রাজনীতির রংমহল পর্ব ২২

রাজনীতির রংমহল পর্ব ২২
সিমরান মিমি

থমথমে সরদার বাড়ি।স্তব্ধ হয়ে বসে আছেন শামসুল সরদার। বড়ির সমস্ত মহিলারা ভয়ে তটস্থ হয়ে আছেন।সোনালী বেগম নিজের মেয়ের এমন ঘটনা শুনে মুখে আচল চেপে ঢুকরে কেদে উঠলেন।সোভাম নিরব হয়ে অন্যদিকে ফিরে আছে।শুধু শব্দ হচ্ছে আর্শির ঢুকরে কান্নার আওয়াজ।ভয়ে হাত-পা কাপছে তার।বাবার সামনে ভীষণ লজ্জা করছে।বার বার নিজেকে তিরস্কার করছে।কি দরকার ছিলো আজকে ফোন দেওয়ার।এখন কি হবে?

ভাবনার মধ্যেই ঠাস করে পুনরায় থাপ্পড় মারলেন শামসুল সরদার। রাগে কাপছেন তিনি।এইটুকুন মেয়ে,অথচ বংশের মুখে চুনকালি দেওয়ার জন্য মরিয়া।চোয়াল শক্ত করে চেচিয়ে বললেন-
তোকে আমি ফোন দিয়েছি কিসের জন্য?বাইরের ছেলেদের সাথে কথা বলার জন্য নাকি ক্লাস করার জন্য?
আর্শির মাথা ভো ভো করে ঘুরছে।পরপর দু দুটো থাপ্পড় খেয়ে ছিটকে সোফার ওইপাশে পড়লো।সোনালী বেগম ঢুকরে কেদে উঠলেন।কিন্তু মেয়েকে ধরার সাহস পেলেন না।রোজিনা(ছোট চাচী) ছুটে এসে আর্শিকে আগলে ধরলো।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

তোর সাহস হলো কিভাবে ওই বাড়ির ছেলের সাথে সম্পর্ক রাখার?তুই দেখিস নি স্পর্শীয়ার জন্য কি কি হয়েছে।তার পরেও কোন সাহসে তুই আবার ফোনে কথা বলছিলি।স্পর্শীয়ার না হয় মা,বাপ কেউ কাছে ছিলো না।শাসন,শিক্ষা কিচ্ছু হয় নি।তুই ও কি পাস নি।
থেমে বাড়ির মহিলাদের দিকে তাকিয়ে,

বাড়িতে এতো গুলো মহিলা তোমরা,অথচ একটা মেয়েকে ভালোভাবে শিক্ষা দিতে পারলে না।ও যখন দিনের পর দিন, রাতের পর রাত অন্য ছেলেদের সাথে কথা বলেছে তখন কই ছিলা তোমরা?কারো নজরে পড়ে নি কিভাবে?
থরথর করে কাপতে লাগলেন শামসুল সরদার। সোভাম দ্রুত পায়ে এসে বাবাকে ধরে সোফায় বসালো।বললো-
আব্বু, তুমি শান্ত হও।আমি দেখছি।বাড়ির মানসম্মান যাওয়ার আগেই যা ব্যাবস্থা নেওয়ার নেব আমি।

বাড়ি থেকে বের হয়ে গেল সোভাম।এখন বাড়িতে থাকলে রেগে কিছু একটা করে বসবে সে।নিজেকে সামলাতেই পুকুর পাড়ে আসলো। এরইমধ্যে ফোনের শব্দে পকেটে হাত দিলো।আরাফ ফোন করেছে।ও তো নিজস্ব মানুষ। স্পর্শীর সম্পর্কেই তো সব জানে।ওকে বললে হয়তো কোনো সাহায্য করতে পারবে।
হ্যালো,

আরে কেমন আছিস ভাই।কোনো খবরই তো নাই।
আর বলিস না।একটা তো মান সম্মান ডুবিয়ে প্রেমিকের হাত ধরে চলে গেছে।এখন অন্যটাও প্রেম করছে।
থেমে,
আরাফ,একটা সাহায্য করবি?

