মনের কোনে পর্ব ২

মনের কোনে পর্ব ২
নাহিয়ানা আফ্রিন 

আফ্রিন তার মামনি এর সাথে বসে গল্প করছে আর কফি খাচ্ছিলো তখন মামনি বললো আসফিন না কি জগিং থেকে ফিরে জুস খায় তা আবার ফ্রুটস দিয়ে বানানো।
আফ্রিনঃ আসছেরে নবাব জাদা এ টা খায় না ওটা খায় না এটা ঠিক না ওটা ঠিক না।মামনি তুমি ভাইয়া কে কি ছোট বেলায় হওয়ার পর তার মিস্টি মুখ করো নাই?

মামনি ঃ যা ফাজিল কোথাকার এভাবে কেউ বলে?ও আসলে এমন ই উসৃৃঙ্খল দেখতে পারে না। ও সবসময় চায় যে আমরা আমাদের আদব কানুন মেনে চলি। ওয়েস্টার্ন কালচার ও দেখতেই পারে না।
আফ্রিনঃ আমি কি করবো মামনি ইউ নো না আমি কোথায় থাকতাম কিভাবে থাকতাম?

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

মামনি ঃ যাহ এসব বাদ দে তুই জুস অনেক মজা করে বানাস ভাইয়ার জন্য বানিয়ে ফ্রিজে রেখে দিয়ে আয়!
আফ্রিনঃ ওকে মামনি। এটা বলে আফ্রিন রান্না ঘরে গিয়ে খুব সুন্দর ভাবেই জুস বানায় অরেঞ্জ জুস যেটা আসফিন বেশি লাইক করে।আফ্রিন মনে মনে ভাবছে যে এই লোকটা তো তিতা তিতা কথা বলে তাকে তো করলার জুস উইথ মালাই খাওয়ানো দরকার। থাক একদিন আমি এটা খাওয়াবোই তাকে এটা বলে ফ্রিজ এ জুস রেখে উপরে যায়।
অনেকদিন ধরে কারো সাথে যোগাযোগ নাই যাই লিয়া এর সাথে কথা বলি।লিয়া আফ্রিন এর বেষ্টি সেও বাঙালি তারা ছোট থেকে একসাথে বড় হয়েছে একবার রিং হতেই লিয়া ফোন তুলে
লিয়াঃহ্যালো হুস স্পিকিং?(হ্যালো,কে বলছেন?)

আফ্রিনঃ আসসালামু-আলাইকুম আর রাখ তোর হুস স্পিকিং সালাম দেওয়া অফ করলি কবে থেকে সালি কাহিকি?
লিয়াঃ ওয়ালাইকুম-আস সালাম তুই ডায়ান কাহিকা বিডি যাইয়া আমাকে ভুলেই গেছোস?আমি ঘুমাচ্ছিলাম এখানে তো এখন রাত?
আফ্রিনঃ না রে তোকে কি ভুলতে পারি আমি বল? অনেক ট্রাজেডি হয়ে গেছে বিডি তে আমার সাথে?
একে একে সব খুলে বললো লিয়া কে লিয়া আফ্রিন এর কথা শুনে কান্না করতে শুরু করলো কারণ আফ্রিন এর আম্মু তাকে খুব আদর করতো।
লিয়া ঃ ডোন্ট বি স্যাড বেবস আল্লাহ আছে না আর আমার আম্মু আব্বু ও বিডিতে আমি খুব জলদি আসছি।আই এম কামিং টু সুন এস পসিবল।
আফ্রিনঃ আচ্ছা আসার সময় আমার সব সার্টিফিকেটস আর ডকুমেন্টস গুলা নিয়া আসিস তোর কাছে তো বাসার চাবি আছে?

