বৃষ্টি হয়ে নামো পর্ব ১৮

বৃষ্টি হয়ে নামো পর্ব ১৮
ইলমা বেহরোজ

—-“বিভোর না?ওই…বিভোর,ড্রাইভার গাড়ি থামান।”
বিভোর নিজের নাম শুনে পিছন ফিরে তাকায়।একটা বড় কার কাছে এসে থামে।গাড়ি থেকে নেমে আসে অপূর্ব।বিভোরের ঠোঁটে হাসি ফুটলো।অপূর্ব বিভোরকে একবার জড়িয়ে ধরে বললো,
—-“কিরে দুজন এই নির্জন রাস্তায় হাঁটছিস কেনো?”
—-“হাঁটার ইচ্ছে হচ্ছিলো তাই গাড়ি থেকে নেমে পড়ছি।কে জানতো বৃষ্টি এসে বাধা দিবে।”
—-“কয়েক মিনিট পরই তো সন্ধ্যা।পাহাড়ি রাস্তা মেয়েদের জন্য মোটেও ভালোনা।আয় গাড়িতে উঠ।”
বিভোর একবার ধারার দিকে তাকায়।তারপর হেসে অপূর্বকে বললো,
—-“জায়গা আছে?”
—-“আছে ব্যাঠা।না থাকলে কোলে করে নিমু।কোনো সমস্যা?চল…..
বিভোর হেসে ধারাকে বললো,
—-“চলুন।”

সাগরিকা হোটেলের সামনে বিভোর ধারাকে নামিয়ে দিয়ে যায় অপূর্ব।দুজন নিজেদের রুমে ফিরে ফ্রেশ হয়ে নেয়।বিভোর আসে সায়নের রুমে।সায়ন দরজা খুলে বিভোরকে দেখে বললো,
—-“নেমেতো গেছিলি বউয়ের লগে।ভিজে ফিরছোস?”
বিভোর চোখ বড় বড় করে রুমে ঢুকে সায়নকে চাপা স্বরে বললো,
—-“বউ?”
সায়ন হেসে দরজা লাগায়।নবাবি চালে হেঁটে বিছানায় বসে।বিভোর উদগ্রীব হয়ে আছে সায়নের কথা শোনার জন্য।সায়ন কাঁধ ঝাঁকিয়ে বললো,
—-“বড় ভাইয়ের কাছে লুকাও?ধারা যে তোমার বউ জেনে গেছি।হে হে হে।”
কয়েক সেকেন্ড সরু চোখে সায়নের দিকে তাকিয়ে থাকলো বিভোর।তারপর বললো,
—-“সো হোয়াট?খেয়েছিস?”
সায়ন মুখটা বাংলার পাঁচের মতো করলো।তারপর মিনমিনে গলায় বললো,
—-“উহু।”
—-“তো চল।”

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

ধারা হোয়াইট প্রিন্টের শার্ট পরছিলো তখন দরজায় কেউ করাঘাত করলো।অসময়ে কড়াঘাতে বিরক্তবোধ করলো ধারা।বিরক্তি নিয়ে বললো,
—-“কে?”
—-“আমি।দরজা খোল।”
ধারা দরজা খুলতেই দিশারি ন্যাকামো মার্কা হাসি নিয়ে রুমে ঢোকে।ধারার গা পিত্তি জ্বলে উঠলো।দরজা বন্ধ করার সময় দিশারির উদ্দেশ্যে ধারার প্রশ্ন,
—-“হাসিস কেনো?”
দিশারি দুই আঙ্গুলে ধারার পিঠে গুঁতো মেরে বললো,
—-“কেমন কাটলো বিকেল?”
ধারা দুই ভ্রু বাঁকায়।দিশারি চোখ মারে।ধারা দিশারিকে পাশ কাটিয়ে ডেনিম জ্যাকেট পরে নেয়।দিশারি আবারো উৎসাহ নিয়ে বললো,
—-“বরের সাথে বিকেল কেমন কাটলো?হুম?হুম?”
ধারা চমকে উঠলো।আমতাআমতা করে বললো,
—-“ব..বর?কিসের বর?”
দিশারি হা হয়ে যায়।তারপর ব্যথিত স্বরে বললো,

