অনিমন্ত্রিত প্রেমনদী সিজন ২ পর্ব ৪

অনিমন্ত্রিত প্রেমনদী সিজন ২ পর্ব ৪
জিন্নাত চৌধুরী হাবিবা

“আমি বাসায় গিয়ে নাস্তা করবো। রাতে গেইট লক করে এখানে এসেছি। কেউ বের হতে পারছেনা। বারবার কল দিচ্ছে।”
অরু বলল,
“আচ্ছা ঠিক আছে।”
রামি বাইরে বেরিয়ে হাঁপ ছেড়ে বাঁচলো। দ্রুত গেইটের তালা খুলে দিতেই মাহমুদ আর সাদাদ ভাই বেরিয়ে এলেন। মাহমুদ মৃদু ধমক দিয়ে বলল,

“আমাদের সকালে অফিস টাইম। তুই রাতে কাউকে ডেকে দিয়ে ও বাসায় গেলে কি হতো না?”
রামি বলল,
“সরি! মনে ছিলনা।”
আর কিছু না বলে মাহমুদ আর সাদাদ ভাইয়া বেরিয়ে গেলেন। রামি ভেতরে ঢুকে ফ্রেশ হয়ে নিলো।
অমিকে খাবার খাওয়াচ্ছে তরী। বাচ্চাটা এত তিড়িংবিড়িং করে যে ক্লান্ত হয়ে যায় তরী। ঈশিতা পাশের চেয়ারে বসে বলল,
“অমি তুই বড় হয়ে আপুর মতো পড়াশোনা করবি?”
অমি চোখ পিটপিট করে তাকালো। কিছুক্ষণ ভেবে গালে আঙ্গুল রেখে বলল,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

“না।”
“কেন?”
ঈশিতার প্রশ্নে নাকমুখ কুঁচকে নিল অমি। ক্লান্ত ভঙ্গিতে বলল,
“এসব কথা বললে আমার জ্বর ওঠে। তুমি আর এসব বলো না আপু।”
তরীর চোখ চড়কগাছ। এই ছেলে অতিরিক্ত পাকামো করছে। চার বছরে পড়াশোনার কী বোঝে? অথচ সে বলছে তার না-কি পড়াশোনার কথা শুনলে জ্বর আসে! ঈশিতা খিলখিল করে হেসে অমির গাল টে*নে দিলো। অমি নিজেও ঈশিতার দেখাদেখি মিটিমিটি হেসে ঈশিতার গাল টে*নে দিলো।
অরু হলে ফিরে যাচ্ছে। তরীর কাছ থেকে বিদায় নিতে এসে দেখলো অমিকে খাওয়াচ্ছে সে।

“আপু আমি যাচ্ছি।”
তরী অমিকে রেখে উঠে দাঁড়ালো।
“খেয়েছিস তুই? চল নাস্তা করে নে। আপু এখনও খাইনি। অমিকে খাইয়ে ও বাসায় যেতাম।”
অমি কোমরে দু-হাত রেখে অরুর উদ্দেশ্যে বলল,
“আমার আম্মু রান্না করেছে না? তুমি কেন খাবে? তুমি কি কাজ করেছো? যেখান থেকে কাজ করে এসেছো সেখানে গিয়ে খাবার খাও।”
অরুও অমির মতো কোমরে দু-হাত রেখে বলল,

“আমি এখানেই খাবো। তাও অমির খাবার খাবো।”
“দেব না তোমায়।”
অরু অমিকে শুনিয়ে বলল,
“আমার কাছে চকোলেট আছে। একা একাই খাবো।”
অমি মুহূর্তেই ভাবভঙ্গি পরিবর্তন করে ফেললো। ছোটো ছোটো হাতে অল্প একটু খাবার তুলে অরুকে ডাকলো।
“খালামনি।”
অরু ভেংচি কে*টে বলল,
“খাবো না আমি।”

“আমি খাইয়ে দেব তো। আমি তোমার বাবা না?”
অরু অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে হাসলো। অতঃপর বলল,
“আমার বাবা আমাদের বাসায় আছে।”
মুহুর্তেই অমি কেঁদেকেটে অস্থির হয়ে পড়লো। শেষমেশ কূলকিনারা না পেয়ে অমির হাতে খাবার খেতেই হলো অরুকে। কোনভাবে অরুর মুখে খাবার টুকু গুঁজে দিয়েই বলল,

