শেষ বিকেলে তুমি আমি সিজন ২ পর্ব ১৬

শেষ বিকেলে তুমি আমি সিজন ২ পর্ব ১৬
আলিশা

বেশ খানিকক্ষণ সময় নিয়ে ছবিটা পরখ করলাম। অথৈয়ের এমন বেশভূষার কোনো হেতু খুঁজে পেলাম না আমি। পরিশেষে কুঁচকানো ভ্রুতে ছবিটা রেখে দিলাম ওয়ারড্রবের ওপরে। ভাবনা ছেড়ে গা এলিয়ে দিলাম বিছানায়। তখনই হঠাৎ বমি ভাব মাথা চাড়া দিয়ে উঠলো। শূন্য পেট তবুও এমন ভাব। অসহ্য এক অনুভূতিতে তীব্র খারাপ লাগা শুরু হলো।

পেট থেকে কিছু না এলেও মুখ থেকে বেশ শব্দ বের হতে লাগলো। অনেক চেষ্টার পরও আওয়াজ দমাতে পারলাম না। তড়িঘড়ি করে ওয়াশরুমের দরজা লক করবো বলে বেসিন থেকে মুখ তুলে দরজার পানে তাকাতেই ঈষৎ চমকে উঠলাম। স্মরণ দরজা ধরে দাড়িয়ে আছে। বুকের ভেতর চমকানো ভাবনা বেশি সময় ধরে রাখতে সক্ষম হলাম না।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

আবারও পেটের তলদেশ থেকে সব যেন বেরিয়ে আসতে চাইলো। স্মরণ অস্থির হয়ে পরলো। এক হাতে আমাকে একপাশ হতে জাপ্টে ধরে দিশেহারা ভঙ্গিতে দাড়িয়ে রইলো। আমি আশ্বাস দিয়ে বললাম কিছু হয়নি আমার। সে তবুও বিচলিত। আমি তাকে আশ্বাস দিওয়ার মাঝপথেই ওয়ক্ করে উঠি। আবারও বলি আমি ঠিক আছে। বলতে গিয়ে আবারও থেমে যাই। স্মরণ একাধারে বলতে গেলে গেছে

— কখন থেকে এমন? কি হয়েছে? গ্যাস ফ্রম করলো নাকি? গত রাতেও বমি করেছো। খেয়া, মাথায় পানি দেবে?
তার কথার মাঝে আমার বমি ভাব কেটে আসলো। চোখ দুটো শুধু রইলো ঢুলুঢুলু। স্মরণের কপালে ভাজ পরলো অচিরেই। আমার মনে এঁটে বসলো আতঙ্ক। আবার না বলে বসে হসপিটালে চলো।
— খেয়া, হসপিটালে চলো। তোমার কন্ডিশন আমি ভালো দেখছি না।
ভয়েরই জয় হলো। আমি তড়াক করে জেগে উঠলাম। টান টান হয়ে দাড়ালাম। পানির কল ছেড়ে দিয়ে বড্ড সতেজ গলায় বলতে বললাম

— ধুর! কি যে বলেন না। আবার হসপিটাল কেন? যেতে হবে না। আমি ঠিক আছি। মানুষের শরীর কি সবসময় একই রকম থাকবে নাকি।
স্মরণ কথা বাড়ালো না। ওয়াশরুমের দরজা থেকে সরে দাড়িয়ে পকেট থেকে ফোন বের করে কোথাও ফোন করলো। সেকেন্ড তিনেকের মাঝে কাঙ্ক্ষিত মানুষটা ফোন ধরলো। স্মরণ এপাশ হতে চিন্তান্বিত কন্ঠে জানতে চাইলো

— বাসার আশেপাশে সন্দেহভাজন কিছু দেখা যায়?
ওপাশের ব্যক্তির দেওয়া তথ্য আমার অজানা রইলো। স্মরণ ফোন কেটে কেবল বলল
— হাত মুখে ধুয়ে নিচে আসো।

কথাটা বলেই সে চোখের আড়াল। আমি যেন উত্তল সাগরে পর পরলাম। কুল খুঁজে হয়রান হয়েও কুলের দেখা পেলাম না। হসপিটালে নিয়ে গেলে কি প্রেগন্যান্সির চেকআপ দেবে? ভাবতেই আত্মা ধড়ফড়িয়ে উঠছে। তবুও কিছুটা পরিপাটি হয়ে একেবারে বাড়ির মেইন গেইটে চলে গেলাম। মাথার ওপর থেকে ছাদ সরে যেতেই যেন ওপর হতে থোকা থোকা ঠান্ডা এসে জড়িয়ে ধরছে।

