বৃষ্টি হয়ে নামো পর্ব ১৪

বৃষ্টি হয়ে নামো পর্ব ১৪
ইলমা বেহরোজ

ক্যাবল কারে চড়া শেষ হয় বিকেলের মধ্যে।৪:৩০ মিনিটে ড্রাইভার বিভোরদের চকবাজারের দার্জিলিং মলে নামিয়ে দিল।এই স্থানকে দার্জিলিংয়ের হার্ট বলা হয়।প্রচুর পর্যটকের সমাগম হয় বিকেলটাতে। এখানে একটি ‘ওপেন এয়ার থিয়েটার’ রয়েছে। যে কেউ নাম এন্ট্রি করে স্টেজে গিয়ে নাচ, গান, আবৃত্তি বা অন্য যে কোনো পারফরমেন্স করতে পারে, তাও সম্পূর্ণ বিনামূল্যে।এই থিয়েটারের আয়োজক দার্জিলিং পুলিশ কর্তৃপক্ষ।ভালো একটি পদক্ষেপই বলা যায়।ওপেন এয়ার থিয়েটারের সামনে পাঁচ-ছয় জোড়া কাপলের দেখা পাওয়া যায়।বিভোর পাশ কেটে চলে যেতে চেয়েছিল।কাপলদের মাঝ থেকে কেউ একজন ডেকে উঠল,

——–“বিভোর না?বিভোর?”
বিভোর,সায়ন, ধারা,দিশারি ঘুরে তাকায়।বিভোরের বয়সী একজন সুদর্শন ছেলে এগিয়ে আসে।কাছে আসতেই বিভোর,সায়ন একসাথে চিৎকার করে ওঠে,
——-“অপূর্ব তুইই!”
বিভোর জড়িয়ে ধরে অপূর্বকে শক্ত করে।তারপর সায়ন।তিনজনের চোখে-মুখে খুশি উপচে পড়ছে।বিভোর অভিমানি স্বরে বললো,
——-“সেই এগারো বছর পর দেখা হইলো।খোঁজ নিতে ইচ্ছে হয়নি তোর?আমেরিকায় গিয়ে ভুলে গেলি?কত মনে পড়তো তোরে।”
অপূর্ব অপরাধী হয়ে বললো,
——-“সরি রে দোস্ত।তোদের নাম্বার হারিয়ে ফেলছিলাম।কেমনে হারাইছি সে বহুত কাহিনি পরে কমু।এখন বল কেমন আছিস তোরা?আর এরা দুজন ভাবি নাকি?”
অপূর্বের কথায় ধারা,দিশারি চমকে উঠলো।বিভোর না করার উপক্রম হতেই সেখানে একটা মেয়ে উপস্থিত হয়।মেয়েটা অপূর্বকে বললো,

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

——-“এরা কারা?”
——-“আমার স্কুল লাইফের জানের দোস্ত এরা।এই হচ্ছে বিভোর আর এই হচ্ছে সায়ন।আর বিভোর, সায়ন এ হচ্ছে তোদের ভাবি মারিয়া।”
মারিয়া মৃদু হেসে বললো,
——-“হাই।পাশের দুজন বুঝি আপনাদের ওয়াইফ?”
অপূর্ব বললো,
——-“কার কোনটা রে?না না তোরা বলিস না আমি অনুমান করি।তোরা বলিস ঠিক নাকি।”
অপূর্ব ধারা,দিশারিকে পরখ করে নেয় কয়েকবার।ধারাকে বললো,
——-“আপনার নাম কি ভাবি?”
ধারা অপ্রস্তুত ভাবে উত্তর দিল,
——-“সিদ্রাতুল ধারা।”
দিশারিকেও নাম জিজ্ঞাসা করলো।অপূর্ব হেসে বিভোরকে বললো,

