সত্যি ভালোবাসো পর্ব ১৭ || Fatema Khan

সত্যি ভালোবাসো পর্ব ১৭
Fatema Khan

“বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছি।সকালের নামায পরে দাঁড়িয়ে আছি সূর্য উঠা দেখবো বলে।সাদা মেঘের ভেলায় যেনো একটুকরো রক্তিম লাভা উকি দিতে দেখা যাচ্ছে।কি সুন্দর দৃশ্য,আমি মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে আছি।মনটা একদম ভালো নেই এই কয়দিন।তূর্য ভাইয়ার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না গত ১০দিন ধরে।কিছুই বুঝে উঠতে পারছে না কেউ। আরিশের ডাকে নিজের মধ্যে ফিরে আসি আমি।”
আরিশঃএতো সকালে বেলকনিতে কি করছো তুমি?(পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে আমার চুলে মুখ গুজে)
তাহিয়াঃআসলে ভাইয়া কই গেলো সেটা নিয়েই ভাবছিলাম।

আরিশঃঅহহ আচ্ছা আমি বের হচ্ছি আসতে আসতে রাত হবে তুমি খেয়ে ঘুমিয়ে পরো।
তাহিয়াঃ আজও এতো সকালে যাবে আর দেরি করে আসবে?(গাল ফুলিয়ে)
আরিশঃ হুম।তবে আমার ছোট্ট বউটার জন্য সারপ্রাইজ আছে ৩দিন পর।তুমি পুরো অবাক হয়ে যাবে।
তাহিয়াঃলাগবে না আমার সারপ্রাইজ,তুমি কাছে থাকলেই আমার সব পাওয়া হয়ে যায়।
আরিশঃআমাকে #সত্যি_ভালোবাসো
তাহিয়াঃনিজের চেয়েও বেশি।তুমি বুঝি আমাকে #সত্যি_ভালোবাসো না?
তাহিয়াঃতোমাকে ছাড়া আমি নিঃস্ব।আমার কোনো অস্তিত্ব নেই।
আরিশঃতাই
তাহিয়াঃহুম।কিছু খাবে না

আরিশঃখেতে তো অনেক কিছুই ইচ্ছে করছে।(আমার কোমর ধরে নিজের সাথে মিশিয়ে)
তাহিয়াঃছাড়ো না প্লিজ।আর কিছু খেয়ে নাও।
আরিশঃবাইরে খেয়ে নিবো।(বলেই আমার কপালে ভালোবাসার পরশ দিয়ে বের হয়ে চলে গেলো)
তাহিয়াঃকেনো যানিনা মনে হয় তুমি আমাকে যতটুকু ভালোবাসো আমি তোমাকে তার সমপরিমাণ ভালোবাসি কিনা।কিন্তু আমি তোমাকে ছাড়া অচল থাকতে পারবো না তোমাকে ছাড়া।মরে যাবো আমি তোমাকে ছাড়া।কখনো দূরে যাবে না তো আমাকে ছেড়ে ।কেনো জানিনা ইদানীং খুব ভয় হয় আমার।তোমার ভালোবাসা আমি হারাতে চাই না।আমাকে সবসময় নিজের বুকে আগলে রেখো ভালোবাসা।
(বলেই একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল তাহিয়া)

আরও গল্প পরতে ভিজিট করুন

আবিরঃতাহসিন তোমাকে কালকের মধ্যে দেশে আসতে হবে।
তাহসিনঃকিন্তু আমি তো দেশে ফিরবো না এটা তুমি জানো,তাহলে কেনো বলছো আমাকে দেশে যেতে
আবিরঃআমার শরীর টা ভালো নেই।তোমাকে একটু দেখতে ইচ্ছে করছে।তুমি ১সপ্তাহ থেকে চলে যেও।
তাহসিনঃএতো তাড়াতাড়ি টিকিট পাবো কিনা বলতে পারছি না।
আবিরঃসে ব্যবস্থা আমি করে দিবো।তুমি চলে আসো বাস।
তাহসিনঃঠিক আছে আমি কাল তাহলে দেশে আসছি।(বাবার অসুস্থতার কথা শুনে আর মানা করতে পারলো না সে)
আবিরঃআচ্ছা রাখছি।(বলে কল কেটে দিলো)

