শেষ থেকে শুরু পর্ব ১০

শেষ থেকে শুরু পর্ব ১০
লাবণ্য ইয়াসমিন

বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আছে হৈমন্তী। মনটা বিশেষ ভালো নেই। হঠাৎ করেই চিৎকার করে কাঁদতে মন চাইছে। অরিণের জন্য খারাপ লাগছে। মেয়েটা কত খুশী ছিল। ওর খুশীটা এভাবে নষ্ট হলো মানতে কষ্ট হচ্ছে। রবিন ছেলেটার উপরে বেজায় রাগ হচ্ছে। হৈমন্তীর মনে হলো মৃত্যুর পরে তো আর কিছু নেই। এতো ভয় নিয়ে সত্যিই বাঁচা যায়না। ছেলেটার সামনে একবার দাঁড়াতে হবে। বাড়ির সামনে লোকজন কাজকর্ম করছে। গায়ে হলুদের জন্য স্টেজ সাজানো হচ্ছে। আজ সন্ধ্যায় গায়ে হলুদ হবে। রবিনের পরিবার এখন ঢাকায় থাকে। গ্রাম থেকে চলে এসেছে। অরিণ চোখ ফুলিয়ে ফেলেছে কান্নাকাটি করে। রুম থেকে বের হচ্ছে না। হৈমন্তী ওর আশেপাশে থাকার চেষ্টা করছে। তবে আবির বলেছে অরিন কখনও কোনো ভুল সিদ্ধান্ত নিবে না। হৈমন্তীর বিশ্বাস হয়নি। মেয়েদের ইমোশন সম্পর্কে ওর জানা আছে। ভালোবাসার মানুষের এতো বড় বিশ্বাসঘাতকতা কেউ সহজে মানতে পারবে না। পারেও না। হৈমন্তী কথাগুলো ভেবে আরাফাতকে ফোন দিল। দুবারের পর তিনবারের মাথায় ফোন রিসিভ হলো। আরাফাত ঘুম ঘুম কন্ঠে বলল,
> সারারাত কাজ করেছি শেষরাতে ঘুমিয়েছি। ভাইয়ার সুযোগ পেয়ে আমাকে দিয়ে খাটিয়ে নিচ্ছে সরি বোন।
হৈমন্তীর রাগ হলো। আসছি বলে আসলো না।ও ঝাড়ি দিয়ে বলল,

তোমার কাজকর্ম রাখো। আমি আগে না তোমার কাজ আগে?ভাইয়া জানতো না তুমি আমার সঙ্গে থাকবে তবুও কেনো তোমাকে দিয়ে কাজ করাচ্ছে? শুনো ভাইয়া কোনো বাহানা দিবা না। তুমি জানো এখানে কি হয়েছে। কথাগুলো তোমাকে না বলতে পেরে আমার পেট ফুলছে।
আরাফাত নড়েচড়ে উঠে বসতে বসতে বলল,
> বিয়ে বাড়িতে আনন্দ কর ওখানে আবার কি হচ্ছে?
> তুমি তো পালিয়ে গেলে। যাইহোক শুনো তুমি ডালিয়াকে চিনতে না?
> কোন ডালিয়া?
> আমাদের ডলির কথা বলছি। তুমি দেশ থেকে যাবার পরে খুন হয়েছিল সেই ডলি।
> হুম তো কি হয়েছে?
> অরিণের বিয়ে রবিনের সঙ্গে ঠিক হয়েছে। ওই খারাপ ছেলেটা আরিনকে ফাঁসিয়েছে। ভাইয়া বিয়েটা হবে না হয়তো। মেয়েটা কান্নাকাটি করছে।
> তুই আগে জানতি না? আর রবিনের সাহস হয় কিভাবে বউ বাচ্চা রেখে আরেকটা মেয়ের সঙ্গে এসব করছে। ওর বাবা মা কিভাবে পারছে ছেলেকে সাপোর্ট করতে। অবশ‍্য কাশেম মণ্ডল সব পারে। যেই দেখেছে বড়লোকের সুন্দরী মেয়ে অমনি গলে গেছে।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

