বিন্দু থেকে বৃত্ত সিজন ২ পর্ব ৫৯

বিন্দু থেকে বৃত্ত সিজন ২ পর্ব ৫৯
জাওয়াদ জামী

কুহুর পালস চেইক করে ডক্টর তাহমিদকে জানায়, কুহুর অবস্থা আগের থেকে অনেক ভালো। আরে ওর পালস রেট খুব কম ছিল। কিন্তু আজকে সেটা স্বাভাবিক দেখাচ্ছে। এছাড়াও ডক্টর অন্যান্য কয়েকটি টেস্ট করলেন। এরপর তিনি জানান, ওর সুস্থ হয়ে উঠা এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।

আফরোজা নাজনীন আর তাহমিনা আক্তার আইসিইউর সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। তাহমিদ চেম্বারে বসেছে। আফরোজা নাজনীন কাতর চোখে তাকিয়ে আছেন বেডে নিথর দেহে শুয়ে থাকা কুহুর দিকে। তাহমিদ সকালে তাকে ফোনে জানিয়েছিল, কুহু একটু একটু করে রেসপন্স করছে। সেই খবর শুনেই তিনি তাহমিনা আক্তারকে নিয়ে ছুটে এসেছেন মেডিকেলে।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

আনানরা এসেছে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ছেড়ে অনেকদূর। ওরা মেঘনা নদী পেরিয়েছে অনেক আগেই। এরপর ওদের গাড়ি থামিয়েছে একটা কটেজে। সেখানেই আজ সারাদিন থাকার প্ল্যান করেছে আনান। কটেজে বিনোদনের সকল ব্যবস্থাই আছে।
দৃষ্টিও আজ নিজেকে আড়াল করার কোন প্রটেষ্টাই করছেনা। সে-ও সিক্তা, আরোশীর সাথে আনন্দে মেতেছে। নিহান আজ দৃষ্টিকে দেখে হাঁফ ছাড়ল। মেয়েটা যে একটু একটু করে নিজেকে স্বাভাবিক করছে, এটা দেখে ওর ভালো লাগছে।

ও দৃষ্টিকে শাড়ি পরতে বলেছিল। মেয়েটা ওর কথা মেনে নিয়ে শাড়ি পরেছে। ময়ূরকণ্ঠী রঙের জর্জেট শাড়িতে মেয়েটাকে আজ চমৎকার লাগছে। ফর্সা শরীরে রংটা বেশ মানিয়েছে। নিহান একটু পরপরই দৃষ্টিকে দেখছে। বিষয়টা আনান লক্ষ্য করে, নিহানকে খোঁ’চা’চ্ছে।

মাথাটা কেমন ভার ভার লাগছে। অনেক কষ্টে চোখ খুলতেই আলো এসে হা’ম’লে পরল চোখের তারায়। বিচ্ছুরিত আলোর ছটা সহ্য করতে না পেরে প্রায় সাথে সাথেই চোখ বন্ধ করল কুহু। কিছুক্ষণ নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে সময় দিল। খানিক পর ধীরে ধীরে চোখ খুলল। উঠে বসার চেষ্টা করতেই বুঝতে পারল ও কোনকিছুর সাথে আটকে আছে। ভালো করে চারপাশে তাকাতেই বুঝতে পারল ও কোনও হসপিটালের বিছানায় শুয়ে আছে। কি এমন হয়েছে যে ও হসপিটালে আছে!

মনে করার চেষ্টা করল ওর কি হয়েছে? অনেকক্ষণ ধরে চেষ্টা করার পর মনে পরল সেই বিভীষিকাময় রাতের কথা। মুহূর্তেই কুহু হাঁসফাঁস করতে থাকে। কি হয়েছিল ওর? শুধু এতটুকু মনে পরছে সবুজ ওর পেটে লা’থি মে’রে’ছি’ল। সেই লা’থি’র জোর এতটাই ছিল যে ওর মনে হচ্ছিল পুরো দুনিয়া ওর মাথার ওপর ভেঙ্গে পরেছে। একটা চিনচিনে ব্যথা ছড়িয়ে পরে পুরো শরীরে।

