সত্যি ভালোবাসো পর্ব ২০ || nill cafer golpo

সত্যি ভালোবাসো পর্ব ২০
Fatema Khan

তাহসিন জারাকে নিজের থেকে দূরে সরিয়ে দিলো।জারা সুযোগ বুঝে যেই পালাতে যাবে তাহসিন জারার হাত ধরে ফেললো।জারা পিছনে তাকালে তাহসিন তাকে পাজাকোলে নিয়ে নেয়।জারা তো অবাকের শেষ সীমায়।এই ছেলে করতে কি চাইছে।তাহসিন জারাকে ছাদের একদম কোনায় এনে বলে-
তাহসিনঃছাদ থেকে পরে মরতে চান নাকি আমাকে বিয়ে না করে বাঁচতে চান।
জারা ভয়ে তাহসিনের গলা জড়িয়ে ধরে বলতে লাগলো-
জারাঃনামিয়ে দিন প্লিজ আমি এখনো বাচ্চা মেয়ে।কত স্বাদ ছিলো বিয়ে করবো,৫-৬টা বাচ্চার মা হবো।সেগুলো নষ্ট হতে দিবেন না।আমি সবাইকে বলে দিবো আমার আপনাকে পছন্দ হয়নি।
তাহসিনঃএইতো লাইনে আসছেন।এবার নিচে গিয়ে এটাই বলবেন যে আপনি রাজি না।আর এতোক্ষণ আমি যা যা বলেছি তার একটা কথাও যেনো কারো কানে না যায়।মনে থাকবে তো
জারাঃ হুম মনে থাকবে।আপনি যা বলবেন তাই করবো এবার তো সরে আসুন।
তাহসিন জারাকে ছাদের মাঝখানে এসে নামিয়ে দেয়।আর বলে তাহলে নিচে যাওয়া যাক।সবাই অপেক্ষা করছে।জারাও সম্মতি জানালে দুইজনে নিচে চলে আসে।

আমি ৫দিন পর দেশে ফিরবো।তুমি সব রেডি করে রাখবা কারন আমি পরের দিনই দুবাই ব্যাক করবো।দেশে থাকা রিস্ক হয়ে যাবে।(রেজোয়ান ফোনে কথাগুলো বলছিলো)
মাস্কপরা ব্যাক্তিঃআপনি চিন্তা করবেন না।আমি সব ঠিকঠাক করে রাখবো।এই কয়দিন তাদের একটু আনন্দ করতে দেই কি বলেন।
রেজোয়ানঃতা মন্দ বলো নি।এরপর তো যতদিন বেঁচে থাকবে শুধু কান্নাই লিখা আছে ওর ভাগ্যে আর আরমান বুঝতে পারবে আপনজন হারালে কেমন কষ্ট লাগে।
মাস্কপরা ব্যাক্তিঃঠিক আছে রাখছি আমি।তাহলে আপনার সাথে আমার ৫দিন পরে দেখা হচ্ছে।
রেজোয়ানঃ হুম রাখছি।(বলে কল কেটে দিলো)

তাহসিন আর জারাকে পাশাপাশি বসানো হলো।তাহসিনকে সবাই জিজ্ঞেস করলো জারাকে তার কেমন লেগেছে,সে বিয়েতে রাজি তো।সে বলল-
তাহসিনঃজ্বি জারাকে আমার খুব ভালো লেগেছে।আর ওকে আমি বিয়ে করতে চাই।
জারাকেও সেইম প্রশ্ন করলে জারা আমতা আমতা করতে থাকে।একপলক তাহসিনের দিকে তাকিয়ে দেখে সে তার দিকে তাকিয়ে চোখের ইশারায় বলছে বলতে।
জারাঃআমারও ওনাকে খুব ভালো লেগেছে,আমার কোনো আপত্তি নেই ওনাকে বিয়ে করতে।(আমাকে ছাদ থেকে ফেলে দেয়া তাইনা,কেমন জব্দ করলাম মিস্টার তাহসিন)
তাহসিনের মাথায় তো আগুন জ্বলে উঠলো।সে রেগে জারার দিকে তাকালে জারা তাকে সবার আড়ালে চোখ টিপ মারে এটা দেখে তাহসিন আরও রেগে যায়।কিন্তু কিছুই বলতে পারে না।
তারপর তাহসিন আগে জারার অনামিকা আংগুলে আংটি পড়ায়।পরে জারা তাহসিনকে পড়ায়।তারপর জারাকে রুমে নিয়ে যাওয়া হয়।সবাই মিলে বিভিন্ন কথা বলে খাওয়া দাওয়া শেষ করে যাওয়ার জন্য তৈরি হয়।তখন আবির আহমেদ বলে উঠে জারাকে একটু ডেকে দিতে।তারপর জারা আসলে জারার মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বলল-