“চকোলেট দাও।”
তরী নাস্তা বেড়ে নিতেই অরু বলল,
“তুমি খেয়ে নাও। আমি বাসা থেকে খেয়ে এসেছি। এখনই ফিরতে হবে। দেরি হয়ে যাচ্ছে।”
“একটু দাড়া” বলেই তরী রামিকে ডাকলো।
“রামি।”

রামি ঘর ছেড়ে বেরিয়ে এলো। পরনে বাসায় পরার নরমাল টি-শার্ট আর ট্রাউজার। তরী বলল,
“অরুকে দিয়ে আয়। কখন গাড়ি পাবে না পাবে। দেরি হয়ে যাচ্ছে ওর।”
রামি তরীর কথায় না করতে পারলোনা। দ্রুত চেঞ্জ করে অরুকে নিয়ে বেরিয়ে পড়লো। চেষ্টা করছে অরুর দিকে না তাকাতে। সে বুঝতে পেরেছে তার অস্থিরতার কারণ। গাড়িতে দুজনের টুকটাক কথা হলেও রামি অরুর দিকে তাকালোনা। অরু হলে না গিয়ে সোজা ক্লাসের জন্য চলে এলো। রামি একবার জিজ্ঞেস করলো,

“কিছু খাবি? কিনে দেব?”
“না, খেয়েই বেরিয়েছি। তুমি বাসায় চলে যাও।”
অরু গেইট দিয়ে ভেতরে ঢোকার সময় আবিরের সাথে দেখা হলো। দুজনেই কথা বলতে বলতে ভেতরে গেল। রামি পেছন থেকে তাকিয়ে দেখলো। দীর্ঘশ্বাস ফেলে বাসার দিকে পা বাড়ালো সে। তার অনুভূতি বড্ড বেমানান।

অরুর কলেজের সামনে এসে দাঁড়ালো একটা চকচকে সাদা রঙের গাড়ি। মিঠু আজ প্রথম অরুর সাথে কলেজে দেখা করতে এসেছে। বুকের দিকের কয়েকটা বোতাম খোলা। বাইরে তার একটা গম্ভীরভাব বজায় থাকে। চোখের তীক্ষ্ণতা, হাঁটার ভঙ্গি বলে দেবে মিঠু নিঃসন্দেহে সুদর্শন পুরুষ। গাড়ি থেকে নামতেই ভীড় জমলো আশেপাশে। কেউ কেউ দূরে দাঁড়িয়ে দেখছে, কেউবা একটা সেলফি তোলার আশায় মিঠুর চারপাশ ঘেরাও করে রেখেছে। রিয়াজসহ আরও কয়েকজন পথ খালি করে দিতেই মিঠু এগিয়ে গেল। কল দিল অরুর নম্বরে। দশমিনিট পূর্বেই তার লেকচার শেষ হয়েছে। ভাইয়ের কল পেয়ে এগিয়ে এলো সামনের দিকটায়। মিঠু অরুকে দেখে হাত উঁচু করলো।
অরু জিজ্ঞেস করলো,

“তুমি এখানে? এদিকে কাজ ছিলো?”
“হুম, নে ধর” বলেই অরুর দিকে ফোন বাড়িয়ে দিল। সকালে কাজ থাকায় বেরিয়ে গেলেও মিঠু ঠিকই মনে রেখেছে ফোনের কথা। নতুন ফোন পেয়ে আহ্লাদী হয়ে উঠলো অরু। সে বরাবরই প্রিয় মানুষদের কাছে আহ্লাদী। তাদের কাছে কখনোই বড়ো হতে ইচ্ছে করেনা।
“থ্যাঙ্কিউ আমার পঁচা কুমড়া।”
বলে মিঠুকে একহাতে আলতো ভাবে জড়িয়ে ধরলো অরু। মিঠুও ওর মাথায় হাত রেখে বলল,