——-“তোর বউ ধারা আর সায়নের বউ দিশারি।রাইট?”
সায়নের বউ শুনে দিশারির আপাদমস্তক রাগে জ্বলে উঠলো।সায়ন ভেতরে ভেতরে ভয় পায়।এই মেয়ে না কেলেঙ্কারি করে বসে পাব্লিক প্লেসে।ধারা একটু লাজুক ভাব ধারণ করে।বিভোর কথা ঘুরাতে বললো,
——-“তো দিনকাল কেমন যাচ্ছে?”
——–“অসাধারণ!বিয়ে হলো এক মাস।দিন তো ভালোই যাবে।তোরা হানিমুনে এসেছিস নাকি?”
বিভোর বললো,
——–“আরে না ব্যাঠা।আমরা চারজন ফ্রেন্ড।ট্যুরে এসেছি।”
অপূর্ব জিব কাটে।আমতা আমতা করে বললো,
——–“স…সরি!ভাবছি তোদের..
বিভোর বাধা দিয়ে বললো,
——–“রাখ ব্যাটা।কই উঠেছিস?কবে আসলি?”
——–“এইতো সামনেই।আর গতকালই আসলাম।তোরা কবে আসলি?”
——-“রবিবার বিকেলে পৌঁছাইছি।”
——-“আইজ……
——–“অপূর্ব?”
একজন পুরুষ কন্ঠ ডাকলো।অপূর্ব জোরে বললো,

——-“আসছি।”
——–“কিরে ওরা কারা?”
——-“কাজিন আর ওদের গার্লফ্রেন্ড,বউ।একসাথেই এসেছি। প্ল্যান করছি কয়েক জোড়া কাপল একসাথে কাপল ডান্স করবো।তোরা আয়?”
——–“আমরা কাদের নিয়ে নাচমু?”
বিভীর ভারী ইনোসেন্ট ভাবে জিজ্ঞাসা করলো।
——–“ফ্রেন্ডদের নিয়েই নাচবি।সমস্যা কি?”
আরো একবার ডাক পরে অপূর্বের।অপূর্ব বাধ্য হয়ে চলে যায়।দিশারি ভোঁতা মুখে বিভোরকে বললো,
——–“যা গিয়া নাচ।দার্জিলিংয়ের এই ওপেন এয়ার থিয়েটারে নাচাটা মিস করিস না।”
বিভোর বললো,

——-“তোর কাপল ডান্স করার ইচ্ছে আছে তুই যা।”
——-“তো কার লগে নাচমু?তোর তো আবার মেয়ের ছোঁয়ায় এলার্জি।ছোঁয়া যাইবোনা।”
——-“সায়নের লগে নাচ।”
——-“না ওর লগে নাচুমনা।”
সায়ন কাঁধঝাকিয়ে সাহস নিয়েই বললো,
——-“চাইলে নাচতে পারিস।আমি না করবোনা।”
দিশারি কটমট করে তাকায়।সায়ন ঢোক গিললো।ইতিমধ্যে কাপল ডান্স শুরু হয়ে গেছে।গান বাজছে,
চারপাশ অন্ধকার করে দেওয়া হয়েছে।শুধুমাত্র স্টেজে কয়েক রঙের আলো জ্বলছে।মাঝে মাঝে এক প্রকার রঙ্গিন আলো ঝিলিক দিচ্ছে।ধোঁয়া উড়ছে।এতো আয়োজনের মাঝে ছয় জোড়া কাপল।একজন আরেকজনকে আলিঙ্গন করে ঘুরছে।কি দারুণ!
বিভোর আড়চোখে ধারার দিকে তাকায় ধারাও তাকায়।দুজনের চোখের দৃষ্টিতে আবেদন।বিভোর চোখ বন্ধ করে নিঃশ্বাস ফেলে। ধারার পাশ ঘেঁষে দাঁড়ায়।অন্যদিকে চোখ রেখে ধারাকে উদ্দেশ্যে করে বললো,

——–“নাচতে চান?”
ধারা মাথা কাত করে।বিভোর গলা খ্যাঁক করে বললো,
——–“আমার সাথে প্রবলেম হবে?”
ধারা শরীর একটু কেঁপে উঠে।এই রোমাঞ্চিত পরিবেশে বিভোরের সাথে নাচার সুযোগ!ধারা নিজের কাঁপা হাত বিভোরের হাতে রাখে।বিভোর সচকিত হয়ে ধারার হাত শক্ত করে চেপে ধরে।তারপর দিশারিকে উদ্দেশ্যে করে বললো,
——–“সায়নের সাথে আয় নাচলে।মিস করিস না।আমি ধারাকে নিয়ে যাচ্ছি।”
কথা শেষ করে বিভোর সামনে এগোয়।
দিশারি,সায়ন চমকিত।একজন আরেকজনের দিকে তাকায়।দিশারি প্রশ্ন করে,
———“এদের ব্যাপারটা কি রে?”
সায়ন ঠোঁট উল্টিয়ে বললো,

