সবটাই তুমিময় পর্ব ৩০ || লেখনিতে – মিথিলা মাশরেকা

সবটাই তুমিময় পর্ব ৩০ 
লেখনিতে – মিথিলা মাশরেকা

-তোর বাবা তোর দাদুর অনুমতি ছাড়া বিয়ে করেছিলো বলে এতোগুলো বছর এতো রাগ ছিলো তার।এখন তোর বিয়েটাও তার অনুপস্থিতে হয়ে গেছে জানলে সে কতোটা রাগ করবে তার আন্দাজ করতে পারছিলাম।তাই তোর আর অঙ্কুরের বিয়ের ব্যাপারে ওদেরকে কিছু জানানোর সাহস হয়নি আমার আন্নু।আ’ম…আ’ম সরি।

ভুল বলেনি মনিমা।ঠিকই তো!বাবার‌ বিয়ে নিয়ে দাদুর রাগ ছিলো।সবেমাত্র তাদের কাছে পেলাম।এই চুক্তির বিয়ে,যা দুদিন পর ভেঙেই যাবে,এই বিয়েটা নিয়ে তাদের সাথে কোনো মনোমালিন্য চাইনা আমি।মনিমা আমার কাধ ধরে বললো,
-কিন্তু সত্যিটা তো সত্যিই আন্নু!ওনাদের তো জানাতে হবে!আমি অঙ্কুরকে ফোনে কিছুটা বলেছিলাম,তাই হয়তো ও চুপ আছে।তুই আগে ওকে বুঝিয়ে,তারপর দুজনে মিলে ভালোভাবে তোর দাদুকে বলে দে।তোরা বুঝিয়ে বললে সে ঠিক বুঝবে।
মাথা উপরেনিচে নাড়লাম।মনিমা কফির মগ আমার হাতে দিয়ে বললো,

-অঙ্কুরের সাথে কথা বলে দেখ ও কি বলে।এদিকটা আমি সামলাচ্ছি।
কথা তো বলতেই হবে।তবে বিয়ে সম্পর্কে দাদুদের জানানোর বিষয়ে না,বিয়েটা ভাঙার সম্পর্কে তোমাকে জানানোর বিষয়ে।কফিমগ নিয়ে রুমে ঢুকলাম।অঙ্কুর ব্যাগ থেকে ল্যাপটপ নামাচ্ছেন।মগটা টেবিলে রেখে মাথা নিচু করে বললাম,
-আপনার কফি।
উনি একপলক তাকিয়ে ব্যাগ থেকে আরো জামাকাপড় নামানোতে মনোযোগ দিলেন।দু পা এগিয়ে বললাম,
-এসব এখানে কেনো নামাচ্ছেন?
-এটা আমার ঘর সেটা জানেন?
-আপনার মনিমার কাছে থাকার হলে এসব নিয়ে মনিমার ঘরে চলে যান।এখানে কেনো….
উনি নিজের কাজে ব্যস্ত থেকেই বললেন,

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

-বলেছি না?আমাকে প্রশ্ন করার অধিকার নেই তোমার।সাজেশন দেওয়ারও অধিকার দেইনি তোমাকে।
-বিষয়টা অধিকারের না,সাজেশনেরও না।বিষয়টা আপনাকে আপনার সীমা মনে করিয়ে দেওয়া।মনিমা বলেছে তো আপনাকে,বিয়ে নিয়ে দাদুরা কিছু জানে না।এখন আপনি আমার ঘরে ভুল করেই ঢুকুন,বা জেনেবুঝে,এ ঘরে থাকাটা আপনাকে মানায় না।ওরা গ্রা‌ম থেকে এসেছে।আপনার এ ঘরে থাকাটা নিয়ে আকাশকুসুম ভাবতেই পারে।
-হু কেয়ারস্?কে কি জানলো কি জানলো না তা এএসএ কেনো ভাববে?

-আই কেয়ার!তাদের জানা,মানা,বোঝা এগুলোই আমার কাছে মানে রাখে এখন।তারাই এখন আমার সব।কোনোভাবে,কোনোকিছুর বিনিময়ে তাদের হারাতে পারবো না আমি।আর এই মিথ্যে বিয়ের জন্য তো একদমই না!সো,ভালো এতেই,তারা সবটা যেমন জানে তেমনই জানুক।আর তেমনটাই ঘটুক!
উনি থেমে ভ্রুকুচকে তাকালেন আমার দিকে।বললেন,

-মানে?
-মানে এই চুক্তির বর বউ খেলা সম্পর্কে তাদের জানানোর কোনো প্রয়োজন নেই।বরং মনিমাই জানুক বিয়েটা কিভাবে,কেনো হয়েছিলো।আর তারপর সিম্পলি ডিভ্….
মুহুর্তের মধ্যে ঠিক কি হয়ে গেলো,কিংকর্তব্যবিমুঢ় হয়ে গেলাম আমি।একপ্রকার ছুটে এসে দুহাত পিছনে মুড়িয়ে ধরে,আমাকে নিজের সাথে মিশিয়ে নিয়েছেন অঙ্কুর।বিস্ময়ে তারদিকে তাকিয়ে আমি।এতো রাগের তো কিছুই বলি নি।কিন্তু তার চেহারায় রাগ স্পষ্ট বুঝতে পারছি।অঙ্কুর রাগ নিয়ে বললেন,
-কি বলতে চাও তুমি?

