মন বিনিময় পর্ব ১২

মন বিনিময় পর্ব ১২
তাসফিয়া হাসান তুরফা

হাঁটতে হাঁটতে পাশে থাকা এক রেস্টুরেন্টে চলে এসেছে স্বপ্নিল ও রাহিতা৷ মুখে না বললেও এতক্ষণ ঘুরেবেড়িয়ে বেশ খিদে পেয়েছিলো দুজনেরই৷ ভেতরে বেশ ভীড় বলা চলে, একেতো শুক্রবার তার মধ্যে সন্ধ্যেবেলা। পরিবার নিয়ে অনেকেই খেতে এসেছে বলা চলে। চারপাশ ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে ওদের বসার জন্য কর্ণারের একটা দিক বাছাই করলো স্বপ্নিল। এ জায়গাটা সুন্দর, খানিকটা নিরিবিলি এবং এক পাশে কাঁচের দরজা থাকায় শব্দহীনভাবে বাহিরের পরিবেশও দেখা যাচ্ছে৷ অর্ডার দেওয়ার আগে সে রাহিতাকে জিজ্ঞেস করলো,

—কি খাবে বলো? তোমার জন্য কি অর্ডার দিবো?
মনোযোগ দিয়ে বাহিরের পরিবেশ দেখছিলো রাহিতা, হুট করে স্বপ্নিলের প্রশ্নে চোখ ওর দিক ফেরায় সে। স্বপ্নিলের হাতে মেন্যুকার্ড দেখে ইতস্ততভাবে তাকায় সে। এই একটা দিকে সে সবসময় কনফিউড ব্যক্তি, কি সিলেক্ট করবে না করবে ঠিকমতো ডিসাইড করতে পারেনা। আগে যখন মা-বাবা, ভাইবোনদের সাথে যেতো আর ওরাই নিজেদের পাশাপাশি রাহিতার জন্য অর্ডার দিতো। বন্ধুদের সাথে গেলেও ওরা যা খেতো রাহিতার জন্যও সেটাই অর্ডার দিতো। তাই ও স্বভাবসুলভ ভাবে মিনমিনিয়ে বললো,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

—আপনি যেটা খাবেন সেটাই অর্ডার দিন।
—আর ইউ শিওর? না মানে তোমার তো আলাদা পছন্দ থাকতেই পারে। আমি যেটা খাবো ওটা তোমার যদি পছন্দ না হয়?
—না না, এমন হবেনা। আপনি নিশ্চিন্তে অর্ডার করুন।

সাবলীল হেসে উত্তর দিলো রাহিতা। কিছুক্ষণ ওর দিক নির্বিকারভাবে তাকিয়ে দৃষ্টি ফিরিয়ে পুনরায় মেন্যকার্ড দেখে ওয়েটারকে ডাকলো স্বপ্নিল। অতঃপর কিছু একটা ভেবে দুজনের জন্যই দুটো সেটমেন্যু অর্ডার দিলো। তা দেখে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে রাহিতা। কারণ সেটমেন্যুতে সচারাচর রাইস, ভেজিটেবল, চিকেন বা বিফ আইটেমই থাকবে এগুলো তো সে স্বাচ্ছন্দ্যে খেতে পারবে! তাই এটা অর্ডার দেওয়ায় স্বপ্নিলের প্রতি মনে মনে খুশিই হলো সে!

যথারীতি ওদের টেবিলে খাবার এলো। আর খাবার দেখার পর রাহিতার মনে হলো স্বপ্নিলকে নির্দিষ্ট কোনো উত্তর দেওয়াই তার ঠিক ছিলো। কেননা তাদের দুজনেরই প্ল্যাটারে চিকেন বা বিফের জায়গায় প্রন অর্থাৎ চিংড়ি রয়েছে। হয়তো স্বপ্নিলের চিংড়ি পছন্দ তাই এটাই অর্ডার দিয়েছে দুজনের জন্য।

কিন্তু রাহিতার যে চিংড়িতে এলার্জি, একটু খেলেই গা চুলকে র‍্যাশ উঠে এটা কিভাবে বলবে বুঝতে পারলোনা সে! একবার ভাবলো দোষ তো তার নিজেরই, স্বপ্নিল তো বেশ ক’বার জিজ্ঞেস করেছিলো ওকে কিন্তু সে নিজেই তো আগ বাড়িয়ে বলেছিলো যা ইচ্ছে অর্ডার দিতে! তবে এখন কিভাবে অভিযোগ করবে সে? রাহিতার মনে হলো এর চেয়ে বড় দোটানায় সে আগে পড়েনি!