“খিদে পেয়েছে? কিছু খেয়েছিস?”
“সকালে খেয়ে বেরিয়েছি। এখন খিদে পেয়েছে।”
“তাহলে চল।”
অরুকে নিয়ে বেরিয়ে গেল মিঠু। গাড়িতে চড়ে দুজনই একটা রেস্তোরাঁয় বসে খেয়ে নিলো। অরুকে হলে নামিয়ে দিয়ে মিঠু ফিরে গেল নিজ কাজে।

সোশাল মিডিয়ায় একটা ভিডিও ভাইরাল হয়েছে দারুণভাবে। ক্যাপশন “ভালোবাসা সুন্দর। জনাব ইবতেসাম এর মতো মানুষও প্রেমে পড়েছেন। গার্লফ্রেন্ডের সাথে দেখা করতেই আজ উনাকে দেখা গেল ঢাকা মেডিকেল কলেজ প্রাঙ্গণে।”
ভিডিওতে অরু আর মিঠুর হাস্যজ্জ্বল চেহারা ভেসে উঠেছে।

কেউ কমেন্টে মজা নিচ্ছে, কেউ বা দোয়া দিচ্ছে। কেউ কেউ বলছে ‘ওটা ইবতেসাম এর ছোটোবোন। গার্লফ্রেন্ড নয়।’
তবুও যাদের মজা নেওয়ার তারা নিচ্ছে। ভিডিওটি দেখে মিঠুর মাথায় রক্ত চড়ে গেল। কিছু নিম্ন মানসিকতার মানুষের জন্য দেশটা আজ রসাতলে। তবে এটা কোন বাইরের মানুষের কাজ নয়। তারই প্রকাশ্য শ*ত্রু জেনে-বুঝে এমন একটা চাল চেলেছে মিঠুকে সাময়িকভাবে দমিয়ে রাখার জন্য।
মিঠু আগে অরুকে ফোন করলো। ব্যাপারটা সামনে পড়লে অরুর মনে প্রভাব পড়তে পারে। তাকে আগে সামলানো উচিত।
অরু ফোন রিসিভ করেই বলল,

“হ্যাঁ বলো।”
“শোন, একটা ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। তুই আ…”
মিঠুকে কথা শেষ করতে দিলোনা অরু। বলল,
“দেখেছি আমি। তুমি টেনশন নিও না।”
মিঠু হাঁপ ছেড়ে বাঁচলো। বলল,
“সাবধানে থাকিস। এসব নিয়ে দুশ্চিন্তা করার প্রয়োজন নেই। এই জন্যই আমি বাড়ির বাইরে তোর সাথে বা পরিবারের কারো সাথে দেখা করিনা।”

“আমি এখন পড়ছি। তুমি এখন রাখো।”
টুক করে কল কে*টে গেল। মিঠু মুঠোফোন পকেটে গুঁজে বেরিয়ে পড়লো শ*ত্রু মোকাবেলায়।
সুহা অফিস শেষ দিয়ে আজও গাড়ির জন্য দাঁড়ালো। আজকের ভাইরাল ভিডিও সেও দেখেছে। তার কেন যেন ইবতেসাম এর সাথের মেয়েটি আর ইবতেসামের চেহারা একরকম মনে হয়েছে। যদি গার্লফ্রেন্ড হয়েও থাকে, মানুষের এসব ভাইরাল করার কী মানে সেটা বুঝতে পারলোনা সুহা। শুধু শুধু একজন মানুষের পারসোনাল ম্যাটার টে*নে*হিঁ*চ*ড়ে সামনে নিয়ে আসা। সে একজন পরিচিত মুখ বলেই কি তার ব্যক্তিগত কিছু থাকতে নেই?