–কি সাহায্য?কি লাগবে তুই একবার বল।
–একটা ভালো ছেলের সন্ধান দিতে পারবি।আমি দু দিনের মধ্যে আর্শি কে বিয়ে দেব।আমি কোনো রিস্ক নিতে পারবো না।ওই পরশের বাচ্চা আমার নাকের ডগা থেকে বোনগুলো নিয়ে যাবে আর আমি তা কি করে সহ্য করবো।দু দুবার হেরেছি আমি ওর কাছে।আর পারবো না।এরপরে কোনোভাবে যদি পাভেল আর্শিকে নিয়ে পালিয়ে যায় বা আর্শি সেচ্ছায় চলে যায় তাহলে দলের লোক আর কেউ আমার থাকবে না।তখন সবাই বলবে সোভাম সরদার তো ঠিকই তলে তলে আত্নীয়তার সম্পর্ক রেখেছে অথচ আমাদের বিরুদ্ধে রাখছে।আমি বাজারে উঠতে পারবো না।জনগণ হাসাহাসি করবে।

ঠোটের উপর আঙুল বোলালো আরাফ।তারপর বললো-
আর্শির একটা ছবি পাঠা তো আমার হোয়াটসঅ্যাপে।
চিন্তায় পড়ে গেল সোভাম।আদোও তার ফোনে আর্শির ছবি আছে তো।অনেক খুজেও পেল না। দ্রুত ফেসবুকে ঢুকলো।আর্শির আইডিতে প্রোফাইল পিক দেওয়া আছে একটা।সেটাকেই সেন্ড করলো আরাফের ফোনে।ছবিটা দেখতেই ঢোক গিললো আরাফ।জুম করে নানাভাবে দেখতে লাগলো শকুনি চোখে।ডাগর ডাগর চোখ দুটো,বাচ্চাসুলভ হাসি,উজ্জ্বল শ্যামলা রঙ সব মিলিয়ে ভীষণ পছন্দ হয়ে গেল তার।ফোন কানে নিয়ে সোভামের উদ্দেশ্যে বলল-

এটা তো একদম কচি থুরি বাচ্চা মেয়ে ভাই।একি আমাকে বিয়ে করবে?
অবাক হয়ে সোভাম বললো-
তোকে বিয়ে করবে মানে?
একটু ধাক্কা খেল আরাফ।ইনিয়েবিনিয়ে বলতে লাগল-

তুই জানিস স্পর্শীকে বিয়ে করতে চেয়েছি আমি। এমনকি বাড়ির সবাইকেও জানিয়েছি।এখন বাবা খুব জোর করছে বিয়ের জন্য।ভাবছি বিয়েটা করেই ফেলবো।তুই বললে কালকেই বাবাকে নিয়ে আসবো।যেহেতু শিকদার বাড়ির সাথে ঝামেলা,তাই যদি ঘরোয়া ভাবেও বিয়ে হয় তাও আমার কোনো আপত্তি নেই। আর্শিকে আমার ভালো লেগে গেছে।আর তুই এতো তাড়াতাড়ি ছেলে কোথায় পাবি?বেশী বাছতে যাস না আবার,আবার পাখি যেন ফুরুৎ হয়ে না যায়।
ভাবনায় পড়ে গেল সোভাম।পরক্ষণেই আর্শি পালিয়ে যেতে পারে ভেবে রাজি হয়ে গেল।বাড়ি ফিরেই দ্রুতপায়ে বাবার রুমে হাজির হয়ে গেল।ধীর পায়ে খাটের উপর বসে বললো-

আব্বু,আমি কিছু বলতে চাইছি।
কপালের উপর থেকে হাত সরিয়ে ধীর কন্ঠে বললো-
কি বলতে চাও?
সোভাম জিভ দিয়ে ঠোট ভিজিয়ে নিল।তারপর বললো-
আব্বু আরাফ কে তো চেনো।আমার বন্ধু।যার সাথে স্পর্শীর বিয়ে ঠিক হয়েছিলো।তারপর তো তোমার মেয়ে যা করার করলো।ও তো অপমানিত হয়ে চলে গেল।আর্শিকে এখন দু -এক দিনের মধ্যে বিয়ে দিতে হবে।নইলে দেখা গেল,তোমার আদরের মেয়ের মতো মানসম্মান ডুবিয়ে পালিয়ে গেল।

