অনেক সাধনার পরে পর্ব ২০

অনেক সাধনার পরে পর্ব ২০
অরনিশা সাথী

স্ব-পরিবারে নোমান সাহেব আজ হাজির হয়েছে রায়হান সাহেবের বাড়িতে। সাথে বড় ভাই রোমান সাহেবের পরিবারের লোকজন’ও আছে। রায়হান সাহেবের পুরো বাড়িতে আজ উৎসব মুখোর আনন্দে ভরপুর। রুজবার মা চাচিরা হরেক রকমের নাস্তার আয়োজনে রান্নাঘরে ব্যস্ত। রুজবা লজ্জায় ঘর থেকে বের হচ্ছে না।

যদিও’বা প্রেমের বিয়ে না কিন্তু অদ্ভুত অনুভূতি হচ্ছে রুজবার। এই প্রথম দেখতে এসেছে ওকে। সেজেগুজে কতগুলো মানুষের সামনে যেতে হবে এই ভেবেই রুজবার আরো ভয় ভয় লাগছে বেশি। চুপচাপ নিজের ঘরে ঘাপটি মেরে বসে আছে ও। সাথে চাপা কষ্ট হচ্ছে বুকের ভিতর। জারাফের কথা মনে হচ্ছে ভীষণ, এই যে ও’কে যেমন দেখতে এসেছে, দেখতে এসেছে বললে ভুল হবে। বিয়েটা প্রায় ঠিকঠাক।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

নুহাশের সাথেই যে ওর বিয়েটা হবে এতে কোনো সন্দেহ নেই। কথাগুলো ভাবতেই ওর এত কষ্ট হচ্ছে জারাফের জন্য বুকের ভিতর দুমড়ে মুচড়ে শেষ হয়ে যাচ্ছে। জারাফের কি এমন অনুভূতি হয়নি? তাচ্ছিল্য হাসলো রুজবা। জারাফের কেন কষ্ট হবে? ও তো নিজেই নিদ্রা’র সাথে বিয়েতে রাজি। কয়েক ফোঁটা অশ্রু গড়িয়ে পড়লো ওর চোখ থেকে। জুতো’র আওয়াজ পেতেই চোখ মুছলো রুজবা৷ ফারিন আর জান্নাত ঘরে এসে রুজবাকে তাড়া দিলো রেডি হওয়ার জন্য। রুজবা পুতুলের ন্যায় বসে রয় বিছানায়। ফারিন গিয়ে পাশে বসে বলে,

–“মন খারাপ করে থাকিস না, যা হচ্ছে খুব ভালো হচ্ছে৷”
রুজবা নিষ্প্রাণ চোখে তাকায়। ফারিন আবারো বলে,
–“একদিন এই নুহাশ ভাই’কে নিজের জীবনে, একান্ত নিজের করে পাওয়ার জন্য আল্লাহ’র দরবারে কোটি কোটি শুকরিয়া জানাবি তুই দেখে নিস।”

ওদের দুজনকে ফুসুরফুসুর করতে দেখে জান্নাত এগিয়ে এসে বলে,
–“কি বলছিস তোরা? জলদি রেডি হো রুজবা, ওদিকে সবাই অপেক্ষায় আছে।”
ফারিন রুজবার হাতে পেটিকোট আর ব্লাউজ দিয়ে ঠেলেঠুলে ওয়াশরুমে পাঠায়। মিনিট পাঁচেক সময় নিয়ে সেগুলো পড়ে বেরিয়ে আসে ও। জান্নাত শাড়ি পড়ানোতে মনোযোগ দেয়৷ রুজবা কাঠের পুতুলের ন্যায় আছে। যেভাবে বলছে সেভাবেই করছে। শাড়ি পড়িয়ে সাজাতে গেলেই বাঁধ সাধে রুজবা। বলে,

–“সাজবো না আপু।”
–“একটু না সাজলে হয়?”
রুজবা নিরব থাকে। ফারিন উঠে এসে বলে,
–“আমি সাজাচ্ছি।”