আবিরঃছেলেটাকে এভাবে মিথ্যা বলা কি ঠিক হলো।
আরমানঃএকদম ঠিক হয়েছে।না হলে তোমার ছেলে দেশে আসতো বলে তোমার মন হয়।
আবিরঃ কিন্তু ওকে না জানিয়ে ওর বিয়ে ঠিক করে ফেলা।আমার উপর অনেক রেগে যাবে।
আরমানঃএকবার বিয়ে হতে দাও সব ঠিক হবে দেখে নিও।তারপর বউ নিয়ে না হয় কানাডা চলে যাবে অসুবিধে কোথায়
আবিরঃতাই যেনো হয়।
আরমানঃআর তূর্যের যে কি হলো কোনো খবর পাচ্ছি না।ওর মা তো কেদে কেটে শেষ।
আবিরঃহ্যা ছেলেটা হঠাৎ কোথায় গেলো।সেটা ভাবার বিষয়।ওইখানে তূর্যের সব বন্ধুদের সাথে কথা বলা হয়েছে ওরা কিছু জানে?
আরমানঃযাদের আমি চিনি সবার থেকে খবর নেয়া হয়ে গেছে তারা কেউ জানে না।
আবিরঃ অহ।এখন ও ভালো থাকলেই হয়।
আরমানঃছেলেটার কোনো বিপদ হলে নিজেকে মাফ করতে পারবো না আমি।
আবিরঃতূর্যকে জোর করে না পাঠালেও পারতে।কিন্তু দুইবছর তো হয়ে গেলো কিছুদিন পর ওর আসার কথা আর এই সময় ছেলেটা এভাবে উধাও হয়ে যাওয়া।
আরমানঃসেটাই অনেক চিন্তা হচ্ছে,কিন্তু কাওকে আমার যে চিন্তা হচ্ছে বুঝতে দিতেও পারছি না।তাহলে তূর্যের মা আরও ভেঙে পরবে।তনিমার শরীরটাও ভালো নেই এইদিকে তূর্য কি যে করি মাথা কাজ করছে না।আচ্ছা আজ তাহলে উঠি।পরে তোমার সাথে কথা হবে।
আবিরঃঠিক আছে।আর ভাবির খেয়াল রেখো।

(রাতে রুমে বসে গিটারে টুংটাং আওয়াজ বের করছে তাহসিন।)
কাল আবার আমায় দেশে যেতে হবে।আমি চাই না আমি তোমার সামনে যাই।আমি যতদিন দেশে থাকবো তোমার থেকে নিজেকে লুকিয়ে রাখবো।বলেই গিটারে সুর তুললো–
শোননা রূপসী তুমি যে শ্রেয়সী,
কি ভীষণ উদাসি প্রেয়সী।
না না না …
জীবনের গলিতে এ গানের কলিতে,
চাইছি বলিতে ভালবাসি।
চোখের জলেরই আড়ালে,
খেলা শুধুই দেখেছিলে,
যন্ত্রণারই আগুন নীলে,
পুড়েছি যে-বোঝনি তা।
অভিমানে চুপটি করে,
এসেছি তাই দূরে সরে,
বোঝাতে চেয়েও পারিনি
তাই বোঝাতে- লুকোনো কথা।

