ভালোবাসার ফোড়ন পর্ব ২১

ভালোবাসার ফোড়ন পর্ব ২১
লেখনিতে : মিমি মুসকান

– তুমি এমন ভাবে বলছো যেনো আমি এই প্রথম তোমায় শাড়ি পড়তে দেখছি।
– কিহহহহ…
– চেঁচাচ্ছো কেন? কানের পোকা বেরিয়ে যাবে সব।
– আপনি কি বললেন, আপনি প্রতিদিন আমায় শাড়ি পড়তে দেখেন। ছিঃ কি অসভ্য আপনি!
– এখানে অসভ্যতামির ‌কি হলো। আমি কি তোমার সাথে কিছু করেছি নাকি
– কি বললেন আপনি।
– আরে হাইপার হচ্ছো কেন? এটা তো কথার কথা। আর আমি বলছি কি আমি কি ইচ্ছে করে দেখতাম নাকি।
– নাহ তাহলে কিভাবে দেখতাম।
– তুমি যেভাবে ভাবছো সেভাবে মোটেও না। আমি বরাবরা ঘুম ঘুম চোখেই তোমাকে দেখতাম। আর ঘুম ভাঙার কারন হলো তুমি!
– কি আমি!
– হ্যাঁ তুমি! শাড়ি পড়তে গিয়ে তোমার একগাদা চুলের পানি এসে আমার মুখে পড়ত। আর আমার ঘুম ভাঙত বুঝলে।

– ওহ্ এখন আমার চুলের পানির দোষ।‌আর আপনি যা করলেন সেটা কিছু না
– কি বলতে চাইছে তুমি! আমি আগেই বলেছি তোমাকে আমি ভালোবাসি না। আর যখন ভালোবাসি না তার মানে তোমার উপর কোনো ইন্টারেস্ট নেই আমার। আর থাকবে কি করে, কি আছে। যেই না কোমর। তুমি যানো মেয়েদের কোমর কতো চিকন থাকে, তারা সারাদিন সাজগোজ করে থাকে। ঠোঁটে লিপস্টিক, চোখে কাজল কাপলে টিপ এটা তাদের নিত্যদিনের সাজ। কিন্তু তোমাকে আমি আজ পর্যন্ত চুড়ি পড়তেই দেখলাম আর না দেখলাম চোখে কাজল দিতে। আর বিয়ে হলে নাকি নাকফুল পরে। তোমার তো নাক টাও ফুরানো নেই। ( আমার নাকে খোঁচা দিয়ে ) তাহলে তোমার মতো একটা মেয়েকে কোনো ছেলে কিভাবে ভালোবাসবে, আর সেখানে আমি!

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

– বাহ আমার জানাই ছিল না আপনি মেয়েদের সম্পর্কে এতো কিছু জানেন, আর তার সাথে আমাকে ও এতো খেয়াল করেন। কখন কাজল দেই বা কখন চুড়ি পরি। আর আপনিও শুনে রাখুন আপনার মতো ছেলের ওপর ও আমার কোনো ইন্টারেস্ট নেই বুঝলেন। শখ কতো উনার জন্য এখন নাক ফুরাবো আমি। জানেন কতো ব্যাথা লাগে।
– তুমি কি বললে আমায়।
– যা বলেছি বেশ করেছি। আপনি তো এসেছেন আমার সাথে পায়ে পা লাগিয়ে ঝগড়া করতে তাই নাহ। এখন বের হন এখান থেকে।
– বের হবো মানে।
– বের হবো মানে বের হন। শাড়ি পরবো আমি বের হন।
– বের হচ্ছি ভূতনি কে দেখার কোনো শখ নেই আমার।
– তাহলে যান না দাঁড়িয়ে আছেন কেন।
– যাচ্ছি!

