অবিনাশী পর্ব ১৪+১৫

অবিনাশী পর্ব ১৪+১৫
রেজওয়ানা আসিফা

তিশার শান্তি লাগছে তানিয়ার এমন পরিবর্তন দেখে।
এখন আর আগের মতো এতো চিন্তা করতে হবে না তাকে নিয়ে।
ঈশান আগের থেকে অনেক টা সুস্থ। তানিয়া কায়দা করে ঈশানকে সবার মাঝে রেখেছিলো। যদিও এটা তমা মোটেও পছন্দ করেনি।

বাড়ির সব মেহমান চলে গেছে কিন্তু তিশা যায় নি। তানিয়া নতুন কাজের লোকটার সাথে হাতে হাতে সব কাজ শেষ করে ঈশান কে খাবার খায়িয়ে দিলো।
আজকে সবাই জামাল সিকদারের বাড়ি যাবে। সবাই যাবে না। ঈশান আর তানিয়া যাবে।তিশা ওদের নিয়ে যাবে এইজন্যই তিশা যাইনি। তানিয়া কাপড় গুছিয়ে ঈশান কে তৈরি করে নিজে তৈরি হলো। তমা অনেক বার বলেছে এতো কাপড় নিচ্ছে কেনো। তানিয়া তার কথায় কান দেয় নি।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন হউন

ঈশান কে আজ অনেক বেশি খুশি লাগছে।
তানিয়া ঈশান আর তিশা যখন বের হবে তখন আয়ান বাড়িতে ঢুকলো। ঢুকলেই বললো আমি যাবো নি।
তমা আয়ান কে চোখে ঈশারা করে ঘরে যেতে বললো।
তিশা আসি বলে বাড়ি থেকে বের হলো।

বাড়ি থেকে বের হয়ে মেইন ডোরে দারিয়ে তিশা একজনকে ফোন করতেই একটা গাড়ি নিয়ে আসলো। তানিয়া গাড়ির দিকে তাকিয়ে বললো,
-এটা তো বাড়ির গাড়ি না। আমরা কী বাসে করে যাবো না?

-না বাড়ির গাড়ি তো নেওয়া যাবে না আর বাসে করে গেলে সোজা বাড়ি যেতে হবে তাই এটা আগেই বুক করে রেখেছিলাম। এখন এখানে দারিয়ে বেশি কথা বলো না। গাড়িতে উঠো। কেউ দেখলে সমস্যা হতে পারে।
-তানিয়া ঈশানকে গাড়িতে বসিয়ে নিজে উঠতে উঠতে বললো,
-বাড়ি যাবো না? তাহলে কোথায় যাবো? আর তুমি না খেয়ে বের হতে বললে এই সময় ঈশানের খাবার সময়। ওর খিদে পেয়েছে হয়তো।

– আজকে অনেক ক্ষন ঘুরবো। তারপর রাতে বাড়ি যাবো। অনেক খাওয়া দাওয়া করবো। তোমাকে আমার চেনা সব জায়গায় ঘুরাবো।শোনো এখান থেকে এক ঘন্টার পর পেড়োলে বড়ো একটা রেস্টুরেন্ট আছে ওখানের খাবার খুব মজা তাই আগে ওখানে খাবো এইজন্য না খেয়ে বের হতে বলেছি। আর ঈশানকে তো মা বাইরের খাবার খেতে দেয় না। এইজন্য ভাবলাম ওকে আজ বাইরের খাবার খেতে দিবো।

-কিন্তু যদি মা মামা বা ওই বাড়ির কাউকে ফোন করে?
-সে ব্যবস্থা আমি করেছি। মামিকে বলেছি সন্ধ্যার পর যদি ফোন করে তাহলে বলবে আমরা চলে এসেছি।
-এতো বুদ্ধি নিয়ে তুমি ঘুমাও কীভাবে বলোতো?