——–“বুঝতাছিনা।কিছু তো আছে।”
দিশারি চোখ সরু করে বললো,
——–“চল তদন্তে বের হই।”
——–“হুম এবার থেকে চোখে চোখে রাখতে হবে।”
——–‘একদম।”
দিশারি কথা বলতে বলতে সায়নের কাঁধে এক হাত রেখেছে কখন বুঝেনি।এবং সে এটাও ভুলে গেছে সায়নের সাথে তাঁর রাগারাগি চলছে।যখন খেয়াল হয় ফট করে দূরে সরে যায়।সায়ন মৃদু হেসে দিশারির দু’হাত মুঠোয় নেয়।গভীর দৃষ্টি নিয়ে বললো,
——–“দোস্ত মাফ করে দে প্লীজ?”
দিশারি এক ঝটকায় হাত সরিয়ে নেয়।সায়ন আবার জোর করে দিশারির দু’হাত ধরে।দিশারি কড়া চোখে তাকায়।সায়ন তাকায় আবেদনময়ী দৃষ্টি নিয়ে।বলে,
——–“দোস্ত থেকে অন্য কিছু বানানোর সুযোগ দিবি?”
——-“হ কয়দিন প্রেম কইরা পরে আরেক মাইয়া ধরবি।আমারে তুই রাস্তার মাইয়া পাইছস।”
সায়ন নরম কন্ঠে বললো,

——–“মনে আছে তোর?ইন্টারে যখম পড়তাম আমরা,তুই আমার জন্য চিঠি লিখছিলি।প্রপোজ করছিলি।”
——-“হ তখন পাত্তা দেস নাই।”
——-“এখন পাত্তা দিতে চাই?”
দিশারি চমৎকার ভাবে তাকায়।সচকিত হয় হালকা।হাত ছাড়িয়ে নিয়ে বললো,
——–“ভেবে দেখবো।”
সায়ন দিশারির ডান হাত শক্ত করে ধরে বললো,
——–“এখন কাপল ডান্স তো কর?”
দিশারির জবাবের আশায় না থেকে সায়ন ধীর পায়ে থিয়াটারের দিকে এগোয়।দিশারি কোনো এক অদ্ভুত অনুভূতির জন্য কিচ্ছুটি বললোনা।

দ্বিতীয় গান শুরু হয়েছে।মোট আট জোড়া জুটি।কি চমৎকার দৃশ্য!গান বাজছে “মে ফেরভি তুমকো চাহুংগা।”বিভোরের এক হাত ধারার কোমর আঁকড়ে ধরে রেখেছে।অন্য হাত ধারার এক হাতের আঙ্গুলে আঙ্গুল জড়িয়ে।বিভোর যখন প্রথম কোমরে হাত রাখে ধারা পুরো কেঁপে উঠে।বিভোর টের পায়।যখন গান শুরু তখন ধারা বিভোরকে নিচু গলায় বললো,
——–” আমি হিন্দি বুঝিনা।কখনো হিন্দি মুভি,সিরিয়াল দেখিও নি।কিন্তু এই গানটা আমার খুব পছন্দের।আপনি বাংলা জানেন?বলবেন?”
বিভোর হেসে মাথা নাড়ায়।হিন্দি গান চলছে অথচ বিভোর নাচের তালে নিম্নস্বরে গানের সাথে তাল মিলিয়ে বাংলা বলে যাচ্ছে,

তুমি আমার আছো,এই মুহূর্তে আমার আছো
কাল যদি এমন নাও থাকে
কিছু এমন হয় যে, তুমি বদলে যাও
কিছু এমন হয় যে, আমি বদলে যাই
আমাদের এই পথ আলাদা হয়ে যায়
চলতে চলতে আমরা হারিয়ে যাই
আমি তবুও তোমাকেই চাইবো
এই চাওয়াতেই মরে যাবো
আমি তবুও তোমাকেই চাইবো
আমার মনের সব নিরবতা নিয়ে
তোমার প্রেমের গান গাইবো
আমি তবুও তোমাকেই চাইবো
এই চাওয়াতেই মরে যাবো
আমি তবুও তোমাকেই চাইবো
এমন জরুরী আমার তুমি
যেমন হাওয়া প্রয়োজন নিঃশ্বাসের জন্য
এমন খুঁজি আমি তোমাকে
যেমন পা মাটিকে খোঁজে।