গায়ে কেবল চাদর জড়ানো ছিলো। শীতের দাপটে হাতের শক্তি নীলিন হচ্ছে। পায়ে যেন কে শিকল বেঁধে দিচ্ছে বলে অনুভূহ হচ্ছে। আমি কুঁকড়ে গেলাম। সাঝের বেলায় এভাবে শীতবস্ত্র হীনা বাইরে আসা মোটেও ঠিক হলো না আমার। ভাবতে ভাবতে এগিয়ে গেলাম সামনের পথে। পায়ের অদৃশ্য বেরি টেনে হিঁচড়ে গাড়ি অব্দি পৌঁছালাম। স্মরণ আগে থেকেই গাড়িতে বসা ছিলো।

আমি গাড়িতে উঠতেই জাহিন এসে জানালা দিয়ে চাবি ছুড়ে দিলো স্মরণের দিকে। অতঃপর গাড়ি ছুটলো হসপিটালের উদ্দেশ্যে। আমি জবুথবু হয়ে বসে কেবল আল্লাহ কে ডেকে গেলাম। সময় হলে আমি জানাবো তাকে। এখন কি দরকার তার এবিষয়ে অবগত হওয়া? সে যদি জেনে যায় বাবুর কথা? প্রতিক্রিয়া সুমিষ্ট হবে নাকি তেঁতো হবে সে ব্যাপারটা বড়ই দ্বিধার। সেদিন ছোঁয়ার অনুপস্থিতিতে। স্মরণের মেকি সাপ নিয়ে আমাকে ভয় দেখানোর রাতে আচমকা কোথা থেকে কি হলো সে কথা ভাবতেই আমার কান দিয়ে ধোঁয়া নির্গত হয়।

ভাবনার মাঝে আজও তীব্র লজ্জার আঁটসাঁট বেরাজালে আমি রঙিন হয়ে উঠলাম স্মরণের অগোচরে। লজ্জায় মুখ ঘুরে বসে রইলাম। দৃষ্টি রাখলাম গাড়ির স্বচ্ছ কাঁচের জানালা দিয়ে বাইরে।হঠাৎই আমার লজ্জা ভাবকে তাড়া করলো আতংক। স্মরণ হুট করে গাড়ি থামিয়ে দিলো। আমি নিজের ভারসাম্য ঠিক রাখতে না পরে সহসাই ঝুঁকে পরলাম সামনের দিকে।

সামনের দিকে দৃষ্টি তাক করতেই বুকের ভেতর শুরু হলো অজ্ঞাত ভবিষ্যদ্বানীর ত্রাস। দৃষ্টি হলো ত্রাসিত। খামচে ধরলাম স্মরণের হাত। আমাদের গাড়ির সামনেই দু’টো গাড়ি দাড় করানো। নেমে এলো কিছু রূঢ় ব্যক্তি। হাতে বন্দুক। তাক করা স্মরণের দিকে। তারা গাড়ির নিকট আসার দু সেকেন্ড আগে হঠাৎ স্মরণ হ্যান্ডস আপ করার পূর্বে আমাকে চাপা কন্ঠে বলল

— খেয়া আমার সিট বেলটা খোলো আর তোমারটাও। সাথে আমার শার্টটা টেনে গানটা ঢেকে দাও।
‘গান’ শব্দটা শুনতেই পিলে চমকে উঠলাম আমি। তবুও নিজেকে ধাতস্থ করে চটজলদি দুজনের সিট বল খুলে স্মরণের শার্টের ভাঁজে লুকিয়ে দিলাম উঁকি দেওয়া বন্দুক। লোকগুলো গাড়ির নিকট এসেই উঁকি ঝুকি দিয়ে খুঁজতে লাগলো কিছু। আমি ভয় মিশ্রিত চাহনিতে তাকিয়ে রইলাম তাদের দিকে। স্মরণের যেন ভয় নেই। নির্বিকার হয়ে বসে রইলো সে। আমাকে কেউ গাড়ির বাইরে হতে ইশারায় গ্লাস নামিয়ে দেওয়ার হুকুম দিলো। স্মরণের পানে চাইলাম। স্মরণ ইশারায় সম্মতি দিলেই নামিয়ে দিলাম কাচ। লোকটার হিংস্র দৃষ্টি আচমকা পরিবর্তন হলো। লোলুপতা ছড়িয়ে পরলো তার চোখে মুখে।

— বস, এসপির মেয়ে নেই গাড়িতে।
কোনো এক ব্যাক্তির ফোনালাপের একাংশ। আমি ছানাবড়া চোখ নিয়ে তাকিয়ে রইলাম লোকটার দিকে। ওরা কি ছোঁয়া কে খুঁজছে? বিষয়টা মস্তিষ্কে ধরে উঠতেই তড়িৎ গতিতে স্মরণের চোখে চোখ রাখলাম। স্মরণ ঠোঁট প্রসারিত করলো। ঠিক হাসি নয়, নিশ্চিন্ত এক বার্তা সে আমার দিকে ছুড়ে দিলো। আমি হাপ ছাড়লাম। কোনো এক মাধ্যম হতে নিশ্চয়ই স্মরণ জেনেছে তারা ছোঁয়াকে ছিনিয়ে নেওয়ার কথা ভাবনায় রেখেছে। তাই বুঝি হঠকারিতার মধ্য দিয়ে মেয়েকে পাঠিয়ে দিয়েছে বিদেশে।