আরও গল্প পরতে ভিজিট করুন

আবিরঃআমার ছেলেটাকে সারাজীবন আগলে রাখবে তো।আমি জানি তুমি পারবে আমার ছেলেটাকে ঠিক করতে।ছেলেটা আমার কথাই শুনে না,তুমি বাধ্য করবে তোমার কথা শুনতে, তোমায় ভালোবাসতে।আর ওর সম্পর্কে তোমাকে আগেই সবকিছু বলে নিয়েছি আমি।
তাহসিনঃকি হলো বাবা কি এমন বলছো তারাতাড়ি চলো দেরি হচ্ছে।(জারা আর আবিরের কাছে এগুতে লাগলো)
আবিরঃ হুম চলো।আচ্ছা মা আজ তাহলে আসি।(জারার থেকে বিদায় নিয়ে এগিয়ে গেলো)
হালকা কেশে তাহসিনকে জারা বললো-
জারাঃআপনি যাবেন না।নাকি হবু বউ কে ছেড়ে যেতে ইচ্ছে করছে না।
তাহসিনঃতোমাকে তো আমি দেখে নিবো,আজ তুমি আমার সাথে একদম ঠিক করো নি বুঝলা।
জারাঃবুঝলাম,আর আমাকে দেখে নেয়ার কথা হলে সারাজীবন পরে আছে দেখার জন্য এখন যান সবাই তাকিয়ে আছে আমাদের দিকে।
তাহসিন তাকিয়ে দেখে সত্যিই সবাই তাকিয়ে আছে আর মুখ চেপে হাসছে।তা দেখে তাহসিন মাথা চুলকে সামনে এগিয়ে যায়।তারপর সবার থেকে বিদায় নিয়ে তারা বেরিয়ে যায়।

আমি বাসায় এসে ফ্রেশ হতে চলে যাই।৩০মিনিটের মধ্যে বেরিয়ে আসি।এসে দেখি আরিশ ফ্রেশ হয়ে ল্যাপটপে কাজ করছে।হয়তো অন্য ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হইছে।এইদিকে আমি যে রেগে আছি তার দিকে কোনো খেয়াল আছে উনি তো ভালোই আছে।কোথায় আমার রাগ ভাঙাবে তা না করে উনি কাজ করছে।আমিও কথা বলবো না।আমার কাছে এসে কানে ধরে সরি বললেও আমি কথা বলবো না।তারপর বিছানার একপাশে শুয়ে পরি।ঘুম আসছে না।অনেকক্ষণ পর আরিশ এসে আমার অপরপাশে শুয়ে পরলো।কিন্তু কোনো কথা বললো না।আমার আরও রাগ উঠে গেলো।আমি আরিশের দিকে ফিরে তার কলার ধরে বলে উঠলাম তোমার বউ যে রেগে আছে তা তুমি দেখো নি বুঝি।কই রাগ ভাঙাবে তা না করে ঘুমানো হচ্ছে।
আরিশঃআহ ছাড়ো তো সকালে অফিস আছে ঘুমাতে হবে।তোমার সাথে এই ফালতু কথা নিয়ে আমি ঝামেলা করতে চাই না।

সত্যি ভালোবাসো পর্ব ১৯

তাহিয়াঃআমার রাগ ফালতু।আমার কোনো মূল্য নেই তোমার কাছে।ও এখন তো ওই মিতা না টিতা ওকে ভালো লাগে তোমার।
(ওহ ম্যাডাম তাহলে এইজন্যই রেগে ছিলো।তাহলে ম্যাডাম জেলাস।)
আরিশঃকোন মিতা?
তাহিয়াঃযার সাথে হেসে হেসে কথা বলছিলে।আমি জানি ইচ্ছে করে পরে যাবার নাটক করছিলো যাতে তোমার গায়ে এসে পড়তে পারে।
আরিশঃ ওও… মনে পরেছে ওই সুন্দরী মেয়েটা।খুব সুন্দর দেখতে কি বলো
তাহিয়াঃও এখন আমাকে ভালো লাগে না।এখন ওই শাকচুন্নি কে ভালো লাগে।ও সুন্দর হয়ে গেলো তাই তো।

আরিশঃনা তোমাকে এখন আর ভালো লাগে না।আমার কাছে সবার আগে আমার কাজ।আর এখন মিতা।এবার সরো ঘুমাতে দাও।
আমি তাকে ছেড়ে অন্যদিকে ফিরে শুয়ে পরলাম।খুব কান্না আসছে।চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পরতে লাগলো।আমি আর তার দিকে ফিরলাম না।অনেক কষ্ট হচ্ছে তার কথাগুলো শুনে।
আরিশঃআমাকে ইগনোর করা তাই না।একটু কষ্ট পাও লক্ষীটি।পরশু তোমার জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে।সেটা না দেয়া অবদি একটু কষ্ট যে পেতে হবে।সারপ্রাইজ পাবার পর তোমার আর রাগ থাকবে না আমি জানি।
তাহিয়া কান্না করতে করতে ঘুমিয়ে পড়েছে।আরিশ উঠে তাহিয়ার কপালে ভালোবাসার পরশ একে দিলো তারপর তাকে জড়িয়ে ধরে নিজেও ঘুমিয়ে পড়লো।

(যারা ভেবেছিলেন তাহসিন জারাকে কিস করবে তাদের জন্য এক বালতি সমবেদনা)

সত্যি ভালোবাসো পর্ব ২১