—কি ব্যাপার? তুমি খাচ্ছো না কেন? খিদে পায়নি?
হঠাৎ স্বপ্নিলের প্রশ্নে ওর দিক তাকায় রাহিতা। স্বপ্নিলের বড় বড় হাতজোড়া দিয়ে গপাগপ ওর ইতিমধ্যেই বেশ কয়েক চামচ খাওয়া শেষ। শাশুড়ী ঠিকই বলেছিলেন, স্বপ্নিল বেশ ভোজনরসিক। মনে মনে এসব ভেবে সে ইতস্তত ভংগীতে উত্তর দেয়,

—হ্যাঁ। খিদে পেয়েছে তো! এই যে খাচ্ছি৷
বলেই রাইস, ভেজিটেবল ও কাবাব দিয়ে খেতে শুরু করে সে। এরই মাঝে স্বপ্নিল আড়চোখে পরখ করছিলো ওর খাওয়া৷ ওকে চিংড়িতে হাত না দিতে দেখে বলে উঠলো,

—তুমি প্রন খাচ্ছো না কেন? ওটাও বেশ মজা হয়েছে। ট্রাই করে দেখো!
—আসলে খেতে ইচ্ছে করছেনা এটা…
এবার রাহিতা পড়লো বিপাকে। আমতা আমতা করে বাহানা দিবে তার আগেই স্বপ্নিল হুট করে এক অদ্ভুত কাণ্ড করে বসে। আচমকা তার চামচে একটু চিংড়ি নিয়ে রাহিতার দিক এগিয়ে দেয়। চামচে ধরা হাত ওর মুখের সামনে রেখে বলে,

—এক কাজ করো, আমার থেকে একটু খেয়ে দেখো। ট্রাস্ট মি এটা ভীষণ মজার হয়েছে। এখানকার এটাই ফেমাস এন্ড আমার তো অনেক ফেবারিট। যখনি এখানে আসি এটা মাস্ট নিই আমি। তাই তোমাকেও বলছি একবার ট্রাই করতে। নিরাশ হওয়ার কথা না!

হঠাৎ করে স্বপ্নিলের এহেন কাণ্ডে বেশ খানিকটা বিস্মিত হয় রাহিতা। কিছুটা অবাক চোখেই তাকিয়ে থাকে স্বপ্নিলের পানে। এদিকে রাহিতার এহেন চাহনি দেখে হুট করে অস্বস্তি ঘিরে ধরে খোদ স্বপ্নিলকেও! সে তো খেতে খেতেই হুট করে এ কাজ করে ফেলেছে কথার তালে! এখন রাহিতাকে এভাবে চেয়ে থাকতে দেখে নিজের করা কাজে নিজেই ইতস্ততবোধ করলো সে। হুট করেই সে কিভাবে এত সহজ আচরণ করছে ওর সাথে ভেবে পেলোনা তার দ্বিধাগ্রস্ত মন!

তাইতো বাস্তবে ফিরে এসে খানিকটা দৃশ্যমানভাবেই নড়েচড়ে উঠলো তার চামচ ধরে রাখা হাত। এদিকে স্বপ্নিলের অস্বস্তি টের পেয়ে রাহিতা নিজের স্বাভাবিক ভাবমূর্তিতে ফিরে এলো, মৃদু হেসে ওর বাড়িয়ে রাখা হাত হতে নির্বিকারভাবেই খাবারটি মুখে নিয়ে নিলো! তা দেখে আলগোছে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে স্বপ্নিল।

—কেমন লেগেছে? মজা না? তবে ভালো না লাগলেও বলো, তোমারটা আমি নিবো। সমস্যা নেই!
স্বপ্নিলকে স্বাভাবিক হতে দেখে কিছু একটা ভাবলো রাহিতা। অতঃপর নিজের প্লেট হতে চিংড়ি খেতে খেতে বললো,
—উমম ঠিকি বলেছেন তো। ভীষণ মজার লাগছে খাবারটা!