তারপর ওর আর কিচ্ছুটি মনে নেই। কুহু আর কিছু ভাবতে পারলনা। ওর মাথার ভেতর দপদপ করছে। কিন্তু কিছু একটা মনে পরতেই কুহু স্থির হয়ে যায়। সেদিন রাতে দৃষ্টি, শিহাবও তো বাড়িতে ছিল। ওরা কোথায়? ওদের কিছু হয়নি তো? কুহু আর নিজেকে স্থির রাখতে পারলনা। ও হাঁচড়েপাঁচড়ে উঠে বসার চেষ্টা করছে। ওকে এখান থেকে বেরোতেই হবে।

” ম্যাম, শান্ত হোন। এমন করবেননা। আপনি অসুস্থ। অনেকদিন পর সেড়ে উঠেছেন। আবার যদি আপনার কিছু হয়ে যায়, স্যার নিজেকে সামলাতে পারবেননা। ”
হঠাৎ কোথাও থেকে একজন এ্যাপ্রোন পরিহিত কম বয়সী ছেলে এসে কুহুকে শান্ত করছে। ছেলেটির কথায় কুহু শান্ত হয়ে যায়।

আফরোজা নাজনীন দরজার ওপাশ থেকে কুহুর নড়াচড়া দেখে চমকে উঠলেন। তিনি তাহমিনা আক্তারকে ডাকলেন। তাহমিনা আক্তারও কুহুকে দেখে চমকে উঠলেন। তাদের দুজনের চোখই পানি এসেছে। আফরোজা নাজনীন দ্রুত ফোন বের করে তাহমিদকে ফোন করলেন।
রোগী দেখতে ব্যস্ত তাহমিদ। এই অসময়ে ফোনের শব্দ শুনে একটু বিরক্তই হয় সে। কপাল কুঁচকে ফোনের দিকে তাকাতেই ওর সকল বিরক্তি উবে যায়। মৃদু হেসে ফোন রিসিভ করল।

” বড়মা, আমার বউকে পাহারা দিতে গিয়ে বিরক্ত লাগছে নাকি? বিরক্ত হলেও তোমাকে পাহারা দিতেই হবে। ”
” বাপ, ভুলে যাসনা তোর বউ আমার ভাইয়ের মেয়ে। তাকে পাহারা দিতে আমার মোটেও খারাপ লাগেনা। এই যে এখন যেমন ভালো লাগছে, আনন্দ লাগছে। আর সেই আনন্দ যদি পেতে চাস তবে এক্ষুণি মেডিকেলে চলে আয়। এক মিনিটও দেরি করলে অনেক কিছুই মিস করবি। ”

তাহমিদ বড়মার হেয়ালিভরা কথা শুনে একটু অবাকই হয়। ওর মাথায় আসছেনা বড়মা হঠাৎ এত খুশি কেন!
তাহমিদ আর দেরি করলনা, সামনে বসা রোগীকে দেখেই রওনা দিল মেডিকেলের উদ্দেশ্যে।
চোখের সামনে কুহুকে বসে থাকতে দেখে তাহমিদ স্তব্ধ হয়ে গেছে। মেয়েটা উসকোখুসকো চেহারায় জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সামনে থাকা ছেলেটার দিকে। আসলে সে একজন ডক্টর। তাহমিদ তাকে কুহুর তত্বাবধানে নিয়োজিত করেছিল। তার দ্বায়িত্ব ছিল প্রতি মুহূর্তে কুহুর খেয়াল রাখা।

অল্পবয়সী সেই ডক্টর মনযোগ সহকারে কুহুর পালস রেট, প্রেশার দেখছিল।
তাহমিদকে হুড়মুড়িয়ে ভেতরে প্রবেশ করতেই কুহুর নজর সেদিকে যায়। কুহু চাইলেও উঠে দাঁড়াতে পারেনা। কারন ডক্টর ওর প্রেশার দেখছিল।
তাহমিদ সোজা কুহুর পাশে এসে কুহুকে জড়িয়ে ধরল।
ডক্টর চেক-আপ করে আইসিইউ থেকে বেরিয়ে গেলে কুহু মুখ খুলল।