—-“তুই আমারে কোনোদিন বোন ভাবস নাই।এক তো কস নাই বিভোর তোর জামাই।আবার এখনো অস্বীকার করতাছোস।এতো পর ভাবিস?”
ধারা একটু নিভলো,
—-“সরি আপু।”
দিশারি আদেশ স্বরে বললো,
—-“এবার বল কেমন কাটলো?”
—-“জোস।”
দিশারির ঠোঁটে ন্যাকামো হাসিটা আবার ফুটে উঠলো।টেনে বললো,
—-“জানতাম জোওওওওস কাটবে।তাইতো নামায় দিসি।”

ধারা গাঁট হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।দিশারি ঠোঁটে মৃদু হেসে ধারার সামনে গিয়ে দাঁড়ায়।আদুরে মাখা কন্ঠে বলে,
—-“আল্লাহ ঠিক মানুষটার বউ করছে তোরে।তোর উপযুক্ত বরই বটে!খুব ভালো থাকবি।নিজের সংসার গুছিয়ে নে।ফিরে যা ফেলে আসা ঘরটায়।”
ধারা অপ্রস্তুত হাসলো।দিশারি ধারার দু’গালে হাত রেখে বললো,
—-“কিরে?ফিরে যাবিনা?”
কপালে ছড়িয়ে থাকা চুলগুলো কানে গুঁজে ধারা বললো,
—-“সম্ভব না।”
—-“কেনো?”
—-“দুই পরিবারের সাপে-নেউলে সম্পর্ক।আর…আর সবচেয়ে বড় কথা বিভোর…উনার তো আমাকে চাইতে হবে!”
দিশারি হালকা হাসলো।বিছানায় বসে বললো,

—-“তোর মনে হয়না বিভোর তোর উপর দূর্বল?”
—-“মেয়েরা ছেলেদের চাহনি বুঝে আপু।”
—-“কি দেখলি?”
—-“উনি দূর্বল ঠিকাছে!কিন্তু….কি জানি একটা গলদ আছে।”
—-“যেহেতু তোর উপর দূর্বল তুই চেষ্টা করলেই তোর আঁচলে বাঁধা পড়বে হারামজাদা।”
—-“যাহ,বকিস না।”
—-“ওলে বাবালে!কি দরদ রে।”
ধারা লাজুক হাসে।লজ্জায় চুপসে গেছে।বোনের কাছে এতো লজ্জা কীসের!দিশারি প্রশান্তির দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল।কিন্তু একটা আতংক আছে বুকে।ধারা কখন না প্রশ্ন করে বসে,
—-“আপু তুই না উনারে ভালবাসিস?”
দিশারি বিসমিল্লাহ বলে তিন বার বুকে ফুঁ দেয়।বললো,
—-“আসছি।”
তারপর বেরিয়ে যায়।ধারা দরজার দিকে তাকিয়ে আপন মনে বলে,
—-“আমি ১০০ ভাগ শিওর হলাম তুই কখনো বিভোরকে ভালোই বাসিস নি আপু।শুধু মাত্র চোখের সৌন্দর্যে ডুবেছিলি।আর এইটাও জানি,সায়ন ভাইয়ার কিছু ভালো না লাগলেও উনাকেই ভালোবাসিস।শুধু বুঝিস না!”

গতকাল রাতে ডিনারের সময় বিভোর বলেছিল আজ মিরিক যাবে।ধারা মিরিক নামটা শুনেছে ঠিকই তবে সেখানে কি আছে তাঁর জানা নেই।সরাসরি গিয়েই দেখবে তাই আর জিজ্ঞাসা করলোনা।সায়ন বিভোর বাইরে গাড়ি নিয়ে অপেক্ষা করছে।দিশারি রেডি হয়ে ধারাকে ডাকতে আসে।চার-পাঁচবার ডাকার পর দরজা খুললো ধারা।ধারাকে দেখে দিশারির চোখ কপালে!অস্ফুটস্বরে বিড়বিড় করে,
—-“পুরাই নীল আকাশের পরী।”
ধারা ছলছল চোখে হাসে।দিশারি চোখ টিপে বললো,
—-“ধারা সালোয়ার কামিজ পরেছে আবার ঘুরতে এসে।দারুণ ব্যাপার-স্যাপার!”
—-“হু পরেছি।কেমন লাগছে?চোখের কাজলটা ঠিক আছে?আমি না অনেকদিন এসব দেইনা তুই দরজা খোলা রেখে বাথরুমে গেলি তখন তোর লাগেজ থেকে লিপিস্টিক আর কাজল নিয়া আসছি।বল না কেমন লাগছে?”
দিশারি ধারার গালে হালকা করে চুমু এঁকে বললো,

