ভালোবাসার ফোড়ন পর্ব ১৭

ভালোবাসার ফোড়ন পর্ব ১৭
লেখনিতে : মিমি মুসকান

সকালে ভার্সিটিতে যাবার জন্য বের হই। বাড়ির বাইরে এসে দেখি আমি যা দেখি তাঁর জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। আমি অবাক চোখে তাকিয়ে আছি আমার সামনে থাকা আহিয়ান এর দিকে। পড়নে একটা জ্যাকেট আর জিন্স কিন্তু কথা সেটা না কথা হলো সে একটা কালো মাস্ক আর চোখে কালো সানগ্লাস পড়া।‌ উনার বড় বড় চুল গুলো মাথায় এসে ঠেকছিলো। মোট কথা উনাকে দেখে মনে হচ্ছে উনি নিজেকে লুকানোর চেষ্টা করছে আর সফল ও হয়েছে কিন্তু আমি সম্ভবত উনাকে এতো কাজ থেকে দেখার কারনে বুঝতে পেরেছে। তবুও একটু doubt‌ ছিল। আমি উনার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকায় উনার বিশ্ববিখ্যাত ভ্রু কুচঁকানো দেখে আমার কোনো সন্দেহ নেই এইটা আহিয়ান।

আমি এখনো দাঁড়িয়ে আছি আর উনাকে দেখে যাচ্ছি কেন জানি অদ্ভুত লাগছে দেখতে। উনি আমার সামনে হাত দিয়ে চুটকি বাজিয়ে বললেন…
– কি হয়েছে ভূতনি!
আমি অবাক হয়ে বলি…
– এটা আপনি তো!
– হ্যাঁ আমি তোমার স্বামী। এখন চলো!
– কোথায় যাবো?
– প্রেম করতে যাবো চলো!
– কিহহহ!
– গাধী ভূতনি! ভার্সিটিতে যাবা নাহ।
– হ্যাঁ যাবো তো! কিন্তু হেঁটে যাবো কেন?
উনি আমার দিকে কিছুটা ঝুঁকে বলে…
– তোমার মনে হয় তোমার স্বামী তোমাকে হাঁটিয়ে নিয়ে যাবো!
আমি কোমরে হাত দিয়ে বলি…
– নিশ্চয়ই কোলে করে নিয়ে যাবেন না!
উনি মাথা চুলকিয়ে…

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

– প্রশ্নই আসে না সেদিন তোমাকে কোলে নিয়ে আমার কোমরের ব্যাথা এখনো যায় নি!
উনার কথা শুনে আমি হা করে উনার দিকে তাকিয়ে আছি। উনি আবার বলে উঠে…
– হা করে থেকো না মুখে মাছি ঢুকে যাবে।
আমি নিজেকে ঠিক করে বলি….
– আমি কি সত্যিই এতো মোটা।
– আরে না আমি মজা করছিলাম। এক বস্তাও হবে না, বাতাসের আগে চলো তুমি।
– কি বললেন আপনি।

– আমার আগে জানা উচিত ছিলো তুমি কানে কম শোন, এক কথা দশবার বলা লাগে তোমায়!
আমি আর কথাই বললাম না। নিচে তাকিয়ে রইলাম। আচমকা উনি আমার হাত টেনে একটা রিক্সায় উঠিয়ে দিলেন। অতঃপর নিজেও বসে পড়লেন। ব্যাপার টা তাড়াতাড়ি হওয়ায় আমার বুঝতে একটু সময় লাগলে কিন্তু বলতে হবে উনার এমন কর্মকাণ্ডে আমি নির্ঘাত পাগল হবো। আমি রেগে উনার দিকে তাকিয়ে আছি।‌উনি রিক্সাওয়ালাকে বললেন “মামা চলুন” অতঃপর আমার দিকে তাকিয়ে বলেন….

