ভালোবাসার ফোড়ন পর্ব ১৬

ভালোবাসার ফোড়ন পর্ব ১৬
লেখনিতে : মিমি মুসকান

বাসায় ফিরতে ফিরতে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গেল। বাসায় এসে দু’জনেই রুমে চলে এলাম। অতঃপর ফ্রেশ হয়ে আমি নিচে চলে এলাম। ডয়িংরুমে বসে বসে একটা মুভি দেখেছিলাম। ইন্টারেস্টিং ছিলো মুভি টা। হঠাৎ উনি এসে বললেন….

– বাহ্ এতো মনোযোগ দিয়ে মুভি দেখছো।
আমি উনার দিকে একবার তাকিয়ে আবার মুভি দেখায় মনোযোগ দেই। উনি হুট করে এসে টিভি অফ করে দেন। আমি কপাল কুঁচকে উনার দিকে তাকিয়ে আছে। উনি ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বলে…
– পড়তে বসেছো আজ একবারোও!
– না।
– কেনো? চলো পড়তে চলো।
আমি একবার ঘড়ির দিকে তাকাই। ৭ টা বাজে এখন।‌হিসাব করতে থাকি এখন ৭ টা বাজে তাহলে আরো তিন ঘন্টা মানে ১০ টা বাজে উনি আমাকে ছাড়বেন। আমি অসহায় মুখ করে উনাকে বলি..
– আজ থাক কাল পড়বো।
– তাহলে মুভি আজ অফ থাক বাকি টা কাল দেখো।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

বলেই উনি রিমুট নিয়ে চলে গেলেন। আমি মুখ ফুলিয়ে উনার পিছু পিছু গেলাম। সত্যি সত্যি উনি আমাকে ১০ টা অবদি বসিয়ে রেখেছেন। আসলেই বিরক্তিকর এতোক্ষণ বই নিয়ে বসে থাকা। মা এসেছিলো আমাকে ছাড়াতে কিন্তু উনি যেতেই দিলেন না। নিজেকে একবারোও দেখলাম না বই নিয়ে বসতে অথচ আমাকে ‌পড়িয়ে যাচ্ছে আজব। ক্ষুধাও পেটে ইঁদুর লাফাচ্ছে কিন্তু উনি এখনো ছাড়ছে না। আমি একটু সাহস নিয়ে বলি…

– ৩ ঘন্টা তো হয়ে গেছে পড়ার টাইম তো শেষ।
– তোমাকে কে বললো আমি ৩ ঘন্টা পড়াবো।
– কিহহ! আরো পড়াবেন।
– হুম হুম পড়ো।
– আজকে আমি অনেক কাজ করেছি এখন ছাড়ুন আমায়। ক্ষুধা লেগেছে অনেক।
– আরো ১ ঘন্টা পড়ো তাহলে রেহাই পাবা।
বলেই উনি চলে গেলেন। রাগে আমার শরীর জ্বলছিলো। টেবিলের ওপর বই য়ে মাথা গুঁজে পড়ে ছিলাম। উনার ধমকানিতে লাফিয়ে উঠি। দেখি উনি খাবারের প্লেট হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আমি খাবারের প্লেট দেখে একগাল হেসে বলি…

– আমার জন্য!
– নাহ ভূতনি’র জন্য।
আমি উনার হাত থেকে প্লেট নিয়ে বলি…
– সে যাই হোক আমার ক্ষুধা লেগেছে আমি খাবো।
বলেই খাটে গিয়ে বসি। উনি দাঁড়িয়ে আমার বই খাতা সব গোছান আর আমি খাটে বসে খাচ্ছি।
বই খাতা গুছিয়ে উনি আমার পাশে এসে শুয়ে পড়েন। আমি বলে উঠি…
– আপনি খাবেন না!
– নাহ ইচ্ছে করছে না।
– কি বলছেন ইচ্ছে করছে না। উঠুন খেয়ে নিন।
– না খাও তুমি।