> ভাইয়া তুমি কিছু করো প্লিজ। আমি আবিরকে বলেছি সবকিছু কিন্তু ওরতো কোনো হেলদোল নেই। আমাকে কিছু বলছে না। হিটলার টাইপ ওকে দিয়ে কাজ হবে না। ভাইয়া ডলির কেসটা আবার রিঅপেন করা যায় না?
> যায় কিন্তু প্রমাণ নেইতো।
> তুমি ভেবোনা আমি ব‍্যবস্থা করবো। তুমি শুধু থানায় কথা বলো। তবে কেসটা যে রিঅপেন হয়েছে কথাটা যেনো মণ্ডল বাড়ির কেউ না জানে। গোপন থাকে সেদিকে একটু খেয়াল রাখবে।
> আচ্ছা দেখছি। মেঝ ভাইয়াকে বললেই সব হয়ে যাবে তুই চিন্তা করিস না। আমি কিছুক্ষণ পরে যাচ্ছি। তুই অরিণকে কান্নাকাটি করতে মানা কর। এভাবে মরা কান্নার কি আছে বুঝলাম না। বিয়ে হয়ে গেছে নাকি। ছয় মাসের প্রেম এমন ভাব করছে যেনো ছয় বছরের সংসার।
আরাফাত তাচ্ছিল্যের সুরে কথাগুলো বলল। হৈমন্তী রেগে গিয়ে বলল,

> তুমি নিজে কি করেছো? এক বছরের প্রেম তারপর সারাজীবনের বনবাস। সন‍্যাসীর মতো আছো। অথচ তোমার প্রাক্তনের ছেলেমেয়ের বিয়ের বয়স হয়ে গেছে। রাখছি।
হৈমন্তী ঝাড়ি দিয়ে ফোন কেটে দিলো। বিড়বিড় করে ভাইকে আচ্ছা করে বকা দিলো। কতবার বলেছে একটা বিয়ে করো কিছুতেই মানতে চাইছে না। হৈমন্তী ফোন হাতে নিয়ে রুমের ভেতরে গিয়ে দেখলো অরিণ ঘুমিয়ে আছে। হৈমন্তী ওকে আর ডাকলো না। নিচে নেমে আসলো। ফারজানা হক সোফায় বসে আছে। হয়তো ফেসিয়াল করবে। পাশে পার্লারের একটা মেয়ে বসে আছে। হৈমন্তীকে দেখে উনি ডাকলেন। হৈমন্তী ফারজানা হকের পাশে বসতে বসতে বলল,

> আন্টি তোমাকে ভীষণ কিউট লাগছে।
ফারজানা হক হৈমন্তীর কথা শুনে শব্দ করে হেসে বলল,
> এখনো ফেসিয়াল হয়নি আর তোমার কিউট মনে হচ্ছে? শোনো এই মেয়েগুলোকে আমার জন্য না তোমাদের জন্য এনেছি। বাড়ির সবগুলো মেয়েছেলেদের ফেসিয়াল হবে। আবিরটা তো এসব পছন্দ করেনা। ভাবছি ওকে ঘুমের ওষুধ দিয়ে কাজটা হাছিল করে ফেলবো।
হৈমন্তীর হাসি পাচ্ছে। ফারজানা হক যে এই কাজটা করতে পারে এটা ওর অবিশ্বাস হচ্ছে না। হৈমন্তী হাসি আটকে বলল,
> আন্টি এসব দরকার নেই। বাড়িতে অনেক কাজ সেগুলো কে করবে? দেখছেন না বাইরে লোকজন নিয়ে কাজ করছে। কমিউনিটি সেন্টারে গেলে কিন্তু এই ঝামেলা হতো না।

> আবিরের বুদ্ধি। ও এখানেই সব করবে। শোনো তুমি সবার আগে ফেসিয়ালটা করে ফেলো। তোমাকে কিন্তু দারুণ লাগতে হবে। তোমার জন্য আমি সুন্দর একটা শাড়ি রেখেছি। তুমি আজ সন্ধ্যায় সেগুলোই পরবা।
ফারজানা হক ওকে কথা বলার সুযোগ না দিয়ে উঠে গেলো। হৈমন্তী নড়াচড়া করে বসলো। ও শাড়ি পড়ে না। সব সময় সাদা নয়তো হালকা রঙের গাউন নয়তো থ্রি পিচ পড়ে। রঙিন পোশাক পছন্দ না। হৈমন্তী গম্ভীর হয়ে বসে আছে। ফেসিয়াল করতে হয়না ওর। কখনও পার্লারের আশেপাশেও যাওয়া হয়নি। নিজের যত্ন নিজেই নিতে পারে ও। হৈমন্তী কথাটা ভেবে পাশের মেয়েটাকে বলল,
> আমি এসব করবো না। আশেপাশে অনেকেই আছে আপনি তাদেরকে দেখুন।
হৈমন্তী আর অপেক্ষা করলো না বাইরে বেরিয়ে আসলো। আবির লোকজনকে দেখিয়ে দিচ্ছে কিভাবে কি করতে হবে। হৈমন্তী বাগানের পাশে গিয়ে দাঁড়ালো। আবির কাজের ফাঁকে ওর দিকে আঁড় চোখে তাঁকিয়ে ভাবলো এই মেয়েটার মাথায় কি চলছে কে জানে। সারাক্ষণ তো ঘরে বসে থাকে। বাইরে লোকজন আছে এখানে কি করছে। আবির ওদেরকে কাজ বুঝিয়ে দিয়ে দ্রুতগতিতে হৈমন্তীর পাশে এসে দাঁড়িয়ে বলল,