– কি হলো?
– আমিও এটাই জিজ্ঞেস করছি কি হলো এটা।‌ আপনি এভাবে আমাকে রিক্সায় কেন উঠালেন। আর আপনার এই অবস্থা কেন? আচ্ছা আপনি কি আমাকে কিডন্যাপ করে মেরে ফেলার প্ল্যান করেছেন।
আমার কথা শুনে রিক্সাওয়ালা থেমে যান। উনি অবাক চোখে আমাদের দেখছে। হুট করেই রিক্সা থেমে যাওয়াই আমি বুঝতে পারি ভুল জায়গায় ভুল কথা বলে ফেলেছি। উনি চোখ রাঙিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।‌ আমি একটা শুকনো ঢোক গিলে একপাশে চুপটি করে বসে পড়ি। উনি রিক্সাওয়ালা কে বলে…

– কিছু হয় নি মামা, স্বামী স্ত্রী মধ্যে শুধু একটু ঝগড়া হয়েছে, আপনি চলুন।
রিক্সাওয়ালা কিছুক্ষণ আমার দিকে তাকিয়ে আবার রিক্সা চালাতে শুরু করে।‌ আমি জানি এখন খুব বড় একটা ঝাড়ি খেতে চলেছি। হাত পা খিচে চোখ বন্ধ করে বসে আছি আমি। কিন্তু এতোক্ষণ হবার পর ও উনি যখন আমায় ধমক দেন নি তখন আমি একটু সাহস করে উনার দিকে তাকাই। দেখি উনি এখনো রেগে তাকিয়ে আছেন আমার দিকে। আমি কাঁপা কাঁপা গলায় বলি..

– স…রি!
উনি আমার থেকে মুখ সরিয়ে নেয়। আমি একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলি কিন্তু হঠাৎ উনি আমার কানে ফিসফিসিয়ে বলে…
– আগে বাসায় চলো তখন দেখাচ্ছি তোমায়, পাবলিক প্লেস বলে বেঁচে গেলে এখন।
আমি অনেক খুশি হয়ে গেলাম কারন এখন উনি আমায় কিছু বলবেন না তাহলে। আর বাসায় যেতে যেতে উনি ভুলে যাবেন আমি নিশ্চিত।‌‌ আমি এবার উনার দিকে তাকিয়ে বলি…

– আচ্ছা আপনি এসব পড়ে আছেন কেন?
– তুমি না উপকার চেয়েছো তাই! কিন্তু তোমরা উপকার করতে গিয়ে আমার বাঁশ খেতে হচ্ছে।
উনার কথা শুনে খুব হাসি পাচ্ছিল, তবুও নিজেকে সংযত রাখি। বুঝতে পারছি বেচারা উপর ঝড় বৃষ্টি সব বয়ে যাচ্ছে। আমি আবার বলি…
– যাতে আপনাকে কেউ না চিনে তাই!
– তো কি করবো! গাড়ি করে যাবে না, স্কুটি চালানো না ঠিক মতো শিখতে পারলে না আর কোনো choice রেখেছিলে তুমি!

– বাস এর choice টা কিন্তু ছিলো!
এই কথা শুনে উনি আবারও আমার দিকে চোখ রাঙান। আমি আবারও চুপ হয়ে যাই।
উনি দাঁতে দাঁত চেপে বলেন…
– এতো লোকের ধাক্কাধাক্কি’তে তোমাকে আমি ওটাই করে নিয়ে যেতাম। হ্যাঁ ঠিক বলেছো নিলে ভালোই হতো একটু শিক্ষে হতো তোমার।

আমি আর কথা বললাম না। উনি বেশ রেগে আছে। প্রায় অনেকক্ষণ পর হুট করেই জ্যাম এ আটকে গেলাম। এই সময়ে গরম লাগার কথা না তবুও জ্যামের কারনে খুব গরম লাগছে,অবস্থা খারাপ হচ্ছে। আমি শুধু উনাকে দেখছি উনি কিভাবে সহ্য করে আছে। হয়তো এভাবে গরমে বসে থাকার অভ্যাস নেই উনার। আমি সাথে না থাকলে নিশ্চয়ই হেঁটে চলে যেতেন। আমি উনাকে পানির বোতল দিয়ে বলি..