-আমি চাই এই চুক্তির বিয়ে সম্পর্কে দাদুরা কিছু না জানুক আর মনিমা সবটা জানুক!
-তোমার কোনো ধারনা আছে মা এসব শুনলে কি হবে?
-কতোদিন লুকোবেন?বিয়েটা তো দু বছরের,আমার সেইফটির কথা ভেবে করেছিলেন।এখন প্রদীপ সরকার জেলে।আই অ্যাম সেইফ নাও!আপনার বাসায় তো আর ফিরছি না আমি।তো সে দুবছর অবধি ভাববো কেনো?আপনিও তো ভাববেন না।তো তাকে তো বলতে হবে,আপনার আমার সম্পর্কটা ঠিক কেমন তাইনা?
অঙ্কুর আরো শক্তিতে নিজের সাথে আটকে ধরলেন আমাকে।মাঝে একচুল দুরুত্বও নেই আর।রাগে কপালের রগ ফুটে উঠেছে তার।দাতে দাত চেপে বললেন,

-জমিদারমশাইকে আসতে দেখে‌ তোমার মুখে বেশি বুলি ফুটেছে বলে মনে হচ্ছে?
-কথাগুলো ভুল বলিনি তো!তাছাড়া দাদু আসলেই কি,না আসলেই বা কি!আপনি জানেন অদ্রি সত্যি বলতে ভয় পায় না!আমারই ভুল ছিলো নিজেকে দোষী ভাবা।দোষটা তো আপনারও কম না!
-হাউ ডেয়ার ইউ?
-আমাকে ছাড়ুন!দরজা খোলা।কেউ দেখে নিলে…ছাড়ুন!
অঙ্কুর এবার ঠেলে কাবার্ডে আটকে দিলেন আমাকে।নড়াচড়া করে নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করতে লাগলাম।পারিনি।হাতে ব্যথাও পাচ্ছি।কটমটে চোখে তাকিয়ে বললাম,

-ছাড়তে বলেছি আপনাকে!
-ছাড়বো না!
ওনার সোজা জবাবে আর কিছুই বলার পেলাম না।নিজের মতো করে গায়ের জোর খাটাতে লাগলাম।উনি বললেন,
-এতো চালাক রিপোর্টার হয়েও আমার মতো সামান্য স্পোর্টম্যানের সাথে বুদ্ধির জোরেই পারলে না পর্বতশৃঙ্গ!গায়ের জোরে পারবে এমনটা ধারনা করাও ভুল।লিভ ইট!
-ছাড়ুন আমাকে!
-ইউ কান্ট অর্ডার মি!

উনি‌ চেচিয়ে বললেন কথাটা।একটু কেপে উঠলাম।কিছুক্ষন শান্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে অঙ্কুর গলা নামিয়ে বললেন,
-আমার এতোটা কাছে থেকেও তোমার এই চোখ তুলে তাকানো,এই কড়া গলায় কথা বলা,এসব সহ্য হয়না আমার অদ্রি।কন্ট্রোল‌ দেম!অর আ’ইল লুজ মাই কন্ট্রোল অভার মি!
-কি বলতে কি চাইছেন আপনি?

অঙ্কুর ঝুকলেন অনেকটাই।চোখ খিচে বন্ধ করে অন্যদিক ফিরলাম।ওনার উষ্ণ শ্বাস গলায় লাগছে আমার।দম আটকে আসছে।আচমকাই হৃদপিন্ডটা যেনো লাফাতে শুরু করেছে।উনি ফিসফিসিয়ে বললেন,
-কিছু না।তবে এগুলোকে খুব বেশিদিন চলতে দেবো না অদ্রি।কেড়ে নেবো তোমার এই মাত্রাতিরিক্ত সাহস।সাহসের স টাও অবশিষ্ট রাখবো না তোমার।চোখ নামিয়ে নুইয়ে‌ যেতে হবে তোমাকে।বাধ্য হবে তুমি।জাস্ট লাইক দিস ওয়ে।দেখে নিও!
উনি ছেড়ে দিলেন আমাকে।এতোক্ষনে শ্বাস নিলাম আমি।বুকে হাত দিয়ে জোরেজোরে শ্বাস ফেলছি।অস্থির লাগছে।অঙ্কুরের দিকে তাকাতেই তার টেডিস্মাইল।একহাতে লাগেজ টেনে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন উনি।গলা উচিয়ে বললাম,
-খালি হাতে কফিমগটাও নিয়ে যান?আপনার জন্য বারবার এ ঘর ও ঘর করতে পারবো না!