আমি উঠে উনার জন্য খাবার নিয়ে আসি। অতঃপর উনাকে উঠিয়ে খেতে বলি। উনি কি ভেবে খেতে শুরু করেন। ততোক্ষণে আমি খাবার শেষ করে বসে থাকি। হঠাৎ উনার ফোন আসে। ফোনটা সম্ভবত নিতি’র ছিলো সেটা কথার ভঙ্গিতে বোঝা যাচ্ছে। উনি খাবার শেষ করে বেলকনিতে দাঁড়িয়ে তার সাথে কথা বলে। আমি বিছানায় শুয়ে দেখছিলাম। খুব খারাপ লাগছে এভাবে এসব দেখতে। আমি বিয়ের কথাটা এজন্য বলতে বলে নি কারন আমি চায় নি আমার জন্য উনার রিলেশনে কোনো সমস্যা হোক। এখন আবার আমার’ই খারাপ লাগছে। অন্য পাশে মুখ ঘুরিয়ে শুয়ে পড়লাম। কখন ঘুমিয়ে পড়েছি জানি না। সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি উনি বিছানায় নেই।

এতো সকাল সকাল উনি কোথায় গেলেন। উঠেই খুঁজতে লাগলাম। নাহ ওয়াসরুম এ নেই তাহলে গেলো কোথায়। বেলকনিতে একবার উঁকি দেবো কিন্তু এতো সকাল কি ওখানে উনি থাকবেন? তাও একবার উঁকি দিলাম। সত্যি’ই তাই বেলকনিতে দোলনায় ঘুমিয়ে আছেন তিনি। হয়তো অনেকক্ষণ বসে কথা বলছিলো নিতি’র সাথে তারপর এখানেই ঘুমিয়ে পড়ে। মনের কোথাও এটা ভেবে অনেক কষ্ট লাগলো। কেন জানি আমাকে ছাড়া অন্য কাউকে উনার এতো ইম্পর্ট্যান্টেস দেওয়া আমার ভালো লাগছিলো না। আমি উনাকে ডেকে তুললাম।
উনি চোখ মেলে আমার দিকে তাকিয়ে বলল…

– গুর্ড মনিং ভূতনি
মেজাজ এমনেই খারাপ ছিলো উনার কথায় আরো বিগড়ে গেলো। একটা ঝাড়ি দিয়ে বললাম..
– রাখেন আপনার ভূতনি! সারারাত এখানে কি করছিলেন।
– তুমি আমাকে ধমকাচ্ছো।
– হ্যাঁ তো কি করবো!
– সকাল সকাল ঝগড়া শুরু করে দিলে তো দেখো আজ সারাদিন ঝগড়ায় কাটবে আমাদের।
– ভালোই হবে আপনার সাথে থাকলে ঝগড়ার চেয়ে বেশি আর কিছু হবে না।
বলেই চলে আসতে নিলাম। হঠাৎ আমার শাড়ির আঁচল আঁটকে গেলো। আমি কোমরে হাত দিয়ে উনার দিকে তাকিয়ে বলি…
– কি?
– এক কাপ কফি!
– দিচ্ছি ফ্রেশ হয়ে নিন।

আজ শুক্রবার! সবার অফ ডে, একটু আগেই সকালের নাস্তা সবাই একসাথে করি। সার্ভেন্ট’রা রান্না করছে, মা আমাকে রান্না’র কাজে হাত দিতে দেয় নি। আমি হাঁটতে হাঁটতে বাগানে এলাম। দেখি বাবা বাগান পরিষ্কার করছে।
আমি উনার পিছনে গিয়ে দাঁড়ালাম, বাবা আমার উপস্থিতি পেয়ে বলেন…
– তুমি এখানে!
– হুম!
– কি করছো?
– কিছু না, ভাবছি আপনার কাজে ‌সাহায্য করবো।
উনি কিছু বললেন না। এর মানে আমি বুঝে গেলাম উনি আমায় অনুমতি দিয়েছেন। আমি বাবা’র পাশে বসে পরিষ্কার করেছিলাম। পরিষ্কার শেষে বাবা নিজের হাতে গাছে পানি দিচ্ছিলেন। আমি তাকে সাহায্য করছি। হঠাৎ আমি বলে উঠি..