– পানি খাবেন।
– হুম দাও।
– একদম বোতলে মুখ লাগিয়ে খাবেন না কিন্তু।
উনি শান্ত গলায় বলেন…
– আমি তোমার মতো না বুঝলে দাও।
– আমার মতো হতেও পারবেন না নিন!
উনার কাছে পানির বোতল টা দিলাম। উনি মাস্ক খুলতে যাবে আমি সাথে সাথে হাত দিয়ে উনার গাল ধরে নিজের দিকে ঘুরাই। উনি ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে বলে…

– কি হলো?
আমি কাঁপা কাঁপা গলায় বলি…
– নি…তি!
উনি অবাক হয়ে বলেন..
– নিতি! কোথায়?
আমি উনার গাল থেকে হার সরিয়ে বলি…
– ওখানে! গাড়ির মধ্যে থেকে আপনাকে দেখেছে নিশ্চিত চিনতে পেরেছে!
– আরে Chill পারবে না। অনেক দূর থেকে দেখেছে।
– না পাক কিন্তু আমাকে তো দেখেছে। তাও একটা ছেলে’র সাথে সেটা আপনি হোক বা অন্য কেউ।
– তো কি হয়েছে?

– আপনি জানেন ওরা আমাকে কিভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করবে। একেবারে মনে হবে যেনো আমি কোনো অপরাধী!
– কেন করবে?
– কে জানে? শত্রুতা তো আপনার থেকে শুরু হয়েছে।‌
( এর মধ্যে নিতি বার বার উঁকি মারছে, আমার সাথে এটা কে দেখার জন্য )
– কে বলেছিলো তোমাকে চড় মারতে! তুমি জানো সেদিন প্রথম আমি কোনো মেয়ের হাতে চড় খেয়েছি।
আমি উনার মুখের দিকে তাকিয়ে…

– কিহ এর আগে সত্যি’ই কোনো মেয়ে আপনাকে চড় মারে নি। আমি’ই প্রথম এই বিশ্ব জয় করলাম তাহলে!
আমার কথা শুনে উনি অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে তার সাথে রিক্সাওয়ালাও। জ্যাম ছুটে যায় এর মধ্যে। নিতি’র গাড়ি আর দেখা যায় না। আমরা দুজন ভার্সিটিতে চলে এলাম। প্রথমে আমি ঢুকি ভার্সিটিতে তাও খুব ভয়ে ভয়ে। যেন তাদের চোখে ধরা না পড়ি। ভালো মতোই ক্লাসে চলে যাই। ক্লাস এখনো শুরু হয় নি সিঁড়িতে ইতি’র সাথে দাঁড়িয়ে কথা বলছি। ইতি কে এখনো বিয়ের ব্যাপার টা বলি নি তাই ‌কেমন কেমন লাগছে আমার। ইতি’র সাথে কথা বললেও আমার চোখ ভার্সিটির গেটে। কারন উনি এখনো আসে নি। হঠাৎ চোখ পড়ল, উনি আসছেন। তার সাথে নাহান ভাইয়া। মুখের মাস্ক টা নেই আর সানগ্লাস বদলে এসেছে‌ । বেশ স্টাইল নিয়ে ঢুকলেন কারন তিনি আসার পর সব মেয়েদের নজর তার দিকে। কিন্তু কেন? কি আছে তার মাঝে? আমার তো আজ পর্যন্ত এটা চোখে পড়ল না।

উনাকে দেখছিলাম কেউ হঠাৎ আমার সামনে চুটকি বাজালো। তাকিয়ে দেখি নিতি! তাকে দেখে একটা শুকনো হাসি দিই। নিতি বলে ওঠে…
– কতো ছেলের দিকে নজর তোমার!
আমি অবাক হয়ে যাই নিতি’র কথায়। ইতি বলে উঠে…
– এসব কি বলছো তোমরা।
টিনা বলে উঠে…
– তুমি চুপ করো। আমাদের মাঝে না আসাটাই তোমার জন্য ভালো।
ইতি আবার কিছু বলতে যাবে আমি ইশারায় ‌ইতি কে না বলি সে চুপ হয়ে যায়। আমি নিতি কে বলি…
– আপু তুমি এসব কি বলছো।

– এমন ভাব করছো যেনো কিছু জানোই না। দেখলাম তো রিক্সায় একটা ছেলের সাথে তার মধ্যে তুমি নাকি বিবাহিত, তাহলে অন্য ছেলের সাথে কি করছিলে।
ইতি আবার রেগে বলে ওঠে…
– বিবাহিত তার মানে নিশ্চয়ই ওটা ওর বর ছিলো তাই না।
নিতি ইতি’র গাল চেপে ধরে বলে..
– হ্যাঁ আমিও ভেবেছিলাম। কিন্তু..
বলেই ইতি কে ছেড়ে আমার দিকে আসে।‌ আমাকে বলতে থাকে…