থেমে,
আমি আরাফকে অনেক রিকোয়েস্ট করেছি।ও রাজি হয়নি।তারপর আংকেল কে অনেক রিকোয়েস্ট করার পর রাজি হয়েছে।আমি চাইছি,আপাতত ঘরোয়া ভাবে কালকে ওদের বিয়েটা পড়িয়ে দিই।প্রয়োজনে আর্শি এখানেই থাকলো কিছুদিন। দেখো আব্বু,তুমি দ্বিমত করো না।অনেক রিকোয়েস্ট করার পর আরাফ রাজি হয়েছে।আগেরবারের মতো আবার আমাকে অপমানিত করো না।

আর তাছাড়াও যদি তোমার ছোট মেয়েও পালিয়ে যায়, বাজারে মুখ দেখাতে পারবে তো।
শামসুল সরদার করুন চোখে ছাদের দিকে তাকালেন।বললেন-
তুমি ওর বড় ভাই হও।যা করার ভেবেচিন্তে, সব দেখেশুনে করো।আমার তোমার উপর ভরসা আছে।
থেমে,

রাহুল কোথায়?ছেলেটা এতোদিন পর বাড়িতে এলো।নিযে থেকে থাকতে চাইলো অথচ ভালো করে আপ্যায়ন ই করা হলো না।দেখো তো কোথায় আছে?
সোভাম বসা থেকে উঠে দাড়ালো।বলল-
রাহুল ভাই মনে হয় জিহানের সাথে বাজারে গেছে।আমি দেখছি।

সকালবেলা।ঘড়িতে সাড়ে সাতটা।নাস্তার টেবিলে বসে বেশ অনেকক্ষণ ধরে মোড়াচ্ছে পাভেল।শেষে মুখ ফুটেই বলে উঠলো-
ভাই,
পরশ রুটি ছিড়ে মুখে দিয়ে বললো-
বল।

বলছি তোদের বিয়ের তো আজ তিন দিন হয়ে গেল। বলছি,কোথাও হানিমুনে টানিমুনে যাবি না।
খুক খুক করে কেশে উঠলেন মহীউদ্দীন শিকদার। মুখের খাবার টুকু শেষ করে টিস্যু নিয়ে বললেন
আমার খাওয়া শেষ।
বলেই চলে গেলেন রুমে।

পিয়াশা ভাজি আনার ছুতোয় ছুটে রান্নাঘরে চলে গেলেন।এতোক্ষণে নিচু হওয়া মাথা উপরে তুললো স্পর্শী।ইশ কি লজ্জা!কি লজ্জা!এই ভাই দুটোও হয়েছে একরকম।কারো কোনো হুশ নেই।স্পর্শী পরশের দিকে তাকিয়ে বললো-
কিন্তু পাভেল ভাইয়া,আমি তো চেয়েছিলাম খুব তাড়াতাড়ি আপনার বিয়েটা দিয়ে একসাথে যেতে।
উফফফফ!বাবুর আম্মু, তুমি থামো তো।আমি ভাইয়ের সাথে কথা বলছি তো।

পরশ খেতে খেতেই বললো-
তা হঠাৎ আমার হানিমুন নিয়ে পড়লি কেন?
সোজা হয়ে বসলো পাভেল।গম্ভীর মুখ নিয়ে বললো-
এখন তো একটু ফ্রি আছিস।তেমন কোনো ব্যাস্ততাও নেই।আর যাও আছে তা আমি আর সুজন ভাই সামলে নিতাম।বলছি এখন কোথাও একটা বাবুর আম্মুকে নিয়ে ঘুরে আয়।নইলে পড়ে ব্যাস্ততা বাড়লে আর যেতে পারবি না।তোর যা বউ,দেখা গেল ঘুরতে নিয়ে না যাওয়ার অপরাধে মাথা ফাটিয়ে দিল তোর।

তেতে উঠলো স্পর্শী।বললো-
তা ক বার মাথা ফাটিয়েছি আপনার ভাইয়ের?
উফফফ থামবে তোমরা।
পরশ চেচিয়ে উঠলো।তারপর ধীর কন্ঠে বললো-
খারাপ বলিস নি।কিন্তু কোথায় যাওয়া যায়?
এতোক্ষণে চুপচাপ খাচ্ছিলো প্রেমা।তড়িৎ বেগে মাথা উচু করে বলল-
জাফলং,শ্রীমঙ্গল, বা পাহাড়ি কোনো জায়গায় যেতে পারো।
লাফিয়ে উঠলো স্পর্শী।বললো-