– বাবা এগুলো তো বাড়ি’র সার্ভেন্ট’দের বললেই করে দেবে আপনি এতো কষ্ট করে কেন করছেন?
বাবা আমার দিকে না তাকিয়ে ‌গম্ভীর স্বরে বললেন…
– পছন্দের কিছু নিজের হাতে যত্ন নেওয়ার মতো আনন্দ অন্য কিছুতে নেই।
আমি আর কিছু বললাম না, একটা মুচকি হাসি দিয়ে উনাকে সাহায্য করতে থাকি। বুঝতে পারি এই বাগান উনার খুব প্রিয়। অনেক যত্ন করেন তিনি এসবের।

কাজ শেষ করে বাবা আর আমি দাঁড়িয়ে বাগানের সৌন্দর্য দেখছি। মন ভালো করার জন্য এতোটুকুই যথেষ্ট।
মা হাঁটতে হাঁটতে এখানে আসেন।‌আমাকে দেখে মুচকি হেসে বলেন…
– বাহ শশুড় আর বউ মিলে তো দেখছি অনেক কাজ করেছো। তা এভাবেই কি থাকবে নাকি। তোমাদের অবস্থা তো নাজেহাল দেখছি।
আসলেই কাজ করতে করতে আমার আর বাবা’র কাপড়ে অনেক মাটি লেগে গেছে। মা আবার বলেন…
– মা নিহা যাও ফ্রেশ হয়ে নাও আর আপনি ( বাবা কে উদ্দেশ্য করে ) গোসল করতে যান নামাজে যেতে হবে তো নাকি।
মা’র কথায় বাবা চলে গেলেন। আমিও চলে এলাম ঘরে। কিন্তু একি! ঘরের অবস্থা তো আমার থেকেও নাজেহাল। পুরো বিছানা জুড়ে পাঞ্জাবি আর সামনে কোমরে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে আহিয়ান চৌধুরী। আর উনার কাছে গিয়ে বলি…

– মেয়েদের মতো কোমরে হাত দিয়ে কি ভাবছেন।
উনি আমার দিকে তাকিয়ে ভ্রু কুঁচকে বলেন…
– কোমর কি শুধু মেয়েদের’ই আছে নাকি।
আমি মুখ ঘুরিয়ে বললাম…
– সেটা মানলাম কোমর আপনার ও আছে কিন্তু এভাবে জামাকাপড় ছিটিয়ে রেখেছেন কেন?
– পড়বো বলে!
– এতো গুলো পড়বেন।
– নিহা পাগল হলে তুমি আমি এতো গুলো কিভাবে পড়বো। যে কেনো একটা পড়বো কিন্তু কোনটা ভেবে পাচ্ছি না।

– আপনি এখনো গোসল করতে যান নি।
– না যাবো!
– আচ্ছা যেয়েন তার আগে আমি গেলাম।
বলেই যেতে নিবো উনি আমার শাড়ির আঁচল ধরে ফেললেন। আমি ঘুরে উনার দিকে তাকিয়ে বলি…
– কি হচ্ছে টা কি?
– আমি আগে যাবো, আমার লেট হচ্ছে।
– তাহলে যান।
– হ্যাঁ কিন্তু এখানে…
– আরে রাখুন এখানে..
বলেই উনাকে ধাক্কিয়ে বাথরুমে পাঠালাম আর বললাম…
– আমি দেখছি আপনি যান।

উনি যাবার পর বিছানায় থাকিয়ে দেখি অনেক গুলো পাঞ্জাবি পুরো বিছানা জুড়ে। রাগ হচ্ছিল এগুলো এখন ঠিক করবে কে! পড়বে একটা আর বার করেছে হাজার টা। উনাকে বকাবকি করতে করতে সব গোছালাম। উনি বাথরুম থেকে জোরে জোরে বললেন…
– ভূতনি আমাকে বেশি বকাবকি করবে না একদম।
আমি দরজার কাছে গিয়ে বলি…
– দয়াকরে একটু তাড়াতাড়ি বের হবেন আপনি।
– বের হচ্ছি বের হচ্ছি। তোমার মতো না আমি যে বাথরুমে বসে ঘুমাবো।
– কিহহ বললেন আপনি!

