বিষাক্ত ভালোবাসা পর্ব ২০

বিষাক্ত ভালোবাসা পর্ব ২০
শারমিন আক্তার বর্ষা

তোকে আমরা একা কোথাও যেতে দেবো না। তোর কিছু হলে আমরা আন্টিকে কি জবাব দেবো? তোর যদি যেতেই হয় সাইফ ও আয়রা কে সাথে নিয়ে চল।
ব্রেকফাস্ট টেবিলে বাহিরে যাওয়ার কথা তুলল রুহানি। একা যাবে শুনে শক্ত গলায় কথাটি বলল শ্যামা ও আদনান। আগামীকাল চলে যেতে হবে।

অন্য দিকে যাওয়ার নিয়ত নেই কারো। লাবণ্য সারাক্ষণ রুমের এককোণে বসে ফোন টিপে ও মিটমিট করে হাসে। অন্য দিকে বারান্দায় গিয়ে লুকিয়ে লুকিয়ে ফিসফিস করে কথা বলে আয়রা। রাইসার কথা বাদ দিলাম। ওর কানাডায় বয়ফ্রেন্ড থাকা সত্বেও এ.স এর ক্রাশ খেয়ে বসে আছে।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

নাজিনের ফোনে মাঝেমধ্যে একটা অচেনা নাম্বার থেকে কল আসছে, কল রিসিভ করলে ওপার থেকে কেউ কথা বলে না। এবং সময়ে অসময়ে মেসেজ করে। মেসেজের ধরণ দেখে বোঝা যায় কোনো প্রেমিক যে প্রেমে পড়েছে নাজিনের। মেসেজগুলো রুহানি, শ্যামা কিংবা অন্য কাউকে কিছু বলেনি।

গতকাল রাতে ফোনে লাস্ট একটা মেসেজ আসে, মেসেজটা ছিল এমন,
মেয়েদের প্রতি কখনো কোনো ফিলিংস কাজ করেনি৷ রাস্তা ঘাটে ছেলেদের তাদের গার্লফ্রেন্ড দের দেখলে আমার মেজাজ হরম হতো মনে হতো ওরা টাইম নষ্ট করছে। এসব ফাউল পাগলামি যার কোনো গুরুত্ব নেই। কিন্তু তোমাকে দেখার পর থেকে আমি বুঝতে পারছি, ভালোবাসার ওপর নাম হচ্ছে পাগলামি। যে প্রেমিক প্রেমিকা প্রেমে পাগলামি করে না তাদের প্রেম, প্রেম নয়।

আমি বুঝতে পারছি নাজিন আমি তোমার প্রেমে পরেছি। আমি পাগল হয়ে গেছি, আমি তোমার প্রেমে পাগলামি করছি। আমার ইচ্ছে করে সর্বক্ষণ তোমাকে আমার সামনে বসিয়ে রাখি, তুমি হাসিমুখে কথা বলবে আমি দু-চোখ ভরে দেখবো। তুমি চলে যাবে ভাববে আমার শ্বাসরুদ্ধকর কষ্ট হচ্ছে। তুমি চলে যাওয়ার আগে আমি তোমাকে সামনে থেকে একটিবার দেখিবো৷

বিশ্বাস করো, আমার দ্বারা তোমার কোনো ক্ষতি হবে না। যদি ইচ্ছে হয়, গতকাল বিকেল চারটায় (জায়গার নাম) এই জায়গায় চলে আসবা। এক মুঠ হলুদে গোলাপ নিয়ে রাস্তার মোড়ে আমি তোমার জন্য অপেক্ষায় থাকবো।

মেসেজটা দেখার পর থেকে হতবুদ্ধি হয়ে যায় নাজিন৷ কি করবে এত ভেবেও বুঝতে পারছে না। দ্বিধা দন্ডায় ভুগছে, যাবে কি যাবে না। শ্যামার হাসবেন্ড বিডিআর সকালে শশুর বাড়িতে নাস্তা করে সকলের থেকে বিদায় নিয়ে বের হয়। আজকে তার ছুটি শেষ, যাওয়ার পথে উনার বাবা ও মা’র সাথে দেখা করে বিদায় নিয়ে যাবে।