আমি জাফলং যাব।ওটা আমার ফেবোরেট জায়গা।যদিও এখনো অবধি যাই নি।
পাভেল বললো-তাহলে এটাই ফাইনাল।আগামী পাচ দিন তোমাদের হানিমুনের জন্য কনফার্ম করা হলো।
মনে মনে বললো-
একবার ঘুরে এসে ফুরফুরা মন নিয়ে ভাই হাজির হোক।ঠিক মুহুর্তের মধ্যেই সে আত্নসমর্পণ করে বলবে-ভাই,তুমি যে গর্তে পা মচকেছো, আমিও ঠিক সেখানেই উলটো হয়ে পড়ে আছি।প্লিজ আর্শিকে আমার করে দাও।প্লিজ!প্লিজ!প্লিজ!

বেবী, তুমি এমন করছো কেন?প্লিজ কাম ডাউন।প্লিজ!
এমন আদুরে কন্ঠস্বর শুনতেই পিছু ফিরলো রাহুল।পাশেই বট গাছের নিচে একটা দামী গাড়ি পার্ক করা।সেখানেই হেলান দিয়ে কথাগুলো বলছে এক অচেনা ভদ্রলোক।ফোনের ওপাশের লোকটির সাথে এমন ভাবে কথা বলছে যেন খুব ভয় পায় তাকে।রাহুলের কাছে বেশ ইন্টারেস্টিং লাগছে।আরেকটু সামনে এগিয়ে ভালোভাবে কান পাতলো।লোকটি উত্তেজিত হয়ে পড়লো।বললো-

ছোছিয়া,আর ইউ ম্যাড। আমি বললাম তো আর কটা দিন পর তোমার কাছে আসবো।প্লিজ বেবি,বোঝার চেষ্টা করো।ড্যাডের কাছে আর ক’টা দিন থাকি।আমার সুইট বেবি।আমার বউটা ভেরি সুইট। সব বুঝে নেবে মিনিটের মধ্যে।হ্যা না।ওকে বেবী,বায়।আই এম বিজি নাউ।এক সপ্তাহের মধ্যেও চলে আসবো।আই মিস ইউ।
রাহুল এতোক্ষণে বুঝলো লোকটা তার বউয়ের সাথে কথা বলছিলো। নামটা ও ভিনদেশী।হয়তো বাহিরে বিয়ে করেছে।আর মাথা ঘামালো না।চুপ চলে এলো সেখান থেকে।

সকাল এগারোটা।সরদার বাড়ির সোফায় একজন বয়স্ক কাজি বসে আছেন। পাশেই শামসুল সরদার এবং তার ভাইয়েরা আছে।সোভাম খুটিনাটি পরিদর্শণ করছে।আর বাড়ির বউয়েরা সবাই ভীষণ ব্যাস্ত।কেউ কেউ আর্শিকে সাজাচ্ছে,কেউ কেউ রান্নাঘরে।কেউ কেউ আবার ঘরদোর গোছাচ্ছে।বিয়ের পর বাসর ঘর এখানেই সাজানো হবে।সোভাম রাহুলকে অনেক আগেই ফোন দিয়েছে বাড়ি আসার জন্য।কিন্তু রাহুল,তার তো বাড়ির মধ্যে মনই টিকছে না।সময়, সুযোগ এবং মানুষ খুজছে শিকদার বাড়ি যাওয়ার জন্য।শুনেছে বর এমপি।নিশ্চয়ই খুব বড়লোক।ব্যাস,দূর থেকে স্পর্শীটাকে এক নজর দেখেই সে চলে যাবে।কিন্তু আফসোস!কাউকেই পাচ্ছে না।

আরাফ তার বাবাকে নিয়ে ভেতরে ঢুকতেই ভ্রু কুচকে ফেললেন শামসুল সরদার। পেছনে দুজন গার্ড ছাড়া আর কাউকে দেখছেন না।তাদেরকে সোভাম আপ্যায়ন করে সোফায় বসাতেই শামসুল বললেন-
বিয়ে বাড়ি, যতই ঘরোয়া ভাবে হোক।তাই বলে একেবারে দুজন কিভাবে হয়?
অবাক হয়ে ছেলের দিকে তাকিয়ে রইলেন মির্জা আফতার। কন্ঠে খাদে নামিয়ে ছেলেকে জিজ্ঞেস করলেন-
বিয়ে বাড়ি মানে?তুমি তো বলেছিলে শুধু মেয়ে দেখতে এসেছো।
নড়েচড়ে বসলো আরাফ।ইনিয়েবিনিয়ে বললো –