-আমাকে মা বাবা কোথাও ঘুরতে নিয়ে যেতো না। আর এমন কোনো জায়গা নিয়ে যে আমি ঘুরিনি। ওরা আগের থেকেই নিজেদের কাজ নিয়ে ব্যাস্ত ছিলো। আমার মতো আমি ছিলাম। আর মামা সহ পরিবারে প্রতি বছর একটা ট্যুর দেয়। আর আমিও সাথে থাকি। সাজেক,বান্দরবান, কক্সবাজার সোনারগাও আরো কতো জায়গা যে ঘুরেছি গুনার বাইরে। সব জায়গায় মামা নিয়ে গেছে।

ঈশান আজ অনেক খুশি বাইরের সব কিছু দেখছে আর হাসছে। আবার তানিয়া তানিয়া কে সব আঙুল দিয়ে দেখাচ্ছে। অবশেষে রেস্টুরেন্টের সামনে গিয়ে গাড়ি থামলো। এখানে এই রেস্টুরেন্ট টা নতুন হয়েছে। চার পাশে কাশ বন। আর বালু। মধ্যে নতুন রাস্তা আর বা পাশেই নতুন রেস্টুরেন্ট টা। প্রচণ্ড রকমের ভির এখানে। তানিয়া তিশা আর ঈশান একটা কনারে বসে খাওয়া দাওয়া শেষ করে আবার গাড়িতে আসলো।
ঈশান এতো দিন পর বাইরে এসে খুশিতে কি করছে সে নিজেই জানেনা। অতিরিক্ত খুশিতে তানিয়াকে জড়িয়ে ধরে বললো,

-তুমি বড্ড ভালো। তুমি আসার পর আর আমার মন খারাপ থাকে না। তুমি কখনো আমাকে একা রেখে যেয়ো না।
তানিয়া ইশানের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললো,
-কোথাও যাবো না। তুমি চিন্তা করো না তো।

তারা সারাদিন ঘুরাঘুরি করে লালবাগ কেল্লা থেকে তিনটা আইসক্রিম নিয়ে ৮:৩০ এ বাড়ির দিকে যাওয়ার জন্য গাড়িতে উঠলো। এই সময় টা ঈশানের ঘুমানোর টাইম। তাই একটু পরেই ঈশান তানিয়ার কোলে ঘুমিয়ে পরলো। তানিয়া গাড়ির জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে। রাতের শহর টা তার বেশ সুন্দর লাগছে। চার পাশে লাইট। কতো মানুষ আশপাশে।

তার মনে হচ্ছে এখানে সব সময়ই মেলা বসে আছে। তানিয়ার জীবনে এটা প্রথম ঢাকা ভ্রমণ। অনেক দিন পর অনেক ভালো লাগছে তার। ছোট থেকেই ঘুরাঘুরি অনেক বেশি পছন্দ ছিলো তানিয়ার।
এক ঘন্টার পথ পাড়ি দিয়ে তারা বাড়ি পৌছালো ৯:৩০ এ। বাড়ি ঢুকেই তিশা নূর কে ডেকে আনলো ঈশান কে নেওয়ার জন্য। তানিয়া আর নূর ঈশানকে ধরে বাড়ির মধ্যে নিয়ে গেলো। তিশা গাড়ির ভাড়া মিটিয়ে বাড়ি ঢুকলো। জামাল সিকদার এসে তিশাকে বললো,

-তোমার মা এই পযর্ন্ত ৫ বার কল করেছে তোমার মামির ফোনে । আর বার বার জিগ্যেস করেছে তোমরা এসেছো নাকি। তোমার মামি তোমার জন্য মিথ্যা বলেছে। আর মিথ্যা বলাটা বড়ো কথা না। তোমার মা কে মিথ্যা বলেছে ঠিক আছে কিন্তু আমাদের তো জানাবে কোথায় আছো আর কখন আসবে। চিন্তা হয় তো আমার।
-আসলে মামা তানিয়া তো কখনো ঢাকা আসেনি। তাই ওকে সব জায়গা ঘুরিয়ে দেখাচ্ছিলাম।
-আচ্ছা কিন্তু আমাকে বলার দরকার ছিলো তো নাকি?