সাইফ ও আয়রা কে নিয়ে রুহানি কিছুক্ষণ আগে বেরিয়ে গেছে। লিভিং রুমে বসে গম্ভীর হয়ে মেসেজ টা দেখছে হটাৎ শ্যামা এসে ওর পাশে বসল। অন্য মন্যস্ক হয়ে ফোনে এত কি দেখছে, দেখার জন্য উঁকি দেয় শ্যামা। উঁকি ঝুঁকি দিয়ে কিছুটা মেসেজ পড়ে নাজিন লক্ষ্য করল শ্যামা ওর ফোনের দিকে উৎসুক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। চোখ জোড়া ছোটছোট করে নাজিনকে চেপে ধরলো শ্যামা। বাধ্য হয়ে সত্য টা বলতে হলো ও’কে। সব শুনে শ্যামা ভ্রু কুঁচকে প্রশ্ন ছুঁড়ল, কবে থেকে হচ্ছে এসব?

ভারী নিঃশ্বাস ফেলে নাজিন বলে, যেদিন রুহানি কিড’নেপ হল তার পরদিন থেকে শুরু হয়েছে।
অ্যাটিটিউট নিয়ে সোফায় হেলান দিয়ে বসে শ্যামা। চোখজোড়া পিটপিট জেরে গম্ভীর গলায় বলে, লোকটা কে জানতেই হবে? কে সে যে তোর প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে? মিশন বিকেল চারটা, তুই একা না তোর সাথে আমিও যাবো।

নাজিন ও শ্যামা বের হওয়ার কিছুক্ষণ পর পর রাইসা ও লাবণ্য দু’জনে একা একা বেরিয়ে যায়। আরিফ ও নিশানের শরীরটা ভালো লাগছে না বলে, দুপুর বেলা খেয়ে ঘুম দিয়েছে। অন্য দিকে খাটের সাথে হেলান দিয়ে বসে শ্যামার ননদ জুহির সাথে চ্যাটিং করছে আদনান। এক সময় শ্যামার ননদ নূরী বলল, ও’ আদনানের সাথে দেখা করতে চায়।
এমনিতেও ওর সব বন্ধুরা কোনো না কোনো কাজে বাহিরে চলে গেছে। দু’জন ঘুমাচ্ছে ও’ একাই বসে আছে। আগামীকাল চলে যাবে৷ যাওয়ার আগে বেয়াইনের সাথে দেখা করলে মন্দ হয় না। আদনান তারাহুরো করে রেডি হতে চলে গেলো বাথরুমে। এক তলায় ওরা চারজন ছেলে এক রুমে থাকে আর মেয়ে চারজন অন্য রুমে৷ রুহানি একা একটা রুমে থাকে।

ঘুমের মধ্যে হঠাৎ তাকাল আরিফ। আদনান কে তারাহুরো করে বেরিয়ে যেতে ওঠে বসল। নিশান কে টেনে তুলল আরিফ। বিরক্ত হয়ে রাগান্বিত করল নিশান। এতে অবশ্য কোনো কাজ হল না। আরিফ নিশানের ঘুম ভাঙিয়ে বলল, আদনান সেজেগুজে কোথাও বেরিয়ে গেছে। আদনান গেছে শুনে লাফিয়ে উঠল নিশান। কিয়দংশ একে অপরের চেহারা দেখল।

পরক্ষণে লাফিয়ে বিছানা থেকে নেমে রেডি হয়ে বেরিয়ে গেলো। রাস্তার মোড়ে আদনান কে দেখা গেলো একটা রিক্সায় উঠছে। নিহান ও আরিফ ফলো করে পিছনে অন্য একটা রিক্সায় উঠলো। কিছুক্ষণ পর, বাজারে একটা ফুলের দোকানো রিক্সা থামালো, রিক্সা থেকে নেমে এক পিস লাল টকটকে গোলাপ ফুল কিনে রিক্সায় ওঠে বসলো। আদনান কে ফুল কিনতে দেখে আকাশ সমান অবাক হল নিশান ও আশিক। বলদের মতো একে অপরের দিকে কিছু মূহুর্ত তাকাল।

বড় একটা বট গাছের নিচে একটা বেঞ্চের ওপরে একজন ছেলে পায়ের ওপর পা তুলে বসে আছে। ছেলেটার ডান হাতের দিকে বেঞ্চে একটা হলদে গোলাপ রাখা। গোলাপ ফুলটা দেখে নাজিন ও শ্যামা শিওর হয়েছে এই ছেলেটাই নাজিনকে কল ও মেসেজ করে। ছেলেটা যেমন লম্বা তেমন দেখতে সুন্দর।