জান্নাত বিছানায় গিয়ে বসে। ফারিন সাজানো শুরু করে। তেমন কিছু না শুধু চোখে কাজল আর ঠোঁটে হালকা গোলাপি লিপস্টিক দিয়েই সাজ শেষ করে ও। আর লম্বা চুলগুলো হাত খোপা করে দেয়। জান্নাত বিছানায় বসে পা দুলিয়ে বললো,
–“এই রুজবা, নুহাশ আর তোর মাঝে এসব ভাব-ভালোবাসা কবে থেকে শুরু হলো রে? আমি তো কিছু জানতেই পারলাম না।”

–“ওদের মাঝে ভাব-ভালোবাসা আছে কে বললো তোমায়? ওদের মাঝে কোনো প্রেমের সম্পর্ক টম্পর্ক ছিলো না। নুহাশ ভাই’ই পছন্দ করতো ওকে, তোমার বিয়ের সময় থেকে।”
জান্নাত চমকায়, অবাক হয়। বিস্মিত কন্ঠে বললো,
–“পাঁচ বছর ধরে ও রুজবা’কে ভালোবাসে? আর রুজবা ওকে পাত্তা দেয়নি?”

–“নুহাশ ভাই কখনো ভালোবাসার কথা ওকে জানালে তো ও পাত্তা দিবে। নুহাশ ভাই তো কখনো কিছু বলেই’নি।”
জান্নাত কিছু বলার জন্য হা করতেই রুজবার ছোট চাচী মিম আসে সেখানে। রুজবার কাছে গিয়ে ওর পড়নে সোনার দুল জোড়া খুলে মাঝারি আকারের সোনার এক-জোড়া দুল, হাতে ব্রেসলেট এবং দুইটা রিং পড়িয়ে দেয়। আর গলায় চেন আর লকেট সবসময়ই থাকে। মিম ওকে দেখে ভ্রু কুঁচকে বলে,

–“এত কম সেজেছিস কেন?”
জান্নাত দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললো,
–“ও তো এইটুকুই সাজবে না। ফারিন জোর করে সাজালো।”
মিম ব্যস্ত পায়ে চলে গেলো ঘর থেকে। যাওয়ার আগে বলে গেলো উনাদের নাস্তা দেওয়া হয়েছে। নাস্তা শেষে ডাকলে যেন রুজবা’কে নিয়ে বের হয় ওরা। মিম যেতেই ওরা তিনজন আবার কথা বলা শুরু করে। তিনজন বললে ভুল হবে৷ রুজবা চুপচাপ বসে আছে। ফারিন আর জান্নাত’ই টুকটাক কথা বলে চলছে।

হাত ঘড়িতে সময় দেখলো নুহাশ। বসে থাকতে থাকতে পা নিশপিশ করছে এখন। এতক্ষণ বসে থাকা যায়? ক্ষানিক বাদে বাদে অস্থির চোখে ভিতরের দিকে’ও উঁকি দিচ্ছে। কখন আসবে মেয়টা? ওকে দেখার জন্য যে এক জোড়া চোখ আকুল হয়ে আছে। নুহাশ যে ওর অশান্ত মন’কে শান্ত করতে চায় রুজবার দর্শন পেয়ে। কিয়ান ব্যাপার’টা লক্ষ্য করে দুষ্টু হেসে বলে,
–“কি শালা, আর তর সইছে না? আর একটু ধৈর্য্য ধরো বন্ধু, সবুরে মেওয়া ফলে।”
নুহাশ কিছু বললো না। ফোন বের করে ফোন দেখায় মনোযোগ দেয়। কিয়ান ক্রুর হেসে বলে,

–“ওই তো রুজবা এসেছে।”
নুহাশ দ্রুত ফোন থেকে চোখ সরিয়ে সামনে তাকায়৷ আশেপাশে কোত্থাও রুজবা নেই। কিয়ান মজা করেছে ব্যাপারটা মাথা খেলতেই চোখ কটমট করে তাকায় ওর দিকে। কিয়ান দাঁত বের করে হাসি দেয়। যা দেখে নুহাশের গাঁ জ্বলে যায়। নুহাশ ফোনে মনোযোগ দিতেই কিয়ান বললো,