> এখানে কি তোমার?
> আপনি কি করতে চাইছেন বলবেন? রবিণের সঙ্গেই বিয়েটা দিবেন ভাবছেন?
> হুম তোমার কি? ভেতরে যাও আর আম্মুকে বুঝিয়ে বলো আমার খাবারে ঘুমের ওষুধ দেওয়ার পরিকল্পনাটা ভীষণ জঘন্য হয়েছে।
হৈমন্তী চোখ বড় বড় করে বলল,
> আপনি শুনেছেন?
> না শোনার কি আছে। ভেতরে যাও এখানে লোকজন
আছে।
হৈমন্তী চুপচাপ চলে আসতে গিয়ে পেছনে ফিরে বলল,
> আপনাকে একটা প্রস্তাব দেওেয়ার ছিল। যদি অনুমতি দিতেন উপস্থাপন করে পারি।
আবির ভ্রু কুচকে বলল,
> প্রস্তাব তো আমি তোমাকে দিতে চাই আমার আগেই তুমি দিচ্ছ? সুখের দিন বুঝি হঠাৎ করেই আসে। বলে ফেলো মনে যা আছে।

হৈমন্তী মাথা নিচু করে বলল,
> আরাফাত ভাইয়ার সঙ্গে অরিণের বিয়েটা দিলে কেমন হয়। আমার ভাইয়া কিন্তু খুব ভালো। ওকে ভালো রাখবে। ( পাঠক সমাজ,প্রস্তাব দিয়ে ফেলেছি আবির না মানলে কিন্তু লেখিকাকে দোষারোপ করতে পারবেন না।)
হৈমন্তীর কথা শুনে আবির হতাশ হলো। কি শুনতে চেয়েছিল আর কি শুনলো। ও রাগ করে দাঁত চেপে বলল,
> অরিনের জন্য ছেলের অভাব পড়বে না। আবিররের বোন সস্তা না। ওর চিন্তা না করে নিজের চিন্তা করো যাও।
আবির গটগট করে চলে গেলো। হৈমন্তীর মনে হলো আবির ওকে অপমান করলো। ওর ভাইও কি সস্তা নাকি। নেহায়েত অরিনের পাশে একজন মানুষকে এই মূহুর্তে দরকার তাই প্রস্তাবটা দিয়েছে নয়তো কখনও দিতো না। হৈমন্তী রাগে ফুলতে ফুলতে রুমে গিয়ে দরজা ধপাস করে বন্ধ করে দিলো। ফাজিল ছেলে একটা। হৈমন্তী ওর কোনো কথায় আর শুনবে না। যতক্ষণ না ক্ষমা চাইবে হৈমন্তী ওকে ক্ষমা করবে না। অরিণ মন খারাপ করে বসে ছিল। হৈমন্তীকে এমন ফুলতে দেখে ও ভ্র কুচকে বলল,