উনি থামলেন।পেছন ফিরে বললেন,
-করতে হবে না।আমি আর মা কালই বাসায় ফিরছি।
একদন্ড না দাড়িয়ে অঙ্কুর বেরিয়ে গেলেন রুম থেকে।পাথর হয়ে কিছুক্ষন দাড়িয়ে থেকে ধপ করে মেঝেতে বসে পরলাম।পানি গরাতে লাগলো চোখ দিয়ে।অনেকগুলো কড়া কথা শুনিয়েছি তাকে।কিন্তু সেও তো আমাকে কঠোরতাই ফেরত দিয়েছে।উনি নিশ্চিত,বিয়েটা ভেঙে দেবেন।সবটা জানলে মনিমা কি বলবে?আমার কি হবে?আমি কি করে থাকবো?মনিমাকে ছাড়া।অঙ্কুরকে ছাড়া!

ডিনার শেষে মনিমার সাথে আমার ঘরে‌ নিচে বিছানা করে শুয়েছি।বেডে দাদীমা,নানীমা।ওরা অনেক আগেই ঘুমিয়ে গেছে।অঙ্কুর আর দাদু মনিমার ঘরে ঘুমিয়েছেন।মনিমা শুয়ে শুয়ে আমার চুলে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।তাকে জরিয়ে ধরে শুয়ে আছি।এই কপালটাও শুধু আজ রাতের জন্য।বুক ভারি হয়ে আছে।হয়তো কাল থেকে মনিমার সামনে যাওয়ারও অনুমতি থাকবে না আমার।কিভাবে থাকবো তাকে ছাড়া?কিভাবে এই চুক্তির বিয়ের সত্যিটা তাকে বলবেন অঙ্কুর?কিভাবে সেই বা মেনে নেবে সবটা?মনিমা আমার কপালে চুমো দিয়ে বললো,

-জায়গাটা কেমন ছিলো আন্নু?তোরা দুজনে ঘুরেছিস তো?নাকি অঙ্কুর শুধু প্র্যাকটিস নিয়েই ছিলো?
-সবটা ভালো ছিলো মনিমা।
-তোর দাদুকে বলার বিষয়ে অঙ্কুর কি বললো রে?
-উনি বলেছেন সময় হলেই বলবেন।
-জানিস তো,আমি তো স্পষ্ট দেখেতে পাচ্ছি,অঙ্কুর তোর দাদুকে তোদের বিয়ের কথা বলেছে,আর তোর দাদু লাঠি নিয়ে ধাওয়া করতে শুরু করেছে ওকে।এতো তাড়াতাড়ি নাতনির কাছছাড়া হয়ে যাবে সে রাগে!
মনিমা হাসলো।তারপর আবার বললো,

-আমিও তোকে ছাড়া থাকতে পারতাম না আন্নু।কষ্ট হতো।উপর ওয়ালাও দেখ চায়না,আমি আর কষ্ট পাই।তাইতো অঙ্কুরের সাথেই তোর বিয়েটা হয়েছে বল?
চুপ থেকে আরো শক্ত করে জরিয়ে ধরলাম মনিমাকে।মনিমা বললো,
-ভয় পাস না!লক্ষ্মী মেয়ে আমার!তোর দাদু ঠিক বিয়েটা মেনে নেবে দেখিস।একদম চিন্তা করিস না।
টুপ করে চোখের জল বেরিয়ে এলো।মুছে নিলাম।মনিমা আবারো কপালে চুমো দিয়ে বললো,
-এখন ঘুমিয়ে পর।অনেক রাত হয়েছে।

অনেকটা সময় পর হাত থেমে গেলো মনিমার।ঘুমিয়ে পরেছে।উঠে বসে তাকিয়ে রইলাম তারদিকে।এই মানুষটা নিজের সব ছেড়ে আমাকে বড় করলো,এতো ভালোবাসা দিলো।কখনো বুঝতেও দেয়নি তার মনে কতো কষ্ট।আজ যখন সেগুলোও পুষিয়ে যাচ্ছে,আমাকেই এখন তার জীবন থেকে আলাদা হয়ে যেতে হবে।রাত কতো গরিয়েছে হিসেব নেই।বাইরে থেকে দুবার ঠুসঠাস আওয়াজ এলো।দাদু বয়স্ক লোক,তার কিছু লাগতে পারে ভেবে আস্তেধীরে বেরিয়ে আসলাম রুম থেকে।কিন্তু রুমের বাইরে এসে দেখি অঙ্কুর অন্ধকারেই একহাতে কপাল চেপে ধরে ড্রয়িংরুমের মিনি কাবার্ডের ড্রয়ার টানাটানি করছেন।এগিয়ে গিয়ে বললাম,