–“সবে দেখতে এসেছিস, কথাবার্তা পাকা হবে আজ। আর এখনই এতটা ব্যাকুল হয়ে আছিস? এরপর যখন বউ ছাড়া থাকতে হবে তখন তোর কি অবস্থা হবে ভাই? পারবি তো রাতে একা থাকতে? নাকি দেয়াল টপকে লুকিয়ে চুড়িয়ে রাতের বেলা আবার বউয়ের কাছে চলে আসবি?”
নুহাশ চোখ রাঙিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে বললো,

–“বাজে কথা বলা বন্ধ করবি?”
–“হ্যাঁ হ্যাঁ বুঝি সব। এখন আমার ভালো কথা’ও বাজে মনে হবে। এখনই এই অবস্থা বিয়ের পর যে তুই কি করবি সেই ভেবে আফসোস হচ্ছে আমার।”
নুহাশ আর কিছু বললো না। কিয়ানের সাথে কথা বাড়িয়ে লাভ নেই। ও জানে কিয়ান’কে এখন যতই বারণ করা হোক কিয়ান এসব’ই বলবে। জান্নাত এসে বসে নুহাশের পাশে। নুহাশের দিকে এক বাটি নুডলস এগিয়ে দিয়ে বললো,

–“তুমি তো কিছুই খাচ্ছো না নুহাশ। ধরো এটা খাও।”
নুহাশ মৃদু হেসে বললো,
–“খেয়েছি, আর কিছু খাওয়া সম্ভব___”
নুহাশ’কে মাঝপথে থামিয়ে দেয় কিয়ান। জান্নাতের হাত থেকে নুডলসের বাটি নিয়ে সেটা টি-টেবিলে রেখে বললো,
–“আরে এটা রাখো তো ভাবী। ওর এসব নুডলস খাওয়ার থেকে মিষ্টি খাওয়া বেশি প্রয়োজন।”

বলেই মিষ্টির প্লেট হাতে তুলে নেয় ও। জান্নাত আর আদিরা ভ্রু কুঁচকে তাকায়। কিয়ান ব্যাপার’টা বুঝতে পেরে বললো,
–“তোমাদের দেবর যে রসকষহীন, কাঠখোট্টা মানুষ। এরকম থাকলে তো দুদিনের মাথায় বউ ওকে রেখে পালাবে। তাই এই মূহুর্তে ওর বেশি বেশি মিষ্টি খাওয়া প্রয়োজন, যাতে বউয়ের সামনে অন্তত তেঁতো তেঁতো কথা না বলে।”
কিয়ানের কথায় আদিরা আর জান্নাত ফিক করে হেসে দেয়। ওদের হাসির শব্দে রায়হান, রোমান আর নোমান সাহেবের কথায় ব্যাঘাত ঘটে। তিনজনেই তাকায় ওদের দিকে। বড়দের তাকানো দেখে ওদের হাসি বন্ধ হয়ে যায়। নুহাশ দাঁতে দাঁত চেপে বলে,

–“আমার বউয়ের চিন্তা তোকে করতে হবে না। ওকে আমার কাছে ঠিক রাখতে পারবো আমি। তুই তোর বউয়ের কথা চিন্তা কর। তোর কথাবার্তার যে সুরত তোর বউ থাকলেই হলো।”
কিয়ান ফিচেঁল হেসে বললো,

–“তার মানে বলতে চাইছিস তুই আমার থেকে বেশি রোমান্টিক?”
নুহাশের রাগে পুরো শরীর রিঁ রিঁ করছে। হাতটা নিশপিশ করছে কিয়ানকে কষে একটা থা/প্প/ড় মারার জন্য। কিন্তু এখানে এত মানুষ থাকায় তা সম্ভব হলো না। দাঁতে দাঁত চেপে বললো,
–“আগে বের হই এখান থেকে, তারপর তোকে বোঝাচ্ছি আমি কি।”
কিয়ান অবাক হওয়ার ভঙ্গিতে বললো,

