সত্যি ভালোবাসো পর্ব ২২ || Fatema Khan

সত্যি ভালোবাসো পর্ব ২২
Fatema Khan

সারাদিনের কাজ শেষ করে গোসল সেরে খেয়ে নিলাম।আরিশ এখনো বাসায় ফিরেনি।এই ছোট্ট বউটিকে তার বুঝি অপেক্ষা করাতেই ভালো লাগে।আমার আর আরিশের একটা ছবি হাতে নিয়ে দেখছিলাম।এটা আমার আর আরিশের বউভাতের ছবি।দেখো এখানেও আমার দিকে তাকাচ্ছে না আর আমি বেহায়ার মত তার দিকেই তাকিয়ে আছি।না তাকিয়ে উপায় আছে আমার বরটাকে যে সেদিন খুব সুন্দর লাগছিলো।শ্যামবর্ণের গায়ের রঙটা যেনো তার জন্যই।তার সবকিছুই আমাকে তার প্রতি আরো আকর্ষিত করে তুলে।সে যেনো আমার কাছে এক নেশার মত।আমি যেনো ‘তোমাতে আসক্ত’ হয়ে পড়ছি।আমার ভাবনার মাঝেই আরিশ রুমে প্রবেশ করে।তার পুরো শরীর ঘেমে আছে।চুলগুলো ঘামে কপালে লেপ্টে আছে।

তাহিয়াঃআরে তুমি কোত্থেকে এলে,আর এতো ঘেমে আছো কেনো,তুমি তো গাড়ি নিয়ে গেছিলে?
আরিশঃআরে আরে থামো বলছি,শ্বাস তো নেও।কত কথা বলো তুমি?এই নাও এটা।
তাহিয়াঃএটা কি?(তার হাতে যে একটা প্যাকেট আছে খেয়ালই করি নি)
আরিশঃদেখো কি আছে(বলেই টাওয়েল নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলো)
আমি প্যাকেট হাতে নিয়ে বিছানায় বসে আছি।কিছুক্ষণ পর আরিশ বের হয়ে বলে-
আরিশঃ এখনো বের করেও দেখোনি কি আছে।আচ্ছা এক কাজ করো ফ্রেশ হয়ে আসে আগে।
তাহিয়াঃকেনো আমি তো ঠিক আছি
আরিশঃআমি বলেছি তাই যাবে।এখন যাও।

আরও গল্প পরতে ভিজিট করুন

(আমিও চলে গেলাম ওয়াশরুমে।বের হয়ে দেখি আরিশ রুমে নেই।কিন্তু প্যাকেটের উপর একটা চিরকুট আছে।তাতে লেখা আছে তারাতাড়ি করো আমি নিচে গাড়িতে ওয়েট করছি।আমি প্যাকেটটা খুলে দেখি একটা কালো রঙের শাড়ি সাথে ম্যাচিং অর্নামেন্টস।এই মিস্টার অসভ্য নামক লোকটার কালো রং এতো পছন্দ কেনো যেখানে আমার নীল খুব পছন্দ।সবকিছু পরে নিলাম সাথে লিপস্টিক ও চোখে কাজল।ভালোই লাগছে আরিশের ভালো লাগবে তো?তখনই মোবাইলে মেসেজ আসলো।সিন করে দেখি আরিশের মেসেজ।আর কতক্ষণ লাগবে বউ।আরিশের এই বউ ডাকটি যেনো মন ছুয়ে যায়।)
“নিচে এসে দেখি আরিশ গাড়ির সাথে পিঠ ঠেকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।তার পরনে কালো কালারের শার্ট কালো জিন্স হাতে ঘড়ি,আর হাতে আছে রোদচশমা।আমি তো পুরাই ফিদা আরিশের উপর।আর কতভাবে নিজের প্রেমে পরাবে আমাকে।”

আরিশঃএতোক্ষণ লাগে তৈরি হতে,তারাতাড়ি চলো।
(দুইজন গাড়িতে উঠলাম,আরিশ বরাবরের মতই আমার সিটবেল্ট বেধে দিলো।আমি বারবার আরিশকে জিজ্ঞেস করলাম আমরা কই যাচ্ছি কিন্তু আরিশ বললো না গেলেই নাকি দেখতে পাবো।আমিও মন খারাপ করে বসে আছি।)

জারাকে তাহসিন অনেকক্ষণ যাবত কল দিচ্ছে কিন্তু জারা রিসিভ করছে না।
তাহসিনঃএই মেয়ে নিজেকে ভাবে কি এতোগুলা কল দিলাম রিসিভ করছে না কেনো?
এইদিকে জারা তার কাজিনদের সাথে আড্ডা দিয়ে সবে মাত্র রুমে আসে।রুমে এসেই দেখে তার মোবাইল বেজে চলছে।সে কল রিসিভ করতেই তাহসিন কড়া গলায় বলে উঠলো-
তাহসিনঃএতোক্ষণ লাগে কল রিসিভ করতে,কতগুলো কল দিছি সেই খেয়াল আছে।
জারাঃওহ হ্যালো কে আপনি আবার কল দিয়ে এমনভাবে কথা বলছেন কেনো?(ইচ্ছে করে তাহসিনকে রাগানোর জন্য)
তাহসিনঃআমি তাহসিন।ওইদিন তো জোর করে মোবাইল নাম্বার নিলেন আর আজ বলছেন কে আমি।
জারাঃআচ্ছা আচ্ছা আসলে আমি ইম্পর্ট্যান্ট কারো ছাড়া নাম্বার সেইভ করি না।
তাহসিনঃভালো।
জারাঃতা কল করেছেন কেনো?
তাহসিনঃআপনার সাথে দেখা করতে চাই।আসতে পারবেন?
জারাঃঠিক আছে।
তাহসিনঃআপনি তৈরি থাকুন আমি গাড়ি নিয়ে গেইটের বাইরে থাকব।
জারাঃআচ্ছা।
কল কেটে দিয়ে জারা খাটের উপর উঠে উরাধুরা নাচ শুরু করলো।