তিশা মাথা নিচু করে রইল। জামাল সিকদার তিশার মাথায় হাত বুলিয়ে বললো,
-তোমাকে ছোট থেকে নিজের কাছে রেখেছি। আমার চিন্তা হয় তো তোমার জন্য। একটু সাবধানে থাকবে
তোমার মামি দুপুর থেকে রান্না করেছে সব একা হাতে নূহা মাদ্রাসায় ছিলো। নতুন মেহমান আসবে তাই নিজের হাতে সব করেছে। যাও ফ্রেশ হয়ে তানিয়াকে নিয়ে খেতে বসো। আর এমন করবে না। যাই হোক কখনো মামার থেকে লুকাবে না। সব কিছু সবার আগে মামাকে যানাবে। যাও মা!

তিশা ফ্রেশ হয়ে তানিয়াকে নিয়ে খেতে আসলো। তানিয়া অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে টেবিলের দিকে। টেবিল টা পুরো খাবারে সাজানো। তানিয়া বসতেই জামাল সিকদার বিভিন্ন খাবার তানিয়ার দিকে এগিয়ে দিলো। আর বললো,
-তোমার বিয়েতে যাইনি, রাগ করেছো আমার উপর?
তানিয়া কিছু টা তাচ্ছিল্যের সাথে হেসে বললো,

-যেই বিয়ে হয়েছে। তাতে আবার রাগ। আমার সাথে যেই প্রতারণা করা হয়েছে এতে আমি ওই সময় মরে বেচে ছিলাম।
-আমি অনেক বার বারন করেছি। তিশা কে জিগ্যেস করো, অনেক বার বারন করেছি। কিন্তু শোনেনি। মাঝে মাঝে ওকে নিজের বোন বলে মানতে ইচ্ছে করে না। আমার পরিবার ছোট থেকেই অনেক ধার্মিক। আমার বাবা তোমার নানা শশুর মানুষ টা প্রচণ্ড ভালো মানুষ ছিলো। সেই মানুষ টার ঘরে এমন মেয়ে হয়েছে ভাবতেও অবাক লাগে।
নূর বলে উঠলো,

-আচ্ছা বাবা এসব কথা থাক। এটা একান্তই তাদের ব্যক্তিগত ব্যপার।
তানিয়া বলে উঠলো,
– মাঝে মাঝে অনেক ব্যক্তিগত বিষয় মানুষের জীবনের কাল হয়ে দারায়। কিন্তু আমি সব মানিয়ে নিয়েছি।
খাওয়া দাওয়া করে সবাই বসার ঘরে বসে গল্প করছে। ঈশান ঘুমাচ্ছে। হঠাৎ সদর দরজায় থেকে আওয়াজ আসলো,

-আসতে পারি?
সবাই দরজার দিকে তাকালো। দেখলো নূহার হবু বর শেহজাদ এসেছে। নূহা সোফার পেছন থেকে দৌড় ঘরে চলে গেলো। জামাল সিকদার আর নূর উঠে গিয়ে শেহজাদ কে বাড়ির মধ্যে নিয়ে আসলো। বাকি সবাই এতোক্ষনে রান্না ঘরে চলে গেছে। তবে পর্দার আড়াল থেকে দেখছে। শেহজাদ কে জামাল সিকদার জিগ্যেস করলো,

-তা বাবা হঠাৎ এতো রাতে কি মনে করে? এখান দিয়ে কোথাও জাচ্ছিলে?
– না না আব্বা! আসলে বাবা আমি বাড়ি থেকেই এসেছি। আমার ছোট বোন শেহজাদী বাইরে গাড়িতে আছে। ও মাদ্রাসায় থেকে লেখাপড়া করে। আজকে সকালে বাড়ি এসেছে। বিয়ের জন্য। আমি সারাদিন বাড়ি ছিলাম না। আব্বু কাবিনে জন্য কেনাকাটা করেছে তার সাথেই ছিলাম।

রাতে একটু আগে বাসায় এসেছি। কিন্তু তার বায়না সে এখনি নূহাকে দেখবে। আমি বলেছি কাল নিয়ে আসবো কিন্তু সে শুনলো না। আপনারা অনুমতি দিলে নূহাকে একটু দেখবে।
-এটা কেমন কথা শেহজাদ? তুমি একা একটা মেয়েকে গাড়ির মধ্যে রেখে এসেছো? এটা ওর নিজের বাড়ির মতোই। এতে অনুমতি কিসের? তুমি কাজটা একদম ঠিক করোনি।
জামাল সিকদার তিশাকে ডেকে শেহজাদীকে নিয়ে আসতে বললো। তিশা গিয়ে শেহজাদীকে নিয়ে আসলো। জামাল সিকদার শেহজাদীকে নূহার ঘরে নিয়ে যেতে বললো।
শেহজাদী আর নূহার বয়স কাছাকাছিই। তাই নূহার বেশ লজ্জা লাগছে। শেহজাদী নূহাকে দেখে মাশাআল্লাহ বললো।
তানিয়া হেসে বললো,