ধারা মুগ্ধ।সে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করছেনা।বিভোর নিয়ন্ত্রণ করছে নিজের মতো।ধারা ভালবাসাপূর্ণ চাহনিতে বিভোরকে দেখছে।মানুষটার গলাকে গায়ক বলা যায়না তবে সুন্দর কন্ঠ।সে প্রেমে পড়ে যাচ্ছে।স্বামীর প্রেমে,গভীর প্রেমে,সীমাহীন প্রেমের বাঁধনে খুব দ্রুত আটকা পড়বে সে।মস্তিষ্ক,হৃদয় তাই বলছে।ধারার মনে পড়ে প্রথম রাতের কথা।বিভোর ধারাকে উদ্দেশ্যে করে বলেছিলো,এক বছরের মধ্যে প্রেমে পড়ে যেতে পারো।কিন্তু বিভোরের কথায় পাত্তা দেয়নি ধারা।অথচ,দুই রাত দুই দিনেই সে বিভোরের প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে।এরপর ‘অ্যায় দিল হ্যায় মুশকিল’ গান শুরু হয়।

মলের কাছেই রয়েছে কম খরচে রেডিমেড পোশাকের মার্কেট।একটি হলো নিউ মহাকাল মার্কেট আর আরেকটি হলো মল মার্কেট।এক ঘন্টা সেখানে ঘোরাঘুরি করে ওরা চলে এলো চকবাজারের কেএফসিতে।সেখানে বার্গার,ফ্রেঞ্চ ফ্রাই আর কোক দিয়ে সন্ধ্যার নাস্তা সেরে হোটেলে ফিরে।কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে ইসলামিয়া রেস্টুরেন্টে ডিনার শেষ করে।
ধারা দিশারি আর সায়নকে বলেছে গতকাল রাতে সে অসাধারণ এক পরিবেশ উপভোগ করেছে।দিশারি বায়না ধরেছে সে আজ যাবে।বিভোর তাই সেখানেই নিয়ে যাচ্ছে।তবে আজকের রাতটা অন্ধকার মনে হচ্ছে খুব।চাঁদ নেই।তারা নেই।বিভোর অনেকবার বলে, আজ চাঁদ নাই যাওয়ার দরকার নেই।কিন্তু দিশারি আর সায়ন নাছোড়বান্দা।তাঁরা যাবেই।মিনিট সাতেক হাঁটার পর বিভোর ধারাকে বললো,

———“ধারা আপনি কিন্তু ভালোই ডান্স জানেন।”
ধারা হেসে বললো,
——–“কই জানি?আমাকে তো আপনিই নিয়ন্ত্রণ করছিলেন।”
———“তবুও অন্যদের সাথে যখন ডান্স করেছি সমস্যায় পড়তে হয়েছে।আপনার সাথে ডান্স করতে গিয়ে কোনো রকম সমস্যা, বাধা আসেনি।”
ধারা অবাক হয়ে বললো,
———-“অন্যরা মানে?”
———” গার্লফ্রেন্ড না।আম্মু,ভাবি,ফুফি,খালা উনাদের সাথে।উনারা খুবই ভেজাল করে ডান্সে।সেই হিসেবে আপনি প্রথম যার সাথে ভেজাল ছাড়া কাপল ডান্স করেছি।”
ধারা বিড়বিড় করে উঠে,

