সবটাই তুমিময় পর্ব ৩ || লেখনিতে – মিথিলা মাশরেকা

সবটাই তুমিময় পর্ব ৩
লেখনিতে – মিথিলা মাশরেকা

সকালে নিজেকে বিছানায় দেখে আতকে উঠলাম।ধরফরিয়ে উঠে বসে নিজেকে খুতিয়ে‌ খুতিয়ে পর্যবেক্ষন করলাম কিছুক্ষন।না!সবই ঠিক আছে।শ্বাস নিলাম একটা।কিন্তু রাগটা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে ভুললো না।ভোরের আলো চোখে পরায় ঘুম ভেঙেছে।রুমের যে কোনাটায় পরে থেকেছি এ দুদিন,সে বরাবরই একটা জানালা।কিন্তু আমি সেখানে নেই।রাতে ওখানে বসেই কাদতে কাদতে চোখ লেগে গিয়েছে কখন টেরটিও পাইনি।কিন্তু আগের সকালদুটোর মতো মেঝেতে নয়,আজ সকালে বিছানায় আবিষ্কার করেছি নিজেকে।আর আলোটা জানালা দিয়ে বিছানাতেও আসে।যদিও রাতে পর্দা টেনে দেই আমি,আজ কেউ ইচ্ছে করেই সেগুলো সরিয়ে দিয়ে গিয়েছে।উঠে নেমে ওয়াশরুমে চোখেমুখে পানির ছিটে দিলাম।এসে আবারো সেই কোনটাতেই‌ হাটু জরিয়ে বসে পরলাম।

জানালার বাইরে দিয়ে তাকালে নিচের বাগানে ফোটা নানারঙের ফুল চোখে পরে।একটারও নাম জানি কি না সন্দেহ।বাগানের সাদা চারপাশে দেয়াল।দেওয়ালের উপরে কাচের টুকরো বসানো।যতোদুর চোখ যায়,অনেকটা দুরে একটা দ্বিতল ভবন আর গাছ ছাড়া এই জানালায় আর কিছুই চোখে পরে না।তাই মুক্ত আকাশে মুক্ত সাদা মেঘের ভেলা দেখাতেই চোখকে মানিয়েছি আমি।কিন্তু মন বিষিয়ে উঠেছে আমার।কেউ বিছানায় এনেছে আমাকে।আর কেউই নয়,এ কাজ এএসএ’রই।উনিই স্পর্শ করেছেন আমাকে।রাগে কাপতে শুরু করেছি।তবুও শক্ত হয়ে বসে রইলাম।

দরজা খোলার শব্দ কানে আসলো।এতোটুকো না নড়ে ওভাবেই বাইরে তাকিয়ে রইলাম।আর কোনো সাড়াশব্দ নেই।অন্যান্যদিন খাবার দিয়ে লোকগুলো নতমস্তকে বলে যায়,ম্যাম আপনার খাবার।আজকে কিছু বললো না কেনো?প্রশ্নের উত্তর খুজতে ঘাড় ঘুড়িয়ে দরজায় তাকালাম।কেউ নেই!খাবারও নেই!দরজাটাও খোলা!বিস্ময়,আগ্রহ দুটোই হলো আমার।চশমা ঠেলে উকিঝুকি দিয়ে দেখতে লাগলাম।না।সত্যিই কেউ নেই দরজায়।চোখ চকচক করে উঠলো আমার।একছুটে বেরিয়ে এলাম ঘরটা থেকে।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

রুমের বাইরে করিডরে দাড়াতেই তব্দা মেরে গেলাম আমি।এতোবড় কোনো বাড়িতে এর আগে কোনোদিন ঢুকেছি বলে মনে পরে না।বেরোনোর রাস্তা খুজতে গিয়ে বাড়িটার সাজসজ্জা দেখে আটকে রইলাম কিছুক্ষন।দেয়ালে থাকা পেইন্টিং,শো পিস,ফুলদানী সবকিছু অনেক শৌখিনভাবে সাজানো।অফহোয়াইট দেয়ালগুলো আর সাদা পর্দার জন্য আরো ঝলমল করছে সবকিছু যেনো।করিডর ছেড়ে গুটিগুটি পায়ে সিড়ি দিয়ে নিচে নামার জন্য পা বাড়াতেই কেউ একজন বলে উঠলেন,
-অঙ্কুর তোমাকে একদম ফ্রেশ হয়ে‌ নিচে নামতে বলেছে!
থেমে গেলাম।পাশেই ইন করা সাদা শার্ট,কালো প্যান্ট পরে এক ভদ্রলোক দাড়িয়ে।তাকে দেখে ভদ্র বলেই মনে হলো।বললাম,