উনি তোয়ালে দিয়ে চুল মুছতে মুছতে বের হন। পরনে একটা জিন্স আর বক্সার গেঞ্জি। আমি দরজার সামনেই ছিলাম। উনি আমার কানের কাছে এসে বলে….
– কিছু না তুমি কানে বেশি শোন।
– ওহ্ আচ্ছা এখন আমার কানের দোষ।
উনি হেটে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে বলে…
– হ্যাঁ, কানের দোষ। এখন বলো ‌কোনটা পড়বো।
আমি একটা কালো রঙের পাঞ্জাবি উনার হাতে দিয়ে বলি….
– এটা পরুন।
– এটা!
হাতে নিয়ে আয়নায় দাঁড়িয়ে নিজেকে দেখে..
– ভালো লাগবে এটা!
নামাজ পড়তে যাবেন , প্রেম আলাপ করতে না। চুপচাপ পড়ে যান এইটা!
উনি আমার দিকে তাকিয়ে কিঞ্চিত হাসি দিয়ে বলল…
– এতোদিন পর আজ মনে হচ্ছে বিয়ে করেছি।
– হয়েছে থাকুন আপনি আমি গেলাম।

বলেই বাথরুমে চলে গেলাম। গোসল শেষে তাকিয়ে দেখি শাড়ি আনি নি। আমি দরজায় উঁকি দিয়ে দেখি উনি আয়নায় দাঁড়িয়ে চুল আচঁড়াচ্ছে। আজব তো এই লোকটার রেডি হতে কি এতো সময় লাগে। ভাবছি উনাকে বলবো কি না। হঠাৎ উনি বলে উঠেন…
– কিছু বলবে?
আমি ‌অসহায় মুখ করে মাথা নাড়ি।
– কি?
– আমাকে একটা শাড়ি দিন না। নিতে ভুলে গেছি।
আমার দেশ তাকিয়ে একটা রহস্যময় হাসি দিয়ে…
– ওয়েট দিচ্ছি।

উনার কথা শুনে আমি দরজা আটকে দিয়ে উনার হাসির কারন খুঁজতে থাকি। উনি এসে দরজা নক করলে আমি একটু খুলি উনার হাত থেকে শাড়ি নিয়ে দরজা লক করি। শাড়ির দিকে তাকিয়ে আমি চমকে উঠি। পুরো উনার পাঞ্জাবি রঙের শাড়ি এটা। এখন কি করবো? ভেজা শরীর নিয়ে কি বাইরে বের হবো। থাক এটা পড়লেই বা কি হবে। এতো কিছু না ভেবে এটা পড়েই ঘরে চলে এলাম।

ঘরে এসে দেখি উনি নেই, তার মানে নামাজ পড়তে চলে গেছে। আমিও নামাজ পড়ে কিছুক্ষণ কোরান শরীফ পড়ে নেই।‌ উনি এখনো আসে নি। আমি টেবিলের বই খাতা গুছাতে থাকি। কারো কথা শুনে আমি অবাক হয়ে যাই। পিছনে ঘুরে তাকিয়ে দেখি আহিয়ান ভ্রু কুঁচকে ‌আমার কাছে আসছে আর বলছে “কপিবাজ”। আমি উনার কথা’র অর্থ না বুঝে হা করে তাকিয়ে আছি। উনি আবারও বলে উঠে…
– ভূতনি থেকে এখন কপিবাজ হয়ে গেছো।
– আমি কপিবাজ!
– না হলে কে? আমি!
– আপনার কথা কিছু বুঝছি না আমি।

উনি আমার হাতে বাহু ধরে আয়নার সামনে নিয়ে যায়। তারপর ইশারায় আমাকে আয়নায় তাকাতে বলে। আমি তাকিয়ে দেখি উনার পাঞ্জাবি রং আর আমার শাড়ি’র রং হুবহু একরকম। দুজনকে এভাবে দেখতে বেশ লাগছে। উনি আমার কানে ফিসফিসিয়ে বলে…
– এখন বুঝলে কপিবাজ!
আমি উনার দিকে ফিরে…

– বুঝলাম কিন্তু শাড়ি টা তো আপনি দিয়েছিলেন!
– ছুতো দিও না তো আমি জানি তুমি কপিবাজ। এই রঙে আমাকে হ্যান্ডসাম লাগছিল বলে তুমিও ইচ্ছে করে এই রঙ এর শাড়ি পড়েছো। Hy wait তুমি শুধু কপিবাজ না হিংসুটে ও বটে। এখন কি বলবো তোমায় বলো তো কপিবাজ ভূতনি নাহ হিংসুটে ভূতনি!
আমি কোমরে হাত দিয়ে বলি…
– আপনি ইচ্ছে করে আমার সাথে ঝগড়া করছেন!
– আরে জাত শত্রু তুমি আমার। ঝগড়া তোমার সাথে করবো নাতো কার সাথে করবো।
– আপনাকে তো আমি..
বলেই উনার গলা টিপতে যাচ্ছিলাম, হঠাৎ কারো কথা শুনে আমি থতমত খেয়ে গেলাম। দরজার দিকে তাকিয়ে দেখি আপু দাড়িয়ে আছে এক গাল হাসি দিয়ে তার সাথে অবাক ও। আপু কে দেখে আমি উনার থেকে কিছুটা দূরে সরে যাই।