বলেই বের হয়ে গেলেন। আমি শাড়ি হাতে নিয়ে ধপ করে খাটে বসলাম। মান সম্মান যা আছে সব গেলো, উনি আমাকে প্রতিদিন শাড়ি পড়তে দেখেছে। মানা যায় এইসব অথচ আমি নিজেই জানতাম না এইসব। ছিঃ ছিঃ ছিঃ কি লজ্জার ব্যাপার। এতোটা বোকা হলাম কি করে আমি। এখন উনার সামনে কি করে যাবো আমি। হায় আমার কপাল মাত্রই তো সামনাসামনি ঝগড়া করলাম এখন ভাবছি সামনে কিরে সামনে যাবো। ধুর ছাতার মাথা, হাতির কঙ্কাল। একদিন নিশ্চিত উনার জন্য আমাকে পাগলা গারদ এ যেতে হবে। মাঝে মাঝে এমন এমন কথা বলবে যাতে আমি পুরো পাগল হয়ে যাই। শুধু পাগলা গারদ এ যাওয়াটাই বাকি।

উনাকে বকতে বকতে শাড়ি পরলাম। রাগ কিছুতেই কমছে না আমার। কোনো খাবারও নেই বানাতে হবে। বির বির করতে করতে ঘর থেকে বের হলাম। দেখি ফোন নিয়ে লাট সাহেব বসে আছে। আমার দিকে একটু তাকাল। আমি মুখ ভেংচি দিয়ে শাড়ি’র আঁচল’টা কোমরে গুজলাম। কিছু’ই বানাতে ইচ্ছে না আমার। এক হাতে পেঁয়াজ নিয়ে উনার দিকে তাকালাম। দেখি আমার দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছে। উনার দিকে তাকিয়ে ছুরি নিতে গেলাম। এতো রাগ লাগছিলো ছুরি টা একটু জোরেই ধরলাম। ইচ্ছে করছিলো এটা দিয়ে উনার পেট ফুটো করে দিই। হঠাৎ উনি “এই ভূতনি” বলে চেঁচিয়ে উঠলো। কিন্তু কেন? দেখি উনি দৌড়ে আসছে আমি হাতের দিকে তাকিয়ে দেখি আমার হাত দিয়ে রক্ত ঝরঝরিয়ে পরছে। আমি দিলাম চিৎকার…

– আম্মুউউউউউ!
উনি আমার মুখে হাত দিয়ে বলল..
– আরে ভূতনি চেঁচামেচি করছো কেন?
কাঁদো কাঁদো মুখ করে..
– আমার হাত! আম্মুউউ কেটে গেছে! এ্যা এ্যা..
উনি আমার হাত ধরে..
– হ্যাঁ কাঁদো তাহলে রক্ত পড়া কমে যাবে। গাধা একটা!
আমি নাক টেনে..
– আপনি এখনো আমায় বকছেন!
– তাহলে কি করবো। চলো এখন রক্ত পড়া থামাতে হবে।
উনিই আমাকে ধরে সোফায় বসে দিলেন। অতঃপর ফার্স্ট এইড বক্স এনে আমার পাশে বসলেন। হাত অনেকটা কেটে গেছে। উনি তুলো দিয়ে হাতের রক্ত পরিষ্কার করতে ব্যস্ত আর আমি কাঁদতে। উনি এক ধমক দিয়ে বলে..

– কান্না থামাও!
চুপ করে আছি। উনি কি জানি মেডিছিন নিলেন দেওয়ার জন্য। আমি সাথে সাথে হাত সরিয়ে নিয়ে বলি..
– এটা দিলে খুব জ্বলবে!
– তো! রক্ত পড়া থামবে! হাত দাও।
– না না প্লিজ দিয়েন না!
– আচ্ছা দেবো না অন্যটা দেবো।
– অন্য কোনটা?
বলেই একটু ঝুঁকলাম। উনি সাথে সাথে আমার হাত ধরে ‌পুরো ঔষধের আমার হাতে ঢেলে দেন। ব্যাথায় আমি দাঁড়িয়ে লাফাতে থাকি। উনি আমার দিকে তাকিয়ে..
– ঘোড়ার মতো লাফানো বন্ধ করো।
– খুব জ্বলছে।
উনি দাঁড়িয়ে আমার হাত ধরে বললো..
– দাঁড়াও!
– দাঁড়িয়ে’ই আছি! এখন আবার কোথায় দাঁড়াব ‌
দাঁতে দাঁত চেপে…
– আমার মাথায় দাঁড়াও!
– সত্যি!
ধমক দিয়ে..
– চুপ!