বিরক্তিতে মুখ ভোতা হয়ে আছে। আজ এমনিতেও কাজের চাপ ছিলো বেশি। মাথাটাও ধরেছে ভীষণ। মিঠু গাড়ি নিয়ে এখান দিয়েই যাচ্ছিল। রিয়াজ বাইরে সুহাকে দেখিয়ে বলল,
“ভাই সেই মেয়েটা।”
মিঠু বাইরে নজর রাখলো। নাম না জানা মেয়েটাকে ভীষণ ক্লান্ত দেখাচ্ছে। রিয়াজকে বলল,
“উনাকে একটা গাড়ি দেখে দিয়ে আয়। মনে হচ্ছে গাড়ির জন্যই অপেক্ষা করছেন।”
“আমাদের সাথে তুলে নিন।”
মিঠু একবার শান্ত চোখে তাকালো। তার তাকানো দেখে ঢোক গিললো রিয়াজ। বলল,
“আচ্ছা দেখছি।”

গাড়ি থেকে নেমে রিয়াজ সুহার সামনে এসে দাঁড়ালো। বলল,
“কেমন আছেন আপু?”
ছেলেটাকে দেখে চিনতে অসুবিধা হলো না সুহার। মিষ্টি হেসে বলল,
“জি, ভালো আছি। আপনি কেমন আছেন?”
“আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। গাড়ি দেখে দেব একটা?”
সুহা কৃতজ্ঞতা সূচক হেসে বলল,

“আপনার হয়তো তাড়া আছে। আমি খুঁজে নেব,সমস্যা নেই।”
“আরে না না। ভাই পাঠিয়েছেন আমাকে। আপনাকে গাড়িতে উঠিয়ে আমি ভাইয়ের সাথে চলে যাব।”
অতঃপর হাতের ইশারায় মিঠুর গাড়িটি দেখিয়ে বলল,
“ঐ যে ভাই গাড়ি নিয়ে অপেক্ষা করছেন।”
সুহা নিজেকে খুব স্পেশাল ফিল করালো না। ইবতেসাম নামক এই নেতার বিভিন্ন কাজ সে মাঝেমধ্যে দেখে সোশাল মিডিয়ায়। ছেলে-মেয়ে, বৃদ্ধ নির্বিশেষে সকলকেই মোটামুটি সাহায্য করেন। আধাঘন্টা অপেক্ষা করেও কোন খালি ট্যাক্সি পাওয়া গেল না। রিয়াজের মুঠোফোন শব্দ করে উঠলো। মিঠু গাড়িতে বসেই কল দিল।

“জি ভাই।”
“উনাকে বলো ড্রপ করে দিচ্ছি।”
রিয়াজ কান থেকে ফোন নামিয়ে বলল,
“গাড়ি পাওয়া যাচ্ছে না। আপনি বরং আমাদের সাথে চলুন। আপনার ঠিকানা অনুযায়ী নামিয়ে দিচ্ছি।”
সুহা সরাসরি না করলোনা। তবে তার চোখমুখের ভাষা বলে দিচ্ছে সে কম্ফোর্ট না। রিয়াজ বলল,

“আমি অন্য একটা কাজে যাবো। আপনাকে নামিয়ে দিয়ে ভাই নিজের কাজে চলে যাবেন। কতক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবেন?”
সুহা সময় দেখলো। একটুপরই সন্ধ্যা নামবে। তারপর গাড়ি পেলেও জ্যামসহ বাসায় ফিরতে ফিরতে লেইট হবে। মাথাটাও বড্ড যন্ত্রণা দিচ্ছে। তাই রিয়াজের সাথে পা বাড়ালো। মিঠু একপাশে চেপে বসলো। সুহা ব্যাগ কোলে রেখে সামনে দৃষ্টি রেখে বসলো। গাড়ি চলার ফাঁকে মাঝেমধ্যে সুহা কপাল চেপে ধরছে। মিঠু একবার পাশে তাকিয়ে ড্রাইভারকে গাড়ি থামাতে বলে চা নিয়ে আসতে বলল।

তিনি দু-কাপ রং চা নিয়ে হাজির হলেন। মিঠু এক কাপ চা বাড়িয়ে দিল সুহার দিকে। সুহার ঠোঁটে ফোঁটে উঠলো কৃতজ্ঞতার হাসি। এরপর দুজনের মাঝে টুকটাক কথা হলো, তবে খুবই স্বল্প। সুহার বাসা এসে যেতেই সে নেমে পড়লো। বিদায় বেলায় একটা ছোট্ট ধন্যবাদ দিতে ভুললোনা সুহা।
মিঠু গাঁড়ি হাঁকিয়ে ছুটে গেল এমদাদুল হকের নিকট। রাজনীতিতে তার প্রতিদ্বন্দ্বীদের মাঝে এমদাদুল হক একজন। বেশ বাকবিতন্ডা হলো দুজনের মাঝে। এমদাদুল হক এক পর্যায়ে বললেন,
“সরে দাড়াও ইবতেসাম। তুমি বয়সে আমার তুলনায় ঢের ছোটো। কত টাকা লাগবে?”
মিঠু চোয়াল শক্ত করে জবাব দিল,