> তুমি কি রাগ করেছো? কেউ কিছু বলেছে?
> তোমার ভাইয়া আমাকে অপমান করেছে অরু। ওকে আমি কখনও ক্ষমা করবো না। তুমি জানো আমার ছোট ভাইয়াকে ছোট করে কথা বলেছে?
অরিণ অবাক হলো। আবির এরকম কিভাবে করতে পারে বুঝতে পারলো না। ও মন খারাপ করে বলল,
> হয়তো ভাইয়ার মাথা ঠিক নেই। তুমি কিছু মনে করোনা। ভাইয়াকে বলবো তোমার কাছে ক্ষমা চাইতে।
> তুমি ওকে কিছু বলবে না। ও নিজ থেকে ক্ষমা চাইবে। তোমার ভাইয়া ভীষণ খারাপ মানুষ তুমি জানো?
অরিণ মাথা নাড়িয়ে বলল জানে না। হৈমন্তী এক সঙ্গে এতগুলো কথা বল‍ে না। আজ হয়তো একটু বেশিই রাগ করেছে। অরিণ ওষ্ঠে হাসি ফুটিয়ে বলল,
> আচ্ছা তুমি কি বলেছিলে ভাইয়াকে?
হৈমন্তী এবার দমে গেলো। অরিণের সঙ্গে বিষয়টা সেয়ার করলে ও কথাটা কিভাবে নেবে বুঝতে পারছে না। তবুও মিনমিনে কন্ঠে বলল,

> আমার ছোট ভাইয়াকে তোমার কেমন লাগে?
> উনি ভদ্রলোক সদালাপি তবে একটু বেশিই উগ্র টাইপ।
> ভাইয়া স্পষ্ট কথা বল‍তে পছন্দ করে। তুমি দেখেছো আমাকে কতোটা খেয়াল রাখে। আমি চেয়েছিলাম তোমার সঙ্গে যদি ওর…
হৈমন্তী বাকিটা বলতে পারলো না। অরিন ওকে থামিয়ে দিয়ে বলল,
> আমি বুঝেছি তুমি কি বলতে চেয়েছো। তোমার কথা আমি রাখতে পারি যদি তুমি আমার শর্তে রাজি হও। এতে অনেকের ভালো হবে।
হৈমন্তী খুশীতে লাফিয়ে উঠলো। অরিনের মতো মিষ্টি একটা মেয়ে যদি ভাইয়ার বউ হয়ে যায় তাহলে আরাফাত আর উদাসীনভাবে চলাফেরা করবে না। জীবন নিয়ে সিরিয়াস হবে। অবশেষে ভাইয়ার জন্য পাত্রী পাওয়া গেলো। তাছাড়া অরিন ভালো থাকবে কথাটা ভেবে বলল,

> তোমার যেকোন শর্তে রাজি আমি। তুমি শুধু কষ্ট পেওনা ভাইয়া তোমাকে ভালো রাখবে। তুমি এতো সহজে রাজি হবে সত্যিই ভাবিনি। ভীষণ খুশী আমি।
> আমার শর্তটা শুনে তারপর খুশী হও। তুমি যেমন তোমার ভাইয়াকে ভালোবাসো আমিও আমার ভাইয়াকে ভীষণ ভালোবাসি। ভাইয়া তোমাকে পছন্দ করে। শুধু পছন্দ না ভালোবাসে। তুমি যদি ভাইয়াকে বিয়ে করতে রাজি হয়ে যাও আমিও তোমার ভাইয়াকে বিয়ে করবো। তুমি হয়তো আমাকে স্বার্থপর ভাবছো কিন্তু এটা ছাড়া আমার উপায় নেই। ভাইয়া খুব ইমোশনাল।
অরিন আরও কিছু বলতে চাইলো কিন্তু হৈমন্তী সুযোগ দিলো না। উঠে পড়লো। ওর মুখটা থমথমে হয়ে আছে। কিছুক্ষণ আগে যে খুশীর ঝিলিক ছিল সেটা মিলিয়ে গেছে। চোখমুখ কঠিন করে ভ্রু কুচকে বলল,
> তোমার ভাই আর আমার মধ্যে ব‍্যবধান আকাশ পাতালের। আমার পূর্বে দুবার বিয়ে হয়েছে। আমি উনার যোগ্য না। আমি পারবো না ক্ষমা করো।