বলেই আমার হাতে ফুঁ দিতে লাগলেন। কিন্তু এতে হাতের জ্বালা কমেনি। অতঃপর উনি আমাকে বসিয়ে দেন আর ব্যান্ডেজ করতে থাকে। আমি চুপচাপ উনার ব্যান্ডেজ দেখছি। উনি বলে উঠেন..
– দেখলে আল্লাহ তোমায় কেমন শাস্তি দিলো!
– কেন দিলো!
– স্বামীর সাথে বেয়াদবি করলে তাই! আমি জানি নিশ্চিত উনি ছুরি দিয়ে আমাকে মারার প্ল্যান করছিলে তাই এমন হলো।
আমি মুখ ভেংচি দিয়ে..
– ভেবেছিলাম শুধু তাই বলে তো আর পেট ফুটো করে দেয়নি।
– এটা দিয়ে পেট ফুটো করার প্ল্যান করছিলে। বাহ্ খুব ভালো তো।
আমি উনার কথায় আবারও মুখ ভেংচি দিলাম। কিন্তু রান্না কিছু হয় নি। ঘরেও কিছু নেই। উনি বলতে শুরু করে…

– ক্ষুধা লেগেছে!
– আমারও লেগেছে।
– বাইরে যাবে খেতে!
– জানতাম এটাই বলবেন! কখনো বললেন যে আমি রেঁধে দিচ্ছি।
– তুমি কি চাও তোমার জন্য আমি এখন রান্না করি।
– চাইলে বা কি করতে তো পারবেন না। আমাকেই করে খাওয়াতে হবে।
– আমি সব পারি বুঝলে, আর রান্না ও চুটকি বাজিয়ে করে দেবো।
দীর্ঘশ্বাস ফেলে..
– হ্যাঁ বুঝতে পেরেছে।
– তুমি আমাকে underastimade করছো।
– করার কি আছে!
– ওয়েট আমি আজকেই রান্না করবো।
– করুন করুন আমি ও দেখবো ‌। ফোন টেপা ছাড়া আপনি আর কি করতে পারেন।
– দেখে নিও।
– দেখার জন্য’ই বসে আছি।
– ভূতনি একটা।
উনি হেঁটে রান্না ঘরে গেলেন। অতঃপর আমার দিকে তাকিয়ে বলল ”কি খাবে”? আমি সোফায় আসন পেতে বসি বলি..

– খিচুড়ি রাঁধুন! এটা খাওয়ার ইচ্ছে করছে।
– ফাঁদে ফেলে ভালোই মজা নিচ্ছো।
– এজন্যই তো ফেললাম। দেখি দেখি রান্না করুন দেরি হয়ে যাচ্ছে। দাদু কি ভালো রান্না করলো কালকে। তার মতো না হলেও চলবে তবে খাওয়ার উপযোগী হতে হবে।
উনি আমার থেকে চোখ সরিয়ে ফোন বের করে ভিডিও অন করল। আমি এখান থেকেই আওয়াজ পাচ্ছি খিচুড়ি রেসেপি। নাহ বুদ্ধি আছে তাহলে। উনি কাঁটা কাটি শুরু করলেন। এটাতে তার নাজেহাল অবস্থা। আলু কাটতে গিয়ে সেই আলু উড়ে এসে আমার গায়ে পরল। আমি বলি..