“ইবতেসামকে কেউ টাকা দিয়ে কিনতে পারেনা। মানুষ তাকে কেবল ভালোবাসার মাধ্যমেই জয় করতে পারে। আমি যখন একবার এই পথে পা বাড়িয়েছি, তখন নিজের জায়গা থেকে একচুল পরিমাণ সরে দাঁড়াবো না।”
এমদাদুল হক ঠোঁট বাঁকা করে হাসলেন। বললেন,
“আমি তোমারও অনেক আগে থেকে এই জগতে বসবাস করি, জানোতো?
এই জগৎ তোমার জন্য না। টিকতে পারবেনা।”
“ধন্যবাদ, আবার দেখা হবে।”
বলেই মিঠু গটগট পায়ে হেঁটে বেরিয়ে গেল।

রাতের খাবারের পর ইরা ঈশিতার ঘরে পা বাড়াতে যাবে তখনই আৎকে উঠলো সাদাদের আর্তনাদে। বুক চেপে কাতরাচ্ছে। ইরা দৌড়ে গিয়ে সাদাদের বুকে হাত রেখে বলল,
“কী হয়েছে তোমার? বুকের ব্যথাটা বেড়েছে?”
বিচলিত ইরারকে দেখে মিটিমিটি হাসলো সাদাদ। বুকে চেপে রাখা ইরার হাতে নিজের হাত চেপে ফের মিথ্যে আর্তনাদ করে বলল,

“ইরা আমার হার্টের ভেতর অ্যাটাক করবে। এক্ষুণি রুমে চলো।”
ইরা ফোঁস করে রাগ ঝাড়লো। সাদাদের বাহুতে থা*প্প*ড় বসিয়ে নিজেও হেসে দিল। এই মানুষটার উপর সে কখনোই রাগ ধরে রাখতে পারেনা।
এখন মধ্যরাত। অমি, ঈশিতা দাদুআপুর সাথেই আজ ঘুমিয়েছে। মাহমুদ তরীকে ডেকে বলল,
“চল তো তরী।”
“কোথায়?”

তরীর প্রশ্নের জবাব না দিয়ে মাহমুদ তাকে টে*নে তুলে দিল। দরজার লক খুলে বাইরে নিয়ে গিয়ে বলল,
“আজ আমরা এই শহর ঘুরবো। কতদিন হলো আমাদের প্রেমনদীতে ভাসা হয়না। চলনা আজ একসাথে ভাসি!”
তরী অনুরাগী স্বরে বলল,
“আপনার ভেতরের এই প্রেমিক সত্তাটা না হারাক। অনন্তকাল আপনার প্রেমিকা হয়ে বাঁচতে চাই আমি।”
চোখে চোখ রাখলো মাহমুদ।
“আমার প্রেমনদীতে যদি কখনো খেয়াতরী না ভীড়ে, তবুও আমি ভালোবেসে যাবো, পুরোনো স্মৃতি রোমন্থন করে বারবার প্রেমে পড়বো।”

অনিমন্ত্রিত প্রেমনদী সিজন ২ পর্ব ৩

বলে তরীকে নিয়ে গাড়িতে চড়লো মাহমুদ। একহাতে ড্রাইভিং করছে অপর হাতটি তরীর হাত আঁকড়ে ধরে রেখেছে। তরী বারবার মুগ্ধ হয়। তার কাছে মনে হয় মাহমুদ সর্বকালের সেরা প্রেমিক, সেরা স্বামী। স্বামী নামক সম্পকের আড়ালে আজও তার প্রেমিক সত্তা টিকে আছে ঠিক প্রথমদিকের মতোই।

অনিমন্ত্রিত প্রেমনদী সিজন ২ পর্ব ৫