সত্যি ভালোবাসো পর্ব ১৯ || Fatema Khan

সত্যি ভালোবাসো পর্ব ১৯
Fatema Khan

আরিশ আর রাসেল তাহসিনকে ছাদে দিয়ে নিচে আসছে।জারাকে ওর কাজিনরা উপরে দিয়ে আসছে।আসার সময় জারার এক কাজিন পরে যেতে নিলে আরিশ তাকে ধরে ফেলে।মেয়েটি আরিশের দিকে মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে থাকে।আরিশ মেয়েটিকে ছেড়ে বলে-
আরিশঃআপনি ঠিক আছেন তো
মিতাঃজ্বি এখন ঠিক আছি।
আরিশঃঅহ।
মিতাঃআমি মিতা,আপনি?
আরিশঃআমি আরিশ(কিছুটা বিরক্ত হয়ে বলল)আচ্ছা আসি ভালো থাকবেন
মিতাঃসেকি চলে যাচ্ছেন কেনো একটু কথা বলি ভালোই তো লাগছে।
আরিশঃআসলে আমার ওয়াইফ অপেক্ষা করছে আমার জন্য তাই যেতে হবে।
মিতাঃআপনার বিয়ে হয়ে গেছে?(কাদো কাদো ফেস নিয়ে বললো)
আরিশঃজ্বি।
বলেই চলে গেলো।মিতা ভাবেনি যে আরিশ বিবাহিত হবে।মন খারাপ করে সেও চলে এলো সবার কাছে।এইদিকে তাহিয়া দূর থেকেই সব দেখছিলো আর রাগে ফুলে উঠছিলো।আরিশ এসে তাহিয়ার পাশে বসলে তাহিয়া মুখ ফিরিয়ে অন্যদিকে তাকিয়ে কথা বলে।আরিশ ব্যাপারটি খেয়াল করলেও বুঝতে পারলো না তাহিয়া কি জন্য রাগ করেছে।আরিশ তাহিয়ার দিকে তাকিয়ে দেখে তাহিয়ার গালদুটো রাগে লাল হয়ে আছে।আরিশ বুঝতে পারে তাহিয়া তার উপর রেগে আছে কিন্তু কি নিয়ে রাগ করবে সেটা তার বোধগম্য হলো না।একটু আগেও তো ভালো ছিলো।সবাই বিয়ের বিভিন্ন কথা বলছিলো আর এইদিকে আরিশ তাহিয়ার সাথে কথা বলার চেষ্টা করছে কিন্তু সে ব্যর্থ।তারপর আর সে কিছু বললো না আরিশ সবার সাথে কথা বলতে থাকলো।

জারাঃএই যে আপনি আমার পিছু নেন নি তো?আপনি তো ভারি অসভ্য লোক।
তাহসিনঃআমি আর আপনার মত পাগলের পিছু নিবো।
জারাঃআমাদের বাড়িতে দাঁড়িয়ে বলছে আমার পিছু নেই নি।আমি জানি আমি অনেক সুন্দরী তাই বলে আমাদের বাড়িতে এসে পরবেন নাকি।নিজেকেও তো আয়নায় একটু দেখে আসবেন
তাহসিন চুপ করে জারার দিকে তাকিয়ে আছে।মেয়েটা সত্যি অনেক সুন্দরী।বা গালে টোল পড়ে,ঠোঁটের নিচে একটা তিল আছে, চোখের ঘন পাপরি গুলো কথা বলার সময় বারবার ঝাপটানো,গোলাপি ঠোঁট,পরনে সবুজ রঙের শাড়িতে অপুর্ব লাগছে।যেন এক অপ্সরা তার সামনে দাড়িয়ে আছে।
জারাঃএই যে আপনি শুনছেন
তাহসিনঃকি?
জারাঃ তাড়াতাড়ি যান।এখন আমার হবু বর চলে আসবে।আপনাকে আমার সাথে দেখলে খারাপ ভাববে।
তাহসিন ঠোঁটের কোণে বাকা হাসি দিয়ে জারার অনেক কাছে এসে দাঁড়ায়।যার দ্বারা জারা অনেকটা অস্বস্তিবোধ করে।
জারাঃকি হলো আপনি এভাবে এগুচ্ছেন কেনো?
তাহসিনঃআপনি সত্যি খুব সুন্দরী,তাই ভাবছি আপনার হবু বর আসার আগে একটু কাছে আসলে দোষ কি
জারাঃকি সব বলছেন(পিছিয়ে যেয়ে)
পিছনে যেতে যেতে দেয়ালের সাথে জারার পিঠ ঠেকে যায়।জারা চলে আসতে চাইলে তাহসিন দেয়ালে হাত দিয়ে আটকিয়ে দেয়।জারা ভয় পেয়ে যায়।

