অনিমন্ত্রিত প্রেমনদী পর্ব ১৫

অনিমন্ত্রিত প্রেমনদী পর্ব ১৫
জিন্নাত চৌধুরী হাবিবা

সকাল থেকেই ঘরে বসে আছে তরী। মাথার ভেতর এক স্তূপ যন্ত্রণা। মা কখন থেকে নাস্তা করার জন্য ডাকাডাকি করে যাচ্ছেন। তরী বিরক্ত হয়ে বলল,
-“তোমরা খেয়ে নাও। আমার এখন ভালো লাগছেনা।”

মা কিছুক্ষণ চিৎকার চেঁচামেচি করলেন। সময়মতো খাবার না খাওয়া উনার অপছন্দের একটি কাজ। মিঠু একবার তরীর ঘরের দরজায় চোখ রাখলো। ভেতর থেকে লক করা নয়, তবে চাপিয়ে রাখা। বিয়ে বাড়ির ঘটনা তার অজানা নয়। সেরকম কিছু একটা নিয়েই যে তরী আপসেট সেটা বুঝতে পারলো।
বাবা তরীকে খাবার টেবিলে না দেখেই গম্ভীর গলায় কয়েকবার ডাকলেন। তরী বাবাকেও একই কথা বলে বসে রইলো। তাড়া আছে বলে বাবা নাস্তা করে বেরিয়ে গেলেন।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

সবকিছুই কেমন বিষাক্ত লাগছে। সবার আদর ভালোবাসাও তেতো মনে হচ্ছে। অযথায় মেজাজ খা*রা*প হলো তরীর। বুকের ভেতর গড়ে ওঠা ভয় বারবার ঘন্টা বাজিয়ে জানান দিচ্ছে বড় কিছু হারাতে চলেছে সে। পরক্ষণেই তরী ভাবলো ‘হারাবেটা কী? তার কিছু ছিলো না-কি?’ মাহমুদের সাথে তো তার কোন নামের সম্পর্ক ছিলোনা। সে বিয়ে করলেই বা তার কি যায় আসে!
মনকে কঠিন করে ঘর ছেড়ে বের হলো। নাস্তার টেবিলে বসেও খুব একটা গিলতে পারলোনা। ক্ষণে ক্ষণে বুকের ভেতরটা মোচড় দিয়ে ওঠে।

গতকাল রাতে প্রচন্ড ক্ষো*ভ নিয়েই তরীকে ছাদে আসতে বলে নক করেছিল মাহমুদ। মেয়েটা মেসেজ সিন করে রেখে দিয়েছে। রিপ্লাই করার প্রয়োজন মনে করেনি। এতে আরো মেজাজ খা*রা*প হলো তার। চোয়াল শক্ত করে দাঁত দাঁত চাপলো। দু’হাতে মাথার চুল খামছে ধরলো। চোখমুখ লাল হয়ে উঠলো তার। ক্রমাগত পায়চারি শেষে দু-ঘন্টা পর ছাদ থেকে নেমে এলো। তরী এলো না। ফোন সুইচ অফ রেখে শুয়ে পড়েছিল মাহমুদ। আকশসম রাগ গিয়ে জমা হলো তরীর উপর। রাতে ঠিকঠাক ঘুম হলোনা। ভোরের দিকেই একটু ভারী ঘুম হয়েছিল। চোখদুটো এখনো অনেকটা লাল হয়ে আছে। নিজের মাথা ঠান্ডা রাখার চেষ্টা করলো মাহমুদ। মায়ের সাথে আরেকবার কথা বলা উচিত। কলেজের জন্য তৈরি হয়ে নাস্তার টেবিলে বসলো। আয়েশা সুলতানা দুই ছেলেকে নাস্তা দিয়ে নিজেও বসে পড়লেন। মাহমুদ সরাসরি বলল,

-“তরীর যে অন্যত্র বিয়ে ঠিক হয়ে আছে, সেটা তুমি কিভাবে জানলে?”
আয়েশা সুলতানা চোখ তুলে ছেলেকে দেখে নিলেন। সরল গলায় বললেন,
-“ওর মায়ের কাছেই শুনেছি। চাচাতো ভাইয়ের সাথে বিয়ের ব্যাপারে ওর বাবা কথা দিয়ে রেখেছেন। তরীর পড়াশোনা শেষ হোক, ততদিনে ছেলে লন্ডন থেকে ফিরুক। পরেই বিয়ের কাজ শুরু হবে।”
রামি ঝট করেই মাথা তুলে তাকালো। এতক্ষণ তার ধ্যান-জ্ঞান ছিলো খাবারে। তরীর বিয়ে ঠিক হলো কবে? মাকে জিজ্ঞেস করে বসলো,