রেস্টুরেন্টে সামনা সামনি বসে আছে জারা আর তাহসিন।জারা তো নিজের মত কথা বলেই যাচ্ছে আর তাহসিন তাকে দেখতে ব্যাস্ত।তাহসিন যে তাকে কিছু বলার জন্য ডেকেছে সেটা নিয়ে তার মাথা ব্যাথা নেই সে কথা বলেই যাচ্ছে।
তাহসিনঃ(এই মেয়ে আমাকে কিছু বলতে দিবে নাকি নিজেই বকবক করতে থাকবে)আমি আপনাকে কিছু জিজ্ঞেস করার জন্য ডেকেছি তো।
জারাঃতো বলুন না আমি কি আপনার মুখে স্কসটেপ লাগিয়ে দিয়েছি নাকি।
তাহসিনঃনাহ তা কেনো হবে।আপনি বিয়েতে রাজি হলেন কেনো?
জারাঃসবাই প্রশ্ন করছিলো আমার আপনাকে পছন্দ হয়েছে কিনা,বিয়ে করতে চাই কিনা।তাই আমার মনে যা ছিলো তাই বলে দিলাম।
তাহসিনঃআমি তো মানা করেছিলাম তাই না
জারাঃআমি আপনার মত নই যে নিজের মনের কথা বলতে পারেন না।আমার মনে ছিলো আমি আপনাকে বিয়ে করবো তাহলে মানা করার কথা কোথায় আসে।
তাহসিনঃআমি আপনাকে বিয়ে করতে পারবো না।
জারাঃকেনো,আমার জানামতে আপনার জীবনে অন্য কেউ নেই।যাকে পছন্দ করতেন তার বিয়ে হয়ে গেছে।

তাহসিনঃআপনি এতো কিছু কি করে জানেন?
জারাঃএসব বাদদিন এখন ফাইনাল কথা হলো আমরা বিয়ে করছি বুঝলেন।
তাহসিনঃআচ্ছা চলেন আপনাকে বুঝিয়ে লাভ নেই।
জারাঃযাবো মানে আজ ঘুরবো আমি আর আপনি।
তাহসিনঃমানে কি,রাত হয়ে গেছে।৭ঃ০০ টা বাজতে চললো।
জারাঃআপনি সাথে আছেন তো।তবে গাড়ি করে না হেটে হেটেই সময় পার করতে চাই আমি আপনার সাথে।(আপনি আমার থেকে যতই দূরে যেতে চাইবেন আমি ততই কাছে যাবো আপনার।আমি যে দিন দিন ‘তোমাতে আসক্ত’ হয়ে পড়ছি।একটা মানুষ কি করে একজনকে এতো ভালোবাসতে পারে।তাকে যে আমি খুব করে ভালোবাসতে চাই।আমার ভালোবাসায় আমি আপনার হৃদয়ে আমার জন্য ভালোবাসা গড়ে তুলবো।)
তাহসিনঃআচ্ছা চলুন।(জারা আপনি তো আমার মনের মত।ঠিক আমি যেমন চেয়েছিলাম তাহিয়াকে। কিন্তু আমি যে তাহিয়াকে খুব বেশি ভালোবাসি আমার সাথে থাকলে আপনি কষ্ট ছাড়া কিছুই পাবেন না)

সত্যি ভালোবাসো পর্ব ২১

হঠাৎ ব্রেক কষে আরিশ একটা জায়গায় এনে গাড়ি থামালো।
তাহিয়াঃএকি আরিশ গাড়ি থামালে যে আমরা কি এই মাঝ রাস্তায় নেমে যাবো।
আরিশঃনা বউ আরেকটু বাকি আছে।
তাহিয়াঃতাহলে এখানে থামালে কেনো?
আরিশঃতুমি বেশি কথা বলো(বলেই আমার চোখ একটা কালো কাপড় দিয়ে বেধে দিলো)
তাহিয়াঃএকি চোখ বাধলে কেনো?
আরিশঃবললাম না সারপ্রাইজ আছে।
আরোও কিছুক্ষন গাড়ি চলার পর আরিশ গাড়ি থামালো।তারপর আরিশ গাড়ি থেকে নেমে আমাকে ধরে নামালো।কিছুক্ষণ ধরে নিয়ে গেলো।তারপর আমাকে কোলে উঠিয়ে নিলো।অনেকটুক রাস্তা হাটার পর আরিশ আমাকে নামিয়ে দিলো।আর বললো-
আরিশঃ এবার চোখের কাপড় সরাও।
আমি চোখের কাপড় সরাতেই দেখি……

[আজকের পর্ব কেমন হলো গঠনমূলক মন্তব্য করে জানাবেন।আর মেইন ক্যারেক্টর কিন্তু আরিশ ও তাহসিন দুইজনেই,যারা এখনো আরিশ আর তাহসিন নিয়ে পরে আছেন তাদের বলছি অবশ্যই আমার নোটগুলো পরবেন।মেইন ক্যারেক্টর যেহেতু দুইজনে তাই আমার দুইজনের ক্যারেক্টর ফুটিয়ে তুলতে হবে।ধন্যবাদ।]

সত্যি ভালোবাসো পর্ব ২৩

1 COMMENT

  1. Khub Khub Khub Khub Khub Khub Khub Khub Khub valo legeche Khub Khub Khub Khub Khub Khub sundor hoeache just osm golpo ta khub sundor hoeache

Comments are closed.