– তাহলে আলু দিয়ে মারবেন বলে ভেবেছন নাহ।
উনি আমার দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে কথা না বলে রান্না’য় মনোযোগ দিলেন। জানে এটা তার মান সম্মানের ব্যাপার। প্রায় অনেকক্ষণ পর রান্না শেষ করে আমাকে ডেকে বলে গেলেন “রান্না কেমন হয়েছে দেখে যেতে”।
আমি উঠে দেখতে গেলাম। কিন্তু খাবারের যা অবস্থা আমার মনে হলো যে খাওয়া যাবে না। তার সাথে রান্নাঘরে’র অবস্থা মারাত্মক। উনি আমার দিকে তাকিয়ে বলে…
– কি ভাবছো ভূতনি, খেয়ে দেখো কেমন হয়েছে?
– আমাকে দেখে কি পাগল মনে হয় আপনার যে আমি এই খাবার খাবো।
– কেন দেখতেও তো ঠিক লাগছে।
– চকচক করলেই যদি স্বর্ণ হতো তাহলে তো হতোই।
– একটু টেস্ট করে দেখলে কি হবে?
– হসপিটালে যাবার ইচ্ছে নেই, আপনার ইচ্ছে হয়ে খেয়ে দেখুন!

বলেই বের হয়ে আসলাম। আড়ালে থেকে উঁকি দিয়ে উনার কান্ড দেখছি। চামচ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। বোধহয় ভাবছে মুখে দিবে কি না। কি মনে করে যেন মুখে দিলো। অতঃপর ঢকঢক করে ২ গ্লাস পানি খেলো। মনে হয় বেশ জ্বাল হয়েছে। আমি হেসে আড়াল থেকে বের হলাম। হাসতে দেখে উনি বেজায় রেগে গেলেন। অতঃপর রেগে ধপাস ধপাস করে হেঁটে রুমে গেলেন।
কিছুক্ষণ পর আমি খাবারের জন্য ডাক দিলে উনি চট করে এসে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। মুখে বিরক্তিকর ছাপ। রেখে আছে বেশ। দাঁতে দাঁত চেপে বলে…
– রাঁধতে বলেছে কে তোমাকে। এমনেতেই হাত কেটে বসে আছো। এরপর আমার রেঁধে কোন ঘটনা ঘটাবে তুমি!
উনার কাছে এমন কথা আমি আজ প্রথম শুনলাম ‌ খানিকটা বড় মানুষের মতো বললেন কথাটা। আমি হেঁসে বলি…

– রাঁধিনি নি তো। তৈরি করলাম! জ্যাম আর পাউরুটি, নিন খেয়ে নিন খেয়ে আমাকে উদ্ধার করুন।
– এমন ভাবে বলছো যেনো প্রতিদিন তোমায় আমি রাঁধতে বলি।
– তা অবশ্য মুখে বলেন না।
– মনে মনে বলি না বুঝলা।
অতঃপর খাওয়া শুরু কররেন। আমিও খেলাম! আমার ডান হাতটা”ই কেটেছে তবে রুটি খেতে কোনো অসুবিধা হচ্ছে না। খাবার শেষে আমি উনার দিকে তাকিয়ে বলি..
– কেমন হয়েছে?
– ভালোই হয়েছে!
– তাহলে আমার তারিফ করুন!
– রুটিতে জ্যাম লাগিয়েছো শুধু না এই জ্যাম নিজের হাতে তৈরি করেছো আর না রুটি তাহলে প্রশংসা কেন করবো?
– আপনাকে বানিয়ে খাওয়ালাম তাই!
– আমিও তো রাঁধলাম আমাকে ধন্যবাদ দিয়েছিলে!
– খাওয়াতে পেরেছিলেন আমায় আমি পেরেছি!
– আচ্ছা ধন্যবাদ ভুতনি বউ অনেক সুন্দর করে পাউরুটি’তে জ্যাম লাগিয়েছো তুমি। শান্তি!
– ভূতনি বলাটা কি খুব বেশি দরকার ছিলো।
– এটা তোমার উপাধি! এটা ছাড়া তোমাকে কেউ চিনবে না বুঝলে। চলো বেরুতে হবে আমাদের।
– হুম!