এখনকার যুগে ফ্যাশন ছেলেদের চুল বড় করে রাখা। অথচ ছেলেটার চুল একদম ছোট ছোট। এই ছোট চুল জেনো ছেলেটার সৌন্দর্য বৃদ্ধি করছে। ছেলেটাকে দেখে নাজিনের ভালো লাগে, বলা যায় পছন্দ হয়। অন্য দিকে শ্যামা নাজিনকে ধাক্কা দিয়ে বলে, ছেলেটা যদি ভালো হয় তাহলে হাত ছাড়া করিস না দোস্ত। হেব্বি দেখতে।

নাজিন ঠোঁট জোড়া উল্টিয়ে কনুই দিয়ে খোঁচা দিয়ে বলল, তোর না জামাই আছে তাও অন্য ছেলের দিকে নজর দেস। শ্যামা আহত কণ্ঠে বলল, নজর কই দিলাম শুধু বললাম সুন্দর। নাজিন কম্পিত কণ্ঠে বলল, আচ্ছা বাদ দে এখন কি করবো বলো?

শ্যামা রাগী গলায় বলল, কি করবো মানে? এতদূর পর্যন্ত আসছি কী দূরে চলে যাওয়ার জন্য? যা গিয়ে দেখা কর। উল্টা পাল্টা কিছু করলে শুধু আমাকে আওয়াজ দিবি। নাজিন এগিয়ে গেলো, বেঞ্চের ওপর থেকে হলদে গোলাপ নাজিনের দিকে বাড়িয়ে দিয়ে লোকটা জিজ্ঞেস করল, আসতে কোনো সমস্যা হয়নি তো? নাজিন ডানে-বামে মাথা নাড়াল।

কোনো সমস্যা হয়নি। লোকটার পাশে বসে নাজিন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে লোকটা আগে বলল, আমি আমান চৌধুরী। তুমি হয়তো ইতস্তত বোধ করছো। সমস্যা নেই নিজেকে রিলাক্স করো। নাজিন সময় নিয়ে বলে, ওর সাথে ওর বন্ধু আসছে। আমান তাত্ক্ষণিক বলে উঠল, কোথায় উনাকে নিয়ে আসো? উনাকে আবার কোথায় রেখে আসছো? নাজিন শ্যামার নাম্বারে কল দিয়ে ওদের কাছে আসতে বলে দেয়।

লাবণ্য রাইসাকে সাথে নিয়ে পাশে একটা পার্কে গেছে ওখানে একটা ছেলের সাথে দেখা করবে। ছেলেটা আর কেউ নয় শ্যামার হাসবেন্ডের বন্ধু আহিল। শ্যামার হলুদে আহিলের সাথে লাবণ্যর পরিচয় হয়। এবং সেদিনই সকলের অগোচরে দু’জনার মন দেওয়া নেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে লাবণ্য এখন রাইসাকে বলেছে আর কাউকে এখনও জানায়নি।

আদনান রেস্টুরেন্টের সামনে দাঁড়িয়ে জুহির জন্য অপেক্ষা করছে। জুহি কিছুক্ষণ আগে মেসেজ দিয়ে বলেছে, অন দ্য ওয়ে। রাস্তার ওপাশে দাঁড়িয়ে আদনান কে দেখছে নিশান ও আরিফ। ঢাকা শহরের অলিগলি ঘুরতে ঘুরতে নাজেহাল অবস্থা রুহানির। সকালে নাস্তা খেয়ে বের হ’য়েছে আর এ পর্যন্ত তিন জনের পেটে কিছুই পরেনি।

রুহানির বাবার নামে এই পর্যন্ত পনেরো ষোলো জন মানুষের সন্ধ্যান পেয়েছে বিপাকে পরতে হল রুহানিকে। বাবার নাম জানলেও তাকে কখনো চোখে দেখেনি। হতাশ হয়ে তিনজনে একটা ট্যাক্সিতে উঠল। মন খারাপ করে বসে আছে রুহানি। আয়রা ও সাইফের প্রচুর খিদে লাগছে।