-ভ্ ভাইয়া,আ্ আমাকে প্লিজ….
-আমি রোহান।অঙ্কুরের ফ্রেন্ড।আর…
-দেখুন ভাইয়া,আমাকে প্লিজ বাইরে যাওয়ার….
-তোমার তো বাইরে যাওয়ার অনুমতি নেই!
-ভাইয়া প্লিজ!পায়ে পরছি আপনার!মিস্টার অঙ্কুর আসার আগেই আমাকে প্লিজ এ্…..
-দেখো,অঙ্কুর তো বাসাতেই আছে।আর আম্….
এতো কথা বলা শোনার সময় নেই আমার।পা বাড়ালাম নিচে নামবো বলে।কিন্তু পেছন থেকে কেউ হাত ধরে ফেললো আমার।চমকে উঠে পিছন ফিরলাম খানিকটা ভয় নিয়েই।কিন্তু এএসএ কে দেখে ধপ করে গায়ে আগুন ধরে গেলো আমার।গেন্জি আর থ্রি কোয়াটার প্যান্ট পরে দাড়িয়ে উনি।চুলগুলো উসকো খুসকো।হাত ঝাড়া মেরে ছাড়িয়ে নিয়ে চেচিয়ে বললাম,

-হাউ ডেয়ার ইউ টু টাচ মি!
একটু কপাল কুচকালেন উনি।পরপরই ঠোট উল্টে বললেন,
-ভেবেছিলাম রুমের বাইরে বেরোতে‌ দিয়েছি বলে মিষ্টি স্বরে আমাকে গুড মর্নিং বলবেন মিস অদ্রি!কিন্তু এটা কি ছিলো?
উত্তর দেওয়ার প্রয়োজনবোধ করিনি।সিড়ি দিয়ে নেমে আসতে যাবো,উনি আবারো আমার হাত ধরলেন।দ্বিতীয়বার হাত ঝাড়া মারলাম।কিন্তু ছাড়াতে পারলাম না।বললাম,
-কি শুরু করেছেন টা কি?আমাকে কাল রাতেও আপনি স্পর্শ করেছেন।মেঝে থেকে বিছানায় এনে শুইয়ে দিয়েছেন।এখনও এভাবে হাত….হাত ছাড়ুন!
উনি ভ্রুকুচকে বললেন,

-আপনি জানেন আপনাকে আমি….
-আপনার কি ধারনা?এটা বুঝতে কয়েকজন্ম লেগে যাওয়া উচিত ছিলো আমার?বিছানায় তো ঘুমোই নি আমি।কেউ রাতে আমাকে ঘুমন্ত অবস্থাতেই বিছানায় এনেছে।আর সেটা আপনি ছাড়া আর কেই বা করবে?এটা বলুন কাল খাবারে কি মিশিয়েছিলেন?আমি শিওর ওই খাবারে কিছু ছিলো।নইলে কেউ কোলে তুলে নেবে আমাকে,বা কারো স্পর্শ টের পাবো না এতোটা ঘুম ঘুমাই না আমি।বলুন খাবারে কি ছিলো?
-বেএএএশ চালাক আপনি!

ঘাড় বাকিয়ে কথাটা বলে উনি একপলক রোহান ভাইয়ার দিকে তাকালেন।উনি চুপচাপ চলে গেলেন।কিন্তু অঙ্কুর এখনও হাত ছাড়েন নি আমার।দাতে দাত চেপে বললাম,
-আপনি বলেছিলেন জোর করবেন না আমাকে!
অঙ্কুর হাত ছেড়ে দিলেন।পা বাড়াতে যাবো,একদম সামনে এসে পথ আগলে দাড়িয়ে বললেন,
-আপনি চান না আমি স্পর্শ করি আপনাকে রাইট মিস অদ্রি?