> ভাইয়া আম্মু সবাই রাজি তাহলে তুমি অমত করছো কেনো? প্লিজ রাজি হয়ে যাও। আচ্ছা তুমি চাও না আমি তোমার ভাইয়ের জীবনে আসি? যদি না চাও তবে আর দ্বিতীয়বার এই প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হবে না।
অরিন বাইরে চলে গেলো। ভেবেছিল নিজের যতই কষ্ট হোক ভাইয়ের সুখের টনিক খুজেঁ দিবে। চুপচাপ বসে আছে হৈমন্তী। অরিন চলে যাওয়ার পরে আর ফিরে আসেনি। হাজারো চিন্তা মাথার মধ্যে ঘুরছে। স্মৃতির পাতায় পুরাতন স্মৃতিরা আছড়ে পড়ছে। যেগুলো কাউকে শেয়ার করা হয়নি। ভেবেছিল নিজের কষ্ট গুলোকে আর কারো সামনে আনবেনা। নিজকে নিজের ছোট মনে হচ্ছে। বাঙ্গালী মেয়েদের একবারই বিয়ে হয় অথচ নিজে দুই দুইবার বিয়ের পিড়িতে বসে পড়েছে। নতুন করে শুরু করবে নাকি শেষ হওয়া জীবনের স্মৃতিচারণ করে বেঁচে থাকবে কথাগুলো ভাবতে ভাবতে চোখের পাতা ঝাপসা হয়ে আসলো।

ধরাধামে সন্ধ্যা নেমেছে। সন্ধ্যা প্রায় শেষ ভাগ রাতের সুচনা লগ্ন বলা যায়।হৈমন্তী বাসন্তী রঙের লাল পেড়ে শাড়িতে নিজেকে সাজিয়ে নিয়েছে। ফরহাদের বাসা থেকে ফেরার পরে আর কখনও রঙিন পোশাক পরা হয়নি।আজকে ফারজানা হকের জিদের জন্য ওকে পরতে হলো। আঁচল ছেড়ে দিয়ে হিজাব পড়ে নিয়েছে যদিও হৈমন্তীর কাছে জঘন্য লাগছে তবুও কয়েকজন বেশ পছন্দ করলো। হৈমন্তীর একটা আলাদা উদ্দেশ্য আছে যার জন্য এই শাড়িটা গায়ে জড়াতে বেশি ঝামেলা করেনি। ছেলেদের বাসা থেকে গায়ে হলুদের জন্য আসছে। এখান থেকে অনেকেই ছেলেকে হলুদ ছোঁয়াতে যাবে। হৈমন্তী ওদের সঙ্গে যাওয়ার পরিকল্পনা করে ফেলেছে। মুখটা বেঁধে ফেলবে গাড়িতে উঠে। এখানে কাউকে বুঝতে দিলে চলবে না। আবিরের যাওয়ার কথা ছিল কিন্তু রবিনকে দেখলে রেগে যাবে তাই কাজের বাহানা দিয়ে বাইরে চলে গেছে। আরাফাত সকালবেলায় হৈমন্তীর ফোন পেয়ে গ্রামের বাড়িতে ছুটেছে। হয়তো সকালবেলায় হাজির হবে। বিয়ের মাঝে একদিন বাকি আছে। হৈমন্তী কথাগুলো ভেবে হালকা লিপস্টিক দিয়ে ঠোঁট দুখানা রাঙিয়ে নিলো। অরিন ওর পাশে দাঁড়িয়ে আছে। ওর চোখেমুখে কৌতূহল খেলা করছে। এতো বছরে হৈমিকে কখনও এভাবে সাজতে দেখেনি হঠাৎ কি এমন হলো যে এতো কিছু জানার পরেও এমন সাজুগুজু করছে। ও কৌতূহল দমিয়ে রাখতে না পেরে বলল,

শেষ থেকে শুরু পর্ব ৯

হৈমি তুমি ঠিক আছো? তুমি জানো বিয়েটা হবে না তবুও এসবের মানে কি?
> বিয়ে হবে অরু। তুমি চিন্তা করোনা। বিয়ে হবে আর অপরাধীও শাস্তি পাবে। আসছি আমি।
হৈমন্তী দ্রুতগতিতে বেরিয়ে গেলো। অরিন আবিরকে ফোন করলো কিন্তু ছেলেটার ফোন বন্ধ। হৈমিকে নিয়ে ওর চিন্তা হচ্ছে। মেয়েটা কোনো বিপদে না পড়ে যায়। তাছাড়া ও কি করতে চাইছে কিছুই তো বল‍লো না। শেষমেশ আরাফাতকে ফোন করলো। গ্রামের নেটওয়ার্ক সিস্টেম এমনিতেই খারাপ তারপর আবার ঝড় হয়েছে গতকাল রাতে। খুব কষ্টে লাইন লাগলো কিন্তু কথা হলো না। গড়গড় শব্দ হচ্ছে। অরিন ফোন কেটে টেক্সট পাঠিয়ে দিলো। দ্রুত ওদের বাড়িতে আসতে

শেষ থেকে শুরু বোনাস পর্ব