– স্বামী কে এতো লুকিয়ে আনে কে বলতে পারো। তারপর তোমার স্বামী হলেও তোমাকে দিতে কেন আসলো না। Whatever তোমার জীবন এতে আমার কোনো interest নেই। তবে….
বলেই আমার হাত মুচড়ে পিছনে ঘুড়িয়ে নিয়ে বলতে থাকে..
– আমার আহি’র দিকে চোখ তুলেও তাকিও না খুব খারাপ হবে।
বলেই আমাকে ছুড়ে ফেলে দেয়। আমার হাত ব্যাথায় ফুলে ওঠে, তার সাথে লাল ও।
আমি ভারী গলায় ‌বলি…

– আপু আমি কি করেছি!
টিনা বলে উঠে…
– বাহ এতো দেখছি ভাজা মাছ উলটে খেতে পারে না। যেমন ভাবে আহি কে দেখছিলো দেখে মনে হচ্ছিল চোখ দিয়েই তাকে গিলে খাবে।‌
ইতি বলে উঠে..
– ভার্সিটির‌ সব মেয়ে তাকিয়ে আছে তোমাদের আহি’র দিকে। তাদের কেন কিছু বলছো না।
নিতি বাঁকা হাসি দিয়ে বলে..
– সবার দেখা আর ওর দেখার মধ্যে অনেক পার্থক্য আছে। কারন ওর চোখ অন্য কিছুই বলছিলো আমায়।
এরপর যেনো আহি’র কাছেও তোমায় না দেখি।
আমি চুপচাপ দাঁড়িয়ে তাদের কথা শুনছি। এখন নিজের স্বামী কে দেখতেও তাদের অনুমতি লাগবে আমায়। তারা আরো কিছুক্ষণ আমাকে শাসিয়ে চলে গেলো। আমি কিছু না বলে ক্লাসরুমে চলে গেলাম।

হুট করেই ইতি দৌড়ে আসে ক্লাসরুমে। অতঃপর আমার হাত ধরে টেনে হিচরে তার সাথে নিয়ে যায়। আমি শত জিজ্ঞেস করার পরও কিছু বলছে না। মুখে একটাই কথা, “অনেক বড় কাহিনী দেখলে বুঝবি চল আমার সাথে।”
এরপর আমি আর কিছু জিজ্ঞেস করি নি। ওর পিছু পিছু যেতে থাকি।
ইতি আমাকে ক্যাম্পাসে’র দিকে নিয়ে যাচ্ছে। খুব ভিড় ওখানে। তার মানে নিশ্চয়ই বড় কিছু হয়েছে। আসলেই অনেক বড় কিছু। ভিড়ের মধ্যে ঢুকে আমি হতবাক হয়ে গেলাম। আহিয়ান মারাত্মক রেগে আছে। তার সাথে আকাশ ভাইয়া ও। তার সামনে নিতি কাঁদছে কিন্তু আনিকা চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে তবে বেশ ভয় পেয়ে আছে।
আহিয়ান চেঁচিয়ে বলে উঠে…

– কি হলো কথা বলছিস না কেন? Answer me Niti. Damn it!
বলেই হাতে থাকা ফোনটা ধুম করে আছাড় মারল। আমি ভয়ে চোখ বন্ধ করে ইতি’র হাত খিচে ধরে নিলাম। কিন্তু আমি হলফ করে বলতে পারি ওই ফোনটা উনার না। নিজের ফোনের প্রতি যেই ভালোবাসা উনার, কখনো নিজের ফোন ভাঙবে না। এটা মনে হয় আকাশ ভাইয়া’র। কারন চোখ খোলার পর তার অসহায় মুখ দেখলাম আমি। ভাঙা ফোনের দিকে অসহায় ভাবে তাকিয়ে আছেন। হয়তো উনার রেগে যাওয়াতে তিনি ও প্রচুর ভয় পেয়েছে তাই কিছু বলার সাহস পাচ্ছে না।