-ভাবী পছন্দ হয়েছে?
-হ্যা। খুব !
-ভাবি আর তোমার বয়স তো প্রায় এক।
– নাহ্। একটু বড়ো হবে। কারণ আমার বয়স ১৫।
জামাল সিকদার শেহজাদ কে খাবার খাওয়ার জন্য অনুরোধ করলো। কিন্তু শেহজাদ লজ্জা পাচ্ছে তাই নূর জোর করতে বারন করলো। তবে কফি করে দিয়ে গেছে তিশা।
শেহজাদ এবার উঠবে তাই শেহজাদী কে আনতে বললো।
জামাল সিকদার বললো,

-তোমাকে বললাম তো ওকে রেখে যাও। এখন যেতে চাইবে না দেখো।
– না না আব্বা আম্মু বকবে। ওকে রেখে গেলে। বড়ো আপুর বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর ওকে চোখের আড়াল করে না আম্মু।

– আরে বাবা, একটা রাতি তো! ওকে তো আর আমরা রেখে দেবো না। আমাদেরও কম মেয়ে নেই বুঝলে। তুমি দারাও আমি তোমার আম্মুকে ফোন করছি। নূর একটা কল করে দাও তো।
জামাল সিকদার শেহজাদের মা’র’ সাথে কথা বলে শেহজাদী কে রেখে দিলো। শেহজাদী ও খুব খুশি। আর শেহজাদ চলে গেলো। নিজেই গাড়ি নেই এসেছিলো সে।
নূর গিয়ে তিশার কাছে মোবাইল টা দিয়ে বললো,

– এটা নূহা কে দে। ওর জন্য এনেছে শেহজাদ।
-কিহ্? এই টুকু বাচ্চা মেয়ে মোবাইল ব্যবহার করবে?
-হ্যা। আর দুই দিন পর বিয়ে। তিন বছর পর সংসার করবে বাচ্চা কই? তোর মতো বুড়ি হবে নাকি?
-একদম বুড়ি বলবা না। হুহ। নিজে বুড়া হচ্ছে। কয়দিন পর দেখবা চুল পেকে গেছে। কেউ আর মেয়ে দিবে না। তারপর হয়তো কোনো দুই বাচ্চার মা কে বিয়ে করতে হবে।

-তুই চিন্তা করিস না। তোর কপালেও দুই বাচ্চার বাবাই আছে। এখনো সময় আছে। তোর আম্মুরে গিয়ে বল মা এবার আমাকে বিয়ে দাও।
-দরকার নেই। তোমার মতো আমার মুখ এতো লাগাম ছাড়া না। সরো তো যাও। শেহজাদী কে খাবার দিতে হবে।
শেহজাদী কে খাবার দিলো তিশা। খাবার খেয়ে সে নূহার সাথেই ঘুমালো। তিশার আলাদা ঘর আছে। তিশা নিজের ঘরে চলে গেলো।

নূরের মা অন্য একটা রুম তৈরি করে দিয়েছে আরো আগেই। ঈশান সেখানেই ঘুমিয়ে আছে।
সকালে উঠে শেহজাদ এসে শেহজাদীকে নিয়ে গেলো। শেহজাদের একবার অনেক ইচ্ছে হলো নূহাকে দেখার। একবার বলতে গিয়েও আবার বললো না কারণ এখনো তাদের বিয়ে হয় নি। সবাইকে বিদায় দিয়ে শেহজাদী চলে গেলো। তার মন টা খারাপ। এখানে সবার সাথে বেশ ভালো সময় কাটিয়েছে সে।