আরও গল্প পরতে ভিজিট করুন

তাহসিনঃকি যেনো বলছিলেন আপনি,আমি কি?
জারাঃ ক-কই কি ব-বলছিলাম।কি-কিছু বলছিলাম না তো
তাহসিনঃআপনার কথা আটকে আসছে কেনো?এতোক্ষণ তো খুব কথা শোনাচ্ছিলেন আমাকে।আমি অসভ্য,নিজেকে আয়নায় দেখতে তাই না।
জারাঃ না না ওইগুলো তো এমনি বলছিলাম।
তাহসিনঃআচ্ছা বুঝলাম আপনার হবু বর কই সে এখনো আসলো না যে
জারাঃআপনি একটু দূরে দাঁড়িয়ে কথা বলুন
তাহসিন দূরে সরে দাড়ালো।আর বলল-
তাহসিনঃ আমার সাথেই আপনার বিয়ে ঠিক হয়েছে,কিন্তু আপনি নিচে গিয়ে বলবেন আপনি আমাকে বিয়ে করতে পারবেন না।আমাকে আপনার পছন্দ হয়নি।
জারা অবাক চোখে তাকিয়ে আছে তাহসিনের দিকে,কি বলে এই ছেলে পাগল হয়ে গেলো নাকি।
জারাঃদেখুন আমারও আপনাকে বিয়ে করার কোনো শখ নেই বুঝলেন আপনি।আর এমন গায়ে পরা ছেলেকে তো আমি কখনোই বিয়ে করবো না।
তাহসিনঃগুড গার্ল।
জারাঃকিন্তু আমি মানা করতে পারবো না।আপনি বলে দিয়েন আপনি রাজি না থাকলে।
তাহসিনঃআমি বলতে পারলে আপনাকে বলতে বলতাম না।কথাটা আপনাকেই বলতে হবে।
জারাঃআমি বলতে পারবো না।আর যদি বলতে না পারেন তাহলে আমাকে বিয়ে করার জন্য তৈরী হোন মিস্টার।

সত্যি ভালোবাসো পর্ব ১৮

তাহসিনের রাগ উঠে গেলো জারার কথা শুনে।সে জারার কোমর ধরে নিজের সাথে মিশিয়ে নিলো আর বললো খুব শখ না আমাকে বিয়ে করার।জারা আচমকা এমন হওয়ায় ঘাবড়ে গেলো,আর নিজেকে ছাড়াতে ব্যাস্ত হয়ে পড়লো।জারার পুরো শরীর কাপছে।তাহসিন এতো কাছে আসাতে তার নিঃশ্বাস জারার মুখের উপর পরছে।জারা চোখ বন্ধ করে ফেলে।এক অদ্ভুত ভালোলাগা কাজ করছে তার।কেমন শীহরন বয়ে যাচ্ছে তার শরীরে।তাহসিনের সেই দিকে কোনো খেয়াল নেই।
জারাঃকি করছেন ছাড়ুন আমাকে? কেউ দেখে ফেললে খারাপ ভাববে।প্লিজ ছাড়ুন আমাকে।
তাহসিনঃএখন কেনো দূরে যেতে চাইছেন,দুইদিন পর তো বিয়ে হবেই তাই কাছে আসতে তো দোষ নেই তাই না।

জারাঃবিয়ের পর কাছে আসবেন মিস্টার এখন না।
এইটুকুই যথেষ্ট তাহসিনের রাগ দ্বিগুণ করার জন্য।সাথে সাথে সে এমন একটি কাজ করে বসলো যা জারার কল্পনার বাইরে ছিলো।

সত্যি ভালোবাসো পর্ব ২০