” কোথায় ছিলেন আপনি? আর আমি এখানে কেন? কি হয়েছিল আমার? ”
” আস্তে বউ আস্তে। একটু ধৈর্য্য ধর। তোমার সব প্রশ্নের উত্তর আমি দেব। তার আগে কিছুক্ষণ তোমাকে বুকে জরিয়ে রাখতে দাও। আমার বুকটা আগে শান্ত কর। তারপর তোমার প্রশ্নের উত্তর পাবে। ”

কুহু তাহমিদের কথার কোন প্রত্যুত্তর করলনা চুপটি মে’রে পরে রইল তাহমিদের বুকে।
” সোনা মা, আমরাও এখানে আছি। আমাদের দিকেও একটু নজর দে। আমার ছেলেটা তো একটা পা’গ’ল। ও পা’গ’লা’মি করবে এটাই স্বাভাবিক। তাই বলে তুই ওর পা’গ’লা’মি’তে সায় দিসনা। ” আফরোজা নাজনীন দরজা ঠেলে ভেতরে প্রবেশ করতে করতে বললেন।

বড় ফুপুর কথা শুনে কুহু মাথা তুলে তার দিকে তাকায়।
তাহমিনা আক্তার দৌড়ে এসে কুহুকে জড়িয়ে ধরলেন। চুমু দিলেন কুহুর মাথায়, কপালে। আফরোজা নাজনীনও তাই করলেন।

” ওরে নিহান, তুই যে এই মাপের প্রেমিক তা কিন্তু আমার জানা ছিলনা। ভাইও তোর কাছে ফে’ই’ল মারল দেখছি! এতটুকু মেয়ের দিকে তুই কিভাবে তাকাস মাইরি! এত প্রেম কই থেকে আসে রে, নিহান? ”
” তুই কি প্রেম করিসনি, আনান! আমার জানামতে বিয়ের আগে সিক্তার সাথে তোর মাখোমাখো প্রেম চলছিল। প্রেম চলাকালীন সময়ে তুই কি সিক্তার দিকে প্রেমময় দৃষ্টিতে তাকাসনি? নাকি তোর কোন প্রবলেম ছিল? এই এখনও কি সেই প্রবলেম আছে নাকি সেরেছে? ” নিহানের ইংগিত বুঝতে পেরে আনান ওর দিকে তেড়ে গেল।

” শা’লা, তুই এসব বলছিস কি? তোকে তো আমি। ” আনানকে তেড়ে আসতে দেখেই নিহান দৌড় দিয়েছে। এরপর সে দৌড়াতে দৌড়াতে দৃষ্টির কাছে যায়।
আনান নিহানকে দৃষ্টির কাছে যেতে দেখে থেমে যায়। ওদের দুজনকে একান্তে কিছুটা সময় দেয়।
” কেমন লাগছে বললিনাতো? নাকি এখানে এসে ভালো লাগছেনা? তবে তোকে কিন্তু শাড়িতে চমৎকার লাগছে। ঠিক যেন আমার টুকটুকে বউ। ”

নিহানের মুখে ‘ বউ ‘ ডাক শুনে দৃষ্টির বুক ধক করে উঠল। দৃষ্টি ভেবে পায়না এতকিছুর পরও নিহান ওকে এত ভালোবাসে কেন! কেন ওর মুখে দৃষ্টি একবারের জন্যও দুঃখ দেখতে পায়নি! এতটা ভালোও কেউ কাউকে বাসতে পারে!