আহিয়ান এবার নিতি’র কাছে যায়। দাঁতে দাঁত চেপে বলে উঠে…
– নিতি কথা বল! এরকম টা কেন করলি তুই! কেন এতো বড় মিথ্যে ছড়িয়ে দিলি। বল!
আমি আস্তে আস্তে ইতি’র কে জিজ্ঞেস করি..
– কোন মিথ্যে রে!
ইতি ফিসফিসিয়ে বলে…
– আরে ওই ‌রিলেশনশিপ পোস্ট এর। নিতি এটা আহিয়ান ভাইয়া কে না বলেই পোস্ট করেছে। এতে।ভাইয়া খুব ক্ষেপে গেছে।
তার মানে এসব মিথ্যে ছিলো। হি হি হি খুব খুশি লাগছে। ইচ্ছে করছে আমি গিয়ে দুটো চড় মেরে আসি। কিন্তু এটা তো করা যাবে। আচ্ছা উনি কি মেরেছেন নাকি নিতি কে। নাহলে এভাবে কাঁদছে কেন? আমি ইতি কে আবার জিজ্ঞেস করি..

ভালোবাসার ফোড়ন পর্ব ১৬

– মেরেছে নাকি এভাবে কাঁদছে কেন?
– আরে এটা ন্যাকা কান্না তুই বুঝবি না। সব আহিয়ান ভাইয়ার sympathy পাওয়ার ধান্দা। কিন্তু আহিয়ান ভাইয়া এতো সহজে মেনে নিবে না।
– আর আকাশ ভাইয়া!
– উনিই তো আগে জানলেন। কি লোক রে তারা। এতোদিন নাকি জানত’ই না। ভাবা যায় এইসব! যাই হোক আকাশ আজ এসব দেখে আহিয়ান ভাইকে বলেছে আর তারপর’ই ভাইয়া ডোজ দিতে শুরু করল। আনিকা আগে ভাগেই বলে দিয়েছে মজা করেছে তাই আকাশ কিছু বলেনি।
– ওহ্ আচ্ছা। কিন্তু একটা কথা?
( আকাশ ভাইয়া’র প্রতি ইতি’র এতো ইন্টারেস্টি দেখে কেমন ঘটকা লাগলো। )
– কিহহ?
– না পরে বলবো। এখন এখানকার কাহিনী দেখি!

নিতি ন্যাকা কান্না করে কেঁদেই যাচ্ছে, আহিয়ান এতোক্ষণ রেগে থাকলেও এখন একটু শান্ত হয়েছে। উনি এবার শান্ত গলায়’ই বললেন….
– নিতি কান্না থামা। তুই এরকম মজা না করলেও পারতি।
নিতি কেঁদে কেঁদে ঢং করে বললো..
– আমি মজা করি নি আহি!
কি বলে কি মেয়েটা, মজা করে নি মানে? তাহলে কি ইচ্ছে করছি দিয়েছিল নাকি। এমনতে আজকে আমার সাথে ঘটা ঘটনার পর আমার বুঝতে বাকি নেই উনার প্রতি নিতি’র অফুরন্ত ভালবাসা আছে কিন্তু উনার কি আছে? নিতি’র কথায় আমি সহ যারা দাঁড়িয়ে ছিল তারা সবাই অবাক। শুধু মাত্র আহিয়ান ছাড়া। উনি হাতের বুড়ো আঙুল দিয়ে কিছুক্ষণ কপাল ঘসে ‌বলেন..

– আমার লাইফে কোনো মেয়ের জায়গা নেই and you know it very well.
বলেই ওখান থেকে চলে গেলেন। নিতি দাঁড়িয়ে কেঁদেই যাচ্ছিল। আকাশ ভাইয়া আহিয়ান এর পিছনে গেলো বাকি সবাই নিতি কে সামলাতে থাকে। আমি একবার যেতে গিয়েও যায় নি। ভাবলাম একা থাকা দরকার কিন্তু উনার লাইফে কোনো মেয়ের জায়গা নেই বলতে উনি কি বোঝালেন আমার কথা নাকি অন্য কিছু।
ভার্সিটি ছুটির পর পুরো ক্যাম্পাস খুঁজেও উনাকে পেলাম ‌না। আকাশ ভাইয়াকে বা উনার কোনো বন্ধুকে চোখে পড়ে নি। অতঃপর বাইরে বের হয়ে গেলাম। নাহ রাস্তায় কোথাও উনি নেই। রাস্তার একপাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছি আর উনাকে খুঁজছি। হঠাৎ কারো চেনা গলা পেয়ে দাঁড়িয়ে গেলাম। পেছন থেকে কেউ বলে উঠল..
– এই ভূতনি!

ভালোবাসার ফোড়ন পর্ব ১৮