রেজোয়ানঃআর কতদিন অপেক্ষা করাবে?তোমার কথায় ২বছর অপেক্ষা করলাম,এবার তো নিজের কথা রাখবে।
মাস্কপরা ব্যাক্তিঃসময় শেষ হয়ে গেছে,এবার আমি আমার কথা রাখবো।শীঘ্রই আপনার সাথে আমার দেখা হচ্ছে।
রেজোয়ানঃএবার তাহলে আমার প্রতিশোধ পূর্ণ হবে।(উচ্চস্বরে হেসে বলল)
মাস্কপরা ব্যাক্তিঃজ্বি অবশ্যই,এতোদিন যখন অপেক্ষা করেছেন আর মাত্র কয়েকটা দিন তারপর আপনার আর আমার দুইজনের প্রতিশোধ পূর্ণ হবে।
রেজোয়ানঃআমার না হয় একটা কারণ আছে প্রতিশোধ নেয়ার,কিন্তু তুমি কিসের প্রতিশোধ নিচ্ছো তুমি তো তাদের…….
রেজোয়ানকে থামিয়ে—
মাস্কপরা ব্যাক্তিঃসব প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন সময় হোক।আর আপনি আজ বা কালের ভেতরে দুবাই থেকে দেশে আসুন।(বলেই কল কেটে দিলো)

সত্যি ভালোবাসো পর্ব ১৬

(তাহসিন দেশে ফিরে এলো।এসেই সে নিজের বাড়িতে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে রেস্ট নিচ্ছে।কিন্তু তার মন ব্যাকুলতায় ভরে আছে একটি বার যদি সে তার প্রেয়সীর মায়াবী মুখটা দেখতে পারতো।যেই ভাবা সেই কাজ সে বেড়িয়ে পরল,উদ্দেশ্য আরিশদের বাড়ি।)
(তাহসিন গাড়ি করে না গিয়ে বাসে করে যাবে,তাই সে রাস্তায় নেমে পরলো।একটা রিকশা নিয়ে বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছলো।রিকশা থেকে নেমে ভাড়া মিটিয়ে যেই না পিছনে ফিরবে কারো সাথে ধাক্কা লেগে যায়।)
তাহসিনঃসরি,আসলে আমি দেখতে পাইনি আপনাকে।
জারাঃঅহ হ্যালো মিস্টার কিসের সরি।সুন্দরী মেয়ে দেখলেই বুঝি গায়ে পরতে ইচ্ছে করে।
তাহসিনঃআমি সরি বলছি তো।
জারাঃআমি জারা বুঝলেন আপনার মত ছেলেদের খুব ভালো করে চিনি।মেয়ে দেখেই লাইন মারা শুরু।
তাহসিনঃআমি জানি সুন্দর দেখতে আমি।তাই বলে এমন করবেন নাকি।আর শুনুন আমার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে সো আপনার কোনো চান্স নেই বুঝলেন।
তাহসিনঃপাগল হয়ে গেলেন নাকি।আমার কি মাথা নষ্ট নাকি যে আপনার মত জগরুটে মেয়ের সাথে লাইন মারতে যাবো।আমার জন্য মেয়েদের লাইন পরে থাকে আপনার মত মেয়েদের আমি পাত্তা দেই না।
(বলেই আবার রিকশাতে উঠে পরল)
তাহসিনঃচাচা যেখান থেকে আসছি ওইখানে নিয়ে চলেন।মুডটাই নষ্ট করে দিলো।

[ আমি আগেও বলেছি গল্প আমি আগে থেকেই ভেবে রেখেছি কিভাবে এগিয়ে নিয়ে যাব।আর আজকের পর্বে অনেকটাই ক্লিয়ার হয়েছে তাহিয়ার নায়ক কে।আর তাহসিনের নায়িকা কে হবে আশা করি বুঝতে পেরেছেন।আরিশ ও তাহসিন দুইজনেই নায়ক।আমি ১৮+ দেখাতে পারি না তাই হয়তো আপনাদের কাছে মনে হতে পারে আরিশের চরিত্র থেকে তাহসিনের চরিত্র বেশি ফুটে উঠেছে।তাহসিনের চরিত্র আমাকে ফুটাতে হতো কারণ সে নিজেও আমার গল্পের নায়ক।এখন আরিশ প্রেমী এবং তাহসিন প্রেমীরা খুশিতো।আর ভিলেন কে হবে এটা না হয় অন্য পর্বে জেনে নিবেন।ধন্যবাদ।]

সত্যি ভালোবাসো পর্ব ১৮