—-“দারুণ লাগছে।বিভোরের আকাশি রং খুব পছন্দ।”
ধারা খুশিতে হা হয়ে যায়।
—-“সত্যিইই?”
—-“হুম সত্যি।তোদের দুজনরই আকাশি পছন্দ।”
ধারা খুশিতে দু’হাত এক করে চিবুকে রেখে চোখ বুজে।শরীরটা এদিক-ওদিক দোলায়।পৃথিবীটাকে নতুন লাগছে তাঁর।দিশারি হেসে তাড়া দেয়,
—-“ওরা অপেক্ষা করছে চল।”
ধারা দরজা লাগিয়ে আগে আগে হাঁটা শুরু করলো।দিশারির কানে পায়েলের ঝুনঝুন আওয়াজ আসে।ধারার গতিশীল এক পায়ের দিকে তাকিয়ে পায়েল দেখতে পায়।দিশারি গুনগুন করে গান গেয়ে উঠলো,
ম্যায়নে পায়েল হ্যায় ছানকায়ী
আব তো আজা তু হারজায়ী
মেরি সাসো ম্যায় তু হ্যায় বাসা
ও সাজনা,আজা না আব তারসা..”
ধারা ঘুরে তাকায়।চমৎকার করে হাসে।তারপর সিঁড়ি ভেঙে নামতে থাকে।পিছু পিছু দিশারি আসে।

অনেক্ষণ যাবৎ বিভোর অপেক্ষা করছে।বিরক্তিতে নাড়ি-ভুঁড়ি ছিড়ে যাচ্ছে।সিটে বসে গাড়ির দরজা ঠাস করে লাগায়।সায়ন কেঁপে উঠে।বিভোরকে ক্ষেপাতে ইচ্ছে হচ্ছিলো।কিন্তু আগে থেকেই ক্ষেপে আছে।সায়ন চুপচাপ ফেসবুকে নিউজফিড স্ক্রল করতে থাকে।বিভোর নখ কামড়ানো শুরু করে।কয়েক সেকেন্ড পর দিশারি-ধারার কন্ঠ শুনতে পায়।কিন্তু সে তাকায়নি।সে ড্রাইভারের পাশের সিটে চুপচাপ নিজের মতো বসে আছে।ধারা অনেক আওয়াজ করে কথা বলতে থাকে,বিভোরের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য।কিন্তু কিছুতেই লাভ হচ্ছেনা।অবশেষে গোমড়া মুখে বসে পড়ে।

গাড়ি যাত্রা শুরু করে।গন্তব্য মিরিক!মিরিক দার্জিলিং জেলার পাহাড়ে অবস্থিত একটি অপূর্ব সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য শোভিত স্থান।মিরিকের মূল আকর্ষণ সুমেন্দু হ্রদ।এছাড়া মনোরম আবহাওয়া, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কারণে মিরিক একটি পর্যটন কেন্দ্র হয়ে উঠেছে।দার্জিলিং থেকে ৪৯ কিমি পথ পাড়ি দিয়ে পৌঁছাতে হয় ৪৯০৫ ফুট উচ্চতার মিরিকে।যথাসময়ে ওরা পৌঁছে মিরিকে।ধারা আগে আগে হেঁটে আসে হ্রদটির পাড়ে।হ্রদের একদিকে বাগান,অন্য দিকে পাইন গাছের সারি।দুটি পারকে যুক্ত করেছে রামধনু সেতু।একটি সাড়ে ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ পথ হ্রদটিকে ঘিরে রেখেছে।এখানে হাঁটতে হাঁটতে কাঞ্চনজঙ্ঘার সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়।বোটে করে হ্রদে জলবিহার করা যায়।ঘোড়ায় চড়েও ঘুরে বেড়ানো যায়।মনোমুগ্ধকর পরিবেশ।বিভোরের তখন খেয়াল হয়,মনোমুগ্ধকর পরিবেশের চেয়েও মুগ্ধকর এক রমণী আছে এখানে।