স্বপ্নিলকে স্বাভাবিক করার উদ্দেশ্যে খেতে খেতেই বললো রাহিতা। ওর কথায় মুচকি হেসে নিজেও স্বাভাবিক হয়ে পুনরায় খাওয়ায় মনোযোগ দিলো স্বপ্নিল। এদিকে চিংড়ি খেতে থাকা রাহিতা ভাবলো আজ তো নির্ঘাত হাত-পায়ে র‍্যাশ উঠবে। রাতে বাসায় যেয়েই এলার্জির ওষুধ খেতে হবে তার! কিন্তু সে-ও বা কি করতো?

ভালোবেসে না হোক তবুও এই প্রথম স্বপ্নিল নিজে থেকে হাত বাড়িয়েছে ওর দিকে, হোক সেটা আনমনেই। তাই রাহিতাও ওর ডাকে সাড়া না দিয়ে পারেনি! ওর মন একপ্রকার বাধ্য করেছে ওকে সাড়া দিতে! স্বপ্নিলের জন্য এইটুকু এলার্জি সে নির্দ্বিধায় সহ্য করে নেবে! স্বপ্নিলের ভালোবাসা পাওয়ার বিনিময়ে একটু কস্ট সহ্য করা কোনো ব্যাপারই না!

দুজনের ফিরতে ফিরতে বেশ দেরি হয়ে গেছে। স্বপ্নিল রাহিতাকে বাসায় রেখে কিছু বন্ধুদের সাথে দেখা করতে বাহিরে গেছে। ওদের রেস্টুরেন্ট থেকে ফিরার পথেই কল দেয় ওরা। স্বপ্নিল প্রথমে যেতে রাজি হচ্ছিলোনা, পরে রাহিতাই বুদ্ধি দেয় ওকে বাসায় ড্রপ করে তারপর দেখা করে আসতে। বুদ্ধিটা পছন্দ হওয়ায় স্বপ্নিল আর দ্বিমত করেনা৷

রাহিতা বাসায় ঢুকতেই ওকে ঘিরে ধরে শাশুড়ি ও ননদ। কি কি হয়েছে, স্বপ্নিল ওর সাথে ভালো আচরণ করেছে কিনা এসব জিজ্ঞাসাবাদ হলো কিছুক্ষণ। অতঃপর সব ঠিকঠাক জেনে বেশ খুশি হন তারা। তাদের সাথে খোশগল্পে মেতে উঠে ওষুধের কথা সম্পূর্ণ মাথা থেকে চলেই গেলো তার! ফ্রেশ হয়ে ঘুমোতে যাবে সেসময় হাত-পা চুলকানো শুরু হতেই ওষুধের কথা মনে পড়লো রাহিতার!

এতক্ষণ ভুলে যাওয়ায় নিজের প্রতি নিজেই বিরক্ত হলো সে। কিন্তু তন্নতন্ন করে সব ওষুধের বক্সে খুজেও কাংক্ষিত ওষুধটি কোথাও পেলোনা সে! হতাশ মনে একবার ভাবলো স্বপ্নিল তো বাহিরেই আছে এখনো, ওকে ফোন করে বলে দিয়েই আনবে। পরক্ষণেই মনে হলো যদি জিজ্ঞেস করে কিসের জন্য ওষুধ চাইছে তবে কি জবাব দিবে সে?