আব্বু প্লিজ চুপ কর।তুমি রাজি হবে না বলে মিথ্যা বলেছি।হয়েছে এবার।
হতাশ হলেন আফতার।আরাফ পুনরায় শামসুল সরদারের দিকে চাইলো।নিজেকে ধাতস্থ করে তার উদ্দেশ্যে বললো-
দেখুন আংকেল।সোভাম আমাকে সমস্ত সমস্যার কথাই বলেছে।বিয়েটা যেহেতু ঘরোয়াভাবে বলতে গেলে লুকিয়ে দিচ্ছেন সেক্ষেত্রে আমি বেশী মানুষ আনলে সব জানাজানি হতে সেকেন্ড ও লাগবে না।আপনি চাইলে আমি এক্ষুনি সবাইকে ফোন দিচ্ছে।তবে মন্ত্রীর ছেলের বিয়ে হচ্ছে কত শত মানুষ আসবে তা কি সামলাতে পারবেন আদোও।

আর যাই বলুন,অনুষ্ঠান তো পরেও করা যাবে।
দমে গেলেন শামসুল সরদার। কাজির নির্দেশে আর্শিকে আনা হলো।টলতে টলতে শাড়ি পড়া অবস্থায় হাজির হলো আর্শি।দু পাশ দিয়ে দুই চাচি এমন ভাবে৷ ধরে আছে যেন ছেড়ে দিলেই পড়ে যাবে আর্শি।চোখমুখে অশ্রু টলমল করছে।চোখ টাকে টেনেও খুলতে পারছে না।শুধু মুখ দিয়ে বিরবির করে বলছে –
আমি বিয়ে করবো না পাভেল ভাই।

সোভাম দূরে দাড়িয়ে আর্শিকে দেখে বাকা হাসলো।সে নিজেই শরবতের সাথে সামান্য নেশার দ্রব্য মিশিয়ে দিয়েছে যাতে বিয়ের সময় চেচামেচি না করতে পারে।সোফায় ধরে বসানো হলো আর্শিকে।এরইমধ্যে রাহুল বাইরে থেকে এলো।আলতো হাসি টেনে বললো-

সরি!আসলে আমার খেয়াল ছিলো না আজ আর্শির বিয়ে।
এরপর কাজির পাশে বসা বর রুপি রাহুলকে দেখেই চমকে উঠলো।অবাকের সুরে বললো-
এর সাথে আর্শির বিয়ে?কিন্তু উনি তো অলরেডি বিবাহিত।
সাথেসাথেই বাজ পড়লো উপস্থিত সবার মাথায়।

বর্তমান-
জেলের দেয়ালে হেলান দিয়ে হাটু মুড়িয়ে বসে আছে পরশ।পাশেই চৌদ্দ শিকের ওপাশে টুলে বসে গালে হাত দিয়ে বসে আছে হাবিলদার রামু।ভাবনা থেকে বেরিয়ে রামু পরশের উদ্দেশ্যে বললো-
সব তো ঠিকঠাকই ছিলো এমপিসাহেব।আপনে আবার খুন খারাপি করতে গেলেন কেন?
পরশ হাসলো।কিন্তু নিরব রইলো।

রামু অনেকক্ষণ ভেবে জিজ্ঞেস করলো-
আর কতদিন সাজা আছে আপনের?
পরশ এবারেও হেসে দিলো।বললো-
কত দিন নয় রামুকাকা।সবে তো চার বছর হলো,এখনো আট বছর বাকি।
রামু দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললো-
ওহহ,বারো বছর জেল আপনের।
থেমে,

রাজনীতির রংমহল পর্ব ২১

তারপর কি হইলো কইবেন না এমপিসাহেব।
পরশ ধীর চোখে তাকালো রামুর দিকে।তারপর পুনরায় হারিয়ে গেল সুদুর অতীতে…….

রাজনীতির রংমহল পর্ব ২৩