লিয়াঃ হুন আছে ডোন্ট ওয়ারি সব নিয়ে আসবো।
আফ্রিন ঃ আচ্ছা রাখি আমি তুই ঘুমা!
আফ্রিন এর খুব ভালো লাগছে লিয়া এর কথা শুনে।আফ্রিন এর মাস্টার্স কমপ্লিট সে এখন তার প্রয়োজনীয় সব ডকুমেন্টস পেলে জব এর জন্য এপ্লাই করতে পারবে আর জব পেলে এখান থেকে সে চলে যাবে এগুলো ভেবে রাখলো সে। আফ্রিন হয়তো ভাবতেই পারবে না তার ইচ্ছা পূরণ হবার নয় আসফিন কখনোই এটা হতে দিবে না।
ঝিমলি এর ডাকে হুস ফিরলো ”

ঝিমলিঃ আফা আন্নে জাইগা জাইগা সপন দেহেন তাইনা।চলেন আগে দুইহান খাইয়া লইবেন আম্মায় আর ভাইজান আন্নের লাই অফিক্ষা করতাইছে।
আফ্রিনঃ আচ্ছা তুমি যাও আমি আসছি। আর হ্যাঁ তোমার কথা গুলো খুব সুইট আমার অনেক ভাল্লাগে যদিও অল্প অল্প বুঝছি।(হেসে দিয়ে)
ঝিমলি ঃ আন্নে তো বিলিতি মাইয়া কেন্নে বুঝবেন আর কথা?আন্নে দেখতে পুরাই ফরি এর মতো আফা।
আফ্রিন এবার আর বুঝলো না ঝিমলি কি বললো তাই তো সে হেসে নিচে নামলো ব্রেকফাস্ট করতে’
আসফিন ঃ আম্মু আজকে ফ্রুট জুস টা অসাধারণ হয়েছে আমার অনেক ভালো লাগছে সো আমাকে সেম জুস প্রতিদিন বানিয়ে দিবে ওকে?

মামনিঃ আরে বাব অইটা আমি বানাই নাই রে পাগল ওটা তো আফ্রিন বানাইছে এখন তার উপর নির্ভর সে তোমাকে বানিয়ে দিবে কি দিবে না? আমি কিছু জানি না। (বলে মামনি চুপচাপ নাস্তা করতে লাগলেন)
আফ্রিনঃ সমস্যা নাই মামনি আই কেন মেক দি জুস ফর ভাইয়া।
আসফিনঃ থাক আমার লাগবেনা জুস। মামনি আমার দেরি হয়ে যাচ্ছে আমি যাই আর আমার ফিরতে লেট হবে লাবিব আসবে তো তাকে এয়ারপোর্ট থেকে পিক করে আসতে মেবি ভোর হয়ে যাবে চিন্তা করো না ওকে”
আফ্রিন ভাবতে লাগলো কে এই লাবিব যে তাকে আনতে এই তিতা করলা যাবে? মামনি লাবিব কে?
মামনিঃ লাবিব আমার ভাসুর এর ছেলে আর আসফিন এর বেষ্টফ্রেন্ড বুঝছো?

আফ্রিনঃ ইয়াপ,কিছু সয়তানি বুদ্ধি ভাবতে হবে এখন গিয়ে ঘুমাই আজকে আরামসে থাকা যাবে।
আসফিন আজ খুব খুশি কারণ তার প্রিয়তমা তার জন্য কিছু বানিয়েছে। অইদিন কাজের লোক বলার কারণ হলো আফ্রিন একটা লেগিংস আর টি-শার্ট পরা ছিলো যা দৃষ্টি কটু লাগছিলো আর আসফিন এর ফ্রেন্ড আফ্রিন এর দিকে বাজে ভাবে তাকিয়ে ছিলো তাই তো রাগে কাজের লোক বলছিলো।আর আসফিন ওর ফ্রেন্ড কে খুব সুন্দর ভাবে মেরব হসপিটাল এডমিট করে রেখে আসছে।