–“আসতাগফিরুল্লাহ, তুই রোমান্টিক না আনরোমান্টিক এটা আমাকে বোঝাবি কেন? তুই কি সমকামী?”
কিয়ানের কথায় জান্নাত আর আদিরা এবারেও হেসে দেয়। নুহাশের চোয়াল ঝুলে যায় কিয়ানের কথায়। রাগ উঠে যায় মাথায়। অনেকটা সময় ধরে ফাজিল’টা জ্বালাচ্ছে ওকে। নুহাশ হাতের কুনই দিয়ে কিয়ানের পেটে গুঁতো মেরে বললো,
–“অনেক্ষণ ধরে তোর বাজে বকবক শুনে যাচ্ছি, মাথা গরম করিস না আমার। নয়তো কয়েক ঘাঁ লাগিয়ে দেবো।”
কিয়ান পেট চেপে ধরে হু হা করে হাসলো। নুহাশ চোখ রাঙিয়ে তাকাতেই কিয়ান হাসি থামিয়ে ভদ্র ছেলে হয়ে বসে পড়ে। নুহাশের রাগ সম্পর্কে ওর বেশ ধারণা আছে। তাই আর বেশি ঘাটালো না ওকে।

নুহাশের বরাবর এনে বসানো হলো রুজবাকে। নুহাশ খেয়াল করেনি, ফোনে চোখ ওর। কিয়ান নুহাশের দিকে ঝুঁকে বললো,
–“এতক্ষণ যার অপেক্ষায় ছিলি সে হাজির।”
কিয়ানের কথাটা বলতে দেরি হলেও নুহাশের চট করে তাকাতে বিন্দু পরিমান সময় লাগেনি। চোখ তুলেই সামনে রুজবাকে বসা দেখে চোখ জুড়িয়ে যায় ওর। ফোনটা পকেটে পুরে পূর্ণ দৃষ্টিতে তাকায় রুজবার পানে। পড়নে পেয়াজ কালার জামদানী শাড়ি। উজ্জ্বল শ্যামলা গায়ে পেয়াজ কালার’টা যেন খুবই সুন্দর লাগছে নুহাশের চোখে।

অবশ্য ভালোবাসার চোখ দিয়ে দেখলে ভালোবাসার মানুষটাকে পাগলের বেসে’ও আমাদের কাছে বেশ লাগে। এই নিয়ে চতুর্থ বার নুহাশ রুজবাকে শাড়িতে দেখলো। বছর দুয়েক আগে ওদের কাবিনের দিনেও মেয়েটা শাড়ি জড়িয়েছিলো গায়ে। কিন্তু সেদিন ওরকম পরিস্থিতি না থাকায় নুহাশ ভালোভাবে খেয়াল করেনি আর৷ আজ একদম খুঁটে খুঁটে দেখছে রুজবাকে৷ শাড়ি পড়া অবস্থায় আগে তো আর সরাসরি দৃষ্টি ফেলে দেখতে পারেনি ওকে৷ যা’ই দেখেছে যতটুকু’ই দেখেছে লুকিয়ে চুড়িয়ে, আড়ালে আবডালে দেখেছে। কিয়ান নুহাশ’কে আলতো ভাবে ধাক্কা দিয়ে বললো,

–“চোখ সরা, কয়েকদিন বাদে তোর’ই বউ হবে। তখন যত খুশি দেখিস। এখন বড়’রা সবাই আছে এখানে।”
নুহাশ দ্রুত দৃষ্টি ফেরায়। অন্যদিকে তাকিয়ে এলোমেলো চোখের পলক ফেলে। পরপর কয়েকটা শ্বাস নিয়ে নিজেকে ধাতস্থ করে। তারপর স্বাভাবিক ভাবে বসে। নুহাশের কান্ডে আদিরা নিবির দুজনেই মুচকি হাসে। নুহাশ’টা যে রুজবার প্রেমে পুরোপুরি গেছে সেটা’তো ওরা সবাই আগে থেকেই জানে। আজ আরো একবার প্রমান দিলো ও।
শাহানা বেগম রুজবার থুতনি ধরে ওর মুখটা উঁচু করে। রুজবাকে দেখে উনার চোখমুখে খুশি উপচে পড়ে৷ রুজবার মাথায় হাত বুলিয়ে বলে,