— ওরা আমাদের কিছু করবে না। ভয় পেও না।
স্মরণ হালকা ঝুঁকে এসে আমার উদ্দেশ্যে একথা ছুড়ে দিলো। আমি অদম্য ভয়টা একটু করে দমানো আরম্ভ করলাম। তবে মাঝপথে পৌঁছাতেই পাশ থেকে বিশ্রী কন্ঠে ধ্বনিত হলো
— মা*ল*ডা সেই। নিয়া যাই, নাচ গার্ডেনে রাখমু।

তড়াক করে লাফিয়ে উঠলো হৃদপিণ্ড। ভয় দ্বিগুণ বৈ চারগুণ হলো। দু’হাতে স্মরণের জ্যাকেট খামচে ধরলাম। লোকটা জানালা দিয়ে হাত বাড়িয়ে দিলো আমার দিকে। মাত্রাতিরিক্ত ঘৃণা আর কুন্ঠায় চোখ থেকে টুপ করে পরলো এক ফোঁটা অশ্রু। লোকটার জাত যেন এগিয়ে আসছিলো আমার কোমড় বরাবর। আর দু ইঞ্চি দূরত্ব যেন। আমি কম্পমান দেহ নিয়ে ডুকরে কেঁদে উঠলাম স্মরণের বুকে মুখ রেখে।

তৎক্ষনাৎ কানে বাজলো বিকট শব্দ। যেন খুব নিকট হতে। অতঃপর একটা চিৎকার। মুখ তুলতেই দৃষ্টিতে বাঁধা পরলো স্মরণের রক্তচক্ষু। অতঃপর পেছনে ঘুরতেই ব্যাথাতুর কন্ঠে কুঁকড়ে যাওয়া একটা লোক। হাত তার ছিদ্র। এপাশ থেকে বেগবান কিছু হাতে লেগে বেরিয়ে গেছে ওপাশ দিয়ে।

আমার পর্যবেক্ষণ কালে স্মরণ আচমকা টেনে নামালো আামকে গাড়ি থেকে। গাড়ি থেকে বের হতেই এপাশে ঢালু পথ। জঙ্গলের রাস্তা। নামতে লাগলো সে। একহাতে আমাকে আগলে রাখে অপর হাতে রিভলভর তাক করে। ওপরে থাকা সকালের দৃষ্টি ও রিভলভর আমাদের দিকে তাক করা। স্মরণ ওদের উদ্দেশ্যে বলে উঠলো

— কানে মাইক্রোফোন আছে। একপাও যদি এগোনো হয় তাহলে শুধু একটা ক্লিক করলো। আমার পার্সোনাল অফিসে চলে যাবে। তারপর একটা ফাইল শুধু সব পুলিশ স্টেশন আর সব ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্টে। দেন… তোমাদের….
নির্ভয় কন্ঠস্বর। দক্ষ ভাবে পিছু হাঁটার মাঝে ওটুকু বাঁকেই সে স্তব্ধ। ওরা একে অপরের মুখ দর্শনে ব্যস্ত হলো। স্মরণ আরো কিছু ভয়যুক্ত বাণী ছুড়তে ছুড়তে বহুদূর পর্যন্ত চলে এলো। এখন কেবল কুয়াশাচ্ছন্ন অস্পষ্ট প্রতিচ্ছবি ভাসে। স্মরণ এবার পিছু ফিরে আমার হাত শক্ত করে ধরে বলল

— লেট’স গো কুইন।
ক্ষীণালোকের সাথে আঁধার মিশে একাকার পরিবেশে আমি প্রায় দৌড়াতে লাগলাম স্মরণের সঙ্গে। কুইন শব্দটা ঠিক যেন আমার বুকে এসে লেগেছে। তার চোখে মুখে আনন্দের চিহ্ন। যেন কিছু একটা জয়ের উল্লাস। আমি কুইন শব্দের বিমোহিত রেশ কাটিয়ে বেশ কিছুসময় দৌড়ানোর পর তাকে থমকে আসা গলায় শুধালাম