———“বউ তো বউই।”
দিশারি-সায়ন কান খাড়া করে এদের আলাপ শুনছিলো।ধারা যখন বললো,বউ তো বউই’ দুজনই লাফিয়ে উঠলো।ধারাকে দিশারি বললো,
———-“বউ মানে?কে বউ?এই কি লুকাচ্ছিস?”
ধারা পড়ছে ফ্যাসাদে।সে বার বার অসহায় দৃষ্টিতে বিভোরের দিকে তাকাচ্ছে।দিশারি ধারার গালে আলতো করে থাপ্পড় দিয়ে বললো,
———“ওর দিকে তাকাস ক্যান?আমার দিকে তাকা।ক তোদের ব্যাপারটা কি?”
সায়ন বিভোরের দিকে তেড়ে এসে বললো,
——–“মামা কি লুকাচ্ছো?দু’দিন ধরে তোমাদের অস্বাভাবিক আচরণ দেখছি।”
বিভোর মুচকি মুচকি হাসছে ধারার মুখের ভঙ্গি দেখে।মনে হচ্ছে ধারা চুরি করতে এসে মালিকের হাতে ধরা পড়েছে।ধারা বাধ্য হয়ে বলার উপক্রম হয় তখন তিন-চারটা ছেলে কন্ঠ শুনতে পায়।বিভোর ইশারায় ওদের চুপ করতে বলে।এক পাশে দাঁড়িয়ে সামনে এগোতে থাকে।ধারা দেখতে পায় তিনটা প্রাপ্ত বয়স্ক ছেলেকে।চেহারায় বখাটে চাপ।দেখেই মনে হচ্ছে এদের বিকৃত মস্তিষ্ক।পাশ কেটে যাওয়ার সময় একজন বলে উঠলো,

———–“বাংলাদেশি?”
সায়ন জবাব দেয়,
———-“জ্বি।”
———-“হ আমরাও বাংলাদেশি।তো অন্ধকারে গার্লফ্রেন্ড লইয়া পাহাড়ের তলে যাওনি?
বিভোর এদের পাত্তা না দিয়ে দিশারি-ধারার হাত ধরে আরো এগিয়ে যায়।তখন একজন বখাটে বিচ্ছিরি ভাবে হেসে বলে উঠলো,
———-“আমারার লগেও শেয়ার করো মামারা?মাল দুইটা তো দেখতে হেব্বিই আছে।”
বিভোরের কান ঝাঁ ঝাঁ করে উঠলো তবুও কিছু বললোনা।তখন আরেকজন আরো খারাপ ভাবে বললো,
———-“লম্বা মিয়া দেহি দুইজনের হাতে ধইরা যাইতাছে।একা খাইবা নি মিয়া?আমরারে না দেও পিছনের ইনোসেন্ট বন্ধুটার প্রতি দয়া কইরো।”

একসাথে চারজন বখাটে গা গুলানো হাসিতে মেতে উঠে।বিভোর ধারা-দিশারিকে ছেড়ে পিছন ফিরে।সায়ন আৎকে উঠলো।বিভোর রেগে গেলে তুলকালাম কান্ড করে বসে।সায়ন বিভোরকে জড়িয়ে ধরে বললো,
———-“দোস্ত ওরা ডেঞ্জারাস। ”
বিভোর সায়নকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয়।প্যান্ট থেকে লেদার ব্যাল্ট খুলতে খুলতে ছেলেগুলোর সামনে এসে দাঁড়ায়।এক সেকেন্ড সময় না নিয়ে যেভাবে পারে পেটাতে থাকে।রাগে বলতে থাকে,

বৃষ্টি হয়ে নামো পর্ব ১৩

———-“কুত্তার বাচ্ছা বাংলাদেশে লুইচ্ছামি কইরা শান্তি লাগে নাই।দার্জিলিং আইছস লুইচ্ছামি করতে।”
সায়ন দৌড়ে আসে।তাঁর আগেই কেউ একজন ছুরি দিয়ে বিভোরের হাতের বাহুতে আঘাত করে।বিভোর আর্তনাদ করে উঠলো।সায়ন আর দিশারির চিৎকারে রাতের পাহাড় দেখতে আসা অনেক পর্যটক বেরিয়ে আসে।ছেলেগুলো মানুষ দেখে পালায়।বিভোর হাত চেপে ধরে রাস্তায় বসে পড়ে।খুব ধার ছিল ছুরিতে। জ্যাকেট ভেদ করে বাহুর মাংস তুলে দিয়েছে হয়তো।ধারার শরীর অবশ হয়ে আসে।তাঁর হিমোফোবিয়া আছে।রক্ত দেখে অজ্ঞান হয়ে লুটিয়ে পড়ে রাস্তায়।

বৃষ্টি হয়ে নামো পর্ব ১৫