–“মাশা-আল্লাহ খুব সুন্দর। রিয়ানের বিয়ের সময় আরো ছোট ছিলে, এখন কতটা বড় হয়েছো। তোমাকে তো আমাদের আগে থেকেই ভালো লাগে। তার উপর আমার নুহাশের’ও পছন্দ তুমি।”
রুজবা লজ্জায় হাঁসফাঁস করছে। এভাবে না বললে কি হতো না? এতগুলো মানুষের সামনে বলছে উনি, নুহাশের পছন্দ ও। লজ্জা লাগার কথা না এটা? এভাবে কেউ বলে? শাহানা বেগম হয়ত বুঝতে পারলো ব্যাপারটা। তাই এ বিষয়ে আর কথা বাড়ালো না। নোমান সাহেব পকেট থেকে এক হাজার টাকার কয়েকটা নোট বের করে শাহানা বেগমের হাতে দিলো। তিনি আলগোছে টাকা’টা রুজবার হাতে গুজে দেয়। ফারিন রুজবাকে নিয়ে যেতে চাইলে শাহানা বেগম বলে,

–“এখানেই থাকুক।”
আদিরা উঠে রুজবাকে এনে নুহাশের পাশে বসায়। মাঝে দূরত্ব খুবই সামান্য। নুহাশের বাহুর সাথে রুজবার বাহু একটু খানি ফাঁক আছে মিলিত হতে। আদিরা রুজবার একদম গাঁ ঘেঁষে বসে পড়লো। ফলস্বরূপ রুজবা আর নুহাশের মাঝে যতটুকু ফাঁক-ফোঁকর ছিলো সেইটুকু’ও ঘুঁচে যায়। রুজবার সাথে সাথে নুহাশের শরীর’ও কেঁপে উঠে। সেই একবার রাস্তা পার হওয়ার সময় হাতের কবজি ধরেছিলো আর এখন গাঁ ঘেঁষে বসে আছে। শরীরে কম্পন তো হবেই। রুজবা কেঁপেই যাচ্ছে। নুহাশ বুঝতে পেরে কিয়ানকে বললো,

–“ওদিকে সরে বোস।”
কিয়ান বাঁকা হেসে বললো,
–“জায়গা ফাঁকা নেই আর।”
নুহাশ চোখ রাঙিয়ে বলে,
–“তোর পাশের সিঙ্গেল সোফা’টা খালি পড়ে আছে কিয়ান।”
–“তাতে কি? আমি যাবো না।”
–“ওর অস্বস্তি হচ্ছে।”

–“দুদিন বাদে তোর বউ হবে তো। অস্বস্তি কাটাতে হবে না? এভাবেই থাকুক কিছু সময়, অস্বস্তি কেটে যাবে।”
নুহাশ তপ্ত শ্বাস ফেললো। কিয়ানকে ও বোঝাতে পারবে না। ও যে এসব ইচ্ছে করে করছে এটা বেশ ভালো করে জানা নুহাশের। আদিরা রুজবার হাত ধরে বললো,
–“এমা তুমি এভাবে কাঁপছো কেন?”
রুজবা উত্তর দিতে পারলো না। নুহাশ বললো,

–“এভাবে আমার সাথে চিপকে বসালে ও কাঁপবে না? ওদিকে চাপো, আমার থেকে সরে বসুক ও।”
আদিরা বললো,
–“কয়েকদিন বাদে তোমার কোলে উঠে বসে থাকবে তখন নামতেও চাইবে না। আর এখন গাঁ ঘেঁষে বসলেই কাঁপা-কাঁপি শুরু না?”
–“তোমাদের বোঝাতে পারবো না আমি।”

অনেক সাধনার পরে পর্ব ১৯

কথাটা বলে নুহাশ উঠতে গেলেই কিয়ান ওর বাহু ধরে বসিয়ে দেয়। অর্থাৎ নুহাশ উঠতে পারবে না এখান থেকে।
বড়’রা এদিকে নজর না দিয়ে নিজেরা কথায় ব্যস্ত হলো। আজই আংটি পড়িয়ে যাবে উনারা। এবং সামনে শুক্রবার আকদ হবে। রায়হান সাহেব দু বছর বাদে মেয়ে তুলে দিবেন। কথাবার্তা শেষে শাহানা বেগম ব্যাগ থেকে আংটির বক্স বের করে নুহাশের হাতে দেয়। আদিরা রুজবার হাত ধরে নুহাশের সামনে। নুহাশ দেরি না করে চট জলদি বক্স থেকে আংটি বের করে রুজবার অনামিকা আঙুলে পড়িয়ে দেয়।

অনেক সাধনার পরে বোনাস পর্ব