-“কখন তরী আপুর বিয়ে ঠিক হলো? কই মিঠুও তো আমায় বলেনি।”
-“ওর বাবা মা ছাড়া কেউ জানেনা। তরীও জানেনা। সেদিন উনারা তরীর বড় চাচার সাথে ফোনে কথা বলছিলেন। আমিও গিয়ে বসেছি। তখন তরীর মা নিজেই বললেন আমাকে।”
ভুরু কুঁচকে গেল মাহমুদের। তরী জানেনা! এ কেমন কথা? মেয়ের ইচ্ছের বিরুদ্ধে কথা দিয়ে দেওয়া কেমন কাজ?
সে মায়ের উদ্দেশ্যে বলল,

-“তরী যেহেতু জানেনা। তাহলে নিশ্চয়ই বিয়ের কথা একেবারে পাকাপাকি হয়নি। তুমি প্রস্তাব রাখতে সমস্যা কোথায়?”
আয়েশা সুলতানা অদ্ভুতভাবে তাকিয়ে আছেন। ছেলে কখনো এমন খোলামেলা কথা বলে না। এমন অনুচিত আবদার দেখে বুঝলেন হয়তো ছেলে খুব পছন্দ করে তরীকে। দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন,
-“আমি বলে দেখবো। তবে মনে হয়না তরীর বাবা রাজি হবেন। তাছাড়া তরী কী বলে সেটাও জানতে হবে।”

মাহমুদ কথা বাড়ালোনা। দ্রুত নাস্তা সেরে বেরিয়ে পড়লো। তরী আলাদা রিকশা নিয়ে চলে গেল।
এখান থেকে তার বিষাদের পাতার সূচনা। তাকে অবাক করে দিয়ে মাহমুদ ও আর ডাকলোনা। মন বিষিয়ে উঠলো তরীর। দুদিনেই মানুষ এতটা পর হয়ে যেতে পারে? অবশ্য দো*ষ*টা তারই ছিলো। যেছে কারো সঙ্গ দেওয়া উচিত নয়। বিনিময়ে সে দুঃখ ছাড়া আর কিছুই পেল না।
আজ আর লেকচারেও মন বসছেনা। পাশ থেকেই সোমা জিজ্ঞেস করলো,

-“তোর কী হয়েছে রে তরী? তোকে এমন আপসেট দেখাচ্ছে কেন?”
তরী সযত্নে সত্যটা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে বলল,
-“এমনিতেই আজ শরীরটা ভালো লাগছেনা।”
-“বাসায় চলে যাবি?”
তরী একবার ভাবলো বাসায় চলে যাবে। পরক্ষণেই মত বদলে ফেললো। এখন বাসায় গেলেই সবকিছু মনে পড়ে যাবে। একাকীত্ব এসে ঝেঁকে ধরবে তাকে। এখানে সবার সাথে থাকলে কিছুটা হলেও ভুলে থাকতে পারবে সবকিছু। মাথা দুলিয়ে অসম্মতি জানালো। সোমা বলল,

-“তাহলে চল, বাইরে গিয়ে কিছুক্ষণ বসি।”
-“চল।”
দুজনে বাইরে এসে ঘাসের উপর বসলো। একবার ভাবলো সোমাকে সবটা খুলে বলবে। তারপরই ভাবলো না থাক। ক্লাস ছুটির পর বেরিয়ে গেল দুজন। দু’জনের বাসা ভার্সিটি থেকে বিপরীতে হওয়ায় দুজন দুদিকে এগিয়ে গেল। পরপর দুটো বাস এসে চলে গেল। তরী যাত্রী ছাউনির বেঞ্চিতে বসে রইলো। বাসায় যেতে মোটেই ইচ্ছে করছেনা। চোখমুখ লাল হয়ে আছে।
মাহমুদ নিঃশব্দে এগিয়ে গেল। তরী যে পরপর দুটো বাস ইচ্ছেকৃত মিস দিয়েছে সেটাও স্পষ্ট দেখলো। তপ্ত শ্বাস ছেড়ে তরীর হাত চেপে ধরলো।

-“চলুন তরী।”
এভাবে হাত চেপে ধরায় তরী চমকে উঠলো। মাহমুদকে দেখেই হাত ছাড়িয়ে দৃষ্টি ফিরিয়ে নিলো। তবে কিছু বললোনা। মাহমুদ অপলক চেয়ে থেকে দেখলো মেয়েটার অভিমান। দুর্বোধ্য হাসলো সে। কেউ দেখার আগেই নিপুণভাবে মিলিয়ে গেল সেই হাসি। মাথা ঝাঁকিয়ে শুধালো,
-“নক করেছিলাম আপনাকে। ছাদে আসেন নি কেন?”
তরী চোখমুখ শক্ত করে বলল,
-“আপনি বললেই কি যখন-তখন আমায় ছাদে আসতে হবে?”
তরীর মাঝে স্পষ্ট রাগ। আজ আর কোন লজ্জা, অস্থিরতার চিহ্নটুকু নেই। মাহমুদ সাধারণ বিষয়েও মুগ্ধ হলো। মৃদু হেসে বলল,