— আপনি কোথায় ক্লিক করার কথা বলছিলেন? আপনার সাথে কি কেউ কন্টাক্টে ছিলো?
স্মরণ হাসলো। দ্রুত হাঁটার গতি মন্থর হলো। কুয়াশার বুক চিড়ে আমায় নিয়ে এগিয়ে যেতে যেতে বলল
— উঁহু! ভয় দেখিয়েছি বোকাগুলোকে।
— আর ছোঁয়া কে ওরা কিডন্যাপ করতে পারে এই ইনফরমেশন কোথায় পেলেন?
— আমারও লোক আছে ওদের ওখানে। ওদের কাজের লোককে টাকা দিয়ে রেখেছি।
আমি কিছুটা অবাক হলাম। কিছুটা পথ তার তীক্ষ বুদ্ধির প্রসংশা করলাম মনে মনে। তারপরই হাঁপিয়ে যাওয়া দেহ মন নিয়ে শুধালাম

— মাগরিবের আজান দিচ্ছে। আমরা এখন কোথায় যাবো? ওভাবে যে গাড়ি থেকে চলে এলাম এখন কি হবে?
স্মরণ হন্টন দশা স্থির রেখে ভাবলো কিছু সময়। অনন্তর আমার দিকে তাকিয়ে বলল
— তুমি তো অসুস্থ। খারাপ লাগছে?
আমি উত্তর রেডিমেড ছিলো না। তৈরি করছিলাম মনে মনে। ইতিপূর্বেই স্মরণ আমার হৃৎস্পন্দন থমকে দিয়ে আমাকে পাঁজা কোলে তুলল। আমি হতবুদ্ধি হয়ে গেলাম। কিছু সময়ের জন্য আমাকে মৃত মানুষের সাথে তুলনা করলেও ভুল হবে না।

— সামনের কোনো বাড়ি পেলে ওখানকার আত্মীয় হবো আজ। চলো। ততক্ষণে এভাবেই থাকো।
উঁচু নিচু পথের মাঝে হাঁটতে গিয়ে সে বারংবারই ঢুলে ঢুলে পরতে যায়। না চাইতেই আামার জড়িয়ে ধরতে হলো তার গলা। লজ্জায় মর মর দশা দিয়ে ফিচেল কন্ঠে বললাম
— আমি কিন্তু ঠিকই ছিলাম।
স্মরণ আঁধারের মাঝে হাঁটতে হাটতে বলল

— লতা ছুঁয়ে দিলে তোমার ভুত মনে হয়। আর আমি ছুলে তোমার ঠিক কি মনেহয় আমাকে খেয়া? বলোতো?
অপ্রত্যাশিত মুহূর্ত। আমার মন উশখুশ করে উঠলো। জবাবের আশায় স্মরণ যেন অপেক্ষায় রইলো না। ক্ষণিক পরেই কিছুটা ধমকের সুরে বলে উঠলো

— হাতে ফোন থাকলে ফ্লাশ জ্বালাও। পরে যাবো তো। এতো ভারি লাগে কেন?
আমি ফোনের ফ্লাশ জ্বালালাম ব্যস্ত ভঙ্গিতে। সামনের আঁধার কাটলাম তার বুকের সঙ্গে লেপ্টে থেকে। মুহূর্তেই পরিবেশটা মোহনীয় হয়ে উঠলো। আমার পা দোলাতে ইচ্ছে হলো। স্মরণের বুকে মাথা রেখে তার হৃদস্পন্দন শোনার সাদ জাগলো। সঙ্গে রাখতে ইচ্ছে হলো পেটে বসে রাজত্ব করা তাকে। বলতে ইচ্ছে হলো
” শুনে দেখ তো, তোর বাবার বুক কার জন্য ধুকপুক করছে? সেখানে কি আমি আছি? নাকি কেবল তোর বড় মা বিরাজ করছে!”

— লোকটার হাতে আচমকা গুলি করলেন কেন?
নিগূঢ় নীরবতা। স্মরণ পার হচ্ছিলো এক গাছের বাগান। পা ফেলতেই আধো ভেজা, আধো শুষ্ক পাতা মলিন সুর বোনে। আমি স্মরণের বুকে অতি হালকা করে মাথা ঠেস দিয়ে রেখে প্রশ্ন করলাম। স্মরণের জবাব হলো ক্ষিপ্ত কন্ঠে
— ও মালিকের সামনে কোহিনূর চুরি করতে চেয়েছিল।

শেষ বিকেলে তুমি আমি সিজন ২ পর্ব ১৫

কন্ঠটা রূঢ় হলেও আমার কাছে তা মধু হয়ে ধরা দিলো। বুকের মাঝে জাগ্রত করলো ভালোলাগা। আবেশিত হলো মন। তবে ক্ষণিক পরেই আবার আমার সম্মুখে উপস্থিত হলো একটা প্রশ্ন
” মালিক কি পুরোনো কোহিনূর পেয়ে ভুলে যাবে নতুন কোহিনূরের কথা?”

শেষ বিকেলে তুমি আমি সিজন ২ পর্ব ১৭