রুহানিকে বলার সাহস পাচ্ছে না। ওরা সবাই জানে রুহানির বাংলাদেশে আসার মূল কারণ ওর বাবাকে খোঁজা। সেখানে রোজ রুহানি হেরে যাচ্ছে। একটা নামের এতগুলো মানুষের মধ্যে নিজের বাবাকে কিভাবে চিনবে ও’? চক্ষু জোড়া ছলছল করে উঠল। আয়রা আমতা আমতা করে বলল, আমার খিদে পেয়েছে। রুহানি ওদের দু’জনকে এক পলক দেখে ড্রাইভার কে উদ্দেশ্য করে বলে, মামা গাড়ি একটা ভালো রেস্টুরেন্টের সামনে দাঁড় করাবেন আমরা নামবো।

ড্রাইভার ছোট্ট করে, আচ্ছা। বলে গাড়ি চালাতে মন দেয়।
অন্য দিকে গাছের নিচে বসে আহিল, নাজিন ও শ্যামা তিনজন বেশ কিছুক্ষণ গল্প করল। আমান দু’জনকে উদ্দেশ্য করে বলল, চলো এখন আমরা কিছু খেতে যাই। সামনেই একটা ভালো রেস্টুরেন্ট আছে। ওদের পেটেও খিদে লাগছে দু’জনে চুপিচুপি খেতে চলে গেলো।

পার্কে ঘুরাঘুরি করে আহিল, লাবণ্য ও রাইসাকে বলল, বিকেল পাঁচ টা বাজতে চলছে। চলো সবাই মিলে একটু রেস্টুরেন্টে গিয়ে হাল্কা পাতলা কিছু নাস্তা করি।
আহিলের প্রস্তাবে রাজি হয় রাইসা ও লাবণ্য। প্রথমত লাবণ্য রাজি হয়নি কিন্তু খাবারের কথা শুনলে রাইসার খিদে পায়। ওর জোরাজোরি তে লাবণ্য রাজি হয়। সবাই দশ পাঁচ মিনিট আগ পিছ করে রেস্টুরেন্টে প্রবেশ করল। দুই তিন টেবিল দূরত্বে বসেছে সবাই।

ভুলক্রমে সবাই একই রেস্টুরেন্টে খেতে বসেছে। ওয়েটার কে ডেকে খাবারের মেনু চক করে খাবার অর্ডার দিল। ওয়েটার অর্ডার কনফার্ম করে চলে যায়। আশপাশ লক্ষ্য করতে রুহানির ওর দুই টেবিল সামনে নজর গেলো। ভালো করে লক্ষ্য করে সাইফ ও আয়রা কে উদ্দেশ্য করে বলে, ওইটা শ্যামা ও নাজিন না? কিন্তু ওদের সাথে ছেলেটা কে?

ছেলেটার পিঠ দেখতে পাচ্ছে রুহানি। রুহানির কথায় সাইফ ও আয়রা দু’জনে ওদিকে তাকাল। আসলে নাজিন ও শ্যামা দুজনে বসে আছে সাথে একজন ছেলে। কৌতূহল বসত নিজেদের টেবিল ছেড়ে এগিয়ে গেলো রুহানি, আয়রা ও সাইফ। রুহানি ওদের দেখে রীতিমতো ভীমড়ি খেয়ে পড়ে শ্যামা ও নাজিন।

অন্য দিকে জুহি ও আদনান একটা টেবিলে বসে নিজেদের কথা এগিয়ে নিচ্ছে এমন সময় দুই পাশের দু’টি চেয়ারে বসল নিশান ও আরিফ। ওদের দুজনকে দেখে ভূত দেখার মতো চমকে উঠল আদনান। নাজিন ও শ্যামা এখানে কেন আসছে কি বলবে ভাবছে এমতবস্থায় সাইফ দূরে একটা টেবিলের দিকে শাহাদাত আঙুল তাক করে বলে, ওই যে ওরা দু’জন লাবণ্য ও রাইসা।

সাইফের কথামতো রুহানি, শ্যামা, নাজিন ও আয়রা ওদিকে তাকাল। পাশের টেবিলে তর্কাতর্কি হচ্ছে শুনে ঘাড় ঘুরিয়ে পেছনে তাকাল লাবণ্য ও রাইসা। অবাকের চরম পর্যায়ে পৌঁছে গেছে দু’জন ওদের দু’জনের দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছে আদনান, নিশান ও আরিফ।

ওদের সাত জনের দিকে এরা ছয়জন এগিয়ে গেলো। টেবিলের ওপর হতেই দিয়ে শব্দ করে রুহানি শাসিত কণ্ঠে সকলের থেকে জানতে চেয়ে বলে, তোরা সবাই একসাথে এখানে কি করছিস? আর তাও আলাদা আলাদা টেবিলে সাথে করে দু’জনের ছেলে ও একজনের মেয়ে।