-কতোভাবে বললে বুঝবেন আপনি?
উনি এগোতে লাগলেন আমার দিকে।পিছিয়ে গেলাম কয়েকপা।তবুও‌ এক জায়গায় দাড়িয়ে কড়াভাবে বললাম,
-কি করছেন আপনি?এভাবে…যেতে দিন আমাকে!
উনি এগোতে এগোতে বললেন,
-সকাল সকাল এই যেতে দিন,ছেড়ে দিন,বাসায় যাবো বলে বলে ডোন্ট ট্রাই টু স্পয়েল মাই ডে!এগোচ্ছি আপনাকে স্পর্শ করবো বলে।যদি আমার স্পর্শ না চান,পেছোতে থাকুন!
এতো স্পষ্ট কথা আর তার এগোনোটা দেখে সত্যিই‌ পেছোতে লাগলাম আমি।পেছনেও তাকাইনি আর।বুঝতে পারলাম,উনি আবারো ঘরবন্দি করতে চাইছেন আমাকে।শান্তভাবে বললাম,
-দেখুন মিস্টার অঙ্কুর,আমি পালাবো না কোথাও।প্লিজ রুমে আটকে‌ দেবেন না আমাকে।দম বন্ধ লাগে আমার।
-আগেই‌ বুঝেছি,আর ঠিকই বুঝেছি।অনেকটা চালাক আপনি!যাকে বলে ভেরি মাচ ইন্টেলিজেন্ট!
-এগোচ্ছেন কেনো আপনি?

কোনো উত্তর নেই তার।এগোচ্ছেনই উনি।পেছন ফিরলাম।দুটো রুমের দরজা লক।কোনটা থেকে আমি বেরিয়েছি মাথায় আসছে না।কিন্তু এই লোকটাকে বিশ্বাস নেই আমার একবিন্দুও।একটার দরজা খুলে ঢুকে পরলাম।ভেতরে না তাকিয়ে দরজা লাগাতে যাবো,অঙ্কুর থাবা মেরে দরজা থামিয়ে দিলেন।বাইরে থেকেই বাকা হেসে বললেন,
-এটা আমার রুম!

চোখ বড়বড় হয়ে গেলো আমার।বেরিয়ে আসতে যাবো,উনি পথ আগলে দাড়ালেন।একপা এগিয়েছেনও।রুমের বাইরে যাওয়ার পরিবর্তে পিছিয়ে আরো ভেতরে ঢুকে পরলাম।অঙ্কুর নিজেও ভেতরে ঢুকে দুম করে দরজা লাগিয়ে দিলেন।চারপাশে তাকালাম।বেশ বড়সর রুম।হালকা নীল ওয়ালপেইন্ট করা।একপাশে ব্যালকনি।রুম আর তার মাঝে দেয়ালের পরিবর্তে থাইগ্লাস।ব্যালকনিটাও রুমেরই সমান।কয়েকটা গাছ দেখা যায়।তবে ফুলগাছ নয় ওগুলো।শুধু সবুজ রঙের সমাহার সেখানে।বেডের পেছনের দিকটার দেয়ালে পুরোটা জুড়ে এএসএ’র বিশাল পেইন্ট করানো।পুরোপুরি জীবন্ত মনে হচ্ছে ওটা।পেইন্টিংটাতে উনি ব্যাটিংয়ের সুট পরে এমন একটা ভাবে আছেন যেনো সবে সিক্সার লাগিয়ে সেই বলের দিকেই তাকিয়ে আছেন।

-উহুম উহুম!
-যেতে দিন আমাকে!
-আবারো সেই কথা?যাই হোক,পুরো রুম দেখলেন,যেটা দেখা উচিত ছিলো সেটাই দেখলেন না।বিছানায় পরে থাকা ড্রেসগুলো দেখুন তো!
বিছানায় তাকালাম।চারপাঁচটে গোলজামা,ম্যাচড্ চুড়িদার,ওড়না।তিনটে কুর্তি,জিন্স।অবাক হয়েছি বেশ অনেকটা।অঙ্কুর বললেন,
-আপনি তো এগুলো পরেই কম্ফোর্টেবল তাইনা?
-এসব এখানে কেনো?
উনি দরজা ছেড়ে বেডের দিকে এগোতে এগোতে বললেন,