তানিয়া সকালে উঠে ঈশানের সব কাজ শেষ করে ভিডিও কল দিয়ে তমাকে দেখালো। কারণ তমা বলেছিলো তাকে কল করতে। জতোই হোক মা তো!
নূহার জন্য হালকা শপিং করতে হবে তাই তিশা নূর বের হলো। তানিয়াকে বলেছিলো কিন্তু সে যাবে না তার ভালো লাগছে না।নূহাকে জোর করেছে কিন্তু সে নতুন মোবাইল দেখে সেটা নিয়ে পরেছে এইজন্য তিশার পছন্দ মতো কিনতে বলে দিয়েছে।

তিশা সব নিজের পছন্দ মতো কিনেছে। তার আগে একবার নূর কে বলেছিলো শেহজাদ কে ফোন করে যেনে নিতে তার পাঞ্জাবীর রং কী হবে।
শেহজাদ জানায় সাদা কালার হবে সব। তাই তিশাও সব কিছু সাদা কিনলো। তিশার একটা শাড়ি অনেক পছন্দ হলো নিজের জন্য। সেই শাড়িটা দেখে নূর বড্ড হাসাহাসি করলো। কারণ তিশা কখনো শাড়ি পরেনি। তিশা রেগে শাড়ি সেখানেই রেখে দিলো। নূর বুঝতে পারলো তিশা কষ্ট পেয়েছে।

তাই শাড়িটা কিনে তিশা কে দিলো। কিন্তু তিশা শাড়িটা ছুয়েও দেখেনি। নূরও কম না। শাড়ি ও তিশাকে দিয়েই নেওয়াবে। অন্য সব ব্যাগ নিজের কাছে নিয়ে ওই শাড়ির ব্যাগটা তিশার কাছে দিলো। ছেলেদের সাথে আর মেয়েরা কী পেরে উঠে। বাধ্য হয়ে তিশা ব্যাগটা নিলো।
শপিং করে বাড়ি ফিরে সব দেখালো নূহাকে। নূহার সব পছন্দ হয়েছে। কিন্তু সে সাদার কাহিনি টা বুঝলো না। সে সাড়িটা নারতে নারতে বললো,

-আমি সবাইকে লাল পরতে দেখছি তিশু আপু সাদা আনছো কেন?
তানিয়া বিষয় টা বুঝে মুচকি হেসে বললো,
-তিশার মাথা ঠিক নেই। বুঝেছো। মার্কেট গিয়ে সুন্দর সুন্দর ছেলে দেখেছে তো।
নূর পাশেই বসে ছিলো। মোবাইল টিপছিলো। মোবাইলের দিকে তাকিয়ে বললো,
-পাশেই যেই সুন্দর ছেলে ছিলো অন্য দিকে তাকাবে কীভাবে !
তিশা হাসতে হাসতে মাটিতে বসে পরলো। সে হেসে হেসে গরাগরি খাচ্ছে। সবাই তাকিয়ে দেখছে। সে উঠে বসে বললো,

-যেই না চেহারা নাম রাখছে পেয়ারা। বুড়া বেডা আবার নাকি সুন্দর ! তোমার কয়দিন পর আর বিয়েও হবেনা আবার আসছো সুন্দর।
-তিশু বেশি হচ্ছে ! আমি আরো পাচ বছর পর বিয়ে করলেও কেউ কোনো কথা বলতে পারবে না। আর দেখ তোকে এখনি সবাই বলে কিরে বিয়ে করবি না কীরে বিয়ে করবি না। আর এখন তো তোর বিয়েই হবে না। কারণ নূহার বিয়ে হয়ে জাচ্ছে তোকে আর কে বিয়ে করবে যখন শুনবে ছোট বোনের আগে বিয়ে হয়ে গেছে। ভাববে কোনোনা কোনো ঘাবলা আছে। মেয়ে বুড়ি হয়ে গেছে। বোড়া বেডি।

অবিনাশী পর্ব ১২+১৩

তিশা ফুলদানি নিয়ে দৌরানি দিলো নূর কে। নূর চলে যেতেই মুচকি হাসলো তিশা।
এই হাসি তানিয়ার চোখের আড়াল হলো না। এই হাসির মানি কিছুটা হলেও আন্দাজ করেছে তানিয়া।

অবিনাশী পর্ব ১৬