

হতবিহ্বল হয়ে রূপল ধীর হয়ে দাড়িয়ে রইল। মাথা কাজ করছিলনা তার। নীহারিকা এসব কী বলছে? কেন বলছে? কী হলো তার? কণ্ঠস্বর শুনে তো মনে হচ্ছেনা সে মজা করছে। তবে কী তার সাথে সাংঘাতিক কিছু ঘটছে? অস্থির হয়ে রূপল প্রশ্ন ছুড়ল,

“হোয়াট? কোথায় আপনি?”
“বাবাবাসায়! লোকটা আমাকে রুম থেকে বের হতে দিচ্ছেনা রূপল। কেউ আমার চিৎকারও শুনতে পারছেনা। প্লিজ আপনি আসুন। মা-বাবা ভাইয়া-ভাবিকে বলুন আমাকে বাঁচাতে! আমার খুব ভয় করছে।”
নীহারিকার আতঙ্কিত কথাবার্তা শুনে রূপল মরিয়া হয়ে উঠল। আর একদণ্ড ছাদে না দাড়িয়ে থেকে সে দৌড়ে ছাদ থেকে নেমে গেল। ফোনে থাকা ঘাবড়ানো নীহারিকাকে শান্ত স্বরে বলল,

“এই নীহু। আপনি প্লিজ শান্ত হোন। আমি আসছি। কিছু হবেনা আপনার।”
বলেই রূপল কলটি কেটে দিলো। ঝড়ের বেগে বাসা থেকে বের হয়ে সে তার বাইক নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে গেল। নিহালের নাম্বারে লাগাতার কল করতে লাগল সে। তবে ঐ পাশ থেকে কেউ কলটি তুললনা। বিরক্ত হয়ে রূপল বাইকটি ফুল স্পিডে ছেড়ে বলল,
“ডেম ইট। জিজু কলটা কেন তুলছেনা?”

পিয়াসার নাম্বারে কল দেওয়ার পরেও ঐ একই অবস্থা হলো! কলটি বেজে যাওয়ার পরেও ঐ পাশ থেকে কেউ কলটি তুললনা। ঐ বাড়ির আর কারো নাম্বার রূপলের কাছে না থাকায় রূপল আর কাউকে কল করতে পারল না। এভাবে কাজ হবেনা তাই রূপল জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাইকের স্পিড যতটা সম্ভব বাড়িয়ে দিলো।

গভীর রাত তখন। রাস্তা মোটামুটি ফাঁকা থাকায় রূপল অনায়াসেই দুর্ঘটনার সম্ভাবনা এড়িয়ে বাইকটা টান দিয়ে কোনো রকমে নীহারিকাদের বাড়ির সামনে এসে পৌছালো। বাড়ির মেইন গেইট যদিও ভেতর থেকে তালা বদ্ধ ছিল তবে এই মুহূর্তে রূপল গেইট টপকে বাড়ির ভেতর ঢুকে গেল! হাতের কিছু কিছু জায়গায় গেইটের ধারালো অংশ লেগে হাত কেটে গেছিল তার! টপটপ করে র’ক্ত ঝরছিল হাতের পিনকি বেয়ে!

সেদিকে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই রূপলের। নীহারিকার অসহায়ত্বে ভরা সেই আকুতি মাখা কণ্ঠ রূপলের কর্ণকুহরে বারংবার প্রতিধ্বনিত হচ্ছিল। নিজেকে সামলাতে পারছিলনা সে! নীহারিকাকে রক্ষা করাই এখন তার একমাত্র লক্ষ্য হয়ে দাড়ালো! রূপল আদোতেই এখন নিজের মধ্যে নেই। কোন সে টানে সে এত মরিয়া হয়ে উঠল তা এখন তার ভাবনার অতীত।
বাড়ির সদর দরজাও ভেতর থেকে লক করা ছিল।