-“ঠিক আছে, ইচ্ছে না হলে ছাদে আসতে হবেনা। তবে আমার কিছু কথা আছে। আসুন আমার সাথে।”
তরীর রাগ বাড়লো তরতর করে। ভীষণ কান্না পাচ্ছে তার। চোখমুখ লাল হয়ে আছে। মানুষটি কী সুন্দর হেসে হেসে কথা বলছে। অথচ তার ভেতরটা এক নিমিষেই ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছে। তার উপরে ঠুনকো একটা খোলস অবশিষ্ট আছে। ভেতরটা ভঙ্গুর। নিজেকে শক্ত রেখে বলল,

-“আমার কোন কথা শোনার নেই।”
-“কিন্তু আমার বলার আছে। আপনাকে শুনতে হবে, চলুন।”
মাহমুদের কন্ঠে স্পষ্ট অধিকারবোধ।
তরী আশেপাশে তাকিয়ে ফোঁস করে নিঃশ্বাস ছাড়লো। যতক্ষণ না মাহমুদের কথা শুনবে দেখা যাবে নাছোড়বান্দা এখান থেকে নড়বেনা। তরী মাহমুদের পিছু পিছু হাঁটলো। কাছেই একটা কফিশপে বসলো। গ্লাস ভেদ করে রাস্তার কোলাহলে চোখ রাখলো তরী। মাহমুদ তরীকে এক পলক দেখে বলল,

-“আমার দিকে ফিরুন।”
তরী দৃষ্টি বাইরে রেখেই বলল
-“আপনি বলতে পারেন। শুনছি আমি।”
মাহমুদ ভুরু কুঁচকে তাকালো। মিটিমিটি হেসে বলল,
-“ভয় করছে তাকাতে?”
তরী সরাসরি মাহমুদের চোখে চোখ রাখলো। চোখমুখ শক্ত করে বলল,
-“ভয় করতে যাবে কেন?”
-“মা আমার জন্য মেয়ে দেখেছে। সব ঠিকঠাক থাকলে বিয়েটাও হয়ে যাবে।”

ভেতরটা দুমড়েমুচড়ে যাচ্ছে। দাঁতে দাঁত লেগে যাচ্ছে যন্ত্রণায়। আর একটু হলেই চোখে পানি এসে পড়বে। তরী কোনভাবে মুখ থেকে বের করলো,
-“সেটা আমাকে বলছেন কেন?”
-“আপনি আমার কাছে খুব ভালো একজন বন্ধু, সেজন্যই বলছি।”
তরীর মেজাজ খারাপ হলো। সে একজন ভালো বন্ধু! এটাই এনাফ, আর কিছু না! তরী ত্যাড়াস্বরে শুধালো,
-“আপনার সাথে আমি কবে ঘটা করে বন্ধুত্ব করলাম?”

মাহমুদ ঠোঁট টিপে হাসলো। তরীকে এই মুহুর্তে ভীষণ ভালোলাগছে দেখতে। আর বোধহয় রাগানো ঠিক হবেনা। মাহমুদের গভীর চোখজোড়া স্থির হলো। কোমল স্বরে বলল,
-“আমি মায়ের পছন্দের মেয়েকে বিয়ে করছিনা, তরী।
আমি শুধু আপনার।”

তরী চমকে তাকালো। স্তব্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকলো অনেকক্ষণ। খানিক পর উপলব্ধি করলো তার ভেতরটা ঠান্ডা হচ্ছে একটু একটু করে। রাগ পড়ে যাচ্ছে সর্বোচ্চ গতিতে। মাহমুদ টেবিলের উপর থাকা তরীর ডান হাতে আলতো ভাবে ছুঁয়ে দিলো। আস্তে আস্তে দুহাতের মুঠোয় কবজা করতে নিতেই তরী হাত ছাড়াতে চাইলো। গাল ফুলিয়ে আছে মেয়েটা। অশান্ত দৃষ্টি এদিকওদিক ঘুরছে। মাহমুদ নিবিড় স্বরে বলল,
-“আপনি ছাড়া আমি খুশি থাকতে পারবোনা, তরী। আমার আপনাকেই লাগবে।”
তরী ঢোক গিললো। হাত ছাড়িয়ে অভিমানী স্বরে জানান দিলো,