-মাঝরাতে এরকম শব্দ করছেন কেনো?বাসায় তিনজন বয়স্ক মানুষ আছে।ঘুমোচ্ছে তারা।এভাবে শব্দ করলে জেগে যেতে পারে,মনে হলো না একবারও?
অঙ্কুর থামলেন।আমার দিক ফিরে বললেন,
-মাথাব্যথার ওষুধ কোথায়?
-প্রায়ই বলেন মাথাব্যথা হয়।ভালো ডক্টর দেখান না কেনো?
-তোমার তাতে কিছু যায় আসে?

-অকারনে মাথাব্যথা হয় না আমার।
উনি আবারও ড্রয়ারে খোজাখুজি শুরু করলেন।কথা না বাড়িয়ে ওষুধের বক্স আনতে গেলাম।ওটা মনিমার ঘরে।গিয়ে দেখি দাদু চরম আওয়াজে নাক ডেকে ঘুমোচ্ছে।পুরো বিছানা,ঘর কেপেকেপে উঠছে যেনো।ভুল বলেন নি অঙ্কুর।এই শব্দে দুমিনিট বসলে আমার মাথা ফেটেই যাবে।বক্স খুলে দেখি মাথাব্যথার ওষুধ নেই!গুটিগুটি পায়ে আবারো ড্রয়িংয়ে ঢুকলাম।অঙ্কুর তীব্র বিরক্তি নিয়ে বললেন,
-ওই বক্স চেক করেছি আমি।অন্যকোথাও নেই?
-না।

উনি কপাল ধরেই সোফায় বসে পরলেন।একটা শুকনো ঢোক গিলে বললাম,
-এ্ এতো রাতে কফি খেলে ঘুম হবে না আপনার।
-ডোন্ট গিভ দিস লেইম এক্সকিউজ!কিচেনে যাবে না সেটা বলো।কফি খেলে ঘুম হবে না আপনার!
আমাকে ভেঙচিয়ে কথাটা বললেন উনি।কপাল কুচকে তাকিয়ে রইলাম।উনি বিরক্তি নিয়েই বললেন,
-যাও ঘুমিয়ে পরো!আমি ড্রয়িংয়ে সোফাতেই অন্তত শান্তিমতো ঘুমাই?যাও!
কুশন মাথার নিচে দিয়ে বড় সোফাটায়‌ গুটিয়ে শুয়ে পরলেন উনি।এপাশ ওপাশ করছিলেন।চোখের উপর হাতের পিঠ রেখে বলে উঠলেন,
-যাচ্ছো না কেনো?

সবটাই তুমিময় পর্ব ২৯

চুপচাপ সামনে থেকে সরে ওনার পিছন দিকটায় দাড়ালাম।উনি তখনো উশখুশ করছেন।এগিয়ে গিয়ে আস্তেধীরে মেঝেতে তার সামনে বসে পরলাম।কপালের উপর থেকে হাতটা নামাতেই চোখ খুলে ফেললেন উনি।ধীর গলায় বললাম,
-আপনি‌ ঘুমোন,আ্ আমি হাত বুলিয়ে…
-আবারো নাটক?
চোখ ভরে উঠলো আমার।উনি চোখ বন্ধ করে বললেন,

-মজা করেছি।জানি এখন নাটক করে আর হাসিল করার কিছু নেই তোমার।যাই হোক,নিজে থেকে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছো!একরাতের জন্য পতিব্রতা হয়ে গেলে নাকি?
এটুক থেকে আমাকে বঞ্চিত নাই বা করলেন অঙ্কুর।একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে আনমনে বলে দিলাম,
-একরাতের জন্যই তো!শেষবারের মতো!
ধ্যান ভাঙতেই অঙ্কুরের ঠোটের মুচকি হাসিটা চোখে পরলো।চোখ নামিয়ে নিলাম।আমার দিকে পাশ ফিরে দুহাত মাথার নিচে গুজে শুয়ে পরলেন উনি।একদম বাচ্চাদের মতো।চুপচাপ তার মাথায় হাত বুলিয়ে খুতিয়ে খুতিয়ে দেখতে লাগলাম তাকে।তার কথা জানিনা,তবে আমার বড্ড শান্তি লাগছিলো।

সবটাই তুমিময় পর্ব ৩১