-কালই এনেছি।এখন আপনি হ্যাঁ বলতে এতো সময় নিচ্ছেন।আর কতোদিন লাগাবেন কে জানে!আপনার তো এসব লাগবেই তাহলে।তাই….কেনাকাটার হাত বড্ড কাচা আমার।তারউপর লেডিস পোশাক আশাক!ক্রিকেট ম্যাচ আর কি?এগুলো কিনতেই বোধহয় ওভাবে ঘাম বেরিয়ে গিয়েছিলো।দেখুন তো ঠিকমতো…
দরজা খুলে বেরিয়ে এসেছি রুম থেকে।লক করে দিয়েছি রুমটা।কিন্তু বাইরেই ওই রোহান ভাইয়া দাড়িয়ে।বললাম,
-ভাইয়া আমাকে….
কথা‌ শেষ হওয়ার আগেই দরজা খুলে বেরিয়ে এলেন অঙ্কুর।তার হাতে একটা জামা।দরজাতেই হেলান দিয়ে দাড়িয়ে বিরক্তি নিয়ে বললেন,

-আপনাকে চালাক ভেবেছিলাম।আমার রুমে আমাকেই লক করে দিলেন?আর আপনি কি ভাবছেন?এভাবে চড়ুইয়ের মতো লাফালাফি করলেই এ বাসা থেকে বেরোতে পারবেন?
চুপ রইলাম।এই বাসায় কি এ দুজন ছাড়া আর কেউ নেই?অঙ্কুরের বাবা বিদেশে থাকেন।এটা জানি আমি।কিন্তু ওনার মাকে নিয়ে কেউই কোনো কিছু জানে না।কোথায় ওনার মা?মারা গেছেন?নাকি বাসায় নেই?বাসায় থাকলে অবশ্যই একটা মেয়েকে এভাবে আটকে রাখা এলাউ করবেন না উনি!সাহায্য চাইবো তো কার কাছে চাইবো?রোহান ভাইয়ার গম্ভীরতা বলছে উনি অঙ্কুরের এসব কাজকে সমর্থন করছেন না।তবে কি ওনাকে বলে কোনোভাবে বেরোতে পারবো?ওখানে মাথা নিচু করে আকাশকুসুম ভাবছিলাম।অঙ্কুর সামনে দাড়িয়ে বাকা হেসে বললেন,

-তো কোথায় ছিলাম আমি?আপনাকে স্পর্শ করার বিষয়ে।রাইট মিস অদ্রি?
ধ্যান ভাঙলো আমার।একপলক দুজনের দিকে তাকিয়ে একছুটে পাশেররুমে এসে দরজা লাগিয়ে দিলাম।হ্যাঁ,এটা আমাকে যে রুমে রাখা হয়েছিলো সে রুমটাই।তবুও স্বস্তি মিলছে না।এ ঘরের দরজাও আনলক করার চাবি আছে অঙ্কুরের কাছে।ভাবতে ভাবতেই উনি রুমে ঢুকে পরলেন।দরজা আবারো লাগিয়ে এগোতে লাগলেন আবারো।পিছোতে পিছোতে বললাম,
-আপনি আমাকে জোর করতে পারেন না!
-আগেও বলেছি,আমার চাওয়া পুরনের জন্য আমি সব করতে পারি!
-দেখুন মিস্টার অঙ্কুর….

পিঠ ঠেকে গেলো বাথরুমের দরজায়।এর আনলকিং কি অবশ্যই থাকবে না ওনার কাছে!ভেতরে ঢুকে দরজা লক করে দিতে যাচ্ছিলাম।উনি হাত দিয়ে আটকে দিলেন।ভেতরে ঢুকে উনিই দরজা লক করে দিলেন।ভয় বাড়লো আমার।আজ বাড়াবাড়িই হচ্ছে সবটা।এদিকওদিক তাকিয়ে এককোনে অ্যালুমিনিয়ামের চিকন একটা পাইপের মতো কিছু পেলাম।আত্মরক্ষার জন্য নিজেকে শক্ত করে চুপিসারে ওটাই হাতে নিলাম।আর কোনো উপায় নেই।অঙ্কুর তার হাতে থাকা জামাটা হ্যাঙ্গারে রেখে বললেন,
-তিনদিন হতে চললো শাওয়ার নেননি!আপনাকে রোহান সোজা কথায় বললো ফ্রেশ হয়ে নিচে যেতে,শুনলেন না।এখন যা করার আমিই করবো!
শুকনো ঢোক গিললাম একটা।বললাম,
-এমনটা করতে পারেন না আপনি!