কামিজের এক পাশে সামান্য সাদা পুঁথির কাজ।পায়জামাটার নাম ঠিক জানেনা বিভোর।তবে দেখতে,মেয়েদের ধুতির মতোন।সিল্কি আকাশি আর সাদা রংয়ের উড়না,খোলা চুল,গেজ দাঁতের হাসি সব মিলিয়ে তাঁর বউ ধারা।যেন আসমানের নীল পরী জমিনে পা রেখেছে!বিভোর ঠোঁটে মৃদু হাসি টেনে ধারাকে পরখ করতে থাকে।ভালবাসার মানুষটাকে যখন সবচেয়ে বেশি সুন্দর লাগে তখন বুকের ভেতর একটা সুখ নামক চিনচিন ব্যাথা অনুভব হয়।বিভোরেরও হচ্ছে।ধারা আড়চোখে খেয়াল করে বিভোর তাঁর দিকে নিষ্পলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।খুশিতে মনটা নেচে উঠে।অন্যদিকে তাকিয়ে বাম পায়ের পায়জামা গোড়ালির একটু উপরে তুলে বিভোর যেনো পায়ের পায়েল দেখতে পায় সে আশায়।এবং বিভোর দেখতেও পায়।ধারা এবার প্ল্যান করে,সে পায়েলটা খুলে ফেলে দিবে তারপর বিভোর পাবে আর তাকে পরিয়ে দিবে।একদম মুভির মতো!দিশারির পাশ ঘেঁষে দাঁড়ায় ধারা।বিভোরের চোখের আড়ালে পায়েলের হুক খুলে।তারপর সাবধানে পা ফেলে বিভোরের পাশে এসে দাঁড়ায়।স্বাভাবিকভাবে হেসে বললো,

—-“দারুণ জায়গা কিন্তু।মিরিকের মূল আকর্ষণ কি সুমেন্দু হ্রদ?”
—-“হুম।ওইযে ওদিকে,পশ্চিম পাড়ে আছে সিংহ দেবী মন্দির।”
—-“কি কি আছে এখানে?”
—-“সুমেন্দু লেক(হ্রদ)।নৌকা দিয়ে ঘুরতে পারবেন।বিকেল ৪ টার পর নৌকায় বেড়ানো কিন্তু বন্ধ।আর আছে রামিতে দারা।কাছেই অবস্থিত একটি ভিউ পয়েন্ট যেখান থেকে চারপাশের পাহাড় ও বিস্তর্ণ সমভূমি অঞ্চল দেখতে পাওয়া যায়। আছে বোকার গুম্ফা।এটি বৌদ্ধধর্ম চর্চার কেন্দ্র হিসাবে বিখ্যাত যেটি রামিতে দারা যাওয়ার পথে পরে।তখনই দেখে নিতে পারবেন।এছাড়া আছে রাই ধাপ।মিরিকের পানীয় জলের প্রধান উৎস ও পিকনিক স্পট এটা। টিংলিং ভিউপয়েন্ট, চা বাগান, কমলালেবুর বাগান আছে।মিরিক খুব উচ্চমানের কমলালেবুর জন্য বিখ্যাত।আরো কি কি জানি ছিল।নাম ভুলে গেছি।ওহ হ্যাঁ আসার পথে পশুপতিনগর ফেলে আসছি। এইটা নেপাল সীমান্তবর্তী একটি জামাকাপড়, ইলেকট্রনিক্স এবং ঘরোয়া সামগ্রীর বড় বাণিজ্যিক কেন্দ্র।”
ধারা ছোট করে উত্তর দেয়,