” কি হলো মামতো বোন? কোথায় হারালি? ”
” কোথাও হারাইনি। এখানেই আছি। ”
” এখানেই যদি থাকবি, আমার প্রশ্নের উত্তর দিলিনা কেন? ”
” চিন্তা করছিলাম। কতটা ভাগ্য করলে তোমার মত কাউকে জীবনে পাওয়া যায় সেটাই ভাবছিলাম। ”

” দৃষ্টি, আমার সাথে চিটাগং যাবি? আমি কয়েকদিন পর যেতে চাচ্ছি। তোকে ছেড়ে থাকতে খুব কষ্ট হবে। যদি তুই আমার সাথে যেতিস, আমি একটু শান্তিতে ঘুমাতে পারতাম। তাছাড়া এই সুযোগে তোর শ্বশুর বাড়ি দেখা হয়ে যেত। ” দৃষ্টির কথার উত্তর না দিয়ে বলল নিহান।
” আপুকে এই অবস্থায় রেখে আমার কোথাও যেতে ভালো লাগবেনা, ভাইয়া। তাছাড়া আমি তোমার সাথে সেখানে গেলে কেউ যদি কিছু মনে করে? ”

” প্রথমত, কুহুকে দেখার জন্য এখানে সবাই আছে। তাই তুই আমার সাথে চিটাগং গেলে সবাই খুশিই হবে। দ্বিতীয়ত, তুই যাবি তোর ফুপুর বাসায়। এখানে কার কি বলার আছে! তোর শ্বশুর স্বয়ং আমাকে ফোন দিয়ে বলেছে, তোকে চিটাগং নিয়ে যেতে। আমার প্রস্তাব আমি তোকে দিলাম। বাকিটা তোর ইচ্ছে। ”
দৃষ্টি বুঝতে পারছে নিহান একটু কষ্ট পেয়েছে। নিহান মনেপ্রাণে চাইছে ও চিটাগং যাক। আজকে নিহানকে কষ্ট দিতে ওর মোটেও ইচ্ছে করছেনা।

” আচ্ছা, মন খারাপ করতে হবেনা। তুমি ফুপুর বাসায় গিয়ে সবাইকে রাজি করাও। সবাই রাজি হলেই তবে আমি তোমার সাথে যাব। ”
দৃষ্টির কথা শুনে নিহানের বুক থেকে পাথর নেমে গেল।
কুহুকে বাসায় নিয়ে আসতেই শিউলি ওর কাছে দৌড়ে গেল। কুহুকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে শুরু করল।
কুহু ছোটমার এমন আচরণে হতভম্ব হয়ে গেছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই সেখানে দিদুন এসে হাজির হলেন। জড়িয়ে ধরে চুমু দিলেন কুহুর কপালে।

কুহু বড় ফুপুকে বাবার কথা জিজ্ঞেস করতেই তিনি কুহুকে নিয়ে কায়েসের কাছে গেলেন।
কায়েস বিছানায় আধাশোয়া হয়ে একটা বই পড়ছিল। কুহুকে দেখামাত্রই কায়েস উঠে বসল। চেষ্টা করল বিছানা থেকে নামতে। কিন্তু পারলনা।
বিষয়টা কুহুর দৃষ্টি এড়ালনা। চিন্তায় ওর কপালে ভাঁজ পড়ল। মনে প্রশ্ন জাগল, বাবা উঠতে গিয়ে আবার বসে পরল কেন?

কুহু দ্রুত পায়ে বাবার কাছে যেতে চাইলেও পারলনা। ওর মাথা ঘুরে উঠল। ও পরে যেতে লাগলে শিউলি আক্তার ওকে ধরে ফেলল।
” সাবধানে হাঁট, কুহু। পইরা যাবি তো। তর যদি আবার কিছু হয়, এইবার কিন্তু তাহমিদ বাজানরে আমরা কেউ ধইরা রাখবার পারমুনা। আর এম্নেও আমরা সবাই এই দুইমাসের বেশি গা’গ’ল হইয়া আছিলাম। আমগোরে আর পা’গ’ল বানাইসনা, মা। ”

কুহু শিউলির কথা শুনে স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে গেছে। কি বলছে এসব, ছোটমা! দুইমাসের বেশি মানে?
কুহু এবার অসহায় চোখে তাকায় বড় ফুপুর দিকে।
” ফুপু, ছোটমা এসব কি বলছে? আমি কিছুই বুঝতে পারছিনা। আজ কত তারিখ? এটা কি মাস? আর বাবার কি হয়েছে? বাবা কেন উঠে দাঁড়াতে পারলনা? ”