দ্বিধাদ্বন্দে ঘুগতে থাকা সে সিদ্ধান্ত নিলো ওষুধ না খেয়েই ঘুমোবে আজ। যা হওয়ার কাল দেখা যাবে। দরকার পড়লে কাল ভার্সিটি যাওয়ার সময় নিজেই কিনে নিবে তবু স্বপ্নিলকে ঘাটাবে না সে!
সব গোছগাছ করে ঘুমাতে যাবে এমন সময় ওর ভাই রওনক ফোন দিলো। এতদিন পর ভাইয়ের ফোন পেয়ে খুশিমনে রিসিভ করে রাহিতা।

—কি খবর রাহি বুড়ি? কতদিন কথা হয়না তোর সাথে। ভাইকে তো ভুলেই গেছিস মনে হয়!
—তোমাদের কি করে ভুলি বলো তো, ভাইয়া? এখানে তোমরাও নেই, আমায় জ্বা’লানোর মানুষও নেই।
—ওরে দুস্টু, এই ব্যাপার হু? তো কি করছিস বল! সব ভালো তো? স্বপ্নিল কেমন আছে? কি করিস তোরা?
—আমরা ভালো আছি। তুমি বলো তোমাদের কি খবর? হঠাৎ এত রাতে ফোন দিলে যে? সব ঠিক তো? উনি তো বাসায় নেই, ভাইয়া। আমরা আজ বাইরে গিয়েছিলাম ঘুরতে। রেস্টুরেন্ট থেকে একবারে ডিনার সেড়েই বাসায় ফিরেছি। আমায় ড্রপ করে তার বন্ধুদের সাথে দেখা করতে গেছেন।

—তোরা দুজনই শুধু গিয়েছিলি না পুরো পরিবার?
—আমরা দুজনই। কেন?
—বাহ। খুব ভালো। জামাইবাবু দেখছি আমার বোনের বেশ ভালো যত্ন নিচ্ছে। খুশি হলাম শুনে!
খানিকটা হেসে বললো রওনক। ওর কথায় ইতস্তত হাসলো রাহিতাও! কিছুক্ষণ নীরব থাকার পর রওনক বললো,

—তোকে এ সময় ফোন দিয়েছি কারণ আমার হুট করেই মনে পড়লো তোর না সামনের সপ্তাহে পরীক্ষা। প্রিপারেশন কেমন? এই কোর্সের কিছু ম্যাথে যে প্রব্লেম ছিলো তোর, আমার থেকে বুঝিয়ে নিতি সেগুলো পারছিস তো?
এবার ভাইয়ের কথায় টনক নড়ে রাহিতার। সামনের সপ্তাহে ওর পরীক্ষা? মুহুর্তেই টেবিলের উপর থাকা ছোট্ট ক্যালেন্ডার দেখে সে। সত্যিই তো! তার তো মাথা থেকেই বেরিয়ে গিয়েছিলো ব্যাপারটা। ভাইয়া না মনে করে দিলে কি হতো! তবুও ভুলে যাওয়ার কথা স্বীকার করেনা সে। মুখে বলে,

—হ্যাঁ ভাইয়া, মনে আছে। তুমি চিন্তা করোনা। আমি প্র‍্যাক্টিস করছি। সব পারার কথা। তবুও প্রব্লেম হলে আমি তোমায় ফোন দেবো।
—ঠিকাছে। রাখছি তাহলে। বেশ রাত হয়েছে। কাল ভার্সিটি আছে তোর। ঘুমো এখন!
এরপর ভাইয়ের সাথে আরও টুকটাক কথা শেষ করে ফোন রেখে দেয় রাহিতা। এতক্ষণে হাত-পায়ের চুলকানি বেড়েছে। তবুও মুখ বুজে তা সহ্য করে সে। পরিশেষে কাল ভার্সিটি যেয়ে ফ্রেন্ডসদের থেকে নোটস নিয়ে ভালোভাবে পড়া শুরু করবে এ ভাবনায় ঘুমোনোর উদ্দেশ্যে বিছানায় শুয়ে পড়ে সে!

রাত ১২টা। স্বপ্নিল বাসায় এসে দেখে রাহিতা কাথা মুড়ি দিয়ে শুয়ে আছে। সে ঘুমিয়ে গেছে ভেবে ফ্রেশ হয়ে এসে স্বপ্নিল নিজেও শুয়ে পড়ে ওর পাশে। খানিকক্ষণ এদিক ওদিক করার পরেও যখন চোখে ঘুমের রেশমাত্র নেই তখন পাশ ফিরে রাহিতার দিকে ঘুরলো সে। মেয়েটা আপাদমস্তক গা ঢেকে ঘুমোচ্ছে। কি হয়েছে ওর? ঠান্ডা লাগছে কি? কপালে ভাজ নিয়ে ভাবে স্বপ্নিল। এসির দিক তাকিয়ে দেখে তাপমাত্রা ঠিকি আছে, এতে তো ঠান্ডা লাগার কথা নয়। তবে কি হয়েছে? জ্বর-টর আসেনি তো আবার?