রুহানির কথায় সবাই মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে রইল। নিশান ও আরিফ মুখ খুলে বলে, ঘুম ভেঙে দেখে আদনান তারাহুরো করে বের হয়ে যাচ্ছে। তারপর ওরা ওর পিছু নিয়েছে। রাইসা মিনমিন করে বলে, ও’কে লাবণ্য নিয়ে আসছে। নাজিন আর শ্যামা একে অপরের দিকে চাওয়া চাওয়ি করছে।

শ্যামা বেশ অবাক হয়েছে ওর স্বামীর বন্ধু আহিল কে লাবণ্যর সাথে ও ননদ জুহি কে আদনানের সাথে দেখা করতে আসছে শুনে। আমান কে দেখে সন্দেহের নজরে তাকায় রুহানি। আমানকে কেন জেনো ওর চেনা চেনা লাগছে। রুহানি রাগী গলায় শুধালো, আমি আপনাকে আগে কোথাও দেখেছি। কিন্তু কোথায়? কিছুক্ষণ ভাবনা চিন্তা করে বলল, এ.স কি হয় আপনার?

আমান ভাবান্তর কণ্ঠে বলল, এ.স আমার বিজনেস পার্টনার তা ছাড়া আমরা ছোটো থেকে বেস্ট ফ্রেন্ড।
রুহানি শূন্যে দুইহাত ভাসিয়ে বলে, হয়েই গেলো। এটাই সন্দেহ করছিলাম। নাজিন সন্দিহান কণ্ঠে বলল, তুই উনাকে কিভাবে চিনলি?

রুহানি গম্ভীর গলায় বলে, আমাকে যেদিন উনার বন্ধু কিডনেপ করেছিলেন সেদিন রাতে উনিও উনাদের সাথে ছিলেন। আমি সবার মুখ দেখেছি।
রুহানির লাগামহীন কথায় জোরপূর্বক হাসি দিলো আমান। এ.স এর সাথে থেকেও আমান যথেষ্ট শান্তশিষ্ট ছেলে। সহজে রেগে যায় না তাজ, প্রবীর ও ওয়াসিফের মত। ওদের চারজনের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা একজন মানুষ আমান ও’কে দেখলে বোঝা যায় ছেলেটা জতটা স্বভাবসুলভ।

সবার সাথে খুব সহজে মিশে যায় ও হাসিখুশি। মনে মনে বলে, এক কথায় দু কথায় কথা অনেক বাড়বে। আর এটা একটা পাবলিক প্লেস তাই চুপ করে গেলাম। তবে লুকিয়ে লুকিয়ে সকলের ট্যাম্পু চালানো বের করবো একবার বাড়ি যাই।

হাসি মুখে সকল বন্ধুরা খেতে বসে। সকলে সবার সাথে পরিচিত হলো। কে কাকে ভালো বাসে ও পছন্দ করে সকলের সামনে শিকার করল। নতুন প্রেম বলে, ট্রিট একটু বেশি।
দূর থেকে এক জোড়া চোখ রুহানি কে পরখ করছে। মেয়েটার মুখে এতক্ষণে এক চিলতে হাসি ফুটেছে। লোকটা কানে ফোন লাগিয়ে কর্কশকণ্ঠে বলল,

বস মেয়েটাকে একা পাচ্ছি না। সব সময় দুই একজন লগে থাকছে। আর এখন তো একদল মুরগির বাচ্চা নিয়ে রেস্টুরেন্টে খেতে বসছে। লোকটা আঁড়চোখে আমান কে দেখে আরও বলল, বস মেয়ে ও ছেলেগুলোর সাথে এ.স এর প্রাণপ্রিয় বন্ধুদের মধ্যে একজন আমান চৌধুরী একই টেবিলে বসে খাবার গিলছে।

বিষাক্ত ভালোবাসা পর্ব ১৯

ফোনের অপরপ্রান্তের লোকটি অট্টহাসি দিয়ে থেমে গেলেন গুরুগম্ভীর কণ্ঠে বলল, পাখি যতই দেখে শুনে পাহারা দিয়ে রাখুন না কেনো সে ঠিক খাঁচায় পুড়বে।

বিষাক্ত ভালোবাসা পর্ব ২১