(নায়িকা আফ্রিন ঃ পুরো নাম নাহিয়ানা আফ্রিন।সে দেখতে খুব ই সুন্দর গোল গোল চোখ, কালো মনি, জোর ভুরুযুগোল, গোলাপি ঠোঁট, বাদামি স্ট্র্বেট সিল্কি চুল কোমর অবদি বিছানো, যেনো পরি, অনেক সুন্দর দেখতে ৫’৫ হাইট। সে মাস্টার্স কাম্পলিট করেছে ২২ বছর এর তরুনী)
(নায়ক আসফিন ঃ পুরো নাম আসফিন আসিফ। টপ বিজনেস মেন দের মধ্যে একজন খুব ই বিখ্যাত সে তার কাজের জন্য। অনেক রাগি আর দেখতেও মাশাল্লাহ উচ্চতা ৬। জিম করা ফিট সিক্স প্যাক এবস এর বডি।শ্যামলা রঙের অধিকারী হয়েও হাজারো নাড়ীর স্বপনের পুরুষ সে।বয়স ২৯)

কাল সারাদিন খুব ভালোভাবেই কাটিয়েছে আফ্রিন রাতে ঘুম ও ভালো হয়েছে। সকালে ফজরের সালাত আদায় করে সে বেলকনি তে গেলো ঠান্ডা ঠান্ডা বাতাশ বইছে তাইতো বাহিরের প্রকৃতির আনন্দ নিতে লাগলো চোখে বুঝে আর গাইতে লাগলোঃ
যযে জন প্রেমের ভাব জানে না
রুনা লায়লা

যে জন প্রেমের ভাব জানে না
তার সঙ্গে নাই লেনাদেনা
খাঁটি সোনা ছাড়িয়া যে নেয় নকলসোনা
সে জন সোনা চেনে না

মনের কোনে পর্ব ১

কুটা – কাঁটায় মানিক পাইল রে
অথই পানিতে ফেলিয়া দিল রে
সাত রাজার ধন মানিক হারাইয়া
ওহায়রে
কুটা- কাঁটায় মন যে মানে না
সে জন মানিক চেনে না
উল্লুকের থাকিতে রে নয়ন
না দেখে সে রবির কিরণ
কি কব দুঃখের কথা
ও আমি
সে জন ভাব জানে না
সে জন মানিক চেনে না

পিঁপড়া বোঝে চিনির দাম,
ও বানিয়ায় চিনে সোনা
মাটির প্রেমের মূল্য কে জানে
ওহায়রে
ধরায় আছে কয়জনা,
সে জন মানিক চেনে না
যে জন প্রেমের ভাব জানে না
তার সঙ্গে নাই লেনাদেনা
খাঁটি সোনা ছাড়িয়া যে নেয় নকলসোনা
সে জন সোনা চেনে না
আসফিন আর লাবিব বাড়ির ভিতর এ প্রবেশ করার সময় গানের আওয়াজ পেয়ে থেমে যায়,উপর এর দিকে তাকিয়ে দেখে আফ্রিন প্রকৃতি উপভোগ করছে আর গান গাইছে।আফ্রিন এর গান লাবিব আর আসফিন মুগ্ধ হয়ে শুনছে। অনেক সুন্দর কন্ঠ আফ্রিন এর।

লাবিবঃ দোস্ত ভাবির কন্ঠ তো মা শা আল্লাহ এতো ভালো গান গায়।তোর পছন্দ আছেরে চল ভিতর এ আম টায়ার্ড!
আসফিনঃ আমার পছন্দ গুলো সবসময় ই সুন্দর হয় রে আর তাই তো তার ও আমার পছন্দ করা সব জিনিস ছিনিয়ে নিতে সুবিধা হয়(কার কথা বলছে আসফিন?কে সে কেনই বা তার জিনিস সব নিবে?)
লাবিবঃ বাদ দে দোস্ত আল্লাহ সহায় আছে চল!
আসফিন ঃ হ্যা চল!

মনের কোনে পর্ব ৩