আফরোজা নাজনীন বুঝতে পারলেন এবার কুহুকে সবকিছু জানাতে হবে। এমনিতেও কুহু আস্তে আস্তে সব জানতে পারবে। কিন্তু সবটা কুহুকে এখনই জানতে দেয়া যাবেনা। তাই তিনি কুহুকে কিছুটা কথা জানানোর সিদ্ধান্ত নিলেন৷
” সোনা মা, সেদিনের দুর্ঘটনার পর আড়াই মাস পেরিয়ে গেছে। তুই এতদিন কোমায় ছিলি। শিউলি সে কথাই বলেছে। আমরা তোর ঐ অবস্থা দেখে পা’গ’লে’র মত হয়ে গিয়েছিলাম। তোর চিন্তায় তোর বাবা অসুস্থ হয়ে গিয়েছিল। তবে চিন্তার কিছু নেই, কায়েস এখন আগের থেকে অনেক ভালো আছে। ”

ফুপুর কথা শুনে কুহু ধীর পায়ে হেঁটে বাবার কাছে যায়। বাবাকে দেখে ডুকরে কেঁদে উঠল। বাবার শুকনো মুখ দেখে ওর বুকের ভেতর হাহাকার করে উঠল।
কায়েস মেয়েকে পরম মমতায় বুকে আগলে নিল। সে-ও কাঁদছে।

” বাবা, তুমি সত্যিই ভালো আছো? দৃষ্টি, শিহাব ওরা কোথায়?সেই রাতে তোমরা কখন বাড়িতে ফিরেছিলে? ”
” আমি এখন সত্যি ভালো আছি, মা। দৃষ্টি, শিহাব ওরা আনানদের সাথে বেড়াতে গেছে। আর তুই সেই রাতের কথা আর ভাবিসনা কেমন? ঐ রাতের কথা আর মনেই আনবিনা। ”
কুহু বাবার কথা শুনে শুধু মাথা নাড়ায়।

কুহুর শরীর খারাপ থাকায় আফরোজা নাজনীন ওকে নিয়ে রুমে যায়। অনেকদিন মেডিকেলের বিছানায় শুয়ে থাকার কথা শুনে কুহুর শরীর কেমন করছে। ও বুঝতে পারল গত আড়াই মাস যাবৎ নিশ্চয়ই ওর গোসল হয়নি। তাই ফুপুকে জানায় ও গোসল করতে চায়।
কুহুর কথা শুনে আফরোজা নাজনীন ওকে নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকলেন। কুহু তাকে ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে যেতে বললেও তিনি শুনলেননা।

গোসল শেষে কুহু বারান্দায় এসে দাঁড়ায়। কতদিন পর ও বারান্দায় এসেছে। ওর নিজ হাতে লাগানো বেলি ফুলের গাছটা অনেকটাই বড়, আর ঝোপালো হয়েছে। অনেকগুলো ফুলও ফুটেছে গাছটায়। ওর অনুপস্থিতিতে নিশ্চয়ই কেউ গাছটার যত্ন নিয়েছে।
কুহুর ভাবনার মাঝেই ও নিজের কোমড়ে কারও ছোঁয়া অনুভব করল। ওর মোটেও চিনতে অসুবিধা হয়নি এটা কার ছোঁয়া।

বিন্দু থেকে বৃত্ত সিজন ২ পর্ব ৫৮

” বউ, আমার সোনা বউ, আজকে আমি কি করে নিজের আনন্দ প্রকাশ করি বলতো ? আজ তুমি আমাকে অবাক করে দিয়েছ। অথচ প্রতিদিনই তোমার ঘুম ভাঙ্গার অপেক্ষায় থেকেছি আমি দিনের পর দিন, রাতের পর রাত। এই আড়াই মাস আমার কিভাবে কেটেছে তা যদি তুমি জানতে। ” কুহুর কাঁধে থুতনি রেখে ভগ্ন গলায় বলল তাহমিদ।
কুহু নীরবে শুনতে থাকে তাহমিদের কথা। সেই সাথে অনুভব করছে তাহমিদের ছোঁয়া।

বিন্দু থেকে বৃত্ত সিজন ২ পর্ব ৬০