অস্থির হয়ে রূপল সদর দরজায় ক্রমাগত টোকা মারতে লাগল। পিয়াসার নাম ধরে ডাকতে লাগল। এতেও কাজ হলোনা বলে রূপল শরীরের সমস্ত শক্তি কাজে লাগিয়ে বাড়ির সদর দরজায় জোরে এক লাথ মারল! রূপলের বিধ্বংসী চিৎকার এবং দরজায় লাথ পাওয়ার শব্দ পেয়ে নিহাল ঘুম ভেঙে তাড়াহুড়ো করে উপরের তলা থেকে দৌড়ে নিচ তলায় নেমে এলো! বাড়ির সবাইও এতক্ষণে নিচে চলে এলো। ক্ষিপ্ত হয়ে নিহাল সদর দরজাটি খুলতেই বিপর্যস্ত অবস্থায় রূপলকে দেখতে পেল। অমনি নিহাল তাজ্জব হয়ে রূপলের দিকে প্রশ্ন ছুড়ল,

“কী ব্যাপার রূপল? তুমি এতরাতে?”
রসকষহীন গলায় রূপল তার জিজুকে বলল,
“কী খেয়ে ঘুমান আপনারা হ্যাঁ? কখন থেকে কল করছিলাম আপনাদের? দরজা ধাক্কাচ্ছিলাম শুনেন নি?”
প্রত্যত্তুরে নিহালকে কিছু বলার সুযোগ দিলো না রূপল। দৌড়ে সে বাড়ির দু-তলায় ওঠে গেল। উপস্থিত সবাই হতভম্ব হয়ে রূপলের কাজকর্ম দেখছিল। নিহালও এবার অস্থির হয়ে রূপলের পিছু পিছু নীহারিকার রুম অবধি চলে গেল।

ড্রিম লাইট জ্বলছে রুমে। পুরো ঘর এলোমেলো হয়ে কাপড়চোপড় এদিক ওদিক ছিটিয়ে আছে। বিছানার এক পাশে বসে নীহারিকা হাঁটুর উপর মাথা ঠেকিয়ে ভয়ে কাঁপছে! আর আবোলতাবোল কী যেন বিড়বিড় করে বলছে। পুরো রুম জুড়ে ভয়ঙ্কর একটি পরিবেশ বিস্তরণ করছে। ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে রূপল এবং নিহাল ধীর পায়ে হেঁটে নীহারিকার কাছে এগিয়ে গেল। অমনি নীহারিকা মাথা তুলে তার আগুন ঝরা দৃষ্টিতে রূপল এবং নিহালের দিকে তাকালো। চোখেমুখে তার ঘোর আতঙ্ক কাজ করছে! চোখ থেকে টলটলিয়ে জল পরছে। ঘেমে নেয়ে একাকার। শ্বাস প্রশ্বাস খুব দ্রুত বেগে ওঠা নামা করছে। হুট করে সে সামনে থাকা রূপলের হাতটি টেনে ধরল! বিচলিত গলায় বলল,

“প্লিজ হেল্প মিস্টার রূপল। লোকটা আমাকে মে’রে ফেলবে।”
ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে দাড়িয়ে রইল নিহাল। নিস্তব্ধ, নির্বিকার। নীহারিকার কথার আগামাথা কিছুই বুঝতে পারল না সে। নীহারিকার এই করুন অবস্থা দেখে রূপল কেমন যেন অন্যরকম হয়ে গেল। নরম হয়ে এলো সে। এই অবস্থায় নীহারিকাকে কোনো প্রশ্নে জড়াতে চাইলনা রূপল। বরং নীহারিকার সব কাল্পনিক চিন্তাধারা বিশ্বাস করে নিলো।

ফেরারি প্রেম পর্ব ৪২

বিচার বুদ্ধি বিবেচনা ভুলে সে ঝট করে নীহারিকার হাতটা আঁকড়ে ধরল! শিথিল দৃষ্টিতে নীহারিকার দিকে তাকালো। নীহারিকার ভরসা অর্জন করে সে বিনা দ্বিধায় নীহারিকার গালে হাত রাখল! অমনি নীহারিকার চোখ থেকে দু-ফোঁটা অশ্রুকণা গড়িয়ে পরল রূপলের হাতে। নীহারিকাকে শান্ত করার জন্য রূপল এবার নীহারিকার মাথায় আলতো হাত বুলালো। শান্ত স্বরে বলল,
“বি কুল নীহু। আমি থাকতে কেউ আপনার কোনো ক্ষতি করতে পারবেনা। প্লিজ ট্রাস্ট মি।”

ফেরারি প্রেম পর্ব ৪৪