বিচিত্র ভাবনায় মগ্ন সে আলতোভাবে কাথা সরিয়ে দিলো রাহিতার মুখের উপর থেকে। কপালের উপর উড়ে আসা কিছু চুলের সমাহার। নাকেমুখে বাড়ি খাচ্ছে যেন। তবুও বেঘোরে ঘুমোচ্ছে মেয়েটা, কোনোদিকেই যেন হুশ নেই তার! রাহিতাকে এভাবে ঘুমোতে দেখে নিজমনেই মৃদু হাসে স্বপ্নিল। খুব সাবধানে কপালের উপর থেকে বহমান কেশগুচ্ছ সরিয়ে দেয় আলতোভাবে।

এরই মাঝে ধীরেসুস্থে কপালে হাত দিয়ে চুপিসারে ওর দেহের তাপমাত্রাও পরখ করে নিলো সে। নাহ, জ্বর নেই। হয়তো এমনিতেই এভাবে ঘুমোচ্ছিলো। নিজ মনেই ভেবে নিলো সে। স্বপ্নিলের চিন্তাভাবনার মাঝেই এতক্ষণ সোজা হয়ে থাকা রাহিতা হুট করেই ওর দিক ঘুরে যায়। ঘুমের ঘোরেই এক হাত রেখে দেয় ওর বুকের উপর।

চেপে ধরে স্বপ্নিলের টিশার্ট। কিছুক্ষণের জন্য চমকে যায় স্বপ্নিল, থমকে যায় নিশ্বাস। কয়েক মুহুর্ত লাগে স্বাভাবিক হতে। অতঃপর আস্তেধীরে ওর বক্ষে অবস্থানরত রাহিতার কোমল হাত স্পর্শ করে সরিয়ে দেয় নিজ হতে। সে মুহুর্তে এক অদ্ভুত জিনিস খেয়াল করে স্বপ্নিল! মেয়েটার হাতে লাল লাল কি যেন উঠেছে! দেখতে হালকা র‍্যাশের মতো লাগছে।

কৌতুহলবশত কাথা সরিয়ে রাহিতার অপর হাতও টেনে নিয়ে সেটাও লক্ষ্য করে স্বপ্নিল। বিস্মিত সে ড্রিমলাইটের আলোয় অপর হাতেও স্পষ্ট একিরুপ দাগ খেয়াল করে। চিন্তায় কপালের ভাজ দৃঢ় হয় স্বপ্নিলের! হয়েছে কি রাহিতার? হাতে এগুলো উঠেছে কেন? কস্ট হচ্ছেনা?

আর সবচেয়ে বড় কথা, কাউকে কিছু না বলে সে এগুলো নিয়ে চুপচাপ ঘুমোচ্ছেই বা কেন?
কিছুক্ষণ আগে বিস্ময়ে থাকা স্বপ্নিল হুট করে অনুভব করলো ওর বেশ রাগ হচ্ছে রাহিতার উপর। কিন্তু সেটা কেন তা ধরতে পারলোনা সে!

মন বিনিময় পর্ব ১১

এ রাগ কি ওর নিজের এ অবস্থা করার জন্য নাকি তাকে কোনোকিছু না জানানোর জন্য এখনো নিশ্চিত নয় স্বপ্নিল। তবে রাগান্বিত সে মুহুর্ত বিলম্ব না করে রাহিতাকে ঘুম থেকে ডেকে তুলার সিদ্ধান্ত নিলো। ওর যে আসল কথা রাহিতার মুখ থেকে জানতেই হবে এখন। তাকে না জানিয়ে এভাবে একা একা কস্ট সহ্য করে রাহিতাকে নিশ্চিন্তে ঘুমোতে দিবেই না সে! কিছুতেই না!

মন বিনিময় পর্ব ১৩