এতিমখানা’য় যাবার জন্য রওনা দিলাম। সেখানে পৌঁছাতে ঘন্টা খানেক’র মতো লেগে লেগো। তবে ‌এতিমখানায় এসে অবাক। এতিমখানা’র সদর দরজায় লেখা আয়ানা চৌধুরী এতিমখানা! নাম টা কেমন কিন্তু দাদী’র নামেই দেওয়া। যাই হোক আগের কার নাম। তবে পরিবেশ টা দারুন খোলামেলা, চারদিক গাছপালা আর একটু হৈচৈ। তবে সেটা বাচ্চাদের! ভালোই লাগছে এখানে। আমাদের গাড়ি আওয়াজে দাদু আর একজন ভদ্রলোক আসলেন। ভদ্রলোক এই বাচ্চাদের দেখাশোনা করে তার সাথে আরো আছে কয়েকজন। ভালোই লাগছিলো এসব। বাচ্চাদের সাথে খেলাধুলা, হৈচৈ! সময়টা অনেক সুন্দর করেই উপভোগ করলাম। কিন্তু বেশিক্ষণ থাকলাম না কারন কালকের ব্যবস্থা করতে হবে। ভদ্রলোক’কে খাবারের দায়িত্ব দিলাম। বাবুর্চি, খাবারের সরঞ্জাম এসব দায়িত্ব তাকেই দেওয়া হলো। এছাড়া বাচ্চাদের জন্য কিছু খেলনা জামা কাপড় আনা লাগবে। তাই আমরা আবার বের হলাম সেগুলো কিনতে। সব কাজ তো আর ওদের দেওয়া যায় না।

এখান থেকে দোকানপাট অনেকটা দূরে, পৌঁছাতে পৌঁছাতে দুপুর হয়ে গেল। প্রথমে আমরা একটা রেস্টুরেন্টে ঢুকলাম লাঞ্চ করার জন্য। কিন্তু সমস্যা হলো আমার হাত কাটা আর চামচ দিয়েও খেতে পারছিলাম না। অতঃপর উনি আমাকে খাইয়ে দেবার জন্য আমার মুখের সামনে ভাতের লোকমা তুলেন। আমি হতবাক হয়ে তাকিয়ে আছি।
উনি আমাকে শান্ত গলায় বলল..
– খাও!
– আমি?
– অন্যকোনো ভূতনি আছে এখানে!
কথা না বাড়িয়ে আমি খাবার খেতে থাকি।এই প্রথমবার আমাকে উনি খাইয়ে দিলেন। আশপাশ লোক দেখছিলো আমাদের। খুব লজ্জা লাগছিলো কিন্তু এতে তার কোনো বিদ্রুপ নেই। উনি শান্ত ভাবেই খাইয়ে দিচ্ছে যেন কিছুই হয় নি। নিজেকে কেমন বাচ্চা বাচ্চা লাগছিলো। কিন্তু মজার ছিলো!
বাচ্চাদের জন্য জিনিসপত্র কিনে বাসায় ফিরতে ফিরতে রাত হয়ে গেল, এবার খাবার বাসায় নিয়ে এলাম কারন তখনকার মতো রেস্টুরেন্টে উনি খাইয়ে দিবে আর সবাই দেখবে সেটা আমার মোটেও ভালো লাগছিলো না। তাই!

চলবে….