আপু ভিতরে এসে আমাকে ধরে বলে…
– বাহ কি মানিয়েছে তোমাদের, একটা sweet couple লাগছে দেখতে।‌ কারো নজর না লেগে যায় নিহা একটু কাজল দেও না।
আপু’র কথা শুনে আমি আহিয়ান এর দিকে তাকাই আর আহিয়ান আমার দিকে। দু’জনেই ফিক করে হেসে দেই। আহিয়ান বলে উঠে…
– আপু এটা আমি করেছিলাম ঝগড়া করতে আর তুমি..
আমি বলে উঠি…
– তুমি কোথাকার জল কোথায় নিয়ে গেলে।
আপু আমাদের দিকে তাকিয়ে…
– তোরা দুজন একটা sweet couple‌ না হলেও একটা পাগলের জুটি অবশ্যই হবি।
আপু কথা শুনে উনি আমার দিকে তাকিয়ে বলে…

ভালোবাসার ফোড়ন পর্ব ১৫

– আরো একটা নতুন নাম পেলাম তোমার জন্য!
– চুপ করবেন আপনি! আপু পাগল একা আমাকে না আপনাকেও বলেছে বুঝলেন!
উনি আমার দিকে তাকিয়ে…
– না আপু তোমাকে বলেছে!
আমি কোমরে হাত দিয়ে উনার দিকে তাকিয়ে…
– না আপনাকে।
– আমি বলছি তোমাকে!
– আমি বলছি আপনাকে।
– তোমাকে!
– আপনাকে!
আমাদের ঝগড়া শুনে আপু বলে উঠে…
– তোরা দুজন থাম আমি বোন নিজেই পাগল যে তোদের প্রশংসা করতে এসেছি। মা খাবারের জন্য ডাকছে নিচে আয়।
বলেই আপু চলে গেলেন। আমরা দুজনে দুজনের দিকে তাকালাম। উনি বলে উঠে…
– চলো
– চলুন।
দু’জনে একসাথে নিচে গেলাম। মা আমাদের দেখে অনেক খুশি হলেন, বাবাও হলেন কিন্তু কিছু বললেন না। একই রকমের ড্রেস পড়াই সবাই এতো খুশি হবে এটা আমি ভাবি নি।

বিকালে উনি আমাকে নিয়ে আবার বের হন স্কুটি নিয়ে। আজ বেশিক্ষণ থাকি নি আমরা। উনি কিছুক্ষণ পড়েই আমাকে বাসায় ছেড়ে দিয়ে উনার বন্ধুদের কাছে চলে যান। তারা সবাই তাকে অনেক ফোন করছিলো দেখা করার জন্য। উনি প্রথম যেতে না চাইলেও অনেক ফোন করার পর আমি নিজেই বলি যেতে। অতঃপর আমাকে বাসায় রেখে উনি চলে যান।
বাসায় এসে আমি আপু আর মা’র সাথে অনেকটা সময় ধরে গল্প করি। এর মাঝে বাবা’র সাথে ও একটু কথা বলি। পরিবারের সবার সাথে অনেক ভালো একটা সময় কাটাই।

অনেক রাত করে বাসায় ফিরেন উনি। বাড়ির সবাই ততোক্ষণে ঘুমিয়ে পড়েছে। আমি উনার জন্য অপেক্ষা করছিলাম।‌উনি বাসায় ফিরে আমাকে জাগতে দেখে খানিকটা অবাক হন কিন্তু কিছু বলেন না। এরপর দু’জনে একসাথে রাতের খাবার খেলাম অতঃপর উনি ঘুমিয়ে পরেন।
সকালে ভার্সিটিতে যাবার জন্য বের হই। বাড়ির বাইরে এসে দেখি আমি যা দেখি তাঁর জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। আমি অবাক চোখে তাকিয়ে থাকি…

ভালোবাসার ফোড়ন পর্ব ১৭