—-“ওহ।”
দুজন চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে।বিভোর ধারাকে আরো অনেক্ষণ দেখতে চাইছে।কিন্তু সরাসরি তাকানোটা কেমন না!ধারা ডান পা দিয়ে বাম পায়ের পায়েলটা মাটিতে ফেলে।তারপর হেসে বলে,
—-“আচ্ছা আমি ওদিকটা দেখি?”
—-“ওকে।”
ধারা হেঁটে কিছুটা আগায়।তখন বিভোর ডাকে।ধারা ভাবে,হয়তো বিভোর পায়েলটা দেখেছে।এখন তাকে ডাকছে পরিয়ে দেওয়ার জন্য।ধারা চোখ বুজে কল্পনা করে,বিভোর তাঁর সামনে হাঁটুগেড়ে বসে বলছে,
—-“ধারা আপনার পা টা দিন?”
ধারা অস্বস্তি ভাব নিয়ে পা বাড়িয়ে দেয়।বিভোর আলতো করে ধারার পায়ে পায়েলটা পরিয়ে দেয়।তখন ধারার সর্বাঙ্গ রোমাঞ্চিত হয়ে কেঁপে উঠে।
—-“ধারা,শুনতে পাচ্ছেন?”
ধারা চোখ খুলে দেখে বিভোর তাঁর দিকে বোকার মতো তাকিয়ে আছে।বিভোর বললো,

—-“কি হইছে আপনার?চলুন একসাথে হাঁটি।”
ধারার মাথায় বাজ পড়ে।পায়েল কই?ধারা ঘাড় ঘুরিয়ে আগের জায়গায় তাকাতে নেয়,তখন বিভোর ধারার হাতে ধরে সামনে টেনে নিতে নিতে বললো,
—-“চলুন ঘোড়ায় চড়ি।”
ধারা বাধ্য হয়ে সাথে চলে।

ধারা সামনে বিভোর পেছনে বসে।বিভোরের শিরদাঁড়া সোজা।বসার ভঙ্গিতে রাজা রাজা ভাব।বিভোরের দু’হাতের বাহুতে বন্দি ধারা।একজন আরেকজনের শরীরের উষ্ণতা অনুভব করছে।ধারার শরীর বারংবার কেঁপে কেঁপে উঠছে।ঘোড়ায় বসাবস্থায় ধারা দেখতে পায় সায়নের হাতে তাঁর পায়েল।সায়ন নিচের ঠোঁট উল্টিয়ে বুঝার চেষ্টা করছে জিনিসটা কি!একবার হাতে পরছে একবার গলায়!আজব!ধারার সব অনুভূতি উধাও হয়ে যায়। নেমে গিয়ে সায়নের হাত থেকে ছোঁ মেরে পায়েলটা নিয়ে আসতে মন চাইছে।কিন্তু তাঁর আগেই ঘোড়া চিঁহিঁহিঁ ডাক তুলে দৌড়াতে শুরু করে।
হাওয়া বইছে প্রবল বেগে। ধারার খোলা চুল উড়ে বিভোরের চোখে-মুখে ধাক্কা খাচ্ছে।আচমকা ধারা পড়ে যেতে নেয় বিভোর ধারার পেট এক’হাতে জড়িয়ে ধরে।ধারার রন্ধ্রে রন্ধ্রে শিহরণ বয়ে যায়।বিভোরের উপর শরীরের ভার ছেড়ে দেয়।ঘোড়া টগবগিয়ে সাঁই সাঁই করে ছুটছে তো ছুটছে।বিভোর নরম গলায় বললো,

বৃষ্টি হয়ে নামো পর্ব ১৭

—–“ঠিক আছেন ধারা?”
—-“না নেই।কেমন অদ্ভুত অনুভূতি হচ্ছে।নিজেকে মাতাল মনে হচ্ছে।পৃথিবীটা বড্ড অচেনা লাগছে এবং নিজেকেও।”
—-“আপনি প্রেমে পড়েছেন ধারা!”
—-“আপনি আমাকে তুমি করে বলবেন বিভোর?”
—-“অবশ্যই ধারা।”

বৃষ্টি হয়ে নামো পর্ব ১৯