উনি ওভাবেই বাকা হাসি ঝুলিয়ে এগোতে লাগলেন।চোখ বন্ধ করে অঙ্কুরের মাথায় বারি লাগালাম পাইপটা দিয়ে।আহ্ শব্দে উনি মাথা চেপে ধরলেন।পাইপটা হাত থেকে পরে গেছে আমার।পুরোশক্তিতে মারতে পারি নি,হাত কাপছিলো।কিন্তু শব্দ হয়েছে অনেকজোরে।তাহলে রক্ত বেরোচ্ছে না কেনো?অঙ্কুর মাথা ঝাকাচ্ছেন আর আমি উকিঝুকি দিয়ে রক্ত খুজছি।নাহ্!একফোটা রক্ত নেই!পাশ কাটিয়ে বাথরুম থেকে বেরোতে যাবো,উনি একহাত দেয়ালে রেখে আমার একদম কাছে দাড়িয়ে কিছুটা ভয় দেখিয়েই বললেন,

-ইউ…আপনাকে তো….
উনি তেড়ে এগোতে যাচ্ছিলেন।ভরকে গিয়ে যেইনা পেছোতে গেছি,কিছুতে পা বেঝে পানিভর্তি বাথটাবে পরে গেলাম।পুরোপুরিভাবে ভিজেছি।একদম চুবোনি খেয়ে ওঠা যাকে বলে।ওখানেই হাটু জরিয়ে বসে রইলাম।ভোরে এটাতে পানি ছিলো না।আমি রুম থেকে বেরোনোর পরই কেউ জেনেবুঝে কল ছেড়ে দিয়ে পানিপুর্ন করে গেছে এই বাথটাব।অঙ্কুর বললেন,
-মাথা ঠিক আছে আপনার মিস অদ্রি?সত্যিসত্যি মেরে দিলেন পাইপটা দিয়ে?ওটা তো ইচ্ছে করেই রেখে গেছে রোহান!ওর নাকি কিউরিসিটি ছিলো আপনার সাহসীকতা নিয়ে।তাই এই আইডিয়াটা দিয়েছিলাম।ভেবেছিলাম আর যাই হোক,এএসএ কে মারার মতো সাহস অন্তত দেখাবেন না!কিন্তু আপনি তো ম্যাডাম অন্য কিছুরই তৈরী!গড!কান্ট বিলিভ দিস!আহ্!সত্যিই মেরে দিলেন!

সবটাই তুমিময় পর্ব ২

হা করে তাকিয়ে রইলাম তার দিকে।উনি মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বললেন,
-ভাগ্যিস অতোটাও লাগেনি!ইশ্!তবুও ব্যথা করছে।এবার বলুন রোহানকে কি বলবো?তোর কনফিউশন দুর করতে গিয়ে সত্যিই মার খেয়েছি?মান সম্মানটা থাকবে আমার এটা বললে?
কথা বেরোচ্ছে না আমার।ভুলে গেছি কথা বলা।অঙ্কুর বিরক্তি নিয়ে অন্যদিক তাকিয়ে হাত নাড়িয়ে বললেন,
-এনিওয়েজ,টেক শাওয়ার এন্ড গেট চেন্জড্!অব্ এ্ এই ভেজা চুলে আইমিন এভাবে কাকভেজা হয়ে থাকলে ঠান্ডা লাগবে।
-লাগলে লাগুক!

আমার কড়া জবাবে উনি বাকা হাসলেন।যেটা দেখলে গা জ্বলে আমার।ঠোট কামড়ে হেসে বললেন,
-ঠান্ডা লাগলে জ্বরও হবে,জ্বর হলে দুর্বল হয়ে পরবেন।তখন আবার হসপিটালাইজড্ করতে হবে আপনাকে,আর আপনি হসপিটালাইজড্ হলে আমি আবার সেরোগেশনের অপারেশনটা….

কথা শেষ না করে পকেটে হাত গুজে পিছন ফিরলেন উনি।হুইস্টলিং করতে করতে হেলতে দুলতে বেরিয়ে গেলেন।প্রচন্ড রাগ হচ্ছে নিজের উপর।আমি যেখানেই একটু সতর্ক থেকে নিজেকে ছাড়ানোর উপায় খুজছি,সেখানেই আরো বাজেভাবে আটকে যাচ্ছি।তার থেকে পালাতে,লুকোচুরি খেলতে গিয়ে নিজেই নিজের পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছি!ভেবেই পাচ্ছি না সবটা আমার বোকামোর জন্য হচ্ছে,নাকি অঙ্কুরের মাত্রাতিরিক্ত চালাকির জন্য!

সবটাই তুমিময় পর্ব ৪