ভালোবাসার ফোড়ন পর্ব ২০

( সবাই ভাবছে আহিয়ান তো অন্যরকম ছিল এখন এরকম ব্যবহার কেনো বা নিহা’র ব্যবহার’ই এতো নরমাল হয়তো অনেকে ব্যাপার টা সহজ ভাবে নিয়েছে আবার অনেকের কাছে ব্যাপার টা জটিল। তবে এটা ভালো কারন সব মানুষের ভাবনা এক না। আর কৌতূহল থাকা টা আরো বেশি ভালো। হ্যাঁ বিয়েটা যেভাবে হয়েছে সেখানে অনেকের মনে হয় এতো নরমাল কেন, নিহা রাগ করছে না কেন কিন্তু কথা হলো নিহা’র রাগের কারন টা শুধু বিয়েই ছিল এছাড়া তার ফ্যামিলি’র ভালোবাসা টা ছিল না। সবাই পারতো ওর সাথে কটু কথা বলতে, খারাপ ব্যবহার করতে সেটা যখন কেউ করেনি সেখানে নিহা রাগ করলে একদম স্বার্থপরের মতো লাগতো তা নয় কি। আর আহিয়ানের উপর বিয়ের জন্য রাগ থাকা দরকার ছিল এছাড়া তার সাথে যা হয়েছে এজন্য কিছুটা হলেও অভিমান থাকা দরকার এটাই স্বাভাবিক কিন্তু গল্প কিছুটা অস্বাভাবিক হবে এটাও স্বাভাবিক। সবাই যা ভাবে বা ভেবে রাখে সেভাবে যদি গল্প হতো তাহলে কেউ সেটা পড়ে আনন্দ পেতো তখন সবাই এক কথা বলতো “হ্যাঁ জানতাম এটাই হবে, আরেহ এটা তো কমন ব্যাপার আমি জানতাম এটাই হবে”। আর এই কারনেই রাইটার’রা একটু ভিন্ন ভাবে ভেবে তা উপস্থাপন করে যার কারনে সবাই পড়ে যেন একটু অবাক হয়, ভালো লাগে। পড়ার আগ্রহ বাড়ে। হুম এটা গল্পের ২য় পার্ট মানে বলতে ২য় ধাপ বোঝাচ্ছি। কারন গল্প কখনো এক ধাপ নিয়ে এগানো যায়। সব কিছুর মিশ্রন থাকবে। আপনি যত’টা গম্ভীর হন না কেন কারো সাথে দীর্ঘদিন থাকলে তার সাথে যে আপনি গম্ভীর থাকবেন তা না একটু হলেও ফ্রি হবে তাই নয় কি। কিন্তু তা বলে গম্ভীর ভাব চলে যাবে তা না সেটাও থাকবে অন্যদের সাথে ব্যবহার করার জন্য যা আমাদের অনেক টিচার করে থাকে।‌আমার সাথেও করে বটে। নিহা’র উচিত মামা মামী’র অত্যাচার’র প্রতিবাদ করা কিন্তু সব প্রতিবাদ কি অত্যাচার করে হয়। মেয়েরা বিয়ের পর পরের সংসারে গেলে তার বাপের বাড়ি’র সম্পর্কে খারাপ কখনো বলে না আর বলবেও না। কারন এতে তার মান সম্মান জড়িত। মামা মামী’র না হয় মনুষ্যত্ব ছিল না কিন্তু ওর তো আছে। যত’ই হোক তারাই ছোট থেকে লালন পালন করে বড় করেছে কৃতজ্ঞতা বোধ কি থাকবে না। আর যদি বলি প্রতিশোধ তাহলে সাফল্যের চেয়ে বড় বা দ্বিতীয় কোনো প্রতিশোধ নেই। এটাতে না সে কোনো কষ্ট পাবেন আর না আপনি কিন্তু মানসিক ভাবে কিছুটা হলেও তার খারাপ লাগবে আর আপনার প্রান্তি এটাই প্রকৃতির নিয়ম। একজন কে দুঃখ দিয়ে অন্যজন সুখে থাকা। যাই হোক অনেক লেখেছি আসলে একটা আপুও অনেক বড় করে লেখে আমার কাছে জানতে চেয়েছিল। এর মানে এটা না তিনি এই গল্প পছন্দ করে না। তিনি খুব পছন্দ করেন তাই প্রতিদিন’ই আমার কাছে জানতে চান। এরকম জানতে চাওয়াটা ভালো লাগে। যারা খুব মনোযোগ পড়ে তাদের কাছে জানার কৌতুহল হয় আবার সবার কাছেও থাকে তবে হয়তো আলসেমির কারনে করে না। কারন অনেকেই ভালো করে কমেন্ট করেন না। গঠনমূলক কমেন্ট করুন ভালো লাগবে। ভুল শুধরে দিলে আরো বেশি লাগবে। এটার মাঝেও জানা আছে। হ্যাঁ একটা কথা ধন্যবাদ সবাইকে গল্প টা এতো মনোযোগ দিয়ে পড়েন বলে )

ভালোবাসার ফোড়ন পর্ব ২২