-“আমি আপনার কিছু হই না। তাই আমাকে ছাড়া খুশি না থাকার প্রশ্নই ওঠে না।”
মাহমুদ নিঃশব্দে হাসলো।
-“আপনি আমার অনেককিছু, তরী। আমার চোখের দিকে তাকান। এই চোখজোড়া বলে দেবে আপনি আমার সবকিছু।”
তরী এবার লজ্জা পেতে লাগলো। অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে বলল,
-“আমি বাসায় যাবো। দেরি হলে বাবা-মা চিন্তা করবেন।”

-“আমার যেতে ইচ্ছে করছে না, তরী। প্লিজ আরেকটু বসুন!”
তরী আর ওঠার জন্য তাড়া দেখালোনা। মাহমুদ বলল,
-“আপনি বড্ড বোকা, তরী। ভীষণ বোকা।”
তরীর রাগ লাগলো। নাকের পাটা ফুলে উঠছে তার।
মাহমুদ বলল,

-“আপনি আমায় জিজ্ঞেস করতে পারতেন। আমায় না জেনেই মায়ের একটা পছন্দের ভিত্তিতে কষ্ট দিলেন আমায়। ভীষণ কষ্ট পেয়েছি আমি। বুকে হাত দিয়ে দেখুন।”
তরী ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছে। ব্যাপারটা বোধগম্য হতেই গাল দুটো আরক্তিম হলো। এলোমেলো হয়ে গেল দৃষ্টি। দ্রিমদ্রিম হাতুড়ি পেটার শব্দ হলো হৃৎযন্ত্রে।

বাড়ি ফিরেই সবচেয়ে বেশি সারপ্রাইজ হয়েছিল তরী। বসার ঘরে আয়েশা আন্টি বসে আছেন। খুব আয়োজন করেই এসেছেন।
তরী রামিকে জিজ্ঞেস করলো,
-“কী ব্যাপার রামি। তোরা এত কিছু নিয়ে এসেছিস? কোন খুশির খবর আছে না-কি?”
তরী ভাবলো ইরা বোধহয় প্রেগন্যান্ট। পরক্ষণেই ভাবলো প্রেগন্যান্ট হলে নাহয় শুধু মিষ্টি নিয়ে আসতো। এত ফল-মূল, মিষ্টি আনার কী মানে হতে পারে? রামি মিটিমিটি হেসে বলল,

-“সুন্দরী, আমার না হও, তাতে আফসোস নেই। তবে আমার ভাইয়ের তোমায় হতেই হবে।”
তরী চোখ বড়ো বড়ো করে তাকালো। রামি মৃদু হেসে ফিসফিস করে তরীর কানে বলল,
-“আমরা ভাইয়ার জন্য তোমাদের বাসায় সমন্ধ নিয়ে এসেছি।”
তরী বিস্ময়ের চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে গেল। কই মাহমুদ তো তাকে কিছু জানায় নি! এভাবে তাকে চমকে দেওয়ার মানে কি! ভুরভুর করে লজ্জা ছড়ালো তার চোখেমুখে।

তবে ভয় হচ্ছে তরীর। বুকের ভেতর ধুকপুক করছে। বাবা একবার অমত করলে আর রাজি করানো সম্ভব নয়। ভালোলাগার সাথে সাথে আতঙ্ক এসে ভর করলো। হাতের তালু ঘামছে ঘন ঘন। রুমের ভেতর পায়চারি চলছে তার।
আয়েশা সুলতানার অস্বস্তি হচ্ছে। উনারা যেহেতু অন্যত্র কথা দিয়ে ফেলেছেন, তখন প্রস্তাব রাখা উচিত না। তাছাড়া ব্যাপারটি তিনি স্পষ্ট জেনে বুঝে নিজের ছেলের জন্য এসেছেন। তরীর বাবা বললেন,

-“আপনি কিছু জরুরি কথা বলবেন বলেছিলেন। সেই কখন থেকেই তো বসে আছেন।”
আয়েশা সুলতানা প্রচন্ড নার্ভাস। নিজেকে ধাতস্থ করে প্রস্তাব রাখলেন,
-“মেজো ছেলেকে বিয়ে করাতে চাচ্ছি। তরীকে আমার ভীষণ পছন্দ হয়েছে।”

অনিমন্ত্রিত প্রেমনদী পর্ব ১৪

এতটুকু বলেই থেমে গেলেন আয়েশা সুলতানা। থামতে হলো। অস্বস্তি ভরা চোখে তরীর বাবা-মাকে দেখলেন। তরীর বাবার দৃষ্টি একেবারে শান্ত। যেন ঝড়ের পূর্বাভাস। আয়েশা সুলতানা মনে মনে আগত ঝড়ের জন্য প্রস্তুত হয়ে নিলেন।

অনিমন্ত্রিত প্রেমনদী পর্ব ১৬